আমার এলাকার খবর

‘ধর্ষণচেষ্টায়’ বেয়াইয়ের চোখ তুলে নিলেন বেয়াইন

যশোরে ‘ধর্ষণচেষ্টায়’ বেয়াইয়ের চোখ তুলে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত বেয়াই সিরাজুল ইসলাম কুটিকে (৪৫) উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করা হয়েছে। শনিবার (২৯ মার্চ) দুপুরে যশোর সদর উপজেলার বাহাদুরপুর জেস গার্ডেন পার্ক এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। আহত সিরাজুল ইসলাম কুটি শহরের বারান্দিপাড়া কদমতলা এলাকার মৃত রবিউল ইসলামের ছেলে। এছাড়াও তিনি ভুক্তভোগী নারীর মেয়ের শ্বশুর। তবে এ ঘটনায় উভয়ের পরিবার ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য দিয়েছেন। পরে ভুক্তভোগী বেয়াইন নিজেই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। স্থানীয় সূত্র জানায়, শনিবার দুপুরে বেয়াই সিরাজুল বেয়াইনের বাড়িতে যান। এরপর হঠাৎ ওই বাড়ি থেকে মারামারি ও কান্নাকাটির শব্দ পাওয়া যায়। পরে প্রতিবেশীরা ওই বাড়িতে গিয়ে দেখেন, একে অন্যকে লোহার পাইপ দিয়ে মারধর করছে। এর মধ্যে সিরাজুলের এক চোখ ক্ষতবিক্ষত দেখতে পান। এ ছাড়াও ভুক্তভোগী নারীর শরীরের বিভিন্ন স্থানেও জখমের দাগ দেখতে পান। পরে স্থানীয়রা তাদের থামান এবং গুরুতর অবস্থায় সিরাজুলকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে কতর্ব্যরত চিকিৎসক নিজাম উদ্দিন উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করেন। এ সময় ভুক্তভোগী নারী নিজেই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। এদিকে হাসপাতালে সিরাজুল ও তার স্বজনেরা জানান, পূর্বশত্রুতার জেরে বেয়াইন ও তার মেয়ে এবং তার আরেক জামাতা মিলে সিরাজুলকে শাবল দিয়ে মারধর করেন। তার চোখেও গুরুতর জখম করেন। অন্যদিকে বেয়াইন অভিযোগ করে জানান, সিরাজুল দীর্ঘ দিন ধরে তাকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ‘তাকে ধর্ষণচেষ্টা’ করেন। এ সময় তিনি আত্মরক্ষায় তার হাত সিরাজুলের চোখে লাগে। এ ছাড়া তাকেও মারধর করা হয়েছে বলে তিনি পালটা অভিযোগ করেন। এ বিষয়ে হাসপাতালে চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার হিমাদ্রী শেখর সরকার জানিয়েছেন, আহতের দুইটি চোখ আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। যা এখানে সেবা দেওয়া সম্ভব না। তাই, উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করা হয়েছে। যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত বলেন, ‘মারামারির খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে গিয়ে দেখতে পায়, সিরাজুল চোখে মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। এ ছাড়া হাসিকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

রাত পোহালেই চাঁদপুরের ৪০ গ্রামে ঈদ

সৌদি আরবের আকাশে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ফলে দেশটিতে কাল রোববার (৩০ মার্চ) পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। তবে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোববার বাংলাদেশে চাঁদপুরের ৪০ গ্রামে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। এসব গ্রামের সাদ্রা দরবার শরিফের অনুসারীরা প্রায় ৯৫ বছর ধরেই আরব দেশগুলোর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ঈদ উদযাপন করে থাকেন। ঈদকে ঘিরে এসব গ্রামে শনিবার (২৯ মার্চ) রাত থেকে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। সাদ্রা দরবার শরীফের বর্তমান পীর মো. আরিফ চৌধুরী বলেন, ‘প্রথম চাঁদ দেখার ভিত্তিতে আমরা মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে মিল রেখে রোজা রাখি এবং ঈদ উদযাপন করি। শনিবার সৌদিতে চাঁদ দেখা গেছে। তাই রোববার সকাল সাড়ে ৯টায় সাদ্রা মাদ্রাসা ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া আরও বিভিন্ন এলাকাতেও ঈদের জামাত হবে।’ সাদ্রা ছাড়াও এক দিন আগে ঈদ উদযাপন করা গ্রামগুলো হল হাজীগঞ্জ উপজেলার বলাখাল, শ্রীপুর, মনিহার, বড়কুল, অলীপুর, বেলচোঁ, রাজারগাঁও, জাকনি, কালচোঁ, মেনাপুর, ফরিদগঞ্জ উপজেলার শাচনমেঘ, খিলা, উভারামপুর, পাইকপাড়া, বিঘা, উটতলী, বালিথুবা, শোল্লা, রূপসা, বাসারা, গোয়ালভাওর, কড়ইতলী, নয়ারহাট, মতলবের মহনপুর, এখলাসপুর, দশানী, নায়েরগাঁও, বেলতলীসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম। এ ছাড়া চাঁদপুরের পাশের নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ভোলা ও শরীয়তপুর জেলার কয়েকটি স্থানে মাওলানা ইছহাক খানের অনুসারীরা সৌদির সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করেন। জানা গেছে, ১৯২৮ সালে হাজীগঞ্জ রামচন্দ্রপুর মাদ্রাসার তৎকালীন অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক আরব দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপনের উদ্যোগ নেন। কিন্তু স্থানীয়দের অসহযোগিতার মুখে তা ভেস্তে যায়। সরকারি নিয়মের বাইরে গিয়ে এক দিন আগে ঈদ পালনের উদ্যোগ নেওয়ায় অধ্যক্ষের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় তাকে। ওই বছরই নিজ গ্রাম সাদ্রায় ফিরে আসেন তিনি। পরে তিনি দরবার শরীফ ও মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। তারপর থেকে সৌদির সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করেন তিনি।

ছাত্রলীগের সাথে সংঘর্ষে ছাত্রদল নেতাসহ আহত পাঁচ

পিরোজপুর জেলার কাউখালীতে পূর্বশত্রুতার জেরে স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতার পোস্টার লাগানোর সময় হামলা ও সংঘর্ষে ছাত্রদলের নেতাকর্মীসহ পাঁচজন আহত হয়েছেন। এ সময় একটি কাঠের ঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়। গতকাল শুক্রবার (২৮ মার্চ) রাতে উপজেলার শিয়ালকাঠি ইউনিয়ন পরিষদসংলগ্ন রাঢ়ীর হাট ও রাঢ়ী বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। ছাত্রদলের নেতাকর্মী জানান, শুক্রবার রাতে তারা একই এলাকার বাসিন্দা স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিনের ঈদ শুভেচ্ছার পোস্টার লাগানোর জন্য রাঢ়ীর হাটে যান। এ সময় ছাত্রলীগের উপজেলা শাখার সহসভাপতি রাসেল রাঢ়ী এবং তাঁর ভাই ঢাকার যুবলীগ নেতা রহমত রাঢ়ীর নেতৃত্বে একদল যুবক তাদের ওপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালালে পাঁচজন আহত হন। স্থানীয় লোকজন আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দু’জনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রাসেলের ভাই রফিকুল ইসলাম রাঢ়ী অভিযোগ করে বলেন, তারা সবাই ঢাকায় থাকেন। ফেসবুকের একটি পোস্টকে কেন্দ্র করে তাঁর দুই ভাইকে ধরে নেওয়ার জন্য ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তারিকুল ইসলাম সুমনের নেতৃত্বে ৮-১০ জন লোক আসেন। ধরে নিতে ব্যর্থ হয়ে দেড় শতাধিক লোক তাদের বাড়িতে হামলা করে একটি ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে কাউখালী ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। যদিও হামলার অভিযোগ থেকে রক্ষা পেতে রাসেল রাঢ়ীর লোকজন নিজেদের ঘরে আগুন লাগিয়েছে বলে অভিযোগ ছাত্রদল নেতা সুমনের। তবে উভয় পক্ষই স্বীকার করেছে, অজ্ঞাত একটি ফেসবুক আইডি থেকে পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে ঢাকায় উভয় পক্ষের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা ও দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। পোস্টার লাগানোর সময় তারা সামনাসামনি হওয়ায় তাদের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ছাত্রদলের নেতাকর্মীর ওপর হামলার খবর পেয়ে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে ছুটে যান জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন, কাউখালী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক চেয়ারম্যান এসএম আহসান কবীর, সাধারণ সম্পাদক এইচএম দ্বীন মোহাম্মদ। কাউখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলায়মান বলেন, ‘পোস্টার লাগানোকে কেন্দ্র করে ছাত্রদলের লোকজনের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ কাঠের ঘরে কীভাবে আগুন লেগেছে, সে বিষয়ে তিনি কিছু জানাতে পারেননি।

নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কে গাড়ির ধীরগতি

ঈদযাত্রার ষষ্ঠ দিনে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কে গাড়ির ধীরগতির দেখা যায়। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন উত্তরবঙ্গগামী যাত্রীরা। শনিবার (২৯ মার্চ) রাত সাড়ে ৮টার দিকে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বারইপাড়া থেকে কবিরপুর, বাইপাইল ও নবীনগর এলাকায় গাড়ির ধীরগতি রয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, শনিবার রাত ৮টার দিকে আশুলিয়ার নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বাইপাইলে গাড়ির কিছুটা ধীরগতি রয়েছে। এ ছাড়া আশুলিয়ার বারইপাড়া এলাকা থেকে কবিরপুর পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার সড়কে গাড়ির জটলা রয়েছে। শ্যামলী বাসের যাত্রী রবিন বলেন, ‘গাবতলী থেকে সাভার পর্যন্ত সড়কে তেমন যানজট ছিল না। নবীনগর থেকে যানজটের শুরু হয়েছে।’ মৌমিতা পরিবহনের চালক রুবেল বলেন, ‘গাবতলী থেকে ৬টার দিকে বাস ছেড়েছি। এখন রাত সাড়ে ৮টার দিকে বলিভদ্র এলাকায় এসে পৌঁছতে পেরেছি।’ সাভার হাইওয়ে থানার ইনচার্জ সওগাতুল আলম বলেন, ‘সাভারে সড়ক স্বাভাবিক রয়েছে। যানজট নিরসনে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।’

বগুড়ায় ঈদের প্রধান জামাতে অংশ নেবেন নারীরাও

বগুড়ায় প্রথম বারের মতো নারীরাও ঈদ জামাতে অংশগ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক ও আয়োজক কমিটির সভাপতি হোসনা আফরোজা। শহরের সূত্রাপুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠ পরিদর্শন শেষে শনিবার (২৯ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে এ কথা জানান তিনি। জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, জেলায় এবার মোট ১ হাজার ৮০৩ টি ঈদগাহ মাঠে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। আর সুত্রাপুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে সকাল সাড়ে ৮ টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ঈদের জামাত ও ঈদ উৎসবকে ঘিরে পুলিশের পক্ষ থেকেও নেয়া হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ঈদগাহ মাঠ পরিদর্শনের সময় পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা, বগুড়া পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক মাসুম আলী বেগ, জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য আলী আজগর তালুকদার হেনা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মালিকানা ছিনতাই করেও এনসিপি ব্যর্থ: নাছির

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের একক মালিকানা ছিনতাই করে ছাত্রদের গঠন করা জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সংগঠন হিসেবে ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির। শনিবার (২৯ মার্চ) বিকেলে নোয়াখালীর সোনাপুর এলাকায় পথচারীদের মাঝে ইফতার বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। নাছির বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের একক মালিকানা ছিনতাই করে ছাত্ররা যে রাজনৈতিক দল গঠন করেছে, সে রাজনৈতিক দল নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। তারা একটি সংগঠন হিসেবে ব্যর্থ হয়েছে, তা এ দেশের মানুষ ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘নতুন যে রাজনৈতিক দল গঠিত হয়েছে ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (এনসিপি), তারা বিভিন্ন সময়ে দ্বিতীয় রিপাবলিকানের কথা বলেছে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী বিভিন্ন কথাবার্তা বললেও তারা তাদের নেতাকর্মীদের এক ধরনের চাঙা রাখার জন্যই এসব কথা বলছে। কিন্তু আদৌতে তারা নির্বাচনের জন্য অনেক বেশি ব্যস্ত হয়ে গিয়েছে।’ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বাংলাদেশের অন্যতম বড় যে রাজনৈতিক দলগুলো রয়েছে তারা এখন পর্যন্ত নির্বাচন নিয়ে সামগ্রিক আলাপ-আলোচনার মধ্যে থাকলেও তারা কিন্তু মাঠে-ময়দানে নির্বাচনের রাজনীতি নিয়ে অনেক বেশি ব্যস্ত হয়ে গিয়েছে। ভেতরে ভেতরে তারা আসন ভাগাভাগি এবং নির্বাচনে কীভাবে জয়লাভ করবে, সেসব বিষয়ে নেগোসিয়েশন করছে।’ ছাত্রদলের এই নেতা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে নিয়ে তাদের চারজন নেতা ভিন্ন ভিন্ন যে বক্তব্য দিয়েছেন এটি সাংগঠনিক কাঠামোর পরিপন্থি। আমরা মনে করি সংলাপ, সংস্কার ও নির্বাচন প্রক্রিয়া একই সঙ্গে হওয়া উচিত।’

অনেক ছাত্রের মধ্যে সুবিধাবাদী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে: নুর

জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্রদের প্রতি মানুষের যে বিশ্বাস তৈরি হয়েছিল, তাতে চিড় ধরেছে বলে মন্তব্য করেছেন গণ-অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। শনিবার (২৯ মার্চ) বিকেলে পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে ইফতার ও দোয়া মাহফিল-পূর্ব আলোচনা সভায় বক্তৃতা করেন তিনি। সভায় নুর আরো বলেন, ‘অনেক ছাত্রের মধ্যে সুবিধাবাদী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে তারা ডিসি অফিস, ইউএনও অফিস, থানাসহ বিভিন্ন স্থানে অনৈতিক আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছে। যদিও জুলাই আন্দোলনের অন্যতম মুখপাত্র নাহিদ বলেছেন: যেহেতু আন্দোলনের নেতারা একটি দল গঠন করেছে এখন আর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সমন্বয়কদের কোনো প্ল্যাটফর্ম নেই।’ তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দল ও ছাত্র-জনতার সমন্বিত আন্দোলনে ফ্যাসিবাদ বিতাড়িত হয়েছে কিন্তু জনগণের মুক্তি আসেনি। জনগণ যার যার কাজে ফিরে গেছে, রাজনৈতিক দলগুলোকে জনগণের ত্যাগের কথা ভুলে গেলে চলবে না। কারণ, আন্দোলন-সংগ্রাম জনসাধারণ করলেও রাষ্ট্র চালায় রাজনীতিবিদরা। তাই রাজনীতিবিদদের কমিটমেন্ট যদি আন্দোলনের প্রতি না থাকে, তবে জনসাধারণ প্রতারিত হবে এবং রাজনীতিবিদরাও ভুক্তভোগী হবেন।’ রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং ঈদে ঘরমুখী মানুষ যাত্রাপথে ভোগান্তির শিকার না হওয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারকে ধন্যবাদ জানান নুর। গলাচিপা উপজেলা গণ-অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক হাফিজুর রহমানের সভাপত্বিতে অনুষ্ঠানে জেলা, উপজেলা এবং কেন্দ্রীয় গণ-অধিকার পরিষদের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপিতে কোন চাঁদাবাজের জায়গা হবে না: আসলাম মিয়া

