বিডিয়ার হত্যাকান্ডের বিচারের অগ্রগতি জাতি জানতে চায়
রোমহষর্ক বিডিয়ার ট্রাজেডির বিচার কোন অবস্থায় আছে জাতিকে তা জানানোর দাবি করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম-মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম বলেছেন, ‘নির্দয় নির্মমভাবে হত্যাকান্ডের শিকার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এতগুলো অফিসার হত্যার মধ্য দিয়ে মূলত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে অকার্যকর করার নীলনকশারই অংশ। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনতার প্রত্যাশা হল বিডিয়ার ট্রাজেডিসহ সব হত্যাকান্ডের বিচার দ্রুত শেষ করা।’ বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমকে পাঠানো বিবৃতিতে তিনি এসব দাবি জানান। বিবৃতিতে ইমতিয়াজ আলম বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের গণহত্যার অন্যতম মাস্টারমাইন্ড ওবায়দুল কাদেরের দেশত্যাগ আমাদের ভাবিয়ে তুলছে। ইউনুস সরকারের প্রশাসনে ফ্যাসিবাদের দোসর আছে কিনা খতিয়ে দেখা দরকার। প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া কোন অবস্থাতেই দেশত্যাগ সম্ভব নয়। ৫ আগস্ট পরবর্তী সেনা হেফাজতে থাকা ৫৬ জন কোথায়- এ প্রশ্ন আজ দেশবাসির।’ তিনি অবিলম্বে খুনি হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরসহ ফ্যাসিস্ট সরকারের পলাতক সব আসামিকে দেশে ফিরিয়ে এনে দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। ইমতিয়াজ আলম আরও বলেন, ‘এ সরকারের প্রতি দেশের জনতার এত সমর্থন; যা অতীতে কোন সরকারের প্রতি কখনো ছিল না। তাহলে খুনিদের বিচার করতে ও প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে সরকারের ভয় কিসের? কোন চাপের কাছে এ সরকার মাথা নত করবে না- এটাই জনতার আকাঙ্ক্ষা। জনতার আকাঙ্খা পূরণে সরকার আরও আন্তরিক হবে এটা সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান।’
স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের প্রতিবন্ধক সব কালো আইন বাতিল জনগণের দাবী
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেছেন, ‘বিগত ১৬ বছর গণমাধ্যমের টুটি চেপে ধরে ফ্যাসিবাদ কায়েমে বাধ্য করেছিল জালিম সরকার। ভিন্নমতের সংবাদ ও সংবাদ কর্মীদের উপর জুলুম নির্যাতন করে আজীবন ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করেছিল। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের গডমাদার দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছে। জুলাই বিপ্লবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাংবাদিক বন্ধুরা কাজ করেছেন। চ্যানেলে লাইভ করেছেন, তাদের সেই লাইভ দেখে ছাত্র-জনতা রাজপথে নেমে আসে। স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের প্রতিবন্ধক সব কালো আইন বাতিল জনগণের দাবী। এ দাবী বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে বাস্তবায়নে উদ্যোগে নিতে হবে।’ বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকার কারওয়ান বাজারের মুনুমনস কিচেনে জুলাই-আগস্ট কিপ্লব: জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালন করা মিডিয়া কর্মীদের সাথে মতবিনিময় ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। সংগঠনের ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাওলানা মুহাম্মদ আরিফুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমদ আবদুুল কাইয়ুম, কেন্দ্রীয় প্রচার ও দাওয়া বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা শেখ ফজলুল করীম মারুফ, মুরাদ হোসেন, মুফতি ফরিদুল ইসলাম ও মো. মাছউদুর রহমান, মুজিবুর রহমান, মুফতি সিরাজুল ইসলাম ও নিজাম উদ্দিন, রাকিবুল ইসলাম, গিয়াস উদ্দিন পরশ, মুহাম্মদ নাজমুল হাসান প্রমুখ। সম্মাননা প্রাপ্ত সংবাদকর্মীদের মধ্যে মতবিনিময় ও স্মৃতিচারণ করেন বাংলাভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি মুহিব্বুল্লাহ মহিব, এটিএন বাংলার স্টাফ রিপোর্টার মাজহারুল হক মুহাজির, গ্লোবাল টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার আওলাদ হোসেন বাবলু, আর টিভির সিনিয়র রিপোর্টার খান আল আমিন, দেশ টিভির রিপোর্টার সাহেদুজ্জামান সাকিব, দৈনিক যুগান্তরের উত্তরা প্রতিনিধি মুহাম্মদ তারেক রহমান, দৈনিক সমকালের মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার সাইমন মুবিন পল্লন, দৈনিক মানবজমিনের রিপোর্টার হুমায়ুন কবির মাসুদ, দৈনিক ইনকিলাবের স্টাফ ফটোসাংবাদিক এসএ মাসুম। মতবিনিময় শেষে জুলাই-আগস্ট’২৪ বিপ্লবে জীবনবাজি রেখে পেশাগত দায়িত্ব পালন করা মিডিয়া/সংবাদকর্মীদের সম্মাননা দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউনুছ আহমাদ বলেন, ‘পতিত সরকার ছাত্র জনতার বিপ্লবে দেশত্যাগ করলেও দেশ নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র করছে। সংখ্যালঘু নির্যাতনের মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ধুলোয় মিশিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু, সত্য কোন দিন গোপন থাকে না। আজ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনই মিডিযায় সাক্ষাৎকার দিয়ে মিথ্যা প্রমাণিত করছে। সাংবাদিক বন্ধুদেরকে এসব অপপ্রচারের জবাব দিতে হবে। কেননা এ দেশ আমার, আপনার সকলের। এ দেশকে আমরা জীবন দিয়ে ভালবাসি।’ অনুষ্ঠানে আহমদ আবদুল কাইয়ূম বলেন, ‘রাজনীতি ও সাংবাদিকতা একইসাথে ওৎপ্রোতভাবে জড়িত। এদের একটা ছাড়া অন্যটা অসম্পন্ন। দেশগড়ায় রাজনীতিবিদদের যেমন ভূমিকা থাকে, তেমনি ভুমিকা থাকে সাংবাদিকদের। তাদের রিপোর্টে বহু কিছু হয়। এ জন্য সাংবাদিকদেরও স্বচ্ছ ও পরিচছন্ন দেশ গড়ায় ভূমিকা রাখতে হবে।’ শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, ‘জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাংবাদিক বন্ধুরা পেশাগত দায়িত্ব আঞ্জাম দিয়ে থাকেন। তাদের এই ত্যাগে জাতি সঠিক কিছু তথ্য পেয়ে থাকেন। এমনই এক ঘটনা প্রবাহ জুলাই-আগস্ট বিপ্লব। এই বিপ্লবে যারা জীবনবাজি রেখে পেশাগত দায়িত্ব আঞ্জাম দিয়েছেন, তারা ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। আমরা তাদের ধন্যবাদ জানাই এবং তাদের ত্যাগের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করি। সেইসাথে যারা জুলাই বিপ্লবে শহীদ হয়েছেন, পঙ্গুত্ববরণ করেছেন তাদের জন্য সুস্থতার জন্য দোয়া করি।
হারানো ফোন ফিরে পেলেন মির্জা আব্বাস
বঙ্গভবনে অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে হারানো মোবাইল ফোনটি ফিরে পেয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। বাংলাদেশের ৫৪তম বিজয় দিবস উপলক্ষে গত সোমবার এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন এবং ফার্স্ট লেডি ড. রেবেকা সুলতানা। অনুষ্ঠানে মির্জা আব্বাস যেখানে বসেছিলেন তার পাশের একটি চেয়ারে মোবাইল ফোনটি রেখেছিলেন। পরে ফোনটি আর খুঁজে পাননি তিনি। শায়রুল কবির খান গণমাধ্যমকে জানান, বিষয়টি তিনি রাষ্ট্রপতির প্রেসসচিব জয়নাল আবেদীনকে অবহিত করেছিলেন। পরবর্তীতে মঙ্গলবার ফোনটি পাওয়া গেছে।
শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরাতে আ.লীগ নেতাদের শপথ পাঠের ভিডিও ভাইরাল
শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে বরগুনায় মহান বিজয় দিবসে আওয়ামী লীগের নেতাদের ‘অজ্ঞাত স্থানে’ শপথ পাঠের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তবে এ শপথ পাঠের স্থান ও সময় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এছাড়াও ব্যানারে বিভিন্ন বিষয় লিখে বেলুনে ওড়াতেও দেখা যায় ওই ভিডিওতে। গতকাল সোমবার রাতে প্রায় ২ মিনিট ১০ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, বরগুনার একটি অজ্ঞাত স্থানে আওয়ামী লীগের অল্পসংখ্যক নেতা-কর্মী একত্রিত হয়েছেন। তাদের হাতে বেলুন ও ব্যানার দেখা গেছে। ব্যানারে লেখা ছিল, শেখ হাসিনার হাত ধরে জঙ্গি জামায়াত খতম কর, মুক্তিযুদ্ধ আঁকড়ে ধর। এতে বরগুনা জেলা ছাড়াও কয়েকটি উপজেলার নাম উল্লেখ ছিল। ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে নেতা-কর্মীদের বলতে শোনা যায়, গৌরবময় মহান বিজয় দিবস ২০২৪। চারিদিকে তাকিয়ে দেখি বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা মেটিকুলাস প্ল্যানে মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছে। স্মার্ট বাংলাদেশকে জিন্দাবাদী কলঙ্কে পরিণত করার ষড়যন্ত্র চলছে। গণতন্ত্রিক ব্যবস্থাকে ছারখার করে শেখ হাসিনাকে দেশ থেকে ত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। এই নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে আমরা মহান সৃষ্টিকর্তার নামে শপথ করছি যে, জঙ্গি জামায়াত-বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাস, পুলিশ-জনতা খুন, লুটপাট, অবৈধ দখল, নিষ্ঠুর হামলা, গায়েরি মামলার সমুচিত জবাব দেব। গরিব-দুঃখী-মেহনতি মানুষকে সঙ্গে নিয়ে মৃত গৌরভকে ফিরিয়ে আনব। জাগ্রত বিবেকবান দেশ প্রেমিকদের ঐক্য গড়ে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন সফল ও নির্বিঘ্ন করার লক্ষে সব কর্মকাণ্ড পরিচালনা করব। প্রয়োজনে নেত্রীর নির্দেশে গণতন্ত্রের যোদ্ধা হিসেবে নিজের জীবনকে উৎসর্গ করব। জয় বাংলা। এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বরগুনা সদর সার্কেল) মো. আব্দুল হালিম বলেন, বরগুনার বিভিন্ন উপজেলায় গোপনে এটা করা হয়েছে। তিন-চারজন মিলে বেলুন উড়িয়েছে এ রকম ভিডিও দেখেছি। তবে কোথায় বসে করেছে তা জানতে পারিনি। দৃষ্টিগোচর হয়েছে, পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেল থেকে ব্যারিস্টার সুমনের চিঠি, বললেন দেখা হবে শিগগিরই
জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পর বিভিন্ন মামলায় জেলে থাকা হবিগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সাংসদ ও স্যোশাল মিডিয়া সেলিব্রিটি ব্যারিস্টার সৈয়দ ছায়েদুল হক সুমন কাশিমপুর কারাগার থেকে দুইটি চিঠি লিখেছেন। একটি তার মাকে উদ্দেশ করে। অন্যটি বোন, এক ভাই ও বোন জামাইদের উদ্দেশ করে লেখা। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় তার লন্ডনপ্রবাসী ভাই সৈয়দ সোহাগ হক তার ফেসবুক আইডিতে সেগুলো শেয়ার করেছেন। মায়ের কাছে প্রেরিত চিঠিতে ব্যারিস্টার সুমন উল্লেখ করেন ‘দোয়া রইল। আমাকে নিয়ে কোন দুশ্চিন্তা করবেন না। আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন। প্রথমে একটু কষ্ট লাগত, এখন ঠিক হয়ে গেছি। নিয়মিত নামাজ, কোরআন শরিফ পড়ি। বাংলা তরজমা করা কোরআন পড়তে অনেক ভালো লাগে। আপনি নিজের শরীরের প্রতি খেয়াল রাখবেন। সারা জীবন আপনাকেই বেশি কষ্ট দিছি।’ ‘অনেক মোটা বাচ্চা হওয়ার কারণে আমার জন্মের সময়ই আপনাকে কষ্ট দিছি। এই ৪৫ বছরে এসেও আপনার টাকায় আমার পরিবারের বাসা ভাড়া হয়, এর চেয়ে আর বেশি কি এক মায়ের কাছ থেকে নিতে পারি। আপনার জন্য দোয়া রইল। যে বয়সে আপনাকে আমার সেবা করার কথা, সেই বয়সে বরং আপনারাই আমার পরিবারকে দেখতেছেন। আল্লাহর কাছে আপনার জন্য সুস্থ ও লম্বা হায়াতের জন্য দোয়া চাই।ভালো থাকবেন। সুমন, ১২/১২/২০২৪ ইং’ বোন, ভাই ও বোনের স্বামীদের কাছে লেখা চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমার জন্য কোনো চিন্তা করো না। রাজবন্দি হিসেবে জেলে আছি, কোনো চোর বা দুর্নীতির হিসেবে নই। আমার কারণে তোমাদের কোনো অসম্মান হউক এটা কখনো চাইনি, আশা করি আল্লাহর রহমতে হবেও না।’চিঠিতে তিনি আরো উল্লেখ করেন, ‘অনেকে বলে আপনার কি সম্পদ আছে? দীর্ঘ দিন জেলে কিভাবে খরচ চালাবেন? আমি উত্তর দিই আমার বেশি সম্পদ না থাকলেও পাঁচটি বোন আছে, একটা ভাই আছে। এটাই আমার বড় সম্পদ। শুধু জেলে কেন, আমি পৃথিবীতে না থাকলেও আমার কোনো আফসোস নেই। বোনেরা আমার পরবর্তী প্রজন্মের জন্য তোমাদের চেয়ে ভালো অভিভাবক আর কেউ হতে পারবে না। তোমাদের জন্য অনেক অনেক দোয়া রইল। ভালো থেকো তোমরা সবাই। আল্লাহ চাইলে দেখা হবে শিগগিরই। সুমন, কাশিমপুর কারাগার থেকে ১৭/১২/২০২৪ ইং’ সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের ভাই লন্ডনপ্রবাসী সৈয়দ সোহাগ বলেন, ‘তার মা ও বোনেরা দেশে ও প্রবাসে আছেন। কারাগার থেকে পাওয়া চিঠি সোশ্যাল মিডিয়া ও হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে সবাই পেয়েছেন। আমরা সকলেই আজ আবেগে আপ্লুত। তবে সুমন তার জীবনের সব অর্জন মানুষের কল্যাণে ব্যয় করেছে। কোন অনিয়ম ও দুর্নীতি করেনি। আশা করি, আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সে শিগগিরই জনতার মাঝে ফিরে আসবে।’
যে কোন সময় দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হতে পারে
দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে অগ্রাধিকার দিয়ে সংঘাতময় পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের। তিনি বলেছেন, ‘যে কোন সময় স্থিতিশীলতা ভেঙে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হতে পারে।’ সোমবার (১৭ ডিসেম্বর) ঢাকার বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে দলটির সাংস্কৃতিক পার্টির আলোচনা সভায় তিন এ কথা বলেন। সভায় জিএম কাদের বলেন, ‘আমরা অনেক দিন ধরে লক্ষ করছি, সারা দেশের মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হচ্ছে। একটি ভাগকে বলা হচ্ছে দেশপ্রেমিক, আরেকটি ভাগকে বলা হচ্ছে দেশদ্রোহী। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় যারা বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হয়েছে, তারা দেশ প্রেমিক। এদের সংখ্যা কম নয়, অর্ধেকের কাছাকাছি হতে পারে। বাকি যারা নির্যাতিত হননি, তারা দেশ প্রেমিক নন, আর যারা পুরস্কৃত হয়েছেন তারা দেশদ্রোহী।’ তিনি বলেন, ‘দেশ প্রেমিকদের ফ্রি হ্যান্ড লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে- যে কোন ধরনের মিথ্যা মামলা, ব্যক্তিগতভাবে তাদের গালাগালি করা, বাড়িঘরে আক্রমণ ও লুটতরাজ করা, তাদের (যারা নির্যাতিত হননি) সহায়-সম্পত্তি দখল করা, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান দখল করা, মিল ফ্যাক্টরিতে আগুন দেওয়া, পার্টি অফিসে আগুন দেওয়া, তাদের কোনরকম কাজ করতে না দেওয়া।’ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘উপদেষ্টাদের মধ্যে অনেককে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি, তাদের অনেকে সৎ, দেশের জন্য কাজ করছেন। কিন্তু, একটি অদৃশ্য শক্তি তাদের কাজের মধ্যে থাকছে। মনে হচ্ছে, তারা একরকম কাজ করছেন, হচ্ছে আরেক রকম।’ জিএম কাদের বলেন, ‘পুলিশ, প্রশাসন ও জুডিশিয়ারি তারা যেসব কাজ করছে, তা মনে হচ্ছে বাধ্য হয়ে করছে। কাজেই দেশকে শুধু দুিই ভাগে ভাগ করা হয়নি, এক ভাগকে আরেক ভাগের ওপর লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে। সংঘাত পূর্ণ আবহাওয়া সৃষ্টি করা হয়েছে। সংঘাতময় আবহাওয়ায় অর্ধেক লোক এক পাশে আরেক ভাগ অপর পাশে। এই বিভাজন আপনি যদি ধরে রাখতে চান, আপনি ধরে রাখেন। এটা দুই-চার দিন-দশ দিন এক বছর। এটাতে দেশে কখনোই স্থিতিময় পরিবেশ আসবে না। যে কোন সময় স্থিতিশীলতা ভেঙে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হতে পারে।’ তিনি আরো বলেন, ‘প্রতিহিংসা আমাদের শেষ করতে হবে, অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে শেষ করবেন আর বাকি অর্ধেক নিয়ে দেশ চালাবেন এটা কি সম্ভব হবে? যারা এই দিবা স্বপ্ন দেখছেন, তাদের আমি বলব সামনের দিকে তাকিয়ে দেখুন কোথায় কি হয়। আমাদের রাজনীতি করতে দিতে হবে, সব মামলা প্রত্যাহার করে দিন, সব বিষয়া প্রেসে আসতে দিন।’ আগামী নির্বাচনে লেভেল ফিল্ড তৈরি হবে বলে মনে হচ্ছে না দাবি করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে গেছি, কাল বক্তব্য শুনে মনে হলে আপনারা সংস্কার করতে পারছেন না। সংস্কার করতে গেলে এটা পার্লামেন্টে করতে হবে এবং পার্লামেন্টে সব দলের সহযোগিতা ছাড়া এটাকে পাস করানো সম্ভব হবে না।’ ধর্মীয় কাঠামোর মধ্যে জীবন চালানো জন্য অনেকেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না দাবি করে জিএম কাদের বলেন, ‘২৪’-এর আন্দোলনের পর ছাত্র-জনতা কি চেয়েছিল? শেখ হাসিনার পতন ও একটি অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন। তার মাধ্যমে সরকার গঠন ও একটি শাসন ব্যবস্থা। যেখানে এক ব্যক্তির হাতে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে যাতে দানব তৈরি করা না হয়, সেরকম একটি শাসন ব্যবস্থা। এটাই ছিল তাদের চাওয়া।’ তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্রদের মধ্যে অনেকেই বলেছেন, আমরা যুদ্ধ করেছি, এটা মুসলমান দেশ, ইসলাম কায়েম করব। আমি বলতে চাই, বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষই মুসলমান। সেখানে ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা-ভালবাসা আছে। আমরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশি তারা কিন্তু ধর্মের ব্যাপারে অত্যন্ত সহানুভূতিশীল। ধর্মকর্ম পালনে তারা অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল, আন্তরিক। কিন্তু, একেবারে ধর্মীয় কাঠামোর মধ্যে জীবন চালানো, ইসলামী রুট হিসেবে চালানোর জন্য অনেকেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না।’ জাপার চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা দাবি করছি, নির্বাচন চাই। অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ ছাড়া দেশে শান্তি আসবে না। দেশে যে হিংসার পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে, সেই পরিবেশ সামনের দিকে দেশকে একটা বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যেতে পারে।’
বিএনপির ভেতর ষড়যন্ত্রকারীদের এজেন্ট ঢুকে গেছে: তারেক রহমান
আগামীর নির্বাচন অতীতের চেয়ে বেশি কঠিন হবে বলে মনে করছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ জন্য তিনি দলের নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। একই সঙ্গে তিনি ষড়যন্ত্রকারীদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলেছেন। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকালে নারায়ণগঞ্জের হীরাঝিল এলাকায় গিয়াসউদ্দিন ইসলামিক মডেল কলেজ প্রাঙ্গণে কর্মশালায় অনলাইনে যুক্ত হয়ে তারেক রহমান এসব কথা বলেন। এ সময় তারেক রহমান বলেন, ‘আগামীতে যে নির্বাচন হবে, আমি ১০০ ভাগ গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি, তা অতীতের যে কোন নির্বাচনের চেয়ে বহু কঠিন হবে।’ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা যদি মনে মনে ভেবে থাকেন যে, এখানে প্রধান প্রতিপক্ষ নেই অথবা দুর্বল হয়ে গেছে, নির্বাচন খুব সহজ হবে। নো নো নো অ্যান্ড নো... এই নির্বাচন অতীতের যে কোন নির্বাচন থেকে অনেক কঠিন হবে। তাই, নিজেদের প্রস্তুত করুন। নির্বাচনে জনগণের সমর্থন নিয়ে যেন আমরা পার হতে পারি। সেইভাবে নিজেদের প্রস্তুত করুন।’ তারেক রহমান আরও বলেন, ‘বিএনপিকে মানুষ পছন্দ করে এটা অনেকের হিংসার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক রাজনৈতিক দলের হিংসার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। আপনারা খেয়াল করে দেখুন, যারা এ দলের সঙ্গে বহু বছর ধরে জড়িত। প্রয়াত জিয়ার আমল থেকে যুক্ত রয়েছেন। দেখে আসছেন ৮১ সালের আগে থেকে কীভাবে বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছে, দেশের ভেতর ও দেশের বাইরে। ষড়যন্ত্র কিন্তু থেমে নেই। এই দলের বিরুদ্ধে যখন ষড়যন্ত্র হবে, তখন ধরে নিতে হবে ষড়যন্ত্র শুধু দলের বিরুদ্ধেই না, সেটা বাংলাদেশের বিরুদ্ধেও।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধেও ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। থেমে যায়নি। স্বৈরাচার পালিয়েছে, স্বৈরাচারের মাথা পালিয়েছে, কিছু কিছু ছোটমাথা পালিয়েছে। কিন্তু, শরীরের লেজ অবশিষ্ট রয়ে গেছে। তারা কিন্তু ষড়যন্ত্র করছে। ষড়যন্ত্রকারীরা বিএনপির ভেতরও এজেন্ট ঢুকিয়ে দিয়েছে। তাই, সবাকে অ্যালার্ট থাকতে হবে।’ বিএনপির নেতাকর্মীদের হুঁশিয়ারি করে তারেক রহমান বলেন, ‘নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য যদি দলীয় কোন ব্যক্তি চেষ্টা করে, তাহলে তাকে শক্তহাতে প্রতিহত করতে হবে। যারা নিজের লাভের জন্য দলের বদনাম করবে, তাদের বিরুদ্ধে শক্তহাতে ব্যবস্থা নেওয়া লাগবে। এটা আমার নির্দেশনা। জনগণের সমর্থন আমাদের মূল কাজ। তাদের সমর্থন আমাদের প্রয়োজন। আমাদের সঙ্গে জনগণ না থাকলে আমরা সার্থক হব না।’ নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি গিয়াসউদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকনের সঞ্চালনায় কর্মশালায় প্রধান আলোচক ছিলেন বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল।বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নেত্রী রেহানা আক্তার রানু, যুবদলের সাবেক সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, নির্বাহী সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু ও আজাহারুল ইসলাম মান্নান।
সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নওফেলের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সাংবাদিকদের এ কথা বলেন দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন।ঢাকার সেগুন বাগিচায় দুদকের কার্যালয়ে তিনি বলেন, ‘দুর্নীতির অভিযোগে মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।’এছাড়াও, ডিবির সাবেক প্রধান হারুন অর রশীদের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ ১৭ কোটি ৫১ লাখ টাকা ও তার স্ত্রী শিরিন আক্তারের দশ কোটি ৭৬ লাখ ও ভাই এবিএম শাহরিয়ারের ১২ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ৮৭ হাজার টাকা প্রমাণিত হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।এ দিকে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ২১ হাজার কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ অনুসন্ধানে অনুমোদন দিয়েছে দুদক। দুদকের দৈনিক ও সাম্প্রতিক অভিযোগ সেলের পরিচালক উত্তম কুমার মণ্ডল স্বাক্ষরিত এক স্মারক থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এছাড়াও, নয় প্রকল্পে ৮০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতিতে শেখ হাসিনাসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নেমেছে দুদক।এর আগে গের ২০ আগস্ট নওফেল ও তার পরিবারের সব সদস্যের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
