১৪ বছর বয়সেই সফল গ্রাফিক্স ডিজাইনার বেলকুচির সবুজ
সৃজনশীলতা যখন কারও জীবনের ধ্রুবতারা হয়ে ওঠে, তখন বয়সের সীমাবদ্ধতাকে হার মানতে হয়। সিরাজগঞ্জের বেলকুচির সবুজ ইসলাম সোহাগ ঠিক এমনই একজন প্রতিভাবান তরুণ, যিনি নিজের প্রচেষ্টা ও দক্ষতার মাধ্যমে সবার জন্য হয়ে উঠছেন এক উজ্জ্বল উদাহরণ। সোহাগপুর নতুনপাড়া আলহাজ্ব সিদ্দিক উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র সবুজের জীবন অন্যদের চেয়ে একটু ভিন্ন। তার সমবয়সীরা যেখানে গেমস কিংবা বিনোদনে মগ্ন, সেখানে সবুজ বেছে নিয়েছে সৃজনশীলতার পথ। সবুজের যাত্রা শুরু হয় বাড়ির পুরনো একটি ল্যাপটপ থেকে। ইন্টারনেটে ইউটিউবের টিউটোরিয়াল দেখে তিনি নিজেই শেখেন গ্রাফিক্স ডিজাইন। ধীরে ধীরে শখ থেকে কাজ, আর কাজ থেকে দক্ষতায় পৌঁছানোর পথে তিনি নিজেকে নিয়ে যান এক ভিন্ন উচ্চতায়। শুধু শেখার মধ্যে নিজেকে সীমাবদ্ধ না রেখে সবুজ পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন ক্লায়েন্টের কাজ শুরু করেন।তাঁর এই আয়ের মাধ্যমে তিনি নিজের মধ্যবিত্ত পরিবারে আর্থিক সহযোগিতা করছেন, যা তাঁর বয়সের তুলনায় অত্যন্ত প্রশংসনীয়। বর্তমানে সবুজ Creative IT Solution-এ পার্ট-টাইম জুনিয়র ভিডিও এডিটর হিসেবে কাজ করছেন। তাঁর কাজের পরিধি দিন দিন বিস্তৃত হচ্ছে। গ্রাফিক্স ডিজাইন ও ভিডিও এডিটিংয়ে তার দক্ষতা তাকে নিয়ে গেছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রজেক্টে। সবুজ এরই মধ্যে জয়ত্রি এবং সহজবাজার-এর মতো ব্র্যান্ডের স্টাটিক ডিজাইন করছেন। পাশাপাশি বেশ কয়েকটি নাটকের পোস্টার এবং জনপ্রিয় মডেলদের প্রমোশনাল ভিডিও এডিটিংয়ের কাজ করেও প্রশংসিত হয়েছে। প্রযুক্তির প্রতি তার আগ্রহ তাকে আরও নতুন কিছু শেখার জন্য অনুপ্রাণিত করছে। প্রতিনিয়ত নতুন প্রযুক্তি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)-এর দক্ষতা অর্জন করে নিজেকে আরও সমৃদ্ধ করছেন। সবুজ ইসলাম সোহাগ শুধু একটি নাম নয়, বরং সৃজনশীলতার প্রতীক। তার গল্পটি মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানদের দেখিয়ে দেয়, সীমাবদ্ধতাই শেষ কথা নয়; ইচ্ছা আর পরিশ্রম দিয়ে অনেক কিছুই সম্ভব। বেলকুচির মতো মফস্বল এলাকা থেকে উঠে এসে প্রযুক্তি আর সৃজনশীলতার মেলবন্ধনে নিজের জায়গা করে নেওয়া সবুজের এই যাত্রা সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক। সবুজের ভবিষ্যৎ স্বপ্ন আরও বড়। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কাজ করার লক্ষ্য নিয়ে তিনি প্রতিনিয়ত এগিয়ে চলেছেন। তাঁর এই সৃজনশীল যাত্রা থেমে না যাক—এই শুভকামনা। এমন তরুণদের গল্প আমাদের সমাজের জন্য আলোকবর্তিকা হয়ে থাকবে।
আজ বেগম রোকেয়া দিবস
আজ ৯ ডিসেম্বর (সোমবার) বেগম রোকেয়া দিবস। সোমবার এ দিবস উপলক্ষে ‘বেগম রোকেয়া পদক-২০২৪’ প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়। নারী শিক্ষার প্রসারে বেগম রোকেয়ার অবদানের কথা স্মরণ করে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন। বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে সোমবার স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে (টিএসসির বিপরীত পাশে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) বিকেল ৩টায় ‘আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ-২০২৪’ এর কর্মসূচির অংশ হিসেবে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা উভয়েই ‘বেগম রোকেয়া পদক ২০২৪’ পেতে যাওয়া নারীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের ১৪৪তম জন্মবার্ষিকী ও ৯২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় রংপুরে বাংলা একাডেমি আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। বেগম রোকেয়া ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। মাত্র ৫২ বছর বয়সে ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর কলকাতায় তার মৃত্যু হয়। তার জন্ম ও মৃত্যুর দিনটি রোকেয়া দিবস হিসেবে পালন করে বাংলাদেশ। বাঙালি মুসলমান সমাজে নারী স্বাধীনতার পক্ষে প্রথম প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর বেগম রোকেয়া বিশ শতকের প্রথম দিকে বাঙালি মুসলমানদের নবজাগরণের সূচনায় প্রধান নেতৃত্বে ছিলেন। বাঙালি মুসলিম সমাজে পুরুষের পাশাপাশি নারীর সমান অধিকার এবং নারী স্বাধীনতার পক্ষে নিজের মতবাদ প্রচার করেন। বেগম রোকেয়ার উল্লেখযোগ্য রচনার মধ্যে রয়েছে- মতিচূর, সুলতানার স্বপ্ন, পদ্মরাগ, অবরোধবাসিনী প্রভৃতি।
