
চীনের ১০ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনা খরচে বাংলাদেশিদের পড়ার সুযোগ
প্রতিবারের ন্যায় ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষেও বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বিনা খরচে উচ্চশিক্ষার সুযোগ দিচ্ছে চ...
বাংলাদেশে কাল রোববার (৩০ মার্চ) খোলাচোখে চাঁদ দেখা যেতে পারে। ফলে আগামী সোমবার (৩১ মার্চ) বাংলাদেশে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হতে পারে বলে প্রতিবেদন করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম গালফ নিউজ। আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান কেন্দ্রের বরাত দিয়ে শনিবার (২৯ মার্চ) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৩৬ মিনিটে এ খবর জানানো হয়েছে।তবে এ বিষয়ে আর বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি প্রতিবেদনে।এদিকে আরব ও মুসলিম বিশ্বে আজ শনিবার (২৯ মার্চ) শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা ‘অসম্ভব’ হবে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান কেন্দ্র। বলা হচ্ছে, যেহেতু চাঁদ সূর্যের আগে অস্ত যাবে এবং সূর্যাস্তের পরে মিলন ঘটবে, তাই এদিন সন্ধ্যায় চাঁদ দেখা সম্ভব হবে না। গালফ নিউজকে দেয়া এক বিশেষ বিবৃতিতে, আমিরাতের জ্যোতির্বিদ ও এমিরেটস অ্যাস্ট্রোনমি সোসাইটির চেয়ারম্যান এবং আরব ইউনিয়ন ফর স্পেস অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোনমির সদস্য, ইব্রাহিম আল-জারওয়ান প্রকাশ করেছেন, ‘সুনির্দিষ্ট জ্যোতির্বিদ্যাগত গণনা ইঙ্গিত দেয় যে, শনিবার (২৯ মার্চ) সূর্যাস্তের পরে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা অসম্ভব।’এই গণনার ওপর ভিত্তি করে এমিরেটস অ্যাস্ট্রোনমি সোসাইটি অনুমান করছে, রমজান মাস এবার ৩০ দিন পূর্ণ করবে। অর্থাৎ ৩০ মার্চ (রোববার) হবে পবিত্র মাসের শেষ দিন। ফলে, পবিত্র ঈদুল ফিতর ৩১ মার্চ (সোমবার) হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।প্রতিবেদন মতে, যেসব দেশে শাওয়াল মাস শুরু হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হতে প্রকৃত দর্শন (চাঁদের) প্রয়োজন, সেখানে রমজান সম্ভবত ৩০ দিনের হবে। আর ঈদুল ফিতর পড়বে ৩১ মার্চ।তবে, যেসব অঞ্চলে সূর্যাস্তের আগে সংযোগ ঘটে, সেখানে কিছু দেশ ঐতিহ্যবাহী চাঁদ দেখার পদ্ধতির ভিত্তিতে ৩০ মার্চ, রোববার ঈদ ঘোষণা করতে পারে।
আসন্ন ঈদুল ফিতরের সরকারি ছুটি শুরু গতকাল শুক্রবার (২৮ মার্চ) থেকে। শুক্র-শনিবার বন্ধের দিন থাকায় বেশিরভাগ মানুষই ঢাকা ছাড়া শুরু করেছেন এর আগ থেকেই। এতে করে শেষ দিকে এসে যানবাহন বা টিকিট কাউন্টারগুলোতে নেই বাড়তি চাপ। সাধারণ সময়ের মতোই যাত্রী নিয়ে ছাড়ছে বাস। রাস্তা ফাঁকা থাকায় কোথাও যানজটের সমস্যাও নেই বলে জানিয়েছেন বাস কাউন্টারের কর্মীরা। শনিবার (২৯ মার্চ) রাজধানীর সায়েদাবাদ টার্মিনাল এলাকায় বাস কাউন্টার ও আশপাশের এলাকা ঘুরে সাধারণ সময়ের মতোই যাত্রীদের উপস্থিতি দেখা যায়। কোথাও ভিড় দেখা যায়নি। ঢাকা, চট্রগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল যাত্রায় মহাসড়কে যানজট না থাকায় সায়দাবাদ থেকে প্রায় প্রতিটি বাস নির্দিষ্ট সময় ছেড়ে যাচ্ছে। যাত্রীদের মনেও ছিল প্রশান্তি। বরিশাল যাবেন আজিজুল হক। বাস কাউন্টারে আসার সঙ্গে সঙ্গেই টিকিট