কৃষকদলের সহ-সভাপতি ও রাজবাড়ী জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আসলাম মিয়া বলেছেন, ‘বিএনপিতে কোনো চাঁদাবাজের জায়গা হবে না। আমাদের নেতা দেশানায়ক তারেক রহমান বলেছেন কোনো চাঁদাবাজের জায়গা বিএনপিতে নেই। বিএনপির কোনো কর্মী যদি চাঁদাবাজি, দখলবাজির সঙ্গে জড়িত থাকে তাকে চিহ্নিত করে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। আমরা তারেক রহমানের নেতৃত্বে একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকব। ৩১ দফা মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেব।’ শুক্রবার (২৮ মার্চ) সন্ধ্যায় সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়নের টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠ প্রাঙ্গণে চন্দনী, মিজানপুর ও খানগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির যৌথ উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিলে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে আসলাম মিয়া আরো বলেন, ‘দীর্ঘ ১৭ বছর আমরা নির্যাতিত, নিষ্পেষিত ছিলাম। উন্মুক্ত স্থানে কোনো প্রোগ্রাম করতে পারিনি। আল্লাহ তাআলার অশেষ রহমত গত ৫ তারিখের পরে আমরা উন্মুক্ত স্থানে সভা সমাবেশ করতে পারছি। আর এই সুযোগটা করে দিয়েছে আমাদের ছাত্র ভাইয়েরা। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে এ দেশ থেকে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হয়। শেখ হাসিনা তার দোসরদের নিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। আমরা এখন ২৪ এর স্বাধীন বাংলাদেশে অবস্থান করছি। এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় রয়েছে। আমরা তাদের কাছে দাবি করতে চাই দ্রুত সংস্কার করে দেশে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করুন। দেশের গণতান্ত্রিক সরকার এখন একটি সময়ের দাবি।’ রাজবাড়ী সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবুল হোসেন গাজীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক লিয়াকত আলী বাবু। বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রেজাউল করিম শিকদার পিন্টু, জেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব একেএম সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম রোমান। রাজবাড়ী সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান শেখের সঞ্চালনায় রাজবাড়ী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেদ পাভেল, সিনিয়র সহ-সভাপতি হাসমত আলী খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রব মুন্সি, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আব্দুল মালেক শিকদার, যুগ্ম আহ্বায়ক জান্নাতুল ইসলাম, রাজবাড়ী পৌর বিএনপির সদস্য কাজী আরাফাত হোসেন জিসান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান লিখন, সাবেক সভাপতি গোলাম কাশেম, রাজবাড়ী পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি মাহবুব চৌধুরী দুলাল, গোয়ালন্দ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. নিজাম শেখ, সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ আহম্মেদ, গোয়ালন্দ পৌর বিএনপির সভাপতি আবুল কাশেম মন্ডল, সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান মজি, সদর উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি সোহেল প্রামাণিক, সাধারণ সম্পাদক প্যারিস হোসেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। ইফতার ও দোয়া মাহফিলে সদর উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীসহ প্রায় তিন থেকে চার হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। দেশ ও জাতির শান্তি, উন্নয়ন এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য দোয়া পরিচালনা করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন সদর উপজেলা মডেল মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা আবু সাঈদ তাইয়্যেবী।

হাসিনাকে সুযোগ দিলে দেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকারের দিকে যাবে: এ্যানি

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, ‘এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যেখানে গণতন্ত্রের ভিত শক্তিশালী হবে। তা না হলে শেখ হাসিনা আবার সুযোগ পাবে। তাকে সুযোগ দেওয়া যাবে না। যদি তাকে কেউ সুযোগ দিতে চান, তাহলে আবারও দেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকারের দিকে যাবে। অস্বাভাবিক হয়ে পড়বে দেশের রাজনীতি।’ শনিবার (২৯ মার্চ) দুপরে লক্ষ্মীপুরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে শহীদ পরিবার ও নির্যাতিত শতাধিক নেতাকর্মীর মাঝে তারেক রহমানের ঈদ উপহার বিতরণকালে তিনি এসব কথা বলেন। শহরের পুরাতন গোহাটা সড়কের বশির ভিলা মিলনায়তনে এ আয়োজন করা হয়। এ সময় শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি আরো বলেন, ‘বিগত ১৫ বছরে বিএনপির অনেক নেতাকর্মী গুম-খুন হয়েছে। বিচার পেতে হলে প্রকৃত ঘটনায় মামলা করবেন। মামলা না হলে বিচার পাবেন না। তবে শত্রুতামূলকভাবে কাউকে মামলায় জড়াবেন না। নিরাপরাধ কেউ যেন মামলায় হয়রানির শিকার না হয়। গত ৬-৭ মাসে প্রকৃত মামলার পাশাপাশি শত্রুতামূলকভাবে কিছু আসামি করা হয়েছে। এ কারণে মামলাগুলো দুর্বল হয়ে যায়। এতে প্রকৃত আসামিরা সুযোগ পেয়ে যায়। এ সযোগ আপনারা দেবেন না।’ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হাছিবুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাহাব উদ্দিন সাবু, সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাঈন উদ্দিন চৌধুরী রিয়াজ, লক্ষ্মীপুর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান লিটন, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক রেজাউল করিম লিটন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ হারুন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হাসান মাহমুদ ইব্রাহীম, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ।

ফেসবুকে ‘হা হা’ রিয়েক্ট দেয়ায় শেরপুরে বন্ধুকে কুপিয়ে খুন

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক পোস্টে রিয়েক্ট দেয়াকে কেন্দ্র করে শেরপুরের নালিতাবাড়িতে ছুরিকাঘাতে নাঈম বাদশা নামে এক এইচএসসি পরীক্ষার্থী নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় সবুজ নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। নাঈম বাদশা (১৮) একই এলাকার কৃষক সাইফুল ইসলামের ছেলে এবং স্থানীয় সরকারি নাজমুল স্মৃতি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সম্প্রতি নাঈম বাদশা তারই বাল্যকালের বন্ধু নয়াবিল ইউনিয়নের আন্দারুপাড়া গ্রামের হুরমুজ আলীর ভূট্টুর ছেলে সবুজ আহমেদের একটি ফেসবুক পোস্টে ‘হাহা’ রিয়েক্ট দেয়। এ নিয়ে নাঈমের প্রতি ক্ষুব্ধ হয় সবুজ। গাজীপুরে একটি কারখানার নিরাপত্তা প্রহরীর কাজ করা সবুজ ঈদের ছুটিতে বাড়িতে এসে শনিবার (২৯ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে নাঈমকে মোবাইল ফোনে ডেকে নয়াবিল বাজারের ডাচ বাংলা ব্যাংকের পিছনে ভোগাই নদীর নির্জন এলাকায় নিয়ে যায়। এসময় ফেসবুক পোস্টে ‘হা হা’ রিয়েক্ট দেয়া নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ায় তারা। একপর্যায়ে নাইমকে পেছন থেকে পরপর তিন বার ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় সবুজ। নাইমের চিৎকারে স্থানীয়রা আহত অবস্থায় তাকে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। পরে দ্রুত নাঈমকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে, ঘটনার পরপরই এলাকাবাসী সবুজকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। ময়নাতদন্তের জন্য নাঈমের মরদেহ শেরপুর জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এবিষয়ে নালিতাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