সংস্কারের গল্প আমাদের সামনে করে লাভ হবে না: আমির খসরু
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘সংস্কারের গল্প আমাদের সামনে করে লাভ হবে না। কয়েকজন লোক টেবিলে বসে সংস্কার করা যায় না। জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে নির্বাচিত সরকারই সংসদে পরিপূর্ণ সংস্কার করবে।’ মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে আহতদের আর্থিক সহায়তা দিতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সংস্কার বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে আমির খসরু আরও বলেন, ‘টেবিলে বসে সংস্কারের মত ভুল ধারণা আর কিছু হতে পারে না। সংস্কারের মালিকানা থাকতে হবে দেশের জনগণের হাতে। সংস্কার হচ্ছে একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। এটা চলমান।’ রাজনীতিবিদদের উদ্দেশ্য খারাপ হলে কোন সংস্কার কাজে আসবে না বলেও মনে করেন বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য। আওয়ামী লীগ দেশকে ধ্বংস করার পরও যে বাংলাদেশ দাঁড়িয়ে আছে’ তা জিয়াউর রহমানের সার্বিক সংস্কারের ফসল বলেও দাবি করেন আমির খসরু। অনুষ্ঠানের বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাক্তার রফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
ওবায়দুল কাদেরের বর্তমান অবস্থান নিয়ে যা জানা গেল
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বর্তমান অবস্থান নিয়ে নানা গুঞ্জন ছিল। তবে সম্প্রতি জানা গেছে, ৮ নভেম্বর তিনি কলকাতায় পৌঁছেছেন। ৫ আগস্ট থেকে প্রায় তিন মাস তিনি কোথায় ছিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। তথ্য অনুযায়ী— তিনি এক বিশেষ স্থানে ছিলেন, যেখানে তার প্রতি যত্ন নেওয়া হচ্ছিল। পরে তিনি সবুজ সংকেত পাওয়ার পর সড়কপথে ভারতের মেঘালয়ের শিলং পৌঁছান এবং সেখান থেকে কলকাতায় চলে যান। দিল্লি নয়, কলকাতাতেই তিনি অবস্থান করছেন, এমনটাই নিশ্চিত হওয়া গেছে। এদিকে, তার জন্য কিছু লোক ভারত সরকারের কাছে লবি করলেও, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বিষয়ে নীরব ছিলেন। তবে সম্প্রতি কাদেরের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে এবং তার হোয়াটসঅ্যাপও ছিল অচল। আওয়ামী লীগের বিরোধী নেতারা জানিয়েছেন, তারা একেবারে নিশ্চিত যে কাদের কলকাতায় আছেন এবং সেখানেই তিনি নিজেকে গোপন রেখেছেন। এদিকে, ভারতের ভেতরও আওয়ামী লীগের কিছু নেতা কাদেরের অবস্থান জানার চেষ্টা করছেন। তারা অভিযোগ করেছেন, কাদেরই সরকারের পতনের জন্য দায়ী। তারা বলছেন, যদি কাদেরের সঙ্গে দেখা হয়, তবে পরিস্থিতি আরো বিব্রতকর হতে পারে। এছাড়া, ওবায়দুল কাদের সরকারের পতনের সময় একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন, বিশেষ করে ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলন মোকাবিলায় ছাত্রলীগই যথেষ্ট’—এই মন্তব্যের পর তিনি আওয়ামী লীগের ভেতর কোণঠাসা হয়ে পড়েন। এর পর থেকেই তিনি দলীয় কর্মকাণ্ডে একেবারে গুটিয়ে যান। ক্ষমতায় থাকার সময় তিনি প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো অনুষ্ঠানে হাজির থাকতেন, কিন্তু পরে তিনি একেবারে লুকিয়ে যেতে শুরু করেন। সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক দায়িত্ব চলে যায় দলের অন্য নেতাদের কাছে। কাদের তার দলের নেতাদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করেছিলেন। ফোন ধরতেন না, নেতাকর্মীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতেন। এমনকি, বিএনপির উদ্দেশে তার ‘খেলা হবে’ মন্তব্যের পর, সেই ‘খেলা’ এখন তার পেছনে ছুটছে, এবং তিনি নিজেই এখন ‘নিখোঁজ’। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কাদেরের বিরুদ্ধে নেতিবাচক ট্রল চলত। তার দামি ঘড়ি, কোট-টাই ব্যবহার এবং অদ্ভুত মন্তব্যের কারণে তিনি বারবার হাস্যরসের পাত্র হয়ে উঠেছিলেন। তবে তার ‘পালাব না’ মন্তব্য এখন একটা মজার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে, কারণ এখন তিনি নিজেই পালিয়ে আছেন। তার নিজেই দেওয়া ‘পালাব না, কোথায় পালাব?’— এই বক্তব্য এখন তার নিজের জন্যই হাস্যকর হয়ে উঠেছে, কারণ এখন তিনি কোথায় আছেন, তা কেউ জানে না, এবং তিনি নিজেই এখন রহস্যে পরিণত হয়েছেন।
কোন দলকে ক্ষমতায় আনতে চাইলে সরকারের পতন হবে: বিজেপি চেয়ারম্যান
কোন বিশেষ দলকে ক্ষমতায় নিয়ে আসতে কালক্ষেপণ করতে চাইলে অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য ফল ভালো হবে না বলে হুঁশিয়ার করেছেন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর বনানীতে বিজয় র্যালিতে অংশ নিয়ে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন। পার্থ বলেন, কোনো দলকে ক্ষমতায় আনার জন্য নির্বাচনের সময় পেছানোর কোন সুযোগ নেই। যদি এটা বর্তমান সরকার করতে চায় তবে ১৭ মিনিটেই সরকারের পতন ঘটবে। তার মত অনুযায়ী, স্বাধীনতা পেলেও মুক্তি পায়নি এ দেশের মানুষ। ভালো মানুষ রাজনীতিতে না এলে কোনো সংস্কারই কাজে আসবে না। এসময় তিনি তরুণ প্রজন্ম এবং শিক্ষিত মানুষদের রাজনীতিতে আসার আহ্বান জানান। বিজেপি চেয়ারম্যান বলেন, ১৭ বছর পর স্বাধীনভাবে বিজয় দিবস পালনের সুযোগ এসেছে। এই সুযোগকে আর নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না। পরে পার্থ’র নেতৃত্বে বিজয় দিবসের র্যালি বের হয়। বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক ঘুরে বনানী মাঠ হয়ে গুলশান ডিসিসি মার্কেটে গিয়ে র্যালিটি শেষ হয়।
ভেঙ্গে পড়ল বিএনপির বিজয় দিবসের কনসার্টের মঞ্চ
৫৪তম বিজয় দিবস উপলক্ষে ঢাকার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে চলছে বিএনপির বিশেষ কনসার্ট ‘সবার আগে বাংলাদেশ’। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুর দেড়টায় কনসার্ট শুরু হলেও নির্ধারিত সময়ের আগেই দর্শকের উপস্থিতি শুরু হয়। কনসার্টে মঞ্চ ভেঙে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। সোমবার দুপুর ১২টার দিকে যাত্রাবাড়ী যুবদলের কর্মীরা বিশাল জাতীয় পতাকা নিয়ে মিছিল করে কনসার্ট স্থলে ঢুকেন। পাশাপাশি, বিএনপির অঙ্গসংগঠন ছাত্রদল, যুবদলের নেতাকর্মীরাও মিছিল নিয়ে নিয়ে কনসার্টে ঢুকেন। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ থেকে খামারবাড়ি পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে পণ্যের পসরা নিয়ে বসেছেন ভ্রাম্যমাণ হকাররা। কনসার্টে আসা দর্শক-শ্রোতাদের মধ্যে কেউ কেউ কনসার্ট দেখতে সড়কের পাশের গাছে চড়ে বসেন। জীবন্ত কিংবদন্তী শিল্পী খুরশীদ আলমের কণ্ঠে ‘পাখির নাম দোয়েল, ফুলের নাম শাপলা, দেশের নাম বাংলাদেশ, সুফলা সুফলা’ গান দিয়ে শুরু হয় কনসার্ট। এরপর গান করেন নাসির খান। দুপুর দুইটার দিকে মঞ্চে ওঠেন প্রীতম হাসান। প্রথমে ‘খোকা’ গান পরিবেশন করেন তিনি। পরে ‘হাতে লাগে ব্যথারে, ‘উরাধুরা’ গানগুলো পরিবেশন করেন। এরপর গান করেন শিল্পী মৌসুমী। তার পরেই গান শোনান আলম আরা মিনু। ‘যে মাটির বুকে ঘুমিয়ে আছে লক্ষ মুক্তি সেনা’, ‘সোনা দানা দামি গহনা’ গান গেয়ে তিনি মাইক্রোফোন তুলে দেন মনির খানে হাতে। সেসময় ‘চিঠি’ ও ‘প্রেমের তাজমহল’ গান গেয়ে দর্শক মাতান মানির খান। এরপর ‘তোমায় দেখলে মনে হয়’ ও ‘সাগরিকা’ গান গেয়ে দর্শক মাতান কনকচাঁপা। সংগীতশিল্পী ইথুন বাবু ও মৌসুমী দুপুর আড়াইটায় মঞ্চে উঠেন। তারা গেয়েছেন ‘আমি মেজর জিয়া বলছি’ গানটি। পরে বাউল গান দিয়ে মঞ্চ মাতান ইলিজা পুতুল, গোলাপি, আলিয়া বেগম ও চিশতি বাউল। বিকাল পাঁচটায় পরপর গান করেন সংগীতশিল্পী ইমরান মাহমুদুল ও কনা। কনসার্টে এককভাবে গাওয়ার কথা রয়েছে সঙ্গীতশিল্পী সৈয়দ আব্দুল হাদী, বেবী নাজনীন ও জেফারের। এছাড়া, নগরবাউল, ডিফারেন্ট টাচ, আর্ক, সোলস, শিরোনামহীন, আর্টসেল, অ্যাভয়েড রাফা ও সোনার বাংলা সার্কাসেরও পারফর্ম করার কথা রয়েছে। মঞ্চ ভেঙে আহত সাংবাদিকরা: বিকাল পৌনে চারটার দিকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে কনসার্ট চলাকালে সাংবাদিকদের জন্য বানানো একটি মঞ্চ ভেঙে পড়ে। এতে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি জাহানারা পারভীন, যমুনা টেলিভিশনের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক আরেফিন শাকিলসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। জাহানারা পারভীন বিএনপির মিডিয়া সেলে জানান, আমার হাত কেটে গেছে। এছাড়া, আমাদের ক্যামেরাপার্সন তপন আয়েশা মেমোরিয়াল হাসপাতাল ভর্তি আছেন। যমুনা টেলিভিশনের আরেফিন শাকিল জানান, বিএনপির কনসার্টে মঞ্চ ভেঙে পড়েছে, বহু সাংবাদিক আহত, ক্যামেরা ভেঙে গেছে অনেকের। আমি কোমরে ও আমার ক্যামেরাপারসন পায়ে ব্যথা পেয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছি। দোয়া করবেন। বিএনপির কনসার্টে নিরাপত্তা ঘাটতির কারণে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন গণমাধ্যম কর্মীরা। আহত সাংবাদিকদের চিকিৎসার জন্য বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাক্তার রফিকুল ইসলাম ও ড্যাবের চিকিৎসক নেতাদের অবহিত করা হয়েছে বলে জানান বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান। কনসার্টের আয়োজক সংগঠন ‘সবার আগে বাংলাদেশ’র আহ্বায়ক বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী অ্যানি বলেন, ‘গত ১৫-১৬ বছর বাংলাদেশের মানুষ বিজয় দিবস উদযাপন করতে পারেনি। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের নানা অত্যাচার, অনাচারের মুখে পড়তে হয়েছে। তাই, জাতিকে একত্রিত করার মধ্য দিয়ে এবারের বিজয় দিবস পালনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’ বিজয় দিবসে বিএনপি নতুন প্রত্যাশা নিয়ে জনগণ ও নতুন প্রজন্মের সামনে হাজির হতে চাইছে বলে জানিয়েছেন অ্যানি। কনসার্টটি সোমবার রাত ১১টা পর্যন্ত চলবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এবারের বিজয় দিবসকে সর্বজনীনভাবে উদযাপন করার লক্ষ্যে এই কনসার্টের পরিকল্পনা। বাংলাদেশের নিজস্ব সংস্কৃতি ধরে রাখার তাগিদ জানিয়ে অ্যানি বলেন, ‘দিল্লির আনুগত্য করার জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন হয়নি। আমরা নতুন প্রজন্মের কাছে বাংলাদেশের নিজস্ব সংস্কৃতি তুলে ধরতে চাই। এই উদ্দেশ্য নিয়ে আমাদের যাত্রা শুরু করলাম।’
মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তি প্রতিশোধ নিতে ২৪ দিয়ে ৭১-কে মুছে ফেলতে চাইছে
‘মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত অপশক্তি পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে ২৪ দিয়ে ৭১-কে মুছে ফেলতে চাইছে। মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তি বাংলাদেশের জন্মশত্রুরা তাদের পরাজয়ের প্রতিশোধের রাজনীতি শুরু করেছে।’ তারা মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে মুছে ফেলে পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)। ৫৩তম বিজয় দিবস উপলক্ষে জাসদের কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির সভায় কথাগুলো বলেন বক্তারা। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুরে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে শহীদ কর্নেল তাহের মিলনায়তনে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। দলের কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সফি উদ্দিন মোল্লা সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভা সঞ্চালনা করেন দলের দপ্তর সম্পাদক মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সন্তান সাজ্জাদ হোসেন। সভায় বক্তারা বলেন, ‘১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং তাদের এ দেশীয় সহযোগী রাজনৈতিক দলগুলো ও তাদের নেতা-কর্মীদের সমন্বয়ে গঠিত হয় রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনী। তাদের পরাজয় স্বীকার ও আত্মসমর্পণ এবং মুক্তিবাহিনী ও মুক্তিকামী জনগণের বিজয় জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে গৌরবময় ও জাতীয় অহংকারের বিষয়।’ বক্তারা মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ৩০ লাখ মানুষ, সম্ভ্রম দানকারী দুই লাখ নারী, নির্যাতন, অত্যাচার, কষ্ট ভোগ করে অসীম ত্যাগ স্বীকারকারী মুক্তিকামী কোটি কোটি মানুষ, স্বাধীনতাসংগ্রামী বীর মুক্তিযোদ্ধা, মিত্র অংশ ভারতীয় সেনাবাহিনীর বীর ও শহীদ সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানান। তারা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তি তাদের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে ২৪ দিয়ে ৭১-কে মুছে ফেলতে চাইছে।’ বক্তারা আরো বলেন, ‘স্বাধীনতাসংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধে বিজয় ও ৩০ লাখ শহীদের স্বপ্ন, আদর্শ, চেতনাকে ধারণ করে মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তি বাংলাদেশের জন্মশত্রুদের মুক্তিযুদ্ধে তাদের পরাজয়ের প্রতিশোধের রাজনীতি শুরু করেছে। এরা মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে মুছে ফেলে পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধারের রাজনীতি করছে।’ এদের মোকাবিলায় শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ ও দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তারা। সভায় বক্তব্য দেন জাসদের কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শওকত রায়হান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মীর্জা মো. আনোয়ারুল হক, জাতীয় শ্রমিক জোট-বাংলাদেশের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইফুজ্জামান বাদশা, কোষাধ্যক্ষ মনির হোসেন, শ্রমবিষয়ক সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক, জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কাজী সাইমুল হক, কৃষক জোটের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রতন দাস, জাসদ ঢাকা মহানগর (পূর্ব) সহসভাপতি নুরতাজ পারভীন, যুব জোটের সাংগঠনিক সম্পাদক শারফুদ্দিন সোহেল, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের (বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র) সভাপতি রাশিদুল হক।
ঢাকায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের বিজয় র্যালি অনুষ্ঠিত