মধু চাষ করে বছরে আয় সাড়ে ৩ লাখ টাকা
অনেকটা শখের বশে মাত্র ১টি মধুর বাক্স মৌমাছিসহ ৭হাজার টাকা দিয়ে কিনে বাড়িতে রাখেন লিমন ও রিপন। কিছুদিন পর থেকে তিনি মধু সংগ্রহ শুরু করেন। এরপর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ধীরে ধীরে বাণিজ্যিকভাবে শুরু করেন মৌ চাষ। এখন তার খামারে ৫০টার ও বেশি’ মৌমাছির বাক্স। গড়ে তুলেছেন ‘মিষ্টি মৌ-খামার’। বলছিলাম মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকার আলেপুর গ্রামের দুই ভাই লিমন ও রিপন এর কথা। মৌমাছি চাষ করে তারা এখন বেশ ভালো আছেন। এলাকায় তারা এখন চৌধুরী বাড়ির ‘মধু লিমন ও রিপন’ নামে পরিচিত। বৃস্পতিবার (২১নভেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে উপজেলার পৌর এলাকার ৫নং ওয়ার্ডের চৌধুরী বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িতে রয়েছে আম, ঝাম, কাঠাল, লেচু, লেবু সহ বিভিন্ন ফলের গাছ রয়েছে। এসব জায়গার ভেতরে ফাঁকা একটু জায়গা মাঝে মধ্যে রয়েছে কিছু কাঠের বাক্স। সেখানে দেখা যায় মৌমাছিঁর আনাগোনা। চলছে মধু আহরণ। আগুনের ধুয়া ব্যবহার করে সেসব বাক্স থেকে মধু সংগ্রহ করা হচ্ছে। জানা গেছে, চৌধুরী বাড়ির রিপন পড়াশোনা মোটামোটি শেষ করে ইলেকট্রিশিয়ানের কাজ করেন। ছোট ভাই লিমন পড়াশোনার পাশাপাশি বাড়িতে মধু চাষ করছেন। দুই ভাই শখের বসে প্রথমে ১টা বাক্স কিনে মধুর চাষ শুরু করেন। পরে এক এক করে ৫০টা বক্স বাড়ি উঠানের বিভিন্ন স্থানে মাচা তৈরী করে রাখেন। ৪মাস পর পর মধু সংগ্রহ করেন তারা। প্রতিটা বক্সে ৪-৮ কেজি মধু পাওয়া যায়। প্রতি কেজি মধুর দাম ১৫০০-১৮০০টাকা করে বিক্রি করেন। এখন মধুর বাণিজ্যিক চাষের দিকেই মনোযোগী হন তারা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে তারা মধু দেশের বিভিন্ন জায়গায় অনলাইনে পাঠান। বছরে প্রায় ৩ থেকে সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা আয় করেন রিপন ও লিমন। রিপন ও লিমন বলেন, ‘২০১৭ সালে শখের বসে ৭ হাজার টাকা দিয়ে মাত্র ১টি মধুর বাক্স কিনে বিভিন্ন ফুলের মধু সংগ্রহ শুরু করি। দুই ভাই পড়াশোনার পাশাপাশি এখন মধু চাষে এখন ব্যস্ত সময় পার করছি। এখন আমরা মধুর বাণিজ্যিক চাষ শুরু করি।’ তারা আরও বলেন, ‘বিভিন্ন ফুল থেকে মধু আহরণ করছি। মধুর চাষ করতে চাইলে আমরা সহযোগীতা করবো। কেউ খাটি মধু আমাদের কাছ থেকে নিতে চাইলে দিতে পারবো। আমরা বছরে ৪বার মধু সংগ্রহ করি। বর্তমান বাজার ম‚ল্য প্রতি কেজি মধুর দাম ১৫০০-১৮০০ টাকা। বছরে খরচ বাধেঁ আমাদের ৩ থেকে সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা আয় হয়।মধু সংগ্রহকারী মনু মিয়া নামের এক শ্রমিক জানান, ‘আমার বাড়ি কমলগঞ্জ উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের কানাইদেশী গ্রামে। এই উপজেলার বিভিন্ন খামারে কাজ করেই তার সংসার চলে। ১০ বছর থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে তিনি মধু সংগ্রহ করে। মধু চাষ করে অনেক মানুষ স্বাবলম্বী হয়েছেন। প্রতি মাসে বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে ৫০-৭০টা বক্স থেকে মধু সংগ্রহ করি। আমাকে মানুষ যে মধু দেয় সে মধু বিক্রি করে আমার সংসার চলে।’ কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জয়েন্ত কুমার রায় বলেন, ‘কমলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় মধুর চাষ করা হয়েছেন। অনেকেই বাণিজ্যিকভাবে মধু চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। কেউ মধু চাষের বিষয়ে জানতে চাইলে আমরা সহযোগীতা করে থাকি।’