পাউবোর পুকুর থেকে মাছ ধরায় বিএনপি নেতা বহিষ্কার

জামালপুরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পুকুরের মাছ ধরার অভিযোগে ওয়ার্ড বিএনপির এক নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। শনিবার (২৯ মার্চ) ভোরে শহরের ফুলবাড়িয়া এলাকার জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের পুকুর থেকে মাছ ধরার ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত ওই নেতার নাম এসএম আপেল মাহমুদ। তিনি জামালপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির কোষাধ্যক্ষ ও শহরের ফুলবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা। শনিবার সন্ধ্যায় ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি তরুন হাসান কাজল ও সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শুভ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তাকে বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘এতদ্বারা সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, জামালপুর পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির কোষাধ্যক্ষ এস.এম আপেল মাহমুদকে দলীয় শৃঙ্খলা বহির্ভূত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার কারণে দলীয় সকল কর্মকাণ্ড থেকে সাময়িকভাবে অব্যহতি প্রদান করা হলো।’ জেলা পাউবো সূত্রে জানা গেছে, শনিবার ভোরে জেলেসহ ১০ থেকে ১২ জন লোক নিয়ে বিএনপি নেতা আপেল মাহমুদ পাউবোর পুকুরে জাল টেনে মাছ ধরতে যান। এ সময় পাউবোর কয়েকজন কর্মচারী তাদেরকে মাছ ধরতে নিষেধ করেন। তাদের নিষেধ উপেক্ষা করে আপেল মাহমুদ মাছ ধরতে থাকেন। উপায় না পেয়ে পাউবোর কর্মকর্তারা জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল দিয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে জানান। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই বিএনপি নেতা আপেল মাহমুদ মাছ ধরে নিয়ে সটকে পড়েন। জেলা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নকিবুজ্জামান খান জানান, সকালে শুনি আপেল নামের ওই ব্যক্তি পুকুরে জাল দিয়ে মাছ ধরেছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু এর আগেই তারা মাছ ধরে নিয়ে চলে যায়। এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন বলে জানান তিনি। বিষয়টি জানার জন্য বিএনপি নেতা আপেল মাহমুদের মোবাইলে একাধিকবার কল দেওয়া হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। তার মন্তব্য নেওয়া যায়নি। জামালপুর সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ফয়সল মো. আতিক জানান, পুকুরে মাছ ধরার বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গাজীপুরে ঈদের আগে ছাঁটাই, শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কোনাবাড়ি থানাধীন বাইমাইল এলাকায় একটি কারখানার শতাধিক শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মহাসড়ক অবরোধ করেছে চাকরিচ্যুতরা। শনিবার (২৯ মার্চ) সকালে স্ট্যান্ডার্ড ইস্টিস ওভেন কারখানা শ্রমিকরা বিক্ষোভ ও অবরোধ করেন বলে গাজীপুর মেট্রোপলিটনের কোনাবাড়ি থানার ওসি মো. নজরুল ইসলাম জানান। পুলিশ ও স্থানীয়রা বলেন, ‘ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে ওই কারখানার শ্রমিকরা শনিবার সকালে বিক্ষোভ শুরু করেন। এক পর্যায়ে তারা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন।’ এ সময় প্রায় আধাঘন্টা ওই মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। গাজীপুর মেট্রোপলিটনের কোনাবাড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ওই কারখানার শতাধিক শ্রমিক ছাঁটাই করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু করেন শ্রমিকরা।’ ‘একপর্যায়ে কিছু সময় তারা মহাসড়ক অবরোধ করেন। পরে তাদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।’ গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশের সুপার একেএম জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘যতটুকু জানতে পেরেছি, ১০১ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়। এ খবর পাওয়ার পর শ্রমিকরা বিক্ষোভ করে সড়কে নামেন। পরে থানা পুলিশ, শিল্প পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।’

টাকা বাঁচাতে খোলা ট্রাক-পিকআপে ছুটছে ঘরমুখো মানুষ

স্বজনদের সঙ্গে পবিত্র ঈদুল ফিতরের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে বাড়ি ফিরছে মানুষ। এতে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। যানবাহনের চাপ থাকলেও মহাসড়কের কোথাও যানজট নেই। অনেকেই খরচ বাঁচাতে পণ্যবাহী ট্রাক-পিকআপে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। প্রচণ্ড রোদের মধ্যে ট্রাক-পিকআপে দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন তারা। শনিবার (২৮ মার্চ) দুপুরে ঢাকা-টাঙ্গাইল যমুনা সেতু মহাসড়কে এমন দৃশ্য দেখা যায়। গণপরিবহন সংকট ও অতিরিক্ত ভাড়ার কারণে অনেকেই খরচ বাঁচানোর জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খোলা ট্রাক-পিকআপে করে গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছেন। কেউ কেউ বাসের ছাদে উঠেছেন। আফরোজা আক্তার নামে ট্রাকের এক যাত্রী বলেন, ‘বাসে এলে দ্বিগুণ ভাড়া দিতে হয়। বাসে তেমন আসা যাচ্ছে না। গাড়ি ভর্তি থাকায় উঠাতে চায় না। এ জন্য ট্রাকে করে সিরাজগঞ্জ চাচ্ছি। খরচ কম লাগতেছে।’ লতিফ মিয়া নামে আরেক ট্রাকের যাত্রী বলেন, ‘আমি ঢাকা থেকে আসলাম। রংপুর যাব। ট্রাকে করে যাইতেছি। বাসের খুবই সংকট। বাসের ভাড়াও বেশি চায়। বাসে না এসে ট্রাকে করে যাচ্ছি। ট্রাকে ভাড়া নিতেছে কম। শুধু আমি না অনেকেই ট্রাক-পিকআপে করে যাচ্ছে।’ এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মুহাম্মদ শরীফ বলেন, ‘গতকাল শুক্রবার (২৮ মার্চ) দুপুরের পর থেকে সড়কে যানবাহনের চাপ বেড়ে যায়। যানবাহনের চাপ থাকলেও এখনো কোনো যানজট হয়নি। স্বাভাবিক গতিতেই যানবাহন চলাচল করছে। হাইওয়ে পুলিশ নিরলসভাবে রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা কাজ করছে। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে মহাসড়কে পর্যাপ্ত পরিমাণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। ঈদে ঘরমুখো মানুষ স্বস্তিতে বাড়ি ফিরছে।’

