কবিতা: হেমন্তে নবান্ন । মো. গনি মিয়া বাবুল
হিম কুয়াশায় ভোর বিহানেরবির চোখে ছানি,ঘাসের সাথে আবছা আলোকরছে কানা কানি। শীত আসে নাই তা জানি ভাইআমেজ তবু শীতের,হেমন্তের এই নবান্নতেকী আনন্দ গীতের! বঙ্গ মাতার ছাতার তলেসোনালী ধান হাসে,কিষাণ বধূ মনের পাতায়নতুন ছবি আঁকে। পল্লী মায়ের আঁচল বাঁধাকান্না হাসির গান,হৃদয় কাড়া মূর্চ্ছনাতেশহর মারে টান। কবি: চেয়ারম্যান, লেখক উন্নয়ন কেন্দ্র, ঢাকা
ইসলামি বইমেলা হেরার জ্যোতির পথ দেখায়
ধর্ম উপদেষ্টা আফম খালিদ হোসেন বলেছেন, ‘ইসলামি বইমেলা হেরার জ্যোতির পথ দেখায়।’ বুধবার (২০ নভেম্বর) বিকালে ঢাকার বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বইমেলায় বিশ্বকল্যাণ পাবলিকেশন্স প্রকাশিত তাহফীয কুরআনুল কারীম ও চারটি বইয়ের পাঠ উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে অনুষ্ঠানে ধর্ম উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘বই জ্ঞানের ধারক ও বাহক। বইয়ের মাধ্যমে এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে জ্ঞান সঞ্চারিত হয়। বই পাঠের মাধ্যমে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি প্রসারিত হয়। মানুষ নতুন করে চিন্তা করতে শেখে। মানুষের নতুন ভাবনা দিগন্ত উন্মোচন করে বই।’ সঠিক বই নির্বাচনের গুরুত্ব তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, ‘বই মানুষের মনোজাগতিক পরিবর্তনের অন্যতম হাতিয়ার। আর এই মনোজগত পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত বই। এক্ষেত্রে, ইসলামি বইগুলোর অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নির্বাচন করা যায়। ইসলামি বইগুলো মানুষকে সঠিক পথ দেখায়।’ উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘ইসলামি বই মেলা শুধুই বাণিজ্য নয়, এটা জ্ঞান চর্চার একটি কার্যকর মাধ্যম। ইসলামী গ্রন্থ মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দেবে ‘ তিনি আগামী দিনের ইসলামি বইমেলা আরো বৃহৎ পরিসরে আয়োজনের আশ্বাস দেন। এছাড়া, ইসলামি বইমেলা আয়োজনের জন্য লেখক ও অনুবাদক, প্রকাশকদেরকে উপদেষ্টা ধন্যবাদ জানান। প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ড. খালিদ বলেন, ‘বিশ্বকল্যাণ পাবলিকেশন্স গেল দুই দশক ধরে জাতির ধর্মীয় জ্ঞানের খোরাক জোগাতে ভূমিকা রেখেছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। ইসলামী গ্রন্থ পাঠের মাধ্যমে সমাজে নৈতিকতা ও মানবিকতা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।’ তিনি বিশ্বকল্যাণ পাবলিকেশন্সের বইগুলো মুসলিম সমাজের আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করবে বলে আশা প্রকাশ করেন। প্রসঙ্গত, এ অনুষ্ঠানে তাহফীয কুরআনুল কারীম ও মাসউদুল করিম রচিত অপারেশন হিকট্রাক্টস-১ ও ড. আহমদ আবদুল কাদের রচিত জাতি ভাষা সংস্কৃতি স্বাধীনতা, আধুনিক যুগে খেলাফত রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং ধর্ম ও ধর্ম নিরপেক্ষতা শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। বিশ্বকল্যাণ পাবলিকেশন্সের স্বত্বাধিকারী সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম, হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির আহমদ আব্দুল কাদের, দৈনিক নয়া দিগন্তের সিনিয়র সহ-সম্পাদক লিয়াকত আলী, দৈনিক ইনকিলাবের সিনিয়র সহ-সম্পাদক বায়দুর রহমান খান নদভী বক্ত্যে দেন। উপস্থিত ছিলেন মুফতি আব্দুস সালাম, মুফতি আবুল হাসান শামসাবাদী, আহমদ বদরুদ্দীন খান, মাসউদুল কাদির, হুমায়ুন আইয়ুব, জহির উদ্দিন বাবর, মুফতি ইমরানুল বারি সিরাজি, মুফতি আবদুল্লাহ তামিম। এর পূর্বে, উপদেষ্টা ঢাকার পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের মিলনায়তনে জাতীয় শিশু-কিশোর মাসিক পত্রিকা নকীব আয়োজিত জাতীয় কুইজ প্রতিযোগিতার জয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
কবি মাকিদ হায়দার আর নেই
সত্তরের দশকের অন্যতম কবি মাকিদ হায়দার মারা গেছেন। (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্নইলাহি রাজিউন)। বুধবার (১০ জুলাই) সকাল ৯টা ৫ মিনিটে রাজধানীর উত্তরার নিজ বাসায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মাকিদ হায়দারের ছেলে আসিফ হায়দার গণমাধ্যমকে কবির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, দুপুর ১২টার পর বাবার মরদেহ সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে নেওয়া হবে। তবে কবিকে কখন কোথায় দাফন করা হবে সে বিষয়টি এখনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে জানান তিনি। বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি মাকিদ হায়দার অনেকদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত জটিলতায় ভুগছিলেন। ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের পাবনার দোহারপাড়ায় কবি মাকিদ হায়দারের জন্ম। তার বাবা হাকিমউদ্দিন শেখ ও মা রহিমা খাতুন। সাত ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন ষষ্ঠ। সাত ভাইয়ের বোনও ছিল সাতজন। মাকিদ হায়দারের ভাই রশীদ হায়দার, জিয়া হায়দার, দাউদ হায়দার, জাহিদ হায়দার, আবিদ হায়দার ও আরিফ হায়দার সবাই সাহিত্য-সংস্কৃতি অঙ্গনের সঙ্গে জড়িত। মাকিদ হায়দারের প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- রোদে ভিজে বাড়ি ফেরা (১৯৭৬), আপন আঁধারে একদিন (১৯৮৪), ও পার্থ ও প্রতিম (২০০৭), কফিনের লোকটি (২০১১), যে আমাকে দুঃখ দিলো (২০১২), প্রিয় রোকানালী (২০১৩), মুমুর সাথে সারা দুপুর (২০১৪)। এছাড়াও তার একটি গল্পগ্রন্থ ও একটি প্রবন্ধের বই রয়েছে।
সাহিত্য সম্পাদকের ভূমিকা : শংকর ব্রহ্ম
