ভোটের অধিকার বঞ্চিত করতে দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র হচ্ছে : ফখরুল

জনগণকে ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাই সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি। শনিবার (২৯ মার্চ) রাজধানীর বাড্ডায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের উদ্যোগে নিম্নআয়ের মানুষের মধ্যে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদেরকে প্রস্তুত থাকতে হবে…ষড়যন্ত্র হচ্ছে, চক্রান্ত হচ্ছে দেশে-বিদেশে। আবার ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার জন্যে। আমরা সেটা হতে দেবো না, খুব পরিষ্কার কথা। সবাই সজাগ থাকবেন, সর্তক থাকবেন। ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত শেষ হয়নি। সব ষড়যন্ত্র-চক্রান্তকে ব্যর্থ করে দিয়ে জনগণের সরকার আমরা প্রতিষ্ঠা করবই করব।’ মির্জা ফখরুল হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘আমার ভোট আমি দেবো, যাকে খুশি তাকে দেবো…এই অবস্থার মধ্য দিয়ে আমরা নির্বাচনটা চাই। আমরা এখনো বলছি, রাস্তায় নামি না। আমরা সাধারণ মানুষের কাছে যাচ্ছি এই ঈদ সামগ্রি নিয়ে, ইফতার সামগ্রি নিয়ে, তাদের সুখ-দুঃখে তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়াচ্ছি।’ ‘কিন্তু আমাদের স্বার্থে যদি, জনগণের স্বার্থে যদি কোনো বিঘ্ন সৃষ্টি করা হয় তাহলে বিএনপি আবার মাঠে নামবে। মাঠে নেমে তারা দাবি আদায় করে নিতে জানে। আমি কথাটা বলছি এজন্যে যে, আমাদেরকে প্রস্তুত থাকতে হবে।’ দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘খুব পরিষ্কার কথা। যে যেখানেই থাকেন, সেই ইউনাইটেড স্টেটে থাকেন, ফ্রান্সে থাকেন আর আমেরিকায় থাকেন; আর সেখান থেকে মানুষকে জাগ্রত করার চেষ্টা করেন। আমরা মানুষের সঙ্গে আছি, মানুষের সঙ্গে থেকে রাজনীতি করছি। সুতরাং আমাদেরকে কেউ বিপথে পরিচালিত করতে পারবে না, বাংলাদেশের মানুষকেও কেউ বিপথে পরিচালিত করতে পারবে না।’ মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পরিষ্কার কথা, আমরা ভারতের পক্ষেও নই, আমরা পাকিস্তানের পক্ষেও নই…আমরা আমেরিকার পক্ষেও নই, আমরা ইংল্যান্ডের পক্ষেও নই। আমরা বাংলাদেশের পক্ষে। আমাদের নেতা তারেক রহমান খুব পরিষ্কার করে বলেছেন, সবার আগে বাংলাদেশ…আমরা বাংলাদেশি।’ মির্জা ফখরুল বলেন, ‘৯০ শতাংশ নেতা-কর্মীকে জেলে নেওয়া হয়েছিলো। আমাদের ২০ হাজারের মতো নেতা-কর্মীকে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের সরকার হত্যা করেছিল। প্রায় ১৭শ নেতা-কর্মীকে গুম করেছিলো। ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা-গায়েবি মামলা দিয়েছিলো। পৃথিবীর গণতান্ত্রিক ইতিহাসে এই ধরনের নজির খুব কম। সেই একটা অবস্থা আমরা পার হয়ে এসেছি। আল্লাহতালার কাছে হাজারো শুকরিয়া আদায় করি যে তার অশেষ রহমতে…আমার কাছে মনে হয়, আল্লাহতালার অশেষ অলৌকিক শক্তি তার মাধ্যমে তিনি হঠাৎ করে একদিন হাসিনাকে যেন গুম করে দিলেন। হাসিনা গুম হয়ে গেছে আল্লাহতালার নির্দেশে। যে অত্যাচার-নির্যাতন তিনি মানুষের ওপরে করেছেন সেখান থেকে আপাতত মুক্তি পেয়ে একটা মুক্ত পরিবেশে একটা জায়গায় আমরা এসে দাঁড়িয়েছি।’ মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক তহিরুল ইসলাম তুহিন সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক, বিএনপির ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বিষয়ক সম্পাদক এমএ কাইয়ুম।

ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানালেন চরমোনাই পীর

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম (পীর চরমোনাই) ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীর প্রতি আন্তরিক মোবারকবাদ ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। শুভেচ্ছা বাণীতে পীর চরমোনাই দেশের সর্বস্তরের জনতাকে আন্তরিক মোবারক জানিয়ে সকলের মঙ্গল কামনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘একটি নির্মম স্বৈরতন্ত্রকে উৎখাত করে নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের একটি মাহেন্দ্রক্ষণে আমরা হাজির রয়েছি। এমন মুক্ত ও স্বাধীন পরিস্থিতিতে উদযাপিত হওয়া ঈদের এই দিনে সবাইকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানাচ্ছি।’পীর চরমোনাই আরো বলেন, ‘রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের পয়গাম নিয়ে মাহে রমজান এসেছিল। পবিত্র রমজান সকলকে হিংসা-বিদ্বেষ, মারামারি, পরনিন্দা ও চোগলখুরি ছেড়ে দিয়ে আত্ম সংযম অর্জন করতে শিখায় এবং আল্লাহর ভয় অর্জনের শিক্ষা দেয়। সকল প্রকার ফেৎনা-ফাসাদ ছেড়ে দিয়ে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সত্যিকার দেশপ্রেমিক হিসেবে ইসলাম, দেশ ও মানবতার কল্যাণে কাজ করার শিক্ষা দেয়। সকল ভেদাভেদ ভুলে মানবতার কল্যাণে কাজ করার শিক্ষা দেয়।’তিনি বলেন, ‘ঈদ একটি ইবাদত ও আনন্দের উপলক্ষ। এই দিনে আমাদের আনন্দ যেনো কোনোভাবেই শরীয়াহ সীমা লঙ্ঘন না করে সেইদিকে খেয়াল রাখার আহ্বান করবো। জুলাই আন্দোলনে যারা শহিদ হয়েছেন তাদের পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা ও সমবেদনা জানাচ্ছি। আল্লাহ আপনার স্বজনকে জান্নাতের উঁচু মাকাম দান করবেন। এবং সবরের জন্য আপনারাও মর্যাদাবান হবেন। আহত সকল যোদ্ধাদের প্রতিও শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।’পীর চরমোনাই ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী এবং স্বৈরাচার বিরোধী সকল রাজনৈতিক সংগঠন ও নেতা-কর্মীদেরকে হৃদয় উজার করে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন। সেইসাথে সাংবাদিক, দেশের সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিয়োজিত পেশাজীবী এবং ছোট-বড় সকল উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীবৃন্দ আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান তিনি।ইসলামী আন্দোলনের আমীর প্রধান উপদেষ্টাসহ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যবৃন্দকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ঈদ মোবারক জানিয়ে বলেন, ‘দেশের ক্রান্তিকালে আপনাদের ভূমিকা জাতি সম্মানের সাথে স্মরণ করছে এবং করবে ইনশাআল্লাহ। আমরা সকলে মিলে আগামীর বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ নির্মাণ করবোই ইনশাআল্লাহ।’রমজানের শিক্ষা নিয়ে তওবায় শুদ্ধ হয়ে সকলে মিলে গঠন করবো নতুন বাংলাদেশ এই প্রত্যাশা করেন।তিনি সর্বস্তরের জনতার প্রতি ঈদুল ফিতরের অনাবিল আনন্দ, সুখ-সমৃদ্ধি, সুস্বাস্থ্য কামনা করেন। পীর চরমোনাই দলীয় সর্বস্তরের নেতাকর্মীসহ সব মুজাহিদ, মুহিব্বীন-এর প্রতি ঈদের শুভেচ্ছা জানান।সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম নিজ গ্রাম বরিশালের ঐতিহাসিক চরমোনাই মাদ্রাসা মসজিদে ঈদের জামাতে ইমামতি করবেন এবং জামাতের পর এলাকার গণ্যমান্য, দলীয় নেতাকর্মী ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানি এবং সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই নিজগ্রাম চরমোনাই ঈদের নামাজ আদায় করবেন। মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ ঢাকার জুরাইনে ঈদের জামাতে ইমামতি করবেন এবং ঈদশেষে জনতার সাথে কুশল বিনিময় করবেন।