শোলাকিয়ায় ১৯৮তম ঈদ জামাতে থাকছে চার স্তরের নিরাপত্তা বলয়

এবারও দেশের বৃহত্তম ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হবে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে সব ধরনের প্রস্তুতি। এবার শোলাকিয়ায় ১৯৮তম ঈদুল ফিতরের বড় জামাতে নামাজ পড়াবেন ঈদগাহের নতুন ইমাম মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ ছাইফুল্লাহ। জামাত শুরু হবে সকাল ১০টায়। জামাতকে ঘিরে থাকছে চার স্তরের নিরাপত্তা বলয়। কিশোরগঞ্জ শহরের পূর্ব প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীর ঘেষে অবস্থিত শোলাকিয়া ঈদগাহে যুগ যুগ ধরে ঈদের নামাজে মুসল্লিদের ঢল নামে। এবারও এই মাঠে ঈদের নামাজ পড়বেন লাখো মানুষ। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে ঈদগাহ মাঠের লাইন টানা, রঙ করা, আজুখানা মেরামত, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ বেশিরভাগ কাজ। এখন চলছে সাজসজ্জাসহ শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।প্রায় ২৫০ বছরের প্রাচীন শোলাকিয়া ঈদগাহের আয়তন প্রায় ৬ একর। ১৮২৮ সালে শোলাকিয়া ঈদগাহে এক লাখ ২৫ হাজার বা ‘সোয়া লাখ’ মুসল্লি এক সঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করেন। সেই থেকে এ মাঠের নাম হয় ‘সোয়া লাখিয়া’, যা এখন শোলাকিয়া নামে পরিচিত। বড় জামাতে এক কাতারে দাঁড়িয়ে এই মাঠে নামাজ পড়লে বেশি সওয়াব পাওয়া যায়, এমন বিশ্বাসে প্রতি বছর ঈদের জামাতে অংশ নেন, দেশ-বিদেশের লাখো মুসল্লি। বংশ পরম্পরায় এখানে ঈদের নামাজ পড়ছেন অনেকে।জানা যায়, শোলাকিয়ায় ঈমাম নিয়ে বিতর্ক থাকায় গত ১৫ বছরে অনেকে ঈদগাহে নামাজ পড়তে যাননি। সেসময় মাঠের স্থায়ী ইমাম মুফতি আবুল খায়েল মোহাম্মদ সাইফুল্লাকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশ ইসলাহুল মুসলেমিন পরিষদের সভাপতি মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদকে ইমাম নিয়োগ করায় অনেকে মাঠে নামাজ পড়া বন্ধ করে দেন। এবার দীর্ঘ ১৫ বছর পর শোলাকিয়া ঈদগাহের নতুন ইমাম নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভায় মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ ছাইফুল্লাহকে পুনরায় ইমাম নিয়োগ দেয়া হয়। প্রথম বারের মতো ঈদগাহের নামকরণ সাইনবোর্ড লাগানো হয়। তাই আয়োজকদের ধারণা, এবার শোলাকিয়ায় মুসল্লির সমাগত গত বছরের তুলনায় বেশি হবে।এ পরিস্থিতিতে ঈদের জামাতকে ঘিরে নেয়া হয়েছে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যাবস্থা। চার স্তরের নিরাপত্তা বলয়ে বিপুল সংখ্য পুলিশ, র‌্যাব ছাড়াও থাকছে ৫ প্লাটুন বিজিবি। মাঠে প্রবেশের আগে মুসল্লিদের চারটি নিরাপত্তা চৌকি পার হতে হবে। প্রতিটি প্রবেশ পথে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে দেহ তল্লাশির পর আর্চ ওয়ের ভেতর দিয়ে মুসল্লিদের মাঠে প্রবেশ করতে দেয়া হবে। সিসি ক্যামেরায় মনিটর করা হবে মাঠের ভেতর ও চারপাশ। ঈদগাহের চারপাশে ৬টি ওয়াচ টাওয়ার বসানো হয়েছে। চারটি শক্তিশালী ড্রোন ক্যামেরা মনিটর করবে চারপাশ। প্রস্তুত থাকবে বোম ডিসপোজাল ইউনিট।পুলিশ ও জেলা প্রশাসনসহ ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির কর্মকর্তারা দফায় দফায় মিটিং করে ও মাঠ পরিদর্শন করে প্রস্তুতি তদারকি করছেন। সবশেষ আজ শনিবার (২৯ মার্চ) জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, র‌্যাবের ডিআইজিসহ প্রশাসনের ঊর্ধতন কর্মকর্তারা শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ পরিদর্শন করেন। এ সময় তারা সাংবাদিকদের কাছে সবশেষ প্রস্তুতি ও নিরাপত্তা বিষয় নিয়ে কথা বলেন।কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার হাছান চৌধুরী জানান, পোশাকি এক হাজারেরও বেশি পুলিশ সদস্য নিরাপত্তায় নিয়োজিত তাকবে। এ ছাড়া সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করবে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা। ঈদের দিন সকালে পুরো মাঠ মেটাল ডিডেক্টর দিয়ে সুইপিং করে তারপর আর্চওয়ে পার হয়ে মুসল্লিদের মাঠে প্রবেশ করতে দেয়া হবে। ৬৮টি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা ও ৪টি ড্রোন ক্যামেরা দিয়ে পুরো মাঠ ও আশপাশের এলাকা নজরদারি করা হবে।র‌্যাব ১৪’-এর ময়মনসিংহ ক্যাম্পের অধিনায়ক অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি নাইমুল হাসান কলেন, বিপুল সংখ্যক র‌্যাব সদস্য মাঠের সার্বিক নিরাপত্তা রক্ষা করবে। র‌্যাকের হাতে থাকবে স্নাইপার অস্ত্র। মুসল্লিরা যাতে শোলাকিয়ায় নামাজ পড়ে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারেন সেজন্য সব প্রস্তুতি র‌্যাবের রয়েছে।শোলাকিয়া ইদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান বলেন, ‘নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়ে সব কিছু সাজানো হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য মুসল্লিদের টুপি ও জায়নামাজ ছাড়া অন্য কিছু নিয়ে মাঠে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না।’‘শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়েছে। এবার গত বছরের তুলনায় বেশি মুসল্লি সমাগম ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে।’এদিকে, দূরের মুসল্লিদের জন্য শোলাকিয়া স্পেশাল নামে দুটি বিশেষ ট্রেন সার্ভিস চালু করেছে রেলওয়ে। ঈদের দিন সকাল ৬টায় ময়মনসিংহ থেকে এবং পৌনে ৬ টায় ভৈরব থেকে যাত্রা শুরু করে ট্রেন দুটি কিশোরগঞ্জ পৌঁছাবে সকাল ৮টায়। জামাত শেষে ট্রেন দুটি গন্তব্যে ছেড়ে যাবে দুপুর ১২টায়।

চট্টগ্রামে প্রথম ও প্রধান ঈদের জামাত জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ ময়দানে

চট্টগ্রাম নগরে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে । ঈদের দিন প্রথম ও প্রধান জামাত সকাল ৮টায় এবং দ্বিতীয় জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাতে ইমামতি করবেন জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদের খতিব হজরতুল আল্লামা সৈয়দ আবু তালেব মোহাম্মদ আলাউদ্দীন আল কাদেরী এবং দ্বিতীয় জামাতে ইমামতি করবেন একই মসজিদের পেশ ইমাম। এদিকে লালদীঘি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন শাহি জামে মসজিদে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টায়। চসিক থেকে জানানো হয়, এসব ঈদ জামাত ছাড়াও নগরীতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে সকাল ৮টায় ঈদ জামাতের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে যথাক্রমে হজরত শেখ ফরিদ (রহ.) চশমা ঈদগাহ মসজিদ, সুগন্ধা আবাসিক এলাকা জামে মসজিদ, চকবাজার সিটি করপোরেশন জামে মসজিদ, জহুর হকার্স মার্কেট জামে মসজিদ, দক্ষিণ খুলশী (ভিআইপি) আবাসিক এলাকা জামে মসজিদ, আরেফীন নগর কেন্দ্রীয় কবরস্থান জামে মসজিদ, সাগরিকা গরুবাজার জামে মসজিদ এবং মা আয়েশা সিদ্দিকী চসিক জামে মসজিদ (সাগরিকা জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়াম সংলগ্ন)। পাশাপাশি নগরের ওয়ার্ডগুলোতে ঈদ জামাতের আয়োজন করা হয়েছে। এদিকে শুক্রবার (২৮ মার্চ) জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের মাঠ পরিদর্শনকালে চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘চট্টগ্রামের কেন্দ্রীয় ঈদ জামাতের জন্য জমিয়তুল ফালাহ ঈদগাহ ময়দান সম্পূর্ণ প্রস্তুত। মুসল্লিদের সুবিধার্থে পর্যাপ্ত ফ্যান, আর সামিয়ানা থাকবে। অজু করার জন্য মসজিদের অজুখানার পাশাপাশি অতিরিক্ত গাড়িতে পানির সুব্যবস্থা করা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য থাকছে সিসিটিভি মনিটরিংসহ পর্যাপ্ত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর প্রশিক্ষিত সদস্যরা।’