ক্ষুদ্র ব্যবসায় সফল নিপুন
নিজেকে সাজিয়ে তুলতে ফ্যাশন সচেতন নারীরা দিন দিন ঝুঁকছেন হিজাব পরিধানে। দেশে হিজাবের বাজার বড় হয়েছে। চাহিদার প্রয়োজনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও ছড়িয়ে পড়েছে নানা ক্যাটাগরির হিজাব।শখ থেকে ক্ষুদ্র ব্যবসায় পরিণত হওয়া এমনই একটি হিজাবের অনলাইন দোকান ‘টপ হিজাব বিডি’। মাত্র ছয় বছরে এই প্রতিষ্ঠানটি সফলতার পরিচয় বহন করেছে। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার নিপু হোসেন। বরিশালের মেয়ে নিপু হোসেনের ছেলেবেলা থেকে আগ্রহ ছিল আঁকিঝুঁকি ও ফ্যাশন ডিজাইনে। কিন্তু পরিবারের চাওয়াতে প্রাতিষ্ঠানিক বিদ্যা অর্জন করেছেন ব্যবসায় শিক্ষা শাখায়। কখনো ভাবেননি পোশাকের সঙ্গেই জড়িয়ে যাবে তার কর্মজীবন। বর্তমানে নিপুর ফেসবুক পেইজ ‘টপ হিজাব বিডি’-তে বিভিন্ন রঙের প্রায় ৬৫ ধরনের হিজাব বিক্রি হচ্ছে। নিপু হোসেন জানান, হঠাৎ এক বন্ধুর মাধ্যমে খোঁজ পান তুর্কি হিজাবের। শুরুতে নিজে পরার জন্য দুটি হিজাব সংগ্রহ করেন। আশেপাশের অনেকেরই সেগুলোর প্রতি আগ্রহ দেখতে পান ।কিছু হিজাব এনে কাছের মানুষদের কাছে বিক্রিও করে দেন। পরিচিতদের গণ্ডি ছাড়িয়ে দূরের মানুষদেরও চাহিদা দেখতে পেয়ে পুরোপুরি ব্যবসায়িক চিন্তাটি আসে তার মাথায়। বর্তমানে তার অধীনে কাজ করছেন প্রায় ৩০ জন।
সুন্দরী কমলা নাচে...
কমলার গানের সঙ্গে বঙ্গ কন্যাদের নাচ; যেকোনো আসোর জমানোর জন্য যথেষ্ট। তবে সুন্দরী কমলা নামটি যেভাবে বাংলার মানুষের জীবনের সঙ্গে গেঁথে আছে তাকে ফোকলোরের জগত থেকে টেনে তুলে আসল ইতিহাসটুকু জানার আগ্রহ এড়ানো যায় না। তবে কমলা শ্রেফ ইতিহাস নয়। তাকে বাস্তবই বলা যায়।সেন আমলের শেষের দিকে মহাস্থানের গোকুল ম্যাড়ের প্রাসাদে আবার অনেকের মতে স্কন্ধের ধাপে অবস্থিত প্রমোদ ভবনের তৎকালীন রাজার প্রমোদবালাদের মধ্যে অসাধারণ রূপবতী, গুণবতী ও প্রমোদকলায় পটীয়সী এক সুন্দরী প্রমোদবালার একজন কমলা। যার রূপ-গুণ-কৃতি নিয়ে পরবর্তীকালে লোকগান ও লোকনাটক উনিশ শতকেও অত্র জনপদ ছেড়ে উত্তরবঙ্গের অনেকটা এলাকাসহ বিদগ্ধ মানুষকে বিনোদন জুগিয়েছিল।এই কমলাকে কেন্দ্র করেই লেখা হয়েছে বিখ্যাত গান‘ওরে কমলার নাচনে বাগিচার পিছনেচাঁদ ও ঝলমলে হাঁসেরেভাহালো করিয়া বাজাওগো দোতারাসুন্দরী কমলা নাচে...’উত্তরবঙ্গেরই কোনো এক স্বভাবকবি গানটি লিখেছিলেন। কিন্তু কমলা কি বাস্তবেই কেউ ছিলেন? নাকি বাংলায় একটি ফোকলোর মাত্র। লোকসংস্কৃতিই কি কমলাকে জন্ম দিয়েছে? এ নিয়ে তর্ক হতেই পারে। তবে কমলা বাস্তবেও ছিল, অন্তত এমন প্রমাণও আছে। বাংলার আদি-মধ্যযুগের পালাগুলোতে বিচ্ছেদাত্মক ‘কমলা’ চরিত্রের স্বতন্ত্র কাহিনি পাওয়া যায়। ‘কমলার পুঁথি’ নামে বিয়োগান্ত কমলা চরিত্র অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল বাংলার সমাজে। অষ্টাদশ শতকের দ্বিজ ঈশান-রচিত কমলা পালা দীনেশচন্দ্র সেন তার সংকলনেও তুলে ধরেছেন। এও বিয়োগান্ত পরিণতির কমলা। ‘কমলা’ চরিত্রকে কেন্দ্র করে বাঙালি জীবনে নানা গীতিপালা তৈরি হয়েছে। তবে ভিন্ন ভিন্ন পালায় ভিন্ন ভিন্ন কমলা, ভিন্ন ভিন্ন তার ঘটনা। উনবিংশ-বিংশ শতকে কমলার বনবাস, কমলা রানীর। আবার কমলা একসময় নর্তকী ছিল এবং পরে রানী হয়েছিলেন এমন প্রমাণও বিরল নয়।কমলা সুন্দরী যে মহাস্থানে বাস্তবে ছিল ও কাশ্মীরের রাণী হয়েছিল তার প্রমাণের খোঁজ পাওয়া যায় কাশ্মীরের কবি কলহন রচিত ইতিহাস গ্রন্থ ‘রাজ তরঙ্গিনী’ তে। কাশ্মিরের নৃত্য-বিকাশে বাংলা অঞ্চলের এই কমলার ভূমিকা অপরিসীম এবং কাশ্মীরে এখনো কমলার মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ আছে। বাংলার আদি-মধ্যযুগের পালাগুলোতে বিচ্ছেদাত্মক ‘কমলা’ চরিত্রের স্বতন্ত্র কাহিনি পাওয়া যায়। ‘কমলার পুঁথি’ নামে বিয়োগান্ত কমলা চরিত্র অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল বাংলার সমাজে। অষ্টাদশ শতকের দ্বিজ ঈশান-রচিত কমলা পালা দীনেশচন্দ্র সেন তাঁর সংকলনেও তুলে ধরেছেন। এও বিয়োগান্ত পরিণতির কমলা।তার বইতে পুণ্ড্রনগরের কমলার কথার উল্লেখ রয়েছে। বাংলা সাহিত্যেও একাধিক কমলার কথা বিধৃত হয়েছে। তবে কমলার পরিচায়ক বলতে গেলে এই গানটিই। যেখানে কমলার রূপ ও নাচের সৌন্দর্যে রাতের চাঁদও হেসে ফেলে।
