
পাকিস্তানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন
পাকিস্তানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে ইসলামাবাদে একটি পাঁচতারকা হোটেলে বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা ও নৈশভোজের আয়োজন করা হয়।বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. ইকবাল হোসেন খান ও তার সহধর্মিণী নাহিদ রওশন এবং হাইকমিশনের কর্মকর্তারা অতিথিদের অভ্যর্থনা জানান। পাকিস্তান সরকারের পক্ষে প্রতিরক্ষাবিষয়ক ফেডারেল মন্ত্রী খাজা মোহাম্মদ আসিফ প্রধান অতিথি ছিলেন অনুষ্ঠানে। আরও কয়েকজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, সিনেটর ও জাতীয় পরিষদের সদস্য, প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য, প্রবাসী বাংলাদেশিসহ পাঁচ শতাধিক অতিথি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, পর্যটন ও কৃষ্টি তুলে ধরে ব্যানার, স্ট্যান্ডিজ, লোকজশিল্প পণ্য, ফুল ও আলোকসজ্জায় সুসজ্জিত করা হয় অনুষ্ঠানস্থলটি। অতিথিরা বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি সমৃদ্ধ ব্যানার, স্ট্যান্ডিজ ও ভিডিও ইত্যাদি অত্যন্ত আগ্রহ নিয়ে দেখেন। অনুষ্ঠানে সবাইকে স্বাগত জানিয়ে মো. ইকবাল হোসেন খান মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি এবং জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। হাইকমিশনার বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার সম্পর্ক জোরদারে উভয় দেশের জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের ওপর আলোকপাত করেন। পাশাপাশি তিনি দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যকার সম্পর্ক উন্নয়নে সবাইকে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন। খাজা মোহাম্মদ আসিফ শুভেচ্ছা বক্তব্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের সরকার ও জনগণকে অভিনন্দন জানান। তিনি বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির প্রশংসা করেন। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, ঐতিহাসিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে এ সম্পর্ক আরও জোরদার করার মাধ্যমে দুই দেশের মানুষের উন্নয়ন সহযোগিতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন খাজা মোহাম্মদ আসিফ।

নারায়ণগঞ্জ জেলা সমিতি উত্তর আমেরিকার বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে মিলনমেলা
নারায়ণগঞ্জ জেলা সমিতি উত্তর আমেরিকা আয়োজিত বাংলা বর্ষবরণ ১৪৩২ ও পিঠা উৎসব পরিণত হয় মিলনমেলায়। গত শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) রাতে নিউইয়র্ক সিটির নাগরিক জীবনের কোলাহল ভুলে প্রবাসী নারায়ণগঞ্জবাসীরা মেতেছিল ইলিশ-পান্তা-পিঠা ভোজন আর নাচ-গানের মনোজ্ঞ আয়োজনে। জ্যাকসন হাইটসের সানই পার্টি হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মোস্তফা জামাল টিটু এবং অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন টিটু ও সাংবাদিক দর্পণ কবীর। অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে ছিল আলোচনা সভা। সভায় বক্তব্য দেন সংগঠনের সিনিয়র উপদেষ্টা কাজী আজাহারুল হক মিলন, সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ মতিউর রহমান, সিনিয়র উপদেষ্টা মোহাম্মদ মোহসীন, সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ আলী, উপদেষ্টা শামসুল আলম লিটন, সাবেক সভাপতি মির্জা ফরিদ উদ্দিন, উপদেষ্টা মনজুরুল করিম, উপদেষ্টা মহসিন ননী, উপদেষ্টা নাসির উদ্দিন আহমেদ চঞ্চল।বক্তারা প্রবাসী নারায়ণগঞ্জবাসীদের নিজেদের মধ্যে সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি ধরে রাখার আহ্বান জানান এবং নতুন প্রজন্মকে নিজেদের কৃষ্টি ও সংস্কৃতির চর্চা এবং বাংলা ভাষায় কথা বলার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার কথা বলেন। এ ক্ষেত্রে অভিভাবকদের বিশেষ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তারা। সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এই বর্ণাঢ্য বাংলা বর্ষবরণ ও পিঠা উৎসব আয়োজন সফল করতে বিশেষ ভূমিকা রাখার জন্য সংগঠনের পৃষ্ঠপোষক মোশতাক আহমেদ নিউটন, রাফাত হোসেন, এসএম সায়েম মিঠু, আশিক ইসলাম কবির ও দোলন খন্দকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। নারীরা লাল পাড়ের শাদা শাড়ি এবং পুরুষরা একই রঙের পাঞ্জাবী পড়ে অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ায় মিলনায়তনে বর্ণিল পরিবেশ তৈরি হয়। অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জের বিশিষ্ট ব্যক্তি ছাড়াও আমন্ত্রিত অতিথি হিসাবে বেশ কয়েকজন সুধী ও কমিউনিটি নেতা উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলেন বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আলম ও জামাইকা এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি আহসান হাবিব। এই অনুষ্ঠানে নিউইয়র্ক শহর ছাড়াও নিউজার্সী, আপস্টেট ও লং আইল্যান্ড থেকে প্রবাসী নারায়ণগঞ্জবাসী এসে যোগ দেন।অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক পর্বে সঙ্গীত পরিবেশন করেন মোহাম্মদ ওয়াসুদ্দিন, শাহ মাহবুব, নিপা জামান ও মির্জা ফরিদ উদ্দিন।

লন্ডনে বিয়ের অনুষ্ঠানে আ.লীগের পলাতক মন্ত্রী-এমপিদের যোগদান
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হলে দলটির মন্ত্রী-এমপিরা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। পালিয়ে যাওয়ার কয়েক মাস পর থেকে বিভিন্ন দেশে প্রকাশ্যে আসতে থাকেন দলটির শীর্ষ নেতারা। ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন সাবেক মন্ত্রী-এমপি ও শীর্ষ নেতা প্রকাশ্যে এসেছেন। তারা সেখানে নানা অনুষ্ঠান ও দলীয় কর্মসূচিতে অংশও নিচ্ছেন। এবার বাংলাদেশ থেকে পালানো মন্ত্রী-এমপিরা যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমানের ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। লন্ডনের ওটু এরিনার প্রেস্টিজিয়াস ইন্টার কন্টিনেন্টাল হোটেলে বিয়ের অনুষ্ঠানে ২০ এপ্রিল সন্ধ্যায় যোগ দেন আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ, সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান, সাবেক প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী, সাবেক নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সিলেট-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব। জানা যায়, বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া মন্ত্রী-এমপিরা বেশ হাসিখুশি ছিলেন। তারা বিয়েতে আসা নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন, অনেকের সঙ্গে ছবিও তোলেন। এর আগে পালিয়ে যাওয়া এসব এমপি-মন্ত্রীদের কারো কারো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার ও হোটেল-রেস্তোরাঁয় আড্ডার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল।

পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষ হিসেবে স্বীকৃতি পেল আটলান্টিক সিটিতে
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সি রাজ্যের আটলান্টিক সিটিতে পহেলা বৈশাখকে বাংলা নববর্ষ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে অনুষ্ঠিত সিটি কাউন্সিলের সভায় পহেলা বৈশাখকে বাংলা নববর্ষ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার লক্ষ্যে প্রস্তাব আনা হয়। সভায় অংশগ্রহণকারী কাউন্সিল সদস্যরা এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিলে সর্বসম্মতিক্রমে তা গৃহীত হয়। সভায় আটলান্টিক সিটির মেয়র মার্টি স্মল, কাউন্সিল সভাপতি এ্যারন রেনডলফ, সহ সভাপতি কলিম শাহবাজ, লা টয়া ডান্সটন, এ্যানিমেল ক্রাউচ, মারিয়া লাকা, জেসি কার্টজ, জর্জ টিবিট, স্টিফেনি মার্শাল, পেট্রিসিয়া বেইলি উপস্থিত ছিলেন। সিটি কাউন্সিলে পহেলা বৈশাখকে বাংলা নববর্ষ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় কমিউনিটিতে আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। পহেলা বৈশাখকে বাংলা নববর্ষ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব সাউথ জার্সির সভাপতি মো. জহিরুল ইসলাম বাবুল, সাধারণ সম্পাদক মো. জাকিরুল ইসলাম খোকা, ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আব্দুর রফিক, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব আটলান্টিক কাউন্টির সভাপতি শহীদ খান, সাধারণ সম্পাদক সোহেল আহমদ ও আটলান্টিক সিটি স্কুল বোর্ড সদস্য সুব্রত চৌধুরী আটলান্টিক সিটির মেয়রসহ সিটি কাউন্সিলের সদস্যদের অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

