
২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচারে দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদন দ্রুত ওয়েবসাইটে প্রকাশের দাবি তুলেছেন নিহত সেনা সদস্যদের পরিবার।
সোমবার (০১ নভেম্বর) সকালে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, “নৃশংস এই হত্যাযজ্ঞে জড়িত সকলকে বিচারের আওতায় আনতেই হবে।” একইসঙ্গে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তারা।
২০০৯ সালে তৎকালীন বিডিআর বিদ্রোহের ঘটে যাওয়া এই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জন নিহত হন। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ১১ মাস তদন্ত চালিয়ে রবিবার (৩০ নভেম্বর) স্বাধীন তদন্ত কমিশন তাদের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেয়।
প্রতিবেদনে উঠে এসেছে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশের কথা, আওয়ামী লীগের ভূমিকা, সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনের নাম। এছাড়া প্রতিবেশী দেশ ভারতের প্রতিক্রিয়া ও চাপের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে পরিবারগুলো জানান, পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন হাতে না থাকায় তারা বিস্তারিত প্রতিক্রিয়া দিতে চান না। তবে নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার না করতে সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানান তারা।
প্রতিবেদন প্রকাশের সময় তদন্ত কমিশনের সদস্য জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার বলেন, কমিশন অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক উভয় কারণ শনাক্ত করেছে। তার ভাষায়, “এই হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিত এবং এর পেছনে প্রধান সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করেছিলেন তৎকালীন সংসদ সদস্য শেখ ফজলে নূর তাপস।”
তিনি আরও বলেন, “ঘটনার সাথে জড়িতদের আড়াল করতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ সরাসরি ভূমিকা রেখেছে। তারা ২০-২৫ জনকে নিয়ে পিলখানায় প্রবেশ করে এবং বের হওয়ার সময় সেই মিছিল দুই শতাধিক মানুষে পরিণত হয়।”
এছাড়া তিনি দাবি করেন, “পুরো ঘটনার জন্য তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘গ্রিন সিগন্যাল’ ছিল।”
দায় নিরূপণের প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার বলেন, “দায় তৎকালীন সরকার প্রধান থেকে শুরু করে সেনাপ্রধানেরও রয়েছে। ঘটনাটি রাজনৈতিকভাবে সমাধান করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। পুলিশ, র্যাব এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে।”