
পাবনার ঈশ্বরদীতে বিএনপি ও জামায়াতের কর্মীদের সংঘর্ষে অস্ত্র হাতে দেখা যাওয়ার পর ব্যাপক আলোচনায় আসা সেই যুবক তুষার হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি পিস্তল ও দুটি গুলি।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি রাশিদুল ইসলাম জানান, সোমবার মধ্যরাতে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ধানবান্ধি এলাকার জে সি রোডে মতিন সাহেবের ঘাটের পাশে অভিযান চালিয়ে তুষারকে আটক করা হয়। ২১ বছর বয়সী তুষার ঈশ্বরদী পৌরসভার ভেলুপাড়া মহল্লার বাসিন্দা এবং তাহের হোসেনের ছেলে। তিনি পাবনা জেলা জামায়াতের আমির ও পাবনা-৪ আসনে মনোনীত প্রার্থী আবু তালেব মণ্ডলের ভাতিজা মামুন মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত।
ঈশ্বরদী থানার ওসি আ. স. ম. আব্দুর নূর সংঘর্ষের দিনই জানান যে পিস্তলধারী যুবক জামায়াতের কর্মী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ছবির সূত্র ধরে পুলিশ পরে তুষারকে শনাক্ত করে।
সংঘর্ষের ঘটনার পর বিএনপি ও জামায়াত পাল্টাপাল্টি মামলা করে। শনিবার রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে জামায়াতের দুইজন ও বিএনপির তিন কর্মীকে গ্রেপ্তার করে এবং পরদিন আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। বিএনপির মামলায় প্রধান আসামি করা হয় জামায়াত প্রার্থী আবু তালেব মণ্ডলকে। অপরদিকে জামায়াতের মামলায় প্রধান আসামি হন স্থানীয় সাহাপুর ইউনিয়ন কৃষক দলের আহ্বায়ক মক্কেল মৃধা।
সোমবার পাবনার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারক তরিকুল ইসলাম বিএনপির সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা বাঁধন হাসান আলিমের মামলায় পাবনা-৪ আসনে জামায়াতের প্রার্থীসহ ৩১ জনের জামিন মঞ্জুর করেন।
ওসি রাশিদুল ইসলাম জানান, “সংঘর্ষের পর থেকে তুষার পলাতক ছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তুষারের দেখানো স্থান ভেলুপাড়ায় মাটি খুঁড়ে পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় পিস্তল ও গুলি উদ্ধার করা হয়।” আইনি প্রক্রিয়া শেষে মঙ্গলবার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার বিকালে জামায়াত প্রার্থী আবু তালেব মণ্ডল গণসংযোগে গেলে দুই পক্ষের বাকবিতণ্ডা ধীরে ধীরে সংঘর্ষে রূপ নেয়। তখন গুলির ঘটনাও ঘটে এবং কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। উভয়পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হন। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
সংঘর্ষের সময় এক তরুণকে পিস্তল হাতে গুলি ছুড়তে দেখা যায় এবং তার সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।