ট্রাম্পের নয়া ঘোষণা: বাণিজ্য যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র?
‘বন্ধু’ মোদিকেও ছাড় দিচ্ছেন না যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ও খাঁটি ব্যবসায়ী ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি কমিয়ে আনতে চান ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি। তাই, দেশটির উচ্চ শুল্কের বিপরীতে ঘোষণা দিয়েছেন পাল্টা শুল্ক আরোপের। এতে, চীনের পর ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য যুদ্ধের শঙ্কা দেখছেন বিশ্লেষকরা। বিশ্বের যে কজন নেতার সঙ্গে ট্রাম্পের ‘সুসম্পর্ক’ রয়েছে বলে মনে করা হয়, তার মধ্যে অন্যতম ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে, মৌখিক বন্ধুত্বের কোন ছাপ বাণিজ্য সম্পর্কে রাখছেন না জানুয়ারিতে দায়িত্ব নিতে যাওয়া এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট।যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য আমদানিতে ভারতের উচ্চ শুল্ক আরোপের কঠোর সমালোচনা করে, এবার ভারতীয় পণ্য আমদানিতে উচ্চ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিলেন তিনি। এতে, চীনের পর আরেকটি বাণিজ্য যুদ্ধের শঙ্কা দেখছেন বিশ্লেষকরা।বেশ কিছু মার্কিন পণ্য আমদানিতে চড়া শুল্ক আরোপ করে রেখেছে ভারত। চীনের সঙ্গে সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘উচ্চ শুল্কের মাধ্যমেই ভারতকে জবাব দেয়া হবে। এই তালিকায় আছে ব্রাজিলও।’ ট্রাম্প টাওয়ার অধিপতি বলেন, ‘পণ্য আমদানিতে ওই দেশগুলোর সমপরিমাণ শুল্কারোপ করবে যুক্তরাষ্ট্র।’মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘যদি কোন দেশ আমাদের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপায় তাহলে যুক্তরাষ্ট্রও সেই দেশের পণ্যের ওপর চড়া হারে কর চাপাবে। ওরা (ভারত) প্রায় সব ক্ষেত্রেই আমাদের ওপর অধিক কর চাপায়। অথচ এত দিন আমরা ওদের ওপর কোন কর চাপাইনি।’ ট্রাম্প আরও বলেন, ‘বাণিজ্যে স্বচ্ছতা থাকতে হবে। ভারত যদি মার্কিন পণ্যের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক চাপায়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রও সেই পরিমাণ শুল্ক চাপাবে। ওরা আমাদের ওপর শুল্ক চাপালে সমস্যা নেই, কিন্তু সেক্ষেত্রে আমরাও পাল্টা শুল্ক চাপিয়ে দেব।’ ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত ভূ-রাজনৈতিক সম্পর্কের উন্নয়ন হলেও বাণিজ্যিক সম্পর্ক সুখকর ছিল না। ২০১৯ সালে ভারতের ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে শুল্ক বাড়িয়ে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। প্রতিশোধ হিসেবে, কয়েকটি মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্কারোপ করে ভারত। এর জেরে যুক্তরাষ্ট্রে অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা বা জিএসপি হারায় দেশটি।ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদেও একই ধরনের বাণিজ্য টানাপোড়েনের শঙ্কা দেখছেন বিশ্লেষকরা। সাম্প্রতিক ঘোষণা সেদিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে। এতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি, ওষুধ ও টেক্সটাইল শিল্প।ভারতের অন্যতম রফতানি বাজার যুক্তরাষ্ট্রে গেল অর্থ বছরে রফতানির পরিমাণ ছিল ৭৭ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলার। বিপরীতে ভারত আমদানি করেছে ৪২ দশমিক দুই বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ, ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতিতে আছে যুক্তরাষ্ট্র।
মৃত্যুর পূর্বে তরুণীর অডিও বার্তা, ‘ভাল থেক, বিয়ে করে নিও’
মোবাইল ফোনে প্রেমিকের উদ্দেশে অডিও রেকর্ড করে আত্মহত্যা করেছেন তরুণী। কোন সুইসাইড নোট পাওয়া না-গেলেও তরুণীর মোবাইল ফোন ঘেঁটে অডিও বার্তা উদ্ধার করেন পরিবারের সদস্যরা। সেখানে তিনি বলেন, ‘ভাল থেক, বিয়ে করে নিও।’ সম্প্রতি চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটেছে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটের বনসকাঁথা জেলার পালানপুরে। সংবাদ এনডিটিভির। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ওই তরুণীর নাম রাধা ঠাকুর। ২৭ বছর বয়সী রাধা একটি বিউটি পার্লার চালাতেন। কয়েক বছর আগে তার বিবাহবিচ্ছেদ হয়। তারপর থেকে বোনের পরিবারের সঙ্গেই থাকতেন তিনি। তার কোন প্রেমের সম্পর্ক ছিল কিনা তা জানাতে পারেনি পরিবারের লোকজন। রাধার আত্মহত্যার ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। অভিযোগপত্রে মৃতের বোন জানিয়েছেন, গত রোববার (১৫ ডিসেম্বর) রাতে পার্লার থেকে বাড়ি ফিরে খাদ্য খেয়ে ঘুমাতে গিয়েছিলেন রাধা। পরের দিন সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। বাড়ির লোকজনই পরে তার ফোন ঘাঁটেন। সেখানে রেকর্ড করে রাখা অডিও বার্তা পান তারা। সেগুলো পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন তারা। অবশ্য কার উদ্দেশে তিনি এসব কথা বলে গিয়েছেন, তা জানেন না তার পরিবারের লোকজন। অচেনা ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধেই তার বোন থানায় অভিযোগ করেছেন। পুলিশ ওই তরুণীর আত্মহত্যার কারণ এবং কেন তিনি তার অডিও-ভিডিওগুলোতে ক্ষমা চেয়েছিলেন, তা জানার চেষ্টা করছে। তার শেষ রেকর্ড করা কথোপকথনে রাধাকে লোকটির কাছে একটি ছবি চাইতে শোনা যায়। তার পরিবার বলেছে, ‘তিনি লোকটির কাছে একটি ছবি চেয়েছিলেন। কিন্তু, সে তা পাঠাচ্ছিল না। রেকর্ড করা কলে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘দেখ, সাতটার মধ্যে ছবি না পেলে কী হয়।’ এ দিকে, মৃত্যুর আগে রেকর্ড করা ভিডিওগুলোর একটিতে তিনি তার প্রেমিকের কাছে ক্ষমাও চেয়েছিলেন। সেখানে তাকে বলতে শোনা গেছে, ‘আমাকে ক্ষমা করে দিও, তোমাকে না জিজ্ঞেস করেই আমি ভুল পদক্ষেপ নিচ্ছি। দুঃখ কর না, ভাল থাক, জীবন উপভোগ কর এবং বিয়ে করে নিও। ভাববেন না যে, আমি আত্মহত্যা করে মারা গেছি। আমি হাত জোর করে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। তুমি ভাল থাকলে, আমার আত্মা শান্তি পাবে। আমি কাজ এবং জীবন নিয়ে বিরক্ত। তাই এই পদক্ষেপ নিচ্ছি।’
কায়রোতে পৌঁছেছেন ড. ইউনূস
উন্নয়নশীল আট দেশের ডি-৮ সম্মেলনে যোগ দিতে মিশরের রাজধানী কায়রোতে পৌঁছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় কায়রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। সেখানে তাকে স্বাগত জানিয়েছেন মিশরের পাবলিক বিজনেস সেক্টর মন্ত্রী মোহাম্মদ শিমি। পরে মন্ত্রীর সঙ্গে সংক্ষিপ্ত বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। উন্নয়নশীল আট রাষ্ট্র বাংলাদেশ, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান ও তুরস্কের মধ্যে পারস্পরিক উন্নয়ন সহযোগিতার জন্য প্রতিষ্ঠিত সংস্থা ডি-৮’র সম্মেলন শুরু হয়েছে কায়রোতে। সম্মেলনে বুধবার ডি-৮ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের কাউন্সিলের ২১তম অধিবেশন হওয়ার কথা রয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) বহুল প্রত্যাশিত ১১তম ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। শীর্ষ সম্মেলনে ড. ইউনূসের সঙ্গে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান, ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ ও মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি উপস্থিত থাকবেন। শীর্ষ সম্মেলনের সাইডলাইনে ড. ইউনূসের কয়েকটি বৈঠকে বসার কথা রয়েছে।
সৌদিতে বিয়েবহির্ভূত সম্পর্কে জন্ম নেয়া শিশুদের ভিসা বাতিল, বেকায়দায় সিঙ্গেল মাদাররা