পেয়েছেন। এতে অনেকটাই অবাক হয়েছেন তিনি। আজিজুল জানান, এর আগে কোনো ঈদে এমন শান্তির যাত্রা হয়নি। কাউন্টারে এসে যুদ্ধ করে টিকিট কাটতে হয়েছিল। আর আজকে এসেই টিকিট পেলাম। এরকমটা সবসময় থাকুক সেই কামনা করি। সাজেদা বেগমও বলছেন একই কথা। এ রকম সুন্দরভাবে বাড়িতে যাওয়ার কথা চিন্তা করেননি তিনি। বাস কাউন্টারে এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকা, যানজট- সব মিলিয়ে ঈদযাত্রা অনেকটাই চ্যালেঞ্জিং ছিল। এবারের মতো সুন্দরভাবে আর কখনো যাত্রা করতে পারেননি বলে জানান তিনি। তবে এর মাঝে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের বিভিন্ন বাস কাউন্টারে সরকার নির্ধারিত অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। শনিবার সকালে সায়েদাবাদের জনপথ মোড়ে কয়েকটি বাস কাউন্টারে অভিযান চালান ভোক্তা অধিকারের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক বিকাশ চন্দ্র দাস। এ সময় ইকোনো সার্ভিসের দুটি কাউন্টারে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ায় এক লাখ টাকা, হানিফ পরিবহনের কাছ থেকে ২০ হাজার ও জোনাকি পরিবহন থেকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। সকাল থেকে তেমন যাত্রীর চাপ না থাকলেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। ঢাকা-লক্ষীপুর রুটে সরকার নির্ধারিত ভাড়া ৫৩৬ টাকা হলেও ইকোনো বাসে ৭০০ টাকা ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করেন যাত্রীরা। তবে কাউন্টার সংশ্লিষ্টরা বলছেন প্রতিটি গাড়ি ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে গেলেও ঢাকা আসার পথে ফাঁকা আসছে। তাই ক্ষতি পোষাতে কিছুটা অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।
এবারও দেশের বৃহত্তম ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হবে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে সব ধরনের প্রস্তুতি। এবার শোলাকিয়ায় ১৯৮তম ঈদুল ফিতরের বড় জামাতে নামাজ পড়াবেন ঈদগাহের নতুন ইমাম মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ ছাইফুল্লাহ। জামাত শুরু হবে সকাল ১০টায়। জামাতকে ঘিরে থাকছে চার স্তরের নিরাপত্তা বলয়। কিশোরগঞ্জ শহরের পূর্ব প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীর ঘেষে অবস্থিত শোলাকিয়া ঈদগাহে যুগ যুগ ধরে ঈদের নামাজে মুসল্লিদের ঢল নামে। এবারও এই মাঠে ঈদের নামাজ পড়বেন লাখো মানুষ। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে ঈদগাহ মাঠের লাইন টানা, রঙ করা, আজুখানা মেরামত, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ বেশিরভাগ কাজ। এখন চলছে সাজসজ্জাসহ শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।প্রায় ২৫০ বছরের প্রাচীন শোলাকিয়া ঈদগাহের আয়তন প্রায় ৬ একর। ১৮২৮ সালে শোলাকিয়া ঈদগাহে এক লাখ ২৫ হাজার বা ‘সোয়া লাখ’ মুসল্লি এক সঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করেন। সেই থেকে এ মাঠের নাম হয় ‘সোয়া লাখিয়া’, যা এখন শোলাকিয়া নামে পরিচিত। বড় জামাতে এক কাতারে দাঁড়িয়ে এই মাঠে নামাজ পড়লে বেশি সওয়াব পাওয়া যায়, এমন বিশ্বাসে প্রতি বছর ঈদের জামাতে অংশ নেন, দেশ-বিদেশের লাখো মুসল্লি। বংশ পরম্পরায় এখানে ঈদের নামাজ পড়ছেন অনেকে।জানা যায়, শোলাকিয়ায় ঈমাম নিয়ে বিতর্ক থাকায় গত ১৫ বছরে অনেকে ঈদগাহে নামাজ পড়তে যাননি। সেসময় মাঠের স্থায়ী ইমাম মুফতি আবুল খায়েল মোহাম্মদ সাইফুল্লাকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশ ইসলাহুল মুসলেমিন পরিষদের সভাপতি মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদকে ইমাম নিয়োগ করায় অনেকে মাঠে নামাজ পড়া বন্ধ করে দেন। এবার দীর্ঘ ১৫ বছর পর শোলাকিয়া ঈদগাহের নতুন ইমাম নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভায় মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ ছাইফুল্লাহকে পুনরায় ইমাম নিয়োগ দেয়া হয়। প্রথম বারের মতো ঈদগাহের নামকরণ সাইনবোর্ড লাগানো হয়। তাই আয়োজকদের ধারণা, এবার শোলাকিয়ায় মুসল্লির সমাগত গত বছরের তুলনায় বেশি হবে।এ পরিস্থিতিতে ঈদের জামাতকে ঘিরে নেয়া হয়েছে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যাবস্থা। চার স্তরের নিরাপত্তা বলয়ে বিপুল সংখ্য পুলিশ, র্যাব ছাড়াও থাকছে ৫ প্লাটুন বিজিবি। মাঠে প্রবেশের আগে মুসল্লিদের চারটি নিরাপত্তা চৌকি পার হতে হবে। প্রতিটি প্রবেশ পথে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে দেহ তল্লাশির পর আর্চ ওয়ের ভেতর দিয়ে মুসল্লিদের মাঠে প্রবেশ করতে দেয়া হবে। সিসি ক্যামেরায় মনিটর করা হবে মাঠের ভেতর ও চারপাশ। ঈদগাহের চারপাশে ৬টি ওয়াচ টাওয়ার বসানো হয়েছে। চারটি শক্তিশালী ড্রোন ক্যামেরা মনিটর করবে চারপাশ। প্রস্তুত থাকবে বোম ডিসপোজাল ইউনিট।পুলিশ ও জেলা প্রশাসনসহ ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির কর্মকর্তারা দফায় দফায় মিটিং করে ও মাঠ পরিদর্শন করে প্রস্তুতি তদারকি করছেন। সবশেষ আজ শনিবার (২৯ মার্চ) জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, র্যাবের ডিআইজিসহ প্রশাসনের ঊর্ধতন কর্মকর্তারা শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ পরিদর্শন করেন। এ সময় তারা সাংবাদিকদের কাছে সবশেষ প্রস্তুতি ও নিরাপত্তা বিষয় নিয়ে কথা বলেন।কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার হাছান চৌধুরী জানান, পোশাকি এক হাজারেরও বেশি পুলিশ সদস্য নিরাপত্তায় নিয়োজিত তাকবে। এ ছাড়া সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করবে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা। ঈদের দিন সকালে পুরো মাঠ মেটাল ডিডেক্টর দিয়ে সুইপিং করে তারপর আর্চওয়ে পার হয়ে মুসল্লিদের মাঠে প্রবেশ করতে দেয়া হবে। ৬৮টি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা ও ৪টি ড্রোন ক্যামেরা দিয়ে পুরো মাঠ ও আশপাশের এলাকা নজরদারি করা হবে।র্যাব ১৪’-এর ময়মনসিংহ ক্যাম্পের অধিনায়ক অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি নাইমুল হাসান কলেন, বিপুল সংখ্যক র্যাব সদস্য মাঠের সার্বিক নিরাপত্তা রক্ষা করবে। র্যাকের হাতে থাকবে স্নাইপার অস্ত্র। মুসল্লিরা যাতে শোলাকিয়ায় নামাজ পড়ে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারেন সেজন্য সব প্রস্তুতি র্যাবের রয়েছে।শোলাকিয়া ইদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান বলেন, ‘নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়ে সব কিছু সাজানো হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য মুসল্লিদের টুপি ও জায়নামাজ ছাড়া অন্য কিছু নিয়ে মাঠে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না।’