মোদির বিতর্কিত পোস্টের উত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরল বাংলাদেশ
বিজয় দিবসের দিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিতর্কিত পোস্টেকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) মোদির বিতর্কিত পোস্টের প্রতিবাদে বিবৃতিতে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে। ‘ইতিহাসের তথ্য’ শিরোনামে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দীর্ঘ সংগ্রাম ও নয় মাসব্যাপী নৃশংস যুদ্ধ সহ্য করে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ একটি সার্বভৌম স্বাধীন দেশ হিসেবে আবির্ভূত হয়। ‘লিবারেশন অ্যান্ড বিয়ন্ড: ইন্দো-বাংলাদেশ রিলেশন্স’ শিরোনামে তার বইয়ে, প্রাক্তন ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব, কূটনীতিক ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা প্রয়াত জেএন দীক্ষিত লিখেছেন, ‘আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে ভারতীয় সামরিক হাইকমান্ডের একটি বড় রাজনৈতিক ভুল ছিল যৌথ কমান্ডের বাংলাদেশ পক্ষের কমান্ডার জেনারেল এমএজি ওসমানির উপস্থিতি নিশ্চিত ও স্বাক্ষরকারী করতে ব্যর্থতা।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘তার অনুপস্থিতির আনুষ্ঠানিক অজুহাত ছিল যে, তার হেলিকপ্টারটি উড্ডয়ন করেছিল। কিন্তু, আত্মসমর্পণের সময়সূচির অনুযায়ী সময়মতো ঢাকায় পৌঁছাতে পারেনি। কিন্তু, ব্যাপক সন্দেহ ছিল যে তার হেলিকপ্টারটি ভুল পথে পাঠানো হয়েছিল, যাতে তিনি সময়মতো ঢাকায় পৌঁছাতে না পারেন এবং অনুষ্ঠানে মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু ভারতীয় সামরিক কমান্ডারদের ওপর নিবদ্ধ হয়। এটি একটি দুর্ভাগ্যজনক বিচ্যুতি ছিল; যা ভারত এড়াতে পারত। এই ঘটনা বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহলের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষের সৃষ্টি করে। আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে ওসমানির উপস্থিতি বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রথম দিনগুলোতে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে প্রভাবিত করে- এমন বহু রাজনৈতিক ভুল বোঝাবুঝি এড়াতে সাহায্য করতে পারত।’ বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘আমরা ১৯৭১ সালে আমাদের গৌরবময় বিজয় উদযাপন করি, আমরা সত্য উদযাপন করি।’ গেল সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক ও এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট দেন নরেন্দ্র মোদি। এতে তিনি লিখেছেন, ‘আজ, বিজয় দিবসে, ১৯৭১ সালে ভারতের ঐতিহাসিক বিজয়ে অবদান রাখা সাহসী সেনাদের সাহস ও আত্মত্যাগকে আমরা সম্মান জানাই। তাদের নিঃস্বার্থ আত্মোৎসর্গ ও অটল সংকল্প আমাদের জাতিকে রক্ষা করেছে এবং আমাদের গৌরব এনে দিয়েছে। এই দিনটি তাদের অসাধারণ বীরত্ব ও অদম্য চেতনার প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি। তাদের আত্মত্যাগ চিরকাল প্রজন্মের পর প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে এবং আমাদের জাতির ইতিহাসে গভীরভাবে গেঁথে থাকবে।’ পোস্টটিতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে গিয়ে একাত্তরের বিজয়কে কেবল ‘ভারতের ঐতিহাসিক বিজয়’ বলা হয়েছে। যা বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষকে আহত করেছে।
এসবির প্রধানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন চার কর্মকর্তাকে বদলি
বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধানসহ ঊর্ধ্বতন চার পুলিশ কর্মকর্তাকে একযোগে বদলি করা হয়েছে। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ-১ শাখা থেকে প্রজ্ঞাপনে তাদের বদলির বিষয়টি জানানো হয়। উপসচিব আবু সাঈদের সই করা ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের বর্ণিত কর্মকর্তাদের বর্ণিত পদ ও কর্মস্থলে বদলি ও পদায়ন করা হল। জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।’ বদলি করা কর্মকর্তারা হলেন বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) অতিরিক্ত আইজি (চলতি দায়িত্ব) খোন্দকার রফিকুল ইসলাম, পুলিশ স্টাফ কলেজ ঢাকার উপপুলিশ মহাপরিদর্শক মো. গোলাম রসুল, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিআইজি) মো. ইসরাইল হাওলাদার ও ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ।
কৃষিতে জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলায় কৃষি, পানি ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় একসঙ্গে কাজ করছে
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘কৃষি খাতে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। এ জন্য কৃষি, পানি সম্পদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনসহ সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় একসাথে কাজ করছে। কৃষি উৎপাদন টেকসই রাখতে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নেয়া হবে।’ বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বিএআরএফের আয়োজনে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘কৃষিখাতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও করণীয়’ শীর্ষক গোল টেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা বলেন, ‘খরা, অতিবৃষ্টি, লবণাক্ততা ও বন্যার কারণে কৃষি উৎপাদন কমছে। এসব সমস্যার সমাধানে গবেষণা ও প্রযুক্তির ব্যবহার অত্যন্ত জরুরি। নিরাপদ ও অর্গানিক খাদ্য উৎপাদনে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা সবার দায়িত্ব। এ জন্য নিরাপদ খাদ্যের মেলা আয়োজন জরুরি। কীটনাশক ব্যবহারে সচেতন হতে হবে।’ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান। প্রধান আলোচক ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ সিড অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব কৃষিবিদ আলী আফজাল। বাংলাদেশ এগ্রিকালচারাল রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রফিকুল ইসলাম সবুজের সভাপতিত্বে বৈঠক পরিচালনা করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক কাওসার আজম। বৈঠকে বক্তারা কৃষি ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেন। তারা টেকসই কৃষি উৎপাদন, জলবায়ু সহনশীল ফসল এবং ক্ষুদ্র কৃষকদের সুরক্ষায় পদক্ষেপ নেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। আয়োজনে কৃষি বিশেষজ্ঞ, পরিবেশবিদ, নীতিনির্ধারক ও সাংবাদিকরা অংশ নেন।
আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে ড. ইউনূস ভাষণ দেবেন বৃহস্পতিবার