দেশ ও জনগণের স্বার্থে রাজপথে নামার হুঁশিয়ারি মির্জা ফখরুলের

যে কোনো ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে বিএনপি সফল হবে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার (২৯ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর ১০০ ফিটের বেরাইদ এলাকার দুস্থদের মধ্যে ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এমন মন্তব্য করেন।অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে, কোনোভাবে কোনো চক্রান্ত সফল হতে দেয়া হবে না। ফ্রান্স, লন্ডন, আমেরিকা থেকে কেউ যদি দেশের মানুষকে উত্তেজিত করার চেষ্টা করেন, তবে তা রুখে দেয়া হবে। দেশে কোনো অস্থিতিশীল পরিবেশ মেনে নেয়া হবে না।’‘বিএনপি এখন রাস্তায় নামে না। কিন্তু দল ও দেশের জনগণের স্বার্থে আঘাত এলে বিএনপি আবার মাঠে নামবে।’বিএনপির মহাসচিব বলেন, বিএনপি ভারতের পক্ষেও নয়, পাকিস্তানের পক্ষেও নয়। আমেরিকার পক্ষেও নয়, ইংল্যান্ডের পক্ষেও নয়। বিএনপি বাংলাদেশের পক্ষে।’ভারতের আগ্রাসী মনোভাবের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘১৭ বছর লড়াই সংগ্রাম হলো, সুখি সমৃদ্ধশালী দেশ গড়ার জন্য এই লড়াই। কিন্তু কেউ কেউ এটাকে ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছে, বিভাজন তৈরির চেষ্টা করছে, কিন্তু তা হতে দেয়া যাবে না। আমরা তিস্তা নদীর পাড়ে গিয়ে প্রতিবাদ করেছি।’মির্জা ফখরুল দাবি করেন, বিএনপি সব পরিবর্তন এনেছে, সংস্কার বিএনপি করেছে। একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাতিল করে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাও বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছে।এ সময় গত ১৭ বছরে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করেন দলটির মহাসচিব। ‘এত নির্যাতন, এত মামলা, গুম, খুন, সহ্য করেছে বিএনপি। বিএনপি করে এমন মানুষ নির্যাতনের স্বীকার হয়েছে ৯৯ শতাংশ। কিন্তু একদিন হঠাৎ করে হাসিনাকে আল্লাহ গুম করে দিলেন, মানুষ শান্তি পেল। ডাইনির হাত থেকে আল্লাহ দেশের মানুষকে রক্ষা করেছেন। নতুন সুযোগ তৈরি করেছে।’ছাত্র-জনতার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ভয়াবহ দানবের থেকে দেশ মুক্তি পেয়েছে উল্লেখ করে দ্রুততম সময়ে নির্বাচন দেয়ার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।তিনি বলেন, ‘ড. ইউনূসকে দেশের মানুষ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বানিয়েছে, স্বল্প সময়ের মধ্যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে নির্বাচন দেয়ার জন্য। সমস্ত সংগ্রাম হয়েছে নির্বাচনের জন্য, তাইতো বিএনপি নির্বাচনের কথাই বলে। তবে অনির্দিষ্টকালের জন্য এই সরকার ক্ষমতায় বসে থাকবে, জনপ্রতিনিধিত্বে কেউ থাকবে না এমনটা মেনে নেয়া গবে না।’বিএনপির মহাসচিব অভিযোগ করেন, একটি মহল দেশে বিশৃঙ্খলা তৈরির জন্য নির্বাচনকে পেছাতে চাইছে।

ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনে যাকাতভিত্তিক অর্থব্যবস্থার বিকল্প নেই: আহমদ কাইয়ূম

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম বলেছেন, ‘ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনে যাকাতভিত্তিক অর্থব্যবস্থার বিকল্প নেই।’ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কুমিল্লা জেলা উত্তরের মুরাদনগর উপজেলার দারোরা ইউনিয়নের দারো বাজার এলাকায় শুক্রবার (২৮ মার্চ) সন্ধ্যায় ঈদ উপলক্ষে দলের আমীরের পক্ষ থেকে ঈদ হাদিয়া লুঙ্গি বিতরণ পূর্ব অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে অনুষ্ঠানে আহমদ কাইয়ূম আরো বলেন, ‘বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় আশরাফুল মাখলুকাত মানুষ বস্তি ও ঝুঁপড়িতে মানবেতর জীবন যাপন করে। খোলা আকাশের নিচে, বৃষ্টি ভিজে ও রোদে পুড়ে। অপরদিকে এক শ্রেণির মানুষ টাকার তোষকে অতি আরামপ্রিয় জীবন যাপন করে। অতি অপচয় করে, দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে সেকেন্ড হোম তৈরি করে। প্রচলিত অর্থব্যবস্থায় গরিব আরো গরিব এবং ধনী আরো ধনী হয়। এই বৈষম্য দূর করতে হলে যাকাতভিত্তিক অর্থব্যবস্থা প্রবর্তণ করতে হবে। সাধারণ মানুষের দুঃখ কষ্ট লাঘবে ইসলামী তথা যাকাতভিত্তিক অর্থব্যবস্থাই একমাত্র বিকল্প।’ তিনি ইসলামী অর্থব্যবস্থার প্রবর্তণ করে বৈষম্যহীন ও ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ গঠনে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মুরাদনগর উপজেলা সভাপতি মুহাম্মদ মফিজুল ইসলাম, যুবনেতা মাওলানা শোয়াইব আহমদ। দারোরা ইউনিয়নের সভাপতি হাফেজ শরিফুল ইসলাম সাদ্দামের সভাপতিত্বে ও ছাত্রনেতা আহসান হাবিবের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, যুবনেতা জহিরুল ইসলাম, ছাত্রনেতা মূসা হায়দার।

