
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বর্তমানে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তার দ্রুত সুস্থতার জন্য রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় উপদেষ্টা পরিষদের একটি বিশেষ বৈঠক আয়োজন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে অন্তর্বর্তী সরকার জানিয়েছে, আজ প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, সাবেক রাষ্ট্রপতির স্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনা করে দোয়া ও প্রার্থনা করা হয়। এছাড়া জাতির কাছে তার জন্য দোয়া ও প্রার্থনার আহ্বানও জানানো হয়।
বৈঠকে খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থার আলোকে হাসপাতালে নির্বিঘ্ন চিকিৎসা নিশ্চিত করা, প্রয়োজনে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার পরিকল্পনা, তার নিরাপত্তা ও যাতায়াত সুবিধা, এবং উচ্চ মর্যাদা বিবেচনায় তাকে রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিভিআইপি) ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিদ্ধান্তটি অবিলম্বে কার্যকর করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়ার পরিবার ও দলের সঙ্গে বিষয়টি শেয়ার করা হয়েছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে বসুন্ধরায় এভারকেয়ার হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা ও চিকিৎসা নিয়ে সংবাদ ব্রিফিং করেন ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, “বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারছেন।”
তিনি আরও বলেন, “দেশবাসীর কাছে ওনার সুস্থতার জন্য দোয়া চাই। সবার দোয়ার কারণে এ যাত্রায় তিনি হয়তো সুস্থ হয়ে উঠবেন। তারেক রহমান সার্বক্ষণিকভাবে চিকিৎসার তদারকি করছেন। প্রধান উপদেষ্টা, সরকার, হাসপাতাল কতৃপক্ষসহ সবাই যথাসাধ্য সহায়তা দিচ্ছেন।”
ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, “ডাক্তাররা যে চিকিৎসা দিচ্ছেন, সেটি উনি গ্রহণ করতে পারছেন। তবে বিদেশে নেওয়ার প্রয়োজন আছে কি না তা মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী নির্ধারণ করা হচ্ছে। মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ ছাড়া বিদেশে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।”
তিনি দেশবাসীকে সতর্ক করে বলেন, “সংকটময় মুহূর্তে দোয়া চাই। দোয়ার কারণে হয়তো বেগম জিয়া সুস্থ হয়ে উঠবেন। দেশবাসী কোনো ধরনের গুজব বা বিভ্রান্তিতে কান না দেওয়ার চেষ্টা করুন।”
খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস ও কিডনির জটিলতা সহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। ২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠান শেষে বাসায় ফেরার পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। ২৩ নভেম্বর জরুরি ভিত্তিতে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসকদের মতে, তিনি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং সঙ্গে আরও কিছু জটিলতা রয়েছে।
গত কয়েক দিনে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউ–সমমানের হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) রাখা হয়। পরে রোববার ভোরে সেখান থেকে সরাসরি আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।