
নেপালের দায়িত্ব নিলেন বাংলাদেশের সাবেক কোচ
বাংলাদেশের ক্রিকেটের সাবেক কোচ স্টুয়ার্ট ল নতুন ঠিকানা খুঁজে নিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ান এই কোচ নিয়োগ দিয়েছে নেপাল। ল-এর অধীনেই ২০১২ সালে প্রথম বারের মতো এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলেছিল বাংলাদেশ। গত ফেব্রুয়ারিতে নেপালের প্রধান কোচ হিসেবে মন্টি দেশাইয়ের মেয়াদ শেষ হয়েছে। তারই স্থলাভিষিক্ত হলেন ৫৬ বছর বয়সি স্টুয়ার্ট ল। সাবেক এই অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডারকে আগামী ২ বছরের জন্য নিয়োগ দিয়েছে নেপাল। দেশটির কোচিং প্যানেলে নিযুক্ত হওয়ার আগে সবশেষ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোচ ছিলেন তিনি। ক্রিকেট কোচিংয়ে বেশ অভিজ্ঞ ল। অস্ট্রেলিয়ায় কোচিং করানোর অভিজ্ঞতা আছে তার। পরবর্তী ২০১২ সালে বাংলাদেশ কোচিং করিয়েছেন। ব্যাটিং কোচ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। কাজ করেছেন শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলেও। সবশেষ ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কোচ হন ল। তার অধীনে ২০২৪ টি-২০ বিশ্বকাপে দারুণ সাফল্য পায় যুক্তরাষ্ট্র। পাকিস্তানকে হারিয়ে বিশ্বকাপের সুপার এইটে খেলে ইতিহাস রচনা করে তার দল। ল-এর আগে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশকেও হারায় যুক্তরাষ্ট্র। তবে বিশ্বকাপের পর চাকরি হারাতে হয় অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৫৪টি ওয়ানডে এবং একটি টেস্ট খেলা এই কোচকে। আগামী জুনে বিশ্বকাপ লীগ ২ ফিক্সচারের অংশ হিসেবে স্কটল্যান্ডে একটি ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলবে নেপাল। সেটাই হবে নেপালের হয়ে স্টুয়ার্ট ল'র প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট। বিশ্বকাপ লীগ ২ টেবিলে এখন নেপালের অবস্থান দ্বিতীয় স্থানে।

মেসিকে নিয়ে সুখবর দিলেন মায়ামি কোচ
চোটের কারণে উরুগুয়ে ও ব্রাজিলের বিপক্ষে ম্যাচ দুটির স্কোয়াডে তিনি ছিলেন না লিওনেল মেসি। তবে ইন্টার মায়ামির হয়ে মাঠে ফেরার কাছাকাছি আছেন তিনি। এরই মধ্যে মায়ামির অনুশীলনেও ফিরেছেন। শনিবার তাদের লড়াই ফিলাডেলফিয়া ইউনিয়নের সঙ্গে। ম্যাচের আগে আশার কথা শোনালেন মায়ামির কোচ হাভিয়ের মাসচেরানো। ‘লিও ভালো আছে, ঠিকভাবেই সব কিছু করছে। অস্বাভাবিক কিছু না হলে ম্যাচের রোস্টারে তার নাম থাকবে।’ শুরুর একাদশে মেসিকে নামানো হবে কি না, সেটি অবশ্য নিশ্চিত করেননি কোচ। সর্বশেষ গত ১৬ মার্চ আটলান্টা ইউনাইটেডের বিপক্ষে ইন্টার মায়ামির ২-১ গোলের জয়ের ম্যাচে খেলেছিলেন মেসি। এর পর থেকে আর মাঠে দেখা যায়নি তাকে। মেজর লিগ সকারে চার ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে আপাতত পয়েন্ট তালিকার তিনে আছে মায়ামি। পাঁচ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে ফিলাডেলফিয়া।

পাকিস্তানের ২২ রান তুলতে শেষ ৭ উইকেট, নাটকীয় হার
‘আনপ্রেডিক্টেবল’ পাকিস্তান আবারও সেই পরিচিত রূপে! জয়ের পথে থেকেও হঠাৎ পথ হারানোর ঘটনা তাদের ক্রিকেটে নতুন কিছু নয়। নেপিয়ারে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচেও ঘটল সেই চেনা কাহিনি। শেষ ২২ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ৭৩ রানের ব্যবধানে হেরে গেল পাকিস্তান। প্রথমে ব্যাট করে নিউজিল্যান্ড ৯ উইকেট হারিয়ে তোলে ৩৪৪ রানের বিশাল সংগ্রহ। জবাবে পাকিস্তান মাত্র ৩ উইকেট হারিয়েই ২৪৯ রান করে ফেলে। শেষ ৬৯ বলে ৭ উইকেট হাতে রেখে প্রয়োজন ছিল ৯৬ রান। তবে সেখান থেকেই ধসে পড়ে পাকিস্তান ব্যাটিং লাইনআপ। নির্ধারিত ৫০ ওভারের ৩৫ বল বাকি থাকতেই অলআউট হয় ২৭১ রানে। টস জিতে কিউইদের ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিলেন পাকিস্তান অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান। ৫০ রানের মধ্যেই ৩ উইকেট তুলে নেয় পাকিস্তান, কিন্তু সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ায় নিউজিল্যান্ড। মার্ক চাপম্যান ও ড্যারিল মিচেল গড়েন ১৯৯ রানের রেকর্ড জুটি, যা পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডেতে যেকোনো উইকেটে সর্বোচ্চ। মিচেল ৮৪ বলে ৭৬ রান করে ফিরলেও চাপম্যান ছিলেন দুর্দান্ত। ১৩২ রানের ইনিংসে ১৩টি চার ও ৬টি ছক্কা হাঁকান তিনি। শেষ দিকে অভিষিক্ত মুহাম্মদ আব্বাস মাত্র ২৬ বলে ৫২ রানের ক্যামিও খেললে ৩৪৪ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায় কিউইরা। পাকিস্তানের বোলারদের মধ্যে ইরফান খান ৩ উইকেট নিলেও ৫ ওভারে দেন ৫১ রান। দুইটি করে উইকেট নিয়েছেন আকিফ জাভেদ ও হারিস রউফ। এদিন অতিরিক্ত থেকেই পাকিস্তান দেয় ৪৩ রান, যা আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে তৃতীয় সর্বোচ্চ। ৩৪৫ রানের লক্ষ্যে নেমে পাকিস্তানকে ভালো শুরু এনে দেন উসমান খান ও আবদুল্লাহ শফিক। উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৮৩ রান। তবে ৮৮ রানের মধ্যেই দুজনই ফিরলে কিছুটা চাপে পড়ে দল। এরপর বাবর আজম ও অধিনায়ক রিজওয়ান মিলে গড়েন ৭৬ রানের জুটি। ১৬৪ রানে রিজওয়ান আউট হলেও পাকিস্তানের জয়ের পথে বড় ধাক্কা ছিল না। বাবরের সঙ্গে ৫৯ বলে ৮৫ রানের ঝড়ো জুটি গড়ে দলকে এগিয়ে নেন সালমান আলী আগা। কিন্তু ২৪৯ রানে বাবর আউট হওয়ার পরই নামে পাকিস্তানের ইনিংসে ধস। শেষ ২২ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৭১ রানে অলআউট হয় তারা। শেষ ৬ ব্যাটারের মধ্যে তিনজন শূন্য এবং তিনজন মাত্র ১ রান করে সাজঘরে ফেরেন। পাকিস্তান তাই জেতার মতো পরিস্থিতিতে থেকেও ম্যাচ হেরে গেল ৭৩ রানের ব্যবধানে। এই হারে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে গেল তারা।

শেফিল্ডে ফিরেই আলো ছড়ালেন হামজা
ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের হয়ে অভিষেকে মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন হামজা চৌধুরী। জয় যদিও ধরা দেয়নি। জাতীয় দলে ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়লেও ইংলিশ ক্লাব শেফিল্ড ইউনাইটেডে ফিরে জয়ের দেখা পেয়েছেন তিনি। চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচে কভেন্ট্রিকে ৩-১ গোলে হারিয়ে দলকে টেবিলের শীর্ষে তুলতে অবদান রেখেছেন। শেফিল্ডের পয়েন্ট এখন ৩৯ ম্যাচে ৮৩। এদিন মিডফিল্ডে যথারীতি আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছেন হামজা। দেরি করে যখন মাঠ ছাড়ছিলেন, তার নৈপুণ্যে মুগ্ধ স্বাগতিক দর্শকরা দাঁড়িয়ে অভিবাদনও জানিয়েছেন। ৩০ হাজার ভক্তের সামনে ব্লেডসরা শুরু থেকেই আলো ছড়িয়ে খেলেছে। ১৯ মিনিটে অগ্রগামিতা এনে দেন গুস্তাভো হ্যামার। ঘণ্টা খানেকের মাথায় ব্যবধান বাড়ান টাইরেসে ক্যাম্পবেল। মিডফিল্ডে একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল হামজার। ডুয়েলগুলো তার আধিপত্যেই জেতা সম্ভব হয়েছে। তাছাড়া প্রতিপক্ষ যখন আক্রমণের জন্য হানা দিচ্ছিলেন, বাধা দিয়ে সেসব পণ্ড করে দিচ্ছিলেন। ম্যাচের শুরুতেই তাকে নিয়ে ধারাভাষ্যকার মন্তব্য করে বলেছেন, ‘হামজা মিডফিল্ডে তার খেলা অব্যাহত রেখেছেন। অথচ আন্তর্জাতিক বিরতিতে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ খেলে দীর্ঘ ফ্লাইট শেষে ফিরেছেন তিনি। তার সংবর্ধনাটা হয়েছে নায়কের মতো।’ ঠিক তখনই হামজা নিখুঁত ট্যাকলে প্রতিপক্ষের আক্রমণ নস্যাৎ করেছেন। যার ফলে মাঠে তার উপস্থিতি তাৎক্ষণিকভাবে অনুভূত হয়েছে। দ্বিতীয়ার্ধে শেফিল্ড আরও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে খেলেছে। ৬২ মিনিটে প্রতি আক্রমণ থেকে ব্রেরেটন ডিয়াজের অ্যাসিস্ট থেকে স্কোর ৩-০ করেছেন রিয়ান রুস্টার। পুরো ম্যাচে হামজা তার উপস্থিতির জানান দিয়ে মুগ্ধ করেছেন। নিজের রক্ষণাত্মক দৃঢ়তা ও কৌশলগত সচেতনতায় নজর কেড়েছেন। তার পর তো লং রেঞ্জের শট নিয়ে গোল করার কাছেও চলে গিয়েছিলেন। সেটা দারুণভাবে সেভ করে গোল হতে দেননি প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক কলিন্স। হামজা ছিলেন এদিন শেফিল্ডের অন্যতম সেরা পারফর্মার। দারুণ নৈপুণ্যে ১০ এর মধ্যে ৭.৪ রেটিং পান তিনি। মাঠে ৩টি মধ্যে ডুয়েল জিতেছেন ২টি, বাধা প্রদান করেছেন ৪বার, ট্যাকল ছিল দুটি। ব্লকও করেছেন একটি শট। মাঝঝমাঠে তার উপস্থিতি মূলত স্থিতিশীলতা এনে দিয়েছে এবং প্রতিপক্ষের আক্রমণ নস্যাৎ করে দেওয়ার দক্ষতা ইউনাইটেডকে দীর্ঘ সময় ধরে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে সাহায্য করেছে। শেষ দিকে তার অনুপস্থিতি হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে শেফিল্ড। ৮৯ মিনিটে বদলি হয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। তখন অবশ্য দর্শকরা তাকে তুমুল করতালিতে বিদায় জানিয়েছেন। হামজার মাঠ ছেড়ে যাওয়ার পরই অতিরিক্ত সময়ে একটি গোল হজম করে ব্লেডস। স্টপেজ টাইমে গোল করেন বদলি জ্যাক রুডোনি। অথচ এই ম্যাচে তার খেলা হবে কিনা সেটা নিয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত ছিলেন না শেফিল্ড ইউনাইটেড কোচ ক্রিস ওয়াইল্ডার। তিনি স্বীকার করেন, হামজা ম্যাচের আগে কোথায় রয়েছেন, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত নন। কারণ হামজা মাত্রই বুধবার রাতে বাংলাদেশ থেকে ফিরেছিলেন।