তিন দিনব্যাপী নিউইয়র্ক রিহ্যাব এক্সপো শুরু ২২ আগস্ট
আগামী ২২-২৪ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের লাগার্ডিয়া ম্যারিয়ট হোটেলে অনুষ্ঠিত হবে ‘নিউইয়র্ক রিহ্যাব এক্সপো ২০২৫’। এই এক্সপো দেশীয় রিয়েল এস্টেট ডেভেলপারদের সঙ্গে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সেতুবন্ধন তৈরি করবে বলে প্রত্যাশা করছেন আয়োজকরা। এক্সপো উপলক্ষে সম্প্রতি ভেন্যু পরিদর্শন করেছেন রিহ্যাাব ফেয়ার স্ট্যান্ডিডং কমিটির আন্তর্জাতিক চেয়ারম্যান মো. আলিম উল্লাহ, কো-চেয়ারম্যান ইমদাদুল হক। তাদের সঙ্গে ছিলেন আয়োজক প্রতিষ্ঠান রাহিন অ্যান্ড রুহান এলএলসির প্রতিনিধিরাও। তারা অনুষ্ঠানের স্থান পরিদর্শনের পাশাপাশি স্থানীয় কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব, নিউ ইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্ট, সাংবাদিক ও বাংলাদেশি প্রেস ক্লাবের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরিদর্শন শেষে ইমদাদুল হক বলেন, ‘এই এক্সপোর মূল লক্ষ্য হচ্ছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেশীয় সম্পত্তি খাতে যুক্ত করা, যেন তারা বিনিয়োগ করতে পারেন এবং বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক আরও গভীর হয়।’ নিউইয়র্ক রিহ্যাব এক্সপো ২০২৫-এ অংশ নেবে বাংলাদেশের বিভিন্ন নামকরা রিয়েল এস্টেট কোম্পানি, যারা তাদের প্রকল্প ও বিনিয়োগ পরিকল্পনা তুলে ধরবেন। এছাড়া এক্সপোতে থাকবে সেমিনার, আইনি পরামর্শ, অর্থনৈতিক পরিকল্পনা এবং সংস্কৃতিক পরিবেশনা- যা প্রবাসী জীবন ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি আবেগঘন সংযোগ তৈরি করবে। কমিউনিটির একজন প্রবীণ সদস্য বলেন, ‘অনেকেই মনে মনে দেশে ফিরে যাওয়ার বা বিনিয়োগ করার কথা ভাবেন। কিন্তু উপযুক্ত প্ল্যাটফর্মের অভাবে পিছিয়ে থাকেন। এই এক্সপো সেই অভাব পূরণ করবে।’ আগামী আগস্ট মাসের এই তিন দিন ব্যাপী আয়োজনের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলার আশা করছেন আয়োজকেরা। খুব শিগগিরই অংশগ্রহণ ও নিবন্ধনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে বলে জানা গেছে। বাংলাদেশ ও প্রবাস- এই দুই জগতকে এক সুতোয় গেঁথে দিতে প্রস্তুত হচ্ছে নিউইয়র্ক। আর সেই গল্পের অন্যতম মঞ্চ হতে চলেছে লা গার্ডিয়া ম্যারিয়ট হোটেল।

সহস্রকণ্ঠে বিশ্ববাঙালির বর্ষবরণ: নিউইয়র্ক পরিণত হল একখণ্ড বাংলাদেশে
১৪৩২ বঙ্গাব্দ স্মরণকালের বিস্ময় নিয়ে আবিভূর্ত হলো নিউইয়র্ক শহরে। দুই দিনের বর্ষবরণ উৎসব বাঙালি জাতির পরম আরাধ্য ও চরম প্রাপ্তির বৈকুণ্ঠময় অনুভবের স্মারক হয়ে থাকল। যেন একখণ্ড বাংলাদেশ বিশ্ববাসীকে জানান দিল আমাদের জীবনও আনন্দময়। ইতিহাস ও ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ আমাদের বাঙালি সংস্কৃতি। জ্যাকসন হাইটসে ৫০হাজার মানুষের জমায়েত মঙ্গলশোভাযাত্রাকে করে তুলেছিল নীল আকাশে সাদা মেঘের পেখম তুলে ধাবমান বলাকার প্রাণিত আলোকশিখা। তবে আগের দিন বৃষ্টিস্নাত দিনে টাইমস স্কয়ারও হয়ে উঠছিল বৈশাখের রঙিন দিবসের গীতাঞ্জলি। প্রথম দিনে শনিবার (১২ এপ্রিল) সহস্র বাঙালি একত্রিত হয়ে সুরে-সঙ্গীতে-নৃত্যে পালন করেছে তাদের প্রাণের উৎসব বাংলা নববর্ষ। ওই দিন উৎসবে উপস্থিত ছিলেন থাইল্যান্ড, নেপাল, ভুটানের কনসাল জেনারেলবৃন্দ। একইসঙ্গে বহু দেশ ও জাতির মানুষ উপস্থিত থেকে বাংলা বর্ষবরণ উৎসব পালন করেন, যা রূপ নেয় আন্তর্জাতিকতায়। উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের বাইরে বিশ্বব্যাপী বাঙালিদের বৃহত্তম সমাবেশ হয় নিউইয়র্ক শহরেই। গত দুই বছরের মতো এবারও দুই দিনের অনুষ্ঠানের প্রথম দিনটি অর্থাৎ ১২ এপ্রিল টাইমস স্কয়ারে এবং রোববার (১৩ এপ্রিল) জ্যাকসন হাইটসের ডাইভার্সিটি প্লাজায় পালিত হয় বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উৎসব। এবারের উৎসব উৎসর্গ করা হয়েছে ‘ছায়ানটে’র সভাপতি ও সংস্কৃতি-সাধক সদ্য প্রয়াত প্রফেসর ড. সনজীদা খাতুনকে । বিশ্ববাঙালির আয়োজনে দুই দিনব্যাপি এ অনুষ্ঠানে ছিল গান-নৃত্য, মঙ্গল শোভাযাত্রা ও বৈশাখী মেলা। যেখানে শতকণ্ঠে শিশুরা গান গেয়ে এবং সহস্রকণ্ঠে বড়দের সুর এবং গানে বরণ করে নেওয়া হয় বাংলা বছরের প্রথম দিনটিকে। আয়োজক সংগঠনের প্রচেষ্টায় দীর্ঘদিনের মহড়া ও নিবিড় অনুশীলনের মধ্য দিয়ে প্রস্তুত করা হয় সকলকে। অনুষ্ঠানের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ ছিল মহীতোষ তালুকদার তাপসের নেতৃত্বে ‘সহস্র কণ্ঠে বর্ষবরণ’। ১ হাজারেরও বেশি শিল্পী একসঙ্গে মিলিত হয়ে সম্প্রীতি, আনন্দ এবং মাতৃভূমির প্রতি ভালবাসার গান গেয়েছেন নিউইয়র্কের মাটিতে। এছাড়াও, এই বছর একটি বিশেষ অনুষ্ঠান ছিল ‘হাজার বছরের বাংলা গানের গল্প’। কল্লোল বসুর পরিকল্পনায় এই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন অঞ্চলের ১০০ জন শিল্পী হাজার বছর ধরে বিস্তৃত এবং বহুবিধ সাংস্কৃতিক প্রভাবে প্রভাবিত বাংলা গানের ৩২টি ধারাকে তুলে ধরেন। পরিবেশনায় ছিল- ডায়াস্পোরা ইনক, কল্লোল, মৈত্রী, সিংগিং বার্ডস, সৃষ্টি একাডেমি, অনুপ দাস ডান্স একাডেমি প্রভৃতি। নৃত্যে ছিলেন- চন্দ্রা ব্যানার্জি ও সম্প্রদায়। এছাড়া, তাজলি, কৃষ্ণা তিথি, রেশমি প্রতীক, শাহ মাহবুব এবং মণিপুরি নৃত্যে জগন্নাথ ও সম্প্রদায় সংযুক্ত পরিবেশনায় মুখরিত ছিল টাইমস স্কয়ার। বলাবাহুল্য, কণ্ঠশিল্পী মহীতোষ তালুকদার তাপসের নেতৃত্বে শত কণ্ঠ থেকে সহস্রকণ্ঠের এই বর্ষবরণ বাঙালি সংস্কৃতির পালকে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এর সঙ্গে খ্যাতিমান রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা’র সুরেরধারা যুক্ত হয় উৎসবের সঙ্গে। বর্ষবরণ উৎসবে একই রকম শাড়ি ও পাঞ্জাবি পরে নারী-পুরুষের বর্ণিল পরিবেশনায় বাংলার জয় ঘোষণা করা হয়েছে। ১৪৩২ বঙ্গাব্দের বর্ষবরণের বিশেষত্ব হলো বহুমাত্রিকতা। সহস্রকণ্ঠের পরিবেশনায় ছিল নতুনত্ব; সঙ্গে নিউইয়র্ক রাজ্যসরকারের ক্যালেন্ডারে ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখের স্বীকৃতি এবং এশিয়ার কৃষিপ্রধান নয়টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশসহ ভারত, নেপাল, থাইল্যান্ড, শ্রীলংকার কনসাল জেনারেল ও তাদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা নিঃসন্দেহে বৈচিত্র্য এনেছে প্রবাসী বাঙালিদের সর্ববৃহৎ এই আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে। নিউইয়র্ক টাইমস স্কয়ারে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বিকেল পাঁচটার পর ঘটে উৎসাহব্যঞ্জক ও স্মরণীয় ঘটনা। এনআরবি ওয়ার্ল্ডওয়াইডের পক্ষ থেকে দুইজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে আজীবন সম্মাননা পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। তারা হলেন বিশিষ্ট পণ্ডিত, বিজ্ঞানী, উদ্ভাবক, উদ্যোক্তা এবং সমাজসেবী ড. পরিতোষ এম. চক্রবর্তী এবং অপরজন ডাক্তার মুহাম্মদ এস. চৌধুরী, যিনি মানব সেবা ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতি এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের ক্ষমতায়নে নিবেদিতপ্রাণ। ব্যতিক্রমী এই পুরস্কার নববর্ষ উৎসবকে ভিন্ন মাত্রা প্রদান করেছে। নিউইয়র্ক টাইমস স্কয়ারে বর্ষবরণ শুরু হয়েছিল ২০২৩ সালে। দৃশ্যত বাস্তবতা হলো, ২০২৫ সালে এসেই উৎসবটি আন্তর্জাতিক মহিমা অর্জন করেছে। বলাবাহুল্য, বাংলা বর্ষবরণের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এ বছরের উদযাপনকে অনেক বেশি তাৎপর্যমণ্ডিত করেছে; পরিণত হয়েছে বৈশ্বিক উৎসবে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে ১৪ এপ্রিলকে বাংলা নববর্ষের স্বীকৃতি দিয়ে অঙ্গরাজ্যের রাজধানী আলবেনিতে গভর্নর অফিস বাঙালি জাতির সবচেয়ে বড় এই উৎসবকে ২৮ এপ্রিল উদযাপন করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নিউইয়র্কে মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের অনুরোধে সিনেটর লুইস সেপুলভেদার ১৫ জানুয়ারি প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে অঙ্গরাজ্যের আইনসভার অধিবেশনে গত ২২ জানুয়ারি আইনপ্রণেতারা সর্বসম্মতিক্রমে বাংলা নববর্ষ উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। রেজুলেশনে উল্লেখ করা হয়, ১৪ এপ্রিল, অর্থাৎ বাংলা বছরের প্রথম মাসের প্রথম দিন পয়লা বৈশাখকে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে বাংলা নববর্ষ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হলো। এই অঙ্গরাজ্যের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের স্বীকৃতি হিসেবে এবং এই রাজ্যে বসবাসরত বিভিন্ন কমিউনিটির মধ্যে সম্প্রীতি দৃঢ় করার লক্ষ্যেই এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। টাইমস স্কয়ারে রেজুলেশনটি (১২ এপ্রিল )পাঠ করে শ্রোতৃমণ্ডলীকে শোনানো হয়। বলাবাহুল্য, অভিবাসী জীবনের লড়াইটা কেবল অন্ন সংস্থানের জন্য নয় বরং বাঙালি জাতির যা কিছু অহংকারের সামগ্রী তা সামনে নিয়ে এগিয়ে চলার লড়াইও। এই লড়াই নিজেদের সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার নিরন্তর সংগ্রামে উদ্দীপিত। আর এই আনন্দ উজ্জীবনের স্বাক্ষর রয়ে গেল ১৪৩২ বঙ্গাব্দের নববর্ষ উদযাপনের মধ্য দিয়ে। আয়োজক এনআরবি ওয়ার্ল্ডওয়াইড টিকে থাকুক বাঙালির রক্ষাকবচ হিসেবে। উদ্যোক্তাদের দাবি, ১৩ এপ্রিল কেবল জ্যাকসন হাইটসের ডাইভার্সিটি প্লাজায় প্রায় ৫০ হাজার বাঙালি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। আয়োজকদের কথায়, এই উদযাপনের মূল উদ্দেশ্য বৃহত্তর প্রবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে বাংলা সংস্কৃতির প্রকৃত বার্তা পৌঁছে দেওয়া। মুক্তধারা এবং এনআরবি ওয়ার্ল্ডওয়াইড সভাপতি বিশ্বজিত সাহার কথায়, ‘এই উৎসব বিশ্ব বাঙালির ঐক্য ও ভাষার প্রতি ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ।’