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) মিশরের রাজধানী কায়রোতে আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষণ দেবেন। তিনি বর্তমানে ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে দুই দিনের সফরে দেশটির কায়রোতে অবস্থান করছেন। প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, প্রধান উপদেষ্টা বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষণ দেবেন। ড. ইউনূস আল-আজহার আল শরীফ মসজিদের গ্র্যান্ড ইমাম আহমেদ এলতায়েবের আমন্ত্রণে মিশরীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষণ দেবেন। আহমেদ এলতায়েব গেল ১২ নভেম্বর আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে রিটজ কালর্টন হোটেলে সাক্ষাতে আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষণ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। সফরে প্রধান উপদেষ্টা ডি-৮ অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশনে যোগ দেবেন, যা ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলন নামে পরিচিত। এই সম্মেলন মিশরের বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত হবে। আবুল কালাম বলেন, ‘শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে তিনি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানসহ কয়েকটি ডি-৮ সদস্য রাষ্ট্রের সরকার প্রধানদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন।’
মাঠ ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হলেও ইজতেমার দিন পরিবর্তন হয়নি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ‘বিশ্ব ইজতেমার মাঠ দখল নিয়ে সংঘর্ষে নিহতের ঘটনায় মামলার পর প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতার করা হবে। ইজতেমার তারিখ পরিবর্তন হয়নি। সরকার চায় উভয়পক্ষ আলোচনা করে সমাধানের পথে আসুক।’ বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সাদ ও জুবায়েরপন্থিদের সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন তিনি।স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সবাইকে ময়দান ছাড়ার নির্দেশ দিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য না দেয়ার আহ্বানও জানান।তিনি বলেন, ‘বিশ্ব ইজতেমার মাঠ দখল নিয়ে সংঘর্ষে নিহতের ঘটনায় মামলার পর প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতার করা হবে। ইজতেমার তারিখ পরিবর্তন হয়নি। সরকার চায় উভয়পক্ষ আলোচনা করে সমাধানের পথে আসুক।’ বৈঠক শেষে নির্দেশনা মেনে সবাইকে মাঠ ছাড়ার আহ্বান জানান সাদপন্থি শীর্ষ আলেমরা। এ দিকে, পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্য়ন্ত উত্তরা, আব্দুল্লাহপুর ও আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে তাবলীগ জামাতের দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর বুধবার ভোর থেকেই সাদপন্থিদের দখলে ছিল টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মাঠে অতিরিক্ত পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব। দুই পক্ষের উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে বুধবার সকাল থেকে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে সাদ ও জুবায়েরপন্থিদের সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক করেন সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা। বৈঠক শেষে সাদপন্থি আলেমরা জানান, সরকারের পক্ষ থেকে সবাইকে মাঠ ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অনুসারীদের উসকানিমূলক বক্তব্য থেকে বিরত থাকতে কড়া নির্দেশ দেন আালেমরা।কোন রকম উসকানি ছাড়াই জুবায়েরপন্থিদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন হেফাজত ইসলামের নেতা মামুনুল হক।মামুনুল হক বলেন, ‘এটা সংঘর্ষ ছিল না; এটা এপক্ষীয় হামলা। ঘুমন্ত মানুষের ওপর এক পক্ষের হামলা ছিল। সাদপন্থিরা হামলা করে হত্যা করেছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িতদের আজকের মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে।’তিনি আরও বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। সাদপন্থিরা জোরপূর্বক সন্ত্রাসী কায়দায় মাঠে ঢুকে পড়েছিল। জুবায়েরপন্থিরা সহযোগিতা করবে যথাসময়ে ইজতেমা আয়োজন করতে। আর সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।’ মামুনুল হক বলেন, ‘কাল দুপুরে টঙ্গী ইজতেমা মাঠ অভিমুখে জুবায়েরপন্থিদের লংমার্চ কর্মসূচি প্রত্যাহারের অনুরোধ করেছে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। সবার সঙ্গে আলোচনা করে কর্মসূচি প্রত্যাহারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ও ইসলাম বিরোধী সোর্স হিসেবে কাজ করে সাদপন্থিরা; তাদের সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যায়িত করে নিষিদ্ধের দবি জানিয়ে মামুনুল হক বলেন, ‘মামলার প্রক্রিয়া চলছে।’ আজকের মধ্যে মামলা করা হবে বলেও জানান তিনি। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) মধ্যরাতের দিকে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে তিন জন মারা যান। নিহতরা হলেন কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া থানার এগারসিন্দু এলাকার বাচ্চু মিয়া (৭০), ঢাকার দক্ষিণখানের বেড়াইদ এলাকাল বেলাল (৬০) ও বগুড়ার মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম (৬৫)। সংঘর্ষে আহত ৩৫ জনের মতো ঢাকা মেডিকেলে কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
জলবায়ু বাজেটের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ
জলবায়ু বাজেটের সর্বোত্তম ব্যবহারে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ উল্লেখ করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থ বরাদ্দের গাইডলাইন হালনাগাদ করা হয়েছে এবং এবার সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে প্রাপ্ত জলবায়ু ফান্ডের অর্থও যথাযথভাবে ব্যয় নিশ্চিত করতে হবে। কোন কোন খাতে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত তা নির্ধারণের কাজ চলছে। কার্বন নিঃসরণ কমানো সম্ভব না হলে, আরও অর্থ ব্যয় করেও বৈশ্বিক ক্ষতি রোধ করা যাবে না।’ বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) ঢাকার বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজে (বিআইএসএস) আয়োজিত ‘বৈশ্বিক জলবায়ু আলোচনা: বাংলাদেশের অগ্রাধিকার ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। সেমিনারে প্রধান বক্তার বক্তব্যে রিজওয়ানা হাসান আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের পরিবেশগত সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। নদী ও খাল ভরাট হলে অভিযোজন কার্যক্রম চালানো সম্ভব হবে না। উন্নয়ন পরিকল্পনা নতুন করে সাজাতে হবে ও ভোগবাদী জীবনযাত্রা পরিত্যাগ করতে হবে। বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে, যা শিগগিরই কাজ শুরু করবে। দূষণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং সিঙ্গেল-ইউজ প্লাস্টিকের ব্যবহার নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের অগ্রাধিকার এখন সহিষ্ণুতা বাড়ানো, অভিযোজনের জন্য পর্যাপ্ত তহবিল নিশ্চিত করা এবং বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। বাংলাদেশের মত জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর ক্ষেত্রে ন্যায়সঙ্গত ও সমতাভিত্তিক আলোচনার উপর গুরুত্ব দিতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর কণ্ঠস্বর শুনতে হবে এবং উন্নত দেশগুলোর আর্থিক ও প্রযুক্তিগত প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।’ সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিআইএসএসের চেয়ারম্যান এএফএম গাউসাল আজম সরকার। বক্তব্য দেন বিআইএসএসের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ইফতেখার আনিস; সিনিয়র রিসার্চ ফেলো সুফিয়া খানম, পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর ফজলে রাব্বি সাদেক আহমেদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক শারমিন নীলর্মি, ইউএনএফসিসিসির ওয়ারসো ইন্টারন্যাশনাল মেকানিজম ফর লস অ্যান্ড ড্যামেজের নির্বাহী কমিটির সদস্য এম হাফিজুল ইসলাম খান। সেমিনারে নীতিনির্ধারক, গবেষক, জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ও কূটনীতিকরা বৈশ্বিক জলবায়ু কূটনীতি নিয়ে আলোচনা করেন। আলোচনায় জলবায়ু অর্থায়নের ঘাটতি, লস অ্যান্ড ড্যামেজ মেকানিজমের অগ্রগতির ধীরগতি এবং বড় নির্গমনকারী দেশগুলোর শক্তিশালী প্রশমন লক্ষ্য নির্ধারণের প্রয়োজনীয়তার মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো উঠে আসে।
সাবেক সাংসদ ও ক্রিকেটার দুর্জয়ের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
প্রায় সাড়ে ১১ কোটি টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মানিকগঞ্জ-১ সাবেক সাংসদ এএম নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে পরিচালক আবুল হাসনাত বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘দুর্জয় সাংসদ থাকাকালে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে মোট ১১ কোটি ২১ লাখ ৮১ হাজার ৭৯০ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। ওই অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা মেলায় তার নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে।’ অভিযোগ রয়েছে, দুর্জয় মানিকগঞ্জ পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেড থেকে চার কোটি ২২ লাখ টাকা নিয়েছেন। তার নিজের নামে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের নয়টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে মোট ৪৭ কোটি ১৯ লাখ ৩৭ হাজার ৬৯০ টাকা সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন। এছাড়াও, অবৈধভাবে আরিচা নৌ-টার্মিনালের পাশে বিআইডব্লিউটির জমি দখল করে আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। আরও অভিযোগ রয়েছে, তার নামে বৈকন্ঠপুর, ঘিওর, মানিকগঞ্জে ১২ বিঘা জমি, মানিকগঞ্জ শহরে এক তলা বাড়ি, বিভিন্ন ব্যাংকে ও ব্যবসায় বিনিয়োগসহ কোটি কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে। তার আত্মীয়-স্বজন সিন্ডিকেট করে নদীতে অবৈধভাবে ড্রেজিং করে বালু উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করেছেন। এ দিকে, দুদকের অনুসন্ধানে দেশে-বিদেশে বিপুল অবৈধ সম্পদের তথ্যের প্রাথমিক সত্যতাও মিলেছে। এর আগে গেল ২ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি ও অর্থপাচারের অভিযোগে নাইমুর রহমান দুর্জয়ের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।
এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক জিয়াউল আহসানের দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদক
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযোগ অনুসন্ধানে বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) এরই মধ্যে তিন সদস্যের অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে। দুদকের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়াসহ অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে। গত ১৯ আগস্ট গুম-খুনের ‘মাস্টারমাইন্ড’, ফোনকলে আড়িপাতা, মানুষের ব্যক্তিগত আলাপ রেকর্ড ও ফাঁস করা সেনাবাহিনীর চাকরিচ্যুত জিয়াউল আহসান, তার স্ত্রী-সন্তান ও তাদের মালিকানাধীন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ নিয়ে দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন বলেন, ‘জিয়াউল আহসান ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন এ বিষয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।’ ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কমিশন পাওয়া জিয়াউল সেনাবাহিনীর একজন প্রশিক্ষিত কমান্ডো ও প্যারাট্রুপার ছিলেন। ২০০৯ সালে মেজর থাকাকালে তিনি র্যাব-২’-এর উপ-অধিনায়ক হন। সেই বছরই তিনি পদোন্নতি পেয়ে লেফটেন্যান্ট কর্নেল হন এবং র্যাবের সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার পরিচালকের দায়িত্ব পান। র্যাবে দায়িত্ব পালনের সময় থেকেই জিয়াউল আহসান হয়ে উঠেছিলেন গণমাধ্যমে পরিচিত নাম। কর্নেল পদে পদোন্নতি পাওয়ার পর ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে অতিরিক্ত মহাপরিচালক করে তাকে র্যাবেই রেখে দেওয়া হয়। আর ২০১৬ সালে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হিসেবে পদোন্নতি দিয়ে জিয়াউল আহসানকে পাঠানো হয় জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) পরিচালকের দায়িত্বে। ২০১৭ সালে এনটিএমসির পরিচালক করা হয় জিয়াউল আহসানকে। ২০২২ সালে সংস্থাটিতে মহাপরিচালক পদ সৃষ্টির পর তাকেই সংস্থাটির নেতৃত্বে রাখা হয়েছিল।
সাদপন্থিদের নিষিদ্ধের দাবি জানালেন মামুনুল হক