সম্পাদকের প্রধান কাজ হল, নিরপেক্ষ ভাবে লেখা বিচার করা। লেখকের নাম দেখে নয়, লেখার মান দেখে তা বিচার করা। অবশ্য নিরপেক্ষতা মানে এই নয় যে তার ব্যক্তি ও সম্পাদক সত্তার আলাদা কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। অবশ্যই তা থাকবে। তার নিজস্ব রুচিবোধ, বিচারবোধ থাকবে। যেহেতু তিনি সাহিত্য সম্পাদক, বলা বাহুল্য তার সাহিত্য সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান থাকতে হবে। জমা পড়া অনেক লেখার মধ্য থেকে তাকে জহুরির মতো সাহিত্যগুণ সম্পন্ন হীরকখন্ডটি (লেখাটি) বাছাই করে নিতে হবে। (এই প্রসঙ্গে মনে পড়ে , ‘কবিতা’ পত্রিকার সম্পাদক কবি বুদ্ধদেব বসুর কথা। তিনিই প্রথম কবি হিসেবে আবিষ্কার করেছিলেন জীবনানন্দ দাশকে। তার আগে কেউ জীবনানন্দ দাশকে ‘কবি জীবনানন্দ’ হিসেবে তেমন ভাবে চিনতেন না। আর যারা চিনতেন, তারাও তাকে কবি হিসাবে মেনে নিতে পারতেন না। সত্যি কথা বলতে গেলে, তার লেখাগুলো যে কবিতা তা অনেকেই সেই সময় স্বীকার করতে চাননি এবং তা সমসাময়িক কবিদের চেয়ে তিনি যে শুধু ভিন্ন নন, সময়ের চেয়ে অনেকটা এগিয়ে, এককথায় সমকালের কবিদের মন ও মানসিকতার তুলনায় ভিন্ন ধারার, এ’কথা ওই সমসাময়িক কবিরা অনেকেই বুঝতেই পারেননি। তাই তখন তার লেখা সমালোচকদের হাত থেকে নিস্তার পায়নি। সজনীকান্ত দাস তাঁর কবিতা নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেছেন বহুবার। উপহাস করেছেন তার কবিতা নিয়ে । সভা-সমিতিতে তাকে নিয়ে হাসি ঠাট্টা মস্করা করেছেন। রবীন্দ্রনাথও তার কবিতার আধুনিকা বুঝতে না পেরে, তাকে শুধুমাত্র ‘চিত্রকাব্য’ আখ্যা দিয়েম এড়িয়ে গেছেন।) আমার দেখা সম্পাদক হিসাবে সাগরময় ঘোষের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি সমরেশ বসু, বিমল কর, রমাপদ চৌধুরী, সুনীল গাঙ্গুলী, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, জয় গোস্বামী প্রমুখ প্রতিধাধর লেখদের বাংলা সাহিত্যের আঙিনায় তুলে এনেছেন। যথার্থ একজন সম্পাদক এক নজর দেখেই বুঝে নেন কোন লেখাটির মধ্যে সাহিত্যগুণ আছে, কোনটিতে নেই । কিন্তু সমস্যা হলো, — সাহিত্য বিষয়টি এমন একটি ভাবের বিষয়-বস্তু যে, একজন সম্পাদকের কোন লেখা ভাল না লাগলেও অন্য কোন সম্পাদকের তা সহজেই ভাল লেগে যেতে পারে, এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই । একই লেখা নিয়ে বিভিন্ন সম্পাদকের মধ্যে তাই ভিন্ন ভিন্ন মতামত থাকতে পারে, এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে, একজন কবি বা লেখকের জীবনে সম্পাদকের ভূমিকা অসীম, এ কথা অনস্বীকার্য। লেখক ও সম্পাদকের সম্পর্ক একে অন্যের পরিপূরক। কোন হীরকখন্ডের যেমন বাইরে থেকে ঔজ্জ্বল্য ধার নিতে হয় না, তবে সুপরিকল্পিতভাবে হীরকখন্ডটি কাটিং করলে শুধু ঔজ্জ্বল্যই বাড়ে না, সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে ওঠে তার সৌন্দর্যের দ্যুতি । তেমনি একজন সম্পাদক জহুরির মতো নতুন প্রতিভাবানদের নিজেরই তাগিদে তুলে নিয়ে এসে তাদের দ্যুতি বাড়িয়ে তুলতে পারেন। তিনি সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটিয়ে (পাঠকের সঙ্গে পরিচয় ঘটিয়ে) অপূর্ব এক মধুর স্বাদ অনুভব করেন হৃদয়ে, একথা অনস্বীকার্য। অজ্ঞাতপ্রায় হারিয়ে থাকা লেখকদের পাঠকদের সামনে এনে হাজির করেন তিনি। এখন প্রশ্ন —সাহিত্য সম্পাদকের করণীয় কাজটা কি? এক কথায় বলতে গেলে, নিরপেক্ষভাবে লেখা বিচার করা। লেখকের নাম দেখে নয়, লেখার মান দেখে লেখা বিচার করা উচিৎ তার। সাহিত্যের মান বিচার করতে গেলে নিজের অনুভূতি দিয়ে তা বিচার করতে হয়। নিজের জ্ঞান বুদ্ধি দিয়ে তা পরীক্ষা করতে হয়। তাই, যথেষ্ট পরিমাণে তার সাহিত্য সম্পর্কে জ্ঞান বুদ্ধি থাকতে হয়। ক’জন সম্পাদক আর সেই পরিশ্রমটুকু করতে রাজী হন? নামী লেখদের লেখা প্রকাশ করতেই তারা বেশি আগ্রহ বোধ করেন। কারণ, নামী লেখকরা কি লিখছেন তা অনেকে না জানলেও, তিনি যে একজন নামী লেখক তা অনেকেই জানেন। তাই তাদের লেখা প্রকাশ করায় অনেক ঝুঁকি কম। তাছাড়া মানসিক ভাবে সাহিত্যের মান বিচার করার পরিশ্রমটুকু করার প্রয়োজন হয় না। তবে সম্পাদকের দায়িত্ব অনেক কমে যায়। সম্পাদক এ রকম ফাঁকিবাজ হলে, সেই পত্রিকার মান আর কত ভাল হতে পারে, তা তো সহজেই বোঝাই যায়। লেখক যেভাবে লেখা পাঠান, লেখা হুবহু সেভাবেই প্রকাশ করা উচিত সম্পাদকের। তবে এটা মনে রাখতে হবে, সম্পাদকের মতো লেখকও একজন সাধারণ মানুষ। তাই কোনও সময় বানান বা বাক্যগত কোনও ত্রুটি থেকে যেতেই পারে, সে ক্ষেত্রে সম্পাদক নিজের প্রয়োজন মতো ত্রুটি সংশোধন করে প্রকাশ করার ব্যবস্থা করবেন। এবার কথা হলো — তিনি লেখকের সঙ্গে আলোচনা করে সেটা করবেন, নাকি তার অনুমতি ছাড়াই করবেন? লেখকের সঙ্গে আলোচনা করে কাজটি করতে পারলেই ভাল হয়। লেখকের অনুমতি ছাড়া সম্পাদক নিজের মতো করে লেখকের লেখায় কলম চালালে, তার লেখার মৌলিকতা যেমন নষ্ট হতে পারে , তারচেয়েও বেশি কষ্টদায়ক হয় , অনেক সময় লেখকের পক্ষে এই পরিবর্তন মেনে নেওয়া। হয়তো তিনি বিষয়টি নিয়ে অন্যরকম কিছু ভেবে লিখেছিলেন লেখাট তার। সে ক্ষেত্রে সম্পাদকে কোনও লেখায় কলম চালানোর আগে লেখকের সঙ্গে একবার আলোচনা করে নিতে পারলে ভাল হয়। সেটাই হওয়া বঞ্ছনীয় মনেহয়। প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ করা যায়, ভিক্টর গোলাঞ্জ বলেছেন, ‘সম্পাদনা তুলনামূলক নতুন একটা বিষয় আর এটা শুধু গদ্যের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।’ এরপর তিনি আরও লিখেছেন, ‘একজন গীতি-পরিচালক যেমন সম্পাদিত গীতির কথা চিন্তা করে গীতিকারকে দিয়ে গান লিখিয়ে নেন, কিংবা এমন একজন চিত্রব্যবসায়ী যিনি সম্পাদনা করে চিত্রকর দিয়ে আঁকিয়ে নিলেন, তিন চিত্রকরের কথা ভাবেন না ! … আমি যদি লেখক হতাম, আমি আমার লেখায় অন্যকে হাত দিতে দেওয়ার চেয়ে মরে যাওয়া শ্রেয় মনে করতাম।’ ভিক্টর গোলাঞ্জ একেবারে ভুল বলেননি। তিনি সম্পাদনার বিপক্ষে না, তবে অতিসম্পাদনার পক্ষেও নন। তিনি সুন্দরভাবে সম্পাদনা করার সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, সম্পাদনা কখনও কখনও শিল্পকর্মের শৈল্পিক গুণকে নষ্ট করে দেয়।’ তবে এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, বিখ্যাত ইংরেজ কবি টি এস এলিয়ট তাঁর বিখ্যাত কবিতা ‘দ্য ওয়েস্টল্যান্ড’ লেখার পর সম্পাদনার জন্য অগ্রজ কবি, সমালোচক ও সম্পাদক এজরা পাউন্ডের কাছে পাঠিয়েছিলেন। এজরা পাউন্ড কবিতাটির একটা বড় অংশ ফেলে দিয়েছিলেন। পরে এলিয়ট মনঃক্ষুণ্ন হলেও এই সম্পাদিত কবিতাটি বিশ্বপাঠক ও নোবেল প্রাইজ কমিটির নজর কেড়েছিল, এমনকি ১৯৪৮ সালে এই কবিতা রচনার জন্য তিনি নোবেল পুরস্কার পান এবং এখনও এটি আধুনিককালের অন্যতম কবিতা হিসেবে বিবেচিত হয়। তাই কবিতা থেকে শুরু করে সব ধরনের লেখাই সম্পাদিত হলে সেটা বস্তুনিষ্ঠ হয়ে ওঠে, হয়ে ওঠে পাঠযোগ্য (কামরুল হাসান শায়ক)। প্রকৃত সাহিত্য সম্পাদকের উচিৎ নবীনদের লেখকদের প্রকাশের আলোয় নিয়ে আসার জন্য চেষ্টা করা। প্রকৃত প্রতিভাকে প্রকাশের সুযোগ করে দেওয়া তার প্রথমিক কর্তব্য। স্বল্প সাহিত্যে-জ্ঞানের সঙ্গে ব্যবসায়িক মনোবৃত্তি সম্পন্ন সম্পাদকরা সাহিত্যচর্চার নামে নিজস্ব দল গঠন করেন। জোর গলায় চিৎকার করে বলেন, ‘নতুনদের সাহিত্যের আঙ্গিনায় তুলে এনে নতুন ভাবনার ঝড় বইয়ে দেবেন’। সাহিত্যে নতুন জোয়ার আনবেন বলে দাবিও করেন। প্রথাগতঃ পদ্ধতির বাইরে গিয়ে নবীনদের নতুন ভাবনাকে জায়গা করে দেবেন। কিন্তু সূচিপত্র দেখে বোঝা যায় (সূচিপত্র জানিয়ে দেয়) পর্দার ভেতরে থাকা গোপন রহস্য। নতুনদের সুযোগ নয়, বরং তাদের সুযোগ দেওয়ার নাম করে, নিজের স্বার্থসিদ্ধি করাই এই শ্রেণীর সাহিত্য সম্পাদকের গোপন উদ্দেশ্য। তারা নতুন লেখকদের মাথা মুড়িয়ে, তাদের ব্যবসাটা ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে তোলেন। নতুন লেখকদের আখরে কিছুই লাভ হয় না। শেষপর্যন্ত তারা প্রতারিত হন, এইসব সম্পাদকের পাল্লায় পড়ে। সব খারাপের মধ্যেও কিছু ভালো থাকে। নতুন কিছু মুখের সঙ্গে নতুন ধ্যানধারণা আর একইসঙ্গে উঠে আসে বর্তমান প্রজন্মের দৃষ্টিভঙ্গি, নতুনদের সৃষ্টিতে। আবার নিজেকে কবি-লেখক নামে পরিচিত করার জন্য অনেকেই সাহিত্য পত্রিকা শুরু করেন। প্রথম সারিতে বড় বড় নামিদামী কবি-লেখকের লেখা রেখে বাকিটা নিজেদের লেখা প্রকাশ করেন। অনেক সম্পাদক আবার সম্পাদনার সঙ্গে সঙ্গে প্রকাশকও হয়ে ওঠেন। যাদের কবিতা তার পত্রিকায় ছাপেন, তাদের ভুল বুঝিয়ে ঘোল খাইয়ে বই বের করিয়ে নেন বাজারের তুলনায় দ্বিগুণ মূল্যে। এই ধরনের ব্যক্তিরা সম্পাদক নামের কলঙ্ক। এদের সম্পাদক নামে অভিহিত করলে, প্রকৃত সম্পাদকদের অপমান করা হয়, যারা আজও নিজেদের পকেট মানি বাঁচিয়ে, তা খরচ করে পত্রিকা বের করে থাকন একান্ত নিষ্ঠার সঙ্গে। নিজেদের অমূল্য সময় ব্যয় করেন পত্রিকা প্রকাশ করার কাজে। এমন সাহিত্যগুণসম্পন্ন যোগ্য ব্যক্তির অভাব নেই। আর এরা আছে বলেই এখনও বাংলা সাহিত্য সংকীর্ণ পরিধিতে আবদ্ধ হয়ে পড়েও, শেষ হয়ে যায়নি। আশার আলো দেখাবে সেই সব সম্পাদকেরাই ভবিষ্যতে। তারাই সাহিত্যের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলে। লেখক পরিচিতি শংকর ব্রহ্ম – ১৯৫১ সালের ২রা মার্চ, কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন । ১৯৭০ সাল থেকে লেখা-লেখি শুরু। প্রকাশিত কবিতার সংখ্যা শ’পাঁচেক-এর বেশী। প্রায় শতাধিক পত্রিকায় লেখেন। যেমন “দৈনিক বাংলা স্টেটসম্যান”, “পুরশ্রী”, “প্রসাদ”, “ঘরোয়া”, “বিকল্প বার্তা” (শারদীয়া সংখ্যা – ১৪২৮ এবং ১৪২৯), শব্দ সাঁকো, সয়ংসিদ্ধা, অমেয়, দৈনিক দেশজগত, বঙ্গীয় সাহিত্য দর্পণ, শব্দনগর, উদ্ভাস, শব্দ লেখা, নীলকমল, বোধগম্য, অচিন পাখি, স্বরধ্বনি পত্রিকা, সৃজাম্যহম্ , খেয়ালী খাম, কাব্যতরী, কাব্যপট, ইলশে গুঁড়ি, সাময়িকি (নরওয়ে থেকে প্রকাশিত),আশ্রম (অটোয়া থেকে প্রকাশিত) প্রভৃতি। এ’ছাড়াও লিখেছেন সমরেশ বসু সম্পাদিত “মহানগর”, “শিবনারায়ণ রায়” সম্পাদিত “জ্ঞিসাসা”, কিরণ শংকর সেনগুপ্ত সম্পাদিত “সাহিত্য চিন্তা”, পবিত্র মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত “কবিপত্র” দীপেন রায় সম্পাদিত “সীমান্ত সাহিত্য” প্রভৃতি পত্রিকায়। তিনি বহু পুরস্কার পেয়েছেন। তার প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ – “তোমাকে যে দুঃখ দেয়”, “স্মৃতি তুমি আমাকে ফেরাও”, “যাব বলে এখানে আসিনি”, “আবার বছর কুড়ি পরে”। এ’ছাড়াও কবির আরও দশটি “ই-বুক” প্রকাশিত হয়েছে। ঢাকাওয়াচ/টিআর
লেখক হিসেবে সম্বর্ধিত হলেন আসাদুজ্জামান সম্রাট
আমাদের নতুন সময়ের নগর সম্পাদক, লেখক ও গবেষক আসাদুজ্জামান সম্রাট লেখক হিসেবে আবারও সম্বর্ধিত হলেন। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে তাকেসহ ৩২ জন লেখক ও সাংবাদিককে এ সম্বর্ধনা দেয়া হয়। প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান আবিস্কার থেকে যেসব সাংবাদিক ও লেখকের বই প্রকাশিত হয়েছে তাদের সম্বর্ধনা দেয়া হয়। সম্বর্ধিত লেখক ও সাংবাদিকদের উত্তরীয় পরিয়ে দেয়া হয় আবিষ্কারের পক্ষ থেকে। আসাদুজ্জামান সম্রাটের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন কবি ও সাংবাদিক সোহরাব হাসান। আবিষ্কারের কর্ণধার এস ডি দেলোয়ার হাসানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ডেইলি লাইফের সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল ইসলাম ভুইয়া, কবি ও শিল্পী অপর্ণা খান প্রমুখ। আসাদুজ্জামান সম্রাট ছাড়াও আরো সম্বর্ধিত হলেন, কবি আব্দুল মান্নান, রফিক হাসান, মুহাম্মদ আকবর, কুদরত ই খোদা, দীপক কুমার আচার্য, পুষ্পিতা আচার্য প্রমুখ। ঢাকাওয়াচ/স
২৪-২৭ মে ‘নিউ ইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলা’
ঢাকা: ‘যত বই, তত প্রাণ’ স্লোগান নিয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ৩৩তম নিউ ইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাংলা বই মেলা। আগামী ২৪-২৭ মে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরে অবস্থিত জ্যামাইকা পারফর্মিং আর্টস সেন্টারে এ মেলা অনুষ্ঠিত হবে। সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানায় মেলার আয়োজক সংস্থা মুক্তধারা ফাউন্ডেশন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন ড. নুরুন নবী বলেন, ১৯৯২ সাল থেকে গত ৩২ বছর ধরে নিয়মিত এই মেলা আয়োজিত হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় এবার ৩৩তম বারের মতো নিউ ইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাংলা বই মেলা অনুষ্ঠিত হবে। এবারের আয়োজনের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করছেন সাংবাদিক ও লেখক হাসান ফেরদৌস। এবারের বইমেলায় বাংলাদেশ থেকে ২৫টির মতো প্রকাশনা সংস্থা, কলকাতা থেকে পাঁচটি এবং নিউ ইয়র্কসহ আমেরিকা, কানাডার ১০টিসহ মোট ৪০টি প্রকাশনা অংশ নেবে। যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত ২০টির অধিক রাজ্য থেকে এবং কানাডা, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, সুইডেন ও জাপান থেকে শতাধিক লেখক সাহিত্যিক এই মেলায় অংশ নেবেন। মেলার বিস্তারিত তুলে ধরে মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা রোকেয়া হায়দার বলেন, এবারের এই মেলার অন্যতম প্রধান আকর্ষণ বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী পালন অনুষ্ঠান। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে থাকছে বিশেষ আলোচনা। অভিবাসীদের জীবনচরিত নিয়ে নির্মিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শন এবং অর্ধ শতাধিক লেখকের নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও বই পরিচিতিমূলক অনুষ্ঠান থাকবে। বইমেলার চারদিনই থাকবে বিভিন্ন পর্বে আমেরিকায় বেড়ে উঠা নতুন প্রজন্মদের নিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা। উত্তর আমেরিকার ১৫টির অধিক সাহিত্য-সাংস্কৃতিক সংগঠন কার্যকরী সহযোগী হিসেবে মেলায় যুক্ত হয়েছে। নিউ ইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাংলা বই মেলার সিগনেচার অনুষ্ঠান লেখক পাঠক মুখোমুখিও থাকছে। তিনি বলেন, নিউ ইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলায় প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা কবি কামাল চৌধুরী, সংস্কৃতি বিষয়ক সচিব খলিল আহমেদ, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক কবি মিনার মনসুর, কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখরকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের খ্যাতনামা সৃজনশীল প্রকাশকদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এবারের নিউ ইয়র্ক বাংলা বইমেলা অনুষ্ঠিত হবে বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও কৃষ্টির বিশ্বায়নে বঙ্গবন্ধু প্রদর্শিত দিক নির্দেশ অনুসরণ করে। তিনি আরও বলেন, প্রতিবারের মতো এবারও মেলায় দেওয়া হবে মুক্তধারা-জিএফবি সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪। এ পুরস্কারের অর্থমান তিন হাজার ডলার। গত বছর এ পুরস্কার পেয়েছেন কবি আসাদ চৌধুরী। এছাড়া অভিবাসী নতুন লেখকদের প্রকাশিত গ্রন্থ থেকে পুরস্কার এবং শহীদ কাদরী গ্রন্থ পুরস্কার ২০২৪ দেওয়া হবে। অংশ নেওয়া প্রকাশনা সংস্থা থেকে বিজয়ী শ্রেষ্ঠ প্রকাশনা সংস্থাকে পুরস্কৃত করা হবে চিত্তরঞ্জন সাহা সেরা প্রকাশনা সংস্থা পুরস্কার ২০২৪। সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে একুশে পদকপ্রাপ্ত ছড়াকার লুৎফর রহমান রিটন বলেন, নিউইয়র্কের বই মেলা বাংলাদেশের মানুষের কাছে দ্বিতীয় বইমেলা। বাংলা একাডেমির আয়োজিত বইমেলার পরে নিউইয়র্কের বইমেলা ৩৩ বছর ধরে আরেকটি গৌরব অর্জন করেছে। এটা বাঙালিদের জন্য একটি বিশাল ব্যাপ্তি। মুক্তধারার এই অবদান সফল হবে। বাঙালি তার ধারাই এগিয়ে যাবে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি নুরুল হুদা বলেন, মায়ের ভাষার জন্য জীবন দিল যারা তারাই বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রথম শহীদ। তারা বাংলা ভাষা উচ্চারণ করে বাঙালি হিসেবে পরিচিত হয়েছে। তারপর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছে। বিশ্বে আজ বাঙালি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছি এটা আমার এক ধরনের অহংকার। নিউইয়র্কের বইমেলার ৩৩ বছর চলছে। কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন ৩৩ বছর কেউ কথা রাখেনি। কিন্তু মুক্তধারা ফাউন্ডেশন তার কথা রেখেছেন। তারা ৩২ বছর পার করে ৩৩ বছরে এই মেলা আয়োজন করছেন। তিনি বলেন, অপ্রাতিষ্ঠানিকভাবে মুক্তধারা ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বাংলা একাডেমি দুইটাই শুরু করেছে বই মেলা। তারা ভাষাকে স্থায়ীভাবে রাখার জন্য এই কাজটা করে যাচ্ছে। আমি প্রত্যাশা করছি, তারা তাদের এই ধারা অব্যাহত রাখবে। এ সময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন মুক্তধারা ফাউন্ডেশন প্রধান উপদেষ্টা ড. জিয়াউদ্দিন আহমেদ, জাতীয় কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সৌমিত্র শেখড়, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশনা বিক্রেতা সমিতির সহ-সভাপতি আলমগীর শিকদার লোটন, সময় প্রকাশনীর প্রকাশক ফরিদ আহমেদ, অনিন্দ্য প্রকাশনীর প্রকাশক দেলোয়ার হোসেন, অনন্যা প্রকাশনীর প্রকাশক মনিরুল হক ও কবি সৈয়দ আল ফারুক প্রমুখ। ঢাকাওয়াচ/টিআর
শামস মনোয়ারের দুই বইয়ের মোড়ক উন্মোচন
কবি, গীতিকার ও গায়ক শামস মনোয়ার। নিজের লেখা কবিতা ও গানে তিনি তুলে ধরেন বহুমাত্রিক ভাবনা। এবার বইমেলায় দুটি বই নিয়ে হাজির হলেন তিনি। বই দুটির নাম ‘প্রথমা’ ও ‘Reaching Devotion’। বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ছায়ানট অডিটোরিয়ামে এই দুই বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদ। এসময় তিনি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ ও স্মার্ট ঢাকা গড়তে সবাইকে বই পড়ার আহ্বান জানান। এসময় তিনি বলেন, জয় বাংলা বলার জন্য আমাদের এক হতে হবে। জয় বাংলা বলার জন্য কোনো দল করতে হয় না। দেশের উন্নয়নে আমাদের একসাথে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি ঢাকা-১০ আসনের মানুষকে নির্ভেজাল ভালোবাসা দিতে চান বলেও জানান ফেরদৌস। মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঋদ্ধিমান মোনায়েম সরকার, সংগীত শিল্পী শুভ্র দেব ও শামস মনোয়ারের মা সুফিয়া মনোয়ার। অনুষ্ঠানে ফেব্রুয়ারিকে উৎসর্গ করে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘একুশ’ প্রদর্শন করা হয়। ঢাকাওয়াচ/টিআর
বইমেলায় সানাউল্লাহ সাগরের দুটি কবিতার বই
অমর একুশে বইমেলা-২০২৪ এ প্রকাশিত হয়েছে সানাউল্লাহ সাগরের নতুন দুটি কবিতার বই। একটি দীর্ঘ কবিতার বই ‘পৃথিবী সমান দূরত্ব আমাদের’। অন্যটি ‘জনতা ব্যাংক রোড’। বই দুটির প্রচ্ছদ করেছেন আল নোমান। ‘পৃথিবী সমান দূরত্ব আমাদের’ পাওয়া যাবে মেলার বাউণ্ডুলে প্রকানের ৩১০ নম্বর স্টলে। মূল্য ১৫০ টাকা। ‘জনতা ব্যাংক রোড’ পাওয়া যাবে দেশ পাবলিকেশন্স-এর ৪৭৮-৪৮০ নম্বর স্টলে। মূল্য ২০০ টাকা। বই নিয়ে কবি সানাউল্লাহ সাগর জানান, আমি পাঠক হিসেবে যেমন দীর্ঘ কবিতা পড়তে পছন্দ করি, তেমন কবি হিসেবে দীর্ঘ কবিতা লিখতেও পছন্দ করি। বিশ্বাস করি দীর্ঘ কবিতা পাঠে ক্রমাগত ডুব যাওয়ার একটা ব্যাপার থাকে। সেটা আমি উপভোগ করি। ‘পৃথিবী সমান দূরত্ব আমাদের’ দীর্ঘ কবিতার বই। আর একটি কথা হলো আমি লেখায় এক্সপেরিমেন্টে বিশ্বাস করি। প্রতিটি বইয়ে তার ছাপ থাকে। ‘জনতা ব্যাংক রোড’ সেরকম একটি এক্সপেরিমেন্ট। কবিতা পাঠে যাদের একটা প্রস্তুতি আছে তাদের জন্য এই কবিতা। এছাড়া আগে প্রকাশিত তার দুটি উপন্যাস, একটি ছোটগল্প ও চারটি কবিতার বইও মেলায় পাওয়া যাচ্ছে। ঢাকাওয়াচ/টিআর
বইমেলায় নঈম নিজামের ‘আপনজনদের বেইমানিতে পতন সিরাজউদ্দৌলার’
অমর একুশে বইমেলায় এসেছে সাংবাদিক ও কলাম লেখক নঈম নিজামের নতুন বই ‘আপনজনদের বেইমানিতে পতন সিরাজউদ্দৌলার’। বইটি প্রকাশ করেছে অন্বেষা প্রকাশন। বইটিতে স্থান পেয়েছে মোট ৩১টি রচনা। উঠে এসেছে সমকালীন রাজনীতি, অর্থনীতি, ইতিহাস ও সমাজ-সংস্কৃতির বিভিন্ন প্রসঙ্গ। রয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতার আগে-পরের ইতিহাসের অনেক অজানা অধ্যায়। অন্বেষার প্রকাশক মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘এ বছর অন্বেষা থেকে ৫০টিরও বেশি নতুন বই প্রকাশ করেছি। এর মধ্যে পাঠক চাহিদায় এগিয়ে রয়েছে ‘আপনজনদের বেইমানিতে পতন সিরাজউদ্দৌলার’ বইটি। দেশের খ্যাতনামা সাংবাদিক নঈম নিজামের পাঠকপ্রিয় কলাম থেকে নির্বাচিত লেখাগুলো নিয়ে বইটি সাজানো হয়েছে। রাজনৈতিক পালাবদল ও মানবজীবনের উত্থান-পতনের গল্প বইটির বিশেষ আকর্ষণ।’ বইটির প্রচ্ছদ করেছেন শাকীর এহসানুল্লাহ। মূল্য ৪৭০ টাকা। পাওয়া যাচ্ছে বইমেলায় অন্বেষা প্রকাশনের ২৭ নাম্বার প্যাভিলিয়নে। ঢাকাওয়াচ/টিআর
