
রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা কোনো কার্যকর সমাধান নয়—এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির সহ–আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা। তার মতে, কেবল কাগজে–কলমে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে কোনো রাজনৈতিক শক্তিকে মাঠ থেকে সরানো যায় না।
সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে তিনি এসব বক্তব্য তুলে ধরেন।
রুমিন ফারহানা বলেন, “পলিটিক্যাল পার্টিকে কাগজ-কলমে নিষিদ্ধ করে কোনো লাভ হবে না। জামায়াতকে শেখ হাসিনা লাস্ট মোমেন্টে নিষিদ্ধ করেছিল। এর আগেও জামায়াত-শিবিরের নিবন্ধন বাতিল করেছিল। সকলভাবে চেষ্টা করা হয়েছে দলটিকে কোণঠাসা করে একেবারে শেষ করে দেওয়ার। কিন্তু সেটি পারেনি। নিষিদ্ধ করে আসলে কোনো সমাধান হয় না।”
উদাহরণ হিসেবে তিনি মুসলিম লীগের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “মুসলিম লীগ বাংলাদেশের এখনো রাজনীতি করে। এই দলের কর্মী আছেন কতজন, নেতা-সমর্থক কতজন, ভোটার কতজন— এটা কেউ ম্যাগনিফাইং গ্লাস দিয়ে খুঁজে বের করতে পারবে না।”
টকশোতে তিনি আরও বলেন, “যে দলটি গত বছর জুলাই–আগস্টে নিষিদ্ধ হয়েছে বা যে দলটির কার্যক্রম গত ১৫ বছর ধরে নিষিদ্ধ ছিল, তারা কিন্তু প্রবল প্রতাপে রাজনীতির মাঠে কাজ করে বেড়াচ্ছে। কাগজে কলমে নিষিদ্ধ করে কোনো লাভ হবে না, যদি না মানুষের মন থেকে তাদের সরানো যায়।”
নতুন রাজনৈতিক জোট প্রসঙ্গে তিনি মন্তব্য করেন, “একটি নতুন জোটের কথা শোনা যাচ্ছে, যেখানে ১৬টি রাজনৈতিক দল আছে। সেখানে আওয়ামী লীগের যারা সরাসরি বড় কোনো পদে ছিলেন না, মন্ত্রী-এমপি হননি, যাদের ওপর ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের দায় নেই কিন্তু আওয়ামী লীগের প্রতি সফট কর্নার আছে— এ ধরনের মানুষ এই জোটের মাধ্যমে আসতে পারে।”
নির্বাচনকে ঘিরে সরকারপক্ষের পরিকল্পনা প্রসঙ্গে তিনি দাবি করেন, “নির্বাচন বানচাল করার ব্যাপারে আওয়ামী লীগের একটি পরিকল্পনা আছে। এটা আমি বলছি না। এটা স্বয়ং শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় যে ইন্টারভিউ দিয়েছেন, সেখানে পরিষ্কার বলেছেন— ‘এই নির্বাচনকে আমরা বানচাল করতে চাই যদি সেটা আওয়ামী লীগকে ছাড়া হয়।’”
তরুণ ভোটারদের নিয়ে সাম্প্রতিক এক জরিপের তথ্য উল্লেখ করে রুমিন বলেন, “২,৫০০ জন তরুণকে নিয়ে সারাদেশে জরিপ হয়েছে, যাদের বয়স ১৮ থেকে ৩৫। সেখানে দেখা গেছে— ২০ শতাংশ বিএনপিকে, ১৭ শতাংশ জামায়াতকে, আর ৯ বা ১০ শতাংশ আওয়ামী লীগকে ভোট দিতে চায়। অনিশ্চিত ভোটারের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি।” তিনি আরও বলেন, “তাদের মধ্যে যদি বড় একটি অংশ আওয়ামী লীগের সাপোর্টার হয়, তাহলে আওয়ামী লীগের সমর্থন ১৯–২০ শতাংশ বা আরও ওপরে যেতে পারে। যতই আইন করে নিষিদ্ধ করেন, মানুষ যদি ভোট দেয়, আপনি-আমি বা নির্বাচন কমিশনের কিছু করার নেই।”