‘শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়েছে। এবার গত বছরের তুলনায় বেশি মুসল্লি সমাগম ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে।’এদিকে, দূরের মুসল্লিদের জন্য শোলাকিয়া স্পেশাল নামে দুটি বিশেষ ট্রেন সার্ভিস চালু করেছে রেলওয়ে। ঈদের দিন সকাল ৬টায় ময়মনসিংহ থেকে এবং পৌনে ৬ টায় ভৈরব থেকে যাত্রা শুরু করে ট্রেন দুটি কিশোরগঞ্জ পৌঁছাবে সকাল ৮টায়। জামাত শেষে ট্রেন দুটি গন্তব্যে ছেড়ে যাবে দুপুর ১২টায়।
চীনের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে বিশ্বকে বদলে দিতে শিক্ষার্থীদের বড় কিছু করার স্বপ্ন দেখার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার (২৯ মার্চ) বেইজিংয়ে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শুধুমাত্র শেখার জায়গা নয়, এটি স্বপ্ন দেখারও জায়গা। স্বপ্ন দেখতে পারা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শক্তি উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আপনি যদি স্বপ্ন দেখেন, তবে তা ঘটবেই। আপনি যদি স্বপ্ন না দেখেন, তবে তা কখনও ঘটবে না।শিক্ষার্থীদের অতীতের দিকে নজর দেওয়ার অনুরোধ করে তিনি বলেন, যা কিছু ঘটেছে, কেউ না কেউ আগে তা কল্পনা করেছিল। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, কল্পনা যেকোনো কিছু থেকে বেশি শক্তিশালী। তিনি শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে অদ্ভুত এবং অকল্পনীয় বিষয়ে স্বপ্ন দেখতে উৎসাহিত করেন, যদিও অনেক সময় এটি অসম্ভব মনে হতে পারে। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, মানবসভ্যতার যাত্রা হলো অসম্ভবকে সম্ভব করা। সেটাই আমাদের কাজ। আর আমরাই তা করতে পারি।
শেষ সময়ে ঈদে বাড়ি ফিরছেন ঘরমুখো মানুষ। ঢাকার কমলাপুরে তাই যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। শুরু থেকে এবারের ট্রেনযাত্রা স্বস্তিদায়ক হলেও শনিবার (২৯ মার্চ) সন্ধ্যার পর তার উল্টো চিত্র দেখা গেছে। শনিবার কুড়িগ্রামগামী আন্তঃনগর কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ও পঞ্চগড়গামী পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেন প্রথমে ছাদ ভর্তি যাত্রী নিয়ে নির্ধারিত সময়ে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন ছেড়ে যায়। এরপর লালমনিরহাটগামী আন্তঃনগর ট্রেন লালমনি এক্সপ্রেস রাত ৯টা ৪৬ মিনিটে ছাদ ভর্তি মানুষ নিয়ে দেশের প্রধান ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন (কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন) ছেড়েছে। শনিবার রাতে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে এমন চিত্র দেখা গেছে। ঢাকা ছেড়ে যাওয়া ট্রেনগুলোর এসি কোচ ছাড়া প্রতিটি কোচের আসন ছিল যাত্রীতে পরিপূর্ণ। এছাড়া কোচগুলোর ভেতরেও যে যেখানে পেরেছেন দাঁড়িয়ে অবস্থান নিয়েছেন। মানুষের ভিড় এতটাই যে কোচগুলোর দরজা দিয়ে ভেতরে প্রবেশের কোনো সুযোগ নেই। দরজাগুলোতে বাদুড়ঝোলা হয়েও মানুষ যাত্রা করেছেন। এসব ট্রেনের ছাদে শত শত মানুষ অবস্থান করছেন। তারা পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়েই ট্রেনের ছাদে উঠেছেন। তারপরও রেলওয়ে কর্মীরা ও পুলিশের সদস্যরা তাদের ছাদে উঠতে নিরুৎসাহিত করেছেন।