ফ্যাসিস্ট সরকার আর এক বছর থাকলে আমাকে ঝুলিয়ে দিত: বাবর

শুক্রবার জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালে গণঅভ্যুত্থানে আহতদের দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি এ কথা বলেন। সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত করতে ছাত্রদের ভূমিকা ছিল অসাধারণ। তবে এখানে কারো একার কৃতিত্ব দেওয়া ঠিক হবে না। লুৎফুজ্জামান বাবর বলেন, গণঅভ্যুত্থানে যারা আহত হয়েছে তাদের সুচিকিৎসা দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। তিনি বলেন, সাড়ে ১৭ বছর কারাগারে থাকার পর যে আমি এখানে এসেছি তা কল্পনাও করতে পারি নি। দীর্ঘ সময় কারাবাসের পর গত ১৬ জানুয়ারি মুক্তি পান লুৎফুজ্জামান বাবর। এর আগে ১৪ জানুয়ারি চট্টগ্রামে আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনায় অস্ত্র আইনে করা পৃথক মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের দায় থেকে খালাস পান তিনি।

৩ মে রাজধানীতে মহাসমাবেশ ডেকেছে হেফাজত

আগামী ৩ মে রাজধানীতে মহাসমাবেশ ডেকেছে হেফাজতে ইসলাম। শুক্রবার (২৮ মার্চ) কেন্দ্রীয় খাস কমিটির এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। এদিন বিকেলে জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মিলনায়তনে সংগঠনের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমানের সভাপতিত্বে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন- কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মাওলানা মাহফুজুল হক, ড. আহমদ আবদুল কাদের, মাওলানা আহমাদ আলী কাসেমী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনাইদ আল হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, অর্থসম্পাদক মাওলানা মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী,‌ প্রচার সম্পাদক মুফতি কেফায়েতুল্লাহ আজহারী প্রমুখ। সভায় পরামর্শক্রমে ৫ মে ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে গণহত্যা, পিলখানা হত্যাকাণ্ড, গুম-খুন, ২০২১ সালে মোদী বিরোধী আন্দোলন ও চব্বিশের ছাত্রজনতার ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে গণহত্যার বিচার এবং হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের আমলে দায়েরকৃত সব মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবিতে ৩ মে শনিবার ঢাকায় মহাসমাবেশ করবে সংগঠনটি। এছাড়া আগামী জুন মাসে সব জেলা ও মহানগর প্রতিনিধিদের নিয়ে জাতীয় কনভেনশন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সভায় গৃহীত আরেক প্রস্তাবে বলা হয় যে, জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ করুন।

দ্রুত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করুন, সরকারকে আমীর খসরু

অন্তর্বর্তী সরকারকে ইঙ্গিত করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, এখন শেখ হাসিনার মতো একটি সুর শোনা যাচ্ছে। যারা বলছেন দেশের উন্নয়ন করছি, দেশের মানুষের জন্য কাজ করছি, দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিচ্ছি। তাদের বলতে চাই, ‘সরি, এটা আপনাদের দায়িত্ব না। আপনারা দ্রুত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করুন।’ চট্টগ্রাম ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে ইফতার মাহফিল ও মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। আমীর খসরু বলেন, শেখ হাসিনার পলায়নের পর দেশের মানুষের মনোজগতে যে বিশাল পরিবর্তন এসেছে, তা রাজনীতিবিদসহ সবাইকে ধারণ করতে হবে। মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী দেশকে গঠন করতে হবে। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর নতুন বাংলাদেশ, নতুন রাজনীতি, নতুন যে প্রত্যাশা সেটা সবাইকে অনুধাবণ করতে হবে। গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে হবে। আর দেশের মালিকানা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে। এ জন্য সুন্দর একটা নির্বাচন করতে হবে। এর মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক অর্ডার ফিরিয়ে আনতে হবে। তিনি বলেন, বিএনপি ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে। বিএনপি ও সসমনা দলগুলো যুগপৎ আন্দোলন করেছে। এখন যে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে, জাতীয় সরকারের মাধ্যমে সেটা বাস্তবায়ন করা হবে। ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর প্রমুখ।

নির্বাচনের পরে সংস্কার হবে না: নাহিদ ইসলাম

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েই বিচার, সংস্কার এবং গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নতুন সংবিধান তৈরির কথা বলছি। আমরা মনে করি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বিচার ছাড়াই যদি আমরা নির্বাচনের দিকে আগাই তাহলে নির্বাচনের পরে যে সরকার আসবে তারা যে সংস্কার প্রক্রিয়া চলমান রাখবে সে নিশ্চয়তা আমাদের নেই। তাই আমরা চাই বিদ্যমান আইনের মধ্যেই দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচার করতে হবে। শুক্রবার বিকেলে সিরাজগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির ইফতার ও দোয়া মাহফিল উপলক্ষ্যে আয়োজিত ইফতারপূর্ব সভায় ভার্চু‌য়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি তরুণদের উদ্যোগে গঠিত একটি রাজনৈতিক দল, যা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে নতুন অধ্যায় সৃষ্টির জন্য কাজ করছে। আমরা বলেছি রাষ্ট্রের সংস্কার হতে হবে, রাষ্ট্রের মৌলিক পরিবর্তন হতে হবে, কারণ পরিবর্তনের জন্যই এই গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। যদি সংস্কার ও পরিবর্তন না হয়, তাহলে কেন এতো মানুষ জীবন দিলেন, কেন এতো মানুষ রক্ত দিলেন। আমরা দেখছি অনেকে সংস্কারকে পাশ কাটিয়ে নির্বাচনের দিকে যেতে যাচ্ছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সিরাজগঞ্জের মানুষের অবদানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে নাহিদ ইসলাম আগামীতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে ঈদের অগ্রিম শুভেচ্ছা জানান। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব মাহিন সরকার, এস এম সাঈদ মোস্তাফিজ, উত্তরাঞ্চলীয় সংগঠক জুথি, আহত ও শহীদ পরিবারের সদস্য নেহাল, ফজল হোসেন ও মহসিন রেজা প্রমুখ।

