
বাংলাদেশি পোশাক শিল্পের প্রতি আস্থা আরও জোরালো করছে পোল্যান্ডের আলোচিত ফ্যাশন ব্র্যান্ড এলপিপি এসএ। ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে ব্যবসা বিস্তৃত এই কোম্পানি চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে ৭৭ কোটি ডলারের পোশাক সংগ্রহ করেছে, আর আগামী দিনে এ পরিমাণ আরও বাড়াতে চায় তারা।
মঙ্গলবার ২ ডিসেম্বর উত্তরা स्थित বিজিএমইএ কার্যালয়ে সংগঠনের সভাপতি মাহমুদ হাসান খানের সঙ্গে সাক্ষাতে এই আগ্রহের কথা জানান এলপিপি এসএর প্রকিউরমেন্ট ডিরেক্টর জোয়ানা সিকোরস্কা। বৈঠকে বিজিএমইএর পক্ষ থেকে অংশ নেন সিনিয়র সহ-সভাপতি ইনামুল হক খান ও মিজানুর রহমান এবং পরিচালক শাহ রাঈদ চৌধুরী, মো. হাসিব উদ্দিন, নাফিস-উদ-দৌলা ও জোয়ারদার মোহাম্মদ হোসনে কমার আলম।
আলোচনায় এলপিপি স্পষ্ট জানায়, তারা আউটারওয়্যার, হেভি নীট, মেনস আন্ডারওয়্যার ও জগারসসহ কয়েকটি পণ্যের সোর্সিং বাংলাদেশ থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াতে চায় এবং এ বিষয়ে বিজিএমইএর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে প্রস্তুত।
বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদী অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা, সাপ্লাই চেইনে স্থিতিশীলতা ও স্বচ্ছতা উন্নয়ন এবং বাংলাদেশের কারখানাগুলোর সামগ্রিক সক্ষমতা বৃদ্ধির গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। এছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি এসএমই কারখানাগুলোকে আরএসসির আওতায় এনে সরাসরি রপ্তানির সুযোগ তৈরির বিষয়েও আলোচনা হয়।
বাংলাদেশ এলপিপি এসএর অন্যতম শীর্ষ সোর্সিং গন্তব্য। তারা বছরে ৭৭০ মিলিয়ন ডলারের পোশাক এখান থেকে নেয় এবং দেশটিকে তাদের সবচেয়ে বড় সোর্সিং হাব হিসেবে বিবেচনা করে আসছে।
জোয়ানা সিকোরস্কা বলেন, ‘বাংলাদেশ আমাদের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সোর্সিং হাব। আমরা এখানে আমাদের ব্যবসায়িক ভিত্তি আরও শক্তিশালী করতে আগ্রহী এবং আমাদের সাপ্লাই চেইনে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য কাজ করে যাব।’ তিনি আরও জানান, বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে টেকসই উন্নয়ন ও দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক চর্চা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি তারা অব্যাহত রাখবে।
বৈঠকে বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান এলপিপিকে বাংলাদেশ থেকে ক্রয় বাড়ানোর অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের জন্য এলপিপি এসএ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ক্রেতা। আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ থেকে তাদের পোশাক সোর্সিং বাড়ানো এবং সরবরাহকারীদের সাথে দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে উভয় পক্ষই উপকৃত হবে। বাংলাদেশের পোশাক শিল্প ক্রেতাদের সব ধরনের কমপ্লায়েন্স এবং মান বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
শেষ পর্যন্ত উভয়পক্ষ বাংলাদেশি সরবরাহকারীদের সঙ্গে এলপিপির একটি পারস্পরিক বোঝাপড়া ও দীর্ঘমেয়াদী কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে তোলার বিষয়ে একমত হয়।