যুক্তরাষ্ট্রের মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল একাডেমিসের কমিটিতে বাংলাদেশের বাহাউদ্দিন
যুক্তরাষ্ট্রের মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল একাডেমিস অব সায়েন্সেস, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড মেডিসিনের (ন্যাশনাল একাডেমিস–এনএএসইএম) একটি কমিটির সদস্য নির্বাচিত ও নিযুক্ত হয়েছেন বাংলাদেশের সৈয়দ বাহাউদ্দিন আলম। বাহাউদ্দিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয় অ্যাট আর্বানা-শ্যাম্পেইনের (ইউআইইউসি) দ্য গ্রেঞ্জার কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের নিউক্লিয়ার, প্লাজমা অ্যান্ড রেডিওলজিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। ইউআইইউসির ওয়েবসাইটের তথ্যানুসারে, তিনি বিভাগটির দ্বিতীয় শিক্ষক, যিনি এ কমিটিতে নির্বাচিত ও নিযুক্ত হয়েছেন। বাহাউদ্দিনের ঝুলিতে এ বছর আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন যোগ হয়েছে। তিনি ইউআইইউসির দ্য গ্রেঞ্জার কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ২০২৫ সালের ‘ডিনস অ্যাওয়ার্ড ফর এক্সিলেন্স ইন রিসার্চ’ লাভ করেছেন। গত জানুয়ারিতে এনএএসইএমের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক (এআই) ‘ফাউন্ডেশন মডেলস ফর সায়েন্টিফিক ডিসকভারি অ্যান্ড ইনোভেশন: অপরচুনিটিস অ্যাক্রস দ্য ডিপার্টমেন্ট অব এনার্জির ১১ সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন বাহাউদ্দিন। নির্বাচিত ও নিযুক্ত হওয়ার তথ্য গত ২৮ ফেব্রুয়ারি নিজের ফেসবুকে জানান তিনি। একই দিন ইউআইইউসির ওয়েবসাইটে এই নিযুক্তির খবর প্রকাশ করা হয়েছে। এনএএসইএমের ওয়েবসাইটে এ কমিটির তালিকায় ইতিমধ্যে বাহাউদ্দিনের নাম উঠেছে। ন্যাশনাল একাডেমিসের ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, এ কমিটির দায়িত্ব হলো, জ্বালানিবিষয়ক গবেষণায় এআইভিত্তিক ফাউন্ডেশন মডেলের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি অন্বেষণ করা। বিশেষ করে মার্কিন সরকারের জ্বালানি দপ্তরের (ডিপার্টমেন্ট অব এনার্জি) জন্য এই প্রযুক্তির উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ নিয়ে কাজ করা। কমিটি এ বিষয়ে মার্কিন জ্বালানি দপ্তরের পরামর্শক হিসেবে কাজ করে। কমিটিতে ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়া, ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়াসহ শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞ-গবেষকেরা রয়েছেন। বাহাউদ্দিনের ঝুলিতে এ বছর আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন যোগ হয়েছে। তিনি ইউআইইউসির দ্য গ্রেঞ্জার কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ২০২৫ সালের ‘ডিনস অ্যাওয়ার্ড ফর এক্সিলেন্স ইন রিসার্চ ফর অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর’ লাভ করেছেন। দ্য গ্রেঞ্জার কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধীন ১২টি প্রকৌশল বিভাগ আছে। প্রতিবছর ১২টি বিভাগ থেকে অসামান্য গবেষণার জন্য চার থেকে পাঁচজন সহকারী অধ্যাপককে এ পুরস্কার দেওয়া হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির গত ৪ মার্চের ঘোষণা অনুযায়ী, এবারের এ তালিকায় স্থান পেয়েছেন বাহাউদ্দিন। বাহাউদ্দিন তাঁর এনার্জি-এআই নিয়ে বর্তমান গবেষণা প্রসঙ্গে বলেন, ‘এআইয়ের বিকাশ ঘটিয়ে পারমাণবিক শক্তি ব্যবস্থায় (নিউক্লিয়ার এনার্জি সিস্টেম) পাইপ, কেব্ল, তাপমাত্রা- সব রিয়েল টাইমে (তাৎক্ষণিক) ঠিক আছে কি না, তা দেখছেন। নিউক্লিয়ার সিস্টেমে এআই, ডিজিটাল টুইন ও রিয়েল-টাইম প্রযুক্তির মাধ্যমে এমন সব গুরুত্বপূর্ণ প্যারামিটার শনাক্ত করা যায়, যেগুলো সাধারণত দুর্গম বা সরাসরি পরিমাপযোগ্য নয়, কিন্তু মিলিসেকেন্ডের মধ্যে জানা সম্ভব।’ বাহাউদ্দিন চট্টগ্রামের ছেলে। তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক করেন। আর ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। বাহাউদ্দিন ঝুঁকিমুক্ত পারমাণবিক শক্তির (নিউক্লিয়ার এনার্জি) বিশ্ব গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখছেন। এনএএসইএমের কমিটিতে যুক্ত হওয়ার বিষয়টি তাঁকে জাতীয় নীতি ও গবেষণায় এআই ও এনার্জির সংযোগস্থলে প্রভাবিত করার সুযোগ তৈরি করে দেবে বলে মনে করছেন তিনি। শৈশবে ঘন ঘন বিদ্যুৎ-বিভ্রাটের মুখোমুখি হওয়ায় বাহাউদ্দিনের মনে ‘এনার্জি’ সমস্যার সমাধানের তাগিদ জন্মায়। পরে তিনি যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে মাস্টার্স ও পিএইচডি করেন। যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, দক্ষিণ কোরিয়ায় তিনি গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করেন। বাহাউদ্দিন প্রথমে শিক্ষকতা শুরু করেন যুক্তরাষ্ট্রের মিজৌরি ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে। সেখানে তিনি মেশিন লার্নিং অ্যান্ড আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ফর অ্যাডভান্সিং নিউক্লিয়ার সিস্টেম (মার্শান্স) নামের একটি গবেষণাগার প্রতিষ্ঠা করেন, যা বর্তমানে ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয়ে অবস্থিত। গবেষণাগারটি মূলত ডিজিটাল টুইন প্রযুক্তি ও রিয়েল টাইম পূর্বাভাস অ্যালগরিদম নিয়ে কাজ করে। এ গবেষণার মূল উদ্দেশ্য ব্যাখ্যাযোগ্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, পূর্বাভাসমূলক রক্ষণাবেক্ষণ ও অনলাইন নিরীক্ষণ ব্যবস্থা তৈরি করা। ২০১৯ সালের শেষ দিকে বাহাউদ্দিন যুক্তরাষ্ট্রে থিতু হন। সেখানে তাঁর পরিবারে আছেন দুই সন্তানসহ স্ত্রী তোহফাতুর রিদওয়ান। ছয় বছর বয়সী মেয়েসন্তানের নাম ইকরা সৈয়দা, আর এক বছর বয়সী ছেলেসন্তানটির নাম ইবাদ সৈয়দ। বাংলাদেশে বাহাউদ্দিনের বাবা, মা ও ছোট বোন আছেন। বাহাউদ্দিন বলেন, ‘পরিবার, বিশেষ করে তাঁর এ পর্যায়ে আসার পেছনে স্ত্রী অনেক সহায়তা করেছেন। বাবা-মা-বোন, শ্বশুর-শাশুড়ি-শ্যালিকাসহ অন্যদের অবদানও অনস্বীকার্য। যুক্তরাজ্যে পিএইচডি করে যুক্তরাষ্ট্রের একটি মর্যাদাসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পাওয়াটা অনেক চ্যালেঞ্জের ছিল। অন্যদিকে করোনা মহামারির সময় যুক্তরাষ্ট্রে থিতু হওয়াটাও কঠিন ছিল।’ বাহাউদ্দিন ঝুঁকিমুক্ত পারমাণবিক শক্তির (নিউক্লিয়ার এনার্জি) বিশ্ব গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখছেন। এনএএসইএমের কমিটিতে যুক্ত হওয়ার বিষয়টি তাঁকে জাতীয় নীতি ও গবেষণায় এআই ও এনার্জির সংযোগস্থলে প্রভাবিত করার সুযোগ তৈরি করে দেবে বলে মনে করছেন তিনি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিষয়ে বাহাউদ্দিন বলেন, ‘শিশুকে যা শেখানো হবে, তাই শিখবে। খুব সহজভাবে বললে, এআইও অনেকটা তেমনি। এটিকে যেভাবে ব্যবহার করা হবে, সেভাবেই কাজ করবে। এআই প্রযুক্তি নিয়ে অনেক মানুষের মনে একধরনের আতঙ্কও কাজ করছে। তবে এটা বলা যায়, গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা এখন পর্যন্ত মানুষের হাতেই আছে, থাকবে।’ বাহাউদ্দিন বলেন, ‘আমার রিসার্চ গ্রুপের গবেষণায় আমরা একটি নতুন পদ্ধতি প্রস্তাব করেছি। যা পরমাণুশক্তি ব্যবস্থাগুলোকে নিরাপদ রাখতে অত্যাধুনিক মেশিন লার্নিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাৎক্ষণিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থাগুলো পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম। সাধারণত পারমাণবিক চুল্লির ভেতরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্যারামিটার পরিমাপ করা খুবই কঠিন। কারণ, সেগুলো অনেক সময় চরম প্রতিকূল পরিবেশে থাকে। আমাদের ডিজিটাল টুইন পদ্ধতিতে আমরা ভার্চ্যুয়াল সেন্সরের সাহায্যে তাপমাত্রা ও তাপমাত্রাপ্রবাহ-সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ অবস্থার পূর্বাভাস দিতে পারি, যা প্রচলিত কম্পিউটেশনাল ফ্লুইড ডায়নামিকস সিমুলেশনের তুলনায় প্রায় ১ হাজার গুণ দ্রুত ফলাফল দিতে সক্ষম। যেটা আগের মতো প্রতিটি স্থানে ফিজিক্যাল সেন্সর বসানোর প্রয়োজনীয়তা কমিয়ে দেয়।’ বাহাউদ্দিন জানালেন, তাঁর রিসার্চ গ্রুপের পিএইচডি গবেষক কাজুমা কোবায়াশি, ফরিদ আহমেদ, সমরেন্দ্র রয় ও ট্রেভর তালবট বর্তমানে এই গবেষণায় সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন। বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বাহাউদ্দিন বলেন, ‘ভাবুন, যেন আমাদের হাতে চুল্লির একটি ভার্চ্যুয়াল মানচিত্র আছে। যেটা থেকে আমরা রিয়েল টাইমে ফিডব্যাক পাচ্ছি। যেখানে ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় সেন্সর বসাতে হচ্ছে না। এতে শুধু পর্যবেক্ষণের গতি বাড়ে না, যথার্থতা ও নির্ভরযোগ্যতাও অনেক বেড়ে যায়। ফলে সম্ভাব্য সমস্যাগুলোকে আগেভাগেই শনাক্ত করা যায়। যা নিরাপত্তা ও দক্ষতা—উভয় দিক থেকেই বিশাল অগ্রগতি। এবং আমরা এটা নিয়ে কাজ করে চলেছি। এআই মানুষের তত্ত্বাবধানকে প্রতিস্থাপন করছে না। বরং এটি সিস্টেমের বিভিন্ন উপাদানের সম্ভাব্য ত্রুটি বা ব্যর্থতা আগেভাগেই নির্ণয় ও পর্যবেক্ষণের নতুন পথ তৈরি করছে।’ বাংলাদেশে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজের অনেক সুযোগ আছে, নানান কাজ হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন বাহাউদ্দিন। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জ্বালানি খাতে এএআই বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।

