
মার্কিন ডলারের তুলনায় ভারতের রুপির অবমূল্যায়ন চলছেই। চলতি বছরে ডলারের বিপরীতে রুপির দর প্রায় ৫ শতাংশ কমেছে এবং ডিসেম্বরের প্রথম দুই দিনেও এই পতনের ধারা অব্যাহত রয়েছে। এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের নাগরিকদের ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে।
রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (আরবিআই) তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার সকালে প্রতি ডলারের বিপরীতে ৮৯.৭৪ রুপি পাওয়া যাচ্ছে, যা শূন্য দশমিক ৩২ শতাংশ কম। নভেম্বর মাসে রুপির দরপতন ছিল ০.৮ শতাংশ, যার ফলে ৩০ নভেম্বর রুপির মান সর্বকালীন তলানিতে পৌঁছায়। চলতি বছরের ১ জানুয়ারিতে ডলারের বিপরীতে রুপির মান ছিল ৮৫.৭০।
নভেম্বর মাসে রুপির বিনিময়মূল্য ৮৮.৫৭ থেকে ৮৮.৭৮ রুপির মধ্যে ওঠানামা করলেও ২১ নভেম্বর একদিনে ০.৮ শতাংশ পতনের পর রুপির মান ৮৯ রুপির মনস্তাত্ত্বিক সীমা অতিক্রম করে। এরপর রুপির মান স্থির থাকতে পারছে না।
বাংলাদেশে প্রভাব:
ভারতে বাংলাদেশিরা যেসব ভ্রমণ করেন, তারা ডলার ভাঙলে আগের তুলনায় বেশি রুপি পাবেন। বাংলাদেশে ডলারের দাম দীর্ঘদিন ধরে ১২২ টাকার মধ্যে স্থিতিশীল থাকায় ভারতে যাওয়ার সময় তা তাদের জন্য কিছুটা সুবিধা হিসেবে প্রমাণিত হচ্ছে। তবে বর্তমানে ভিসা নিষেধাজ্ঞার কারণে ভ্রমণকারীর সংখ্যা কম।
অর্থনীতির অবস্থা:
জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ভারতের জিডিপি বৃদ্ধি ৮.২ শতাংশ, যা বিশ্লেষকদের মতে আশাতীত। তবু সপ্তাহের শুরুতে রুপির পতন অব্যাহত আছে। চলতি বছরে নভেম্বর পর্যন্ত রুপির অবমূল্যায়ন ৪.৮ শতাংশ, যা এটিকে এশিয়ার সবচেয়ে দুর্বল মুদ্রার তালিকায় এনেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রুপির পতনের পেছনে ট্রাম্পের শুল্ক নীতি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তির অনিশ্চয়তা, এবং রুশ তেলের আমদানি সীমিত হওয়া অন্যতম কারণ। ভারতের বাজারে তেলের চাহিদা মিটলেও পরিবহন খরচ বেড়ে গেছে, যা ডলারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।
ভবিষ্যৎ ঝুঁকি:
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মার্কিন-ভারত বাণিজ্য সমঝোতা না হলে রুপির পতন নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হবে। রুপির দর আরও পড়লে আমদানির খরচ বাড়বে এবং ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি ধীর হয়ে যেতে পারে।