অন্তর্বর্তী সরকারের কথায় হাসিনার কথার মিল পাওয়া যাচ্ছে: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার ধোঁয়াশা তৈরি করছে এবং তাদের কথার সঙ্গে হাসিনার কথার মিল পাওয়া যাচ্ছে।’ শুক্রবার (২৮ মার্চ) দুপুরে নয়াপল্টনস্থ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে রিকশা, ভ্যান ও অটোচালকদের মাঝে ঈদ উপহার প্রদান অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তারা। এ সময় রিজভী বলেন, ‘সরকারকে নির্বাচন নিয়ে স্পষ্টভাবে মাস, তারিখ দিয়ে ঘোষণা দিতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি বলেই জুলাই আন্দোলন হয়েছে। এ সরকার ভোটে নির্বাচিত না হলেও তার জনসমর্থন রয়েছে।’ একই অনুষ্ঠানে কথা বলেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন। একটি মহল তার আদালতের মেয়র ঘোষণার রায় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিতর্ক তৈরি করছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। ইশরাক হোসেন বলেন, ‘ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্যই আদালতে গিয়েছিলাম, আইনি প্রক্রিয়া শেষে ন্যায়বিচার পেয়েছি। এ রায়ের মাধ্যমে আইনের শাসনের দৃষ্টান্ত তৈরি হয়েছে।’

দুষ্কৃতকারীদের কঠোর হস্তে দমনের বিকল্প নেই : মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বেকায়দায় ফেলতেই লোমহর্ষক ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটানো হচ্ছে। তাই দুস্কৃতিকারিদের কঠোর হস্তে দমনের বিকল্প নেই। এজন্য দেশের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। না হলে ফ্যাসিস্ট শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে।’ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক নিন্দা, প্রতিবাদ ও শোক বিবৃতি তিনি এসব কথা বলেন। গত ২৬ মার্চ সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলার জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নাছির উদ্দিনকে হত্যার ঘটনায় এই বিবৃতি দেন তিনি। বিবৃতিতে বলা হয়, নাসির উদ্দিনকে সশস্ত্র দুস্কৃতিকারীরা বর্বর ও নিষ্ঠুর হামলা চালিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠীর পতনের পর দুস্কৃতিকারিরা আবারও দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। একই সঙ্গে নৈরাজ্যের সৃষ্টির মাধ্যমে ফায়দা হাসিলের অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে। দুস্কৃতিকারিদের নির্মম ও পৈশাচিক হামলায় নাছির উদ্দিন নিহতের ঘটনা সেই অপতৎপরতারই নির্মম বহিঃপ্রকাশ। আর বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বেকায়দায় ফেলতেই এ ধরণের লোমহর্ষক ঘটনার বারবার পুনরাবৃত্তি ঘটানো হচ্ছে। তাই এসব দুস্কৃতিকারিদের কঠোর হস্তে দমনের বিকল্প নেই। এতে আরো বলা হয়, গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠাসহ দেশের মানুষের জানমাল রক্ষায় দলমত নির্বিশেষে সকল শ্রেণী-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। নইলে ওঁত পেতে থাকা আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের দোসররা মাথাচাড়া দিয়ে দেশের অস্তিত্ব বিপন্ন করতে মরিয়া হয়ে উঠবে। নাছির উদ্দিনকে হত্যাকারী দুস্কৃতিকারিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আহ্বান জানাই। বিবৃতিতে নিহতের রুহের মাগফিরাত কামনাসহ শোকার্ত পরিবার পরিজনদের প্রতি গভীর সহমর্মিতা জ্ঞাপন করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম।

আ. লীগ দেশের মানুষের সঙ্গে বারবার প্রতারণা করেছে : রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেছেন, ‘স্বাধীনতার মূলমন্ত্র ছিল গণতন্ত্র। কিন্তু স্বাধীনতা পাওয়ার পরও দেশের গণতন্ত্র বারবার হরণ করেছে আওয়ামী লীগ। তারা সব সময় মিথ্যা ও ভাঁওতাবাজি করে দেশের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছে।’ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর উত্তরখান এলাকায় গরিব, দুস্থ ও অসহায় মানুষদের মধ্যে ঈদসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধান অতথির বক্তব্যে রিজভী বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার কথা ও কাজের সঙ্গে মিল ছিল না। তিনি জনগণের ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে নিজে মালিক সেজে বসেছিলেন। ব্যাংক-বীমা ও বড় বড় প্রকল্পের আড়ালে তার পরিবার অর্থ লুট করেছে। যা সব দেশের বাইরে পাচার করেছে শেখ পরিবার।’ জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার কথার সঙ্গে কাজের যথার্থ মিল থাকা উচিত। ডিসেম্বরে নির্বাচনের কথা বললেও সেটি আবার মার্চ বা জুনে চলে যায় কিভাবে? আমরা নির্বাচনের জন্য দ্রুত সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণার আহ্বান জানাই।’ ঈদসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

আপসকামী বিরোধী রাজনীতিবিদদের জন্য ৫ আগস্ট দ্বিতীয় স্বাধীনতা নয়: নাহিদ ইসলাম

জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, সম্প্রতি ‘প্রথম স্বাধীনতা’ ও ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। যারা গত ১৬ বছর আওয়ামী দুঃশাসনের ভুক্তভোগী ছিলেন, তাদের কাছে এটা অবশ্যই স্বাধীনতা। ৫ আগস্ট আমরা নতুন করে স্বাধীন হয়েছি। অন্যদিকে, এই সময়টাতে যাদের ব্যাংক–ব্যালেন্স অক্ষুণ্ন ছিল, যারা আপস করে বিরোধী রাজনীতি করেছে- তাদের জন্য হয়তো এটা স্বাধীনতা নয়। কারণ তারা হয়তো সব আমলেই স্বাধীন ছিলেন। তাদের কাছে প্রথম কিংবা দ্বিতীয় স্বাধীনতা গুরুত্বপূর্ণ না। তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ লুটপাতের স্বাধীনতা। বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরে রূপায়ন টাওয়ারে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন। ২০২১ সালের মোদীবিরোধী আন্দোলনে নিহতদের তালিকা প্রকাশ, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও বিচারের দাবিতে এর আয়োজন করে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’। অনুষ্ঠানে নাহিদ ইসলাম মোদীবিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গত ১৫ বছরের রাজনৈতিক আন্দোলনে মোদী বিরোধী আন্দোলনের তাৎপর্য অনেক বেশি। এই আন্দোলনের মাধ্যমে এ দেশে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় দলগুলো একই কাতারে নেমে এসেছিল। সেই আন্দোলনে পুলিশসহ ছাত্রলীগ-যুবলীগ সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিল। কিন্তু সেই হত্যাকাণ্ডে কতজন মারা গেছেন, সেই সংখ্যাটা এখনও নিরূপণ করা যায়নি। এ সময় তিনি নিহতদের তালিকা করে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানান। তিনি বলেন, এ দেশে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের উদ্দেশ্যে ভারতের গণমাধ্যমগুলোতে হিন্দু ‘নির্যাতনের ‌‌গল্প’ প্রচার করা হচ্ছে। শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতারা ভারতে অবস্থান করছেন। ভারত গণহত্যাকারীদের আশ্রয় দিয়ে কোনো ভালো উদাহরণ সৃষ্টি করেনি। গণহত্যাকারীদের বিচার কার্যক্রম এগোচ্ছে। ভারত এসব অপরাধীদের ফেরত দেবে- এটাই আমাদের প্রত্যাশা। এর মাধ্যমেই বোঝা যাবে, ভারত এ দেশের সঙ্গে কতটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে আগ্রহী। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন মোদীবিরোধী আন্দোলনের সংগঠক ও জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব আকরাম হোসেন, আন্দোলনে নিহত হাফেজ জোবায়েরের বাবা ফজলুল হক, আসাদুল্লাহ রাজিনের বাবা শফিকুল ইসলাম, হারেস মিয়ার বাবা আলতাফ আলী, কামাল মিয়ার বাবা মো. জালালউদ্দিন, আল আমিনের বাবার সুফি আলী প্রমুখ।