সাদপন্থিদের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের নেতা মাওলানা মামুনুল হক। তিনি সাদপন্থিদের একটি ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে তাদের নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন মামুনুল হক। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ বৈঠক হয়। তিনি বলেন, ‘এটি কোন সংঘর্ষ ছিল না, এটি একপক্ষীয় হামলা। ঘুমন্ত মানুষের ওপর সাদপন্থিরা হামলা চালিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এ জঘন্য কর্মকাণ্ডে জড়িতদের আজকের মধ্যেই গ্রেফতার করতে হবে। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন।’ মামুনুল হক অভিযোগ করেন, সাদপন্থিরা জোরপূর্বক সন্ত্রাসী কায়দায় ইজতেমা মাঠে ঢুকে। তাদের এ হামলার ফলে জুবায়েরপন্থিদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। তবে, জুবায়েরপন্থিরা প্রশাসনের নির্দেশ মেনে যথাসময়ে ইজতেমা আয়োজনের জন্য সহযোগিতা করবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন।’ তিনি বলেন, ‘সাদপন্থিরা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। যার যা দাবি ছিল, তা আলোচনা করে সমাধানের কথা থাকলেও তারা সব সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে ঘুমন্ত মানুষের ওপর হামলা চালিয়েছে। এই শত্রুকে প্রতিহত করতে হবে।’ মামলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন মামুনুল হক। তিনি বলেন, ‘আজকের মধ্যেই মামলা দায়ের করা হবে।’ ‘এছাড়া স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এ বিষয়ে কথা বলা শুরু করেছেন।’মামুনুল হক সাদপন্থিদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য তাদের ‘নিষিদ্ধ গোষ্ঠী’ হিসেবে ঘোষণা করার দাবি জানান। ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।’ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জুবায়েরপন্থিদের টঙ্গী ইজতেমা মাঠ অভিমুখে লংমার্চ কর্মসূচি প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি সবার সঙ্গে আলোচনা করে কর্মসূচি প্রত্যাহারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।এ দিকে, গাজীপুর জেলার টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানসহ আশপাশের তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। বুধবার দুপুর দুইটা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ইজতেমা ময়দানে ওই আদেশ বলবত থাকবে বলে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার নাজমুল করিম খান স্বাক্ষরিত এক পত্রে জানানো হয়। টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা মাঠে মুসল্লিদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে শতাধিক। এদের মধ্যে ৩৫ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। নিহতরা হলেন- কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া থানার এগারসিন্দু গ্রামের বাসিন্দা বাচ্চু মিয়া (৭০) ও ঢাকার দক্ষিণখানের বেড়াইদ এলাকার বেলাল (৬০) ও বেলাল হোসেন (৫৫)। মুসল্লিরা জানান, আগামী শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) থেকে জোড় ইজতেমা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। সে উপলক্ষে মুসল্লিরা আসতে থাকেন টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা মাঠে। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) রাত আড়াইটার দিকে মুসল্লিদের একটি পক্ষ মাঠে প্রবেশকে কেন্দ্র করে বাধে বিপত্তি। শুরু হয় হাতাহাতি। একপর্যায়ে সংঘর্ষে জড়ান তারা। এতে ঘটনাস্থলে দুজন মারা যান। পরে আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে টঙ্গী আহসানউল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে গুরুতর আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় বেলাল হোসেন নামে আরেক জনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিবার কল্যাণ সংঘের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ
বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিবার কল্যাণ সংঘ (বিএনএফডব্লিউএ) ঢাকার উদ্যোগে গরীব, দুঃস্থ ও শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) ঢাকায় নাবিক আবাসিক এলাকায় মিরপুর-১৪-তে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। সংঘের প্রেসিডেন্ট নাদিয়া সুলতানা শীতবস্ত্র বিতরণ করেন। সুবিধাবঞ্চিত শিশু, পঙ্গু, বয়স্ক নারী-পুরুষসহ অসহায় গরীব দুস্থ জনগোষ্ঠীর শীতের দুর্ভোগ লাঘবের লক্ষ্যে সংঘের নিজস্ব অর্থায়নে শীতবস্ত্রসমূহ বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি নাদিয়া সুলতানা উপস্থিত নারী-পুরুষের খোঁজ খবর নেন ও দারিদ্র্য পীড়িত জনগোষ্ঠীর পাশে থাকার আশ্বাস দেন।অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিবার কল্যাণ সংঘ ঢাকা শাখার চেয়ারম্যান নাওমী নাহ্রীন আজাদ, বিএন লেডিস ক্লাব ঢাকা শাখার চেয়ারম্যান বেগম লুবনা আনোয়ার ও কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর’ করছে অন্তর্বর্তী সরকার
জুলাই গণঅভুত্থানের ইতিহাস সংরক্ষণ, নিহতদের পরিবার ও আহতদের পুনর্বাসন এবং গণঅভ্যুত্থানের আদর্শকে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদফতর গঠন করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বীর প্রতীকের সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর’ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভা অনুষ্ঠিত হয়।জুলাই গণঅভুত্থানের ইতিহাস ও স্মৃতি সংরক্ষণ, গণঅভুত্থানে শহীদদের পরিবার ও আহত ছাত্র-জনতার পুনর্বাসনসহ গণঅভ্যুত্থানের আদর্শ ও চেতনাকে রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত করাই হবে-এই অধিদপ্তরের উদ্দেশ্য।সভায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জননিরাপত্তা বিভাগ, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ, স্থানীয় সরকার বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।এছাড়াও, সভায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরীসহ মন্ত্রণালয়ের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।গত জুলাই মাসে সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার সংস্কারের দাবিতে রাজপথে নেমে আসেন লাখ লাখ শিক্ষার্থী। তাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন দমনের নামে পুলিশ দমন-পীড়ন চালালে আন্দোলন সহিংসতায় রূপ নেয়। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাধারণ মানুষ যোগ দিলে কোটা সংস্কার আন্দোলন রূপ নেয় সরকারবিরোধী গণ-অভ্যুত্থানে। আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা।ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে এখন পর্যন্ত এক হাজার ৫৮১ জন নিহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্বাস্থ্যবিষয়ক উপকমিটি ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। এছাড়া, আহতের সংখ্যা ২২ হাজার। চিরতরে পঙ্গু বা অঙ্গহানি হয়েছে এমন ব্যক্তি ৫৮৭। আন্দোলনে চোখে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন ৬৮৫ জন। এর মধ্যে ৯২ জনের দুই চোখের আলো চিরতরে নিভে গেছে।
উত্তরা ও তুরাগ এলাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ
বিশ্ব ইজতেমা ময়দান দখলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় কামারপাড়া, আব্দুল্লাহপুর, উত্তরা সেক্টর-১০ এবং তৎসংলগ্ন তুরাগ নদীর দক্ষিণ পশ্চিম এলাকায় যে কোনো প্রকার সভা-সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা, বিক্ষোভ ইত্যাদি পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ডিএমপি কমিশনার স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সর্বসাধারণের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে, সম্প্রতি উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় জনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স (অর্ডিন্যান্স নং-III/৭৬) এর ২৯ ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে ১৮ ডিসেম্বর বুধবার বেলা ২টা থেকে কামারপাড়া, আব্দুল্লাহপুর, উত্তরা সেক্টর-১০ এবং তৎসংলগ্ন তুরাগ নদীর দক্ষিণ পশ্চিম এলাকায় যে কোনো প্রকার সভা-সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা, বিক্ষোভ ইত্যাদি পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিষিদ্ধ করা হলো।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ব ইজতেমার আগে আগামী ২০ ডিসেম্বর থেকে পাঁচদিনের জোড় ইজতেমা করার জন্য সাদ অনুসারী মুসল্লিরা ইজতেমা ময়দানে প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন। আর সাদপন্থীরা যেন ইজতেমা ময়দানে প্রবেশ করতে না পারেন সেজন্য আগে থেকেই ময়দানে অবস্থান করছিলেন জুবায়েরপন্থীরা।অন্যদিকে গাজীপুরে মাওলানা সাদ ও জুবায়েরপন্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনার বিচার ও ইজতেমা ময়দান জুবায়েরপন্থীদের বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন জুবায়েরপন্থীরা।বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে জেলার শ্রীপুর উপজেলার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মুলাইদের পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায় এ অবরোধ করেন জুবায়েরপন্থীরা। মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকায় দীর্ঘ যানজটের তৈরি হয়েছে।এদিকে টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানের দখল নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় কাকরাইল মসজিদ ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে পুলিশ ও র্যাব। এ ছাড়া ঘটনাস্থলে সকাল থেকে চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ৩টার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছেন। বুধবার সকালে গাজীপুর মহানগরের টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিব ইস্কান্দার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।নিহতরা হলেন– কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া থানার এগারসিন্দু এলাকার বাচ্চু মিয়া (৭০), ঢাকার দক্ষিণখানের বেড়াইদ এলাকাল বেলাল (৬০) ও বগুড়ার মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম (৬৫)। সংঘর্ষে আহত ৪০ জন ঢাকা মেডিকেলে কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন।এদিকে মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারীরা টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা ময়দান ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তারা বিশ্ব ইজতেমার মাঠ ছাড়ার পর সরকার ওই মাঠের দায়িত্ব নেবে।বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সরকারের পাঁচজন উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের পর সাদ অনুসারী মাওলানা রেজা আরিফ সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে গ্যাস থাকবে না ঢাকার যেসব এলাকায়
গ্যাস পাইপলাইনের জরুরি মেরামত কাজের জন্য বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মোট ৮ ঘণ্টা মীরহাজীরবাগ আদর্শ স্কুল রোড, যাত্রাবাড়ী, ঘুণ্টিঘর, গেন্ডারিয়া রোড ও জুরাইন খন্দকার রোড সংলগ্ন এলাকায় বিদ্যমান সব শ্রেণির গ্রাহকের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে। এছাড়া বর্ণিত এলাকাগুলোর আশপাশের এলাকায় গ্যাসের স্বল্পচাপ বিরাজ করতে পারে। গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ।
শেখ হাসিনার পতনের পর রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে ২৬ শতাংশ: আইন উপদেষ্টা
শেখ হাসিনার পতন ও পলায়নের পর দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ ২৬ শতাংশ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা এবং প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, ‘প্রবাসীরা উজাড় করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সমর্থন দিয়ে চলেছেন। তারা আমাদের দেশ গড়ার মূল চালিকাশক্তি। আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।’ বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস এবং জাতীয় প্রবাসী দিবসের আলোচনা সভায় এই তথ্য দেন তিনি। অন্তর্বর্তী সরকারের এই উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রবাসীদের সব সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করি দ্রুতই তা বাস্তবায়ন হবে। সব ধরনের হয়রানি বন্ধে কাজ করা হচ্ছে। অভিবাসন ব্যয় কমানোর চেষ্টা চলছে। এজেন্সিগুলোকে বলা হচ্ছে। ইউরোপের দেশগুলোতেও দক্ষ শ্রমিক পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ইন্ট্রিগেশনের সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’ আসিফ নজরুল বলেন, ‘প্রবাসীদের কষ্টার্জিত অর্থ ফ্যাসিস্টরা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করলে আমাদের খুব কষ্ট লাগে। প্রবাসীরা সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স পাঠান ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। তাদের সবচেয়ে পছন্দ ইসলামী ব্যাংক। সেই ইসলামী ব্যাংক ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার দখল করে লুটপাট করেছে। হাজার হাজার টাকা পাচার করেছে।’ পাসপোর্ট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অনেকেই পাসপোর্টের সমস্যা নিয়ে আসেন। এটি আমার মন্ত্রণালয়ের অধীনে না। পাসপোর্টের হয়রানি বন্ধে আমরা হয়তো অনুরোধ করতে পারি। তবুও আমরা চেষ্টা করব।’ প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগের বিষয়ে ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘ভোটাধিকার নিশ্চিতের বিষয়টি পুরোটা কমিশনের ব্যাপার। আমরা আমাদের মন্ত্রণালয়ের পক্ষে যতটুকু সম্ভব চেষ্টা করব।’ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শ্রম উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ভূইয়া সজিব বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিদেশে প্রবাসীরা জোরালো ভূমিকা পালন করেছেন। তারা দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে বড় ভূমিকা পালন করে চলেছেন। প্রবাসীদের সব অসুবিধা দূর করতে সরকার ভূমিকা রাখবে।
