
জাতীয় রাজনীতির টানাপোড়েনের এই সময়ে খালেদা জিয়াকে দলীয় সীমার বাইরে দেশের একজন সবার নেত্রী হিসেবে অভিহিত করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের। চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল ছাড়ার সময় তিনি সাংবাদিকদের সামনে এমন মন্তব্য করেন।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া একজন দেশপ্রেমিক, গণতান্ত্রিক ও আপসহীন নেত্রী। তিনি বলেন, “আজকে উনি (খালেদা জিয়া) কোনো দলের নেত্রী নন। উনি সমগ্র মানুষের নেত্রী।”
নিজের অসুস্থতা থেকে সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র পাওয়ার পরে আবেগাপ্লুত কণ্ঠে তাহের বলেন, “আমি আজকে অত্যন্ত বেদনার সঙ্গে, উৎকণ্ঠার সঙ্গে, আবেগের সঙ্গে বাংলাদেশের সব মানুষের প্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করছি।”
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেন, দেশের বড় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আরও বেশি বোঝাপড়া জরুরি। তার ভাষায়, “জাতীয় রাজনীতি এবং আগামী নির্বাচনের ব্যাপারে দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতর আরও অনেক বেশি বোঝাপড়া প্রয়োজন। আজকের এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের আগামী রাজনীতি এবং আগামী নির্বাচনের জন্য বৃহৎ রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতর আরও অনেক বেশি সমঝোতা, বোঝাপড়া এবং নীতিগত ঐক্য প্রয়োজন।”
তিনি সব রাজনৈতিক দল ও সংশ্লিষ্ট পক্ষকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, ভবিষ্যতের সিদ্ধান্ত যেন সবাই আরও ধৈর্য ও প্রজ্ঞার সঙ্গে, দেশকে অগ্রাধিকার দিয়ে গ্রহণ করে।
এদিকে পৃথক এক বিবৃতিতে খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন জামায়াতের নবনিযুক্ত নায়েবে আমির এটিএম আজহারুল ইসলাম। তিনি বলেন, “অপরিসীম ত্যাগ, সাহস ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং রাষ্ট্রগঠনে সারাজীবন ভূমিকা রেখেছেন। দীর্ঘ ১৫ বছরের আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে তার অনমনীয় অবস্থান ও আন্দোলন জাতির ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, “মিথ্যা ও সাজানো মামলায় কারাবন্দি রেখে তাকে (খালেদা জিয়াকে) বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে, যা তাকে মৃত্যুঝুঁকির দিকে ঠেলে দিয়েছে। পর্যাপ্ত ও যথাযথ চিকিৎসা না পাওয়ায় তার শারীরিক অবস্থার ক্রমাবনতি হয়েছে।”
চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় খালেদা জিয়া জাতির পথপ্রদর্শক হবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। বিবৃতির শেষে তিনি বলেন, “ফ্যাসিবাদের পতনের পর গণতান্ত্রিক উত্তরণ ও ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের এই সন্ধিক্ষণে দেশবাসী প্রত্যাশা করে; তিনি (খালেদা জিয়া) জাতির পথপ্রদর্শকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হবেন। এ সংকটময় মুহূর্তে আমরা সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে তার দ্রুত রোগমুক্তি ও পূর্ণ সুস্থতা কামনা করি।”