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে স্বস্তির ঈদযাত্রা

দুদিন পর ঈদ। এরমধ্যে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছে মানুষ। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে প্রতিবছর ঈদে ঘরমুখো মানুষকে যানজটের কবলে পড়ে হয়। তবে এ চিত্র এবার ভিন্ন। ঈদযাত্রায় স্বস্তিতে বাড়ি ফিরছেন মানুষ। সড়কে বেড়েছে যানবাহনের চাপ। কুমিল্লার অংশের ১০৫ কিলোমিটার এলাকার যানজটপ্রবণ এলাকাগুলোতে যানবাহনের ধীরগতি থাকলেও নেই কোনো যানজট। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন রাখতে হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি অপরাধ দমনে চেকপোস্ট বসিয়ে সড়কে রয়েছেন সেনাবাহিনী। সহযোগিতায় আছেন কমিউনিটি পুলিশিং, রোভার স্কাউট ও আনসার সদস্যরা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার অংশে যানজটপ্রবণ ১২টি হট স্পট রয়েছে। যেখানে উল্টো পথে গাড়ি চলাচল, মহাসড়কে যত্রতত্র দাঁড়িয়ে যাত্রী উঠানামা এবং ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার না করে পথচারীদের সড়ক পারাপারসহ নানা অনিয়মের কারণে সৃষ্টি হয়ে থাকে যানজট। তাই এসব অপরাধ দমনে বাড়তি জনবল মোতায়েন করেছে হাইওয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী। ১০৫ কিলোমিটার এলাকায় প্রায় এক হাজারের অধিক পুলিশ সদস্য, দুই শতাধিক রোভার স্কাউট সদস্য এবং সেনাবাহিনী ও আনসার সদস্য নিয়োজিত আছেন। এদিকে মহাসড়কের কুমিল্লার অংশে রাতে যানবাহনে ডাকাতের ও ছিনতাই বন্ধ করতে পুলিশের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। যাত্রীদের নিরাপত্তা দিতে ২৪ ঘণ্টা টহল অব্যাহত রেখেছে হাইওয়ে পুলিশ। রাতে মহাসড়কে সন্দেহ জনক কাউকে দেখলেই আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। গত কয়েক দিনে কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১০ জন ডাকাত, ৯ জন ছিনতাইকারী এবং চারজন চোর গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে দুটি রামদা, একটি চাইনিজ কুঠাল, বিভিন্ন সাইজের ১১পিস ছুরি এবং ১০টি লোহার রড জব্দ করা হয়। শনিবার (২৯ মার্চ) সরেজমিন মহাসড়কের দাউদকান্দি টোল প্লাজা, শহীদনগর বাসস্ট্যান্ড, চান্দিনার মাধাইয়া বাসস্ট্যান্ড, ইলিয়টগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড, সদর দক্ষিণের সুয়াগাজী বাজার (উভয়মুখী), নুরজাহান হোটেলের সামনে কাটা, কোটবাড়ি ইউটার্ন (উভয়মুখী), জাগুরঝুলি কাটা, বুড়িচংয়ের নাজিরা বাজার ইউটার্ন এবং চৌদ্দগ্রাম বাজারসহ চিহ্নিত ১২টি হটস্পট ঘুরে দেখা গেয়েছে কোথাও কোনো যানজট নেই। তবে যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা ও গাড়ি পার্কিংয়ের ফলে কিছুটা ধীর গতি। এছাড়াও মহাসড়ক ঘেঁষা বাজারগুলোতে পণ্য উঠানামায় মাঝে মাঝে অস্থায়ী জট সৃষ্টি হচ্ছে। তবে দেখা মাত্রই সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিচ্ছেন হাইওয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী। এতে করে সড়ক চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তিশা পরিবহনের যাত্রী ছিফাতুল্লাহ জাইম বলেন, এবারের ঈদযাত্রায় স্বস্তিদায়ক বলা যায়। ঢাকা থেকে কুমিল্লায় এসেছি মাত্র আড়াই ঘণ্টায়। এটা বিশ্বাস করা কষ্ট কর। কারণ অন্যান্য বছর যানজটের কারণে ৬-৭ ঘণ্টা সময় লাগতো। পরো সড়কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা ছিল প্রশংসনীয়। এতে বুঝা যায় প্রশাসন চাইলে সব কিছুই সম্ভব। স্টারলাইন পরিবহনের যাত্রী আবু সুফিয়ান সুমন বলেন, পরিবার নিয়ে ঢাকা থেকে ফেনীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম। দুশ্চিন্তায় ছিলাম কখন বাড়ি পৌঁছবো। শুকরিয়া সব শঙ্কা কাটিয়ে স্বস্তিতেই বাড়ি ফিরছি। মনে হচ্ছে ৩ ঘণ্টায় ফেনী যাবো। ভোগান্তি ছাড়া এটাই আমার প্রথম ঈদ যাত্রা। মিয়ামী পরিবহনের চালক মাইনুল হাসান জানান, এবার ঈদ ছুটিতে মাহসড়কে গাড়ি চালিয়ে মজা পাচ্ছি। কোথাও যানজট নেই। ২ থেকে আড়াই ঘণ্টায় পৌঁছে যাচ্ছি কুমিল্লায়। পূর্ব নির্ধারিত ভাড়ায় এবার যাত্রী পারাপার করছি। কুমিল্লা রিজিয়ন হাইওয়ে পুলিশ সুপার এডিশনাল ডিআইজি (সুপারনিউমারি) মো. খাইরুল আলম বলেন, মহাসড়কে ঈদ যাত্রায় যাত্রীদের বিড়ম্বনা কমাতে কুমিল্লা রিজিয়নে হাইওয়ে সেক্টরের তত্ত্বাবধায়নে ২২টি চেকপোস্ট, দিন-রাত ৭২টি টহল টিম, যানবাহন চেকিং টিম ২২, ট্রাফিক জ্যাম নিয়ন্ত্রণ টিম ৩৮টি, বাসস্ট্যান্ড গুলোতে চেকিং টিম ১৩টি, কুইক রেসপন্স টিম ২২টি, একটি কন্ট্রোলরুম ও অস্থায়ী কন্ট্রোলরুম ছয়টি এবং একটি স্ট্রাইকিং রিজার্ভ ফোর্স কাজ করছে। তিনি আরও বলেন, হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, কমিউনিটি পুলিশিং, রোভার স্কাউট ও আনসার সদস্যরা সহযোগিতায় করে যাচ্ছেন। কয়েক দিনে কুমিল্লার রিজিয়নের হাইওয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১০জন ডাকাত, ৯ জন ছিনতাইকারী এবং চারজন চোর গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে দুটি রামদা, একটি চাইনিজ কুঠাল, বিভিন্ন সাইজের ১১পিস ছুরি এবং ১০টি লোহার রড জব্দ করা হয়। ছিনতাই হওয়া ৪১ হাজার টাকা উদ্ধার করে পুলিশ। কুমিল্লা ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের ১২ বীর ব্যাটালিয়নের মেজর সানিউল আলম বলেন, সড়কে যানজটের কারণগুলো চিহ্নিত করে হটস্পটগুলোতে চেক পোস্ট বসিয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন। সড়ক আইন ও ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করা অসাধু চালক ও পরিবহনের বিরুদ্ধে হাইওয়ে পুলিশের সহযোগিতায় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

চাঁদপুর লঞ্চ টার্মিনালে ঘরমুখো মানুষের ভিড়

ঈদকে কেন্দ্র করে চাঁদপুর লঞ্চ টার্মিনালেও ঘরমুখো মানুষের ভিড় বাড়ছে। নৌপথে শনিবার রাজধানী ঢাকার সদরঘাট থেকে ছেড়ে আসা লঞ্চগুলো সকাল সাড়ে ১০টা থেকে একএক করে ভিড়তে শুরু করে। প্রতিটি লঞ্চে তিল ধারণের জায়গাও ছিল না। তারপরও কোনো ধরনের যাত্রী ভোগান্তি কিংবা অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হয়নি। তাই নৌপথে লঞ্চ যাত্রায় স্বস্তির কথা জানান যাত্রীরা।চাঁদপুর নদীবন্দর কর্মকর্তা ও বিআইডব্লিউটিএর উপপরিচালক মো. বছির আলী খান জানান, ঈদ উপলক্ষে ছোটবড় ৫৫টি লঞ্চ যাত্রী পরিবহন করছে। তারমধ্যে বেশির ভাগ রাজধানী ঢাকার সদরঘাট থেকে চাঁদপুর লঞ্চ টার্মিনাল পর্যন্ত চলাচল করছে।তবে চাঁদপুর লঞ্চ টার্মিনালের বাইরে যাত্রীরা তাদের নিজ নিজ গন্তব্যে যেতে নানা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। অনেক লঞ্চযাত্রী অভিযোগ করেন, ১০০ টাকার সিএনজিচালিত অটোরিকশার ভাড়া হাঁকা হচ্ছে ৩০০ টাকা। ফলে বাধ্য হয়ে বাড়তি ভাড়া গুণে বাড়িতে যেতে হচ্ছে তাদের। এদিকে, চাঁদপুর লঞ্চ টার্মিনালের বাইরে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।এছাড়া কোস্ট গার্ড, নৌ পুলিশ, ফায়ারসার্ভিস, স্কাউটস এবং বিএনসিসি কর্মীরা লঞ্চ টার্মিনালে যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতে দায়িত্ব পালন করছে। তাদের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তাদের চাঁদপুর লঞ্চ টার্মিনালে অবস্থান করতে দেখা গেছে।