পাকিস্তানপন্থিরা প্রতিশোধ নিচ্ছে: জাসদ

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের নেতারা বলেছেন, জাতির দুর্ভাগ্য ৫৪ বছরের মাথায় মুক্তিযুদ্ধবিরোধী পাকিস্তানপন্থিরা রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে মুক্তিযুদ্ধে তাদের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিচ্ছে। স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের নাম-নিশানা-ইতিহাস-স্মারক চিহ্ন মুছে ফেলছে। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে মীমাংসিত বিষয়গুলো অমীমাংসিত ও অস্বীকার করছে। বুধবার (২৬ মার্চ) মহান স্বাধীনতা দিবসে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটি, শ্রমিক জোট, জাতীয় যুব জোট ও ছাত্রলীগ নেতারা শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা, গণশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপচারিতায় জাসদ নেতারা এসব কথা বলেন। তারা বলেন, স্বাধীনতা বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠতম অর্জন, সর্বোচ্চ গৌরব, অহংকার ও মর্যাদার বিষয়। স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ৫৪ বছর অতিবাহিত হওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রমাণ করেছে বাঙালির স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার যেমন ঐতিহাসিক ন্যায্যতা ছিল ঠিক, তেমনই স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র ও জাতীয় বিকাশের ঐতিহাসিক সহজাত আত্মশক্তির বাংলাদেশ রাষ্ট্র ও বাঙালি জাতি নিজের মধ্যে ধারণ করে। জাসদ নেতারা আরও বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অর্থাৎ গণতন্ত্র-সমাজতন্ত্র-ধর্মনিরপেক্ষতা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনার ভিত্তিতে পরিচালিত করা সম্ভব হলে বাংলাদেশ আরও বহুগুণ অগ্রগতি-উন্নয়ন-সমৃদ্ধি অর্জন করতে পারতো। দেশের সাধারণ মানুষের মানবিক জীবনমান আরও বহুগুণ উন্নত হতো। এ রকম পরিস্থিতিতে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ পুনরুদ্ধার করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় পরিচালিত করার জন্য সব দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির প্রতি জাসদ নেতারা আহ্বান জানান। তারা মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত নারী, পুরুষ, শিশু এবং স্বজনহারাদের সমবেদনা জানাতে ১ মিনিট নীরবতা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধের গণশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন জাসদ সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শফি উদ্দিন মোল্লা, জনসংযোগ সম্পাদক শরিফুল কবির স্বপন, সহ-সম্পাদক আলী হাসান তরুন, দফতর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, জাতীয় শ্রমিক জোটের সাংগঠনিক সম্পাদক কনক বর্মন, ঢাকা জেলা জাসদের সাংগঠনিক সম্পাদক উত্তম দাস, জাতীয় যুব জোটের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন বাচ্চু, ছাত্রলীগ সভাপতি রাশিদুল হক ননী, যুব জোট কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অংকুর, মোতালেব হোসেন প্রমুখ।

দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলে বাংলাদেশে কিছু নেই: মির্জা আব্বাস

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘জুলাই–আগস্টে ছাত্র–জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে নতুন করে স্বৈরাচারকে তাড়িয়ে স্বাধীনতার নতুন স্বাদ পেয়েছি। অনেকে বলেন দ্বিতীয় স্বাধীনতা। আসলে আজকের স্বাধীনতা দিবস প্রমাণ করে, দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলে বাংলাদেশে কিছু নেই।’ তিনি বলেন, ‘যারা বলেন, তারা আজকের স্বাধীনতা দিবসকে খাটো করতে চান, একাত্তরের স্বাধীনতায় তাদের কোনো ভূমিকা ছিল না। সুতরাং এই দিনটাকে তারা খাটো করতে চান। আমি বলব, তারা যেন এখানেই বিরত থাকেন। এই স্বাধীনতা দিবসকে যেন সম্মান জানান এবং সম্মান করেন।’ আজ বুধবার (২৬ মার্চ) মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবসে সকাল সোয়া আটটার দিকে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথাগুলো বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনো সংশয় আছে কি না—এমন এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে। আমরা সেখানেই বিশ্বাস রাখতে চাই। এখানে আমরা বিশ্বাসের পরিবর্তন করতে চাই না।’ নির্বাচন নিয়ে কোনো চ্যালেঞ্জ আছে কি না, এমন এক প্রশ্নে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দলই প্রতিপক্ষ। নির্বাচন হবে না—এমনটা বিশ্বাস করতে চাই না।’ ডিসেম্বরে নির্বাচন না হলে বিএনপির পদক্ষেপ কী হবে—এমন প্রশ্নে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘নির্বাচন হবে না—এমনটা আমরা বিশ্বাস করি না। তেমন কিছু হলে সময় এলে দেখা যাবে।’