নিউইয়র্কে রেমিট্যান্স মেলায় বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নরকে অংশ না নেওয়ার আহ্বান
নিউইয়র্কে রেমিট্যান্স মেলায় অংশ না নিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে নিউইয়র্কের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। শনিবার (১২ এপ্রিল) জ্যাকসন হাইটসের একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নিউইয়র্ক ভিত্তিক দেশের অর্থ পাচারকারী একটি সিন্ডিকেট আগামী ১৯ ও ২০ এপ্রিল জ্যাকসন হাইটসের একটি রেস্টুরেন্টে রেমিট্যান্স মেলা আয়োজন করছে। ওই মেলায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর, ডেপুটি গভর্নর ড. মো. হাবিবুর রহমানসহ সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও শীর্ষ কর্মকর্তাদের অংশ না নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। আর যদি অনুরোধ উপেক্ষা করে অংশ নেওয়া হয় তাহলে সচেতন প্রবাসী বাংলাদেশিরা এই প্রচেষ্টা রুখে দিবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, প্রবাসী বাংলাদেশিরা অত্যন্ত উদ্বেগ ও সতর্কতার সঙ্গে লক্ষ্য করছেন যে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে দেশ ও প্রবাসে পতিত স্বৈরাচারের দোসররা এখনো দেশের স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডে সক্রিয়। দেশ বিদেশে ঘাপটি মেরে থাকা দেশের লুটেরারা নানাভাবে ফন্দি আঁটছে নতুন করে দেশ থেকে অর্থ পাচারের। আয়োজকরা বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ও বেসরকারি খাতের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করা হয় । সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এসব কর্মকাণ্ডে যারা সম্পৃক্ত তাদেরকে বিচারের আওতায় আনার জন্য অন্তবর্তীকালীন সরকারের নিকট আহ্বান জানায় । সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন দেলোয়ার হোসেন শিপন, ফাহাদ হোসেন, কাজী মোহাম্মদ হাসান সিদ্দিক, তানজিদ আহাম্মেদ, নাসির হোসেন, মামুনুর রশীদ। এছাড়াও কমিউনিটি নেতা গিয়াস আহামেদ, সাংবাদিক ড. ওয়াজেদ খান, মনির আহম্মেদ উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ, আগামী ১৯-২০ এপ্রিল নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে রেমিট্যান্স মেলার আয়োজন করা হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ বিভিন্ন ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন বলে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