কাকরাইল মসজিদ ও ঢামেকে নিরাপত্তা জোরদার
টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানের দখল নিয়ে তাবলীগ জামাতের জুবায়ের ও সাদপন্থিদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় কাকরাইল মসজিদ ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিরাপত্তা জোরদার করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-৩। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে তিন জন নিহত এবং অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। এদিকে সংঘষের ঘটনায় টঙ্গীতে ৪ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে। বিজিবি জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম এ তথ্য জানান। সংঘষের ঘটনায় নিহতরা হলেন, কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া থানার এগারসিন্দু গ্রামের বাসিন্দা বাচ্চু মিয়া (৭০) ও ঢাকার দক্ষিণখানের বেড়াইদ এলাকার বেলাল (৬০)। আরেকজনের নাম পরিচয় জানা যায়নি। আহতরা হলেন- আ. রউফ (৫৫), মজিবুর রহমান (৫৮), আ. হান্নান (৬০), জহুরুল ইসলাম (৩৮), আরিফ (৩৪), ফয়সাল (২৮), তরিকুল (৪২), সাহেদ (৪৪), উকিল মিয়া (৫৮), পান্ত (৫৫) টঙ্গী, খোরশেদ আলম (৫০) বেলাল (৩৪), আনোয়ার (৫০), আবু বক্কর (৫৯), আরিফুল ইসলাম (৫০), আনোয়ার (২৬), আনোয়ার (৭৬), ফোরকান আহমেদ (৩৫), আ. রউফ (৫৫) মজিবুর রহমান (৫৮), আ. হান্নান (৬০), জহুরুল ইসলাম (৩৮), আরিফ (৩৪), ফয়সাল (২৮), তরিকুল (৪২) ও সাহেদ (৪৪)। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত ৩টার দিকে সাদপন্থিরা তুরাগ নদীর পশ্চিম তীর থেকে কামারপাড়া ব্রিজসহ বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে ইজতেমা মাঠে প্রবেশ করতে থাকেন। এ সময় মাঠের ভেতর থেকে জোবায়েরপন্থিরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। জবাবে সাদপন্থিরাও পাল্টা হামলা চালান। একপর্যায়ে সাদপন্থিরা মাঠে প্রবেশ করলে উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়।
লেবানন থেকে দেশে ফিরেছেন আরও ৯৪ বাংলাদেশি
যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবানন থেকে ৯৪ বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। গতকাল (মঙ্গলবার) রাত ১১টায় তারা দেশে ফেরেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই তথ্য জানিয়েছে। মন্ত্রণালয় জানায়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বৈরুতের বাংলাদেশ দূতাবাস এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) সহযোগিতায় যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবানন থেকে স্বেচ্ছায় দেশে ফেরত আসতে ইচ্ছুক আটকে পড়া বাংলাদেশিদের মধ্যে ইকে ৫৮৪ ফ্লাইট যোগে ৯৪ জন বাংলাদেশি নাগরিককে সম্পূর্ণ সরকারি ব্যয়ে গত রাত ১১টায় দেশে প্রত্যাবাসন করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৭ ফ্লাইটে সর্বমোট ১ হাজার ১৪২ জন বাংলাদেশিকে লেবানন থেকে বাংলাদেশে প্রত্যাবাসন করা হয়েছে। প্রত্যাবাসনকৃত প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা হাতখরচ, কিছু খাদ্য সামগ্রী ও প্রাথমিক মেডিকেল চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে আইওএম।
সাদপন্থীদের ধৈর্য ধরতে বললেও তারা বিপরীত কাজ করেছে বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
মাঝরাতে গাজীপুরের টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার মাঠ দখল করা নিয়ে মাওলানা সাদ ও জুবায়েরপন্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের আগেই দু’পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে গত রাতেই সাদপন্থীদের সঙ্গে আলোচনার জন্য টঙ্গী যাই। আলোচনায় সাদপন্থীদের ধৈর্য ধরতে বললেও তারা আমাদের সিদ্ধান্তের সম্পূর্ণ বিপরীত কাজ করেছে। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজ প্রোফাইলে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এসব কথা বলেন তিনি। হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, সাদপন্থী সমর্থিত ‘সচেতন ছাত্র সমাজের’ দেওয়া প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি এবং সকাল ১০টার মধ্যে মাওলানা সাদ সাহেবের ভিসার জন্য বাসভবন ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণার কারণে আমরা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে সাদপন্থীদের সঙ্গে আলোচনার জন্য টঙ্গী যাই। সেখানে আলোচনা শেষে তারা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন এবং মাওলানা সাদ সাহেবের ভিসা জটিলতা নিরসনে পুনরায় আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তবে তারা টঙ্গী ময়দানে জোড়ের শর্ত দেন এবং ২৫ তারিখ মাঠ ছাড়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি বলেন, টঙ্গীতে তিনটি বিষয়ে আলোচনা হয়। আলোচনায় আমরা এটাও স্পষ্ট করি এগুলো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নয়। এ বিষয়ে কাকরাইলে মাওলানা জুবায়ের সাহেব এবং ওলামায়ে কেরামের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সে পর্যন্ত ধৈর্য ধরতে হবে। এরপর এ উদ্দেশে রাত ২টায় কাকরাইলে আলোচনার জন্য যাই। সেখানে মাওলানা মাহফুজুল হক ও মাওলানা মামুনুল হকসহ অন্য আলেমরা উপস্থিত ছিলেন। তবে সেখানে পৌঁছানোর পর সাদপন্থীদের একজন মুফতি সাহেবের একটি পোস্ট আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়, যেখানে খণ্ডিত ভিডিও প্রচার করে বলা হয়েছে আমরা নাকি তাদের জোড় করার অনুমতি দিয়েছি। এটি আমাদের সিদ্ধান্তের সম্পূর্ণ বিপরীত। হাসনাত বলেন, কাকরাইলে আলোচনাকালে সেখানে আলেমদের উপস্থিতিতে আমরা তাদের স্পষ্টভাবে জানিয়েছি যে আমরা কোনো কর্তৃপক্ষ নই। আমরা আলোচনা করে কাকরাইল থেকে টঙ্গী গিয়ে কথা বলব এবং এরপর পারস্পরিক মতামতের ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। এমনকি আলোচনার মাঝেও সাদপন্থী ওই মুফতি সাহেবকে ফোন দিয়ে বলেছি, আপনারা যদি সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়ার আগে ইজতেমার ময়দানে প্রবেশ করেন, তাহলে আমাদের সঙ্গে আপনাদের সম্পর্ক থাকবে না। আমরা কাকরাইলে আলেমদের উপস্থিতিতে সাদপন্থীদের আরও বলেছি, কোনোভাবেই আপনারা ময়দানে প্রবেশ করবেন না এবং আমাদের নিয়ে যে ভিডিও প্রচার করেছেন, তা মুছে ফেলবেন। কিন্তু এর আগেই এ নির্মম ঘটনা ঘটেছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আহ্বায়ক বলেন, সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমানকে শান্ত ও ধৈর্য ধারণ করার জন্য অনুরোধ করছি। কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা না করে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য আহ্বান করছি। তাবলিগ একটি দ্বীনি ও ধর্মীয় ইস্যু। ফলে আমরা মনে করি তাবলিগসহ ধর্মীয় সব বিষয়াদি উলামায়ে কেরামের মাধ্যমেই সুরাহা ও মীমাংসিত হবে। তবে সমগ্র বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা রক্ষার দায়ভার আমাদের প্রত্যেকটি নাগরিকের। দেশের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে শান্তিপূর্ণ সমাধান ও অবস্থানের জন্য আমরা সবাই আন্তরিকভাবে কাজ করে যাব।