বইমেলায় কাব্য সুমীর ‘হৃদয় এক নির্বাসনের নাম’
অমর একুশে বইমেলা উপলক্ষে প্রকাশ হয়েছে কাব্য সুমী সরকারের বই ‘হৃদয় এক নির্বাসনের নাম’। মেলায় ঐতিহ্য প্রকাশনীর ২৫ নম্বর প্যাভিলিয়ন এবং মাত্রা প্রকাশনীর ৪৬৬ নম্বর স্টলে বইটি পাওয়া যাবে। বইটি প্রকাশ করেছে প্রকাশনা সংস্থা সৃজন। প্রচ্ছদ এঁকেছেন দেওয়ান আতিকুর রহমান। বইটির মুদ্রিত মূল্য ২৫০ টাকা। অনলাইন বুকশপ রকমারি থেকেও বইটি বিশেষ ছাড়ে সংগ্রহ করা যাবে। ‘হৃদয় এক নির্বাসনের নাম’ কাব্যগ্রন্থটি উৎসর্গ করা হয়েছে কাব্য সুমী সরকারের দুই কন্যা নুঝহাতুত তাহসিনা চৌধুরী শারা ও নুসরাত রাইহানা চৌধুরী অপ্সরাকে। এটি তার চতুর্থ বই ও দ্বিতীয় কাব্য গ্রন্থ। এর আগে ২০২৩ সালের বইমেলায় তার প্রথম উপন্য্যাস ‘সুখ অসুখ ’ প্রকাশ করে শ্রাবণ প্রকাশন। এছাড়াও কাব্য সুমীর কবিতার বই কষ্ট কাহন ও ছড়ার বই গাতুর ব্যাঙ লম্বা ঠ্যাং পাঠকমহলে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। সাহিত্য সৃজনে ধারাবাহিকতা আছে কাব্য সুমী সরকারের। ছড়া কবিতার পর, গল্প এবং উপন্যাসে নিয়মিত হয়েছেন। সফলতার সূচকতার উর্ধমুখিই বলা চলে। বহু সম্মাননা ও পুরস্কার প্রাপ্তি ঘটেছে স্বল্প সময়ে। সাহিত্যে নিয়মিত থাকবেন, এমনটাই পোষণ করেন এই সংবেদনশীল লেখক। ‘হৃদয় এক নির্বাসনের নাম’ কাব্যগ্রন্থটি পাঠকমহলে ব্যাপক সমাদৃত হবে এমনটাই আশা করছেন কাব্য সুমী সরকার। ঢাকাওয়াচ/টিআর
আজ কবি কাজী জহিরুল ইসলামের জন্মদিন
সমকালীন বাংলা সাহিত্যের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কবি কাজী জহিরুল ইসলামের ৫৭ তম জন্মদিন আজ । ১৯৬৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি এই দিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার খাগাতুয়া গ্রামে, মাতুলালয়ে, জন্মগ্রহণ করেন কবি। কবির শৈশব-কৈশোর কাটে পুরনো ঢাকায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবস্থাপনায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। খুব কম বয়স থেকেই কবিতার ঘোরে আচ্ছন্ন থাকলেও পেশাগত জীবনে তিনি একজন সফল মানুষ। পেশাগতভাবে তিনি জাতিসংঘের একজন আন্তর্জাতিক কর্মকর্তা। কাজী জহিরুল ইসলামের সাহিত্যে একদিকে যেমন বাংলাদেশের গ্রামীণ জনপদ ও জীবন উঠে এসেছে অন্যদিকে যুক্ত হয়েছে প্রচুর আন্তর্জাতিক অনুষঙ্গ, যা বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে। কবিতা, কথাসাহিত্য ও প্রবন্ধ সাহিত্যের পাশাপাশি তার রচিত ভ্রমণসাহিত্য তরুণ প্রজন্মকে প্রতিনিয়ত স্বপ্ন দেখায় উন্নত জীবনের। কবি কাজী জহিরুল ইসলামের প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা ৯০ এর ওপরে, এর মধ্যে কবিতাসমগ্র ১,২,৩ সহ মোট ৩৯ টি কবিতার বই। বাংলা কবিতায় তিনি ক্রিয়াপদহীন কবিতার প্রবর্তক। কবিতা ছাড়াও তার প্রবন্ধ এবং ভ্রমণ রচনা ব্যাপকভাবে পাঠক নন্দিত। তার কবিতা উড়িয়া, সার্বিয়ান, আলবেনিয়ান, ইংরেজি, রুশসহ বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। কবিতায় বিশেষ অবদানের জন্য কাজী জহিরুল ইসলাম বাংলাদেশ থেকে কবি জসীম উদদীন পুরস্কার, নিউইয়র্ক থেকে ড্রিম ফাউন্ডেশন পুরস্কার, ক্যালিফোর্নিয়া থেকে জেসমিন খান এওয়ার্ড, ভারত থেকে রসমতি সম্মাননা এবং ডালাস থেকে স্বাধীনতা পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। পুলিৎজার বিজয়ী আমেরিকান কবি রে আর্মান্ট্রাউটের নির্বাচিত কবিতার অনুবাদ করেন তিনি, দ্বিভাষিক এই বইটি যৌথভাবে প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েজলিয়ন ইউনিভার্সিটি প্রেস ও বাংলাদেশের অগ্রদূত অ্যান্ড কোম্পানি। এ ছাড়া তিনি এজরা পাউন্ড ও জালালুদ্দিন রুমির কবিতা অনুবাদ করেন। তার রচিত ‘ক্রিয়াপদহীন ক্রিয়াকলাপ’ গ্রন্থটি ভারত থেকে বাংলায় ও পরে উড়িয়া ভাষায় প্রকাশিত হয়। বাংলা কবিতার ছন্দ-প্রকরণের ওপর তার বিষ্ময়কর নিয়ন্ত্রণ তাকে একজন প্রকরণ-বিশারদে পরিণত করেছে। বহু জ্যেষ্ঠ কবিও তার কাছে ছন্দ শেখার আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি মাত্রাবৃত্ত ও স্বরবৃত্ত ছন্দে যথাক্রমে ‘ভোরের হাওয়া’ ও ‘শেষ বিকেলের গান’ গ্রন্থ দুটি রচনা করে বাঙালী কবি ও আবৃত্তিশিল্পীদের উপকার করেছেন। এ-বছর বাংলা একাডেমির বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে তার ‘ভ্রমণ সংগ্রহ’, রয়েল সাইজের প্রায় ১১০০ পৃষ্ঠার এই গ্রন্থে তার সব ভ্রমণরচনা একসঙ্গে পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া অনন্যা বের করেছে সাড়ে তিনশ পৃষ্ঠার প্রবন্ধের বই ‘হিলসাইডে শিল্পের আড্ডা’, ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ বেশ করেছে ‘হেশেলের বিশ্বভ্রমণ’ ও ‘রুমির রুবাইয়াত’। সাত ভাষাশহীদকে নিয়ে লেখা গল্পের বই ‘উত্থানপর্বের গল্প’ গ্রন্থ রচনার জন্য বহুমাত্রিক লেখক হাসনাত আবদুল হাই তাকে ‘ভাষাশিল্পী’ উপাধিতে ভূষিত করেন। কাজী জহিরুল ইসলাম বর্তমানে জাতিসংঘের কর্মসূত্রে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে সপরিবারে বসবাস করছেন। তার স্ত্রী মুক্তি জহির জাতিসংঘ সদর দফতরের একজন এইচআর স্পেশ্যালিস্ট। পুত্র কাজী আবরার জহির একটি আমেরিকান কোম্পানির সিইও, কন্যা কাজী সারাফ জল স্কুলের ছাত্রী। কবির পিতা কাজী মঙ্গল মিয়া এবং মাতা সোফিয়া কাজী ঢাকায় বসবাস করেন। ঢাকাওয়াচ/টিআর
বইমেলায় আবুল বাশার শেখের ‘আড়ালের জলছবি’
অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০২৪ এ মেলায় প্রকাশিত হয়েছে বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী তারুণ্যের কবি ও সাংবাদিক আবুল বাশার শেখ’র কাব্যগ্রন্থ ‘আড়ালের জলছবি’। কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশ হচ্ছে প্রিয় বাংলা প্রকাশন থেকে। প্রচ্ছদ এঁকেছেন এস এম জসিম ভূইয়া। আবুল বাশার শেখ’র এ কাব্য গ্রন্থটি নিয়ে একুশে টিভির নিউজরুম এডিটর সমর ইসলাম বলেন- ‘আড়ালের জলছবি’ কবির ২য় কবিতার বই। সাগরের গভীর থেকে একজন দক্ষ শিকারী যেমন তার শিকারকে তুলে আনে ঠিক তেমনি কবি চলমান জীবনের এপার-ওপার বিশ্লেষণের মাধ্যমে সূক্ষতার সাথে তারুণ্যের রোমান্টিকতাকে ‘আড়ালের জলছবি’ কাব্যগ্রন্থে তুলে ধরেছেন। যা পাঠককে অন্য এক প্রেমময় জগতে নিয়ে যাবে। সিনিয়র সাংবাদিক ভালুকা প্রেসক্লাবের সভাপতি এম এ মালেক খান উজ্জল বলেন- সাংবাদিক আবুল বাশার শেখ লেখালেখির জগতে দীর্ঘদিন যাবৎ দক্ষতার সাথে নানা বিষয় পাঠকের সামনে তুলে ধরছেন। একজন দক্ষ সংগঠকের পাশাপাশি একজন দক্ষ লেখক হিসেবে নিজের একটি অবস্থান তৈরি করেছেন। এবারের বইমেলায় প্রকাশিত ‘আড়ালের জলছবি’ তার ২য় কাব্যগ্রন্থ। এটি পাঠকের মনে জায়গা করে নিবে বলে আশা রাখছি। প্রিয় বাংলা প্রকাশনের প্রকাশক এস এম জসিম ভূইয়া বলেন, দুর্দান্ত কিছু কবিতা দিয়ে সাজানো হয়েছে ‘আড়ালের জলছবি’ গ্রন্থটি। ইতিমধ্যেই বইয়ের সব কাজ শেষ হয়েছে। আমি আশা করি কাব্যগ্রন্থটি পাঠক প্রিয়তার শীর্ষে জায়গা করে নেবে। বইটি প্রিয় বাংলার ৪০১ ও ৪০২ নং স্টলে পাওয়া যাবে। কবি আবুল বাশার শেখ ১৯৮৬ সালের ১লা জুন ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলার বাদে পুরুড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা- মোঃ আঃ ছামাদ শেখ, মাতা- মোছাঃ রূপজান নেছা। ছয় ভাই ও এক বোনের মধ্যে লেখক সর্বকনিষ্ঠ। সরকারী আনন্দ মোহন কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর পাশ করেন। ১৯৯৯ সাল থেকে কবি, গীতিকার, গল্পকার, সাংবাদিক, কলামিষ্ট হিসেবে দেশের বিভিন্ন দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক, অন লাইন নিউজ পোর্টাল ও বিভিন্ন প্রকাশনা/সাময়িকীতে সাহিত্য ও সমাজের নানা বিষয় নিয়ে নিয়মিত লিখে চলছেন। ২০১৮ সালে বাবুই প্রকাশনী থেকে প্রকাশ পায় প্রথম একক কাব্যগ্রন্থ ‘হৃদ্যতার নিশিকাব্য’। প্রকাশিত যৌথ কাব্য/গল্প গ্রন্থ ২০-এর অধিক। ঢাকাওয়াচ/টিআর
কবি তুহিন মাহামুদের কবিতা ‘মানুষ গুলো’
দ্যাখ! কিভাবে নিভে যায় সভ্যতার আলো পৃথিবীর বুক থেকে! মানবতা হামাগুড়ি খায় ছোট ছোট আঙ্গিনায়। কাঁন্নার শব্দে জেগে ওঠে ঘুমন্ত মানুষ গুলো একেক করে!! দ্যাখ! ঐ মানুষ গুলো ওদের হাতে রক্ত খেলা করে। সমাজ কেঁপে ওঠে বনের পশু গুলো অভয়ারণ্য খুঁজে! নীরিহ মানুষের চোখে মুখে আতঙ্কের বিদ্যুৎচমকায় ছলাৎ করে। দ্যাখ! ওরা নাকি রাজনীতিবিদ ভীন্ন গ্রহের মত বসবাস! চোখ গুলো নক্ষত্রর মত জ্বল জ্বল করে। স্নিগ্ধতা পুঁড়ে পুঁড়ে শোষনে যন্ত্রণার মত জ্বলে ওঠে গৃহহারা মানুষের বুকে!! দ্যাখ! ঐ যে মানুষ গুলো ওদের কাছে ছুটে যায় পিঁপিঁলিকার মত দলবেঁধে অসহায়াত্বের প্রাচীর ভাঙ্গার কামনায়। আর ওরা চিবুয়ে খায় আখ মাড়ানোর মত নির্দ্বিধায়। দ্যাখ! পৃথিবীর রুপ! রঙ্গিন আলোয় দিন গুলো সাজে রাতের মত,আর রাত গুলো দিনের মত! রমনীর দেহের মত আটকে থাকে কস্ট গুলো তৃপ্তময় ভাঁজে ভাঁজে!! কাতর সময় গুলো ঠাঁয় দাঁড়িয়ে রয় ক্লান্ত দুপুরের গায়ে হেলান দিয়ে!! দ্যাখ! মানুষ গুলো দেখতে — মানুষের মতই মনে হয়! কোন এক দ্বৈবত ঘটনায় হয়তো পাল্টে গেছে স্নায়ুকোষ গুলো! হৃদ্যতা মনুষ্যত্বহীনতার ছোঁয়ায় কেমন যেন তামাটে রুপান্তরিত হয়। ঢাকাওয়াচ/টিআর
জাতীয় কবিতা উৎসব ১ ও ২ ফেব্রুয়ারি
‘যুদ্ধ গণহত্যা সহে না কবিতা’ স্লোগানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারসংলগ্ন চত্বরে আগামী ১ ও ২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ৩৬তম জাতীয় কবিতা উৎসব। এদিন এই উৎসবে জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কারপ্রাপ্ত কবির নাম ঘোষণা করা হবে। ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশের কবিরা এবারের উৎসবে অংশ নেবেন বলে। এ ছাড়া অনলাইনের মাধ্যমে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত হতে যুক্ত হবেন অন্যান্য দেশের বিখ্যাত কবিরা। আজ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছে জাতীয় কবিতা পরিষদ। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দুই দিনব্যাপী এই উৎসবের উদ্বোধন করবেন কবি নির্মলেন্দু গুণ। এবারের কবিতা উৎসব কবি আসাদ চৌধুরী, কবি মোহাম্মদ রফিক, কবি জাহিদুল হক, কবি বুলবুল মহলানবীশ ও কবি হানিফ খানকে উৎসর্গ করা হয়েছে বলেও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে। ঢাকাওয়াচ/টিআর
তুহিন মাহামুদের কবিতা অজানা
ভুল পথে হেটেছি বন্ধু বহুকাল ধরে। আজও পাইনি সঠিক ঠিকানা ভুল পথের তরে। ভুল স্বপ্ন দেখছি বন্ধু কৈশর জীবন থেকে। জেগে দেখি সব কিছুই দু:স্বপ্নে গ্যাছে ঢেকে। ভুল সম্পর্ক গড়েছি বন্ধু যাকে আপন ভেবে। বিপদকালে চেয়ে দেখি সে, চলে গেছে আমায় ছেড়ে। বন্ধু! তুমিও একদিন যাবে চলে রঙ্গিন আলোর মাঝে। হয়তো সেদিন আর লেখা হবে না এ হৃদয়ের কথা জগতের মাঝে। ঢাকাওয়াচ/টিআর
আসছে অদিতি তুলির ‘আনন্দ বসন্ত সমাগমে’
অমর একুশে বইমেলা ২০২৪ উপলক্ষে প্রকাশিত হচ্ছে অদিতি তুলির রোমান্টিক উপন্যাস ‘আনন্দ বসন্ত সমাগমে’। বইটি প্রকাশ করছে নবকথন প্রকাশনী। ৯৫ পৃষ্টার বইটির প্রচ্ছদ করেছেন সাদিতউজজামান।বইটির বিক্রয় মূল্য রাখা হয়েছে ২৮০ টাকা। এরই মধ্যে রকমারি ডটকম, বুকলেট এ বইটির প্রি-অর্ডার শুরু হয়ে গেছে। এছাড়া বইমেলায় নবকথন প্রকাশনীর স্টলে বইটি পাওয়া যাবে। ‘আনন্দ বসন্ত সমাগমে’ অদিতি তুলির দ্বিতীয় গ্রন্থ। এর আগে ‘দুঃখগুলো নির্বাসিত হোক’ শিরোনামে প্রথম কবিতার বই প্রকাশ হয়। যা পাঠক মহলে বেশ সমাদৃত হয়। ২০০১ সালের ৬ অক্টোবর জীবনানন্দের জন্মভূমিতে জন্মগ্রহণ করেন অদিতি তুলি। বয়স বাড়লেই যেমন ঘর ছাড়ে মানুষ জীবন আর জীবিকার অন্বেষনে ঠিক তাই বয়স বেড়েই আজ জাদুর শহরের বাসিন্দা অদিতি তুলি। যে মুগ্ধ হয় নন্দনতত্ত্বে ; আগলে রাখে চেতনায় আর মননে যত সভ্য, সৃষ্টিশীল, সনাতন ঐশ্বর্যের পুরোনো উদ্দীপক। মানুষের শরীরের অসুখ সারাতে গিয়ে যে অপ্রকাশিত মনের ভাষাটাও পড়তে শিখে নিয়েছে এতদিনে। মনযোগী শ্রোতা, নিজেকে যে পাঠক পরিচয় দিতেই স্বাচ্ছন্দবোধ করেন। যাপিত জীবনের আনন্দ- দুঃখ, প্রাপ্তি – অপ্রাপ্তি জমা রাখে কবিতায়। এক মুক্তমনা অখ্যাত গাঙচিল যে বরাবরই শেকড়কে ভালোবেসে মানুষ হতে চেয়েছে। ঢাকাওয়াচ/টিআর
কবি তুহিন মাহামুদের জন্মদিন আজ