মালয়েশিয়ায় ৯৮ বাংলাদেশিসহ ২৮৮ অভিবাসী গ্রেফতার
মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশনের সাঁড়াশি অভিযানে ৯৮ বাংলাদেশিসহ ২৮৮ জন অবৈধ অভিবাসী গ্রেফতার হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সেলাঙ্গর রাজ্যের কাজাং স্টপওভার সেন্টারে অভিযান চালিয়ে মোট ২৮৮ জন অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেফতার করা হয়। ইমিগ্রেশন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। মালয়েশিয়ান ইমিগ্রেশনের (অপারেশন) ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল জাফরি এমবক তাহা বিবৃতিতে জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটের দিকে ৯০টি প্রাঙ্গণসহ ছয়টি ব্লকে অভিযান চালানো হয়। অভিযানের সময় মোট ১০৩৫ জন ব্যক্তির কাগজপত্র পরীক্ষা করা হয়। যার মধ্যে ৭৮৫ জন বিদেশি এবং ২৫০ জন স্থানীয়। এর মধ্যে যাদের বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারদের মধ্যে ২৪২ জন পুরুষ এবং ৪৬ জন মহিলা রয়েছেন, যাদের বয়স ১৮ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। গ্রেফতারদের মধ্যে বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, মিয়ানমার, পাকিস্তান, নেপাল, ভারত, শ্রীলঙ্কা এবং সুদানের নাগরিক রয়েছেন। জাফরি বলেন, ‘এই এলাকায় এ ধরনের অভিযান প্রথমবারের মতো নয়। বরং ধারাবাহিকভাবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো অভিযান চালাবে।’

নিউ জার্সিতে সড়ক দুর্ঘটনায় মেয়েসহ প্রবাসীর মৃত্যু
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সি রাজ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় এক প্রবাসী বাংলাদেশি এবং তার আট বছর বয়সী মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। রোববার (৬ এপ্রিল) রাত সোয়া ১০টায় বার্লিংটন কাউন্টির ইন্টারস্টেট-২৯৫ মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন নিউ জার্সি পুলিশের মুখপাত্র জেফরি লেবরন। নিহত শরফু উদ্দিনের (৩৬) বাড়ি ফেনীর ফরহাদ নগরে। তার ৮ বছর বয়েসী মেয়ে রামিসাও মারা গেছে দুর্ঘটনায়। গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন শরফুর ২৬ বছর বয়েসী স্ত্রী। অচেতন অবস্থায় তিনি আছেন হাসপাতালে। নিউ জার্সির এলিজাবেথ সিটির বাসা থেকে এই পরিবার যাচ্ছিল পেনসিলভেইনিয়ার ডেলাওয়ার স্টেটে। প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে জেফরি লেবরন জানান, শরফু একটি ‘হিউনদাই টুসন’ গাড়ি চালাচ্ছিলেন, তার স্ত্রী ও মেয়ে ছিলেন প্যাসেঞ্জার আসনে। একই পথ ধরে চলা একটি হিউনদাই সান্তা ফে গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রচণ্ড বেগে রাস্তার পাশের গার্ডরেইলে ধাক্কা খেয়ে ফের মহাসড়কে উঠে আসে এবং শরফুর গাড়িতে সজোরে ধাক্কা দেয়। এরপর দুটো গাড়িই রাস্তা থেকে বেরিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা খায়। হিউনদাই সান্তা ফে গাড়িটি চালাচ্ছিলেন ২৯ বছর বয়েসী এক তরুণী, তিনি থাকেন ফ্লোরিডায়। তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থাও ভালো নয়। নিউ জার্সির বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যরা জানান, ফেনীতে এসএসসি ও এইচএসসি শেষ করে অভিবাসন ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে এসে নিউ জার্সিতে থাকতে শুরু করেন শরফু উদ্দিন। একটি ফাস্টফুডের দোকানের ম্যানেজার ছিলেন তিনি। বুধবার (৯ এপ্রিল) নিউ জার্সিতেই মেয়ে ও বাবাকে পাশাপাশি দাফন করা হয়। তার আগে তাদের জানাজায় অংশ নেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
.jpg)
নিউ ইয়র্কে মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতি প্রবাসীদের
বাংলা নববর্ষের আগমন ঘিরে প্রবাসী বাংলাদেশিরা যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে আয়োজন করতে যাচ্ছেন মঙ্গল শোভাযাত্রা। ‘অশুভের দুয়ারে শুনি জনতার রণধ্বনি’ এই স্লোগানে মুখরিত হয়ে আগামী শনিবার (১২ এপ্রিল) জ্যাকসন হাইটসে অনুষ্ঠিত হবে বর্ষবরণ উৎসব। এই আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে ‘সম্মিলিত বর্ষবরণ মঙ্গল শোভাযাত্রা উদযাপন পরিষদ’। শুক্রবার (৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করে প্রস্তুতির নানা দিক তুলে ধরেন পরিষদের সদস্য সচিব মুজাহিদ আনসারী। তিনি জানান, ইতোমধ্যে ৩০টিরও বেশি প্রবাসী সংগঠন শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণের জন্য তালিকাভুক্ত হয়েছে। আরও অনেকের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আয়োজনে স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতিও নেওয়া হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পরিষদের আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা ও কণ্ঠশিল্পী রথীন্দ্রনাথ রায় এবং উপদেষ্টা মণ্ডলীর সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদউল্লাহ। রথীন্দ্রনাথ রায় বলেন, ‘আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে বর্ষবরণ উপলক্ষ্যে একটি পোস্টার ও স্মারকগ্রন্থ প্রকাশের। নিউ ইয়র্কের এই শোভাযাত্রায় বাংলার লোকজ নকশা, মুখোশ ও মোটিফ তুলে ধরার চেষ্টা চলছে। অংশগ্রহণকারী সংগঠনগুলোর জন্য তৈরি করা হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী পোস্টার ও প্ল্যাকার্ড।’ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন সাগর লোহানী, সঞ্জীবন কুমার, রামদাস ঘরামী, আলী হাসান কিবরিয়া অনু, জাকির হোসেন বাচ্চু ও ওবায়দুল্লাহ মামুন।

নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়রের বাসভবনে বাংলাদেশীদের মিলনমেলা
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক এডামসের সরকারি বাসভবনে জাঁকজমকভাবে উদযাপিত হলো বাংলাদেশ হেরিটেজ ডে। সংবর্ধনা উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) গ্রেসি ম্যানশনের মেয়র ভবন পরিণত হয় বাংলাদেশীদের মিলনমেলায়। মেয়রের মূখ্য প্রশাসনিক কর্মকর্তা বাংলাদেশী-আমেরিকান মীর বাশার সবাইকে স্বাগত জানান। বাংলাদেশ হেরিটেজ ডে অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য মেয়রের প্রতি ধন্যবাদ জানান তিনি। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বাঙালীর অবিস্মরণীয় বিজয়গাথা নিয়ে অলোচনার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ছিলো বাঙালিয়ানা খাবারের পসরা । বিশ্বের রাজধানী বলে খ্যাত নিউ ইয়র্কের মেয়রের এই ধরনের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান অনেকে। বাংলাদেশীদের সাথে মেয়রের আন্তরিক সম্পর্কের প্রশংসা করেন তারা। রিসিপশনে বাংলাদেশিদের ভূয়সী প্রসংশা করেন মেয়র এরিক এডামস। তিনি বলেন, ‘সিটির উন্নয়নে বাংলাদেশিদের অবদান অনস্বীকার্য। জানান, এখনই সময় বিশ্বে সবচেয়ে শক্তিশালী দেশের শক্তিশালী সিটিতে নিজের ভয়েস তুলে ধরার …. অনুষ্ঠানে কমিউনিটি সেবায় বিশেষ অবদানের জন্য চারজন ব্যক্তির হাতে সম্মাননা তুলে দেন মেয়র।এ সময় বিভিন্ন শ্রেণী পেশার বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে দেশের সম্মান রক্ষায় বাংলাদেশী কমিউনিটি ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাবে, এমনটাই প্রত্যাশা করছেন সবাই ।

