ঢাকা, ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার
মেনু |||

রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাচ্ছে বায়তুল মোকাররম

মুজিববর্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় মসজিদের স্বীকৃতি পাচ্ছে বায়তুল মোকাররম মসজিদ। রাষ্ট্রীয় প্রচার মাধ্যমসহ সব গণমাধ্যমে এটিকে জাতীয় মসজিদ হিসেবে উপস্থাপন করা হলেও এর আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি নেই। ফলে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবের সার-সংক্ষেপ অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষে এটি শিগগিরই মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে। ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

 

এর সত্যতা নিশ্চিত করে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মো. আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘বায়তুল মোকাররম- জাতীয় মসজিদ এটা সবাই জানে কিন্তু এর কোনো রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি নেই, সেটা কেউ এতদিন খেয়ালও করেনি। আমরা মুজিববর্ষে এর আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়ার জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে প্রস্তাব পাঠিয়েছি।’

 

কথা হয় মসজিদটির দেখভালের দায়িত্বে থাকা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক (ডিজি) মু আ হামিদ জমাদ্দারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ হিসেবে সারা দেশে পরিচিতি লাভ করেছে। এমনকি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার পাঠ্যপুস্তকেও এমন তথ্য স্থান পেয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হল, কাগজে-কলমে এর কোনো ভিত্তি নেই। তাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিববর্ষে’ মসজিদটির আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিতে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবের সার-সংক্ষেপ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে।’

 

দেশের সবচেয়ে বড় শোলাকিয়া ঈদগাহের ঈমাম মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসউদ বলেন, ‘আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি না থাকলেও দেশ-বিদেশে জাতীয় মসজিদ হিসেবে বায়তুল মোকাররমই পরিচিতি পেয়েছে। মুজিববর্ষে এটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় মসজিদের স্বীকৃতি দেয়া হলে তা সরকারের একটি ভালো উদ্যোগ হিসেবে সবাই জানবে। তবে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে এর কোনো সুবিধা বা অসুবিধা নেই। পবিত্র কাবা, মসজিদে নববী ও বায়তুল মোকাদ্দাস ছাড়া পৃথিবীর সব মসজিদ একই মর্যাদার।’

 

মন্ত্রিসভার জন্য পাঠানো প্রস্তাবে বলা হয়েছে- ঢাকা মহানগরীর প্রাণকেন্দ্রে বায়তুল মোকাররম মসজিদ। দেশের প্রধান ও বড় মসজিদ হিসেবে এটি দেশবাসীর কাছে পরিচিত। পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে এটি ‘জাতীয় মসজিদ’ হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনসহ সব প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াতেও জাতীয় মসজিদ হিসেবে বায়তুল মোকাররমের নাম প্রচার করা হয়। মুসলিম বিশ্বের রাষ্ট্রপ্রধান ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের বিভিন্ন দেশের অতিথিরাও এ মসজিদে নামাজ আদায় করে থাকেন।

 

রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের জানাজার নামাজ আদায়েও এ মসজিদটিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হয়। ঈদুল ফিতর ও আজহা, শবেমেরাজ, শবেবরাত ও শবেকদরসহ জুমাতুল বিদা ও ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) ইত্যাদি জাতীয় ও ধর্মীয় দিবসে বিপুলসংখ্যক মানুষ এ মসজিদে ইবাদত বন্দেগি করে থাকেন। অথচ আনুষ্ঠানিকভাবে এ দৃষ্টিনন্দন ও গুরুত্বপূর্ণ মসজিদটিকে জাতীয় মসজিদ হিসেবে ঘোষণা বা স্বীকৃতি দেয়া হয়নি।

 

প্রস্তাবে বলা হয়েছে- দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে প্রতিফলিত করে এমন অনেক শ্রেষ্ঠ জিনিসের নামের সঙ্গে ‘জাতীয়’ শব্দ যুক্ত করে এগুলোর ঐতিহ্য স্মারক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ফলে বায়তুল মোকাররম মসজিদের সঙ্গে জাতীয় শব্দ যুক্ত করা হলে এটির ভাব-গাম্ভীর্য বৃদ্ধি পাবে। একে কেন্দ্র করে দেশের সম্মান ও মর্যাদাও বৃদ্ধি পাবে। এটি করা হলে অতিরিক্ত কোনো অর্থের প্রয়োজন হবে না।

 

তাই ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ২০২০ সালকে ‘মুজিববর্ষ’ ঘোষণা করা হয়েছে। মুজিববর্ষে জাতীয় মসজিদ হিসেবে বায়তুল মোকাররমকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিলে দেশ-বিদেশে এবং ধর্মীয় ক্ষেত্রে সরকারের ভাব-মর্যাদা আরও উজ্জ্বল হবে।


ঢাকাওয়াচ/স

সম্পাদকঃ সাখাওয়াত হোসেন সজীব
নিবন্ধন নং -১৬৬