ডিসি বাংলোর পুকুরে মিলল সিলমারা বিপুল ব্যালট

নাটোর শহরের পুরাতন ডিসি বাংলোর পাশে পুকুরে অস্ত্র খুঁজতে গিয়ে বাংলোর ভেতরে পুঁতে রাখা বিপুল পরিমাণ ব্যবহৃত ব্যালট পেপার উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে এসব ব্যালট পেপার উদ্ধার করা হয়। নাটোর জেলা প্রশাসনের মেজারত ডেপুটি কালেক্টর মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘বস্তা ভর্তি ব্যালট পেপার পুঁতে রাখার ঘটনার খবর পেয়ে পুরাতন ডিসি বাংলোতে আসি। সেখানে মাটি খুঁড়ে শতাধিক বস্তা ব্যালট পেপার উদ্ধার করি।’ তিনি আরও জানান, এই ব্যালট পেপারগুলো গত সংসদ নির্বাচনে ব্যবহৃত হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, ৬ মাস পর্যন্ত এই ব্যালট পেপারগুলো ট্রেজারিতে জমা থাকে। পরবর্তীতে কোনো মামলা মোকাদ্দমা না হলে ব্যালটগুলো ধ্বংস করা বা অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হয়। এরই অংশ হিসেবে ট্রেজারিতে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় পুরাতন ডিসি বাংলোর পরিত্যাক্ত ভবনে রাখা হয়। কিন্তু কে বা কারা এই ব্যালট বাক্সগুলো সেই গুদাম থেকে বের করে মাটি পুতে রাখে। সেখানে কোনো প্রহরা ছিল কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে এনডিসি জানান, সেখানে একজন নাইটগার্ড আছে। কিন্তু তাকে এ বিষয়ে কোনো জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। গতকাল ডিসি বাংলোর পাশের পুকুর থেকে ছয়টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। এরসঙ্গে কোনো জোগসাজশ আছে কিনা এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, আমি ঠিক জানি না- এর সঙ্গে কোনো যোগসূত্র আছে কিনা। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে তিনি জানান। এদিকে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন সুত্রে জানা যায়, ডিসি ডাক বাংলোর পাশের তালাব পুকুর থেকে অস্ত্র উদ্ধারের জন্য পানি সেচ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মাহমুদা শারমিন নেলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। প্রসঙ্গত, গতকাল শুক্রবার বড়শি ফেলে মাছ ধরার সময় পরিত্যক্ত অবস্থায় চারটা শটগানসহ ছয়টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে।

সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুলশিক্ষিকা নিহত

বগুড়ার নন্দীগ্রামে ঈদের কেনাকাটা ও ইফতার কিনে স্কুলছাত্র ছেলেসহ স্বামীর মোটরসাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন স্কুলশিক্ষিকা শামীমা আক্তার (৩৫)। পথিমধ্যে বাসের ধাক্কায় তিনি নিহত হয়েছেন। আহত স্বামী ও সন্তানকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শুক্রবার ইফতারের আগমূহূর্তে উপজেলার কুন্দারহাট বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বগুড়া-নাটোর মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। হাইওয়ে পুলিশ কুন্দারহাট থানার ওসি মনোয়ারুজ্জামান এ তথ্য দিয়েছেন। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নিহত শামীমা আক্তার বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের পেং বোনারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। তিনি পেং বোনারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বুড়ইল ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল হাকিমের স্ত্রী। তাদের ছেলে সানজিল (১৫) স্থানীয় স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র। আবদুল হাকিম ঈদের কেনাকাটা করতে শুক্রবার দুপুরে মোটরসাইকেল স্ত্রী শামীমা আক্তার ও ছেলে সানজিলকে নিয়ে বগুড়া শহরের মার্কেটে আসেন। কেনাকাটা শেষে তারা বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে ইফতারের আগমুহূর্তে নন্দীগ্রাম উপজেলার কুন্দারহাট বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে ইফতার কেনেন। এরপর তারা মহাসড়কে উঠলে রাজশাহী ছেড়ে আসা বগুড়াগামী সেঞ্চুরি পরিবহনের একটি বাসের চালক তাদের ধাক্কা দেয়। এতে তিন জন মহাসড়কে ছিটকে পড়েন। স্থানীয়রা আহত দম্পতি ও তাদের ছেলেকে উদ্ধার করে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে নেন। সেখানে চিকিৎসক শামীমা আক্তারকে মৃত ঘোষণা করেন। স্বামী বিএনপি নেতা আবদুল হাকিম ও ছেলে স্কুলছাত্র সানজিল চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদের মধ্যে গুরুতর সানজিলকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। হাইওয়ে পুলিশ কুন্দারহাট থানার ওসি মনোয়ারুজ্জামান জানান, দুর্ঘটনার পরপরই বাস ফেলে চালক ও হেলপার পালিয়ে গেছে। বাসটি জব্দ এবং এর চালক ও হেলপারকে শনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। নিহত শিক্ষিকার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ব্যাপারে নন্দীগ্রাম থানায় দুর্ঘটনাজনিত আইনে মামলা হয়েছে।

অটোরিকশা ছিনতাইকালে মারধরে নিহত ১, দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরের তন্তরে অটোরিকশা ছিনতাই করতে গিয়ে পিটুনির শিকার হয়েছে ছিনতাইকারীরা। এতে জাফর মিয়া নামে একজন নিহত হয়েছে। এ সময় গুরুতর আহত হয়েছে অপর দুই ছিনতাইকারী জহির হোসেন ও আরিফ শিকদার। শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাকিল আহামেদ জানান, শনিবার (২৯ মার্চ) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার তন্তর ইউনিয়নের পাড়াগাঁওয়ের ফালু শেখের ছেলে মহসিন ভোরে নিজ বাড়ি থেকে অটোরিকশা নিয়ে বের হয়। খানিকটা পথ গিয়ে নওপাড়া পাকা রাস্তায় পৌঁছালে ছিনতাইকারীরা রাস্তায় কলাগাছ ফেলে পথরোধ করে মহসিনকে কিলঘুষি দিয়ে অটোরিকশা ছিনতাই করে নিয়ে যায়। মহসিনের ডাকচিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে তিন জনকে আটক করে পিটুনি দেয়। তবে রিকশাটি নিয়ে চলে যায় অপর ছিনতাইকারী। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে তিন জনকে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কিছুক্ষণ পরই জাফর মিয়া মারা যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক বাকি দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে ঢাকা রেফার্ড করলেও দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাদের ঢাকা নেওয়া হয়নি। নিহত ছিনতাইকারী জাফরের গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরের কালকিনির ফুলছড়ি এলাকায়। জহির শরিয়তপুরের জাজিরার গোপালপুর ও আরিফ শিকদারের বাড়ি বরিশালের মুলাদির মুন্তাজপুর গ্রামে। এই ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান ওসি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ‘মাদককে না বলুন’ লেখা পিকআপেই পাচার হচ্ছিল ভারতীয় মদ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের দাতিয়াড়া থেকে অর্ধকোটি টাকার ভারতীয় মদের চালান আটক করেছে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। শনিবার (২৯ মার্চ) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে সেনাবাহিনীর ৩৩ বীর ক্যাপ্টেন আমিনের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর সদস্যরা শহরের দাতিয়ারা এলাকা থেকে এই ভারতীয় মদের চালান আটক করেন। অভিযান সম্পর্কে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুজাফফর হোসেন জানান, সকাল সাড়ে ৬টার দিকে সেনাবাহিনীর একটি দল শহরের কাউলতলী এলাকায় একটি পিকআপ ভ্যানকে থামার জন্য সংকেত দেয়। কিন্তু পিকআপ ভ্যানটি সংকেত অমান্য করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা পিকআপ ভ্যানটিকে ধাওয়া করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের দাতিয়ারা ফারুকীপাড়া এলাকা থেকে আটক করেন। তবে এর আগেই পিকআপ ভ্যানচালক এবং হেলপার পালিয়ে যায়। পরে পিকআপটি তল্লাশি করে ভারতীয় মদ অফিসার চয়েস ব্লু, ওল্ড মন্ক, এসি ব্ল্যাক, আইস বটকা ও ম্যাজিক মোমেন্টসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ১৪৮০ বোতল উদ্ধার করা হয়। যার আনুমানিক বাজারমূল্য অর্ধকোটি টাকা হবে বলে জানায় পুলিশ। এ ঘটনায় পিকআপ ভ্যানটিকেও জব্দ করা হয়। জব্দ করার পিকআপটির পেছনে লেখা ছিল ‘মাদককে না বলুন’।