চেন্নাইকে উড়িয়ে টানা দ্বিতীয় জয় বেঙ্গালুরুর
লড়াইটা ছিল দুই বড় তারকা ধোনি-কোহলির। যে লড়াইয়ে শেষ হাসি হাসলেন কোহলি। আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংসকে তাদের ঘরের মাঠেই ৫০ রানের বড় ব্যবধানে হারালো রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। এ নিয়ে টানা দুই ম্যাচে জয় পেলো বেঙ্গালুরু। তারাই এখন শীর্ষে।সমান ম্যাচে চেন্নাইয়ের জয় একটি, হার একটি। তারা সাত নম্বরে। চেন্নাইয়ের সামনে লক্ষ্য ছিল চ্যালেঞ্জিং, ১৯৭ রানের। ৮ উইকেটে ১৪৬ রানেই থেমেছে রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের দল। ২৬ রানে ৩টি আর ৯৯ রানে ৭ উইকেট হারানোর পর ধোনি ১৬ বলে হার না মানা ৩০ করলেও পরাজয়ের ব্যবধান কমাতে পারেনি চেন্নাই। জস হ্যাজেলউড ২১ রানে নেন ৩টি উইকেট। এর আগে ৭ উইকেটে ১৯৬ রানের সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছিল বেঙ্গালুরু। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ফিল সল্টের মারমুখী ব্যাটিংয়ে ভালো সূচনা পায় তারা। ১৬ বলে ৩২ করে আউট হন ফিল সল্ট। ৫ ওভারে ৪৫ রান তোলে বেঙ্গালুরু। এরপর ১৪ বলে ২৭ রানের ঝড় তোলেন দেবদূত পাডিক্কেল। বিরাট কোহলি অবশ্য টি-টোয়েন্টির ব্যাটিংটা করতে পারেননি। ৩০ বলে খেলেন ৩১ রানের ইনিংস। এরপর হাল ধরেন অধিনায়ক রজত পাতিদার। ৩২ বলে ৫১ রান করেন তিনি। শেষদিকে টিম ডেভিড ৮ বলে ১ চার আর ৩ ছক্কায় ২২ রানের ক্যামিওতে বেঙ্গালুরুকে দুইশর কাছাকাছি পৌঁছে দেন। নুর আহমেদ ৩৬ রানে নেন ৩টি উইকেট।

গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দুঃসংবাদ পেল বার্সেলোনা
এ যেন মরার ওপর খাড়ার ঘা! চোটের কারণে অন্তত তিন সপ্তাহের জন্য মাঠের বাইরে ছিটকে গেছেন বার্সেলোনার স্প্যানিশ উইঙ্গার দানি ওলমো। স্পেন ও ইউরোপিয় ক্লাব ফুটবলের ব্যস্ত সূচির কারণে কাতালান ক্লাবটি চরম বিরক্ত। আগামী ২৫ দিনে তাদের ৯টি ম্যাচ খেলতে হবে। এরই মাঝে ওলমোর ইনজুরি কাতালানদের জন্য বড় ধাক্কা হয়েই এসেছে। আজ (শুক্রবার) এক বিবৃতিতে ২৬ বছর বয়সী এই তারকার চোটের কথা নিশ্চিত করেছে বার্সা। গতকাল ওসাসুনার বিপক্ষে ৩-০ গোলে জয়ের ম্যাচেই ওলমোট চোট নিয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন। পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষার করে জানা গেছে, ডান পায়ের অ্যাডাক্টর (ঊরুর) পেশিতে চোট পেয়েছেন তিনি। যা থেকে তার সেরে উঠতে অন্তত তিন সপ্তাহ লাগবে। যা মৌসুমের গুরুত্বপূর্ণ এই সময়ে কোচ হ্যান্সি ফ্লিকের জন্য দুশ্চিন্তার বড় কারণ! লা লিগায় গতকাল বার্সেলোনা ঘরের মাঠ অলিম্পিক স্টেডিয়ামে ওসাসুনাকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল। তাদের পক্ষে প্রথমার্ধে ফেরান তোরেস প্রথম গোল করেন, পরবর্তীতে সফল স্পট কিকে পেনাল্টিতে ব্যবধান বাড়ান ওলমো। দ্বিতীয়ার্ধে বদলি নেমে কাতালানদের বড় জয় নিশ্চিত করেন রবার্ট লেভানদেভস্কি। যদিও স্বস্তি নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি বার্সা। কারণ গোল করার মিনিট সাতেক পরই চোট নিয়ে উঠে যেতে হয় ওলমোকে। যা তাকে সবমিলিয়ে অন্তত ৫টি ম্যাচের জন্য মাঠের বাইরে ছিটকে দিয়েছে। ওলমো মাঠে ফেরার আগে বার্সেলোনা লা লিগায় তিনটি এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কোয়ার্টারের প্রথম লেগ খেলার কথা রয়েছে। যেখানে ৯ এপ্রিল তাদের প্রতিপক্ষ জার্মান ক্লাব বরুসিয়া ডর্টমুন্ড। এমনকি তাদের বিপক্ষে ১৫ এপ্রিল ফিরতি লেগেও ওলমোকে পাওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে। এ ছাড়া স্প্যানিশ এই উইঙ্গার কোপা দেল রের সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে থাকবেন দর্শক সারিতে। ওলমো গত মৌসুম শেষে আরবি লাইপজিগ থেকে বার্সেলোনাতে যোগ দেওয়ার পর ২৮ ম্যাচে ৮ গোলের পাশাপাশি আরও পাঁচটিতে অবদান রেখেছেন। যদিও তাকে পুরো সময় মাঠে খেলতে দেখা যায় না। তবে এটি ঠিক যে, মিডফিল্ডের পাশাপাশি ফরোয়ার্ড লাইনে দলের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তার যোগান দিয়ে আসছেন এই তরুণ তারকা। আগামী ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত পরবর্তী ২৫ দিনে বার্সাকে ৯টি ম্যাচ খেলতে হবে। যে কারণে বার্সার জার্মান কোচ ফ্লিক খুবই ক্ষুব্ধ ও বিরক্ত। ১০ এপ্রিল চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কোয়ার্টার-ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে বার্সা মুখোমুখি হবে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের। তার দুদিন পরই ম্যাচ রয়েছে স্প্যানিশ লিগে। লা লিগার ম্যাচের সময় নির্ধারণ নিয়ে প্রশ্ন তুলে ফ্লিক বলেন, ‘লেগানেসের বিপক্ষে রাত ৯টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ২টায়) ম্যাচ খেলার বিষয়টি নিয়েও আমরা কথা বলতে পারি। প্রতিপক্ষের মাঠে ম্যাচ থাকলে সবসময় শুরুর সময়টা রাত ৯টা হয়, সেক্ষেত্রে আমাদের ফিরতে অনেক রাত হয়ে যায়। খেলোয়াড়দের রিকভারির জন্য ব্যাপারটা মোটেও ভালো কিছু নয়।’

স্টাফদের পকেটে ঈদ বোনাস, বেতন পাননি নারী ফুটবলার-রেফারিরা
ঈদুল ফিতরের আগে গতকাল বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) ছিল শেষ কর্মদিবস। প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই ঈদের আগে কর্মীদের বেতন-বোনাস পরিশোধের প্রাণান্ত চেষ্টা করে। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের প্রশাসনিক স্টাফরা বেতন বোনাস ঠিকভাবে পেলেও ফুটবল ম্যাচ পরিচালনাকারী রেফারি এবং বাফুফের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ নারী ফুটবলাররা ঈদের আগে তাদের বেতন পাননি। ঈদের আগে প্রাপ্য সম্মানী পাননি নারী ফুটবলাররা। গত ১০ ফেব্রুয়ারি ৩৬ জন নারী ফুটবলারদের সঙ্গে চুক্তি করেছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। সাবিনা-কৃষ্ণারা ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলারকে বিদ্রোহ করায় তারা চুক্তি করেননি। আফিদাদের পাশাপাশি বাফুফে উঠতি ফুটবলারদেরও চুক্তির আওতায় এনেছে। সেই চুক্তির এক মাস পার হলেও ঈদের আগে তারা বেতন পাননি। বাফুফের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার নারী ফুটবলারদের সম্মানী সম্পর্কে বলেন, ‘চুক্তির পরই সবাইকে (যারা নতুন) ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করতে বলা হয়েছিল। অনেকে অ্যাকাউন্ট করেনি। এ জন্য আমরা তাদের সম্মানী দিতে পারিনি। ঈদের পর সবাইকে একসঙ্গে দেওয়া হবে। তাদের জন্য আমাদের আর্থিক ব্যবস্থাপনা আগে থেকেই প্রস্তত রয়েছে।’ সাধারণ সম্পাদক উঠতি ফুটবলারদের ওপর দায় চাপালেও ফেডারেশনেরও সদিচ্ছার অভাব স্পষ্ট। বাফুফের ভবন ব্যাংক-বাণিজ্য পাড়া মতিঝিলেই। নারী ফুটবলাররা বাফুফে ভবনেই থাকেন। বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের স্পন্সর ঢাকা ব্যাংক। খুব সহজেই অতি স্বল্প সময়ে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা সম্ভব। সাফ চ্যাম্পিয়ন নারী দলকে বাফুফে দেড় কোটি টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। সেই পুরস্কারের অর্থ ফেডারেশন কর্তাদেরই দেওয়ার কথা। সাড়ে চার মাস পেরিয়ে গেলেও ফেডারেশন কর্তারা সেটা যেন ভুলেই গেছেন। এদিকে, রেফারিদের সম্মানী বকেয়া বাংলাদেশের ফুটবলের পুরনো সংস্কৃতি। তাবিথ আউয়ালের নতুন কমিটি দায়িত্ব নেওয়ার সময় রেফারিদের বকেয়া ছিল কোটি টাকার ওপর। পুরনো বোঝা ধীরে ধীরে কমানোর প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি চলমান বিলগুলো দ্রুত পরিশোধের অঙ্গীকার ছিল। চলতি মৌসুম অর্ধেকের বেশি শেষ হলেও রেফারিরা মাত্র লীগের পাঁচ রাউন্ডের সম্মানী পেয়েছেন গত মাসের শেষ দিকে। রেফারিরা ঈদের আগে লিগে অন্তত প্রথম লেগের বাকি চার ম্যাচের সম্মানী প্রত্যাশা করেছিলেন। ফেডারেশন রেফারিদের সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হয়ে একাধিক রেফারি বলেন,‘প্রথম লেগ শেষ হয়েছে এক মাসের বেশি। আমাদের সেই অর্থ ঈদের আগে দেয়নি শুনেছি তারা নাকি স্পন্সর থেকে অর্থ পায়নি। আমরা ফেডারেশনের কাছে অনেক টাকা পাওনা। ঈদের আগে অন্তত আমাদের কিছু দেয়া উচিত ছিল। ’ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার ঈদের পর পুনরায় লিগ শুরু হওয়ার আগে রেফারিদের সম্মানী দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন। ফুটবলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ রেফারিং। বাফুফের নতুন কমিটি রেফারি নিয়ে তেমন কোনো ভাবনা দৃশ্যমান নয়। চলতি মৌসুমের অর্ধেক শেষ হলেও এখনো বাফুফে রেফারিজ কমিটিই করতে পারেনি। নির্বাচনের পাঁচ মাস পেরিয়ে যাওয়ার পর ২০ মার্চ নির্বাহী সভায় রেফারিজ কমিটি গঠন নিয়ে আলোচ্যসূচি থাকলেও ইফতারের আগে সময়স্বল্পতা আর এটি নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। রেফারিজ কমিটির চেয়ারম্যান না থাকায় রেফারিদের প্রকৃত অভিভাবকও যেন নেই। তাবিথ আউয়ালের নেতৃত্বে নতুন কমিটি আসার পরপরই সম্মানী বৃদ্ধির দাবিতে রেফারিরা চিঠি দিয়েছিলেন। সেই চিঠি নির্বাহী কমিটির সভায় আলোচনার ভিত্তিতে সম্মানী বাড়ানোর পাশাপাশি ফুটবলার তৈরির মতো রেফারি তৈরির জন্য একাডেমির সিদ্ধান্ত হয়। তিন মাস পেরিয়ে গেলেও সেই একাডেমির কোনো কার্যক্রম দৃশ্যত হয়নি।

হাসপাতাল ছেড়ে বাসায় ফিরলেন তামিম
বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম সফল ব্যাটার তামিম ইকবাল অবশেষে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন! গত কয়েক দিনের দুঃস্বপ্নের পর স্বস্তির খবর- শুক্রবার (২৮ মার্চ) ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে রিলিজ পেয়ে বাসায় ফিরেছেন দেশের সাবেক অধিনায়ক। তবে তার মাঠে ফেরার বিষয়ে এখনো অনিশ্চয়তা রয়েছে। গত সোমবার (২৪ মার্চ) ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল) চলাকালীন হঠাৎ ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক হয় তামিমের। দ্রুতই তাকে সাভারের কেপিজে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তার হার্টে রিং পরানো হয়। সংকটময় মুহূর্তে সিপিআর ও ডিসি শক দেওয়া হয়েছিল তাকে, যা তার জীবন বাঁচানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সাভারের কেপিজে হাসপাতালের সিসিইউতে কয়েক দিন থাকার পর বুধবার (২৬ মার্চ) তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয় এবং এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে থাকার পর বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তামিম এখন অনেকটাই সুস্থ। তবে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে হলে জীবনযাত্রায় বড় পরিবর্তন আনতে হবে। বাসায় ফিরলেও এখনই খেলার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ৩-৪ মাস পর মেডিকেল বোর্ডের বৈঠকে পর্যালোচনা করে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে। এর মানে, চলমান ডিপিএলে মোহামেডানের হয়ে আর মাঠে ফেরা সম্ভব নয় তামিমের জন্য। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে ইতোমধ্যে অবসর নেওয়া তামিম ইকবাল ঘরোয়া ক্রিকেট চালিয়ে যাচ্ছিলেন। বিপিএলে ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক হিসেবে টানা দুই বার শিরোপা জিতেছেন। এবার ডিপিএলে মোহামেডানের হয়ে মাঠে নামলেও আকস্মিক অসুস্থতার কারণে সিজনের বাকি অংশে খেলতে পারছেন না।

ওসাসুনাকে হারিয়ে ব্যবধান বাড়াল বার্সেলোনা
নিয়মিত বেশকিছু খেলোয়াড়কে বাদ দিয়েও লিগে ওসাসুনার বিপক্ষে সহজ জয় পেয়েছে বার্সেলোনা। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) ঘরের মাঠে ৩-০ গোলে জয় পেয়েছে কাতালান ক্লাবটি। এই জয়ের ফলে রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে ব্যবধান আরও বাড়াল ফ্লিকের দল। ওসাসুনার বিপক্ষে পুরো ম্যাচ নিয়ন্ত্রণ করেছে বার্সেলোনা। প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে থাকা বার্সা প্রথম হাফেই দুই গোল আদায় করে নেয়। ১১তম মিনিটে ডি ইয়ংয়ের দারুণ এক পাস পেয়ে চলতি বলেই ক্রস করেন আলেহান্দ্রো বাল্দে। দুই জনের কড়া পাহারার মধ্যেই ছুটে গিয়ে স্লাইডে জাল খুঁজে নেন ফেরান তোরেস। ২১তম মিনিটে সফল স্পট কিকে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ওলমো। তবে গোল করার পর বেশিক্ষণ মাঠে থাকতে পারেননি তিনি। ২৭তম মিনিটে ইনজুরি নিয়ে মাঠ ছাড়েন স্প্যানিশ এই তারকা। প্রথম হাফে দুই গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় বার্সেলোনা। প্রথম হাফের মতো একই ছন্দে শুরু করা দ্বিতীয়ার্ধে প্রথম সুযোগ তৈরি করে বার্সেলোনাই। ৪৭তম মিনিটে শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি পেদ্রি। ৫৬তম মিনিটে আরও একটি সুযোগ নষ্ট করেন তোরেস। এরপর কিছুক্ষণ আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে ব্যবধান কমানোর চেষ্টা করে ওসাসুনা। তবে উল্টো ম্যাচের ৭৭তম মিনিটে তৃতীয় গোল হজম করে তারা। নিজেদের ডি বক্সের সামনে থেকে বাড়ানো বল ধরে লোপেস দারুণ ক্রসে খুঁজে নেন লেভানডোভস্কিকে। অসাধারণ হেডে জাল খুঁজে নেন পোলিশ স্ট্রাইকার। লিগে এটি লেভার ২৩তম গোল। শেষ পর্যন্ত ৩-০ গোলে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে হ্যান্সি ফ্লিকের দল। আর এই জয়ের ফলে দুইয়ে থাকা রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে ব্যবধান আরও বাড়িয়ে নিল তারা। ২৮ ম্যাচে ৬৩ পয়েন্ট বার্সেলোনার। সমান ম্যাচে রিয়ালের পয়েন্ট ৬০।