জনপ্রতিনিধি ছাড়া সংবিধান পরিবর্তন করা কঠিন: জোনায়েদ সাকি

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ‘সংস্কারের অনেকগুলো জায়গা আছে যেগুলো নির্বাচনের আগেই নির্বাহী আদেশে সংস্কার করা সম্ভব। আবার অনেকগুলো সংস্কারের প্রশ্ন যেগুলো কাঠামোগত, এগুলো নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের করতে হবে। সেই নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ছাড়া সংবিধান পরিবর্তন করা আসলে কঠিন।’ বুধবার (২৬ মার্চ) স্বাধীনতা দিবসে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আমরা বলছি, সংস্কারের ক্ষেত্রে যেভাবে এরইমধ্যে ঐকমত্য কমিশন উদ্যোগ নিয়েছে, তাদের এই কাজটি করার ছিল, রাজনৈতিক দলগুলো সর্বসম্মত জায়গায় দাঁড়াবে। সেটি আমাদের জাতীয় সনদ আকারে সামনে আসবে। সেই পরিবর্তনগুলো আসবে। আর যেসব জায়গায় অনৈক্য আছে, দ্বিমত আছে সেই সংস্কারগুলোর বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো অধিকতর জনমত গঠন করবে। জনগণের সমর্থনের ওপর বিষয়টি নির্ভর করবে।’ তিনি বলেন, ‘এদিকে আমরা যতটুকু সংস্কার করতে পারি তার অনেকগুলো হয়তো নির্বাচনের আগেই নির্বাহী আদেশে সম্ভব। আর যেগুলো পরিবর্তনের অঙ্গীকার থাকবে আগামী নির্বাচন যাতে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে এই সংবিধান বদলাতে পারে, সংস্কার করতে পারে, সেজন্য আমরা বলেছি, সংবিধান সংস্কার পরিষদের নির্বাচন দরকার।’ গণসংহতি আন্দোলনের এই নেতা বলেন, ‘সংস্কার যেহেতু আমাদের লক্ষ্য হিসেবে নির্ধারিত হয়েছে, তাই আগামী সংসদ হবে সংবিধান সংস্কার পরিষদ। যেখানে সংস্কার হবে জনগণের সম্পূর্ণ ম্যান্ডেট নিয়ে। ফলে আদালত এটাকে সংবিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না সেটির দিকে তাকাবে না, আদালত এই সংস্কারকৃত সংবিধানকে সুরক্ষা দেবে। সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ, ফলে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে সংস্কার কাজটির সম্পন্ন করতে হবে। যে সময় আছে এই সময়ের মধ্যে ঐকমত্য সম্ভব। এই ঐকমত্যের যে অংশগুলো নির্বাহী আদেশে বাস্তবায়ন করা দরকার সেগুলো নির্বাহী আদেশে বাস্তবায়ন হয়ে যাবে। আমরা মনে করি যথেষ্ট সময় আছে সংস্কারের জন্য।’ তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতা দিবস এবারের আরও অনেক গভীর তাৎপর্য নিয়ে আমাদের সামনে হাজির হয়েছে। বিশেষভাবে চব্বিশের জুলাই-আগস্টের যে গণঅভ্যুত্থান সেটা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জনগণের স্বপ্ন তৈরি হয়েছিল, যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছিল, সেটিকে আবার নতুন করে সামনে নিয়ে এসেছে।’ জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, ‘প্রত্যেক নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচারের যে অঙ্গীকার ছিল রাষ্ট্রের, ৫৪ বছরে সেটি হয়নি। জুলাই-আগস্ট আবার বৈষম্যহীন বাংলাদেশের স্বপ্নকে সামনে এনে ৭১ সালকে নতুন করে আবার আমাদের সামনে হাজির করেছে। জুলাই-আগস্টে মানুষ যেভাবে আত্মত্যাগ করেছে, শহীদ হয়েছে, আহত হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে আরেকটি সুযোগ বাংলাদেশের কাছে এসেছে যে, আমরা কীভাবে রাষ্ট্র ও সব কাঠামোকে জনগণের পক্ষে জনগণের রাষ্ট্র তৈরি করতে পারি।’ এ সময় গণসংহতি আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।

অনৈক্য কিছু নেই, আছে স্বার্থের সংঘাত: মির্জা আব্বাস

রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অনৈক্য কিছু নেই, আছে স্বার্থের সংঘাত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেছেন, ‘প্রত্যেকটা দলের নিজস্ব আদর্শিক জায়গা ও মতাদর্শ আছে। সবাই যার যার মতাদর্শ থেকে কথা বলে। এটাকে আমি অনৈক্য বলবো না। তবে দলগুলোর মধ্যে স্বার্থের সংঘাত আছে।’ বুধবার (২৬ মার্চ) সকালে স্বাধীনতা দিবসে ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মির্জা আব্বাস এসব কথা বলেন। তিনি এও বলেন, ‘যদি কখনও এমন সময় আসে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজন। তখন কিন্তু আমরা সবাই এক হয়ে যাব। এখানে কোনো ভুল নাই। এখন দলীয় আদর্শিক স্বার্থে হয়তো আলাদা কথা বলছি। কিন্তু যখন জাতীয় স্বার্থে প্রয়োজন হবে, তখন বাংলাদেশের জনগণ এক হয়ে যাবে।’ মির্জা আব্বাস আরো বলেন, ‘আজকে স্মরণ করছি স্বাধীনতার ঘোষক প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে। যিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, অতঃপর দেশে থেকে যুদ্ধ করে তিনি দেশকে স্বাধীন করেছেন। স্বাধীনতার ৫৪ বছরে প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদ মাঝে আমরা হারিয়ে ফেলেছিলাম। গত ৫ আগস্টের পর আবার নতুন করে পেয়েছি। আমি স্বাধীনতার ৭১-এর বীর শহীদ যারা নিজেদের প্রাণের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা অর্জন করে দিয়েছিলেন, রক্তের বিনিময়ে যারা স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন, তাদের স্মরণ করছি। তাদের পরিবারের যারা এখনও বেঁচে আছেন, তাদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। আজকের এই দিনে দেশবাসীকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, আমাদের নেতা তারেক রহমানের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা মাত্র কিছু দিন আগে জুলাই আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে নতুন করে স্বৈরাচারকে তাড়িয়ে একটা নতুন স্বাদ পেয়েছি। অনেকে বলে দ্বিতীয় স্বাধীনতা। আসলে আজকে স্বাধীনতা দিবস প্রমাণ করে, দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলে বাংলাদেশে কিছু নাই। যারা বলে তারা আজকের স্বাধীনতা দিবসে খাটো করতে চায়, ৭১-এর স্বাধীনতায় তাদের কোনো ভূমিকা ছিল না। সুতরাং এই দিনটাকে তারা খাটো করতে চায়।’ মির্জা আব্বাস আরও বলেন, ‘আজ খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া চাইব এবং এই স্বাধীনতাকে যেন ধরে রাখতে পারি, আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম যাতে এই স্বাধীনতাকে ধরে রাখতে পারে এজন্য আল্লাহর কাছে দোয়া কামনা করবো।’ এ সময় জাতীয় স্মৃতিসৌধে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভি, বিএনপির নেতা আমানুল্লাহ আমান উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে নির্বাচনের রোডম্যাপ না থাকায় হতাশ বিএনপি