কীটনাশক ছাড়াই দেশীয় পদ্ধতিতে লাউ চাষ করে সফল কমলগঞ্জের 'মজিদ বক্স'
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার কৃষক মজিদ বক্স। ইতি মধ্যে লাউ চাষ করে সাফল্য অর্জন করেছেন। উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাল্লাপার গ্রামে লাউ চাষ করছেন তিনি। দেশীয় পদ্ধতিতে কোনো প্রকার কীটনাশক ছাড়া চাষ করে ইতিমধ্যে এলাকায় সফল লাউ চাষি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। তবে লাউ চাষি মজিদ বক্স বলেন, লাউয়ের চাষাবাদ করে জমি থেকে যেমন আশানুরূপ ফলন পাচ্ছি সেইসঙ্গে বাজারে দামও পেয়ে আসছি ভালো। তবে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে যদি একটু সহযোগিতা পেতাম, তাহলে লাউ চাষ করে আরো বেশি লাভবান হতাম।মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে কৃষক মজিদ বক্স লাউ ক্ষেতে গেলে দেখা যায়, ‘২২ শতক জায়গায় লাউ চাষ করেছেন। মাচায় ঝুলে আছে অসংখ্য ছোট বড় লাউ। প্রতিনিয়ত সকাল বিকাল চলছে লাউক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। বাজারে বিক্রিতে ভালো দাম পাওয়ায় মজিদ বক্স বেশ খুশি। এরই মধ্যে সফল লাউ চাষি হিসেবে তার সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে পুরো এলাকায়। প্রতিদিন বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন দেখতে ও পরামর্শ নিতে আসছেন তার কাছে। লাউ চাষ করে এই পর্যন্ত ৩০ হাজার টাকা খরচ হওয়া সত্তে¡ও এখন পর্যন্ত ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছেন। তার জমিতে আরও ৫০ হাজার টাকার মতো লাউ আছে বলে জানান তিনি। বাড়তি আয়ের আশায় মাচা পদ্ধতিতে লাউ চাষ শুরু করেন মজিদ বক্স। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া উপেক্ষা করে নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে গাছগুলোর গুণগতমান ঠিক রাখায় প্রতিটি গাছের ডগায় প্রচুর পরিমাণে লাউ ধরেছে। এই পদ্ধতিতে লাউ চাষে রোগবালাই অনেক কম ও ফলনও ভালো হয় বলে জানান মজিদ বক্স।’সফল চাষি কৃষক মজিদ বক্স এর সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘একটু বাড়তি আয়ের আশায় মাচা পদ্ধতিতে লাউ চাষ শুরু করেছি। দুর্যোগপ‚র্ণ আবহাওয়া উপেক্ষা করে নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে গাছগুলোর গুণগতমান ঠিক রাখায় প্রতিটি গাছের ডগায় প্রচুর পরিমাণে লাউ ধরেছে। এই পদ্ধতিতে লাউ চাষে রোগবালাই অনেক কম ও ফলনও ভালো হয়েছে। আশা করছি দামও ভালো পাব। তিনি বলেন, ৭০-১০০ টাকার করে বিক্রি করছি লাউ। ২২ শতক জায়গায় আমি এই লাউ চাষ করেছি। এখন পর্যন্ত বাজারে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছি। জমিতে আরও ৫০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকার লাউ আছে। লাউয়ের চাষ করে এত লাভ হবে, কখনো ভাবিনি। তাই আগামীতে লাউ চাষ আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।এছাড়াও তিনি বলেন, এই লাউ বিষমুক্ত। কারণ লাউ ক্ষেতে কোনো কীটনাশক ব্যবহার করা হয়নি। শুধু গোবর ব্যাবহার করেছি। সেই জন্য বিভিন্ন এলাকাতে লোকজন আমার জমিতে এসে লাউ নিয়ে যায়। এখানে পাইকাররাও আসে। আমাকে বাজারে লাউ নিয়ে যেতে হয়।তবে কৃষি অফিস থেকে কোনো সহযোগীতা পেয়েছেন কি না তা জানতে চাইলে মজিদ বক্স বলেন, ‘কৃষি অফিস আমাকে কোনো রকম সহযোগিতা করেনি। নিজ উদ্যোগে আমার এই পর্যন্ত আসা। আমি একজন প্রকৃত কৃষক কিন্তু উপজেলায় গিয়ে খুজ নিয়ে দেখুন আমার কোনো নামনিশা নাই। যারা কৃষক নায় তাদের নাম তাদের কাছে আছে। যদি তাদের সহযোগিতা পেতাম তাহলে আমার জন্য ভালো হত।’স্থানীয় বাসিন্দা ইউসুফ আলী বলেন, ‘আমি প্রায় সময় মজিদ বক্সের জমি থেকে লাউ কিনে নেই। কীটনাশক ছাড়া লাউ তাই বাড়ির সবাই পছন্দ। এছাড়াও এখানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটক ও স্থানীয় লোকজন এসে নিয়ে যায়। ৭০-১০০ টাকার মধ্যে লাউ।’