
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের চাপিয়ে দেওয়া চাহিদার মধ্যেই ইরান জানিয়েছে, তাদের অন্যতম বৃহৎ শাদান স্বর্ণখনিতে নতুন এক বৃহৎ স্বর্ণশিরা শনাক্ত হয়েছে- যা দেশটির অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) স্থানীয় গণমাধ্যমে এ তথ্য প্রকাশ পায়।
পূর্বাঞ্চলের দক্ষিণ খোরাসান প্রদেশে অবস্থিত বেসরকারি মালিকানাধীন শাদান খনিতে আবিষ্কৃত এ শিরা কাঠামোকে ফার্স নিউজ এজেন্সি দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদগুলোর একটি বলে উল্লেখ করেছে। প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, শিল্প, খনি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে নতুন মজুদগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে যাচাই করেছে।
সংবাদমাধ্যমটি আরও জানায়, নতুন স্বর্ণশিরা যুক্ত হওয়ায় শাদান খনির প্রমাণিত মজুদ ব্যাপকভাবে বেড়েছে। সেখানে বর্তমানে ৭.৯৫ মিলিয়ন টন অক্সাইড স্বর্ণ আকরিক এবং ৫৩.১ মিলিয়ন টন সালফাইড স্বর্ণ আকরিক রয়েছে। অক্সাইড আকরিক তুলনামূলকভাবে সহজ ও কম খরচে উত্তোলনযোগ্য বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
যদিও ইরান তাদের জাতীয় স্বর্ণসংরক্ষণ সম্পর্কে আনুষ্ঠানিক পরিসংখ্যান প্রকাশ করে না, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে স্বর্ণ কেনার প্রবণতা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে বলে দাবি করছে দেশটি। গত সেপ্টেম্বরে ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর মোহাম্মদ রেজা ফারজিন জানান, “২০২৩-২০২৪ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিশ্বে সর্বাধিক স্বর্ণক্রয়কারী পাঁচ ব্যাংকের একটি ছিল।”
স্থানীয় গণমাধ্যম কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তা ইয়েকতা আশরাফির উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, “আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার চাপের মধ্যে দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী করতে স্বর্ণের মজুদ বাড়ানো সহায়ক হবে।”
ইরানে বর্তমানে মোট ১৫টি স্বর্ণখনি রয়েছে, যার মধ্যে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জারশোরান খনি সবচেয়ে বড়। দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা ইরানের অর্থনীতিকে চাপে রেখেছে, যার মূল কারণ হিসেবে দেখানো হয় তেহরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে বিরোধ।
এছাড়া ইসরাইলের ওপর নজিরবিহীন হামলার পর শুরু হওয়া ১২ দিনের যুদ্ধ এবং ওই সময় যুক্তরাষ্ট্রের ইরানের পরমাণু স্থাপনা লক্ষ্যবস্তু করা অর্থনৈতিক সংকটকে আরও ঘনীভূত করেছে। উচ্চমাত্রার মুদ্রাস্ফীতি ও রিয়ালের অবমূল্যায়নের কারণে ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়ায় বহু ইরানি স্বর্ণকে এখন নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচনা করছে।