ডিসেম্বর থেকে জুন মাসের মধ্যে নির্বাচন হবে, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এ বক্তব্যকে ‘অস্পষ্ট’ অভিহিত করে অবিলম্বে ‘স্পষ্ট রোড ম্যাপ’ দাবি করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বুধবার (২৬ মার্চ) সকালে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বিএনপির মহাসচিব এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘এটা (ডিসেম্বর থেকে জুন মাসের মধ্যে নির্বাচন হবে) ভেগ। এটা অত্যন্ত অস্পষ্ট কথা। ডিসেম্বর থেকে জুন, ছয় মাস। কোনো রোড ম্যাপ দেওয়া হয়নি।’ ‘আমরা বারবার বলে আসছি যে, স্পষ্ট রোড ম্যাপ এবং দ্রুত নির্বাচন। তা না হলে যে সংকটগুলো সৃষ্টি হচ্ছে, এ সংকটগুলো কাটবে না।’ বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা… বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নির্বাচনের কথা বলছে না। বিএনপি জাতির স্বার্থে, জাতিকে রক্ষা করার স্বার্থে, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করার স্বার্থেই নির্বাচনের কথা বলছে। নির্বাচিত পার্লামেন্ট এবং সরকারের কথা বলছে।’ ‘আমরা আশা করবো, অন্তর্বর্তী সরকার অতি দ্রুত ন্যূনতম সংস্কারগুলো করে অর্থাৎ যেগুলো নির্বাচনের জন্য প্রয়োজন, তা সম্পন্ন করে নির্বাচনের ঘোষণা দেবেন।’ বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় মির্জা ফখরুল ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে কয়েক হাজার নেতাকর্মী জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থলে আসেন। প্রয়াত নেতার কবরে পুস্পমাল্য অর্পণ করে তারা ফাতেহা পড়েন। এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, ফরহাদ হালিম ডোনার, মাহবুব উদ্দিন খোকন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক উপস্থিত ছিলেন। প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে হতাশ: মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি অত্যন্ত হতাশ হয়েছি যে, গতকাল প্রধান উপদেষ্টা যে বক্তব্য রেখেছেন সেই বক্তব্যে তিনি নির্বাচনের রোড ম্যাপের কথা বলেননি।’ ‘আমরা হতাশ হয়েছি যে, তার বক্তব্যের মধ্যে তিনি স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানের নাম এক বারও উচ্চারণ করেননি। অথচ এটাই ছিল ইতিহাস।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা আবারও চাই না, আওয়ামী লীগ যে ইতিহাস বিকৃত করেছে, এখন আবার সেই ইতিহাস বিকৃতি হোক। প্রকৃত সত্য উদঘাটিত করে জনগণের যে আকাঙ্ক্ষা, একটি গণতান্ত্রিক সরকার- সেই গণতান্ত্রিক সরকারে যত দ্রুত ফিরে যাওয়া যাবে আমাদের সমস্যাগুলো তত দ্রুত সমাধান হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

একাত্তর আর চব্বিশ আলাদা কিছু নয়: নাহিদ ইসলাম

একাত্তর আর চব্বিশ আলাদা কিছু নয়, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে একাত্তরের চেতনা পুনরুজ্জীবিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। বুধবার (২৬ মার্চ) স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানানোর পর তিনি এ কথা বলেন। নাহিদ ইসলামের অভিযোগ, যারা একাত্তর আর চব্বিশকে মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড় করাতে চায় তাদের উদ্দেশ্য সৎ নয়। নাহিদ আরও বলেন, ‘ক্ষমতায় বসার জন্য যদি নির্বাচন চাপিয়ে দেওয়া হয় তা মানা হবে না।’ একদিকে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নির্বাচন চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে, অন্যদিকে ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসনের ষড়যন্ত্র চলছে বলেও জানান নাহিদ এছাড়া সংবিধান আঁকড়ে রেখে পুরোনো বন্দোবস্তেই দেশকে নিয়ে যাওয়ার পাঁয়তারা চলছে বলে অভিযোগ নাহিদ ইসলামের। এর আগে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান এনসিপি নেতারা।

নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য অস্পষ্ট: মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য ভেক কথা, অস্পষ্ট কথা। এটা কোন রোডম্যাপ ঘোষণা হয়নি। বিএনপি বারবার বলেছি নির্বাচনী রোডম্যাপ দেয়ার জন্য। না হলে দেশের সংকট কাটবে না।’ বুধবার (২৬ মার্চ) সকাল সাড়ে ৯টায় স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় ফখরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনের কথা বলে ক্ষমতায় যেতে নয়, জনগণের ভোটাধিকার আদায়ের জন্য। নির্বাচিত সরকারই পারে সংকট সমাধান করতে।’

সংস্কার ও বিচারবিহীন নির্বাচন মেনে নেয়া হবে না: নাহিদ ইসলাম

সংস্কার ও বিচার ছাড়া কোনো দলকে ক্ষমতায় বসানোর চেষ্টা করা হলে জনগণ মেনে নেবে না, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) তাদের প্রতিহত করবে বলে জানিয়েছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। বুধবার (২৬ মার্চ) সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে ৭১’-এর বীর সেনানীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘সামনের দিনে আর যেন রক্ত দিতে না হয়। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা বিনির্মাণ করতে চাই। ৭১ এবং ২৪ আলাদা কিছু না। একাত্তরে যা চেয়েছিলাম চব্বিশে তা অর্জন হয়েছে। যারা এটাকে পরস্পরবিরোধী করছে তাদের উদ্দেশ্য অসৎ।’সংস্কার ও বিচারবিহীন নির্বাচন দেয়া হলে তা মেনে নেয়া হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পুরানো সংবিধান চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। অন্যদিকে ফ্যাসিবাদকে আবার পুনর্বাসনের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য দ্রুত নির্বাচন দেয়ার পাঁয়তারা চলছে।’নাহিদ আরও বলেন, ‘৭১’-এর স্বাধীনতা ও ২৪’-এর স্বাধীনতা পরস্পর বিরোধী নয়। সংস্কার ও বিচার ছাড়া কোনো দলকে ক্ষমতায় বসানোর চেষ্টা করলে জনগণ মেনে নেবে না। তাদের প্রতিহত করবে এনসিপি।’

সুব্রত চৌধুরী হাসপাতালে ভর্তি

গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী ফুসফুসের প্রদাহে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর ল্যাবএইড হসপিটালে ভর্তি হন তিনি। বর্তমানে ওই হাসপাতালের ড. বরেন চক্রবর্তী তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন আছেন। গণফোরামের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মুহাম্মদ উল্লাহ মধু বিষয়টি নিশ্চিত করেন। মধু বলেন, সুব্রত চৌধুরী এখন সিসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে আছেন। তিনি দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।

এখন সুযোগ এসেছে বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথচলা নিশ্চিত করার : তারেক রহমান