স্থানীয় বাসিন্দা ও কৃষক লিয়াকত মিয়া জানান, ‘আমিও একজন টমেটো চাষি। কোনো ধরনের কীটনাশক ছাড়াই টমেটো চাষ করছি। আমার গাছে প্রচুর পরিমান টমেটো আছে। আশা করছি অল্প কিছুদিনে মধ্যে টমেটো বিক্রি করা শুরু করতে পারবো। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘আমি কোনদিন কৃষি অফিসের সহযোগিতা পাইনি। তারা তাদের পরিচিতজনদের সকল ধরনের সহযোগিতা করেন। আমাদের এসে দেখেনও না। তিনি বলেন, নিজ উদ্যোগে ও কোন পরামর্ষ ছাড়া লাউ চাষ করেছেন মজিদ বক্স। ভালো লাউ এসেছে উনার। বিক্রি করে লাভবানও হচ্ছেন তিনি। এছাড়াও তিনি বেগুন চাষ করেছে। সেখানে লক্ষ টাকার মতো বেগুন আছে।’কমলগঞ্জ উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা জয়েন্ত কুমার রায় জানান, ‘কৃষকরা আমাদের কাছে সহযোগিতা চাইলে আমরা অবশ্যই সহযোগিতা করি। আর মাঠ পর্যায়ে দেখেছি কিছু নতুন উদ্যোগতা সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এখন সারাবছরই সবজির চাষ হয়। কৃষকরা জৈব পদ্ধতিতে বিষমুক্ত লাউ চাষ করছেন। বাজারে লাউয়ের চাহিদা থাকায় ও নায্যদামে বিক্রি করতে পেরে লাভবান হয়েছেন কৃষকরা। কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের সব ধরনের সহায়তা দেয়া হচ্ছে।’
বিশ্ব গন্ডার দিবস আজ
আজ বিশ্ব গন্ডার দিবস। ২০১০ সালে ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ড লাইফ ফান্ড সাউথ আফ্রিকা ২২ সেপ্টেম্বরকে বিশ্ব গন্ডার দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এরপর থেকে প্রতি বছর এই দিনটি বিশ্ব গন্ডার দিবস হিসেবে পালন করা হয়।গন্ডার দিবস পালন করার উদ্দেশ হলো বিশ্বব্যাপী গন্ডার শিকার রোধ ও গন্ডারের বাসভূমি সংরক্ষণ সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা। বিভিন্ন দেশের সরকার, এনজিও, চিড়িয়াখানা ও সাধারণ মানুষ মিলে এই দিনটি পালন করে।সব বন্য প্রাণীর মধ্যে গন্ডার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রাণী। বিশ্বজুড়ে পাঁচ ধরনের গন্ডার দেখা যায়। এর মধ্যে আফ্রিকায় পাওয়া যায়া সাদা ও কালো গন্ডার, একশৃঙ্গ, জাভা ও সুমাত্রায় প্রজাতির গন্ডার পাওয়া যায় এশিয়ায়। এসব বিপন্ন প্রজাতির গন্ডার বাঁচানোর জন্য এই দিনটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।গন্ডার বাঁচানোর জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকেও একটি বড় হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এই দিনটি একেকটি দেশে একেক রকম ভাবে পালিত হয়। যেমন- নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সেমিনার, বিতর্ক সভার আয়োজন, স্কুল কলেজের ছাত্রদের এ ব্যাপারে জানানো, চিত্র প্রদর্শনী এবং স্বল্প দৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা, পোস্টার বিলি ইত্যাদি।প্রাকৃতিক বিপর্যয়, চোরাকারবারি, বন ধ্বংসসহ নানা কারণে গন্ডার এখন বিলুপ্তির পথে। এদের যদি সঠিকভাবে সংরক্ষণ না করা হয় তাহলে হয়তো ভবিষ্যতে গন্ডার প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যাবে। তাই তাদের সংরক্ষণ করার জন্য মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে নানা কর্মকাণ্ডের মধ্যে দিয়ে বিশ্ব গন্ডার দিবস পালিত হয়।
আজ ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস
আজ ৭ জুন, ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস। বাঙালি জাতির মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে অনন্য এক দিন। ১৯৬৬ সালের ৭ জুন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ ছয় দফা দাবির পক্ষে দেশব্যাপী তীব্র গণআন্দোলনের সূচনা হয়। এই দিনটি বাংলার স্বাধিকার আন্দোলনকে স্পষ্টত নতুন পর্যায়ে উন্নীত করে। আর এ ছয় দফার মধ্য দিয়েই বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন স্বাধীনতা সংগ্রামে রূপ নেয়। বিশ্ব মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শোষণ ও বৈষম্যনীতির বিরুদ্ধে ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি লাহোরে ঐতিহাসিক ছয় দফা প্রস্তাব পেশ করেন বঙ্গবন্ধু। ছয় দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ১৯৬৬ সালের ৭ জুন আওয়ামী লীগের ডাকে তৎকালীন পূর্ব বাংলায় হরতাল চলাকালে পুলিশ ও ইপিআর নিরস্ত্র মানুষের ওপর গুলি চালায়। এতেঢাকাও নারায়ণগঞ্জে মনু মিয়া, মুজিবুল হকসহ অনেকে শহীদ হন। ছয় দফা হয়ে ওঠে বাঙালির মুক্তির সনদ।দিবসটি উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচি:হাতে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। ৬-দফা দিবস উপলক্ষে আজ ৭ জুন সকাল ৭টায় ধানমন্ডি বত্রিশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে আওয়ামী লীগ। বিকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়েঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবনে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
নালিতাবাড়ীতে বাড়ছে সরিষার চাষ
সবুজের মাঝে হলুদের আবরণে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে হলুদ সরিষা ফুলে ছেয়ে গেছে। সূর্য উঠার সঙ্গে সঙ্গেই সরিষা ফুল সমারোহে হেসে ওঠে চারদিক। হলুদ ফুলে-ফুলে মৌমাছিরাও মধু সংগ্রহ করতে ব্যস্ত সময় পাড় করছে। প্রকৃতির অলঙ্কার হয়ে উঠেছে হলুদ সরিষা ক্ষেত। কৃষি অফিস জানায়, গতবছর উপজেলায় ১২১০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছিল। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এ উপজেলায় সরিষার আবাদ হয়েছে ২ হাজার ১৭৩ হেক্টর। গত বছরে পতিত থাকা ৯শ ৬৩ হেক্টর জমি সরিষা আবাদের আওতায় এসেছে। ফলে নালিতাবাড়ি উপজেলার শস্য নিবিড়তা বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। একই জমিতে বছরে একাধিক ফসল ফলাতে কৃষিতে সকল ফসলের প্রণোদনার অংশ হিসেবে সরিষা ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য বিনামূল্যে ৯ হাজার ৬০০ জন কৃষকের মাঝে সরিষার উফশী জাতের বীজ এবং ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার বিতরণ করা হয়। সরিষা চাষ বাড়ার আরেকটি কারণ সরিষা ক্ষেতে মৌচাষ। মৌমাছির মাধ্যমে সরিষা ফুলের পরাগায়নে সহায়তা হচ্ছে। এতে মধু চাষের পাশাপাশি সরিষার উৎপাদনও বাড়ছে। সরিষা ও মৌচাষি উভয়েই লাভবান হচ্ছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, বিকেলের মিষ্টি রোদে সরিষা ফুলগুলো বাতাসে দোল খেতে থাকে। ফুলগুলো তাদের কলি ভেদ করে সুভাষ ছড়িয়ে দিচ্ছে চারিদিকে। এ যেন প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের নিদর্শন। ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন নানা বয়সের নারী, পুরুষ, শিশুসহ বিনোদন প্রেমিরা। সরিষা মাঠ ঘুরে ঘুরে দেখছেন তারা। কেউ-কেউ দেখা যায় সেলফি তুলছেন। নন্নী পশ্চিম পাড়া গ্রামের সরিষা চাষি হাজি আঃ রশিদ সরকার (৫২) বলেন, সরিষা চাষ করতে প্রতি একরে ১২-১৩ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। একরে ২৫-৩০ মণ সরিষা হওয়ার আশা করছি। এক মণ সরিষার মূল্য ২ হাজার ৮ শ থেকে তিন হাজার টাকা। সরিষা চাষে যে সার আমরা ব্যবহার করি, পরবর্তীতে বোর ধান রোপনের সময় সার বেশি লাগে না। এতে আমাদের খরচ কিছুটা কম হয়। কয়েকজন সরিষা চাষী জানায়, দেশি সরিষার চেয়ে বারি ও বিনার উদ্ভাবিত সরিষার জাতগুলোর ফলন বেশি হয়। আগ্রহী অনেকেই আমন ধান কাটার পর জমি পতিত না রেখে সরিষা চাষ করেছেন। এরপর আবার বোরো ধান রোপণ করতে পারবেন। এতে একই জমিতে বছরে তিনবার ফসল উৎপাদন হচ্ছে। উপজেলা কৃষি অফিসার, কৃষিবিদ আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ২ হাজার ১৭৩ হেক্টর জমিতে আবাদকৃত সরিষা কর্তন করে কৃষক পুনরায় ওই জমিতে বোরো ধান রোপন করবে। গতবারের চেয়ে এবার নালিতাবাড়ীতে সরিষা চাষ বেশি হয়েছে। আমরা কৃষকদের সর্বদা নানা পরামর্শ ও সহযোগীতা দিচ্ছি। ঢাকাওয়াচ/টিআর
পরীক্ষায় পাশ না করলে হবে না বিয়ে!