সৌদি আরবে গৃহকর্মী হিসেবে কর্মরত নারীরা দেশটিতে চরম বেকায়দায় পড়েছেন। কারণ, তাদের সন্তানদের জন্ম সনদ দেয়া হচ্ছে না। তাই, নিজ দেশে ফেরার জন্য ভিসা বঞ্চিত হচ্ছেন গৃহকর্মী এসব সিঙ্গেল মাদার। সংবাদ দ্য গার্ডিয়ানের। কথা হয় সৌদিতে কর্মরত কেনিয়ার নাগরিক পাঁচ নারীর সঙ্গে। গৃহকর্মী এসব নারী জানিয়েছেন, তারা তাদের সন্তানদের জন্ম নিবন্ধন করতে পারেননি। কারণ, এসব শিশুরা বিয়েবহির্ভূত সম্পর্কের মাধ্যমে জন্ম নিয়েছে। এই নারীরা সবাই নির্যাতনকারী নিয়োগকর্তাদের কাছ থেকে পালিয়ে এসেছেন, যারা তাদের পরিচয়পত্র আটকে রেখেছেন। এসব নারী জানিয়েছেন, তারা সৌদি ছেড়ে নিজ দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। কারণ, তাদের সন্তানরা সৌদি আরবে প্রয়োজনীয় নথিপত্র ও জন্ম নিবন্ধন সনদ ছাড়া স্কুলে ভর্তি হতে পারছে না। মায়েদের জানানো হয়েছে যে, তারাও দেশছাড়ার ভিসা পাবেন না। কারণ, তাদের সন্তানরা ‘রাষ্ট্র পরিচয়হীন’ বলে বিবেচিত হচ্ছে। সৌদি আরবের ইসলামিক আইন অনুযায়ী, বিবাহ-বহির্ভূত যৌন সম্পর্ক একটি অপরাধ। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, ‘এই অভিযোগে নারীদের অযথা বেশি দায়ী করা হয়। কারণ, গর্ভধারণই এর প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হয়। ধর্ষণ অথবা যৌন পাচারের শিকার নারীদেরও বিয়েবহির্ভূত যৌন সম্পর্কের জন্য অভিযুক্ত করা হতে পারে এবং তাদেরও বিচারের আওতায় আনা হতে পারে।’ সৌদি আরবে বিয়েবহির্ভূতভাবে জন্ম নেয়া শিশুরা জন্ম নিবন্ধন সনদ পাওয়ার অধিকার বঞ্চিত হয়। এসব শিশুরা রাষ্ট্রীয় নথিভুক্ত না হওয়ায় তারা সব ধরনের মৌলিক অধিকার ও সেবা, যেমন চিকিৎসা সেবা ও শিক্ষা থেকেও বঞ্চিত হয়। সেই সঙ্গে এসব শিশুরা অভিবাবকের সঙ্গে নির্ধারিত রাজ্যের বাইরে যেতে পারে না। আলাপে ওই পাঁচ নারী আরো জানিয়েছেন, তাদের গর্ভধারণ হয়েছিল সহকর্মী অভিবাসী শ্রমিকদের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের সময়। এখন এরা সবাই সিঙ্গেল মাদারে পরিণত হয়েছেন। কিছু নারীর দাবি, তাদের সন্তানের বাবারা তাদের (নারী) ছেড়ে গেছে। কারণ, বিয়েবহির্ভূত যৌন সম্পর্কের কারণে গ্রেফতার হওয়ার আতঙ্কে রয়েছেন ওই সব পুরুষ। কেনিয়া থেকে আসা অভিবাসী নারী ফাতিমা (ছদ্মনাম) সৌদি আরবে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতে এসেছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, রিয়াদে তার বসতির কাছের হাসপাতালে তিনি প্রসব বেদনা নিয়ে ছুটে যান। এসব প্রয়োজনীয় নথিপত্র দেখাতে ব্যর্থ হলে হাসপাতালের কর্মীরা তাকে পুলিশ দিয়ে গ্রেফতারের হুমকি দিয়েছিলেন। তারা বলেছিল যে, ‘আমি যদি (প্রয়োজনীয়) নথি না আনতাম, তবে তারা আমাকে কারাগারে পাঠাত। প্রসব বেদনা নিয়ে কারাগারে যাওয়ার ভয়ে আমি আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। আমি ভান করলাম, যেন আমি হাসপাতালে হাঁটাহাঁটি করছি। তারপর, আমি গেট দিয়ে বেরিয়ে আমার বাসায় ফিরে যাই।’ ফাতিমা তার বাসায় ফেরার পাঁচ মিনিটের মধ্যে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। ‘আমি নিজেই নাড়ি কেটে নবজাতককে পরিষ্কার করেছিলাম। আমার সন্তানকে পরিষ্কার করে একটি কম্বলে জড়িয়ে রাখি। এটি খুবই ভীতিকর ছিল। কিন্তু, আমাকে তা করতেই হত। আমাকে সাহায্য করার মত কেউ ছিল না।’ ফাতিমা বলেছিলেন যে, তিনি তার নিয়োগকর্তার বাড়ি থেকে পালিয়ে আসেন। কারণ, তিনি তার ওপর যৌন হয়রানি ও শারীরিক নির্যাতন চালিয়েছিলেন। তিনি তার পাসপোর্টও কেড়ে নিয়েছিলেন। সেই থেকে তিনি অনানুষ্ঠানিকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তবে, গত দুই বছর ধরে সৌদি আরব ছেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। কারণ, জন্ম সনদ না থাকায় তার আট বছর বয়সী ছেলেটি স্কুলে যাওয়া থেকে বঞ্চিত।’ এখানকার কর্তৃপক্ষ শিশু ও তাদের মায়েদের নিয়ে খুব একটা চিন্তিত নয় বলে অভিযোগ করেন ফাতিমা। তিনি আরও জানান, এপ্রিল মাসে রিয়াদের মানফুহা এলাকায় অন্যান্য অভিবাসী মায়েদের সঙ্গে একত্রিত হয়ে তারা একটি প্রতিবাদ সমাবেশ করেন, যেখানে তারা যানচলাচল বন্ধ করেন এবং দেশে ফিরে যাওয়ার দাবি জানিয়ে স্লোগান দেন। যদিও সৌদিতে যে কোন ধরনের প্রতিবাদ অবৈধ ও এর জন্য কারাদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে। ‘আমরা চাই, আমাদের মত চরম বঞ্চিত মায়েদের সন্তানরা স্কুলে যাক। তারা তাদের শিশু-শিক্ষার অনেক কিছু থেকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত হচ্ছে। এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা। তবে আমাদের শিশুরা এই সুযোগটি চিরতরে হারাচ্ছে।’ অভিবাসীর অধিকারবিষয়ক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, উপসাগরীয় দেশগুলোতে বিয়েবহির্ভূত ও অনৈতিকভাবে জন্মগ্রহণ করা রাষ্ট্র পরিচয় হীন শিশুর সংখ্যা হাজার হাজার হতে পারে। তারা বলেন, ‘জন্মপরিস্থিতি যাই হোক না কেন, প্রতিটি শিশুরই তাদের পরিচয় ও মানব সন্তান হিসেবে অধিকার রয়েছে।’ সাক্ষাৎকার দেয়া নারীরা জানিয়েছেন, তারা সৌদি আরব ছেড়ে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। তাদের সন্তানদের সুস্থ ও খাদ্যমান সমৃদ্ধ খাবার দিতে সংগ্রাম করছেন। তাদের একজন লিসা বলেন, ‘আমি মুদি দোকান থেকে শাক-সবজি এবং অবিক্রীত রুটি ও দুধ (ভিক্ষা) চাইতে বাধ্য হই, আমার সন্তানের মুখে খাবার দেয়ার জন্য।’ সাক্ষাৎকার দেয়া সিঙ্গেল মায়েরা জানিয়েছেন, গত দুই বছরে তারা সৌদি আরব ছাড়ার জন্য সহায়তা পেতে বহু চেষ্টা করেছেন। কিন্তু, কেনিয়ার দূতাবাস রাষ্ট্রহীন সন্তানের মায়েদের প্রস্থান-ভিসা (ডিপার্টচার ভিসা) প্রক্রিয়াকরণে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। ‘কেনিয়ার দূতাবাসের কর্মীরা বলেন আমরা যৌনকর্মী।’ অভিযোগ করেনন ক্রিস্টিন। তিনি একজন কেনিয়ার নাগরিক এবং একজন মা যার রাষ্ট্রহীন ছোট্ট শিশু রয়েছে। ‘তারা ভুলে যায় যে, এই শিশুদের অনেকেই তাদের মায়েদের কর্মস্থলের নিয়োগকর্তা বা চালকের ধর্ষণের শিকার মায়েদের সন্তান। এটি অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক ও অমানবিক।’ কেনিয়ার দূতাবাস জানিয়েছে, ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে সিঙ্গেল মা ও তাদের সন্তানদের ডিএনএর নমুনা নেয়া হয়েছে এবং পরীক্ষার ফলাফল এখন প্রক্রিয়াকরণাধীন। রয়েছে। সৌদি আরবে কেনিয়ার রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ রুওয়াঙ্গে, সেই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘দূতাবাসের কর্মীরা ভুলভাবে কিছু মাকে জানিয়েছেন, তাদের ডিএনএ সন্তানের সঙ্গে মেলে না।’ ‘দূতাবাস নিশ্চিত করতে চায়, এটি কেনিয়ার অভিবাসী জনগোষ্ঠীর প্রত্যেকের সর্বোচ্চ সম্মান রক্ষায় যত্ন ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। বিশেষ করে, নাবালকদের সঙ্গে জড়িত এই সংবেদনশীল খবর এবং শিশু পাচারের অন্তর্নিহিত ঝুঁকি বিবেচনায়, দূতাবাস ক্ষতিগ্রস্ত কেনিয়ান মায়েদের সহায়তা করেছে। সেই সঙ্গে দুই দেশের প্রযোজ্য আইনানুযায়ী এই সহায়তা অব্যাহত রেখেছে।’ বলেছেন রুওয়াঙ্গে। সৌদি সরকারকে মন্তব্যের জন্য যোগাযোগ করা হয়েছিল। তবে, তাদের উত্তর পাওয়া যায়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের কুখ্যাত গুয়ানতানামো বে জেল থেকে আরও একজনের মুক্তি