এছাড়া বিভিন্ন ট্রেনের অসংখ্য যাত্রী প্ল্যাটফর্মে অবস্থান করতে দেখা গেছে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ রেলওয়ে ঢাকা বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আরিফ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘কেউ যেন ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ করতে না পারে, সেজন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। কিন্তু তারপরও ঘরমুখো মানুষ ট্রেনের ছাদে উঠে পড়েছে। এখন যদি আমরা তাদের ফোর্স করে (জোরপূর্বক) নামাতে যাই, এতে যদি কেউ ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে আহত হন, তখন দোষটা রেলওয়েরই হবে।’
জনগণকে ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাই সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি। শনিবার (২৯ মার্চ) রাজধানীর বাড্ডায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের উদ্যোগে নিম্নআয়ের মানুষের মধ্যে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদেরকে প্রস্তুত থাকতে হবে…ষড়যন্ত্র হচ্ছে, চক্রান্ত হচ্ছে দেশে-বিদেশে। আবার ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার জন্যে। আমরা সেটা হতে দেবো না, খুব পরিষ্কার কথা। সবাই সজাগ থাকবেন, সর্তক থাকবেন। ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত শেষ হয়নি। সব ষড়যন্ত্র-চক্রান্তকে ব্যর্থ করে দিয়ে জনগণের সরকার আমরা প্রতিষ্ঠা করবই করব।’ মির্জা ফখরুল হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘আমার ভোট আমি দেবো, যাকে খুশি তাকে দেবো…এই অবস্থার মধ্য দিয়ে আমরা নির্বাচনটা চাই। আমরা এখনো বলছি, রাস্তায় নামি না। আমরা সাধারণ মানুষের কাছে যাচ্ছি এই ঈদ সামগ্রি নিয়ে, ইফতার সামগ্রি নিয়ে, তাদের সুখ-দুঃখে তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়াচ্ছি।’ ‘কিন্তু আমাদের স্বার্থে যদি, জনগণের স্বার্থে যদি কোনো বিঘ্ন সৃষ্টি করা হয় তাহলে বিএনপি আবার মাঠে নামবে। মাঠে নেমে তারা দাবি আদায় করে নিতে জানে। আমি কথাটা বলছি এজন্যে যে, আমাদেরকে প্রস্তুত থাকতে হবে।’ দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘খুব পরিষ্কার কথা। যে যেখানেই থাকেন, সেই ইউনাইটেড স্টেটে থাকেন, ফ্রান্সে থাকেন আর আমেরিকায় থাকেন; আর সেখান থেকে মানুষকে জাগ্রত করার চেষ্টা করেন। আমরা মানুষের সঙ্গে আছি, মানুষের সঙ্গে থেকে রাজনীতি করছি। সুতরাং আমাদেরকে কেউ বিপথে পরিচালিত করতে পারবে না, বাংলাদেশের মানুষকেও কেউ বিপথে পরিচালিত করতে পারবে না।’ মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পরিষ্কার কথা, আমরা ভারতের পক্ষেও নই, আমরা পাকিস্তানের পক্ষেও নই…আমরা আমেরিকার পক্ষেও নই, আমরা ইংল্যান্ডের পক্ষেও নই। আমরা বাংলাদেশের পক্ষে। আমাদের নেতা তারেক রহমান খুব পরিষ্কার করে বলেছেন, সবার আগে বাংলাদেশ…আমরা বাংলাদেশি।’ মির্জা ফখরুল বলেন, ‘৯০ শতাংশ নেতা-কর্মীকে জেলে নেওয়া হয়েছিলো। আমাদের ২০ হাজারের মতো নেতা-কর্মীকে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের সরকার হত্যা করেছিল। প্রায় ১৭শ নেতা-কর্মীকে গুম করেছিলো। ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা-গায়েবি মামলা দিয়েছিলো। পৃথিবীর গণতান্ত্রিক ইতিহাসে এই ধরনের নজির খুব কম। সেই একটা অবস্থা আমরা পার হয়ে এসেছি। আল্লাহতালার কাছে হাজারো শুকরিয়া আদায় করি যে তার অশেষ রহমতে…আমার কাছে মনে হয়, আল্লাহতালার অশেষ অলৌকিক শক্তি তার মাধ্যমে তিনি হঠাৎ করে একদিন হাসিনাকে যেন গুম করে দিলেন। হাসিনা গুম হয়ে গেছে আল্লাহতালার নির্দেশে। যে অত্যাচার-নির্যাতন তিনি মানুষের ওপরে করেছেন সেখান থেকে আপাতত মুক্তি পেয়ে একটা মুক্ত পরিবেশে একটা জায়গায় আমরা এসে দাঁড়িয়েছি।’ মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক তহিরুল ইসলাম তুহিন সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক, বিএনপির ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বিষয়ক সম্পাদক এমএ কাইয়ুম।
মিয়ানমারে ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৬৪৪ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৩ হাজার ৪০৮ জন। এ ঘটনায় এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ১৩৯ জন। শনিবার (২৯ মার্চ) দেশটির সামরিক কাউন্সিল এ তথ্য জানিয়েছে। খবর রয়টার্সের। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আট দেশে গতকাল শুক্রবার (২৮ মার্চ) শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত মিয়ানমারে নিহত ব্যক্তির সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে আজ শনিবার দুপুরেই। এর আগে প্রাথমিক খবরে দেশটিতে প্রায় ১ হাজার জন মারা গেছেন বলে জানানো হয়েছিল। মিয়ানমার ছাড়াও প্রতিবেশী থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে মারা গেছেন অন্তত ১০ জন। দেশ দুইটিতে হতাহত ব্যক্তিদের প্রকৃত সংখ্যা ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ, বিশেষত মিয়ানমার থেকে তাৎক্ষণিকভাবে পরিষ্কার জানা যায়নি। কেননা, মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ চলছে ও সেখান থেকে তথ্য পাওয়া কঠিন।
পবিত্র ঈদুল ফিতর সামনে রেখে বেড়েছে গরুর মাংসের দাম। প্রতি কেজি গরুর মাংসের দাম এলাকাভেদে ৩০-৪০ টাকা বেড়েছে। শনিবার (২৯ মার্চ) রাজধানীর মিরপুর-১ কাঁচাবাজার, মিরপুর-১৪ বউবাজার, কচুক্ষেত কাঁচাবাজারসহ আশপাশের কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায় প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৭৫০ টাকা। এদিকে কাঁচাবাজারের মতোই সুপারশপগুলোতেও দাম বেড়েছে। মিরপুর-১ প্রিন্স সুপারশপে প্রিমিয়াম (হাড়সহ) গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০০ টাকায় এবং হাড় ছাড়া ১০০০ টাকা। মিরপুর কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী হান্নান বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে গরুর মাংসের বাজার কিছুটা চড়া। আজ সকাল থেকেই ৭৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।’ গরুর মাংস কিনতে আসা একজন ক্রেতা জানান, অল্প নিলে দাম বেশি রাখে। কিন্তু বেশি নিলে কিছুটা কমে পাওয়া যায়। এদিকে রমজান উপলক্ষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সুলভ মূল্যের বাজারে গরুর মাংস ৬৫০ টাকা প্রতি কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। রাজধানীর ৪৮টি পয়েন্টে রমজান মাসজুড়ে এই সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সারাদেশে ডিম (প্রতি ডজন) ১০৮ টাকার জায়গায় ১০০ টাকা, ড্রেসড ব্রয়লার (প্রতি কেজি) ২৫০ টাকা, পাস্তুরিত দুধ (প্রতি লিটার) ৮০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।