লন্ডনে খালেদা জিয়ার ‘পূর্ণাঙ্গ’ স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু
লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসকরা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ‘পূর্ণাঙ্গ’ স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডাক্তার এজেডএম জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘আজ বুধবার (২ এপ্রিল) থেকে ম্যাডামের পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু হয়েছে। আগামী চার দিন উনার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা হবে, লন্ডন ক্লিনিকের ডাক্তাররা বাসায় তাকে দেখতে আসবেন।’ ‘কিছু পরীক্ষার জন্য হয়তো উনাকে (খালেদা জিয়া) লন্ডন ক্লিনিকেও নিয়ে যাওয়া হবে। আগামী কয়েকটি দিন বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা আছে যা চিকিৎসকদের পরামর্শে করা হচ্ছে।’ কবে নাগাদ খালেদা জিয়া দেশে ফিরতে পারেন জানতে চাইলে জাহিদ বলেন, ‘ডাক্তাররা যেসব পরীক্ষা করতে বলেছেন সেগুলোর রিপোর্ট পর্যালোচনা করে ডাক্তাররা পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেবেন…. কত দ্রুত উনাকে ছুটি দেওয়ার মতো অবস্থায় যেতে পারবেন।’ খালেদা জিয়া এখন কেমন আছেন- জানতে চাইলে অধ্যাপক জাহিদ বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, ম্যাডামের মানসিক ও শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল। মানসিকভাবে উনি আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি ভালো। মাচ বেটার।’ বিএনপি চেয়ারপারসন লন্ডনের ডেভেরনশায়ার প্লেসে ‘দ্য লন্ডন ক্লিনিক’ এর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্টিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধায়নে তারেক রহমানের বাসায় চিকিৎসাধীন আছেন। গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির পাঠানো রাজকীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসার জন্য লন্ডন যান। লন্ডনের হিথ্ররো বিমানবন্দর থেকে তাকে সরাসরি অ্যাম্বুলেন্সে করে লন্ডন ক্লিনিকে নেওয়া হয়। সেখানে ১৭ দিন চিকিৎধীন থাকার পর তার ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসায় নেওয়ার শর্তসাপেক্ষে অনুমতি দেন চিকিৎসকরা। ৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘ দিন থেকে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায় খালেদা জিয়া পার্কে ঘুরছেন- এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘গতকাল (মঙ্গলবার) হুইলচেয়ারে করে জাস্ট উনাকে (খালেদা জিয়া) গাড়ি থেকে নামিয়ে ঘোরানো হয়েছিল। আবহাওয়াটা… শীত কম ছিল সেজন্য কিছুক্ষণ ঘোরানো হয়েছিল।’ এবার লন্ডনে তারেকের বাসায় দুই ছেলের পরিবারের সদস্য নিয়ে একান্তে ঈদ উদযাপন করেন খালেদা জিয়া। লন্ডনে আছেন তারেক রহমান ও প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর পরিবারের সদস্যরা। খালেদা জিয়ার লন্ডনে এটি তৃতীয় ঈদ উদযাপন। এবার ১০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো ছেলে তারেক রহমানের বাসায় ঈদ পালন করছেন। এর আগে ২০১৭ সালে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গিয়ে ছেলের বাসায় ঈদুল আজহা উদযাপন করেছিলেন। এরও আগে এক-এগারোর পরে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে প্রায় আট বছর পর লন্ডনে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করেছিলেন খালেদা জিয়া।

লিবিয়ায় অপহৃত ২৩ বাংলাদেশি উদ্ধার
লিবিয়ার মিসরাতা থেকে অপহৃত ২৩ জন বাংলাদেশি উদ্ধার করা হয়েছে। অপহরণের সঙ্গে জড়িত দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে লিবিয়ার পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) রাতে ত্রিপোলীর বাংলাদেশ দূতাবাস এ তথ্য জানায়। দূতাবাস জানায়, লিবিয়ার মিসরাতা শহরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) অভিযান চালিয়ে কমপক্ষে ২৩ জন অপহৃত বাংলাদেশিকে উদ্ধার করেছে এবং এ ঘটনায় জড়িত দুই অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করেছে। মিসরাতার আল-গিরান থানায় বেশ কয়েকজন বিদেশিকে অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবিতে নির্যাতনের অভিযোগের ভিত্তিতে সিআইডি তদন্ত শুরু করে। তদন্তের মাধ্যমে অপহরণকারী চক্রের অবস্থান চিহ্নিত করে। পরে সেখানে অভিযান পরিচালনা করে জিম্মিদের মুক্ত করে পুলিশ। পরবর্তীতে উদ্ধারকৃত ব্যক্তি ও গ্রেপ্তারদের আইনি প্রক্রিয়ার জন্য আল-গিরান থানায় হস্তান্তর করা হয়। বাংলাদেশ দূতাবাস মিসরাতার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দ্রুত ও কার্যকর উদ্যোগের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে। একইসঙ্গে মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলাদেশিদের প্রয়োজনীয় আইনি সহায়তা ও সহযোগিতা নিশ্চিত করতে দূতাবাস সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যোগাযোগ রক্ষা করছে।

পালিয়ে যাওয়া সাবেক চার মন্ত্রীকে দেখা গেল এক ফ্রেমে
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে আওয়ামী লীগের অনেক মন্ত্রী-সাংসদ ও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা আত্মগোপনে চলে যান। তাদের মধ্যে কাউকে কাউকে বিভিন্ন দেশে দেখা গেলেও এক ফ্রেমে একাধিকজনকে দেখা যায়নি। এবার যুক্তরাজ্যে পতিত সরকারের সাবেক চার মন্ত্রীকে একসঙ্গে দেখা গেছে। মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) যুক্তরাজ্যের একটি হাসপাতালে তাদের দেখা যায়। পরবর্তী তাদের সেই ছবি সোশ্যালমিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। সাবেক ওই ৪ মন্ত্রী হলেন সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রহমান, সাবেক মন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক মন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং সাবেক মন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী। জানা গেছে, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ বেশ কিছু দিন ধরে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন । চিকিৎসারত নেতাকে দেখতে মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) হাসপাতালে দেখতে যান তারা। প্রসঙ্গত, এর আগে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আলাদা আলাদাভাবে তাদের দেখা গেলেও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এবারই প্রথম সাবেক চার মন্ত্রীকে একসঙ্গে দেখা গেছে।

কুয়েতে রাষ্ট্রদূতের সাথে প্রেস ক্লাবের নেতাদের ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়
যথাযোগ্য মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে কুয়েতে উদযাপিত হয়েচে পবিত্র ঈদুল ফিতর। স্থানীয়দের পাশাপাশি এই উদযাপনে সমানভাবে অংশ নিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরাও।রোববার (৩০ মার্চ) ভোর পাঁচটা ৫৬ মিনিটে কুয়েতজুড়ে একযোগে ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। কুয়েত সিটিতে অবস্থিত জাতীয় গ্র্যান্ড মসজিদ আল কেবিরে দেশটির সবচেয়ে বড় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়।আয়োজকদের তথ্য মতে, মসজিদ আল কবিরে নারী ও পুরুষ মিলিয়ে প্রায় ১০ হাজার মুসল্লি এক সাথে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন।এবার কুয়েতের প্রায় ২২টি স্থানে অন্যান্য ভাষার পাশাপাশি বাংলায় খুতবা দেয়া হয়েছে। নামাজ পড়িয়েছেন বাংলাদেশি খতিব। এবার প্রবাসী বাংলাদেশিদের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে কুয়েত সিটির ফুদাল্লা মসজিদ, ফারওয়ানিয়া ও হাসাবিয়ায়। এছাড়া অফরা, আবদালি, মাহবুল্লাহ ও রিগাইসহ বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকায় একাধিক মসজিদে ও উন্মুক্ত ময়দানে ঈদের জামাত আদায়ের সুযোগ পান প্রবাসীরা।ঈদগাহে ঈদের নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিদের জন্য ছিল চা কফি, পানি ও জুস। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ছিলো দৃশ্যমান। এমনকি অসুস্থদের জন্য প্রস্তুত ছিলো অ্যাম্বুলেন্স।ঈদের নামাজ শেষে কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল সৈয়দ তারেক হোসেনের বাসভবন বাংলাদেশ হাউজে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন প্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিকরা।এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব কুয়েতের সভাপতি ও সময় টিভির প্রতিনিধি মঈন উদ্দিন সরকার সুমন, সাধারন সম্পাদক ও বাংলা টিভির প্রতিনিধি আহ জুবেদ, সিনিয়র সহ সভাপতি ও আর টিভির প্রতিনিধি মো. জালাল উদ্দীন ও সহ-সভাপতি ও মাই টিভির প্রতিনিধি আল আমিন রানা।আরও ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক ও একাত্তর টিভির প্রতিনিধি সাদেক রিপন, নারী বিষয়ক সম্পাদক নাসরীন আক্তার মৌসুমী, এটিএন বাংলার কুয়েত প্রতিনিধি আহাদ আম্বিয়া খোকন, জিটিভির কুয়েত প্রতিনিধি মো. আলাল আহমদ, কালবেলার প্রতিনিধি আবু বকর পাভেল, চ্যানেল ২৪ টিভির জিশান মাহমুদ। সাধারণ প্রবাসী বাংলাদেশিদের সাথেও ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত।