যুক্তরাষ্ট্রের কুখ্যাত গুয়ানতানামো বে জেল থেকে আরও এক বন্দি মুক্তি পেয়েছেন। মোহাম্মদ আবদুল মালিক বাজাবু নামের ওই বন্দি এরই মধ্যে নিজ দেশ কেনিয়ায় ফিরেছেন। গেল ১৭ বছর ধরে তিনি গুয়ানতানামো কারাগারে বন্দি ছিলেন। সংবাদ আল জাজিরার। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগন মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) আবদুল মালিক বাজাবুর মুক্তির বিষয়টি ঘোষণা করে জানায়, বাজাবুর কেনিয়ায় প্রত্যাবাসনের বিষয়টি গত মাসে পার্লামেন্টকে অবহিত করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন।আল কায়েদার পূর্ব আফ্রিকার শাখার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে ২০০৭ সালে কেনিয়ার মোম্বাসায় আবদুল মালিক বাজাবুকে গ্রেফতার করে দেশটির কর্তৃপক্ষ। তাকে মার্কিন কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেয়া হয়। এর কয়েক সপ্তাহ পর তাকে কেনিয়া থেকে গুয়ানতানামো বে কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।গুয়ানতানামো বে কারাগারে বন্দি পর্যালোচনা পরিষদ পিরিয়ডিক রিভিউ বোর্ড ২০২১ সালে তাদের এক মূল্যায়ন প্রতিবেদনে জানায়, আবদুল মালিক বাজাবু আর ‘যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য উল্লেখযোগ্য হুমকি নন’। এরপর তার মুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়।মুক্তি প্রক্রিয়ায় যুক্ত রিপ্রাইভ ইউএস নামের একটি সংগঠন বাজাবুর মুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে। সংগঠনটি বলেছে, ‘কেনিয়ার কর্তৃপক্ষ ও মার্কিন সামরিক বাহিনী তাকে নির্যাতন করেছে।’আবদুল মালিক বাজাবুকে আইনি সহায়তা দেয়া একজন আইনজীবী বলেছেন, ‘নিরীহ একজন ব্যক্তিকে তার জীবনের সেরা সময়টায় বন্দি রেখেছিল যুক্তরাষ্ট্র। তাকে এমন একটা সময়ে তার স্ত্রী ও সন্তানদের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছিল, যখন তাকে তাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল।’ওই আইনজীবী আরও বলেন, ‘গত ১৭ বছর ধরে কারাগারে থাকাকালে তার সন্তানরা বড় হয়ে গেছে। তাকে এভাবে বন্দি রাখায় যে ক্ষতি হয়েছে, তা কখনই পূরণ করা যাবে না। তবে, মার্কিন সরকার অন্তত যেটা করতে পারে, সেটা হল আবদুল মালিক যাতে নতুন করে জীবন শুরু করতে পারে, তার জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা ও সুযোগ করে দেয়া।’তথাকথিত নাইন-ইলেভেন হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বজুড়ে ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ শুরু করে। সেই সময় ২০০২ সালে গুয়ানতানামো বে কারাগার চালু করা হয়। কিউবার কাছে মার্কিন এক সামরিক ঘাঁটিতে এই কারাগার অবস্থিত।যুক্তরাষ্ট্রের প্রথাগত আদালতে যেসব সুযোগ-সুবিধা থাকে, সেখানে সেগুলো নেই। ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’র নামে মার্কিন সরকারের নিপীড়ন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি স্থায়ী প্রতীক হয়ে উঠেছে এই কারাগার।এ কারাগারে বন্দিদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন করা হয় বলে মার্কিন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। যেখানে বিনা অভিযোগে অনেককে আটকে রাখা হয়। এমনকি কেন আটকে রাখা হয়েছে, তা জানারও সুযোগ ও আইনি সহায়তা পায়না বন্দিরা।এই কারাগারে এক সময় ৮০০ বন্দি ছিল। পেন্টাগনের হালনাগাদ তথ্য মতে, এই কারাগারে এখনও ২৯ জন বন্দি রয়েছে। তাদের মধ্যে ১৫ জন স্থানান্তর করার মত উপযুক্ত পর্যায়ে রয়েছেন। এর মধ্যে অনেকেই ‘কালো এলাকা’ হিসেবে পরিচিত সিআইয়ের গোপন ডেরায় থাকতেন।সেখানে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের নামে নির্যাতন করা হত। যার অনুমোদন করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ। ব্যাপক সমালোচনার মুখে পরবর্তী তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা গুয়ানতানামো বে কারাগার বন্ধ করার ঘোষণা দেন। তবে, আজও তা বন্ধ করা হয়নি।
ভারতীয় পণ্যে অধিক হারে ট্যাক্স আরোপের হুমকি ট্রাম্পের
নির্বাচনের মাঠ থেকেই বিভিন্ন দেশের ওপর অধিক হারে শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়ে আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এতদিন চীন, কানডা ও মেক্সিকোর ওপর চড়া শুল্ক আরোপের কথা বললেও এখন এই তালিকায় ভারতের নামও যুক্ত করলেন তিনি। ভারতীয় পণ্যের ওপর অধিক হারে ট্যাক্স আরোপের হুমকি দিয়েছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারতের আমদানি করা নির্দিষ্ট কিছু মার্কিন পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপের জবাবে এই হুমকি দেন তিনি। খবর এনডিটিভির। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) ফ্লোরিডার মার-আ-লাগোতে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, (শুল্ক আরোপের বিষয়টি হবে) পারস্পরিক। যদি তারা আমাদের ওপর শুল্ক আরোপ করে, আমরা তাদের ওপর একই পরিমাণ শুল্ক আরোপ করব। তারা আমাদের ওপর শুল্ক আরোপ করে। আমরা তাদের ওপর শুল্ক আরোপ করি। তারা আমাদের ওপর আরও শুল্ক আরোপ করে। প্রায় সব ক্ষেত্রেই, তারা আমাদের ওপর শুল্ক আরোপ করে, আর আমরা তাদের ওপর শুল্ক আরোপ করি না। চীনের সঙ্গে সম্ভাব্য একটি বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন। ট্রাম্প বলেন, ভারত ও ব্রাজিল সেই কয়েকটি দেশের মধ্যে রয়েছে যারা নির্দিষ্ট মার্কিন পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপ করে। তিনি বলেন, ‘পারস্পরিক’ শব্দটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ কেউ যদি আমাদের ওপর শুল্ক আরোপ করে—ভারত, আমাদের নিজেদের নিয়ে কথা বলতে হবে না—যদি ভারত আমাদের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে, আমরা কি তাদের ওপর শূন্য শুল্ক আরোপ করব? আপনি জানেন, তারা একটি সাইকেল পাঠায় এবং আমরা একটি সাইকেল পাঠাই। তারা আমাদের ১০০ বা ২০০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়ে দেয়। ভারত অনেক বেশি শুল্ক আরোপ করে। ব্রাজিলও অনেক বেশি শুল্ক আরোপ করে। তারা যদি আমাদের ওপর শুল্ক আরোপ করতে চায়, সেটা ঠিক আছে, তবে আমরা তাদের ওপরও একই পরিমাণ শুল্ক আরোপ করব। এ ছাড়া এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী হিসেবে ট্রাম্পের মনোনীত ব্যক্তি হাওয়ার্ড লুটনিক বলেন, “পারস্পরিকতা” ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হতে যাচ্ছে। যেভাবে আপনি আমাদের সঙ্গে আচরণ করবেন, আপনাকেও সেই একই ধরনের আচরণের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
বিশ্বশক্তির সঙ্গে ইরানের পারমাণবিক চুক্তি সচল করতে জাতিসংঘের আহ্বান
বিশ্বশক্তির সঙ্গে ইরানের ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি সচল করতে দুই পক্ষকে আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলো ও ইরান যেন দ্রুত এই চুক্তি পুনরুদ্ধারে কাজ করে সেই আহ্বান জানান তিনি। একই সঙ্গে তিনি সতর্ক করে বলেন, এর সাফল্য বা ব্যর্থতা আমাদের সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। খবর রয়টার্সের। ২০১৫ সালে চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্যসহ যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) নামের একটি চুক্তিতে পৌঁছায়। চুক্তি মোতাবেক ইরান পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করতে সম্মত হয়। শর্ত মেনে চলার বদলে সে সময় ইরানের ওপর আরোপ করা বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। তবে ২০১৮ সালে ওই চুক্তি থেকে বেরিয়ে যান যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চুক্তি থেকে বেরিয়ে গিয়ে ইরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। তবে হোয়াইট হাউস জো বাইডেন ফিরলে পুরোনো ওই চুক্তিতে ফেরার কথা বলেছিলেন তিনি। এ লক্ষ্যে বিশ্বশক্তিগুলো বিভিন্ন সময় আলোচনা করলেও তা সফল হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে ইউরোপীয় ও ইরানি কূটনীতিকরা গত মাসের শেষ দিকে বৈঠক করেন। সেখানে তারা আঞ্চলিক উত্তেজনা প্রশমনের উপায় এবং তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করেন। জাতিসংঘের রাজনৈতিক বিষয়ক প্রধান রোজমেরি ডিকার্লো নিরাপত্তা পরিষদে বলেন, সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদিও জেসিপিওএ অংশগ্রহণকারী ও যুক্তরাষ্ট্রের দায়িত্ব, তাদের সাফল্য বা ব্যর্থতা আমাদের সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই অঞ্চল (মধ্যপ্রাচ্য) আরওঅস্থিতিশীলতা সহ্য করতে পারবে না। অন্যদিকে জাতিসংঘে মার্কিন উপ-রাষ্ট্রদূত রবার্ট উড নিরাপত্তা পরিষদে বলেন, কূটনীতি সেরা পন্থা হলেও যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্ট করেছে যে একটি পারমাণবিক অস্ত্রধারী ইরান কখনই গ্রহণযোগ্য নয়। এই ফলাফল নিশ্চিত করতে আমরা জাতীয় শক্তির সব উপাদান ব্যবহার করতে প্রস্তুত। এ ছাড়া ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি এই মাসের শুরুতে নিরাপত্তা পরিষদে এক চিঠিতে জানিয়েছে, ইরান যেন পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে না পারে সে জন্য প্রয়োজনে দেশটির ওপর সকল আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের জন্য তথাকথিত ‘স্ন্যাপ ব্যাক’ কার্যকর করতে প্রস্তুত তারা। ২০১৫ সালের চুক্তি সম্পর্কিত জাতিসংঘ প্রস্তাবটি আগামী বছরের ১৮ অক্টোবর শেষ হলে তারা আর এই পদক্ষেপ নিতে পারবে না। জাতিসংঘে ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির সাঈদ ইরাভানি বলেন, তেহরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের জন্য তথাকথিত ‘স্ন্যাপ ব্যাক’ প্রয়োগ করা অবৈধ ও অপ্রাসঙ্গিক হবে।তিনি বলেন, তথাকথিত স্ন্যাপ ব্যাক ইরানকে হুমকি দেয়ার জন্য অপব্যবহারের একটি হাতিয়ার নয়। এমন উসকানিমূলক পদক্ষেপের জবাব দৃঢ় ও আনুপাতিক হারে দেবে ইরান।