মেট্রোরেলে একক যাত্রায় বিকল্প হিসেবে কিউআর কোডের ব্যবস্থা
মেট্রোরেলে একক যাত্রার কার্ড ইস্যু করতে অনেক সময় লাগছে বলে অসুবিধায় পড়ছেন যাত্রীরা। এ সাময়িক অসুবিধার জন্য যাত্রীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। এছাড়াও বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে কিউআর কোড চালুর মাধ্যমে ভ্রমণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) রাতে ডিএমটিসিএলের ভেরিফায়েড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক পেজে এ বিষয়টি জানানো হয়। ডিএমটিমিএল জানায়, ডিএমটিসিএল এর পক্ষ থেকে আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। যাত্রীবৃদ্ধি পাওয়ার কারণে চাহিদা মতে গুরুত্বপূর্ণ যাত্রীবহুল মেট্রো স্টেশনসমূহে সিঙ্গেল জার্নি টিকেট ইস্যু করতে অধিক সময় লাগছে। এছাড়া সিঙ্গেল জার্নি টিকেট নির্দিষ্ট স্লটে জমা না পাওয়ায় এবং যৌক্তিক কারণে বেশ কিছু টিকিটের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সাময়িক অসুবিধার সৃষ্টি হয়েছে। এ সমস্যার সমাধানে দ্রুত সিঙ্গেল জার্নি টিকিট সংগ্রহ করা হচ্ছে। এছাড়া বিকল্প পদ্ধতি কিউআর কোড চালুর মাধ্যমে ভ্রমণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আশা করা যায়, ডিসেম্বর ২০২৪ এর শেষ নাগাদ পরিস্থিতির উন্নতি হবে। সম্মানিত যাত্রীগণের সাময়িক এ অসুবিধার জন্য ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছে। হাতে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে স্টেশনে আসার জন্য সম্মানিত যাত্রীগণকে বিনীত অনুরোধ জানানো হচ্ছে। এর আগে একক যাত্রার টিকিট সংকট দূর করতে আরও ২০,০০০ কার্ড চলতি ডিসেম্বর মাসেই আসছে বলে জানিয়েছিল মেট্রোরেল পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। যদিও গত নভেম্বর মাসে প্রথমবারের মতো নতুন লটে ২০,০০০ কার্ড স্টেশনগুলোতে যুক্ত হয়েছে।
শিক্ষা ক্যাডারকে আলাদা করার পরামর্শ দিয়েছি : আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী
বিসিএসে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকে ক্যাডার হিসেবে না রেখে এ দুই ক্যাডারকে আলাদা করার সুপারিশ করতে যাচ্ছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। এ ক্ষেত্রে জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের মতো স্বাস্থ্য ও শিক্ষার জন্য আলাদা কমিশন করার পক্ষে সংস্কার কমিশন। মঙ্গলবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সচিবালয় বিটের সাংবাদিকদের সঙ্গে জনপ্রশাসনের সংস্কার কমিশনের মতবিনিময় সভায় কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী এবং সদস্যসচিব ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোখলেস উর রহমান এ কথা জানান। কমিশন প্রধান বলেন, শিক্ষা ক্যাডারটা অযৌক্তিক। স্বাস্থ্য ও শিক্ষা আলাদা। আমরা সুপারিশ করছি, এটি ক্যাডার রাখা যাবে না। যেমন—একজন চোখের ডাক্তার, একজন দাঁতের ডাক্তার, আরেকজন জেনারেল ফিজিশিয়ান—পদোন্নতি কি তাঁরা একসঙ্গে পাচ্ছেন? পাচ্ছেন না। সে জন্য আমরা বলেছি, এটা ক্যাডারে রাখা যাবে না। এটা আমাদের চিন্তা যে এটা ক্যাডার করা অযৌক্তিক হয়েছে। এগুলোকে আলাদা করতে হবে। বেতন বাড়িয়ে দেওয়া হোক, এটা বিশেষায়িত বিভাগ। এই দুই বিভাগ ছাড়া বাকি সবই ক্যাডার থাকতে পারবে। কিন্তু এই বিভাগে এটা সম্ভব নয়। আমাদের ধারণা এটা। এখন আমরা আলাপ-আলোচনা করব।’ এ সময় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোখলেস উর রহমান বলেন, ‘পাবলিক সার্ভিস কমিশন থেকে সরে গিয়ে আমাদের জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন আলাদা হয়েছে। ঠিক এ রকম আমরা স্বাস্থ্য কমিশন আলাদা ও শিক্ষা ক্যাডারকে আলাদা করার পরামর্শ দিয়েছি।’
১২ ঘণ্টা পর বিদ্যুৎ এলো জেনেভা ক্যাম্পে
আগামীকাল বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) থেকে প্রি পেইড মিটার স্থাপনের কাজ শুরু করতে দেওয়া হবে, এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে দীর্ঘ প্রায় সাড়ে ১২ ঘণ্টা পর বিদ্যুৎ পেলো জেনেভা ক্যাম্পবাসী। রাত সোয়া ৯টা নাগাদ বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি)। এর আগে মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকা এবং প্রি পেইড মিটার স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা না রাখায় জেনেভা ক্যাম্পের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় ডিপিডিসি। ডিপিডিসির শ্যামলী কন্ট্রোলের নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে আজাদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বকেয়া বিলের ইস্যু তো ছিলই, এর সঙ্গে আমরা বারবার বলছিলাম প্রি পেইড মিটার স্থাপন করতে দিতে। কিন্তু তা তারা দিচ্ছিল না। এদিকে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল বেড়েই যাচ্ছে। আমরা বাধ্য হয়ে সকালে লাইন কেটে দেই। রাতে ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা শওকত সাহেব ক্যাম্পের পক্ষে প্রি পেইড মিটার স্থাপনের বিষয়ে লিখিত দেওয়ার পর আমরা আবার লাইন চালু করে দিয়েছি। জানা যায়, শুধু রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পেই বকেয়া বিলের পরিমাণ ১৪০ কোটি টাকা। জেনেভা ক্যাম্পের বিদ্যুৎ সংযোগের বিষয়ে আদালতে একটি মামলা ছিল। সে মামলা কয়েক মাস আগেই নিষ্পত্তি হয়েছে। সরকারের পক্ষে রায় দিয়েছে আদালত, ফলে জেনেভা ক্যাম্পের বাসিন্দাদেরই বিদ্যুতের বিল পরিশোধ করতে হবে। ডিপিডিসি জানায়, ১৫-২০ দিন আগে তারা ক্যাম্প নেতাদের সঙ্গে মিটিং করেছে। তাদের লিখিত চিঠিও দিয়েছে। ডিপিডিসি বলেছিল, প্রথমে দোকানপাট, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে মিটার নিতে, এরপর আবাসিকে মিটার। এজন্য তাদের সময়ও দেওয়া হয়। তবে সে সময় পার হয়ে গেছে, তারা কোনও উদ্যোগ নেয়নি। ফলে শ্যামলী জোনের কর্মকর্তারা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
ঘুষ চাইলে দরজা বন্ধ করে যা দেওয়ার দিয়ে দেন: জনপ্রশাসন সচিব