তদন্তের মুখে রিয়াল মাদ্রিদের চার ফুটবলার
রিয়াল মাদ্রিদের চার খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে ইউনিয়ন অফ ইউরোপিয়ান ফুটবল এসোসিয়েশনস (উয়েফা)। শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সেই চার ফুটবলারের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে উয়েফা। সেই চার ফুটবলার হচ্ছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে, ভিনিসিউস জুনিয়র, অ্যান্তোনিও রুডিগার ও দানি সেবায়োস। ঘটনা গত ১২ মার্চের। সেদিন নগর প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে টাইব্রেকারে জিতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নেয় রিয়াল। ম্যাচ শেষে ওয়ান্দা মেত্রেপলিতানোয় অ্যাতলেটিকো সমর্থকদের সামনে উদযাপনে মাতেন দলটির খেলোয়াড়রা। স্প্যানিশ গণমাধ্যম জানিয়েছে, সে সময়ে রিয়ালের খেলোয়াড়দের আচরণ নিয়ে উয়েফার কাছে অভিযোগ জানায় অ্যাতলেটিকো। তা আমলে নিয়ে ইউরোপীয় ফুটবলের নিয়ন্তা সংস্থা বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) জানিয়েছে, সম্ভাব্য অশোভন আচরণের জন্য তদন্তের কেন্দ্রে আছেন অ্যান্টোনিও রুডিগার, কিলিয়ান এমবাপ্পে, দানি সেবায়োস ও ভিনিসিউস জুনিয়র। পরে নানা ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, প্রতিপক্ষের মাঠে রিয়াল মাদ্রিদের কয়েকজন খেলোয়াড় নেচে ও অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ সমর্থকদের সামনে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি করে জয় উদযাপন করছিলেন। উয়েফা ও রিয়াল মাদ্রিদ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। আগামী ৮ এপ্রিল আর্সেনালের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে মাঠে নামবে রিয়াল মাদ্রিদ। তদন্তের ফলে কোনো শাস্তি হলে তা এই ম্যাচের আগে কার্যকর হতে পারে।

পিএসএলে খেলার ছাড়পত্র পেলেন রিশাদ-নাহিদ-লিটন
পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) খেলার জন্য ছাড়পত্র পেয়েছেন জাতীয় দলের তিন ক্রিকেটার লিটন কুমার দাস, নাহিদ রানা ও রিশাদ হোসেন। টাইগার পেসার নাহিদকে দেওয়া হয়েছে আংশিক ছাড়পত্র। গতকল বিসিবি ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের ইনচার্জ শাহরিয়ার নাফীস জানান, লিটন ও রিশাদকে পুরো লিগের জন্য ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। তিন ক্রিকেটারই ২৪ মার্চ ছাড়পত্র হাতে পেয়েছেন। পিএসএলে নাহিদের দল পেশোয়ার জালমি, লিটন খেলবেন করাচি কিংসে আর রিশাদকে নিয়েছে লাহোর কালানার্স। ১১ এপ্রিল থেকে ১৮ মে হবে পিএসএল টি২০ টুর্নামেন্ট। এ সময় ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ মাঠে থাকলেও লিটন, রিশাদ পিএসএলে খেলবেন। ঢাকা লিগে লিটনের দল গুলশান ক্লাব, রিশাদের প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। বিসিবির মতো ক্লাব থেকেও ছাড়পত্র নিশ্চিত করেছেন তারা। নাহিদ রানা পেশোয়ার জালমিতে যোগ দেবেন ২৬ এপ্রিল থেকে। কারণ ২০ থেকে ২৪ এপ্রিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট খেলবেন তিনি। এটিই হবে টাইগার ফাস্ট বোলারের প্রথম বৈশ্বিক টি২০ লিগ। রিশাদ গত বছর কানাডার গ্লোবাল টি২০ আর অস্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাশে ডাক পেলেও খেলা হয়নি। সেদিক থেকে পিএসএল দিয়ে বৈশ্বিক লিগে অভিষেক করবেন এ লেগ স্পিনার। লিটন আগে আইপিএল, সিপিএল, লঙ্কান প্রিমিয়ার লিগে খেললেও পিএসএলে প্রথম। টানা ম্যাচ খেলার সুযোগ নিতে চান তিনি। বিসিবি পুরো সময়ের জন্য ছাড়পত্র দেওয়ায় খুশি লিটন। জাতীয় দলের তিন ক্রিকেটারকে পিএসএলে ছাড়পত্র দেওয়ার কারণ জানতে চাওয়া হলে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ সমকালকে বলেন,‘বৈশ্বিক ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে আমাদের খেলোয়াড় খুব একটা খেলে না। যে কায়জন সুযোগ পেয়েছে তারাও পুরো সময় খেলতে পারনি, লিগের মাঝপথে ফেরত আনায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ছাড়পত্রই দেওয়া হতো না। এর ফলে বোর্ডগুলোর সঙ্গে একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে। আমরা সম্পর্ক উন্নয়নে চেষ্টা করছি। তিনটি ছেলে পিএসএলে খেলতে পারলে ভালো হবে। ভবিষ্যতে অন্যরাও সুযোগ পাবে।’ এবার ইসলামাবাদ ইউনাইটেড ও লাহোর কালান্দার্সের ম্যাচ দিয়ে মাঠে গড়াবে পিএসএল। উদ্বোধনী ম্যাচে দেখা যেতে পারে লেগি রিশাদকে। পরের দিন লিটনের করাচি কিংস খেলবে মুলতান সুলতানর্সের বিপক্ষে।

বিশ্বকাপ পাওয়ার র্যাঙ্কিং: শীর্ষে আর্জেন্টিনা, তলানিতে ব্রাজিল
যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোয় অনুষ্ঠেয় ২০২৬ বিশ্বকাপের র্যাঙ্কিং করেছে ফুটবল বিষয়ক সংবাদ মাধ্যম গোল। ওই তালিকায় শীর্ষে আছে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চল থেকে বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত করা আর্জেন্টিনা। প্রথম বড় দল হিসেবে বিশ্বকাপে পা রেখেছে তারা। সংবাদ মাধ্যম গোলের বিশ্বকাপ পাওয়ার র্যাঙ্কিংয়ে শক্ত অবস্থানে আছে স্পেন, জার্মানি ও ফ্রান্স। তবে ব্রাজিল ও বেলজিয়াম তলানিতে চলে গেছে। এমনকি বিশ্বকাপের টিকিট হাতে পাওয়া জাপানেরও পেছনে আছে ব্রাজিল। আর্জেন্টিনা-স্পেনের কর্তৃত্ব: কাতার বিশ্বকাপের এক বছর আগে থেকে অসাধারণ ফুটবল খেলছে আর্জেন্টিনা। কৌশলে, পারফরম্যান্সে অনন্য তারা। এই সময়ে কাতার বিশ্বকাপ ও দুটি কোপা আমেরিকা জয়ী আর্জেন্টিনাকে শীর্ষে না রেখে উপায় নেই। তরুণ দল নিয়ে আর্জেন্টিনার মতো ভালো ফুটবল খেলছে স্পেন। ইউরো জয়ী দলটি র্যাঙ্কিংয়ে আছে দুইয়ে। রক্ষণ, মাঝমাঠ ও আক্রমণে ফুটবলের প্রাচুর্য ও কৌশলগত দিক থেকে ভালো হওয়ায় স্পেন ইউরোপের শক্তিশালী দল হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করেছে। জার্মানি-ইতালির উত্থান: ব্রাজিলে ২০১৪ বিশ্বকাপ জয়ের পর জার্মানির ফুটবল উল্ট রথে ছুটেছে। সর্বশেষ ইউরো দিয়ে আবার ঘুরে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছে জার্মানি। তরুণ জামাল মুসিয়াল ও ফ্লোরিয়ান উইর্টজের মতো ফুটবলার নতুন দিনের আশা দিচ্ছে। জার্মানি র্যাঙ্কিংয়ে তিনে জায়গা করে নিয়েছে। চারে আছে পরপর দুই বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলা ফ্রান্স। তারকা ও বড় মঞ্চের সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনায় ফ্রান্সকে এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। র্যাঙ্কিংয়ে পাঁচে ইংল্যান্ড ও ছয়ে আছে পর্তুগাল। ইতালি সর্বশেষ দুই বিশ্বকাপে জায়গা পায়নি। তবে ২০২৬ বিশ্বকাপের র্যাঙ্কিংয়ে সাতে আছে তারা। আটে নেদারল্যান্ডস ও নয়ে জাপানকে রাখা হয়েছে। সেরা দশ ব্রাজিলের স্বান্তনা: আগামী বিশ্বকাপের পাওয়ার র্যাঙ্কিংয়ে দশে আছে ব্রাজিল। যদিও দলটির সাম্প্রতিক ফর্ম মোটেও ভালো নয়। তবে দলটা ব্রাজিল বলেই হয়তো তাদের সেরা দশে রাখা হয়েছে। দারুণ সব ফুটবলার থাকায় এবং পাঁচটি বিশ্বকাপ থাকায় ব্রাজিলকে র্যাঙ্কিং থেকে বাদ দেওয়ার দুঃসাহস দেখানোও কঠিন। বেলজিয়াম পাওয়ার র্যাঙ্কিংয়ে আছে ১১তম অবস্থানে। বিশ্বকাপের স্বাগতিক হিসেবে মেক্সিকো, যুক্তরাষ্ট্রকে রাখা হয়েছে র্যাঙ্কিংয়ে।

