 দুপুরে বিজিবির.png)
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সীমান্তপথে অবৈধ অস্ত্র প্রবেশ রোধে নজরদারি বাড়িয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। ময়মনসিংহ সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, অবৈধ অস্ত্র শুধু নির্বাচনের সময় নয়, দেশের আইনশৃঙ্খলা অস্থিতিশীল করতে যে কোনো সময় প্রবেশ করতে পারে।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহ সেক্টর সদর দপ্তরের মাল্টিপারপাস হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কর্নেল মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, “নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। অস্ত্র আসতে পারে এমন খবর পাওয়া গেছে, তবে অভিযান চালিয়েও এখন পর্যন্ত কোনো অস্ত্র পাওয়া যায়নি। আমরা গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়িয়েছি যেন এই এলাকা দিয়ে অবৈধ অস্ত্র প্রবেশ করতে না পারে।”
ময়মনসিংহ সেক্টরের দায়িত্ব কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলা থেকে ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলা পর্যন্ত ১,২০৪ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। সংবাদ সম্মেলনে বিজিবির অভিযানের সাফল্য তুলে ধরা হয়, যার মধ্যে চোরাচালান, মাদক পাচার, পুশইন, জালনোট পাচার এবং অবৈধভাবে পাথর ও বালু উত্তোলন প্রতিরোধ উল্লেখযোগ্য।
লিখিত বক্তব্যে কমান্ডার জানান, “বিজিবি, উত্তর-পূর্ব রিজিয়ন, সরাইলের অধীনে ময়মনসিংহ, সিলেট, শ্রীমঙ্গল ও কুমিল্লা সেক্টরসহ অধীনস্থ ব্যাটালিয়নসমূহ সীমান্ত সুরক্ষা, চোরাচালান দমন, মাদক প্রতিরোধ, পুশইন মোকাবিলা ও পরিবেশ সুরক্ষায় নিরলসভাবে কাজ করছে এবং জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সচেষ্ট।”
তিনি জানান, ১,২০৪ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকায় চারটি সেক্টরের অধীনে ইউনিটসমূহ ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৭৫৪ কোটি ১৫ লাখ টাকার মালামাল আটক করেছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ৭১০ কোটি ৮১ লাখ টাকার চোরাচালান পণ্য জব্দ এবং ৬৪ জন আসামি আটক করা হয়েছে। মাদকবিরোধী অভিযানে ৪৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকার মাদক ও ৩৩০ জন আসামি গ্রেফতার হয়েছে। এর মধ্যে ময়মনসিংহ সেক্টর একাই ৫৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকার চোরাচালান পণ্য ও ১৪ জন আসামি, এবং ৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকার মাদকসহ ১০০ জন আসামি আটক করেছে।
সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ (পুশইন) রোধে বিজিবি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছে। অভিযানে ১৮ জন আসামিসহ ৯ লাখ ৭৫ হাজার ৭৫৬ ঘনফুট বালু এবং ৪ লাখ ৯১ হাজার ৮৪২ ঘনফুট পাথর জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া ট্রাক-২৭টি, ট্রলি-৭৫টি, ট্রাক্টর-৪৫টি, লরি-১৮টি, নৌকা-৪০টি এবং বহু অবৈধ সরঞ্জাম ধ্বংস করা হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে আরও জানানো হয়, দেশের অর্থনীতি সুরক্ষিত রাখতে জালনোট পাচার রোধে সীমান্তে গোয়েন্দা কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। বিজিবি চোরাচালান, মাদক, অবৈধ অনুপ্রবেশ ও পরিবেশবিরোধী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছে। ড্রোন, নাইট ভিশন ও ডিজিটাল সার্ভেইলেন্সের মাধ্যমে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি সীমান্তবর্তী জনগণকে নিয়মিত সচেতন করে অবৈধ কর্মকাণ্ডের তথ্য সরাসরি বিজিবিকে জানাতে আহ্বান জানানো হচ্ছে।