সেহরি-ইফতার একসঙ্গে করার পর চার শিশুকে নিয়ে পালালেন নারী, পরে আটক

রংপুর সিটি করপোরেশনের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের তপোধন এলাকা থেকে নিখোঁজ ৪ শিশুকে অবশেষে উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২৮ মার্চ) রাত সাড়ে ১১টার দিকে রংপুর রেলস্টেশন থেকে চার শিশুসহ পাচারকারী দলের নেতা আদুরি বেগমকে (৪০) আটক করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মজিদ আলী। পুলিশ জানায়, আটক আদুরি বেগমের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর এলাকায়। তার স্বামীর নাম মনসুর আলী। তিনি রংপুর নগরীর বাবুপাড়া এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন। মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মজিদ আলী জানান, রংপুর নগরীর ৭ নম্বর ওয়ার্ডের তপোধন মহল্লা থেকে চার শিশু নিয়ে এক নারী নিখোঁজ হন। অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও ৪ শিশুকে খুঁজে পাচ্ছিল না তাদের অভিভাবকরা। ইফতারের পরপরই নিখোঁজ শিশুদের অভিভাবকরা বিষয়টি পুলিশকে জানালে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়ে সন্ধান করতে থাকে। পুলিশ রংপুর রেলস্টেশন, বাসস্ট্যান্ড এলাকাসহ বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নেয়। রাত ১১টার দিকে পুলিশ জানতে পারে চার শিশুকে নিয়ে এক নারী রংপুর রেলওয়ে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে অবস্থান করছে। পরে সেখান থেকে অপহৃত ৪ শিশুসহ আদুরি বেগমকে আটক করে পুলিশ। এদিকে নিখোঁজ হওয়া ৪ শিশুর স্বজনদের একজন মহিমা বেগম জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে আদুরি বেগম নামের ওই নারী নগরীর ৭ নম্বর ওয়ার্ডের তপোধন গ্রামে এক বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় চান। ওই বাড়ির অভিভাবক আশিকুল ইসলাম ওই নারীকে আশ্রয় দেন। রাতে ওই বাড়িতে অবস্থান করেন ওই নারী এবং সেহরি করেন। শুক্রবার তিনি সারা দিন ওই বাড়িতেই ছিলেন এবং সন্ধ্যায় ইফতারও করেন। ইফতার পরবর্তী কোনও একসময় ওই নারী ৬ থেকে ১০ বছরের ৪ শিশুকে নিয়ে উধাও হয়ে যান। এ সময় সন্তানদের না পেয়ে স্বজনরা চরম আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তারা তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করেন। এদিকে রংপুর রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবুল কালাম বলেন, ‘আমরা ৪ শিশুসহ আদুরি বেগম নামে এক নারীকে আটক করেছি। পরে রংপুর মেট্রোপলিটন কোতয়ালি থানার ওসির উপস্থিতিতে পুলিশি হেফাজতে শিশুসহ ওই নারীকে হস্তান্তর করা হয়েছে।’ এ ব্যাপারে রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানার ওসি আতাউর রহমান জানান, নারী পাচারকারী আদুরি বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। উদ্ধার হওয়া ৪ শিশুকে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া চলছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে।

বাস-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে একসঙ্গে তিন ভাইয়ের মৃত্যু

বরগুনার পাথরঘাটায় বাস ও মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছে। নিহতরা আপন তিন ভাই। শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে পাথরঘাটার রায়হানপুর ইউনিয়নের সোনার বাংলা স্কুলের কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, মঠবাড়িয়া উপজেলার বাইশকুড়া ইউনিয়নের টিকিকাটা গ্রামের নাসির খানের ছেলে নাঈমুজ্জামান শুভ (২২), মো. শান্ত (১৪) ও মো. নাদিম (৮)। এ ঘটনায় বাসের ড্রাইভার ও হেলপারকে আটক করেছে পুলিশ। পাথরঘাটা থানার ওসি মেহেদী হাসান এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। প্রত্যক্ষদর্শী হাবিবুর রহমান জানান, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে পাথরঘাটা থেকে রাজিব পরিবহন নামে একটি খালি বাস বেপরোয়া গতিতে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল। অপরদিকে মঠবাড়িয়া থেকে মোটরসাইকেলে যাচ্ছিলেন তিন ভাই। মুখামুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় স্থানীয়রা ড্রাইভার ও হেলপাকে আটকে রাখে। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের থানা হেফাজতে নেয়। নিহতদের বাবা নাসির খান জানান, তার বড় ছেলে নাঈমুজ্জামান শুভ শুক্রবার ঢাকা থেকে ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসেন। শুভর মামাত ভাই তার বাড়ির জন্য কিছু কেনাকাটা করে তার কাছে দেয়। সেগুলো পৌঁছে দিতে তাঁর তিন ছেলে মঠবাড়িয়া থেকে পাথরঘাটায় যাচ্ছিলেন। পথে এই দুর্ঘটনা ঘটে। পাথরঘাটা থানার ওসি মো. মেহেদী হাসান জানান, এ ব্যাপারে আইনী প্রক্রিয়া চলছে। ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চাকরির প্রলোভনে ময়মনসিংহ থেকে সাতক্ষীরায় এনে তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৩

ভারতে অনেক টাকার বেতনের ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ময়মনসিংহ থেকে এক তরুণীকে সাতক্ষীরায় এনে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে তিন যুবককে আটক করেছে পুলিশ। কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ-ওসি হাফিজুর রহমান জানান, গত রোববার থেকে বুধবার পর্যন্ত জেলার কালীগঞ্জ ও শ্যামনগর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে আটকে রেখে তাকে ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলেন- মেহেদি হাসান ওরফে সবুজ (২৪), তার ভাই সাকিব হোসেন (২০) ও মো. গোলাম রসুল ওরফে রাকিব (২১)। তাদের বাড়ি কালীগঞ্জ উপজেলার কাঠুনিয়া গ্রামে। সাতক্ষীরার ওই হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা সোমা রানী দাস বলেন, ভুক্তভোগী তরুণীর শারীরিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। তিনি অনেক অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে। সাতক্ষীরার একটি (সরকারি) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ভুক্তভোগী তরুণী জানান, তার বাড়ি ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলায়। পেশায় তিনি একজন মডেল ও পার্লারের রূপবিশেষজ্ঞ। কয়েক দিন আগে ফেসবুকে তার সঙ্গে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার কাঠুনিয়া গ্রামের গোলাম রসুলের পরিচয় হয়। কয়েক মাস কোনো কাজ না থাকায় তিনি বাড়িতে বেকার বসে ছিলেন। গোলাম রসুলের সঙ্গে পরিচয়ের একপর্যায়ে তিনি ভারতে কাজের ব্যবস্থা করে দেবেন বলে জানান। পরে তার কথায় ২২ মার্চ তিনি সাতক্ষীরার কালীগঞ্জে আসেন। ওই দিন সন্ধ্যায় কালীগঞ্জ বাস টার্মিনাল থেকে মেহেদি হাসান ও গোলাম রসুল তাকে নিয়ে মেহেদির বাড়িতে নিয়ে রাখেন। ভুক্তভোগী তরুণীর অভিযোগ, রোববার গ্রেপ্তার মেহেদির বাড়ি থেকে তাকে কদমতলা গ্রামের আমিনুল ইসলাম নামের একজনের বাড়িতে নেওয়া হয়। সেখানে খাবারের সঙ্গে কিছু মিশিয়ে অচেতন করার পর একে একে কয়েকজন তাকে ধর্ষণ করেন। পরদিন সোমবার তাকে শ্যামনগর উপজেলার কুলতলী গ্রামে একজনের বাড়িতে নিয়ে আটকে রাখা হয়। মঙ্গলবার আবার তাকে কয়েকজন ধর্ষণ করেন। এরপর ফের তাকে মেহেদির বাড়িতে আনা হয়। বৃহস্পতিবার ভোরে তার কাছে থাকা মুঠোফোন দিয়ে ৯৯৯ নম্বর কল করলে দুপুরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে এবং তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। কালীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল রশিদ মোল্যা বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী তরুণী বাদী হয়ে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে থানায় মামলা করেছেন। তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে। ওই তরুণী আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। কালিগঞ্জ থানার ডিউটি অফিসার- এস আই তাপস ঘোষাল জানান, এ ঘটনায় জড়িত অন্যান্যদেরও নজরদারিতে রেখেছে পুলিশ। দ্রুতই সব অপরাধীরা আইনের আওতায় আসবে।