আজ ৩১ ডিসেম্বর কবি ও প্রবাসী সাংবাদিক তুহিন মাহামুদের জন্মদিন। তিনি এই দিনে গোপালঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার রাঘদী ইউনিয়নের মোল্লাদী গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ২টি। তার কবিতায় গ্রামবাংলা থেকে শুরু করে নগরায়ণ, নাগরিক জীবন, জীবনের জটিলতা, প্রেম, পরবাস, পরাবাস্তব প্রভৃতি প্রতিফলিত হয়। ২০২০ একুশে বই মেলায় তুহিন মাহামুদের ‘অতৃপ্ত বাসনা’ কাব্য গ্রন্থটি পাঠক মহলে বেশ সমাদৃত হয়। উক্তি ও শ্লোক বিষয়ক তার দ্বিতীয় গ্রন্থ ‘পরিবর্তন’ও পাঠকে মহলে বেশ সাড়া ফেলেছে। ছাত্র জীবন থেকেই লেখালেখি শুরু করেন কবি তুহিন মাহামুদ। মাদারীপুর সাপ্তাহিক আঁড়িয়াল খাঁতে তার প্রথম কবিতা প্রকাশ হয়। মঞ্চ নাটকে কাজ করা, কলেজে দেয়াল পত্রিকা সম্পাদনা, আবৃত্তি সহ সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বিভিন্ন শাখায় কাজ করেছেন। এরপর ১৯৯৭ সালে পাড়ি জমান ইউরোপে। বর্তমানে তিনি স্থায়ীভাবে যুক্তরাজ্যে স্বপরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। প্রবাসের মাটিতেও রয়েছে তার সামাজিক,রাজনৈতিক এবং সাংবাদিক হিসেবে সুপরিচিত। সাংস্কৃতিক সংগঠন “শিকড়” ও বাংলাদেশের সর্ববৃহত সংগঠন “বাংলার মুখ” ইতালি শাখার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। পাশাপাশি প্রবাসী সাংবাদিকদের সংগঠন “মিলান বাঙলা প্রেসক্লাব এর উপদেষ্টা এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়া ফোরাম (আইএমএফ) এর সমন্বয়ক হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি। লেখালেখি করেছেন অসংখ্য পত্রিকায়। ইতালি প্রতিনিধি হয়ে কাজ করেছেন এনটিভি, বাংলা ভিশন টেলিভিশনে। মানবতার কল্যাণে মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত লিখে যেতে চান তিনি। ঢাকাওয়াচ/টিআর
কবি তুহিন মাহামুদের কবিতা ‘তোমার অপেক্ষায়’
একদিন এখানেও শান্তি ছিলো কষ্ট ছিলো দুঃখ ছিলো একবুক আশাও ছিলো। ছোট ছোট স্বপ্ন গুলো তুলার মত বাতাসে উড়তো কিশোর-কিশোরীর মত ছুঁয়ার প্রবল ইচ্ছাও জাগতো ভালোবাসার অবগাহনে বিমোহিত ছিলো সারাক্ষণ দিনমান স্বপ্ন নিয়ে ধূলায় গড়াগড়ি খেতো শিশুর মত। বিবাদ ছিলো মন জয় করার আন্তরিক মন্ত্রও ছিলো সুপ্তমনে বাসনা জাগতো শিশির স্নাত দূর্বাঘাসের মতই। ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ ছিলো মননের কোষগুলো! আজ এখানে শান্তি নেই, অশান্ত সমীরণে স্বপ্ন দোলে বুকের মাঝে ব্যাথা জমে কষ্টের হাহাকার জাগে মানুষ গুলো নির্বাক তাকিয়ে থাকে। মনে হয় কোন এককালের অভিশাপের যাতনায় সমাজটা কাতরাতে থাকে প্রচন্ড যন্ত্রণায়। তবুও স্বপ্ন জাগে……. ভোরের কুয়াশার মত দেখা মেলে অস্পষ্ট এক ভালোবাসার মোহনায়। তুমি আসবে কি এখানে? একটি গল্প লিখতে অথবা একটি ছড়া! কিংবা একটি ছন্দের অনুকাব্য! মৃত্যু পুরীতে স্বপ্নকণ্যার হাতছানি রণক্ষেত্রে মৈত্রের আহবান! দিনশেষে রক্ত গোধূলীর দিকে তাকিয়ে একটি বিশুদ্ধ সকালের অপেক্ষায়! তুমি আসবে তো! সভ্যতার চাদর গায়ে জড়ায়ে অনাগত সুন্দরর এক ভবিষ্যতের দিকে হাটতে। মৃদু পায়ে দেখবে পৃথিবীও হাটছে তোমা পিছে পিছে। ঢাকাওয়াচ/টিআর
আসছে সালাহ উদ্দিন মাহমুদের ‘বাংলা সাহিত্যে শিল্পপ্রবণতা’
অমর একুশে বইমেলা ২০২৪ উপলক্ষে প্রকাশিত হচ্ছে সালাহ উদ্দিন মাহমুদের দ্বিতীয় প্রবন্ধের বই ‘বাংলা সাহিত্যে শিল্পপ্রবণতা’। বইটি প্রকাশ করছে কিংবদন্তী পাবলিকেশন। ৬ ফর্মার বইটির প্রচ্ছদ করেছেন চারু পিন্টু। বইটির বিক্রয় মূল্য রাখা হয়েছে ৩০০ টাকা। এরই মধ্যে রকমারি ডটকমে বইটির প্রি-অর্ডার শুরু হয়ে গেছে। এছাড়া বইমেলায় কিংবদন্তী পাবলিকেশনের স্টলে বইটি পাওয়া যাবে। বইটি সম্পর্কে সালাহ উদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘এটি আমার ১২তম বই। প্রবন্ধ হিসেবে দ্বিতীয়। এই বইয়ে মূলত বাংলা সাহিত্যে যেসব শিল্পপ্রবণতা প্রতিফলিত হয়েছে, তারই কিঞ্চিৎ ইঙ্গিত দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। সেই অর্থে কোনো প্রবন্ধই গবেষণা নয়, আবার গবেষণার বাইরেও নয়।’ কিংবদন্তী পাবলিকেশনের প্রধান নির্বাহী অঞ্জন হাসান পবন বলেন, ‘সালাহ উদ্দিন মাহমুদের ‘বাংলা সাহিত্যের একাল-সেকাল’ প্রকাশ করে ভালো সাড়া পেয়েছিলাম। তাই এবার তার দ্বিতীয় প্রবন্ধের বই ‘বাংলা সাহিত্যে শিল্পপ্রবণতা’ প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করি বইটি পাঠকের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করবে।’ সালাহ উদ্দিন মাহমুদ কবিতা, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, নাটক, কলাম, শিশুতোষ গল্প ও সাহিত্য সমালোচনা লিখে থাকেন। বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ড. রাজিব মণ্ডলের অধীনে এমফিল গবেষণা করছেন। তিনি অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে ফিচার ইনচার্জ পদে কর্মরত। তার গল্পের বই ‘সার্কাসসুন্দরী’, ‘নিশিসুন্দরী’, ‘সুন্দরী সমগ্র’ ও ‘এখানে কয়েকটি জীবন’। কবিতার বই ‘মিথিলার জন্য কাব্য’ ও ‘তুমি চাইলে’। সাক্ষাৎকার সংকলন ‘আমার আমি’ ও সচেতনতামূলক বই ‘অগ্নিকাণ্ড সতর্কতা ও নির্বাপণ কৌশল’। তার উপন্যাস ‘মমতা’। প্রবন্ধ ‘বাংলা সাহিত্যের একাল-সেকাল’। কিশোর জীবনকথা ‘হাজী মহম্মদ মহসীন’। ঢাকাওয়াচ/টিআর
কাব্য সুমীর ‘একটি ফুলের তোড়া’
– একটু তাড়াতাড়ি চলো না ভাই – আফা এতো আতাফাতা করতাছুইন কে ? – আরে ভাই, তোমাকে বললাম তাড়াতাড়ি যাও, তুমি পেছন ফিরে দাঁত বের করে হাসছো? – খেপতাছুইন কে আফা? – আরে ভাই তাড়াতাড়ি যাও দেখি আজ শুক্রবার। সন্ধ্যায় রাস্তায় খুব ভীড়। হাসপাতালে থেকে বেরিয়ে সোজা চলে যাচ্ছি দাওয়াত খেতে। পোশাক দেখে মানুষ কি বলবে? বলুক। আমার তো আন্তরিকতার অভাব নাই। যাচ্ছি তো। – আফা কোন দিকে যামু তা তো কইলেন না? – ও আচ্ছা বলিনি বুঝি ! তুমি সোজা গিয়ে বামে একটু দাঁড়াবে। সেখানে ফুলের দোকান আছে, ফুল নিবো। তারপর পার্কের দিকে যাবে। – আইচ্ছা আফা। রিকশা থেকে নামলাম। এতো ভীড়ের মাঝে দরদাম করে একটা ফুলের তোড়া নিলাম। যদিও আজকের জন্য একটা ফুলের তোড়া কেনা খুব কঠিন ছিলো ব্যাপারটা। – খালা ফুল কত দিয়া কিনলাইন? – কত আর তিনশ টাকা নিলো। – তিনশো ট্যাহা? – আর বলো না। এক বছর আগেও এ তোড়ার দাম ছিলো অর্ধেক। বাজারের সব জিনিসপত্রের হুরহুরিয়ে বাড়ছে দাম। ফুলের তোড়ার আর কি দোষ বলো! – হারাদিন রিস্কা চালাইয়া কত কষ্ট হইরা দুইশ ট্যাহা কামাই হরার পাইতাম না আর আনহেরা খালা ফুল কিনুইন তিনশ ট্যাহা দে। আমার ছোড মাইয়াডা কইছিন হের ইস্কুল নিবার লেইহ্যা ফুলের তোড়া কিনবার। হেইদিন হারাদিন খাডনির টেহা দে একটা ফুলের তোড়া কিনছিলাম। তয় বাড়িত আর লইয়া যাইবার পারি নাই। মায়াডা ম্যালা দুঃখ পাইছে। টিভিত দেইখ্যা কইছিন আব্বা আমার লেইগ্যা এরুম ফুলের তোড়া আইনা দিবা। – তুমি এমন ভাবছো কেন ভাই। যারা ফুল বিক্রেতা তাদেরও কর্সংস্থান হচ্ছে। কত মানুষের ভাতের যোগাড় হচ্ছে এ ব্যবসা থেকে। আচ্ছা বাড়িতে নিতে পারলানা মানেটা কি বুঝলাম