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেসুর রহমান বলেছেন, ‘ঘুষ চাইলে দরজা বন্ধ করেন, তারপর যা দেওয়ার দিয়ে দেন। এর চাইতে বেশি পাবলিক মিটিংয়ে আমি বলতে চাই না। শুরু করেন, তারা তো আর কিং না।’ মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময় সভায় তিন এসব কথা বলেন। সভায় জনপ্রশাসন সচিব বলেন, ‘আমি আপনাদের মাধ্যমে সব সচিবদের অনুরোধ জানাব, জনস্বার্থে যে যে তথ্যগুলো দেওয়া যায়, সেটা আমরা কেন দেব না? এক্ষেত্রে আমরা যেন সবাই পজিটিভ থাকি।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা জনকল্যাণমুখী সুপারিশ দেব। সরকার সেটা থেকে কতটুকু নেবে সেটা সরকারের বিষয়।’ চাকরিতে পুরুষ-মহিলা সবাইকে স্যার ডাকার নিয়ম বাতিল জানিয়ে সচিব বলেন, ‘বিগত সরকার জেন্ডার পরিবর্তন করে দিয়েছিল। পুরুষ-মহিলা সবাইকে বাধ্যতামূলক স্যার ডাকতে হত। ৫ আগস্টের পর থেকে এটা শেষ। এখন থেকে পুরুষ অফিসার মিস্টার, মহিলা অফিসার মিস। এগুলো রাষ্ট্রীয়ভাবে করা হয়েছে।’
হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় বাড়ল আরও আট দিন
হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় আরও আট দিন বাড়ানো হয়েছে। আগামী ১৯-২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত শেষ বারের মত নিবন্ধনের সুযোগ দিয়ে মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। আগের নির্ধারিত সময় অনুযায়ী নিবন্ধনের সময় রোববার (১৫ ডিসেম্বর) শেষ হয়। তবে ওই দিন তৈরি হওয়া ভাউচারের বিপরীতে মঙ্গলবার ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়া গেছে। তবে, এরপরও হজের কোটার বড় একটি অংশ খালি ছিল। হজযাত্রী নিবন্ধনের সর্বশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘২০২৫ সালের হজে গমনেচ্ছু ব্যক্তি, হজ এজেন্সি, হজ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানানো যাচ্ছে যে, সরকারি ও বেসরকারি উভয় মাধ্যমের হজযাত্রীদের নিবন্ধনের সময় আগামী ১৯-২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হল। এ সময়ের মধ্যে তিন লাখ টাকা জমা দিয়ে প্রাথমিক নিবন্ধন করা যাবে এবং একই সঙ্গে হজ প্যাকেজের সম্পূর্ণ অর্থ পরিশোধ করে চূড়ান্ত নিবন্ধন করার জন্য হজযাত্রীদের বিশেষভাবে অনুরোধ করা হল।’ এতে আরও বলা হয়, ‘বিশেষ বিবেচনায় হজ এজেন্সি এবং হজযাত্রীদের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে এ সময় বৃদ্ধি করা হল। সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থপনার স্বার্থে বর্ধিত সময়ের পর আর কোন সময় বৃদ্ধির সুযোগ নেই বলে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবহিত করা হল।’ আগামী বছর হজে যেতে গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে হজযাত্রী নিবন্ধন শুরু হয়। নিবন্ধনের শেষ সময় ছিল ৩০ নভেম্বর। কিন্তু, নিবন্ধনের সাড়া না পাওয়ায় সময় ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী বছরের ৫ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। চলতি বছরের মত আগামী বছরও (২০২৫) বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এর মধ্যে ১০ হাজার ১৯৮ জন সরকারি ব্যবস্থাপনায় এবং বাকি এক লাখ ১৭ হাজার জন হজযাত্রীরা যাবেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়। মঙ্গলবার রাত নয়টায় হজ পোর্টালের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনা মিলে ৭৪ হাজার ৪০৮ হজযাত্রী প্রাথমিক নিবন্ধন করেছেন, যা কোটার ৫৮ শতাংশ। অর্থাৎ কোটার ৪২ শতাংশ এখনো খালি।
নন-ক্যাডারে সহকারী সচিব হলেন ১৫ কর্মকর্তা
ক্যাডার বহির্ভূত (নন-ক্যাডার) পদে সহকারী সচিবে পদোন্নতি পেয়েছেন ১৫ জন প্রশাসনিক ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তা। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সরকারি কর্ম কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে তাদের পদোন্নতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের মধ্যে কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের আব্দুল কুদ্দুস, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের মো. আলমগীর হোসেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মোহাম্মদ কব্দুল হুসেন, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের মো. জিয়াউর রহমান, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সৈয়দ জহিরুল ইসলাম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ফেরদৌসী বেগম, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এবিএম আবু বাকার ছিদ্দিক ও এসটিএ পারভীন পদোন্নতি পেয়েছেন। আর ব্যক্তিগত কর্মকর্তাদের মধ্যে কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের মো. আকরাম হোসেন ও মো. শাহ আলম সিরাজ, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের মো. মোতালেব হোসেন ও মোহাম্মদ ফকরউদ্দিন তালুকদার, শিল্প মন্ত্রণালয়ের জেএম আলাউদ্দিন ও মো. গোলাম ফারুক এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মো. আব্দুল আজিজকে সহকারী সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। পদোন্নতির পর তাদের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। এখন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় তাদের নতুন দপ্তরে পদায়ন করে প্রজ্ঞাপন জারি করবে।
ভোটার হতে যেসব তথ্য লাগবে
২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে জন্ম নেওয়া যেসব নাগরিক এখনো ভোটার হননি, তাদের ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পাশাপাশি, নতুনদের ভোটার হতে কী কী তথ্য লাগবে, সে বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিয়েছে ইসি। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) ইসির জনসংযোগ শাখা থেকে এ তথ্য জানানো হয়। ইসি জানায়, সারাদেশে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম চলছে। যাদের জন্ম ২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে এবং বিগত হালনাগাদে যারা বাদ পড়েছেন বা অন্য যে কোন কারণে ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে পারেননি, তারা আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসে গিয়ে ভোটার হতে পারবেন। তবে, একাধিক বার ভোটার হওয়া আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। কেউ একাধিক বার ভোটার হলে আঙুলের ছাপ পরীক্ষার মাধ্যমে তা সহজেই শনাক্ত করা যায়। ভোটার হতে যেসব কাগজপত্র লাগবে: ১৭ ডিজিটের অনলাইন জন্মসনদের কপি; জাতীয়তা/নাগরিকত্ব সনদের কপি; কাছের আত্মীয়ের (পিতা-মাতা, ভাই-বোন প্রভৃতি) এনআইডির ফটোকপি; এসএসসি/দাখিল/সমমান অথবা অষ্টম শ্রেণি পাসের সনদের কপি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) ও ইউটিলিটি বিলের কপি (বিদ্যুৎ/গ্যাস/পানি/চৌকিদারি ট্যাক্স রসিদের ফটোকপি)।