আদানি প্ল্যান্ট থেকে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ আমদানি কমেছে এক তৃতীয়াংশ
ভারতীয় ব্যবসায়ী গৌতম আদানির মালিকানাধীন বিদ্যুৎ কোম্পানি আদানি পাওয়ার থেকে গেল নভেম্বর মাসে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ আমদানি প্রায় এক তৃতীয়াংশ কমেছে। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) ভারতের সরকারি এক পরিসংখ্যানে এই তথ্য জানা গেছে বলে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে। ঝাড়খণ্ডের এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার গড্ডা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ হঠাৎ কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে বকেয়া সংক্রান্ত বিরোধ। ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়ে ২০১৭ সালে বাংলাদেশের সঙ্গে ২৫ বছর মেয়াদী একটি বিদ্যুৎ সরবরাহ চুক্তি সই করে আদানি পাওয়ার। গড্ডায় অবস্থিত আদানির এই কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ রপ্তানি করা হয়, তা দেশটির মোট বিদ্যুৎ চাহিদার প্রায় দশ শতাংশ। বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি দেখা দেওয়ায় সম্প্রতি আদানিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ মূল্য পুনর্বিবেচনা করতে বলছে বাংলাদেশ। দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা অন্যান্য সব বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মাঝে আদানির বিদ্যুতের দাম সর্বোচ্চ। ভারতের ইস্টার্ন রিজিওনাল পাওয়ার কমিটির তথ্য অনুসারে, গেল নভেম্বর মাসে গড্ডা প্ল্যান্ট বাংলাদেশে ৪৫০ মিলিয়ন কিলোওয়াট/ঘণ্টা বিদ্যুৎ রপ্তানি করেছে। যা বার্ষিক হিসাবের তুলনায় ৩২ দশমিক আট শতাংশ কম। এই পতন মাসিক বিদ্যুৎ আমদানির ক্ষেত্রে গত বছরের ডিসেম্বরের পর সর্বনিম্ন। শীতের মৌসুম শুরু হওয়ায় বাংলাদেশে বিদ্যুতের ব্যবহার ও চাহিদা কম থাকলেও বার্ষিক চাহিদা প্রায় ৫ দশমিক ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আদানির কাছ থেকে আমদানি কমে যাওয়ায় বিদ্যুতের বার্ষিক চাহিদা মেটাতে জ্বালানি তেলচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দিকে ঝুঁকছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানি তেলের ব্যবহার গত নভেম্বরে ৪৭ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে। টানা ২১ মাস ধরে হ্রাস পাওয়ার পর পরপর তিন মাসে বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানি তেলের ব্যবহার বেড়েছ। বাংলাদেশের বিদ্যুৎশক্তি সঞ্চালন প্রতিষ্ঠানের তথ্যানুযায়ী, টানা পাঁচ মাস পতনের পর গত নভেম্বরে প্রাকৃতিক গ্যাস-চালিত বিদ্যুৎ উৎপাদন ১০ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। অন্য দিকে, কয়লা-চালিত বিদ্যুতের উৎপাদন টানা তৃতীয় মাসের মত কমেছে।
বাংলাদেশিদের রেকর্ড হারে ভিসা দিচ্ছে সৌদি আরব, নেপথ্যে যে কারণ
বর্তমানে বাংলাদেশিদের জন্য প্রতিদিন রেকর্ড চার হাজার থেকে ছয় হাজার শ্রম ভিসা ইস্যু করছে সৌদি আরব। সামনের দিনে এই ধারা অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। সংসাদ গাল্ফ নিউজের। গেল মাসে বাংলাদেশ থেকে ৮৩ হাজার শ্রমিক নিয়োগ দেয় সৌদি আরব, যা বিশ্বব্যাপী যে কোন দেশের জন্য এক মাসে সর্বোচ্চ নিয়োগের রেকর্ড। সৌদি আরবের উচ্চাকাঙ্ক্ষী ভিশন ২০৩০ প্রকল্পের আওতায় উন্নয়ন কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার কারণে শ্রমিকদের এই চাহিদা বেড়েছে। বর্তমানে বেশ কয়েকটি বড় ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে সৌদি আরব। যার মধ্যে রয়েছে ২০৩৪ সালের ফিফা বিশ্বকাপ ও ২০৩০ সালের রিয়াদ এক্সপো। পাশাপাশি, বিমানবন্দর, রেলপথ ও স্টেডিয়ামের মত বড় পরিকাঠামো প্রকল্পও পরিচালিত হচ্ছে। এই উদ্যোগগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করতে মধ্যপ্রাচ্যের তেল প্রধান ধনী দেশটিতে একটি বৈচিত্র্যময় শ্রমশক্তির প্রয়োজনীয়তা তৈরি করেছে। এ ছাড়া, শুভেচ্ছ উদ্যোগের অংশ হিসেবে বাংলাদেশকে ৩৭২ টন মাংস অনুদান দিয়েছে সৌদি আরব। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই মাংস দেশের ৬৪ জেলার ৯৫টি এলাকার অনাথ, মাদরাসা ও অসহায় মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ ধনীর তালিকায় খাদ্য ব্যবসায়ীরা
বিজনেস ম্যাগাজিন ফোর্বেসের হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যক্তি মালিকানাধীন শীর্ষ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আটটি খাদ্য ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠান। যারা গেল দশ বছর ধরে তালিকার শীর্ষে অবস্থান করে চলেছে। ম্যাগাজিনটির সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে। বিশ্বজুড়ে বাণিজ্যের প্রসারে ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানই সবচেয়ে বড় অবদান রেখে এসেছে। কালের বিবর্তনে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলো বিশ্ব অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে চলছে। আর তাদেরই তালিকা তৈরী করেছে ফোর্বস। এবারের তালিকায় শীর্ষ ১৫ প্রতিষ্ঠানের আটটি খাদ্য ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাত প্রতিষ্ঠান। কৃষি ও খাদ্যপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কারগিল চতুর্থ বারের মত শীর্ষ স্থানে। গত বছরের তুলনায় দশ শতাংশ আয় কমার পরও দেড় লাখ কর্মী নিয়ে মিনেসোটাভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটির আয় ১৬০ বিলিয়ন ডলার। ১২৫ বিলিয়ন আয় নিয়ে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে ক্যানসাসের কোচ ইনকরপোরেশন। বছরে ৫৭ বিলিয়ন আয় নিয়ে ফ্লোরিডাভিত্তিক সুপার মার্কেট চেইন পাবলিক্স সুপার মারকেটস রয়েছে তৃতীয় স্থানে। ৫০ বিলিয়ন ও সাড়ে ৪৬ বিলিয়ন আয় নিয়ে চতুর্থ ও পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে মার্স এবং এইচ-ই-বি গ্রোসারি কোম্পানী। ২৬ বিলিয়ন আয় নিয়ে দশম স্থানে সাউদার্ন গ্লেজার'স ওয়াইন এন্ড স্পিরিট। তালিকায় রয়েছে ২৭৫টি ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান, যাদের ৪৮ শতাংশই গত দশ বছর ধরে তালিকায় স্থান করে নিচ্ছে। চলতি বছর ২৬টি নতুন প্রতিষ্ঠান তালিকায় যোগ হয়েছে, বিপরীতে বাদ পড়েছে ১৩টি প্রতিষ্ঠান।
চলতি মাসেই আবার বৈঠকে বসতে পারেন ইউনূস-শেহবাজ