বাংলাদেশের বিপক্ষে ড্র মানতেই পারছে না ভারত
ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ৫৯ ধাপ পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশের বিপক্ষে ড্র কিছুতেই মেনে নিতে পারছেনা ভারত। বিশ্লেষকরা তো বটেই, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সুনীল ছেত্রীদের ধুয়ে দিচ্ছে ইন্ডিয়ান দর্শকরাও। তবে, দাপুটে পারফরম্যান্সের পরও বাংলাদেশ দলকে নিয়ে তেমন কোনো প্রশংসা নেই তাদের পোস্টে। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) শিলংয়ের জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামের ১৫ হাজার তো বটেই, গোটা ভারতের কোটি ফুটবলপ্রেমীর চোখ ছিলো এ ম্যাচে। যে ম্যাচ মাঠে গড়ানোর আগে হম্বিতম্বি, বাংলাদেশ দল নিয়ে তাচ্ছিল্য আর ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ৫৯ ধাপ এগিয়ে থাকার দম্ভ সবই দেখিয়েছে তারা। কিন্তু, বাস্তবতা ছিলো ভিন্ন। নিজেদের মাঠে বাংলাদেশের সামনে একরকম আত্মসমর্পণই করেছিলো ভারত ফুটবল দল। জনি-ইমনরা সহজ সুযোগগুলো হেলায় না হারালে এশিয়ান কাপ বাছাই ম্যাচে বেঙ্গল টাইগার্সের কাছে লজ্জাই পেতে হতো ইন্ডিয়ানদের। শেষ পর্যন্ত হাফ ছেড়েই বেঁচেছে সুনীল ছেত্রীর দল। ২-০ বা ৩-০ ব্যবধানে হারের চেয়ে গোলশূন্য ড্র তো মান বাঁচানো ফলাফল। কিন্তু, জনসংখ্যা-আয়তন-বাজেট-স্ট্রাকচার-শক্তিমত্তা সবকিছুতে যোজন যোজন এগিয়ে থেকেও তুলনামূলক ছোট প্রতিবেশির কাছে এমন নাস্তানাবুদ হওয়া মানতেই পারছে না ভারতীয়রা। আঁতে চরম এক ঘা লেগেছে তাদের। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যা টের পাওয়া যায় স্পষ্ট। দেশটির ক্রীড়া সাংবাদিক, বিশ্লেষক থেকে ফ্যান সবাই ধুয়ে দিচ্ছে ইন্ডিয়া টিমকে। কোচ মানোলো মার্কুয়েজের কৌশল, সামর্থ্য নিয়েও তুলছে প্রশ্ন। তবে, বাংলাদেশ দল নিয়ে এখনও কেনো যেনো প্রশংসা করতে পারছে না তারা। এক হামজা দেওয়ান চৌধুরী ছাড়া কাউকেই গোনায় ধরছে না যেনো। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা হামজা তাক লাগিয়ে দিয়েছে সবাইকে। তাকে ইগ্নোর করার সুযোগ নেই। কিন্তু, সার্বিকভাবে বাংলাদেশ দলের উন্নতি নিয়ে কথা বলতে এখনও কার্পণ্য ভারতীয়দের। ব্যাপারটা এমন যে, কেবল নিজেদের ভুলেই জিততে পারেনি তারা। বাংলাদেশের খুব একটা ক্রেডিট নেই। ওসব নিয়ে অবশ্য ভাবছে না বাংলাদেশ। স্পোর্টসসহ নানা ক্ষেত্রে ভারতের বঞ্চনার শিকার দেশের মানুষের মাঝে ভারতকে নিয়ে তিক্ততা এখন চরমে। এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে তাদের মাটিতে হামজাদের দাপুটে পারফরম্যান্স তাই আলাদা এক প্রশান্তি এনে দিয়েছে এদেশের মানুষের মনে।

ভারত থেকে দেশে ফিরেছেন ফুটবলাররা
শিলংয়ে ভারতের বিপক্ষে এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বের ম্যাচে গোল শূন্য সমতা করেছে বাংলাদেশ। ওই ম্যাচে অভিষেক হয়েছে হামজা চৌধুরীর। বুধবার (২৬ মার্চ) ভারত থেকে দেশে ফিরেছেন ফুটবলাররা। দলের সতীর্থদের সঙ্গে ঢাকা ফিরেছেন ইংল্যান্ডের শেফিল্ড ইউনাইটেডে খেলা হামজা চৌধুরী। জানা গেছে, দ্রুতই হামজা ইংল্যান্ডে ফিরে যাবেন। আজ যখনই তিনি ফ্লাইট পাবেন উড়াল দেবেন লন্ডন বা ম্যানচেস্টারের উদ্দেশ্যে। আজ সম্ভব না হলে আগামীকাল ফিরে যাবেন ইংল্যান্ডে। ২৮ মার্চ দিবাগত রাত ২টায় কভেন্ট্রির বিপক্ষে ম্যাচ আছে হামজা চৌধুরীর দল শেফিল্ড ইউনাইটেডের। প্রিমিয়ার ডিভিশনে পয়েন্ট টেবিলে দুইয়ে আছে শেফিল্ড। পয়েন্ট শীর্ষে থাকা লিডস ইউনাইটেডের সমান হলেও গোল ব্যবধানের পিছিয়ে আছে শেফিল্ড। টেবিলে পাঁচে থাকা কভেন্ট্রির বিপক্ষে ম্যাচটি মিস করতে চাইবেন না তিনি। বাংলাদেশ এশিয়ান কাপের পরবর্তী বাছাইপর্বের ম্যাচ খেলবে ১০ জুন। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচটি হবে বাংলাদেশে। সব ঠিক থাকলে ওই ম্যাচ খেলতে আসবেন হামজা।

দায় নিজের কাঁধে নিয়ে ক্ষমা চাইলেন ব্রাজিল কোচ
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার ম্যাচ। জয়-পরাজয় ছাপিয়ে যেখানে বড় হয়ে উঠে মর্যাদা। সেই মর্যাদার লড়াইয়ে আর্জেন্টিনার কাছে রীতিমত বিধ্বস্ত হলো ব্রাজিল। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ছন্নছাড়া ফুটবল খেলে আলবিসেলেস্তেদের কাছে ৪-১ গোলে নাকাল হয়েছে সেলেসাওরা। আর্জেন্টিনার কাছে এমন হারের দায় নিজের কাঁধে নিয়েছেন ব্রাজিল কোচ দরিভাল জুনিয়র। ভক্ত-সমর্থকদের কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন তিনি। তবে এই বড় ধাক্কা সত্ত্বেও, তিনি পরিস্থিতি বদলানোর বিষয়ে আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেছেন। ম্যাচ শেষে ব্রাজিল কোচ বলেন, ‘(হারের) সম্পূর্ণ দায় আমার। আর্জেন্টিনা আমাদের চেয়ে শ্রেয় ছিল, সবদিক থেকেই শ্রেয়।’ এরপর তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন। ব্রাজিল কোচ মনে করেন, আর্জেন্টিনার এই জয় প্রাপ্য ছিল। তিনি বলেন, ‘এমন পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করা খুব কঠিন এবং জটিল। আমরা এক মুহূর্তের জন্যও আমাদের খেলাটা খেলতে পারিনি। আর্জেন্টিনার এই জয় প্রাপ্য ছিল।’ এমন এক হার ব্রাজিলকে ভীষণভাবে আঘাত করেছে উল্লেখ করেছে দরিভাল জুনিয়র আরও বলেন, ‘এটা স্বাভাবিক। এই ধরনের ফল আমাদের খুব কষ্ট দিয়েছে। আমরা সবাই খুব কষ্ট পাচ্ছি।’ মঙ্গলবারের পরাজয়ের ফলে, ১৪ ম্যাচের পর বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ব্রাজিল চতুর্থ স্থানে রয়েছে। তাদের পয়েন্ট ২১। অন্যদিকে আর্জেন্টিনা ৩১ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে এবং দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইকুয়েডরের চেয়ে আট পয়েন্ট এগিয়ে আছে।

ব্রাজিলকে বিধ্বস্তের পর বাংলাদেশকে ‘ধন্যবাদ’ জানালেন এনজো ফার্নান্দেজ
কাতার বিশ্বকাপ থেকেই বাংলাদেশি সমর্থকদের ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছে আর্জেন্টিনা দল। সেই বিশ্বকাপ থেকেই আর্জেন্টিনাও বারবার বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানিয়েছে তাদের সমর্থন করার জন্য। বুধবার (২৬ মার্চ) বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে ব্রাজিলকে উড়িয়ে দিয়েছে আর্জেন্টিনা। ব্রাজিলের বিপক্ষে জয়ের পর বাংলাদেশি সমর্থকদের ভালোবাসা পেয়েছেন আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার এনজো ফার্নান্দেজ। যার কারণে ম্যাচ শেষে বাংলাদেশি সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন চেলসির এই তারকা। বুয়েনস আইরেসের মনুমেন্তালে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে ব্রাজিলকে ৪-১ গোলে হারিয়েছে আর্জেন্টিনা। তবে তার চেয়েও বেশি সুখের সংবাদ হচ্ছে, ব্রাজিলের বিপক্ষে মাঠে নামার আগেই ২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিটও পেয়ে যায় বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। এই সুসংবাদ নিয়ে ব্রাজিলের বিপক্ষে খেলতে নেমে তাদের নিয়ে ছেলেখেলা করেছে আর্জেন্টিনা। ৪-১ গোলে হারিয়েছে সর্বোচ্চ বিশ্বকাপ জেতা দলটিকে। ব্রাজিলের বিপক্ষে একটি গোলের পাশাপাশি একটি অ্যাসিস্টও করেছেন এনজো ফার্নান্দেজ। তার এমন পারফরমেন্সের জন্য তার প্রতি ভালোবাসা দেখিয়েছে বাংলাদেশের সমর্থকরা। বাংলাদেশিদের এমন সমর্থন দেখে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন ফার্নান্দেজ। ফেসবুকে ফার্নান্দেজ লিখেছেন, ‘অবিশ্বাস্য সমর্থন এবং ভালোবাসার জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ, এই জয়ের ভাগীদার তোমরাও।’ ব্রাজিলের বিপক্ষে ম্যাচে দারুণ পারফর্ম করেছেন এনজো ফার্নান্দেজ। ম্যাচে এক গোল ও এক অ্যাসিস্ট করে ম্যাচ সেরা হয়েছেন এই মিডফিল্ডার। ব্রাজিলের বিপক্ষে লাউতারো, মেসিদের অভাব বুঝতে দেননি চেলসির এই তারকা। আন্তর্জাতিক ফুটবল শেষে আগামী সপ্তাহ থেকে এনজো ফের ব্যস্ত হয়ে যাবেন ক্লাব ফুটবলে।