ইন্দোনেশিয়ায় বিয়ের আগে যুগলকে পরীক্ষা দিতে হবে। সরকারি ওই পরীক্ষায় পাশ করতে না পারলে বিয়ে করা যাবে না। দেশটির মানব উন্নয়ন ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এমন কর্মসূচির কথা জানিয়েছে। বিয়ের আগে বাধ্যতামূলকভাবে যুগলদের তিনমাসব্যাপী ক্লাসে অংশ নিতে হবে। পরীক্ষায় পাশের পর মিলবে সনদপত্র। আগামী বছর এ কর্মসূচি শুরুর কথা রয়েছে। মানব উন্নয়ন ও সংস্কৃতি মন্ত্রী মুহাদজির ইফেন্দি বলেন, যারা বিয়ে করে তাদের পরিবার কীভাবে গঠন করে সে বিষয়ে কিছু ধারণা থাকা দরকার। কোর্স শেষ করার পর সনদপত্র এটা নিশ্চিত করার জন্য দেয়া হবে যে যুগলদের সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যথেষ্ট জ্ঞান আছে। ওই কর্মসূচিতে তিন মাস প্রত্যেক যুগলকে প্রজননবিষয়ক স্বাস্থ্য, পরিবারের সদস্যদের গুরুতর অসুস্থতা, গার্হস্থ্য অর্থনীতি, ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষা দেয়া হবে। সূত্র: জাকার্তা পোস্ট ঢাকাওয়াচ/স
কচুরিপানার বেডে বিষমুক্ত ভাসমান সবজি চাষে ঝুঁকছে কৃষক
নাটোরের বড়াইগ্রামে কচুরিপানার বেডে ভাসমান সবজি চাষের দিকে ঝুঁকছেন কৃষকেরা। ফলে দিনে দিনে এর পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে এক সময়ের ক্ষতিকর কচুরি পানা এখন কৃষকের উপকারী সঙ্গী। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ভাসমান বেডে সবজি চাষ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার বাটরা, বাঘাইট, মেরিগাছা, ধানাইদহ, তারানগর গ্রামে কচুরিপানা দিয়ে বেড তৈরি করে বিষমুক্ত সবজি চাষ করা হচ্ছে। চাষিদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, প্রনোদনা ও কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করছে কৃষি দফতর। এসকল ভাসমান বেডে লাল শাক, সবুজ শাক, ধনিয়া পাতা, পালং শাক, গিমা কলমি, জাঙলায় লাউ ও শষার চাষ করা হচ্ছে। মঙ্গলবার সরেজমিন উপজেলার নগর ইউনিয়নের বাটরা গ্রামে গিয়ে দেখা যায় চাষী আব্দুল মজিদ বাড়ির অদূরে বিলের মধ্যে কচুরিপানা দিয়ে আটটি বেড তৈরি করেছেন। সেখানে লাল শাক, গিমা কলমি, লাউ ও শষার চাষ করেছেন। পাশেই আব্দুল বারী নামে অপর এক কৃষকও একই ফসল করেছেন। চাষী আব্দুল মজিদ বলেন, ভাসমান বেডে সবজি চাষ খুবই লাভজনক। বেডে প্রকৃতিক উপাদানে জৈবিক সক্ষমতা অনেক বেশি থাকে। কোনো প্রকার সার ও কিটনাশক ব্যবহার করতে হয় না। আবার যে জমিতে সবজির চাষ করা হয় এমনিতে জলাবদ্ধতা ও কচুরিপানার কারণে সেখানে কোনো ফসল হতো না। এখন সেখানে ফসল উৎপাদন হচ্ছে। চাষী আব্দুল বারী বলেন, চলতি বছর আমার এক বিঘা জমিতে ভাসমান বেড করে সবজি চাষ করেছি। ইতিমধ্যে সব খরচ বাদে আমার প্রায় সোয়া লাখ টাকা আয় হয়েছে। যেটা অন্য কোনো বছর হয় নাই। আবার ডাঙ্গার জমিতে সবজি চাষ করেও পাই নাই। তারানগর গ্রামের অপর চাষী খাদেমুল ইসলাম বলেন, কৃষি অফিসের পরামর্শে ভাসমান বেডে সবজি চাষ শুরু করে প্রথম বছরেই লাভবান হয়েছি। গ্রামের অনেক চাষী ইতিমধ্যে ভাসমান বেড তৈরি করে সবজি চাষ শুরু করেছে। উপজেলা কৃষি অফিসার ইকবাল আহমেদ বলেন, ভাসমান বেডে সবজি চাষ একটি লাভজনক ফসল। এটা আবার বিষ মুক্ত হওয়ায় স্বাস্থ্য ও জলবায়ুর জন্য উপকারী। যে সকল স্থানে সবজি চাষ হচ্ছে সেখানে কচুরীপানা ও জলাবদ্ধতার করণে কৃষক কোনো চাষ-বাস করতে পারতেন না। ভাসমান বেড তৈরিতে কচুরী পানা ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে কচুরীপানা এক সময় পনে জৈব সারে পরিণত হচ্ছে। আবার জলাবদ্ধতার কারণে ফসল উৎপাদনও ব্যহত হচ্ছে না। ঢাকাওয়াচ/স