না তো। – হেইডা তো অনেক কতা। আনহেরে সব কইবাম। তয় আমার পোলাপাইনগুলা তো না খাইয়া থাহে খালা। – কি বলছো তুমি? আমি বুঝতে পারলাম না তুমি আমারে আগে আপা ডাকলে এখন খালা ডাকছো কেন? আরে আরে তুমি রিকসা কোন দিকে নিয়ে যাচ্ছো। এতো অন্ধকারে। এটা কোন জায়গা? লোকটা পিছন ফিরে তাকিয়ে দাঁত বের করে হাহাহা করে হেসে উঠতেই আমি এক চিৎকার দিয়ে উঠলাম। আমি যার রিক্সায় ওঠেছিলাম তিনিই তো এ লোক। কিন্তু তিনি তো যুবক বয়সী ছিলেন। ওনার চুলগুলো আধা কাচা পাকা চুলের কি করে হলো? এই আপনি কোথায় চললেন? আপনি এই অন্ধকারে আমাকে নিয়ে কেন এলেন? লোকটা কোন কথাই বলছে না। আমি সামনে এগুতেই হাত দিয়ে একটা ঘরের দিকে ইশারা করে দেখিয়ে মুহূর্তে মিলিয়ে গেলেন। আমি খুব সাহস করে কুঁড়ে ঘরটার দিকে এগিয়ে গেলাম। দরজায় শব্দ করতেই দশ-এগারো বছর বয়সী একটা বাচ্চা মেয়ে দরজা খুলে দিলো। বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছে পঞ্চাশ-পঞ্চান্ন বছর বয়স্কা এক নারী। ঘরে আরও তিনজন ছেলেমেয়ে। তারা আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে। বাঁশের ফালার জীর্ণ ঘরের দেয়ালে একটা ছবির দিকে চোখ পড়লো। -ছবিটা কার? -আমগর আব্বা। টেরাকের নিচে পইরা বছর অইলো মইরা গেছে। মেয়েটা আমার দিকে এগিয়ে এসে আরও বললো- আমার ইস্কুল থেইকা মিছিল অইবো,বেহেই ফুল লইয়া আইবো। আব্বারে আমি কইছিলাম। আব্বা তো ফুল লইয়া আইবার সময় টেরাকের নিচে পইরা মইরা গেছিন। কালহা তো আবার একুশে ফেব্রুয়ারি। আনহেরে কি আব্বা কইয়া গেছিন? আমি ত আর এহন ইস্কুলে পড়ি না। আমি মেয়েটার হাতে ফুলগুলো দিয়ে তার মাথায় হাত রাখলাম… আমি যখন জাগলাম বিছানায় জ্বরে কাঁপছি। ওঠেই চিৎকার দিয়ে ওঠলাম। দৌড়ে আসলো সবাই। -আমি কোথায় ছিলাম গতরাতে? আমাকে তাদের কাছে নিয়ে চল। আমাকে সবাই বুঝাতে চেষ্টা করলো আমি অসুস্থ। তারপরও আমি জেদ করলাম। আমি দেখলাম মেয়েটি খালি পায়ে ফুলের তোড়া নিয়ে হেঁটে স্কুলের দিকে যাচ্ছে। একজন লোকটির কবর দেখিয়ে দিলো। গতরাতে তো এখানেই তিনি অন্ধকারে মিলিয়ে গেলেন। আমি লোকটির কবরের কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম। চোখ থেকে দুফোটা পানি পড়ে গেল। বুঝলাম অনেক দায়িত্ব আমার কাঁধে দিয়ে গত রাতে তিনি অন্ধকারে লুকিয়েছেন। ঢাকাওয়াচ/টিআর
৪৭ কোটি টাকার বই বিক্রি
অমর একুশে বইমেলার সমাপ্তি হলো মঙ্গলবার। করোনা মহামারির পর স্বতঃস্ফূর্ত এক বইমেলার স্বাদ পেল পাঠক, যেখানে ছিল না মাস্ক পরা বা স্বাস্থ্যবিধি মানার বাধ্যবাধকতা। এবারের মেলায় ৪৭ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়েছে গত বছর বইমেলায় বিক্রি হয়েছিল ৫২ কোটি টাকার বই এ বছর নতুন বই এসেছে ৩ হাজার ৭৫০টি, গত বছর এসেছিল ৩ হাজার ৪১৬টি। বইমেলার সমাপন অনুষ্ঠানে মঙ্গলবার এই তথ্য জানান মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব কেএম মুজাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, বইমেলা কমিটির দেওয়া ফর্মে প্রকাশকরা যে তথ্য দিয়েছেন, তা থেকে এই উপাত্ত প্রকাশ করা হয়েছে কিন্তু নতুন বই বা বই বিক্রির তথ্যটি সঠিক নয় বলে বইমেলা পরিচালনা কমিটি মনে করে অনেক প্রথিতযশা প্রকাশকও নতুন বই বা বই বিক্রির তথ্য দেননি পূর্ণাঙ্গভাবে। তাই এই তথ্যটি বাস্তবসম্মত নয়। ঢাকাওয়াচ/স
জেবুননাহার জনির পাঁচটি কবিতা
পরিমাপ একা একা প্রকৃতি দেখার মাঝে আনন্দ আছে নিজেকে চেনা যায় বহুরুপে সুখের খোঁজ পেলে কি কেউ আর দু:খ পেতে চায়? তোলপাড়ের তীব্রতায় জানি না- কতটা সুখ পাওয়া যায়? তবে সবই কি মানুষের জানা থাকে? অজানাই তো বেশি থেকে যায় শব্দ যতই সংক্ষিপ্ত হোক, তার গভীরতা কতখানি তাই তো আসল… মৃত্যু দূর থেকেও ভালোবাসা যায় কিন্তু দূরে যাবার প্রয়োজন কি খুব বেশী? অন্যের কাছে বন্দী থাকলে মুক্ত হওয়া যায় কিন্তু নিজের কাছে বন্দী হলে সহজে মুক্ত হওয়া যায় না দীর্ঘ নীরবতায় মনোযোগি না হলে হয়তো বিপ্লব হয়ে যেতে পারে কেউ যখন বিখ্যাত হতে থাকে তার ভেতরে তখন অহমিকা জেগে ওঠে নিজের অজান্তে মানুষ একবার জন্ম নেয় কিন্তু মরে বহুবার… উচাটন একা একা কফি পানে বিরহ জাগিয়ে ঘুমে পুড়েছে আগুন ডানে মোড়; বায়ে মোড় তবু পড়েনা ঘুম পড়া ভালো, উপরে ওঠার সম্ভাবনা থাকে স্মৃতির ভাঁজে বড় অসম জীবন স্মারকলিপিতে উঁচু- নীচু স্রোতে পিপাসায় কাতর জীবন পিছুটান থাকবেই তবু বেঁচে আছি বলতেই পথ চলা জীবন বড় সুন্দর… ক্লোজ চ্যাপ্টার বহু আগেই ক্লোজ হওয়া চ্যাপ্টার তবু মনে হলে আজও অবিরাম স্মৃতি ঝরে… সুদ-আসল সাত সাগর পাড়ি দিয়ে সৈকতে পড়ে থাকা লোকের সংখ্যাই বেশী জেনেশুনে-ও কেউ কেউ বিষপান করে তাই, দুঃখের কাছেই হয়তো সবাই দুঃখ জমা রাখে যেমন টাকা গচ্ছিত ব্যাংকে টাকা জমা রাখা হয় ঠিক তেমনই কতজনের আপন গোপন দুঃখ যে জমা রেখেছি নিজের কাছে যা সুদে-আসলে দিন দিন শুধু বেড়েই চলেছে… ঢাকাওয়াচ/স
বইমেলায় শর্মি ভৌমিকের ‘প্রেমে পূর্ণতায়’
এবারের বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে কবি শর্মি ভৌমিকের কাব্যগ্রন্থ ‘প্রেমে পূর্ণতায়’। বইটি প্রকাশ করেছে শব্দশৈলী প্রকাশনা। বইটির মলাট মূল্য রাখা হয়েছে ২০০ টাকা। বইটির পাওয়া যাবে ২৫৬-২৫৯ নম্বর স্টলে। এছাড়া রকমারিতে পাওয়া যাবে যেকোনো সময়। বইটি এরই মধ্যে পাঠক প্রিয়তা পাওয়ায় উচ্ছাসিত কবি শর্মি ভৌমিক বলেন ‘প্রেমে পূর্ণতায়’ কাব্যগ্রন্থটি পাঠকের হৃদয় স্পর্শ করবে এটাই আমার বিশ্বাস। ঢাকাওয়াচ/স
কলকাতায় তৃতীয় বিশ্ব সিলেট উৎসব শুরু শুক্রবার
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক ও কানাডার টরন্টোর পর এবার বিশ্ব সিলেট উৎসব হচ্ছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতায়। দক্ষিণ কলকাতা সিলেট অ্যাসোসিয়েশনের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে যোধপুর পার্ক বয়েজ স্কুল প্রাঙ্গণে তিন দিনব্যাপী উৎসবের উদ্বোধন হবে শুক্রবার। তৃতীয়বারের মতো এ উৎসবে ভারত, বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী সিলেটিরা অংশ নেবেন। বৃহস্পতিবার যোধপুর পার্ক বয়েজ স্কুল প্রাঙ্গণে সংবাদ সম্মেলনে উৎসবের বিস্তারিত তুলে ধরেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি প্রদোশ রঞ্জন দে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বাপ্পু এন্দো, সাংস্কৃতিক সম্পাদক দীপ্তা দে, মিডিয়া কনভেনর রক্তিম দাশ, অল ইন্ডিয়া শ্রীহট্ট সম্মিলনীর সভানেত্রী কৃষ্ণা দাস, সাকি চৌধুরী (জার্মানি), শেখর চৌধুরী (কানাডা), সাইফুল ইসলাম সুমন (বাংলাদেশ) প্রমুখ। ঢাকাওয়াচ/স