৪৭৫ রানের ম্যাচে ১১ রানে জয় পাঞ্জাবের
আহমেদাবাদের মোতেরা স্টেডিয়ামে চার-ছক্কার বন্যা বইয়ে দিয়েছে পাঞ্জাব কিংস ও গুজরাট টাইটান্সের ব্যাটাররা। হাইস্কোরিং ম্যাচে দুই দল মিলে সংগ্রহ করেছে ৪৭৫ রান। এমন হাই স্কোরিং ম্যাচে গুজরাটের বিপক্ষে পাঞ্জাব কিংসের মাত্র ১১ রানের জয়ে এবারের আইপিএলে যাত্রা শুরু করেছে। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) গুজরাট টাইটান্সের বিপক্ষে প্রীতি জিনতার দল টস হেরে ব্যাট করতে নেমে সংগ্রহ করেছে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৪৩ রান। জবাব দিতে নেমে গুজরাটও কম যায়নি। ৫ উইকেট হারিয়ে তাদেরকে থামতে হয়েছে ২৩২ রানে। পাঞ্জাব কিংসের হয়ে অধিনায়ক স্রেয়াশ আয়ার অপরাজিত থেকেও ৩ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেছেন। ৯৭ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। গুজরাটের ওপেনার সাই সুদর্শন খেলেন ৭৪ রানের ইনিংস। ২৪৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে গুজরাটের দুই ওপেনার সাই সুদর্শন ও শুভমান গিল মিলে ৫.৫ ওভারে সংগ্রহ করে ৬১ রান। তখনই বোঝা যায় গুজরাটও কম যাবে না। ১৪ বলে ৩৩ রান করে আউট হন শুভমান গিল। এরপর সুদর্শন ও জস বাটলার মিলে গড়েন ৮৪ রানের জুটি। ৩৩ বলে ৫৪ রান করেন বাটলার। ৪১ বলে ৭৪ রানে আউট হন সুদর্শন। এরপর শেরফানে রাশেফোর্ড আউট হন ৪৬ রানে। শেষ দিকে ব্যাটাররা পারেনি আর গুজরাটকে জেতাতে। ৫ উইকেট হারিয়ে ২৩২ রানে থেমে যায় তারা। এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই প্রবশিরাম সিংকে হারিয়ে কিছুটা বিপদে পড়ে পাঞ্জাব কিংস। ৫ রান করেন তিনি। এরপর প্রিয়ানশ আরিয়া এবং স্রেয়াশ আয়ার মিলে বিপর্যয় সামাল দিয়ে ঝড় তোলেন। ২৩ বলে ৪৭ রান করে আউট হন প্রিয়ানশ আরিয়া। ৭টি বাউন্ডারির সঙ্গে ২টি ছক্কা মারেন তিনি। এরপর আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে নিয়ে ছোট এক জুটি গড়েন স্রেয়াশ আয়ার। ওমরজাই করেন ১৬ রান। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল আউট হন কোনো রান না করেই। মার্কাস স্টইনিজ ১৫ বলে করেন ২০ রান। ১৬ বলে শশাঙ্ক সিং করেন অপরাজিত ৪৪ রান। ৪২ বলে ৯৭ রানে অপরাজিত থাকেন অধিনায়ক আয়ার। ৫টি বাউন্ডারির সঙ্গে ছক্কা মারেন ৯টি। গুজরাটের বোলার সাই কিশোর নেন ৩ উইকেট।

ড্র করেও এশিয়া কাপে চোখ ক্যাবরেরা-তাবিথের
শিলংয়ে জওহরলাল নেহেরু স্টেডিয়ামের সংবাদ সম্মেলন কক্ষ বেশ ছোট। বাংলাদেশ থেকে হামজার অভিষেক ম্যাচ কাভার করতে জন ত্রিশেক সাংবাদিক এসেছেন। সুনীলের অবসর ভেঙে ফেরার ম্যাচ দেখতে এসেছিলেন ভারতীয় অনেক সাংবাদিক। ছোট্ট সম্মেলন কক্ষে আসন সংখ্যার চেয়ে বেশি সাংবাদিক হওয়ায় অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন টিকিট সিস্টেম করেছে। বিশ্বকাপ ফুটবলের মতো সাংবাদিকদের টিকিট দেখিয়ে সংবাদ সম্মেলন কক্ষে ঢুকতে হয়েছে। সফরকারী দল বাংলাদেশের কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা এসেছিলেন আগে। তিনি ম্যাচ নিয়ে বলেন, ‘প্রথমার্ধে আমরা গোলের সুযোগ মিস করেছি। না হলে আমরা ম্যাচটি জিততে পারতাম।’ ভারতের বিপক্ষে অ্যাওয়ে ম্যাচে এক পয়েন্ট পাওয়াকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন বাংলাদেশের কোচ। অন্যদিকে গ্রুপের অন্য ম্যাচে সিঙ্গাপুর ও হংকংয়ের ম্যাচটিও গোলশূন্য ড্র হয়েছে। চার দলের সমান চার পয়েন্ট। তাই এশিয়া কাপে খেলার ইচ্ছে প্রকাশ করে কোচ বলেন, ‘ভারত এই গ্রুপে শীর্ষ বাছাই দল। সেই দলের বিপক্ষে এক পয়েন্ট নেওয়াটা অবশ্যই আমাদের জন্য ইতিবাচক। আমরা এশিয়া কাপে খেলতে চাই।’ এশিয়া কাপে খেলতে হলে বাংলাদেশকে গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হতে হবে। প্রতিটি দল একে অন্যের সঙ্গে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়েতে খেলবে। ছয় ম্যাচ পর সর্বোচ্চ পয়েন্টধারী গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ২০২৭ সালে সৌদি আরবে এশিয়া কাপ খেলতে পারবে। বাংলাদেশ ১৯৮০ সালে এশিয়া কাপ খেলেছিল। যা এখন পর্যন্ত একবারই। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি তাবিথ আউয়াল শিলংয়ে মঙ্গলবারের (২৫ মার্চ) ম্যাচ স্টেডিয়ামে বসেই দেখেছেন। কোচের মতো তিনিও এশিয়া কাপে খেলার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন স্টেডিয়ামে উপস্থিত গণমাধ্যমের কাছে। বলেন, ‘আমরা সৌদি আরবে এশিয়া কাপ খেলতে চাই। ভারতের বিপক্ষে এক পয়েন্ট আমাদের সেই যাত্রার অংশ। হামজাসহ গোটা দলই ভালো খেলেছে।’ ইংলিশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে খেলা ফুটবলার হামজা চৌধুরি মঙ্গলবার নিজের অভিষেক ম্যাচে জাত চিনিয়েছেন। প্রতিপক্ষের আক্রমণ যেমন নষ্ট করেছেন আবার নিজের দলের আক্রমণের ভিত গড়েছেন। বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধে ভারত যখন চড়াও হয়ে খেলছিল তখন হামজা বাংলাদেশের রক্ষণে ঢাল হয়েছিলেন। হামজাকে নিয়ে বাংলাদেশের কোচ বলেন, ‘তিনি অত্যন্ত বড় মাপের খেলোয়াড় ও মানুষ। প্রথম ম্যাচেই তিনি নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন।’ আন্তর্জাতিক ফুটবলে বাংলাদেশের সমস্যা গোল স্কোরিং। হামজার অভিষেক ম্যাচে বাংলাদেশ জয় পায়নি মূলত ফিনিশিংয়ের অভাবে। কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা পাঁচজন ফুটবলার বদলি হিসেবে নামালেও ঘরোয়া লিগে একাধিক গোলদাতা আল আমিনকে নিয়ে চেষ্টাই করেননি। এর ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘আল আমিন প্রতিভাবান ও সম্ভাবনাময় খেলোয়াড়। আজ কম্বিনেশনের সঙ্গে আল আমিন সামঞ্জস্য ছিল না।’ কোচ ক্যাবরেরার কম্বিনেশন বড়ই বিচিত্র। ঘরোয়া লিগে যারা নিয়মিত খেলার সুযোগ পান না, তারা জাতীয় দলে একাদশে থাকেন। আর যারা ভালো পারফর্ম করেন তারা দলেই ডাক পান না। ইয়াসিন খান ও মিঠু ঘরোয়া লিগে পরীক্ষিত ডিফেন্ডার। তাদের প্রাথমিক তালিকায় রাখলেও ক্যাম্পে ওঠাননি। মঙ্গলবার তপু বর্মণ ব্যথা পেয়ে মাঠ ছাড়লে সেন্ট্রাল ডিফেন্ডারের সংকট হয়। তখন শাকিল আহাদ তপুকে মেক শিফট সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার হিসেবে খেলতে হয়। হামজার পর আজকের ম্যাচে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা পারফর্মার শাকিল আহাদ তপু। কোচ ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তপুর প্রশংসা করলেও তার ২৩ জনের স্কোয়াডে তপু ও তারিক কাজী ছাড়া অন্য কোনো ব্যাকআপ সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার নেই সেই দুর্বলতার বিষয়টি সুকৌশলে এড়িয়ে গেছেন।

৪ গোলে ব্রাজিলকে বিধ্বস্ত করলো আর্জেন্টিনা
ম্যাচের আগে কিংবদন্তি রোমারিওকে ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার রাফিনিয়া বলেছিলেন এই ম্যাচ ব্রাজিল অবশ্যই জিতে ফিরবে। রাফিনিয়া নিজেও গোল করবেন বলেই পণ করে এসেছিলেন। কিন্তু এস্তাদিও মনুমেন্টালে রাফিনিয়াকে মাঠে খুঁজে পাওয়াটাই ছিল একটা আলাদা মিশন। অবশ্য রাফিনিয়া একাই না, আর্জেন্টিনার দাপুটে ফুটবলের ভিড়ে ব্রাজিলের কাউকেই সেভাবে খুঁজে পাওয়া যায়নি পারফরম্যান্স বিবেচনায়। ম্যাচের প্রথমার্ধেই অনেকটা গল্প লেখা হয়ে গিয়েছিল এই ম্যাচের জন্য। শুরুর ২০ মিনিটের মাঝেই ব্রাজিলের জালে আর্জেন্টিনার দুই গোল। ৪৫ মিনিট যখন পার হচ্ছে, তখন ব্রাজিল পিছিয়ে ৩-১ গোলে। আর দ্বিতীয়ার্ধে ব্রাজিলের ক্ষতটা আরেকটু বাড়িয়ে দেন বদলি নামা গুইলিয়ানো সিমিওনে। ম্যাচে নামার আগেই আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিতের খবর পেয়েছিল। আর সেটাকে তারা উদযাপন করলো চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দলকে ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত করে। আর্জেন্টিনার হয়ে স্কোরশিটে উঠেছে হুলিয়ান আলভারেজ, অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার, এনজো ফার্নান্দেজ এবং গুইলিয়ানো সিমিওনের। ব্রাজিলের হয়ে একমাত্র গোল ম্যাথিয়াস কুনহার। এস্তাদিও মনুমেন্টালে আর্জেন্টিনার প্রথম দুই গোলই এসেছে পারফেক্ট টিম প্লের সুবাদে। ম্যাচের ৪ মিনিটেই ডি পলের পাস ধরে বামপ্রান্তে আক্রমণে যান নিকোলাস টালিয়াফিকো। তার দারুণ পাস খুঁজে নেয় থিয়েগো আলমাদাকে। ছন্দে থাকা এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডারের ডিফেন্সচেরা পাস থেকে গোল করেন আলভারেজ৷ দুই ডিফেন্ডারের মাঝে বল পেয়ে গোল করতে কোনো সমস্যাই হয়নি আলভারেজের। খানিক বাদে ফের ব্রাজিলের রক্ষণে ফাটল ধরায় আর্জেন্টিনা। অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার একাই অনেকটা পথ পার করেন ব্রাজিলের অর্ধে। সেখান থেকে আলভারেজের পা ঘুরে বল যায় নাহুলের মলিনার কাছে। ডানপ্রান্তের ক্রস থেকে সহজ ফিনিশ করেন এনজো ফার্নান্দেজ। ১২ মিনিটের মধ্যেই ২ গোল পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা। ঘড়ির কাঁটায় ৩০ মিনিট পেরুবার আগেই অবশ্য এক গোল শোধ করে ব্রাজিল। ইংলিশ ক্লাব উলভসে দারুণ সময় কাটানো ফরোয়ার্ড ম্যাথিয়াস কুনহা নাম তোলেন স্কোরশিটে। ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো বল পায়ে পজিশন হারান কুনহার প্রেসিংয়ের কাছে। সেখান থেকে ঠান্ডা মাথায় ফিনিশিং। আর্জেন্টিনার ২ গোলের লিড ফিরে পেতে সময় লেগেছে মোটে ১১ মিনিট। এবারে স্কোরশিটে ম্যাক অ্যালিস্টারের নাম। কর্নার থেকে ফেরত আসা বলে মাপা এক চিপ করেন এনজো ফার্নান্দেজ। ৬ গজের ছোট বক্সের সামনে তাতে আলতো পা ছুঁয়ে ব্যবধান ৩-১ করেন ম্যাক অ্যালিস্টার।