পুরুষদের পায়ের গঠন বলে দেবে কতটা ধনী তিনি
শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের গঠন দেখে বলা যায় ব্যক্তির চারিত্রিক বৈশিষ্ট। তিনি কেমন হবেন, পড়াশোনা কেমন হবে বা বিবাহিত জীবন কেমন কাটবে অথবা তিনি জীবনে ধনী হবেন না আর্থিক সমস্যায় ভুগবেন। প্রায় সব কিছুই শরীরের নানা অঙ্গের গঠন দেখে বলা সম্ভব। ঠিক সে রকমই পুরুষদের পায়ের গঠন দেখে বলা যায়, তিনি ধনী হবেন নাকি সারা জীবন অর্থ সমস্যায় কষ্ট পাবেন। যদি প্রথম জীবনে ধনী হয়েও থাকেন, সেটা ভবিষ্যতে একই রকম থাকবে কি না, এ সব কিছুই বলা যায় পুরুষদের পায়ের গঠন দেখে। দেখে নেওয়া যাক পুরুষদের পায়ের গঠন সম্পর্কে কী বলছে জ্যোতিষ— • যে পুরুষদের পায়ের ওপরের অংশ উঁচু মতো হয়, অর্থাৎ কচ্ছপের পিঠের মতো এবং পায়ের আঙুল একে অপরের সঙ্গে একদম মিলিত অবস্থায় থাকে, তা খুব শুভ ফল প্রদান করে। এই সব পুরুষ খুব ধনী হন এবং তারা উচ্চপদস্থ চাকরিজীবী হন। এ ছাড়া জীবনে নানা বিষয়ে সম্মান লাভ করে থাকেন। • যে সব পুরুষের পায়ের পাতা কোমল, পরিষ্কার ও লালিত্বপূর্ণ থাকে, তারা জীবনে বেশ ধনবান হয়ে থাকেন। • পায়ের শিরা অধিক পরিমাণে দেখা যাওয়া খুব একটা শুভ বলে মানা হয় না। • যে সব পুরুষের পায়ের সামনের দিকটা কুলোর মতো চওড়া, এবং পায়ের দৈর্ঘ্য ছোট হয়, তারা আর্থিক সমস্যায় জর্জরিত থাকেন। • পায়ে অধিক পরিমাণে ঘাম হওয়া খুব একটা ভাল লক্ষণ নয়। বেশি ঘাম হতে থাকলে যে কোনো শুভ লক্ষণ ম্লান হয়ে যায়। সূত্র : আনন্দবাজার ঢাকাওয়াচ/স
৬৪ জেলার মাটির মানচিত্র আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় জাদুঘরে হস্তান্তর
এই প্রথম বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মাটি সংগ্রহ করে স্ট্যামফোর্ড ইউনির্ভাসিটির ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের সদ্য স্নাতক পাশ করা শিক্ষার্থী, ফরিদপুরের সন্তান শুভঙ্কর পাল নির্মাণ করেছেন মাটির মানচিত্র। ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার বুরাইচ ইউনিয়নের বারাংকুলা গ্রামের তরুণ শুভঙ্কর পালের বাবা পল্লী চিকিৎসক নিহার রঞ্জন পাল। মা অমৃতা পাল। দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি বড়। শুভঙ্করের শখ ছিল সাইকেলে দেশের ৬৪টি জেলা ঘুরে দেখার, স্বপ্ন ছিল প্রতিটি জেলার মাটির রূপ, রস স্বশরীরে ছুঁয়ে দেখার। বাদ সাধলেন বাবা। তাই স্বপ্ন দেখেন দেশের ৬৪ জেলার মাটি সংগ্রহ করে বাংলাদেশের মানচিত্র নির্মাণের। যাতে একসঙ্গে ৬৪ জেলার মাটি স্পর্শ করা যাবে। তাই স্বপ্ন পূরণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক-এ নিজ নিজ জেলার মাটি পাঠানোরে আহ্বান জানান বন্ধুদের। তার আহ্বানে এগিয়ে আসে অনেকেই। তারপরও অপূর্ণতা থেকে যায় কয়েকটি জেলা থেকে কেউ সারা না দেওয়ায়। এগিয়ে আসেন তৎকালীন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া। সহযোগিতা করেন বিভিন্ন জেলার মাটি সংগ্রহে। এছাড়াও মাটি সংগ্রহে সহযোগিতা করেন আশির দশকের অন্যতম কবি সৈয়দ তারেক এবং কবি ও সাংবাদিক আমীর চারু বাবলু। তরুণ এই উদ্ভাবকের মানচিত্রটি অবশেষে বাংলাদেশ জাতীয় যাদুঘর ‘প্রাকৃতিক ও ইতিহাস বিভাগ’আনুষ্ঠানিকভাবে প্রদর্শনীর লক্ষ্যে সংগ্রহ করেছে । ঢাকাওয়াচ/স