লন্ডনে ঈদের জামাতে প্রকাশ্যে হাছান মাহমুদ
যুক্তরাজ্যের লন্ডনে ঈদের জামাতে প্রকাশ্যে দেখা গেছে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদকে। লন্ডনের গ্যাংসহিল এলাকার আল-কালাম মসজিদে স্থানীয় সময় রোববার (৩০ মার্চ) ঈদের নামাজ আদায় করেন তিনি। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর থেকে হাছান মাহমুদকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। তিনি দেশে নেই- এমন গুঞ্জন ছিল। এই গুঞ্জনের মধ্যেই লন্ডনে দেখা গেল তাকে। ঈদের নামাজ শেষে পরিচিতদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করছেন তিনি- এমন কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ছড়িয়ে পড়া দুটি ছবির একটিতে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফারুকের সঙ্গে কোলাকুলি করতে দেখা যায় হাছান মাহমুদকে। আরেক ছবিতে তাকে দেখা যায় স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে ঢাকা ও চট্টগ্রামে হাছান মাহমুদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।

স্কটল্যান্ডের রাজধানী এডিনবার্গে উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত
স্কটল্যান্ড থেকে তুহিন মাহামুদ : সৌদিআরবের সাথে মিল রেখে ইউরোপ,আফ্রিকা সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে পবিত্র ঈদ উল ফিতরের নামাজ। একমাস সিয়াম সাধনার পর আজ ৩০ মার্চ রবিবার ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যে দিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে স্কটল্যান্ডের রাজধানী এডিনবার্গে উদযাপন হলো মুসলিম উম্মাহ'র অন্যতম সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল- ফিতর।সকাল ৭:১৫টায় অনুষ্ঠিত হয় ঈদের প্রথম জামাত। এরপর পর্যায়ক্রমে পাঁচটি জামাত হয় অনুষ্ঠিত হয় এডিনবার্গের ব্লাক হল মসজিদে। এছাড়া সেন্ট্রাল মসজিদ,সিটি সেন্টার মসজিদ, লেইথ মসজিদ, পোরটোবেল্লো মসজিদ,শাহজালাল মসজিদ সহ এডিনবার্গ শহরের বিভিন্ন মসজিদে একাধিক জামাতে সমবেত হয়ে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা ঈদের নামাজ আদায় করেন। এবছর সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ঈদ অনুষ্ঠিত হওয়ায় এবং আবহাওয়ার অনুকূল পরিবেশের কারণে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে এতে যোগ দেন নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোরসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার প্রবাসী বাঙালিরাও। এ সময় তারা দেশে থাকা স্বজনদের স্মরণ করেন। বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় করা হয় বিশেষ মোনাজাত।বাংলাদেশীসহ মুসলমান অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে ঈদের আমেজ ছিল চোখে পড়ার মতো। নামাজ শেষে একে ওপরের সঙ্গে কোলাকুলির মাধ্যমে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন। দেশে রেখে আসা স্বজনদের স্মরণে অনেকে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। এবছর ঈদ আনন্দের মাত্রা যেন আবহমানকাল বাঙ্গালির চিত্রই যেন ফুটে উঠেছে মসজিদ প্রাঙ্গনে।
.jpg)
নিউইয়র্কে বাংলাদেশ সোসাইটির স্বাধীনতা দিবসের সমাবেশ ও ইফতার মাহফিল
নিউইয়র্কে ‘বাংলাদেশ সোসাইটি ইউএসএ’র উদ্যোগে স্বাধীনতা দিবসের সমাবেশ ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২৮ মার্চ) সন্ধ্যায় জ্যামাইকার ইকরা পার্টি সেন্টারে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সংগঠনের সভাপতি আতাউর রহমান সেলিমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধারাসহ দলমত নির্বিশেষে সব স্তরের প্রবাসীরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সংগঠনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মহিউদ্দিন দেওয়ান, ভিএনএস হেলথের পরিচালক সালেহ আহমেদ, কমিনিউটি লিডার রাব্বি সৈয়দ, কমিউনিটি বোর্ড মেম্বার ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার ও আহসান হাবিব, জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির প্রধান উপদেষ্টা ওসমান গনি, কমিনিউটি লিডার মিসবাহ আহমেদ, সেন্টার ফর এনআরবির শেকিল চৌধুরী, সোসাইটির ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ কামরুজ্জামান কামরুল, যুগ্ম আহ্বায়ক মফিজুল ইসলাম ভূঁইয়া রুমি, যুগ্ম সদস্য সচিব আশ্রাব আলী খান লিটন। ইফতার-মাহফিলে দোয়া পরিচালনা করেন জামিল আনসারী। অনুষ্ঠানে আতাউর রহমান সেলিম বলেছে, ‘আসুন একে অন্যকে ভালোবাসি ও পারস্পরিক সম্প্রীতির এই বন্ধনে প্রিয় মাতৃভূমির সামগ্রিক কল্যাণে কাজ করি। এটাই হোক প্রতিটি প্রবাসীর একমাত্র চাওয়া।’ অনুষ্ঠানের সমন্বয় ও ব্যবস্থাপনায় সরব ছিলেন কর্তা রিজু মোহাম্মদ, মফিজুল ইসলাম ভূঁইয়া রুমি, ডিউক খান, আকতার বাবুল, মোহাম্মদ হাসান জিলানী, জাহাঙ্গির সোহরাওয়ার্দি, হারুন অর রশীদ, মুনসুর আহমেদ। প্রসঙ্গত, নিউইয়র্ক সিটিতে বাংলাদেশী অধ্যুষিত প্রতিটি স্থানে ইফতার মাহফিল আয়োজনের অংশ হিসেবে এর আগে উডহ্যাভেন বুলেভার্ডে জয়া মিলনায়তন, ব্রুকলীনে রাধুনি রেস্টুরেন্ট ও ব্রঙ্কসের একটি পার্টি হলে সম্পন্ন হয়েছে।

যুক্তরাজ্য জাসদের উদ্যোগে ৫৪তম স্বাধীনতা দিবস পালন
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৪তম বার্ষিকী উপলক্ষে যুক্তরাজ্য জাসদের উদ্যোগে বুধবার (২৬ মার্চ) ভার্চুয়াল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। যুক্তরাজ্য জাসদের সভাপতি বীর মুক্তিযুদ্ধা হারুনুর রশীদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবুল মনসুর লিলুর পরিচালনায় সভার শুরুতে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। সভায় বাংলাদেশ থেকে অংশ নেন জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি এবং সিলেট জেলা জাসদের সভাপতি জননেতা লোকমান আহমদ। তিনি সবাইকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানান। সভায বক্তারা বলেন, ‘১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশকে শত্রু মুক্ত করতে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। দীর্ঘ ৯ মাসের মরণপণ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে বাঙালী জাতি পাক হানাদার বাহিনীকে যুদ্ধে পরাজিত করে ছিনিয়ে এনেছিল এ দেশের স্বাধীনতা। তাই এই স্বাধীনতা কারো দয়ার দান না এবং বাঙ্গালী জাতির এই জন্মের ইতিহাস যে কেউ ইচ্ছা করলেই মুছে ফেলতে পারবে না।’ তারা আরো বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্য যে, যুক্তরাজ্য জাসদ যখন স্বাধীনতার ৫৪তম বার্ষিকী উদযাপন করছে, তখন আমাদের বাংলাদেশ রাজনৈতিক ভাবে একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। দেশ আজ ভয়াবহ নেতৃত্ব শূণ্যতায় ভুগছে। এ অবস্থায় দেশকে একটি স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে শক্তিশালী মরণপন আন্দোলনে আত্মনিয়োগ করতে হবে।’ ‘কোন মহল ইচ্ছা করলেই লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত ৭১’-এর মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের অবদান ইতিহাস থেকে মুচে ফেলতে পারবে না ‘ ‘বক্তারা জাসদের সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী বীর মুক্তিযুদ্ধা হাসানুল হক ইনুসহ সারা দেশের জাসদের নেতৃবৃন্দের উপর থেকে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে তাদেরকে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তি সরকারের কাছে দাবী জানান। সভায় বক্তব্য দেন যুক্তরাজ্য জাসদ সভাপতি বীর মুক্তিযুদ্ধা হারুনুর রশীদ, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবুল মনসুর লিলু, কার্যকরী কমিটির সিনিয়র সদস্য, আলাউদ্দিন আহমদ মুক্তা, সিনিয়র সদস্য শামীম আহমদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমদ, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক রেদওয়ান খাঁন, প্রচার যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক এমরান আহমদ, যুক্তরাজ্য বাসদের নেতা মোহাম্মদ শওকত, যুক্তরাজ্য নারীজোটের আহ্বায়ক রেহানা বেগম, যুক্তরাজ্য জাসদের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা সৈয়দা বিলকিস মনসুর।