চলতি মাসেই উন্নয়নশীল আট মুসলিম দেশের জোট ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলন বসছে উত্তর আফ্রিকার দেশ মিসরের রাজধানী কায়রোতে। সম্মেলনে যোগ দেবেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আর সেখানেই তিনি বৈঠকে বসতে পারেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে। সম্ভাব্য এই বৈঠকের বিষয়ে সবার নজর থাকবে বলেও উল্লেখ করা হচ্ছে। ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হলে তা হবে উভয় নেতার মধ্যে দ্বিতীয় বৈঠক। সংবাদ দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনালের। শেহবাজ শরিফ কায়রোতে অনুষ্ঠেয় উন্নয়নশীল আট দেশের জোট ডি-৮’-এর একাদশ শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিতে ১৮-২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত মিসরে সরকারি সফর করবেন বলে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর ঘোষণা করেছে। অন্য দিকে, মুহাম্মদ ইউনূস ১৭-২০ ডিসেম্বর মিসরে সরকারি সফর করবেন। আর সেখানে ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসতে পারেন উভয় নেতা। কায়রোতে অনুষ্ঠিতব্য এই শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে শেহবাজ শরিফ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী অন্য নেতাদের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তবে, পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর এখনও পর্যন্ত কোন বৈঠক নিশ্চিতভাবে হতে চলেছে, সে বিষযে ইঙ্গিত দেয়নি। অবশ্য শেখ হাসিনা সরকারকে অপসারণের পর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতির প্রেক্ষাপটে শেহবাজ ও ইউনূসের মধ্যে সম্ভাব্য বৈঠকের দিকে সবার দৃষ্টি থাকবে। উভয় নেতা গেল সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সাইডলাইনে বৈঠক করেছিলেন এবং সেখানে দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক সহযোগিতার প্রাথমিক প্ল্যাটফর্ম হিসাবে সার্কের পুনরুজ্জীবনের আহ্বান জানিয়েছিলেন ইউনূস। উল্লেখ্য, পাকিস্তান ছাড়াও ডি-৮ জোটের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে মিসর, বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ইরান ও তুরস্ক। এই প্ল্যাটফর্মে এসব দেশ মূলত অর্থনৈতিক সহযোগিতার দিকে মনোনিবেশ করে থাকে। এই সহযোগিতার মধ্যে অর্থনীতি ও আর্থিক বিষয়াদির পাশাপাশি গ্রামীণ উন্নয়ন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মানবিক উন্নয়ন, কৃষি, জ্বালানি পরিবেশ ও স্বাস্থ্যসেবার মত বিষয়ও রয়েছে। ঢাকার একটি কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, কায়রোতে অনুষ্ঠেয় ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেবেন ইউনূস। তিনি ১৭-২০ ডিসেম্বর মিসরে রাষ্ট্রীয় সফর করবেন। প্রধান উপদেষ্টার সফর নিয়ে ইতোমধ্যেই প্রস্তুতি নিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কায়রোর বাংলাদেশ দূতাবাস। আগামী বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন। জোটের একাদশ এই শীর্ষ সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য দেওয়ার পাশাপাশি মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির কাছে সভাপতিত্ব হস্তান্তর করবেন ড. ইউনূস। এবারের ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে অর্থনৈতিক সহযোগিতা, বাণিজ্য বৈচিত্র্য ও উদ্ভাবনের মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে আলোকপাত করার পাশাপাশি সদস্য দেশগুলো বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও পারস্পরিক প্রবৃদ্ধি উৎসাহিত করতে একসঙ্গে কাজ করবে দেশগুলো। তবে, সম্মেলনে বিশেষ গুরুত্ব পাবে গাজা-লেবানন প্রসঙ্গ। এক্ষেত্রে, গাজা ও লেবাননে মানবিক বিপর্যয় নিয়ে শীর্ষ নেতারা একটি বিশেষ সেশন করবেন। ওই সেশন থেকে মানবিক সংকট নিরসনে যৌথ প্রস্তাবনা প্রকাশ করবেন ডি-৮ শীর্ষ নেতারা। ১৯৯৭ সালের ১৫ জুন ইস্তাম্বুল ঘোষণার মাধ্যমে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে উন্নয়ন সহযোগিতা বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে ডি-৮ গ্রুপটি যাত্রা শুরু করে। উন্নয়নশীল আট মুসলিম দেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গড়ে তোলা হয় ডি-৮।
রুশ পারমাণবিক সুরক্ষা বাহিনীর সিনিয়র জেনারেল নিহত
মস্কোতে বিস্ফোরণে রাশিয়ার পারমাণবিক সুরক্ষা বাহিনীর দায়িত্বে থাকা সিনিয়র জেনারেল নিহত হয়েছেন। এমনটি নিশ্চিত করেছে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।পরমাণু, জৈবিক, রাসায়নিক প্রতিরক্ষা বাহিনীর (এনবিসি) প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইগর কিরিলোভ স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) ভোরে আবাসিক ব্লক ছেড়ে যাচ্ছিলেন যখন একটি স্কুটারে লুকানো একটি ডিভাইস বিস্ফোরিত হয়েছিল, রাশিয়ার তদন্ত কমিটি জানিয়েছে। এতে আরও বলা হয়, কিরিলোভের সহকারীও নিহত হয়েছেন। অক্টোবরে, যুক্তরাজ্য কিরিলোভের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। বলেছিল যে তিনি ইউক্রেনে রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার তদারকি করেছিলেন এবং 'ক্রেমলিনের বিভ্রান্তির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুখপাত্র' হিসাবে কাজ করেছিলেন।
জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে মতবিরোধে অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগ
প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে মতবিরোধের জেরে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন কানাডার অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড। ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক-আরোপের পরিকল্পনার বিপরীতে কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো হবে সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সাথে মতবিরোধের কারণে পদত্যাগ করেছেন তিনি। প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, সোমবার ট্রুডোর কাছে পাঠানো একটি চিঠিতে নিজের পদত্যাগের কথা ঘোষণা করেন ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড এবং সেখানে এর কারণ হিসেবে তিনি কানাডার জন্য সঠিক পথ নিয়ে তাদের মধ্যে ‘মতপার্থক্য’ বং ট্রাম্পের ‘আক্রমণাত্মক অর্থনৈতিক জাতীয়তাবাদ’ নীতির ফলে সৃষ্ট ‘গুরুতর চ্যালেঞ্জের’ দিকে ইঙ্গিত করেন । সংসদে বার্ষিক আর্থিক সরকারি আপডেট দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডের পদত্যাগের এই খবর সামনে এলো। এই পদক্ষেপ ইতোমধ্যেই নড়বড়ে অবস্থানে থাকা ট্রুডোর সরকারকে আরও বিপদের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিতে পারে। সোমবার ফ্রিল্যান্ডের পদত্যাগের পর পাঁচ জন লিবারেল এমপি প্রকাশ্যেই ট্রুডোকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন। নয় বছর ক্ষমতায় থাকার পর প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো পদত্যাগের ক্রমবর্ধমান আহ্বানের মুখোমুখি হচ্ছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে স্কুলে বন্দুক হামলায় নিহত ৩
যুক্তরাষ্ট্রে আবারো স্কুলে বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেছে। দেশটির উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যের ম্যাডিসন শহরের একটি খ্রিষ্টান স্কুলে সোমবার বন্দুকধারীর গুলিতে তিনজন নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে একজন শিক্ষক ও এক শিক্ষার্থী। স্থানীয় সময় গতকাল (১৬ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার আগে এই গুলির ঘটনা ঘটে। ম্যাডিসন পুলিশ বিভাগ জানিয়েছে, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অ্যাবান্ড্যান্ট লাইফ ক্রিশ্চিয়ান স্কুলে এক বন্দুকধারী গুলি চালিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থী রয়েছে যারা কিন্ডারগার্টেন থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বিভিন্ন শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে সন্দেহভাজন বন্দুকধারীও রয়েছে। নিহত বন্দুকধারীও ওই স্কুলের শিক্ষার্থী ছিল। মেডিসন পুলিশের প্রধান শন বার্নস জানান, হামলাকারী ওই স্কুলের ১৫ বছর বয়সী এক ছাত্রী। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হামলাকারী অ্যাবান্ডেন্ট লাইফ ক্রিশ্চিয়ান স্কুলে উপস্থিত ছিল, এরপর গুলি চালায় এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃতদেহ পাওয়া যায়। আহতদের মধ্যে ছয়জন শিক্ষার্থী রয়েছে, যাদের মধ্যে দুইজনের আঘাত গুরুতর বলে জানানো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে চলতি বছর স্কুলে ৩২২টি গুলির ঘটনা ঘটেছে। ১৯৬৬ সালের পর দেশটির স্কুলে এটাই গুলির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ঘটনা। ওই বছরের পর যুক্তরাষ্ট্রের স্কুলে সর্বোচ্চ ৩৪৯ গুলির ঘটনা ঘটেছিল গত বছর।
