নরসিংদীর বেলাবতে "চলো গড়ি বেলাব" সামাজিক সংগঠনের বর্ষপূর্তি উদযাপন ও পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠান
চলো গড়ি বেলাব সামাজিক সংগঠনের ৫ম বর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষ্যে সিজিবি মেধা অন্বেষণ বৃত্তি প্রাপ্তদের ন...
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, একটি উন্নত ভবিষ্যৎ গড়তে হলে কর্মক্ষম তরুণদের দক্ষতা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা জরুরি। শুক্রবার (১১ জুলাই) বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস ২০২৫ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন। ড. ইউনূস বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও এ বছর বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালিত হচ্ছে এতে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘এম্পাওয়ারিং ইয়াং পিপল টু ক্রিয়েট দ্য ফ্যামিলিজ দে ওয়ান্ট ইন এ ফেয়ার এন্ড হোপফুল ওয়ার্ল্ড’ সময়োপযোগী ও তাৎপর্যপূর্ণ বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩০ শতাংশই কিশোর-কিশোরী ও তরুণ। এই বিশাল জনগোষ্ঠী যদি সঠিকভাবে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ক্ষমতায়নের সুযোগ পায়, তাহলে তা দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। শুধুমাত্র পরিবার পরিকল্পনা বা প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়াই যথেষ্ট নয় একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ, টেকসই উন্নয়ন এবং স্থিতিশীল ভবিষ্যতের জন্য প্রজন্মের মধ্যে ন্যায্যতা ও মূল্যবোধ বজায় রাখা প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে কোনো বৈষম্য না রেখে সকলের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করলেই একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব। ড. ইউনূস বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার বৈষম্যহীন উন্নয়ন নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। জুলাই মাসের গণ-আন্দোলনের চেতনা ধারণ করে সরকার পরিবার পরিকল্পনা, মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য এবং কিশোর-কিশোরীদের প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের প্রসারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তরুণ সমাজের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সরকার, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি ‘বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস-২০২৫’ উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সফল বাস্তবায়ন কামনা করেন।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, একটি উন্নত ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে কর্মক্ষম তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ, সুশিক্ষিত ও সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হিসেবে গড়ে তোলা আবশ্যক। বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস উপলক্ষ্যে আজ দেয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও এ বছর বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস-২০২৫ পালন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত।’ বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘এম্পাওয়ারিং ইয়াং পিপল টু ক্রিয়েট দ্য ফ্যামিলিজ দে ওয়ান্ট ইন এ ফেয়ার এন্ড হোপফুল ওয়ার্ল্ড’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘দক্ষ জনগোষ্ঠী দেশের সম্পদ। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩০ শতাংশ কিশোর-কিশোরী ও তরুণ। এই বিপুল জনগোষ্ঠীর শিক্ষা, সুস্বাস্থ্য, জীবনমান এবং ক্ষমতায়নের ওপর নির্ভর করে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন। শুধু স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকা কিংবা পরিবার পরিকল্পনা ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ে পছন্দমতো সিদ্ধান্ত গ্রহণই যথেষ্ট নয়, টেকসই উন্নয়ন, উন্নত জীবন ব্যবস্থা এবং সমাজের শান্তি-শৃঙ্খলা নিশ্চিতের জন্য প্রজন্মান্তরে ন্যায্যতা ও ন্যায়-নীতিবোধ ধরে রাখা একান্ত প্রয়োজন। পাশাপাশি একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে ছেলে-মেয়ের মাঝে কোনো বৈষম্য না করে সকলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।’ অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি বৈষম্যমুক্ত উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের চেতনাকে ধারণ করে সরকার পরিবার পরিকল্পনা, মা ও শিশু স্বাস্থ্য এবং কৈশোরকালীন প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করে তরুণ প্রজন্মের অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে অঙ্গীকারবদ্ধ।’ একটি সুস্থ-সবল জাতি গড়ার এই কর্মযজ্ঞে সরকারের পাশাপাশি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, বেসরকারি সংগঠন, গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজকে তিনি এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আসুন সকলে মিলে বাংলাদেশকে উন্নতি ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিই।’ প্রধান উপদেষ্টা ‘বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস-২০২৫’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর কোনো ধরনের বাড়তি নম্বর বা বিশেষ সুবিধা দেওয়ার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. খন্দোকার এহসানুল কবির। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুরে ঢাকার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, 'যে ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে সেটিই প্রকৃত এবং স্বচ্ছ। কাউকে অতিরিক্ত নম্বর দেওয়ার কথা বলা হয়নি। এবারের ফলে শিক্ষার্থীদের প্রকৃত অবস্থারই প্রতিফলন ঘটেছে।' তিনি আরও জানান,'আগে কীভাবে ফলাফল তৈরি হতো তা নিয়ে মন্তব্য করব না। তবে এবার ফল তৈরিতে কোনো ধরনের প্রভাব বা চাপ ছিল না। উচ্চমহল থেকে নির্দেশ ছিল, বাস্তব মূল্যায়নের ভিত্তিতেই ফল প্রকাশ করতে হবে। পরীক্ষকদের সেভাবেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।' এবারে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় পাসের হার ৬৮.৪৫ শতাংশ। পরীক্ষায় ১৯ লাখ ২৮ হাজার ৯৭০ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছেন ১৩ লাখ ৩ হাজার ৪২৬ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ লাখ ৩৯ হাজার ৩২ জন শিক্ষার্থী। চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়েছিল ১০ এপ্রিল এবং শেষ হয় ১৩ মে। দেশের ৩ হাজার ৭১৫টি কেন্দ্রে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। মাত্র দুই মাসের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে।
বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের মিশন স্থাপন সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারকের খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। আজ (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।এতে বলা হয়, বাংলাদেশে ‘জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়’-এর মিশন স্থাপন সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারকের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন করা হয়েছে। অন্যদিকে, নির্যাতন এবং অন্যান্য নিষ্ঠুর, অমানবিক বা অবমাননাকর আচরণ বা শাস্তির বিরুদ্ধে কনভেনশনের ঐচ্ছিক প্রোটোকলে (ওপি-সিএটি) বাংলাদেশের পক্ষভুক্ত হওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘নির্যাতন এবং অন্যান্য নিষ্ঠুর, অমানবিক বা মর্যাদাহানিকর আচরণ বা শাস্তির বিরুদ্ধে কনভেনশনের’ একটি পরিপূরক প্রটোকল হলো এর ঐচ্ছিক প্রটোকল, যা জাতিসংঘের আওতাধীন। প্রটোকলটি ২০০২ সালে গৃহীত হয়। এর মূল উদ্দেশ্য হলো বিশ্বব্যাপী নির্যাতন এবং অন্যান্য নিষ্ঠুর, অমানবিক বা অবমাননাকর আচরণ বা শাস্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা আরও জোরদার করা। এতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ ১৯৯৮ সালে জাতিসংঘের এই মূল কনভেনশনে পক্ষভুক্ত হয়। সম্প্রতি, জাতিসংঘের ‘নির্যাতন এবং অন্যান্য নিষ্ঠুর, অমানবিক বা মর্যাদাহানিকর আচরণ বা শাস্তির বিরুদ্ধে কনভেনশনের ঐচ্ছিক প্রটোকল’-এ বাংলাদেশ পক্ষভুক্ত হওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ উদ্যোগে পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক ০২ জানুয়ারি ২০২৫ থেকে ১০ জুলাই ২০২৫ পর্যন্ত দেশব্যাপী বায়ুদূষণ, শব্দদূষণ ও নিষিদ্ধ পলিথিনের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে ১ হাজার ১৯১টি মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালিত হয়েছে। এসব অভিযানে মোট ২ হাজার ৮৪৬টি মামলা দায়ের করে ২৫ কোটি ৬১ লাখ ৩৯ হাজার ৯০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। শুক্রবার (১১ জুলাই) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা দীপংকর বর স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়। বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে যানবাহনের অতিমাত্রায় কালো ধোঁয়া, অবৈধ ইটভাটা, স্টিল মিল, ঝুঁকিপূর্ণ বর্জ্য নির্গমনকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান, সীসা-ব্যাটারী রি-সাইক্লিং কারখানা, জলাশয় ভরাট, খোলা জায়গায় নির্মাণ সামগ্রী সংরক্ষণ, টায়ার পাইরোলাইসিস ও চারকোল কারখানার বিরুদ্ধে এই অভিযান পরিচালিত হয়। এসময় ৪৮৩টি ইটভাটার চিমনি ভেঙে কার্যক্রম বন্ধ করা হয়, ২১৬টি ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধে নির্দেশনা প্রদান করা হয়, ১৩২টি ইটভাটার কাঁচা ইট ধ্বংস করা হয় এবং ৯১টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সেবা/বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। একইসঙ্গে ২ জনকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও ৬টি কারখানা থেকে সীসা গলানোর ৮টি ট্রাক সরঞ্জাম জব্দ করে কারখানাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। অপরদিকে, নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদন, বিক্রয়, সরবরাহ ও বাজারজাতকরণের বিরুদ্ধে ০৩ নভেম্বর ২০২৪ হতে ১০ জুলাই ২০২৫ পর্যন্ত পরিচালিত ৪৭৭টি মোবাইল কোর্ট অভিযানে ৯০৪টি প্রতিষ্ঠানকে ৬৭ লাখ ৪০ হাজার ৪০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং প্রায় ২ লাখ ৪৫ হাজার ৭০৭ কেজি পলিথিন জব্দ করা হয়েছে। শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে ১০ জুলাই ২০২৫ তারিখে ঢাকা মহানগরের মিরপুর ও কিশোরগঞ্জ জেলায় ২টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ৬টি মামলায় ৬ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। একইদিনে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত-২০১০) অনুযায়ী কিশোরগঞ্জে ১টি মামলায় ১৩ হাজার টাকা জরিমানা আদায় এবং ২৭.৪ কেজি পলিথিন জব্দ করা হয়। এছাড়া, নারায়ণগঞ্জ ও পাবনা জেলায় ২টি এনফোর্সমেন্ট অভিযানে ২টি প্রতিষ্ঠানের সেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তর জানিয়েছে, পরিবেশ সংরক্ষণে এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও আরও জোরালোভাবে অব্যাহত থাকবে।
জুলাই সনদকে সংবিধানের মূলনীতির অংশ করার দাবি নিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, এটি একটি বিভ্রান্তিকর প্রচেষ্টা, যা জনমনে ভুল বার্তা ছড়াচ্ছে। শুক্রবার (১১ জুলাই) সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জিয়া পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল কুদ্দুসের রোগমুক্তি কামনায় দুস্থদের মাঝে জায়নামাজ বিতরণ করা হয়। রিজভী বলেন, “জুলাই সনদের অনেক বিষয় বিএনপি ইতোমধ্যে গ্রহণ করেছে। তবে এটিকে সংবিধানের মূলনীতিতে অন্তর্ভুক্ত করার দাবিটি অপ্রয়োজনীয় এবং বিভ্রান্তিকর। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, এটি কোনো স্থির বা চূড়ান্ত বিষয় নয়। বিশ্বের অনেক দেশে বিভিন্ন সময় নতুন সংস্কার এসেছে, ভবিষ্যতেও আসবে।” তিনি আরও বলেন, “বিএনপি কখনো সংস্কারের বিপক্ষে কথা বলেনি, বরং সংস্কারের পক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়েছে। তবে একে মূলনীতির অংশ বানানোর প্রচার জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। জনগণের ক্ষমতা তাদের কাছেই ফিরিয়ে দেওয়া হোক সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।” দেশের অর্থনৈতিক সংকট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রিজভী বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে মানুষের মনে দুর্ভিক্ষের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের দিকে প্রকৃত দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে জনগণ কাউকে ছাড় দেবে না।” তিনি দাবি করেন, “দেশে বহু গার্মেন্টস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, মানুষ কর্মহীন হচ্ছে। যদি মানুষ খাদ্য কিনতে না পারে, তাহলে দুর্ভিক্ষের আলামত প্রকট হবে। এই অবস্থায় আর্থিক খাতের শৃঙ্খলার পাশাপাশি কর্মসংস্থান বাড়ানো জরুরি।” রিজভী আরও বলেন, “বর্তমান সরকার গণতান্ত্রিক জবাবদিহির বাইরে চলে গেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেটি গঠিত হয়েছে, সেটি অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের সমর্থনে এসেছে। ড. ইউনূসের নেতৃত্বেও আমাদের সমর্থন রয়েছে।” তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “গণতন্ত্র নিয়ে যদি খেলাধুলা চলতে থাকে, শুধু ক্ষমতায় থাকার জন্য শিশুসুলভ দাবি নিয়ে বসে থাকেন, তবে জনগণ কাউকে রেহাই দেবে না। এতে প্রকৃত গণতন্ত্র ধ্বংস হয়ে যাবে এবং দেশে দীর্ঘস্থায়ী অগণতান্ত্রিক শক্তির উত্থান ঘটবে।” এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, জিয়া পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি ড. শফিকুল ইসলাম, মহাসচিব ড. এমতাজ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল ইসলামসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে দুই বাস থেকে নয়জন যাত্রীকে অপহরণের পর গুলি করে হত্যা করেছে অস্ত্রধারীরা। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঝব ও লোরালাই জেলার সীমান্তবর্তী সুর-ডাকাই এলাকায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে পাঞ্জাবগামী দুটি কোচ থেকে ওই যাত্রীদের অপহরণ করা হয়। ঝবের সহকারী কমিশনার নাভিদ আলম সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন, দুটি কোচ থেকে অপহৃত নয়জনকেই হত্যা করা হয়েছে, সবার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃতদেহগুলো পাঞ্জাবে তাঁদের নিজ শহরে পাঠানোর জন্য রাখনিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বেলুচিস্তান সরকারের মুখপাত্র শহীদ রিন্দ এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘ফিতনা আল হিন্দুস্তান’ (বেলুচিস্তানের সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর জন্য ব্যবহৃত একটি শব্দ) কাকাট, মাস্তুং এবং সুর-ডাকাই-এই তিনটি ভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়েছে। তিনি আরও যোগ করেন, ‘সুর-ডাকাই এলাকা থেকে কিছু যাত্রী অপহরণের খবর পাওয়া গেছে এবং নিরাপত্তা বাহিনী অপহৃত বাকি যাত্রীদের নিরাপদে উদ্ধারের জন্য তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে।’ জানানো হয়, পাঞ্জাবগামী দুটি যাত্রীবাহী কোচকে এন-৭০ মহাসড়কের কাছে সুর-ডাকাই এলাকায়, লোরালাই-ঝব সীমান্তের কাছে ডাব নামক স্থানে পথরোধ করা হয়। একদল সশস্ত্র ব্যক্তি রাস্তা অবরোধ করে যানবাহন দুটিকে থামায়। সশস্ত্র হামলাকারীরা কোচগুলোতে উঠে যাত্রীদের পরিচয়পত্র পরীক্ষা করে এবং বন্দুকের মুখে ১০ জনকে নামিয়ে নিয়ে যায়। বেঁচে যাওয়া এক যাত্রী জানান, একটি কোচ থেকে সাতজন এবং অন্যটি থেকে তিনজন–এই ১০ জন যাত্রীকে তারা টেনেহিঁচড়ে নামিয়ে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। তিনি বলেন, ‘আমি জানি না তারা তাদের সঙ্গে কী করেছে, তবে আমরা যখন চলে যাচ্ছিলাম তখন গুলির শব্দ শুনেছিলাম।’ নয়জন যাত্রীকে অপহরণ করার পর, হামলাকারীরা দুটি কোচকেই এলাকা ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়। খবর পেয়ে নিরাপত্তা বাহিনী মহাসড়কে যান চলাচল স্থগিত করে এবং হামলাকারীদের খুঁজে বের করার জন্য ব্যাপক তল্লাশি অভিযান শুরু করে। সূত্র অনুসারে, হামলাকারীরা সব যাত্রীর সিএনআইসি (জাতীয় পরিচয়পত্র) পরীক্ষা করে এবং বিশেষভাবে পাঞ্জাবের ঠিকানার ব্যক্তিদের লক্ষ্যবস্তু করে। তারা অপহরণের সময় কোচগুলো লক্ষ্য করে গুলিও ছোড়ে। একজন জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সশস্ত্র ব্যক্তিদের দ্বারা অপহৃত নয়জন যাত্রীকে হত্যার খবর পাওয়া গেছে। নিষিদ্ধ ঘোষিত বেলুচিস্তান লিবারেশন ফ্রন্ট (বিএলএফ) এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। গোষ্ঠীটির একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, তাঁরা মুসাখাইল-মখতার এবং খাজুরির মধ্যবর্তী মহাসড়ক অবরোধ করার পর এই নয়জনকে হত্যা করেছে। তবে হত্যার কারণ ব্যাখ্যা করেননি তিনি।
অর্থনীতিবিদ ও জনতা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল বারকাতকে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদকে) মামলা থাকায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তাঁকে গ্রেপ্তার করে। ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়ে বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ধানমন্ডিতে অভিযান চালিয়ে আবুল বারকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁকে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হবে।’ আবুল বারকাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান ছিলেন। এননটেক্স গ্রুপের নামে ২৯৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি আবুল বারকাতসহ ২৩ জনের নামে মামলা করে দুদক। সংস্থাটি জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান ও আবুল বারকাত পরস্পর যোগসাজশে জালজালিয়াতির মাধ্যমে এননটেক্স গ্রুপের ২২টি প্রতিষ্ঠানকে এই টাকা ঋণ দিয়েছিলেন। আতিউর রহমান, তাঁর সহযোগী অন্য ব্যক্তিরা বিভিন্ন অনৈতিক কৌশলে এই অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।