সকালে নামছে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা, কেমন হবে একাদশ
দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টায় মাঠে নামবে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা। ম্যাচটি হবে আর্জেন্টিনার মাঠে। এই ম্যাচে এক পয়েন্ট পেলে আর্জেন্টিনার ২০২৬ বিশ্বকাপ খেলা নিশ্চিত হয়ে যাবে। অন্য দিকে ব্রাজিল জিতলে পয়েন্ট টেবিলে তাদের দুইয়ে ওঠার সম্ভাবনা জোরালো হবে। তবে ব্রাজিল এই ম্যাচে সেরা একাদশ পাচ্ছে না। কলম্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের একাদশে অবধারিত চারটি পরিবর্তন আনতে হবে ব্রাজিল কোচ দরিভালের। সংবাদ মাধ্যম গ্লোবো দাবি করেছে, পরিবর্তন হতে পারে ছয়টি। ব্রাজিলের গোলরক্ষক অ্যালিসন কনকাশন ইনজুরি নিয়ে ব্রাজিলের ক্যাম্প ছেড়েছেন। তার জায়গায় শুরুর একাদশে ঢুকতে যাচ্ছেন বেন্তো। ডিফেন্ডার গ্যাব্রিয়েল মাঘালহায়েস ও মিডফিল্ডার ব্রুনো গিমারেজ কার্ড জটিলতায় আর্জেন্টিনার বিপক্ষে খেলতে পারবেন না। তাদের জায়গায় যথাক্রমে মুরিলো ও আন্দ্রে খেলতে পারেন। মিডফিল্ডার জেরসন ইনজুরি নিয়ে মাঠের বাইরে চলে গেছেন। ওই পজিশনে খেলানো হতে পার জোয়েলিনটনকে। এর সঙ্গে রাইট ব্যাক হিসেবে ওয়েলসি শুরুর একাদশে জায়গা পেতে পারেন। সর্বশেষ ম্যাচে ভান্ডারসনের জায়গায় বদলি নেমে দারুণ খেলেন তিনি। এছাড়া স্ট্রাইকার পজিশনে জোয়াও পেদ্রোর জায়গায় খেলানো হতে পারে সাভিওকে। আর্জেন্টিনার একাদশে আসতে পারে একটি পরিবর্তন। ব্রাজিলের বিপক্ষে এই ম্যাচে শুরুর একাদশে রদ্রিগো ডি পলের খেলার ভালো সম্ভাবনা আছে। সেক্ষেত্রে বেঞ্চে বসতে হবে লিয়ান্দ্রো পারদেসকে। ব্রাজিলের সম্ভাব্য শুরুর একাদশ: বেন্তো (গোলরক্ষক), মার্কুইনোস (ডিফেন্ডার), মুরিলো (ডিফেন্ডার), ভান্ডারসন (ডিফেন্ডার), আরানা (ডিফেন্ডার), আন্দ্রে (মিডফিল্ডার), জোয়ালিনটন (মিডফিল্ডার), রাফিনিয়া (মিডফিল্ডার), ভিনিসিয়াস (ফরোয়ার্ড), সাভিনহো (ফরোয়ার্ড), রদ্রিগো (ফরোয়ার্ড)। আর্জেন্টিনার সম্ভাব্য শুরুর একাদশ: মার্টিনেজ (গোলরক্ষক), মলিনা (ডিফেন্ডার), ওতামেন্ডি (ডিফেন্ডার), রোমেরো (ডিফেন্ডার), ত্যাগলিয়াফিকো (ডিফেন্ডার), ডি পল (মিডফিল্ডার), এনজো ফার্নান্দেজ (মিডফিল্ডার), ম্যাক অ্যালিস্টার (মিডফিল্ডার), গিওভান্নি সিমিওনে (ফরোয়ার্ড), আলমাদা (ফরোয়ার্ড), আলভারেজ (ফরোয়ার্ড)।

হামজার অভিষেকে গোল মিস করে সমতা বাংলাদেশের
লাল-সবুজের দলে হামজা চৌধুরী যোগ দিতেই দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে দামী ফুটবল দলে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। র্যাঙ্কিংয়ে ভারতের চেয়ে বেশ পিছিয়ে থাকলেও হামজার প্রভাব বাংলাদেশ শিবিরে স্পষ্ট ছিল। শিলংয়ের এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বে ওই প্রভাব কাজে লাগিয়ে শুরু থেকে শেষ মিনিট পর্যন্ত গোলের সুযোগ তৈরি করেছে বাংলাদেশ। কিন্তু একের পর এক সুযোগ হারিয়ে গোল শূন্য সমতা করেছে হাবিয়ের ক্যাবরেরার দল। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে গোলের সুযোগ তৈরি করে বাংলাদেশ। হামজার লম্বা করে পাস দিলে ভারতের ডিফেন্ডার তা ব্লক করতে ব্যর্থ হন। বল চলে যায় ভারতের গোলরক্ষকের কাছে। কিন্তু তার দেওয়া ভুল পাস ফাঁকায় পেয়ে যান শাহরিয়ার ইমন। তিনি ফাঁকা গোলের লক্ষ্যে শটে নিলেও তা জালের বাইরে যায়। প্রথমার্ধে কর্তৃত্ব করে বাংলাদেশ গোল হওয়ার মতো চারটি সুযোগ তৈরি করেছিল। যার মধ্যে তিনটি আক্রমণ থেকে গোল হয়ে যেতে পারত। প্রথমার্ধে ইমনের মিসের পর একই ভুল করেন ফরোয়ার্ড রাকিব। হামজার করা কর্ণার ভারতের গোলরক্ষক পেয়ে যান। তিনি শট নিলেও তা লাফিয়ে ব্লক করে বাংলাদেশ। ফাঁকায় বল পেয়ে যান রাকিব। কিন্তু দুর্বল শটের কারণে তা গোল হওয়ার মতো ছিল না। এছাড়া মোরসালিনের ক্রসে হেড থেকে গোল করার দারুণ এক সুযোগ পায় বাংলাদেশ। সেটাও কাজে লাগাতে পারেনি ক্যাবরেরার দল। দ্বিতীয়ার্ধেও সুযোগ তৈরি করেছিল বাংলাদেশ। বিশেষ করে শেষ সময়ে বক্সের বাহির থেকে জোরের ওপর নেওয়া শটটি ভারতের গোলরক্ষক দারুণ দক্ষতায় ফেরান। শেষ মিনিটেও গোলমুখে পাওয়া বল পোস্টের ওপর দিয়ে উড়িয়ে মারে বাংলাদেশ। অভিষেকে হামজা তার কাজটা ঠিক মতোই করেছেন। ভারতকে আক্রমণেই উঠতে দেননি তিনি। হামজা বাংলাদেশ দলে খেলার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় অবসর ভেঙে ফেরেন সুনীল ছেত্রী। ভারতীয় স্ট্রাইকারকে মার্কিং করার দায়িত্ব ছিল হামজার। তাকে বোকা বানিয়ে সুনীল কোন সুযোগই তৈরি করতে পারেননি। এছাড়া মাঠে একটা ডুয়েলও হারেননি প্রিমিয়ার লিগে খেলার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন হামজা। প্রতিপক্ষের ফুটবলাররা তার থেকে একটা বলও কেড়ে নিতে পারেননি। বরং বলের লড়াইয়ে যে ক’বার হামজা গেছেন প্রতিটিই জিতেছেন তিনি। দারুণ কিছু ট্যাকল করলেও তা ছিল নিঁখুত। রেফারি ফাউল ডাকার বা কার্ড দেওয়ার মতো সুযোগই পাননি। বুদ্ধিদিপ্ত কর্ণার কিক নিয়েছেন তিনি। তবে হামজার অভিষেকের দিন মাঠে নামা হয়নি জামাল ভূঁইয়ার। জানা গেছে, সামান্য হ্যামস্ট্রিং ইনজুরি আছে তার।