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে ১৭ হাজার শিশু নিহত
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজায় হামলা চালিয়েই যাচ্ছে ইসরায়েল। ১৪ মাসের বেশি সময় ধরে চালানো হামলায় নিহতের সংখ্যা ৪৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। আহত হয়েছেন প্রায় ১ লাখ ৭ হাজার মানুষ। গাজায় যারা নিহত হয়েছেন তাদের ১৭ হাজারই শিশু। সোমবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত বছরের ৭ অক্টোবর শুরু হওয়া ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় উপত্যকায় এখন পর্যন্ত ৪৫ হাজার ২৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৬ হাজার ৯৬২ জন। টানা ১৪ মাস ধরে চলা ইসরায়েলের এই হামলায় উপত্যকায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৭ হাজারই শিশু বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নির্বিচার ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ১১ হাজার মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে, তারা ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছেন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর থেকে গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল।ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা থেকে বাদ যায়নি ২৩ লাখ বাসিন্দার এই উপত্যকার মসজিদ, বিদ্যালয়, হাসপাতাল, আবাসিক ভবন, এমনকি শরণার্থীশিবিরও। ইসরায়েলি আগ্রাসনে ২০ লাখের বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। ইসরায়েলি নির্বিচার হামলা গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের তথ্য মতে, ইসরায়েলের আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজাবাসী চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে।
মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও ভারতের ভূমিকা নিয়ে মুখ খুললেন প্রিয়াঙ্কা
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ইন্দিরা গান্ধীর সাহসিকতাপূর্ণ নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিজয়ী হয় বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের কংগ্রেসের নেত্রী ও ওয়ানাড়ের সাংসদ প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) ভারতের সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় দেওয়া ভাষণে তিনি এ মন্তব্য করেন। এর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বিজয়কে ‘ভারতীয় বিজয়’ বলে দাবি করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় শুরু হয়। সংসদের প্রথম বারের প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বিজয় দিবস উপলক্ষে বলতে উঠে সোমবার বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও ভারত সরকারের পক্ষ থেকে কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা নিয়ে মুখ খুললেন তিনি। সোমবার লোকসভায় দাঁড়িয়ে সেই বিজয়ের সেই ঐতিহাসিক মুহূর্ত স্মরণ করেন প্রিয়াঙ্কা। তিনি জানান, যে বীর সেনাদের অনমনীয় সংগ্রাম সেই জয় এনে দিয়েছিল, তাদের তিনি প্রণাম জানাচ্ছেন। সেই সময়ে ভারতের যে আমজনতা বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে দেশের সেনা ও নেতৃত্বের সঙ্গে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছিল, সেই মহান ভারতবাসীকে তিনি সম্মান জানাচ্ছেন। একই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাহসিকতাপূর্ণ নেতৃত্ব ও ভূমিকার কথা তুলে ধরেন তিনি। কথা প্রসঙ্গে ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকেও প্রণাম জানান তারই নাতনি প্রিয়াঙ্কা। তিনি মনে করিয়ে দেন, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ওপর যখন পশ্চিম পাকিস্তানের সেনারা নিদারুণ অত্যাচার চালাচ্ছে, তখন বাকি বিশ্ব শুধু দর্শকের ভূমিকা পালন করলেও (প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বাধীন) তৎকালীন ভারত সরকার ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বাংলাদেশকে রক্ষা করতে। প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতিতেও সাহস দেখিয়েছিলেন এবং এমন নেতৃত্ব প্রদর্শন করেছেন; যা দেশটিকে বিজয়ী করে।’ লোকসভায় ভাষণে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে দেশটির সেনাবাহিনীর সদরদপ্তরে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণের মুহূর্তের দৃশ্যের একটি চিত্রকর্ম সরিয়ে ফেলার অভিযোগ করেন তিনি। প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেন, ‘দ্বিতীয় বিষয় হল, পাকিস্তানি সেনারা ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করছেন- এমন একটি চিত্রকর্ম আজ সেনাবাহিনীর সদরদপ্তর থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এর আগে ভারতের সেনাবাহিনী বিষয়টি পরিষ্কার করে জানায়, চিফ অব আর্মি স্টাফ জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী আইকনিক ১৯৭১ সারেন্ডার পেইন্টিং নামের চিত্রকর্মটি নয়াদিল্লির মানেকশ সেন্টারে স্থাপন করেছেন। আইকনিক এই চিত্রকর্মটিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় ভারতীয় পাকিস্তানি সৈন্যদের আনুষ্ঠানিক আত্মসমর্পণের দৃশ্য তুলে ধরা হয়েছে। বিজয় দিবস উপলক্ষে ওই চিত্রকর্মটি মানেকশ সেন্টারে স্থাপন করেছে ভারতের সেনাবাহিনী।
ইসরাইলের হামলায় ১৪ মাসে গাজায় নিহত ছাড়াল ৪৫ হাজার
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলের বাহিনীর হামলায় নিহতের সংখ্যা ৪৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। আহত হয়েছেন এক লাখের বেশি মানুষ। সংবাদ আলজাজিরার। গাজায় ইসরাইলের হামলায় কমপক্ষে ৪৫ হাজার ২৮ জন নিহত এবং এক লাখ ছয় হাজার ৯৬২ জন আহত হয়েছেন।এদের মধ্যে সবশেষ গেল ২৪ ঘণ্টায় ৫২ ফিলিস্তিনি নিহত ও ২০৩ জন আহত হয়েছেন বলে যোগ করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।রোববার (১৫ ডিসেম্বর) গাজার বেইত হানুনের একটি শরণার্থী শিবিরে বিমান হামলা চালায় ইসরাইলের বাহিনী। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে শিশুসহ দুই সাংবাদিক রয়েছেন বলে জানা গেছে।রোববার গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরাইলের বর্বরতায় বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি সামরিক কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। ইসরাইলের দাবি, হামাসের অস্ত্র সংরক্ষণাগার ও হামলার পরিকল্পনার জন্য ব্যবহৃত একটি চিকিৎসালয় লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হয়।রোববার যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপ হয় বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর। গাজায় হামাসের হাতে আটক ইসরাইলি ও বিদেশি বন্দিদের মুক্তির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান নেতানিয়াহু।