ফ্যাসিবাদের পতনের পর এখন সুযোগ এসেছে বাংলাদেশের সকল দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তি এবং জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথচলা নিশ্চিত করার বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী স্বাক্ষরিত এক বাণীতে তিনি কথা বলেন। তারেক রহমান সবাইকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস আমাদের জাতীয় জীবনে নবীন সূর্যোদয়ের মধ্য দিয়ে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। হাজার বছরের সংগ্রাম মুখর এ জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন বাংলাদেশের স্বাধীনতা। আজকের এই দিনে আমি দেশবাসী ও প্রবাসী বাংলাদেশীসহ সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। তারেক রহমান বলেন, এই স্বাধীনতা দিবসে আনন্দের মুহূর্তের মধ্যে প্রথমেই যে কথা মনে পড়ে, তাহলো এ দেশের অগণিত দেশপ্রেমিক শহীদের আত্মদান। আমি এ মহান দিনে তাদের গভীর শ্রদ্ধা জানাই। যাদের অবিস্মরণীয় আত্মদানে অর্জিত হয়েছে দেশমাতৃকার মুক্তি। মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তমসহ সকল জাতীয় নেতার স্মৃতির প্রতি আমি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। তিনি আরও বলেন, যাদের জীবন মরণ লড়াইয়ে ৯ মাসে আমরা বিজয় লাভ করেছি সেইসব অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানের কথা জাতি কখনোই বিস্মৃত হবে না। আমি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি সেসব মা-বোনদের কথা, যারা মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন। স্বাধিকার আর স্বাধীনতা সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে রক্তস্নাত পথে বিশ্ব মানচিত্রে উদ্ভাসিত হয় আমাদের মানচিত্র। এদিনে দেশমাতৃকার শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। তার ঐতিহাসিক ঘোষণায় সেই মুহূর্তে দিশেহারা জাতি পেয়েছিল মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার অভয়মন্ত্র। একটি শোষণ, বঞ্চনাহীন, মানবিক সাম্যের উদার গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে এ দেশের মানুষ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। দুর্ভাগ্যক্রমে গণতন্ত্র বিনাশী শক্তির চক্রান্ত এখনও থেমে নেই। বারবার ফ্যাসিবাদী, স্বৈরাচারী ও অবৈধ শক্তি আমাদের সে লক্ষ্য পূরণ করতে দেয়নি। দেশি-বিদেশি চক্রান্তের ফলে আমাদের গণতন্ত্র ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি হোঁচট খেয়েছে এবং স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হয়েছে। মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান চক্রান্তমূলকভাবে হত্যার পরে বেগম খালেদা জিয়ার সফল ও সার্থক নেতৃত্বে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ধারা সূচিত হলেও গণতন্ত্রের শত্রুদের কারণে স্থায়ী ও মজবুত গণতান্ত্রিক কাঠামো তৈরি করা সম্ভব হয়নি।

কিছু কিছু দল বোঝানোর চেষ্টা করছে মুক্তিযুদ্ধ কোনো ঘটনাই ছিল না : মির্জা ফখরুল

যেসব দল ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে হত্যাযজ্ঞে সহযোগিতা করেছিল তারা এখন গলা উঁঠিয়ে কথা বলা চেষ্টা করছে যেন ওই সময় (৭১ সালে) কিছু হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, কিছু-কিছু দল বোঝানোর চেষ্টা করছেন, ১৯৭১ (মুক্তিযুদ্ধ) কোনো ঘটনাই ছিল না। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর রমনায় ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স (আইইবি) ভবনে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে বিএনপি এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। মির্জা ফখরুল বলেন, ২৫ মার্চের এই কালো দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর এই দেশের মানুষের ওপর ঝাপিয়ে পড়েছিল। হত্যা করেছে লাখো নিরীহ মানুষ। কিন্তু সেই গণহত্যার জন্য পাকিস্তান এখনও ক্ষমা চায়নি। এ কথাগুলো এখন কেন বলছি, কারণ পরিবেশ তৈরি হয়েছে, কিছু-কিছু মানুষ, একটি গোষ্ঠী ও কিছু-কিছু দল বোঝানোর চেষ্টা করছেন, ১৯৭১ (মুক্তিযুদ্ধ) কোনো ঘটনাই ছিল না। মুক্তিযুদ্ধের যে আন্দোলন, লাখ-লাখ মানুষের যে আত্মত্যাগ, ৯ মাস ধরে বাড়ি-ঘর ছেড়ে কোটি-কোটি মানুষ যে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল সেই অবস্থা যেন আমরা ভুলে যাচ্ছি। যারা সরাসরি সহযোগিতা করেছে, সরাসরি হত্যাযজ্ঞে সহযোগিতা করেছে তারা এখন গলা উঁচিয়ে- ফুলিয়ে কথা বলছে। কারও নাম বলতে চাই না, তিক্ততাও সৃষ্টি করতে চায় না। তিনি বলেন, ইতিহাস তো ইতিহাসই, কেউ বিকৃত করতে পারবে না। সেই জন্য আজকের এই রাত্রি (২৫ মার্চ) অত্যন্ত কলঙ্ক ও দুঃখময় রাত্রি। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র বিশ্বাসী না, তারা গণতন্ত্র ধ্বংসকারী। তাই আওয়ামী লীগকে গণতন্ত্রের সুবিধা দেওয়ার কথা চিন্তা করতে পারেনি। শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেছে, এটাই এদের চরিত্র বলে উল্লেখ করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ওরা দেখে, জনগণ যখন ক্ষেপে উঠে, তখন ওরা এভাবে কর্মীদের অরক্ষিত রেখে পালিয়ে যায়। এবার তাই করেছে, জনতার বিক্ষোভে ভারতে পালিয়ে গেছে। বাংলাদেশের মহীয়সী নারী বেগম খালেদা প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয় ৯ মাস জেলে ছিলেন বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। মির্জা ফখরুল বলেন, সংস্কার প্রথম শুরু হয়েছে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হাত দিয়ে, পরে করেছেন বেগম খালেদা জিয়া। দেশের মৌলিক সংস্কার কিন্তু বিএনপির হাতে দিয়েই। এখন ৩১ দফা রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের প্রস্তাব দিয়েছে তো বিএনপি, ১৬ সালে বিএনপির নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ২০৩০ ভিশন দিয়েছে। সংস্কার কোনো নতুন বিষয় নয়। অথচ অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের পাহাড় এনেছে। আমরা সংস্কারের প্রস্তাবনায় মতামত দিয়েছি, পক্ষে - বিপক্ষে। আমরা বলেছি, নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। এটি আজ ষড়যন্ত্র সৃষ্টি হয়েছে। দেশের সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার চেষ্টা চলছে। যেটা আমরা মেনে নেব না। কারণ সেনাবাহিনী দুঃসময়ে আমাদের পাশে দাঁড়ায়। তিনি আরও বলেন, আন্দোলনের ভিত্তি তো বিএনপি করেছে। হঠাৎ করেই একটা বিপ্লব হয়নি, বিএনপির নেতাকর্মীদের আন্দোলনের মধ্যে উঠে এসেছে। আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন— বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু প্রমুখ।

তামিম ইকবালের জন্য তারেক রহমানের দোয়া প্রার্থনা

অসুস্থ তামিম ইকবালের সুস্থতার জন্য দোয়া প্রার্থনা করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সোমবার (২৪ মার্চ) দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ক্রিকেটার তামিম ইকবাল অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তার আশু সুস্থতার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া প্রার্থনা করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।’ তারেক রহমান বলেন, ‘ক্রিকেটার তামিম ইকবাল দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন, আমি কায়মনোবাক্যে আল্লাহর কাছে এই দোয়া করি।’