শঙ্কামুক্ত তামিম, আজ রাতেই আনা হতে পারে ঢাকায়
অবশেষে এলো স্বস্তির খবর, হার্ট অ্যাটাকের পর শঙ্কামুক্ত হয়েছেন তামিম ইকবাল। গতকাল (সোমবার) ডিপিএল ম্যাচ চলাকালে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে, যেখানে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। হৃদযন্ত্রে ব্লক ধরা পড়ার পর জরুরিভিত্তিতে রিং পরানো হয় এই ওপেনারকে। তখন চিকিৎসকরা জানিয়ে ছিলেন, তিনি পুরোপুরি ঝুঁকিমুক্ত নন। তবে আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে জানা গেছে, তামিম এখন শঙ্কামুক্ত এবং পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যে কোনো সময় হাসপাতাল ছাড়তে পারবেন। সাভারের কেপিজে হাসপাতালে (প্রাক্তন বেগম ফজিলাতুন্নেছা হাসপাতাল) তামিমকে ৪৮ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল। গত রাত পর্যন্ত তার অবস্থা স্থিতিশীল ছিল। আজ সকালে তাকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয় এবং কিছুক্ষণ হাঁটারও চেষ্টা করেছেন তিনি। স্বজনরাও তার সঙ্গে দেখা করেছেন। তামিমের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে দুপুর ১২টার দিকে কেপিজে হাসপাতালে যান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর। তিনি নিশ্চিত করেছেন, তামিম এখন বিপদমুক্ত এবং তিন মাসের মধ্যে মাঠে ফিরতে পারবেন। তবে তামিমের দীর্ঘমেয়াদি সুস্থতার জন্য সতর্ক থাকার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি। ডা. আবু জাফর বলেন, ‘সব পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সবসময় রোগ নির্ণয় সম্ভব হয় না। প্রথম ইসিজিতে কোনো বড় পরিবর্তন ধরা পড়েনি, তবে আজ সকালে করা ইকো রিপোর্ট ঠিক এসেছে। তারপরও যেকোনো সময় কিছু ঘটতে পারে। তাই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তার পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করেছি। এখন তাদের সিদ্ধান্তের ওপর পরবর্তী ব্যবস্থা নির্ভর করবে।’ গতকাল শাইনপুকুরের বিপক্ষে ম্যাচে ফিল্ডিং করার সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তামিম। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার পর তার হৃদযন্ত্রে ব্লক ধরা পড়ে এবং চিকিৎসক ডা. মনিরুজ্জামান মারুফের তত্ত্বাবধানে এনজিওগ্রাম, এনজিওপ্লাস্টি ও স্টেন্টিং করা হয়। ডা. মারুফের চিকিৎসা এবং মোহামেডানের ট্রেনার ইয়াকুবের সিপিআর দেওয়াকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। তার মতে, ‘সিপিআর না দিলে মস্তিষ্কে জটিলতা দেখা দিতে পারত।’ মোহামেডানের ম্যানেজার সাজ্জাদ আহমেদ শিপন জানিয়েছেন, তামিমের শারীরিক অবস্থা ঠিক থাকলে আজ সন্ধ্যা বা রাতে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হবে। পাশাপাশি প্রয়োজনে থাইল্যান্ডে নেওয়ার বিষয়টিও বিবেচনায় রয়েছে।

রাত পোহালেই আর্জেন্টিনা ব্রাজিল সুপার ক্ল্যাসিকো
তাহলে তর্কটা জমবে কাদের ঘিরে, মেসি ব্যস্ত মায়ামিতে চোট সারাতে। সা পাওলোতে থাকা নেইমারও শুধুই দর্শক। আকাশিতে লাওতারো মার্টিনেজ নেই, হলুদে অনুপস্থিত অ্যালিসান বেকার! তারপরও আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল ম্যাচ বলে কথা, বছর বছর তো আর হয় না। সেখানে কিছু বিতর্ক থাকে, যা শাশ্বত। কিছু আবেগ জড়িয়ে থাকে, যা আপসেও ভাগাভাগি হয় না। তেমনই এক আপন অনুভূতি নিয়েই দর্শকদের সামনে আরও একটি ‘সাউথ আমেরিকান সুপার ক্ল্যাসিকো’ অপেক্ষা করছে। বাংলাদেশ সময় বুধবার সকাল ৬টায় বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। দুর্ভাগ্য এই যে বাংলাদেশ থেকে কোনো টেলিভিশন চ্যানেলে ম্যাচটি দেখা যাবে না, তবে বিশ্বফুটবলের আকণ্ঠ পিপাসা যাদের, তারা জানেন মধ্যপ্রাচ্যের কোন কোন স্পোর্টস হাব সাইটে খেলা দেখা যায়। তারা এটাও জানেন আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের এই দ্বৈরথে পয়েন্টের অঙ্কটাই বা কি? ঘরের মাঠে ব্রাজিলকে হারাতে পারলেই ২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিট হাতে চলে আসবে আর্জেন্টিনার। ম্যাচটি ড্র করলেও অবশ্য ২৯ পয়েন্ট নিয়ে টিকিট মিলবে। আর ব্রাজিল জিতলে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে লাতিন তালিকার দ্বিতীয়তে চলে আসবে। ঘরের মাঠে ব্রাজিলকে হারিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা পরের বিশ্বকাপের টিকিট নিয়ে বিশেষ উদযাপন করতে চায়। বুয়েন্স আয়ার্সের স্তাদিও মনুমেন্টাল স্টেডিয়ামের গ্যালারির প্রায় ৮৫ হাজার টিকিট এরই মধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে। ঢাকঢোল সঙ্গে নিয়ে গ্যালারিতে তারা ‘ভামোস ভামোস আর্জেন্টিনা...’ সুর তুলতেও তৈরি। তবে ব্রাজিলিয়ান তারকা রাফিনিয়াহ ব্রাসিলিয়া থেকেই তাদের এই আয়োজন মাটি করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে রেখেছেন। ‘আমরা যাচ্ছি তাদের মাঠে তাদেরকে হারাতে।’ আসলে বছর দুই আগে এই আর্জেন্টিনার কাছেই মারাকানায় হার কষ্ট দিয়েছিল ব্রাজিলকে। ‘মারাকানায় সেদিন ওটামেন্ডির গোলে আমাদের সব পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। সেদিন আমিও খেলেছিলাম কিন্তু দলের জন্য কিছু করতে পারিনি। তবে এবার সুযোগ এসেছে আর্জেন্টাইনদের সামনে তাদের মাঠে তাদের দলকে হারানোর।’ রাফিনিয়াহর এ আত্মবিশ্বাসের কারণ আগের ম্যাচেই কলম্বিয়ার বিপক্ষে গোল পেয়েছিলেন তিনি। ফর্মে আছেন তাঁর সঙ্গী ভিনিসিয়ুসও। বার্সা ও রিয়ালের এই দুই তারকাকে নিয়েই ব্রাজিল উজ্জ্বল। গৌরবময় অতীতের সঙ্গে বতর্মানটাও স্মরণীয় করে রাখতে চান তারা। তবে ব্রাজিলিয়ানদের এমন হুঙ্কারে ভয় পাওয়া দল নয় আর্জেন্টিনা। ‘প্রতিপক্ষ যে-ই হোক আমরা একই মানসিকতা নিয়েই খেলতে চাই। পেরু ও বলিভিয়াকে আমরা যেমন সম্মান জানিয়ে ও দায়িত্ব নিয়ে খেলেছি, ব্রাজিলের বিপক্ষেও তাই করব।’ বক্তার নাম এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। পয়েন্ট তালিকার পাঁচ নম্বর দলকে তিনি ৭ ও ৯ নম্বর দলের মতো করেই দেখছেন!

তামিমকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছেন সাকিবের বাবা-মা
তামিম ইকবালকে দেখতে সাভারের কেপিজে হাসপাতালে গিয়েছেন সাকিব আল হাসানের বাবা মাশরুর রেজা এবং মা শিরীন আক্তার। আজ মঙ্গলবার তারা হাসপাতালে যাবেন বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিপিএল সমন্বয়কারী সাব্বির আহমেদ রুবেল। জানিয়েছেন সাকিবের বাবা-মা’য়ের হাসপাতালে আসার খবরটি সত্যি। একপ্রকার 'মৃত্যুর দুয়ার' থেকে ফিরে এসেছেন তামিম। তবে এখনো শঙ্কা পুরোপুরি কাটেনি। সাবেক এই অধিনায়কের জন্য প্রার্থনায় স্বজন, ভক্ত-সমর্থক থেকে শুরু করে গোটা দেশের মানুষ। দীর্ঘ সময় একসঙ্গে বাইশগজে দেশের প্রতিনিধিত্ব করা সতীর্থের জন্য দোয়া চেয়ে নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট করেছিলেন টাইগার অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। গতকাল (সোমবার) রাতে এক পোস্টে সাকিব লিখেছেন, “আজ আমার জন্য বিশেষ দিন, কিন্তু মনটা পুরোপুরি আনন্দে নেই, কারণ আমার প্রিয় সতীর্থ ও বন্ধু তামিম ইকবাল অসুস্থ। মাঠে আমরা একসঙ্গে অনেক লড়াই করেছি, অনেক স্মৃতি রয়েছে, আর সবসময় চাইব আমাদের এই পথচলা আরও দীর্ঘ হোক।” তামিমের সুস্থতা কামনা করে সাকিব আরও লিখেছেন, “তামিম, তুমি বাংলাদেশের ক্রিকেটের অন্যতম বড় শক্তি। তোমার দ্রুত সুস্থতা ও মাঠে ফিরে আসার জন্য দোয়া করছি। ইনশাআল্লাহ, তুমি খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসবে।’ “তামিমের জন্য আপনার দোয়াই হবে, আমার জন্মদিনের সেরা উপহার। দোয়া করবেন—আমার ভাই তামিম যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে আবার মাঠে ফিরতে পারে।”- যোগ করেন সাকিব। প্রসঙ্গত, প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ খেলতে নেমে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তামিম ইকবাল। বুকে ব্যথা নিয়ে সাভারের কেপিজে স্পেশালাইজড হাসপাতালে যান। পরে জানা যায়, দুবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে তামিমের। হার্টে ব্লক ধরা পড়ার পর রিংও পরানো হয়েছে। সর্বশেষ জানা যায়, কিছুটা উন্নতির দিকে তামিম ইকবালের শারীরিক পরিস্থিতি। পরিবারের সদস্যদের ডাকে সাড়াও দিয়েছেন। তবে এখনও পুরোপুরি শঙ্কামুক্ত নন তিনি। আরও ৪৮ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রাখছেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।