ট্রুথ সোশ্যালের প্রধান নুনেজকে গোয়েন্দা পরামর্শক বোর্ডের চেয়ারম্যান করলেন ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনে হোয়াইট হাউসের গোয়েন্দা পরামর্শক বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাচ্ছেন ডেভিন নুনেজ। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) এই পদের জন্য ট্রাম্প তাকে মনোনীত করেছেন। ট্রাম্পের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালের প্রধানের দায়িত্বে রয়েছেন নুনেজ। ট্রাম্পের অনুগত হিসেবে পরিচিত তিনি। সংবাদ এএফপির। রিপাবলিকান নেতা ডেভিন নুনেজ ক্যালিফোর্নিয়া থেকে নির্বাচিত কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের সাবেক সদস্য। ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে কংগ্রেসের গোয়েন্দা কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। ট্রাম্প শনিবার ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে নুনেজকে এই পদের জন্য মনোনীত করার ঘোষণা দিয়ে জানান, নতুন পদের পাশাপাশি ট্রুথ সোশ্যালের প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব চালিয়ে যাবেন নুনেজ। ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচার দলের একজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রাশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ থাকার অভিযোগ তুলেছিল যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (এফবিআই)। নুনেজ এর তীব্র নিন্দা জানিয়ে তখন এফবিআইয়ের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ তুলেছিলেন। ২০১৮ সালে কংগ্রেসের গোয়েন্দা কমিটির চেয়ারম্যান থাকাকালে নুনেজ একটি বিতর্কিত মেমোতে বলেছিলেন, ‘ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এফবিআই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।’ ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগ নিয়ে সেই সময় তদন্ত করছিল এফবিআই। প্রসঙ্গত, বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্টস ইন্টেলিজেন্স অ্যাডভাইজারি বোর্ড (পিআইএবি) গঠন করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রেসিডেন্টকে পরামর্শ দেওয়া এই বোর্ডের অন্যতম দায়িত্ব। ‘যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন, এমন বিশিষ্ট নাগরিকদের নিয়ে এই বোর্ড গঠন করা হচ্ছে’ বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রে সড়ক দুর্ঘটনায় ভারতীয় শিক্ষার্থী নিহত, আহত দুই
যুক্তরাষ্ট্রে সড়ক দুর্ঘটনায় ভারতীয় এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুইজন। সংবাদ এনডিটিভির। শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসি রাজ্যের মেমফিস শহরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় শিক্ষার্থীদের বহরকারী গাড়িটির সঙ্গে অন্য একটি গাড়ির সংঘর্ষ হয়। নিহত শিক্ষার্থীর নাম নাগা শ্রী বন্দনা পরিমালা। তার বয়স ২৬ বছর। তিনি মেমফিস বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞানের স্নাতকোত্তর (এমএস) ডিগ্রির শিক্ষার্থী ছিলেন।পুলিশ জানায়, দুর্ঘটনার পর ওই শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।পরিমালার বাড়ি ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ রাজ্যের গুন্টুর জেলায়। তার বাবা একজন ব্যবসায়ী। পরিমালা ২০২২ সালে উচ্চ শিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। এ ঘটনায় অন্য দুই শিক্ষার্থী পবন ও নিকিতকেও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে অনুমান করা হচ্ছে যে, একটি গাড়ি (ব্রেক করতে) থামতে ব্যর্থ হয়ে অন্য গাড়িকে ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে শ্যালিকাকে নির্মমভাবে খুন, নিথর শরীরের তিন খণ্ড উদ্ধার
প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে শ্যালিকাকে নির্মমভাবে খুন করেছেন তার দুলাভাই। পরে ধড় থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে নিথর শরীর দুই খণ্ড করে সিটির বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেন তিনি। ভারতের পশ্চিববঙ্গের কলকাতার দক্ষিণের অভিজাত টালিগঞ্জ এলাকায় ঘটে যাওয়া এই রোমহর্ষক হত্যাকাণ্ড শহরজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। সংবাদ এনডিটিভি, লাইভমিন্টের। গেল ৬ ডিসেম্বর সকালে কলকাতার রিজেন্ট পার্ক এলাকায় একটি পলিথিন ব্যাগে কর্তিত মাথা পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। প্রথমে তারা ভেবেছিলেন এটি হয়তো পশুর দেহের অঙ্গ। কিন্তু, পরে পলিথিন খুলে ভেতরের ভয়াবহ দৃশ্যটি দেখতে পেয়ে তারা আতঁকে উঠেন। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দেয়া হলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বিচ্ছিন্ন মাথাটি উদ্ধার করে এবং সেখান থেকে শুরু হয় এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে তদন্ত কাজ। পুলিশি তদন্তে জানা গেছে, মাথায় আঘাতের চিহ্ন ও তাজা রক্তের উপস্থিতি ইঙ্গিত দেয় যে, ওই ৩০ বছর বয়সী ওই নারীকে হত্যার পর ১২ ঘণ্টার মধ্যেই মস্তকটি ওই স্থানে ফেলা হয়েছিল। সিসিটিভি ফুটেজ ও এলাকাবাসীর বয়ান সংগ্রহ করে পুলিশ জানতে পারে, ওই নারী টালিগঞ্জের একটি বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতেন এবং সম্প্রতি তার দুলাভাই আতিউর রহমান লস্কর তার প্রতি অস্বাভাবিক আগ্রহ দেখাচ্ছিলেন। তদন্তে জানা গেছে, পেশায় নির্মাণশ্রমিক লস্কর প্রায়ই ওই নারীর সঙ্গে একত্রে কর্মস্থলে যাতায়াত করতেন। দুই বছর আগে স্বামীর সঙ্গে বিয়েবিচ্ছেদ হওয়ার পর ওই নারী প্রতিদিন সকালে কাজে যেতেন ও সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরতেন। লস্কর এই সুযোগে তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিতেন। কিন্তু, ওই নারী স্পষ্টভাবে তাকে প্রত্যাখ্যান করেন। এ ছাড়া, তিনি লস্করের সঙ্গে যোগাযোগও বন্ধ করে দেন এবং তার ফোন নম্বর ব্লক করে দেন। এতে লস্কর অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন এবং এই ক্ষোভ থেকেই তিনি হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করেন। গেল বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কাজ শেষে ওই নারী বাড়ি ফেরার সময় আতিউর তাকে জোর করে একটি নির্মাণাধীন ভবনে নিয়ে যান। সেখানে তিনি প্রথমে শ্বাসরোধ করে তাকে খুন করেন। পরে নির্মমভাবে ধড় থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করেন এবং তার দেহ দুই খণ্ড করেন। এই খণ্ডগুলো তিনি আলাদা আলাদা স্থানে ফেলে দেন- মাথা একটি ময়লার ভাগাড়ে, ধড় আর নিম্নাংশ একটি পুকুরের কাছে।
সৌদিতে শৈত্যপ্রবাহ নিয়ে সতর্কবার্তা, হতে পারে তুষারপাত
মরুভূমির দেশ সৌদি আরবে শৈত্যপ্রবাহ ধেয়ে আসছে। তাপমাত্রা শূন্যের নিচে মাইনাস ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমনটি জানিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছে দেশটির আবহাওয়া দপ্তর, ন্যাশনাল সেন্টার ফর মেটেরোলজি (এনসিএম)। শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) প্রকাশিত পূর্বাভাসে এনসিএম জানিয়েছে, শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) অথবা রোববার থেকে সৌদিতে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে এবং তাপমাত্রা শূন্যের নিচে মাইনাস ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। খবর গালফ নিউজ। এনসিএমের মুখপাত্র হুসাইন আল কাহতানি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) থেকে সৌদি আরবের তাবুক, আল জাওয়াফ, উত্তরাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোতে কনকনে ঠান্ডা হাওয়া বইতে শুরু করবে। এর ফলে এসব অঞ্চলের তাপমাত্রা মাইনাস ৩ ডিগ্রিতে নেমে যেতে পারে।আগামী সোমবার ও মঙ্গলবার থেকে রাজধানী রিয়াদ, মক্কা, মদিনা, আল কাসেমসহ উপকূলীয় অঞ্চলেও শৈত্যপ্রবাহ শুরু হবে। তবে এসব এলাকায় তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকবে। এনসিএম সতর্ক করেছে, শীতল কনকনে বাতাস এবং ঝোড়ো হাওয়ার কারণে বিভিন্ন এলাকায় ঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া, শৈত্যপ্রবাহ চলাকালে জনগণকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। ঠান্ডা থেকে বাঁচতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সৌদি সরকারের নির্দেশনা মেনে চলতে জনগণকে আহ্বান করা হয়েছে।