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী বলেছেন, ‘বিজয়ের ৫৪ বছরেও জনগণ বিজয়ের প্রকৃত স্বাধ ও সুবিধা থেকে বঞ্চিত। ৫৪ বছরে যারা রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল, তারা সকলেই নিজের আখের গুছিয়েছে। ভাগ্যাহত জনতার ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয়নি। জনগণকে চোষে তারা হয়েছে আঙুল ফুলে কলাগাছ। আধিপত্যবাদ ভারতের আগ্রাসী মনোভাব বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ বরদাশত করবে না। ভারত বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাচ্ছে। বাংলাদেশের ইসলামপন্থি জনগণ সংখ্যালঘুদের মন্দির, বাড়ী-ঘর পাহারা দেয়। অপর দিকে, ভারত পায়ে পারা দিয়ে ঝগড়া সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনে হামলা ও পতাকা পুড়িয়ে অসভ্যতার পরিচয় দিয়েছে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ভুয়া সংবাদ পরিবেশন করে বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করার হীন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। ভারত আমাদের সাথে দাদাগিরি করতে চায়। ভারতের দাদাগিরির সময় পুরিয়ে আসছে। খুনি হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে ভারত বাংলাদেশ নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রযেছে। ভারত থেকে হাসিনাকে ফেরত আনতে হবে। গণহত্যার দায়ে হাসিনাকে ফাঁসি দিতে হবে।’ সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকার বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে ৫৪তম বিজয় দিবস উপলক্ষে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের উদ্যোগে পতাকা র্যালিপূর্ব জমায়েতে তিনি এসব কথা বলেন। যুগ্ম-মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মাদ ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে র্যালিপূর্ব সমাবেশে বক্তব্য দেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম-মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ুম, কেন্দ্রীয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, মাওলানা আরিফুল ইসলাম, মুহাম্মাদ শহিদুল ইসলাম, ছাত্রনেতা মুনতাছির আহমাদ, কেএম শরীয়াতুল্লাহ, মুফতি ফরিদুল ইসলাম, মাওলানা মাকসুদুর রহমান, মাওলানা মাসউদুর রহমান। প্রধান অতিথির বক্তব্যে সমাবেশে মোসাদ্দেক বিল্লাহ আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আমাদের অর্জিত স্বাধীনতাকে পৈত্রিক সম্পত্তিতে পরিণত করেছিল। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে জাতিকে করেছে দ্বিধা বিভক্ত। মুক্তিযুদ্ধবিরোধী আখ্যা দিয়ে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের হয়রানি করতেও আওয়ামী লীগ ভুল করেনি। কার্যত আওয়ামী লীগ বিগত ১৬ বছরে দেশকে একটি অঘোষিত বাকশাল রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। এখনও পলাতক হাসিনা ও তার দোসররা দেশ নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের আহ্বান থাকবে, খুনি হাসিনাও তার পলাতক সহযোগীদের দেশে ফিরিয়ে এনে গণহত্যাসহ সব অপরাধের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।’ তিনি একটি কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য দেশের সর্বস্তরের জনতার প্রতি আহ্বান জানান। মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম বলেন, ‘শেখ হাসিনা পালানোর পর তার দোসররা চর দখল, দোকান দখলসহ দেশকে লুটপাটের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে। অন্তর্বর্তী সরকারকে আগে রাষ্ট্রসংস্কার করতে হবে। রাষ্ট্র সংস্কার ছাড়া নির্বাচন দিলে ২৪’র শহীদের রক্তের সাথে গাদ্দারী হবে। আমরা ২৪’র শহীদের রক্তের সাথে গাদ্দারী দেশের জনগণ সহ্য করবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘শোনা যাচ্ছে, ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সাথে বৈঠকের পর বর্তমান সরকার পিলখানা ট্রাজেডির বিচার থেকে ফিরে আসছে। আমরা পরিস্কারভাবে বলতে চাই, ভারতের তাঁবেদারি করার সময় আর আমাদের নাই। ভারতের চোখে চোখ রেখে কথা বলার সময় এসেছে। ভারত আমাদের ছাড়া চলতে পারবে না। ভারতের পণ্য ছাড়া আমরা চলতে পারব। কিন্তু, ভারত বাংলাদেশের বাজার হারালে ভারতকে না খেয়ে মরতে হবে।’
ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রদলের বিজয় র্যালি
বিজয় দিবস উপলক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও বিজয় র্যালি করেছে ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রদল। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে কলেজের প্রাঙ্গণে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। ইসলামীয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক মারুফের সভাপতিত্বে র্যালি পরবর্তী সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ন আহ্বায়ক মোহাম্মদ আনাছ। উপস্থিত ছিলেন সদরঘাট ছাত্রদলের আহ্বায়ক জুয়েল সদস্য সচিব রাব্বি ও নাহিদসহ কলেজ ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ।
‘যে স্বাধীনতা আমরা অর্জন করেছিলাম তা হাইজ্যাক করা হয়েছিল’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন, ‘১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর যে স্বাধীনতা আমরা অর্জন করেছিলাম, তা হাইজ্যাক করা হয়েছিল। সেই স্বাধীনতার সুফল দেশের আপামর জনগণের কাছে পৌঁছাতে দেয়া হয়নি।’ সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর উত্তরের উত্তরা অঞ্চলের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সেলিম উদ্দিন আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে গোটা জাতি ভূমিকা রেখেছেন। কিন্তু, এই অবদানকে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা পরবর্তী একটি বিশেষ দল তাদের দলীয় ও পারিবারিক সম্পত্তিতে পরিণত করেছিলেন।’ তিনি বলেন, ‘কেউ যদি আওয়ামী লীগের মতের বিপক্ষে গিয়েছে, তাকে রাজাকারের খেতাব দেয়া হয়েছে। এমনকি সেক্টর কমান্ডার প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকেও রাজাকার বলতে তারা কুণ্ঠাবোধ করেননি। মূলত যারাই আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করেছে, সত্য কথা বলেছে তাদেরকেই রাজাকার ও স্বাধীনতাবিরোধী তকমা দেয়া হয়েছে।’ সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘তারা বিরোধী মতের মানুষদের সঙ্গে জঙ্গিবাদের তকমা যুক্ত করেছিল। অথচ শেখ হাসিনা তার শাড়ির নিচে জঙ্গিবাদ তৈরি করেছিল। এই দেশে যদি জঙ্গিবাদ বলে কিছু থেকে থাকে তাহলে তার একক মালিকানা শেখ হাসিনার। তিনি জঙ্গি নাটক সাজিয়ে দেশের যতগুলো নিরপরাধ মানুষকে খুন করেছেন, তার জন্য তাকে ১০০ বার ফাঁসি দেয়া হলেও কম হয়ে যাবে। আসলে জঙ্গিবাদের মূল নায়ক হচ্ছেন তিনি।’ সভায় জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির মোহাম্মদ আব্দুর রহমান মূসা, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য গোলাম মোস্তফা, ঢাকা মহানগর উত্তরের সেক্রেটারি মুহাম্মদ রেজাউল করিম, কেন্দ্রীয় মজলিসের শূরা সদস্য জামাল উদ্দিন, ঢাকা মহানগর উত্তরের প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক আতাউর রহমান সরকার উপস্থিত ছিলেন।
সিএমএইচ থেকে গুলশানের বাসায় যাচ্ছেন বিএনপির মহাসচিব
ঢাকা জেলার সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর পর আচানক অসুস্থ হয়ে পড়া বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাভারের সিএমএইচ হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসায় যাচ্ছেন। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য জানিয়েছেন। শায়রুল কবির জানান, মহাসচিব এখন অনেকটা সুস্থ আছেন। তার কিছু স্বাস্থ্য পরীক্ষা প্রয়োজন আছে। সেগুলো সিএমএইচে হবে। এর আগে সোমবার সকালে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর পরে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন ফখরুল ইসলাম। তিনি জাতীয় স্মৃতিসৌধের ফ্লোরে বসে পড়েন। এ সময় তার মাথায় পানি ঢালেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এরপর হঠাৎ অচেতন হয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধের ফ্লোরে শুয়ে পড়েন। তাৎক্ষণিকভাবে বিএনপির নেতাকর্মীরা তাকে ধরাধরি করে দ্রুত সাভার সিএমএইচ হাসপাতালে নিয়ে যান।
স্মৃতিসৌধে অসুস্থ হয়ে পড়লেন মির্জা ফখরুল, নেওয়া হলো সিএমএইচ
মহান বিজয় দিবসে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি অসুস্থ হয়ে মাটিতে শুয়ে পড়েন। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে সাভার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে আছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডাক্তার এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও সালাউদ্দিন আহমেদ ও হাবিবুন্নবী খান সোহেল। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য জানিয়েছেন।
রোডম্যাপ জানতে চাইলে অস্বস্তি হয় উপদেষ্টাদের: তারেক রহমান
দ্রুত মধ্যে নির্বাচন দিয়ে সংস্কার কাজের সবকিছু বাস্তবায়নের পথ সুগমের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। রোববার (১৫ ডিসেম্বর) ঢাকার রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিজয় দিবস উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় ভার্চ্যুয়ালি বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। এ সময় তারেক রহমান বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার যত দিন থাকবে, তত দিন কবে নির্বাচন হবে তা জনগণের জানার অধিকার আছে। ডেঙ্গুতে প্রতিদিনই মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, লাগামহীন মূল্যের জন্য নাজেহাল মানুষ। এ জন্য সংস্কার আগে না সংসার আগে- এ প্রশ্নটি মুখ্য হয়ে উঠতে পারে মানুষের কাছে।’ তাই, সংস্কারে বিলম্ব যেন কষ্ট না দেয় মানুষকে, সেই পথে এগোনো প্রয়োজন বলেও জানান তারেক রহমান। তিনি আরো বলেন, ‘আমি মনে করি, জবাবদিহিমূলক সংসদ কার্যকর থাকলে সুশাসন থাকবে দেশে। কেউ স্বৈরাচার হতে চাইলে তার সামনে কোন বিধান বাধা হতে পারে না। এ জন্য রাষ্ট্র ফ্যাসিসমুক্ত রাখতে অবশ্যই জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।’ এ সময় অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্বাচনমুখী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘রোডম্যাপ ও কাজের হিসাব চাইলে অস্বস্তি দেখা যায় অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের চেহারায়, কিন্তু সেসব জনআকাঙ্ক্ষাবিরোধী। যা জাতির জন্য চিন্তার বিষয়। প্রত্যাশা করি, অন্তর্বর্তী সরকার শিগগিরিই নির্বাচনের রোডম্যাপ দিয়ে নির্বাচনমুখী করবে জনগণকে। এ সময় দলের নেতাকর্মীদের জনগণের কাছে বিশ্বস্ত সঙ্গী হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘সরকারের ভাবতে হবে, তারা নিজেদের সফল দেখতে চায় কিনা। একটি বৈষম্যহীন মানবিক বাংলাদেশ গড়ার জন্য বিএনপির ৩১ দফা। সব নেতাকর্মীকে বলতে চাই, নির্বাচনী যাত্রায় আপনাদের বিশ্বস্ত সঙ্গী জনগণ। এ জন্য আপনারা জনগণকে সঙ্গে রাখুন।’
বিজয় দিবস উপলক্ষে ঢাকায় সোমবার ইসলামী আন্দোলনের জমায়েত ও পতাকা র্যালি
৫৪তম বিজয় দিবস উপলক্ষে ঢাকায় জমায়েত ও পতাকার্যালি করবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল দশটায় বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে এসব কর্মসূচি পালন করা হবে। র্যালি পূর্ব জমায়েতে প্রধান অতিথি থাকবেন দলের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানি। সভাপতিত্ব করবেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম। এছাড়াও, দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন। জুলাই-আগষ্ট বিপ্লবে আহত ও পঙ্গুত্ববরণকারী বীর যোদ্ধারাও পতাকা র্যালিতে অংশ নিবেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সেক্রেটারী শহিদুল ইসলাম ও উত্তর সেক্রেটারী মাওলানা আরিফুল ইসলাম যৌথ বিবৃতিতে সোমবারের বিজয় র্যালি সফল করার জন্যে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীসহ দেশপ্রেমিক ঈমানদার জনতার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
ছাত্রলীগের প্রাক্তন নেত্রী নদীসহ চার জন রিমান্ডে
সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি নিশীতা ইকবাল নদীসহ চারজনকে দুইদিন হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি পেয়েছে পুলিশ। রিমান্ডে যাওয়া অন্যরা হলেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের সাবেক যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আলফাত আরা কাজল, এআইইউবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের কর্মী শোভন মজুমদার ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাবেক কর্মী হাসান ইমান শোভন। রোববার (১৫ ডিসেম্ব) ঢাকা মহানগর হাকিম মেহেদী হাসান এ আদেশ দেন। রোবার চারজনকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কলাবাগান থানার উপপরিদর্শক এসআই তারেক মোহাম্মদ মাসুম। রাষ্ট্রপক্ষের পিপি ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন রাখি রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আদেশ দেয়। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে নিশিতা ইকবাল নদীকে গ্রেফতার করার কথা জানিয়েছিলেন ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিক। আওয়ামী লীগ সরকার পতনে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবির মুখে ‘সন্ত্রাসী’ কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে গেল ২৩ অক্টোবর ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে অন্তর্বর্তী সরকার।
হাসিনা পালানোর পর বহু নতুন বিএনপির জন্ম হয়েছে: শামা ওবায়েদ
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গেল ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর বহু নতুন বিএনপির জন্ম হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ। রোববার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজবাড়ী জেলা বিএনপির কার্যালয়ে জেলা বিএনপির কাউন্সিল উপলক্ষে আয়োজিত প্রস্তুতি সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। সভায় শামা ওবায়েদ বলেন, ‘বহু আওয়ামী লীগ এখন বিএনপিতে এসে মিশতে চায়। কিন্তু, গত ১৭ বছর আমাদের যেসব নেতাকর্মীরা দলের বিপদের সময় তারেক রহমানের পাশে থেকে তার আদর্শে আদর্শিত হয়ে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে মাঠে থেকে আন্দোলন করেছেন। যারা দলীয় প্রত্যেকটি কর্মসূচীতে অংশ নিয়েছেন, গুলি খেয়েছেন, টিআর গ্যাস খেয়েছেন তৃণমূলের সেই নেতাকর্মীদেরকে আমাদের ভুলে গেলে চলবে না। তাদের প্রাধান্য দিতে হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আজকে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ হয়েছে। বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু ভোটের আয়োজন যখন হবে, যখন বিএনপি সরকার গঠন করার সুযোগ পাবে তখন বিএনপি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য কি কি কাজ করবে সেই ৩১ দফা সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিচ্ছেন তারেক রহমান। সেই ৩১ দফায় লেখা আছে বাংলাদেশে একজন লোক দুই বারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। পৃথিবীর কোন লিডার নিজেই তার কর্মসূচীতে লিখবে যে, একজন লোক দুই বারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না? এটা শুধুমাত্র তারেক রহমানের পক্ষেই সম্ভব। কারণ, উনি প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সন্তান, খালেদা জিয়ার সন্তান। যিনি ছিলেন আপোষহীন নেত্রী।’ শামা ওবায়েদ বলেন, ‘হাসিনা যে ধ্বংসস্তূপে বাংলাদেশকে রেখে গেছে, সে ধ্বংসস্তূপ থেকে বাংলাদেশকে ফের একটি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করার জন্য, অর্থনীতিকে আরও চরম উচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তারেক রহমানের প্রণীত এ ৩১ দফার কোন বিকল্প নেই। আমাদের সেটা অনুধাবন করতে হবে। আমরা সবাই সাংসদ-মন্ত্রী হতে চাই, ভাল কথা। কিন্তু, আমাদের দল এখনও ক্ষমতায় যায়নি। ক্ষমতায় আছে অন্তর্বর্তী সরকার। আমাদের সকলকে ধৈর্য ধরে দেশের জন্য কাজ করতে হবে; পাড়া, প্রতিবেশী ও মহল্লার জন্য কাজ করতে হবে। যেন বিএনপির প্রতিটি কর্মী প্রয়াত জিয়া ও তারেক রহমানের আদর্শে আদর্শিত হয়ে মাঠে থাকতে পারে। সব ধরনের অন্যায় থেকে আমরা দূরে থাকব। এটাই তারেক রহমানের শিক্ষা, জিয়ার আদর্শ, খালেদা জিয়ার আদর্শ।’ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মাশুকুর রহমান, সেলিমুজ্জামান সেলিম, কৃষক দলের সহ-সভাপতি ও রাজবাড়ী জেলা বিএনপির যুগ্মআহ্বায়ক আসলাম মিয়া। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক লিয়াকত আলী বাবু, সদস্য সচিব কামরুল আলম, যুগ্মআহ্বায়ক রেজাউল করিম শিকদার পিন্টু ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুন-অর-রশিদ।
রাষ্ট্রের সংস্কার কখনো রাজনীতিবিদদের অবসর দিয়ে হয় না: রুহুল কবির রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, রাজনৈতিক দল গড়ে উঠে গণস্বার্থকে কেন্দ্র করে। ছাত্রজনতার অভ্যত্থানে ৫ আগস্টের পর গঠিত সরকার দেশের জন্য কাজ করার চেষ্টা করছেন। আমরা সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি। আবার অনেক কাজের সমালোচনাও করছি। সমালোচনা মানে এই নয় যে আমরা এ সরকারের বিরোধিতা করছি, পতন দাবি করছি। তিনি বলেন, একজন উপদেষ্টা বলেছেন ৫০ বছরে রাজনৈতিক দলগুলো কিছুই করতে পারেনি, আমরা করছি। তাহলে ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ, ৯০ এবং ২৪-এর সফলতা কে এনেছে? এগুলো কি সুশীল সমাজের অবদান? হা তারা সমর্থন করেছে। ৩শ শতাব্দী থেকে ভোটের প্রথা চালু হয়েছে। ৮শ বছর আগে ইংল্যান্ডে অধিকারের আন্দোলন শুরু হয়েছে। বড় বড় উন্নত দেশেও রাষ্ট্রের সংস্কার কখনো রাজনীতিবিদদের অবসর দিয়ে হয় না। সংস্কার নিয়ে জনৈক উপদেষ্টার উক্তি সমালোচনা করে তিনি বলেন, এটি অহমবোধের অভিব্যক্তি। একটি রাষ্ট্রকে অগ্রগতির পথে নিয়ে যাওয়ার যে সংস্কার এই সংস্কারতো মনীষীরা চিন্তা করেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোই সেটা বাস্তবায়ন করেছে। প্রকৃত সংস্কার করলে গণতন্ত্রের যে অপরিহার্য অংশ নির্বাচন, আইনের শাসন, বিচার বিভাগ এগুলোর সংস্কার তো বিলম্ব হওয়ার কথা না। রবিবার দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সূচনা কমিউনিটি সেন্টারের সামনে জাতীয়তাবাদী কৃষকদল মহানগর উত্তরের শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচিতে বক্তব্য তিনি এ কথা বলেন। রিজভী বলেন, অগ্রগতি যে একেবারে হয়নি আমরা তা বলছি না। আমরা এখন বক্তৃতা করে বাসায় যেতে পারছি আমাদেরকে এখন পুলিশ ধরছে না, গোয়েন্দা পুলিশ খুঁজছে না, হ্যাঁ এটা হয়েছে। এ ধরনের কথা আপনারা বললে মানুষ অন্যকিছু ভাববে। ফখরুদ্দিন-মঈনউদ্দিনের পুনরুত্থান হবে। তিনি বলেন, সরকার এখনও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। পতিত স্বৈরশাসকের বাজার সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেনি। তাদের চিহ্নিত করুন, মধ্যস্বত্বভোগীদের আইনের আওতায় আনুন। রাস্তায় রাস্তায় এখনও গাড়িতে চাঁদাবাজি করছে। বিএনপি এসব বন্ধের চেষ্টা করতে পারে, কিন্তু বন্ধ করতে পারবে না। এর দায়িত্ব সরকারের। সরকার এসব প্রতিহত করার চেষ্টা করলেও উদ্যম কম। জনগণ যদি আগের চেয়ে স্বস্তিতে থাকতে না পারে তাহলে হতাশ হবে। বিএনপির এই নেতা বলেন, আপনারা (অন্তবর্তীকালীন সরকার) প্রশাসনে শেখ হাসিনার পোকামাকড় রেখে দিলে দেশ এগিয়ে নিতে যেতে পারবেন কিভাবে? নারায়ণগঞ্জে যে এসপির গুলিতে আন্দোলনকারী শাওনকে হত্যা করা হলো তাকে প্রমোশন দিয়ে ঢাকায় নিয়ে আসলেন। তাহলে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, হত্যা বন্ধ করবেন কীভাবে। যে পুলিশের কারণে রাজপথ রক্তাক্ত হয়েছে উল্টো তাদের ভাল পোস্ট দিলে বর্তমান সরকার এবং পরবর্তীতে যারা আসবে তাদের জন্য ক্ষতিকর। কৃষক দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, কৃষক দল বাজার দরে কৃষিদ্রব্য কিনে কম মূল্যে বিক্রি করছে। বগুড়া থেকে কম মূল্যে বীজ কিনে কুড়িগ্রামে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করছে। এরজন্য বিএনপির পক্ষ থেকে কৃষক দলকে ধন্যবাদ জানাই। এখন আন্দোলন নেই, কিন্তু বিএনপির কেউ বসে নেই। জনস্বার্থে কাজ করে যাচ্ছে। শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষক দলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন, সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুলক, দপ্তর সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক শামসুর রহমান শামসহ মহানগর উত্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
জনপ্রশাসনের গণতান্ত্রিক সংস্কারে সুপারিশ জমা দিল বিএনপি
‘জনপ্রশাসনের যুগোপযোগী ও গণতান্ত্রিক সংস্কারের লক্ষ্যে’ সুপারিশ দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি। রোববার সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমানের কাছে এ সুপারিশ দিয়েছে বিএনপির প্রতিনিধি দল। এতে কার্যকারিতা ও নিরপেক্ষতা বাড়াতে প্রশাসনিক কাঠামোর ব্যাপক পুনর্গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও দলের জনপ্রশাসন সংস্কার কমিটির সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল এ সুপারিশ জমা দেন। ইসমাইল জবিউল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, ‘পুরো প্রশাসনিক কাঠামো ঢেলে সাজাতে হবে। আমরা প্রস্তাব করছি, প্রতিটি নির্বাচনের তিন মাস আগে প্রশাসনের সর্বস্তরে পরিবর্তন আনতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে জেলা প্রশাসকের ফিট লিস্ট তৈরির প্রক্রিয়া সংশোধন।’ তিনি বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে একই পদে থাকার কারণে সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। এ কারণে বেশকিছু সমস্যা সৃষ্টি হয়, সেগুলো সমাধান করা গুরুত্বপূর্ণ। প্রস্তাবগুলোতে এই জাতীয় ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক স্থানান্তরের বিধান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আগের সরকারের আমলে বেশ কিছু সংখ্যক কর্মকর্তা তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ প্রশাসন নিশ্চিত করতে, তাদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও তুলে ধরেছে বিএনপি।