ওয়াশিংটন বিএনপির উদ্যোগে স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা ও ইফতার মাহফিল
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসি বিএনপির আয়োজনে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২৮ মার্চ) আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর মহিলা দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন। ভার্জিনিয়ায় অনুষ্ঠিত ইফতার মাহফিলে দোয়া পরিচালনা করেন জাহাঙ্গীর খান। ওয়াশিংটন ডিসি বিএনপির সভাপতি হাফিজ খান সোহেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী জাকির হোসেন। অনুষ্ঠানে ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে সরিয়ে স্বাধীন হয়েছে আমাদের দেশ। আর এই স্বাধীনতার মধ্য দিয়ে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ঘোষিত স্বাধীনতা পূর্ণতা পেয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘১৯৭১ সালে জাতি যখন এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছিল সে সময় শেখ মুজিবুর রহমান কোথায় ছিলেন? তখন আমাদের নেতা বীর সেনা কর্মকর্তা মেজর জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন।’ ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘স্বাধীনতার পর দেশে বারবার যখন গণতন্ত্র হুমকির মুখের পড়েছে তখনই আপোসহীন নেত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে গণতন্ত্রের পক্ষে আপোসহীনভাবে কাজ করে গেছেন। এজন্য তাকে কারাগারে পতিত হতে হয়েছে। কারাগারে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণেও অন্যায়ের সঙ্গে আপোষ করেননি।’ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সম্পর্কে ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘আমাদের নেতা তারেক রহমান হাজার হাজার মাইল দূরে থেকেও দলকে সুসংগঠিত করে রেখেছেন। তার নেতৃত্বে বিএনপি আজ ঐক্যবদ্ধ।’ ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন ওয়াশিংটন ডিসি বিএনপির সহসভাপতি শাহাদাত এইচ সোহরাওয়ার্দী, সহসভাপতি কাজী এম রহমান, মজনু মিয়া, জাহিদ খান, গাজী কামরুল ইসলাম, মোশাররফ হোসেন, মোখলেসুর রহমান, খালেদ তফাদার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম তুহিন, সৈয়দ সালেহ মনসুর পরশ, সাঈদ হায়দার, সাংগঠনিক সম্পাদক দেওয়ান মঈনউদ্দিন বিপ্লব, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মুক্তাদির, জাহাঙ্গীর খান, জহিরুল ইসলাম, আবুল হাসেম আজাদ, দপ্তর সম্পাদক-আরিফ উল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক-রেজওয়ান আনসারী পল্লব, কোষাধ্যক্ষ নূর হোসেন বাহাদুর, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক মহসিন মিয়া, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক শাহাজাহান সিরাজ, পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক সম্পাদক মীর নির্ঝর রহমান নিক্সন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক বেলাল হোসেন সুমন, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক আহমেদ তরিকুর রহমান জনি, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মাসুমা আক্তার মেরি, কমিটির সদস্য- শফিক কামাল রাসেল, তৌফিকুল ইসলাম, নুরুন্নাহ খাতুন, ফারহানা মাইনুদ্দিন, হেলেনা আক্তার, গোলাম ফারুকী কিরণ, নাফিস খান, সৈয়দ হাবিব আহসান, আসিফ রেজা, সাঈদ খান, মোহাম্মদ শফিক মোল্লা, সাঈদ লিটু, আনসার আহমেদ, আব্দুস সালাম, আবুল কালাম আজাদ, লাল মাহমুদ, এমডি মুনিরুল ইসলাম, রেজাউল করিম, আলী হায়দার, বাকির আহমেদ।
সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশের চিত্র তুলে ধরে ইয়াঙ্গুনে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন
রাষ্ট্রদূত ড. এম মনোয়ার হোসেন বলেছেন, ‘বাংলাদেশের ঘুরে দাড়ানোর সক্ষমতা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য অদূর ভবিষ্যতে এদেশকে একটি সুখী-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করবে।’ তিনি বুধবার (২৬ মার্চ) বাংলাদেশ দূতাবাস ইয়াঙ্গুনের আয়োজনে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন। দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে ছিল জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টার বাণী পাঠ, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন ও আলোচনা সভা। দ্বিতীয় অংশে বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে মিয়ানমার সরকারের ইউনিয়ন ফর গভর্নমেন্ট অফিস-২, অভিবাসন মন্ত্রী, উপ-পররাষ্ট্র মন্ত্রী, উপ-বাণিজ্য মন্ত্রী, ইয়াঙ্গুন অঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রীসহ ৫ মন্ত্রী, ইয়াঙ্গুন সিটির মেয়র অংশগ্রহণ করেন। সন্ধ্যায় ইয়াঙ্গুনের লট্টে হোটেলে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি ছিল স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের অনুষ্ঠানের কেন্দ্রবিন্দু। শতাধিক রাষ্ট্রদূত/কূটনীতিক, জাতিসংঘের সংস্থাসগুলোর প্রধানগণ, মিয়ানমার সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, মিয়ানমারে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকগণ ও দূতাবাসের সদস্যসহ তিন শতাধিক অতিথি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সব শহীদ, মুক্তিযুদ্ধে সম্ভ্রমহারানো নারী ও ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সব শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি ১৯৭১-২০২৪ পর্যন্ত বিভিন্ন সংকটে বাংলাদেশ যে সহনশীলতার পরিচয় দিয়েছে, তা তুলে ধরেন। এছাড়াও, মনোয়ার হোসেন অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক খাতে বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেন, যা বাংলাদেশকে শীঘ্রই একটি সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সহায়ক হবে। রাষ্ট্রদূত সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশের উন্নয়নে কাজ করার আহ্বান জানান। রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যের পর, দূতাবাস কর্তৃক নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়, যেখানে বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় বিভিন্ন দিক এবং গত দুই বছরে দূতাবাসের কার্যক্রম তুলে ধরা হয়। পরে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে কেক কাটা হয়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ঐতিহ্য, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতি উপস্থাপন করা হয়, যা অতিথিদের ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করে। সৃজনশীল মঞ্চসজ্জা ও নান্দনিক পরিবেশ অতিথিদের বিশেষভাবে আকৃষ্ট করে।

মিয়ানমারে বাংলাদেশি নাগরিকরা নিরাপদ রয়েছেন: রাষ্ট্রদূত
মিয়ানমারে ভয়াবহ ভূমিকম্পের ঘটনায় দেশটিতে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকরা নিরাপদ রয়েছেন। শুক্রবার (২৮ মার্চ) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে এ তথ্য জানান দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মনোয়ার হোসেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘মিয়ানমারে অবস্থানরত সব বাংলাদেশি নাগরিক নিরাপদ রয়েছে। আজ শুক্রবার (২৮ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টায় একটি শক্তিশালী ৭ দশমিক ২ এবং ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প উত্তর মিয়ানমার অংশে অনুভূত হয়েছে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) অনুসারে, মিয়ানমারে ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। থাইল্যান্ড এবং এই অঞ্চলের অন্যান্য স্থানেও শক্তিশালী কম্পন অনুভূত হয়েছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে সাগাইং শহরের ১৬ কিলোমিটার (১০ মাইল) উত্তর-পশ্চিমে ১০ কিলোমিটার গভীরে এই ভূমিকম্প আঘাত হানে বলে ইউএসজিএস জানিয়েছে।

লন্ডনে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত: পতাকা উত্তোলন ও আলোচনা সভা
বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে যুক্তরাজ্যের লন্ডনের বার্কিং অ্যান্ড ডাগেনহাম কাউন্সিলের আয়োজনে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (২৬ মার্চ) দুপুরে বার্কিং টাউন স্কয়ারের টাউন হলের সামনে কাউন্সিলের মেয়র মঈন কাদেরীর নেতৃত্বে এ আয়োজন সম্পন্ন হয়। অনুষ্ঠানে স্থানীয় কাউন্সিলর, সাংবাদিক, কমিউনিটি নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের গৌরবময় স্বাধীনতার ইতিহাস তুলে ধরেন মঈন কাদেরী, কাউন্সিলর ডমিনিক টুমি ও রাজিনা রহমান। এরপরবাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে টাউন হলের সামনে উত্তোলন করা হয় লাল-সবুজের পতাকা। বিদেশের মাটিতে জাতীয় পতাকার এমন সম্মানজনক উত্তোলন নতুন প্রজন্মের মাঝে দেশপ্রেম জাগিয়ে তোলে এবং বিদেশিদের মাঝেও বাংলাদেশের প্রতি ইতিবাচক ধারণা তৈরি করে। এরপর টাউন হলে মঈন কাদেরীর সভাপতিত্বে ও কাউন্সিলর মুহিব চৌধুরীর পরিচালনায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন কাউন্সিলর অজান্তা দেব রায়, ফারুক চৌধুরী, সদরুজ্জামান খান, গিয়াস উদ্দিন মিয়া, সৈয়দ ফিরোজ গনি , ইডনা ফারগস, ডেপুটি লিডার সায়মা আশরাফ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব স্মৃতি আজাদ, সাংবাদিক ড. আজিজুল আম্বিয়া, ইতালি আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ রব মিন্টু। সভায় বক্তারা বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা কোনো আপসের বিষয় নয়, এটি রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গৌরবময় ইতিহাস। নতুন প্রজন্মকে অবশ্যই দেশের সঠিক ইতিহাস জানাতে হবে, যাতে তারা স্বাধীনতার মূল্য বুঝতে পারে এবং দেশকে ভালোবাসতে শিখে।’ বিদেশি অতিথিরাও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে পেরে আনন্দ প্রকাশ করেন এবং এ জাতির সংগ্রাম ও অর্জনের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।