
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহ-সভাপতি আবু সাদিক কায়েমের বিরুদ্ধে অনলাইনে ‘অপপ্রচার’ ও নারী নেত্রীদের সাইবার বুলিংয়ের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলাকে কেন্দ্র করে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। তারা এই মামলাকে অনলাইনে মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণের চেষ্টা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
মঙ্গলবার ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “সাদিক কায়েম সাইবার মামলা করে অনলাইনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করেছে। দীর্ঘদিন ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত থেকে বাকস্বাধীনতা হরণের আওয়ামী-বাকশালি কৌশল রপ্ত করেছে সাদিক কায়েম। তার মামলা সন্ত্রাস থেকে মিম পেইজ, ট্রল পেইজও রেহাই পায়নি। সাদিক কায়েমের মামলা সন্ত্রাস ছাত্রশিবিরের অসহিষ্ণুতার বহিঃপ্রকাশ।”
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, “বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পূর্ববর্তী ফ্যাসিবাদী আমলের সাইবার আইন বিলুপ্ত করে জনগণের মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পথ উন্মুক্ত করেছে। বর্তমানে সাইবার আইনে মানহানি সংক্রান্ত কোনো মামলা দায়ের করার সুযোগ নাই। কিন্তু এই আইনের অপব্যবহার করে সাদিক কায়েম শেখ হাসিনার পদাঙ্ক অনুসরণ করেছে। সাদিক কায়েম যে বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেছে তা সাইবার সুরক্ষা আইন বা অন্য কোনো আইনের অধীনে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে সাব্যস্ত হয় না।”
ছাত্রদলের বক্তব্য, “আইনের অপব্যবহার করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করাই সাদিক কায়েমের উদ্দেশ্য। সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের ২৮ ধারা অনুযায়ী, কেউ জেনেশুনে মিথ্যা মামলা বা অভিযোগ দায়ের করলে অভিযোগকারী যে অপরাধের অভিযোগ দায়ের করবেন সেই অপরাধের জন্য নির্ধারিত দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। উল্লেখ্য, কিছুদিন পূর্বে সাদিক কায়েম স্বয়ং জনৈক বিএনপি নেতাকে মিথ্যা ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত করে ফেসবুকে পোস্ট করেছিল। তার অনুসারী বটফোর্স অনলাইনে ক্রমাগত নারীদের হেনস্তা এবং ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর সংঘবদ্ধ সাইবার সন্ত্রাস পরিচালনা করছে।”
ছাত্রদল এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে মন্তব্য করেছে, “ডাকসুর ভিপি পদধারীর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সাইবার মামলা দায়ের করা ন্যাক্কারজনক ও নজিরবিহীন। সাদিক কায়েম ডাকসুর ভিপি পদকে কলঙ্কিত করেছে। ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য ‘ফ্রিডম অব অনলাইন এক্সপ্রেশন’-এর অধিকারকে অবজ্ঞা করেছে।”
এর আগে সোমবার সাদিক কায়েম ঢাকার বিভিন্ন ফেসবুক পেজ ও ব্যক্তিগত আইডির বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় ডাকসু কণ্ঠস্বর, বঙ্গোগ্রাফ, আমার ডাকসু, দ্য ন্যাশনালিস্ট ডাটা, কাঁঠেরকেল্লা, রৌমারি, বঙ্গইনসাইডার্সসহ বেশ কয়েকটি ফেসবুক পেইজ এবং এনামুল হক শান্ত, আশিকুর রহমান ও সাইফ আল মাহমুদসহ কিছু ব্যক্তিগত আইডিকে বিবাদী করা হয়েছে।
মামলার বিষয়ে শাহবাগ থানার ওসি খালিদ মনসুর জানিয়েছেন, “বেশ কিছু ফেইসবুক আইডির নাম উল্লেখ করে সাদিক কায়েম একটি মামলা করেছে। পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে।”