প্রথম দফায় ১৮ হাজার ভারতীয় অভিবাসীকে ফেরত পাঠাবেন ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটের প্রচারে বার বার কড়া অভিবাসন নীতি প্রণয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর পক্ষে কড়া দাবি জানিয়ে আসছেন তিনি। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর এবার সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষায় তৎপর হলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর ফলে প্রায় ১৮ হাজার ভারতীয় সমস্যার মুখে পড়তে যাচ্ছে। আমেরিকার অভিবাসন এবং শুল্ক দফতর ইতিমধ্যেই প্রায় ১৫ লাখ অবৈধ অভিবাসীর তালিকা তৈরি করে তাদের নিজেদের দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে। আর সেই ‘প্রথম দফার তালিকা’য় রয়েছেন ১৭ হাজার ৯৪০ জন ভারতীয় নাগরিক। আগামী ২০ জানুয়ারি ট্রাম্প প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রত্যাবর্তনের প্রক্রিয়া শুরু হবে। প্রসঙ্গত, সরকারি তথ্য অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীর সংখ্যা প্রায় ৭ লাখ ২৫ হাজার। মেক্সিকো এবং এল সালভাডর ছাড়া অন্য কোনও দেশ থেকে এত অবৈধ অভিবাসী হয়নি আমেরিকায়। শুধু অবৈধ অভিবাসীরাই নন, ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হলে ঘোর অনিশ্চয়তার সামনে পড়বে আমেরিকার অন্তত আড়াই লাখ ভারতীয় বংশোদ্ভূতের ভবিষ্যৎ। আমেরিকার সংবিধানে বলা আছে, আমেরিকায় জন্মালেই সে আমেরিকার নাগরিক। জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের এই আইনটিই পাল্টে দিতে চাইছেন ট্রাম্প। আমেরিকার কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর, প্রেসিডেন্ট হয়েই একটি ‘এক্সিকিউটিভ অর্ডার’-এ সই করবেন ট্রাম্প। সেই নির্দেশিকায় বলা হবে, আমেরিকায় যে সব অভিবাসী সন্তান জন্মেছে, তারা ‘জন্মসূত্রে’ আর আমেরিকান নাগরিক থাকবে না। নতুন আইনে মা বা বাবার মধ্যে অন্তত একজন আমেরিকার নাগরিক হলে তবেই সন্তান সে দেশে জন্মালে ‘জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব’ পাবে। পাশাপাশি, ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির সমর্থক ট্রাম্পের নিশানায় রয়েছেন লাখ লাখ মানুষ যারা আইনসিদ্ধ ভাবেই, কোনো না কোনো ভিসা নিয়ে আমেরিকায় বসবাস এবং কাজ করছেন। ট্রাম্পের দাবি, ওই আইনি অভিবাসীরা আদতে আমেরিকার নাগরিকদের কাজের সুযোগ কেড়ে নিচ্ছেন।
এবিসি নিউজের বিরুদ্ধে মানহানি মামলায় দেড় কোটি ডলার পাচ্ছেন ট্রাম্প
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দায়ের করা মানহানির মামলা মীমাংসা করতে ১৫ মিলিয়ন বা দেড় কোটি ডলার পরিশোধে সম্মত হয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজ। প্রতিষ্ঠানটির নামকরা উপস্থাপক জর্জ স্টেফানোপোলাস প্রমাণ ছাড়া ট্রাম্পকে ধর্ষণের জন্য অভিযুক্ত বলে মন্তব্য করার খেসারত দিতে হলো গণমাধ্যমটিকে। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। মামলায় অভিযোগ ছিল, গণমাধ্যমটির তারকা উপস্থাপক ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়েছিলেন, বলেছিলেন তিনি ‘ধর্ষণের জন্য দায়ী।’ জর্জ স্টেফানোপোলাস চলতি বছরের ১০ মার্চ সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময় বারবার এই মন্তব্য করেছেন, যেখানে তিনি এক কংগ্রেসওম্যানকে প্রশ্ন করছিলেন, কেন তিনি ট্রাম্পকে সমর্থন করেন। গত বছর এক দেওয়ানি মামলায়, জুরি বলেছিল যে ট্রাম্প ‘যৌন হয়রানির’ জন্য দায়ী. কিন্তু ধর্ষণের জন্য দায়ী নন। কারণ নিউ ইয়র্ক আইনে যৌন নির্যাতনের আলাদা সংজ্ঞা রয়েছে। শনিবারের এই মীমাংসার অংশ হিসাবে এবিসি একটি বিবৃতি প্রকাশ করবে, যেখানে স্টেফানোপোলাসের মন্তব্যের জন্য ‘অনুতাপ’ প্রকাশ করা হবে। বিষয়টি নিয়ে প্রথম রিপোর্ট করেছে ফক্স নিউজ ডিজিটাল। সমঝোতা অনুযায়ী, এবিসি নিউজ একটি ‘প্রেসিডেন্সিয়াল ফাউন্ডেশন এবং মিউজিয়াম’ প্রতিষ্ঠার জন্য ১৫ মিলিয়ন ডলার দেবে, যা মামলার বাদী ট্রাম্প বা তার পক্ষে প্রতিষ্ঠা করা হবে, যেমনটা আগের মার্কিন প্রেসিডেন্টরা করেছিলেন। এছাড়া আও এক মিলিয়ন ডলার দেবে ট্রাম্পের আইনগত খরচের জন্য। মীমাংসার শর্তানুসারে, এবিসি চলতি বছরের ১০ মার্চ অনলাইনে প্রকাশিত তাদের প্রতিবেদনের নিচে একটি এডিটরের নোট যোগ করবে। এতে লেখা থাকবে: ‘এবিসি নিউজ এবং জর্জ স্টেফানোপোলাস প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্পর্কে ১০ মার্চ ২০২৪ এবিসি'র 'দিস উইক' অনুষ্ঠানে জর্জ স্টেফানোপোলাসের সাথে প্রতিনিধি ন্যান্সি ম্যাসের সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পকে নিয়ে করা মন্তব্যের জন্য অনুতপ্ত। এবিসি নিউজের একজন মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেছেন, কোম্পানি ‘খুশি যে উভয়পক্ষ আদালতে দাখিল করা শর্ত অনুযায়ী মামলা মিটমাট করেছে।’ ২০২৩ সালে নিউইয়র্কের এক দেওয়ানি আদালত অভিযোগ তুলেছিল যে, ট্রাম্প ১৯৯৬ সালে একটি দোকানের ড্রেসিং রুমে ই. জিন ক্যারলকে যৌন নির্যাতন করেছিলেন। ওই ম্যাগাজিনের কলামিস্টকে মানহানির জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। বিচারক লুইস ক্যাপলান বলেন, জুরির সিদ্ধান্ত ছিল যে ক্যারল প্রমাণ করতে পারেননি যে ট্রাম্প তাকে ধর্ষণ করেছিলেন। মূলত নিউইয়র্ক দণ্ডবিধিতে ধর্ষণের নির্দিষ্ট সংজ্ঞা রয়েছে। বিচারক ক্যাপলান আরও বলেন, সাধারণ ভাষায়, অভিধানে এবং অন্য আইনে ধর্ষণের সংজ্ঞা যেভাবে দেওয়া হয়েছে সেই তুলনায় নিউইয়র্কের আইনে এর সংজ্ঞা ‘অনেক বেশি সংকীর্ণ।’ পৃথক আরেকটি মামলায়, একই বিচারকের অধীনে, জুরি ক্যারলের বিরুদ্ধে মানহানিকর মন্তব্যের জন্য, ট্রাম্পকে ৮৩ দশমিক তিন মিলিয়ন দিতে বলেছিল। ১০ মার্চের ওই টেলিভিশন অনুষ্ঠানের সম্প্রচারে, স্টেফানোপোলাস দক্ষিণ ক্যারোলিনার রিপাবলিকান কংগ্রেসওম্যান ন্যান্সি ম্যাসকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তিনি কীভাবে ট্রাম্পকে সমর্থন করতে পারেন। উপস্থাপন বলেছিলেন, ‘বিচারক এবং দুটি পৃথক জুরি ট্রাম্পকে ধর্ষণের জন্য দায়ী বলেছে।’ যে তথ্য ভুল ছিল। স্টেফানোপোলাসের পুরো অনুষ্ঠানজুড়ে তার এই কথা অন্তত ১০ বার বলেন। রায়ের আগে, একজন ফেডারেল ম্যাজিস্ট্রেট বিচারক ট্রাম্প এবং স্টেফানোপোলাসকে নির্দেশ দিয়েছিলেন পরের সপ্তাহে শপথ নিয়ে প্রমাণ দিতে। ট্রাম্প কমলা হ্যারিসের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকার নিয়ে ‘প্রতারণামূলক আচরণ’ করার জন্য বিবিসির মার্কিন সম্প্রচার অংশীদার সিবিএস-এর বিরুদ্ধেও মামলা করেছেন। ২০২৩ সালে সিএনএনের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের মানহানি মামলা খারিজ করে দেন এক বিচারক। ওই মামলায় ট্রাম্প অভিযোগ করেছিলেন, নেটওয়ার্কটি তাকে অ্যাডলফ হিটলারের সঙ্গে তুলনা করেছিল। তিনি নিউ ইয়র্ক টাইমস এবং ওয়াশিংটন পোস্টের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। যদিও মামলাগুলো পরে খারিজ হয়ে যায়।
ইসরায়েলি বর্বরতায় প্রাণ গেল আরও ৫৫ ফিলিস্তিনির
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় থামছেই না ইসরায়েলি বর্বরতা। দখলদার দেশটির হামলায় গাজায় আরও ৫৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে ১৪ মাসেরও বেশি সময় ধরে উপত্যকাটিতে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের মোট সংখ্যা ৪৪ হাজার ৯০০ ছাড়িয়েছে। মোট আহতের সংখ্যাটাও লাখ পেরিয়েছে। বার্তাসংস্থা আনাদোলুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের চলমান হামলায় গাজায় আরও ৫৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১৭০ জন। নতুন মৃতদের নিয়ে গত বছরের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪ হাজার ৯৩০ জনে। আহত হয়েছেন এক লাখ ৬ হাজার ৬২৪ জন। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় এখনো অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকাজুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর থেকে গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থীশিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েলি আগ্রাসনে ২০ লাখের বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। ইসরায়েলি নির্বিচার হামলা গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের তথ্য মতে, ইসরায়েলের আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজাবাসী চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে।