বিজয় আমাদেরই হবে ইনশাআল্লাহ : ইসলামি আলোচক আজহারী

চট্টগ্রামের ঘটনায় দেশকে অস্থিতিশীল করার সর্বশেষ ট্রাম্পকার্ড খেলা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রখ্যাত ইসলামি আলোচক মিজানুর রহমান আজহারী। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এমনটা দাবি করেন তিনি। একইসঙ্গে সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান এই আলোচক। নিজের ভেরিফায়েড পেজে দেওয়া এক পোস্টে আজাহারী লিখেছেন, ‘সম্ভবত দেশকে অস্থিতিশীল করার সর্বশেষ ট্রাম্পকার্ড খেলা হচ্ছে। দয়া করে সবাই শান্ত থাকুন। কোনো উসকানিতে পা দেওয়া যাবে না। বিজয় আমাদেরই হবে ইনশাআল্লাহ।’ সেই পোস্টের কমেন্টে আইনজীবী সাইফুল হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেছেন এই ইসলামি বক্তা। যেখানে তিনি লেখেন, ‘দ্রুততম সময়ে চট্টগ্রামের আইনজীবী হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’ একই আহ্বান জানিয়েছেন প্রখ্যাত ইসলামি আলোচক শায়খ আহমাদুল্লাহ। তিনি বলেন, তরুণ আইনজীবী সাইফুল ইসলামের নৃশংস হত্যাকারীদের দ্রুততার সাথে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা সরকারের আশু কর্তব্য। দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাওয়া উগ্রদের থামানোর ব্যাপারে কোনোরূপ দ্বিধা করা যাবে না। একইসঙ্গে সর্বস্তরের মুসলিমদের সর্বোচ্চ ধৈর্য ধারণের এবং কোনো প্রকার চক্রান্তের ফাঁদে পা না দিতে অনুরোধ জানান আহমাদুল্লাহ। শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, দেশের সকল ধর্মের দায়িত্বশীল ও প্রাজ্ঞ ব্যক্তিবর্গকে বলব, আপনারা নিজ নিজ ধর্মের অনুসারীদের শান্ত ও সুশৃঙ্খল থাকার আহ্বান জানান। কোনো কারণে এই দেশ যদি অশান্ত হয়, তবে ক্ষতিগ্রস্ত আমরা সবাই হব। জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে ইসকনের অনুসারীরা চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা শুরু করলে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ তাদের বাধা দেন। এরপর তাকে তুলে নিয়ে আদালতের প্রধান ফটকের বিপরীতে রঙ্গম টাওয়ারের সামনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সাইফুলকে কুপিয়ে আহত করে ইসকন সদস্যরা। গুরুতর আহত অবস্থায় সাইফুলকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। চমেক হাসপাতালের নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন ঢাকা পোস্টকে বলেন, চট্টগ্রাম আদালতে সংঘর্ষের ঘটনায় ৭-৮ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজনকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। এ ঘটনায় সাইফুল হত্যার বিচার চেয়ে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

মাওলানা আতাহার আলীকে বাদ দিয়ে জাতীয় ইতিহাস রচিত হতে পারে না

ধর্ম উপদেষ্টা আফম খালিদ হোসেন বলেছেন, ‘মাওলানা আতাহার আলীকে বাদ দিয়ে দেশের জাতীয় ইতিহাস রচিত হতে পারে না।’ সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিকালে সুপ্রিম কোর্টের শফিউর রহমান অডিটোরিয়ামে হয়রত আল্লামা আতাহার আলী রহ. জীবন, কর্ম ও অবদান শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে খালিদ হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশের অভ্যূদ্বয়ের ইতিহাস গ্রন্থে যুক্তফ্রন্টের আলাদা অধ্যায় আছে। সেখানে আতাহার আলীর নাম আছে। তবে অতীতে তার অবদানকে ইতিহাসে খাটো করে দেখানো হয়েছে। আগামী দিনে যে ইতিহাস বই রচিত সেখানে তাকে যথাযথভাবে উপস্থাপন করা হবে।’ ধর্ম উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘আতাহার আলীর গতিশীল নেতৃত্বের কারণে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের নেজামে ইসলাম পার্টি থেকে ৩৬ টি আসনে পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হয়েছিল। তার মৃত্যুর কারণে নেতৃত্বের যে শূন্যতা তৈরি হয়েছিল, সেটা এখনও পূরণ হয়নি।’ খালিদ হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ পার্লামেন্টের লাইব্রেরিতে আতাহার আলীর উর্দু ভাষায় বহু বক্তৃতা আছে। পাকিস্তান পার্লামেন্টের লাইব্রেরিতেও তার বহু বক্তৃতা আছে। এগুলোকে সংকলিত করলে সমসাময়িক রাজনীতির স্পষ্ট চিত্র পাওয়া যাবে। তার গোছানো বক্তৃতায় আমাদের মাতৃভাষা, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি বৈষম্য ও জনগণের অধিকার নিয়ে কথা আছে। তার বক্তৃতা যদি বাংলা ভাষায় অনুবাদ করে উপস্থাপন করতে পারি তাহলে তাকে নিয়ে রচিত বই সমৃদ্ধ হবে, জাতি অনেক কিছু জানতে পারবে।’ ধর্ম উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘বহু তথ্য ও উপাত্ত সংগ্রহ করে মাওলানা শফিকুর রহমান বইটি রচনা করেছেন। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি আকর গ্রন্থ। এই বই আমাদের পথ দেখাবে। এ বই এ দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের একটি সমৃদ্ধ আলেখ্য।’ এ বই বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করবে বলে উপদেষ্টা আশাবাদ ব্যক্ত করেন। আতাহার আলীর বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের প্রতি আলোকপাত করে উপদেষ্টা বলেন, ‘তিনি ছিলেন বহুমাত্রিক গুণের অধিকারী। তিনি ছিলেন একজন সক্রিয় রাজনীতিবিদ। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, একে ফজলুল হক ও আইয়ুব খানের সাথে তিনি রাজনীতি করেছেন। একইসাথে তিনি একটি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ, হাদীসেরও মহাদ্দিস ও মসজিদের ইমাম ছিলেন।’ কিশোরগঞ্জের আল জমিয়াতুল ইমদাদিয়ার মহাপরিচালক মাওলানা শাব্বির আহমদ রশিদের সভাপতিত্বে বইটির লেখক শফিকুর রহমান জালালাবাদী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

পুষ্টি ‘ভার্সেস অফ লাইট’ হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতা শুরু

টি. কে. গ্রুপের তত্ত্বাবধানে শুরু হচ্ছে ‘পুষ্টি ‘ভার্সেস অফ লাইট’ হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতা। শনিবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। টি. কে. গ্রুপ আয়োজিত এই প্রতিযোগিতাটি দেশের উদীয়মান তরুণ/কিশোর হাফেজদের অসাধারণ প্রতিভা ও পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের দক্ষতাকে সম্মান জানাবে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সকলকে অংশগ্রহণের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে টি.কে. গ্রুপের বিজনেস ডিরেক্টর মো. মোফাচ্ছেল হক বলেন, পবিত্র কোরআনের আলো ছড়িয়ে দেওয়ার এই ব্যতিক্রমী আয়োজন আমাদের জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে সহায়ক হবে। এবার প্রতিযোগিতায় নারীরাও অংশগ্রহণ করতে পারবেন। এই প্রতিযোগিতায় জাজ হিসেবে সম্পৃক্ত করা হয়েছে বিশ্বখ্যাত আলেমদের। তাদের অমূল্য পরামর্শ প্রতিযোগিতাটিকে ভিন্ন মাত্রা দেবে।টি. কে. গ্রুপের এইচ আর ডিরেক্টর আলমাস রাইসুল গণি বলেন, আমাদের এই আয়োজন এবার আগের চেয়ে ভিন্ন আঙ্গিকে হবে। আশা করছি আমরা গ্র্যান্ড ফাইনাল পযর্ন্ত সবার সহযোগিতা পাব।টি. কে. গ্রুপের হেড অফ ব্র্যান্ড এন্ড কমিউনিকেশন মো. ইব্রাহীম খলিলের প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে অতিথিরা তরুণ/কিশোর হাফেজদের উৎসাহ দেওয়া ও পৃষ্ঠপোষকতার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেন। এতে প্রতিযোগিতার সাফল্য কামনা করেন টি.কে. গ্রুপের অ্যাডভাইজর মো. মাহফুজুর রহমান। এসময় টি. কে গ্রুপের অন্যান্য সকল ইউনিটের হেড অফ বিজনেস, হেড অফ সেলস সহ উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন ।‘কণ্ঠে ছড়াক পবিত্র বাণী’ এই স্লোগানে দেশব্যাপী হিফজুল কোরআনের এই প্রতিযোগিতা শুরু হতে যাচ্ছে ডিসেম্বর মাস থেকে। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে পবিত্র কোরআন চর্চায় নিবেদিত যে তরুণরা সুমধুর কণ্ঠে তেলাওয়াত করে থাকেন তাদের প্রতিভা অন্বেষণেই এমন আয়োজন।আগামী পবিত্র রমজান মাসে প্রতিযোগিতাটি সম্প্রচারিত হবে জনপ্রিয় চ্যানেল ডিবিসিতে।প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে থাকবেন খ্যাতনামা কয়েকজন ইসলামিক স্কলার। প্রধান বিচারক হিসেবে থাকবেন আন্তর্জাতিক কোরআন তিলাওয়াত সংস্থার (ইক্বরা), চেয়ারম্যান ক্বারী শাইখ আহমাদ বিন ইউসুফ আল-আযহার, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সৌদি আরবের জেদ্দার আল-কামাল মসজিদের সাবেক ইমাম হাফেজ মাওলানা আবদুল কাদের রহমানি এবং জর্ডান থেকে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামী স্কলার হাতেম জামিল মাহমুদ সুহেমাত ।পুষ্টি ‘দি ভার্সেস অফ লাইট’ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীরা সম্মিলিতভাবে পাচ্ছেন ৪০ লক্ষ টাকার সমমানের পুরস্কার। প্রথম বিজয়ী পাবেন নগদ ৫ লক্ষ টাকা সহ আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পূর্ণ খরচসহ স্কলারশিপের সুযোগ। এছাড়াও রয়েছে একজন অভিভাবকসহ ওমরাহ হজ পালনের ব্যবস্থা।দ্বিতীয় বিজয়ী পাবেন আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পূর্ণ খরচসহ স্কলারশিপ। উচ্চশিক্ষার সুযোগ ছাড়াও নগদ ৩ লক্ষ টাকা সাথে ওমরাহ হজ করার সুযোগ পাবেন। তৃতীয় বিজয়ী পাবেন দুই লক্ষ টাকা। এছাড়াও চতুর্থ থেকে ৩০ তম প্রতিযোগী নগদ অর্থ পুরস্কার হিসেবে অর্জন করতে পারবেন।এই প্রতিযোগিতায় অনুর্ধ্ব ১৬ বা কম বয়সী তরুণ হাফেজরা অংশ নিতে পারবেন। দেশের সকল অঞ্চল থেকে তারা নির্বাচিত হবেন এবং প্রতিটি অঞ্চলের শীর্ষ প্রতিযোগীরা ঢাকায় ফাইনাল রাউন্ডে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবেন।পুষ্টি ‘ভার্সেস অফ লাইট’ আগামী প্রজন্মের হাফেজদের অনুপ্রাণিত করার পাশাপাশি তাদের বিকাশ ও ঐক্যের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার অনন্য উদ্যোগ। এটি তরুণ হাফেজদের অর্জনগুলো উদযাপনের পাশাপাশি দেশজুড়ে ঈমান, ইখলাস, ইলমের চেতনা সৃষ্টিতে পবিত্র রমজান মাসে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।

সুদের ভয়ানক পরিণতি

মুফতি আবদুল্লাহ তামিম: সুদ এমন একটি রোগ, যা শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতি নয়, বরং ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্যও ধ্বংস ডেকে আনে। ইসলাম যে কারণে সুদকে নিষিদ্ধ করেছে, তা আজকের আধুনিক অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও স্পষ্ট। সুদ সমাজে বৈষম্য, লোভ ও অসন্তোষ সৃষ্টি করে, যা একটি জাতির শান্তি ও সমৃদ্ধি বিনষ্ট করে। সুদের বিকল্প হিসেবে দান ও হালাল ব্যবসায় প্রবর্তনের মাধ্যমে সমাজে ভারসাম্য ও ন্যায়পরায়ণতা প্রতিষ্ঠা করা যায়। কোরআন ও হাদিসের নির্দেশ অনুযায়ী, একটি সুদমুক্ত অর্থনীতি গড়ে তোলা সম্ভব এবং এর মাধ্যমে আমরা আল্লাহর রহমত ও বরকত লাভ করতে পারি।আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ও একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের প্রত্যেককে সুদ থেকে বিরত থাকতে হবে আর দান, সাদাকাহ ও হালাল উপার্জনে নিজেদের জীবন পরিচালিত করতে হবে।সুদ কি হারাম: ইসলামে সুদ (রিবা) হারাম হিসেবে ঘোষিত। কুরআন ও হাদিসে সুদকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ ব্যবসায়কে হালাল করেছেন ও সুদকে হারাম করেছেন।’ (সুরা বাকারা ২৭৫)রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কোন কর্জ থেকে কোন ফায়দা নিলে, সেই ফায়দাটাই এক ধরনের রিবা। (বায়হাকি) সুতরাং, সুদ যে ইসলামিক শরীয়তে স্পষ্টভাবে হারাম, এতে কোন সন্দেহ নেই। এর কারণ সুদ সামাজিক, অর্থনৈতিক ও নৈতিক দিক থেকে মানবজীবনের ওপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলে।সুদ হারাম কেন: সুদকে হারাম করার পেছনে রয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ। সমাজে বৈষম্য সৃষ্টি সুদ একটি শ্রেণিকে সম্পদশালী ও অপর শ্রেণিকে দরিদ্র করে তোলে। এটি অর্থনৈতিক বৈষম্যকে ত্বরান্বিত করে। মানবতাবিরোধী চরিত্র সুদ সম্পদশালী শ্রেণিকে অন্যায়ভাবে গরিবের সম্পদ কেড়ে নেওয়ার সুযোগ দেয়। আল্লাহ বলেছেন, ‘আল্লাহ সুদকে নিশ্চিহ্ন করেন ও দানকে বৃদ্ধি করেন।’ (সুরা বাকারা ২৭৬)সুদ সমাজে লোভ, হিংসা ও অবিশ্বাস সৃষ্টি করে, যা শান্তি বিনষ্ট করে। রসুল (সা.) সুদগ্রহীতা, সুদদাতা, সুদ লেখক ও সাক্ষীদের অভিশাপ দিয়েছেন। (সহিহ মুসলিম ৪১৭৭)সুদের কারণে ব্যক্তি, সমাজ ও জাতির ওপর ভয়াবহ প্রভাব পড়ে। রসুলুল্লাহ (সা.) মেরাজের রাতে সুদখোরদের সম্পর্কে বলেছেন, ‘তাদের পেট ছিল মটকার মত বড়, যার ভেতরে বহু সাপ ছিল; যা বাইরে থেকে দেখা যাচ্ছিল।’ (ইবনে মাজাহ ২২৭৩)ধ্বংস সুদের মাধ্যমে যে অর্থ আয় করা হয়, তা আল্লাহর দৃষ্টিতে বরকতমুক্ত। আল্লাহ বলেন, ‘মানুষের সম্পদের সাথে যুক্ত হয়ে যা বৃদ্ধি পায়, আল্লাহর কাছে তা বাড়ে না।’ (সুরা রুম ৩৯) সুদ সমাজে অবিশ্বাস ও অসন্তোষ সৃষ্টি করে, যা একটি জাতির উন্নয়ন ব্যাহত করে। সুদে সরাসরি লাভবান হয় সম্পদশালী মহল, যারা ঋণ দেয়। তারা পরিশ্রম ছাড়াই অর্থ উপার্জন করে।‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর ও সুদের বকেয়া পরিত্যাগ করো, যদি তোমরা ঈমানদার হয়ে থাক।’ (সুরা বাকারা ২৭৮) আসুন, আমরা সকলেই সুদের ভয়াবহতা থেকে বিরত থেকে আল্লাহর নির্দেশ মেনে চলি ও একটি সুদমুক্ত সমাজ গড়ে তুলি। সুদ মানবতার জন্য এক অভিশাপ। এটি ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর। ইসলামে সুদের ভয়াবহতা সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে এবং এর বিকল্প হিসেবে দানের গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সুদমুক্ত অর্থনীতি গড়ে তোলার মাধ্যমে আমরা নৈতিক ও সামাজিক উন্নতি অর্জন করতে পারি।

আগামী ৩১ জানুয়ারি শুরু হবে বিশ্ব ইজতেমা

আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে শুরু হবে বিশ্ব ইজতেমা। রোববার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে এ এ তথ্য জানিয়েছেন বিশ্ব ইজতেমার মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান ও আবু সায়েম। তারা জানান, প্রতি বছরের মতো ২০২৫ সালের বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরে। আগামী ৩১ জানুয়ারি আম বয়ানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হবে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। পরে ২ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে প্রথম পর্ব। এবারও বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের আয়োজন করবেন তাবলিগ জামাতের মাওলানা মোহাম্মদ জুবায়ের অনুসারী (শুরায়ী নেজাম)। ৭ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। দ্বিতীয় পর্ব পরিচালনা করবেন তাবলিগ জামাতের মাওলানা সাদ অনুসারীরা। ৯ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের বিশ্ব ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা। ১ম পর্বের আয়োজনকারীরা তাদের আয়োজন শেষে ইজতেমার মাঠ ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের নেতৃত্বে গঠিত বিশ্ব ইজতেমার মাঠ প্রস্তুতি সংক্রান্ত কমিটিকে ৪ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টার মধ্যে বুঝিয়ে দেবেন। পরে ২য় পর্বের আয়োজনকারীরা ওইদিন বিকেলে ওই কমিটির কাছ থেকে ইজতেমার মাঠ বুঝে নেবেন। ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শেষে ১১ ফেব্রুয়ারি দুপুরে আয়োজকগণ কমিটির কাছে মাঠ হস্তান্তর করবেন। তারা আরও জানান, এবার বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে মাওলানা সাদ উপস্থিত থাকবেন বলে সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করেছেন।

দাওয়া ইলাল্লাহ মৌসুমি কাজ নয়, সার্বক্ষণিক দায়িত্ব: আজহারী

গণমানুষকে কল্যাণের পথে আহ্বান করতে, হতাশাচ্ছন্ন মানুষকে আশাবাদী ও উজ্জীবিত করতে একজন দাঈর সার্বক্ষণিক দায়িত্ব নিয়ে কথা বলেছেন মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) এ বিষয়ে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকের এক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আদ-দা’ওয়াহ ইলাল্লাহ’ কোনো মৌসুমি কাজ নয়। এটা একজন দাঈর সার্বক্ষণিক কাজ। ইটস এ্যা লাইফলং কমিটমেন্ট।’ মাওলানা আজহারী আরও বলেন, ‘দেশে কিংবা প্রবাসে, মিম্বারে কিংবা মঞ্চে, অনলাইনে কিংবা অফলাইনে, কি-বোর্ডে কিংবা ক্যামেরার সামনে; একজন দাঈ সর্বদা কোরআনের আলো ফেরি করেন। গণমানুষকে কল্যাণের পথে আহ্বান করেন। আশাবাদী করে তোলেন হতাশায় আচ্ছন্ন বনি আদমকে। উজ্জীবিত করেন বোধ ও বিশ্বাসের পরশে।’ মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ইসলামি আলোচক ও দাঈ। বেশ কয়েক বছর ধরে তিনি মালয়েশিয়ায় বসবাস করছেন। সেখানকার বিভিন্ন ইসলামিক প্রোগ্রামে তিনি অংশগ্রহণ করেন এবং ইসলামের সুমহান বাণী প্রচার করেন। দেশে থাকতে ছিলেন দাওয়া ইলাল্লাহর সঙ্গে সদা সম্পৃক্ত।

সময় বাড়ছে না, ৩০ নভেম্বর শেষ হচ্ছে হজ নিবন্ধন

এবছর হজ নিবন্ধনের সময় আর বাড়ছে না। ৩০ নভেম্বরের মধ্যেই শেষ করতে হবে হজের প্রাথমিক নিবন্ধন। আজ ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভাগ হতে এসংক্রান্ত পত্র জারি করা হয়েছে।হজে গমনেচ্ছু ব্যক্তি, হজ এজেন্সি ও সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এপত্রে বলা হয়েছে যে, ২০২৫ সনে হজে গমনের জন্য পূর্ব ঘোষণা অনুসারে আগামী ৩০ নভেম্বর ২০২৪ তারিখের মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি উভয় মাধ্যমের হজে গমনেচ্ছু ব্যক্তিরা তিন লাখ টাকা ব্যাংকে জমা দিয়ে প্রাথমিক নিবন্ধন সম্পন্ন করবেন। প্রাথমিক নিবন্ধনের সময় সরকারি মাধ্যমে সাধারণ হজ প্যাকেজ-১ ও সাধারণ হজ প্যাকেজ-২ এর যে কোনটি নির্বাচন করা যাবে। ৩০ নভেম্বর ২০২৪ তারিখ পর্যন্ত প্রাথমিক নিবন্ধনের পাশাপাশি প্যাকেজের সম্পূর্ণ টাকা জমা দিয়ে চূড়ান্ত নিবন্ধনও করা যাবে। তবে ৩০ নভেম্বর ২০২৪ তারিখের পরে প্রাথমিক নিবন্ধনের কোন সুযোগ থাকবে না।এপত্রে আরো বলা হয়েছে যে, হজ প্যাকেজ নির্বাচনের পর আর প্যাকেজ পরিবর্তন করা যাবে না।

বিশ্ব ইজতেমা জুবায়েরপন্থীদের কাছে ছেড়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ওলামা মাশায়েখ

টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দান আর কাকরাইল মসজিদ মাওলানা জুবায়েরপন্থীদের কাছে ছেড়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে ওলামা মাশায়েখ বাংলাদেশ। অন্যথায় ২৪ ঘণ্টার নোটিশে ঢাকা শহর অচল করে দেয়ার প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।সোমবার (১২ নভেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে তাবলীগ ও ইজতেমা ইস্যু নিয়ে ওলামা-মাশায়েখ বাংলাদেশের এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেয়া হয়।এ সময় বক্তারা বলেন, কাকরাইল মসজিদে তারা শান্তিপূর্ণ অবস্থান চান, তারা কোনো সংঘাত চান না তবে কোনরকম উস্কানি দেয়া হলে সে পরিস্থিতির দায় সাদপন্থীদের নিতে হবে।এক প্রশ্নের জবাবে বক্তারা বলেন সাদপন্থীদের সাথে তারা তখনই আলোচনায় বসতে রাজি আছেন যদি মাওলানা সাদ কান্দলভী তার পূর্বের বির্তকিত বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চান।তাদের দাবি, সাদপন্থীরা সংঘাত সৃষ্টি করতে নানা রকম ষড়যন্ত্র করছে তবে জোবায়েরন্থীরা সব রকম সংঘাত মোকাবিলা করতে প্রস্তুত রয়েছে।

আলেমসমাজ সামাজিক শক্তির প্রতিভূ: ধর্ম উপদেষ্টা

ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন,আলেমসমাজ সামাজিক শক্তির প্রতিভূ। তাদের সাথে জনসম্পৃক্ততা ও সামাজের প্রগাঢ় বন্ধন রয়েছে।আজ দুপুরে খুলনা ইসলামিক ফাউন্ডেশন বিভাগীয় কার্যালয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা ও সামাজিক সমস্যা নিরসনে ওলামা মশায়েখদের করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ইমাম-খতিবদের মানুষ সম্মান করে। তারা জুমার খুতবা ও ওয়াজ-নসিহতের মাধ্যমে মানুষের উত্তম চারিত্রিক গুণাবলি বিকাশে মেহনত করে যাচ্ছেন। ঠিক একইভাবে মানুষের চরিত্রের নেতিবাচক দিকগুলো থেকে বিরত রাখার ক্ষেত্রেও ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। সমাজে যেসকল ব্যাধি রয়েছে সেগুলো নিরসনেও আলেম-ওলামাদের বিশাল ভূমিকা রয়েছে।ধর্ম উপদেষ্টা আরো বলেন, আলেম-ওলামাদের মেহনতের কারণেই বাংলাদেশে ইসলামের অনুকূল আবহ তৈরি হয়েছে। তারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সুরক্ষায়ও মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছে। উপদেষ্টা ইমাম-মুয়াজ্জিনদের জন্য সম্মানজনক বেতন কাঠামো নির্ধারনে উদ্যোগ গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দেন। এছাড়া, তিনি বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদকে বিশ্বের অন্যান্য আইকনিক মসজিদের মতো সুন্দর, দৃষ্টিনন্দন ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ মসজিদে রূপান্তরিত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।ড. খালিদ বলেন, সরকার অত্যন্ত নাজুক পরিস্থিতিতে দেশের দায়িত্ব নিয়েছে। আমরা ধীরে ধীরে অগ্রগতির পথে ধাবিত হচ্ছি। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। জাতিতে জাতিতে কিংবা ধর্মে ধর্মে যদি হানাহানি হয় তাহলে জাতীয় অগ্রগতি ও উন্নয়ন ব্যাহত হতে বাধ্য। একারণে সরকার অগ্রাধিকারভিত্তিতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সুরক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে ওলামা-কেরামদের বিরাট ভূমিকা রয়েছে।ড. খালিদ আরো বলেন, বাংলাদেশ ঐতিহ্যগতভাবে সাম্প্রদায়িক সৌহার্দ্যের দেশ। এদেশে নানা জাতি-গোষ্ঠী ও ধর্মের লোক বসবাস করে। এটাই বাংলাদেশের বৈচিত্র। আমাদের সংবিধানেও প্রতিটি নাগরিকের অধিকার সমান। সরকার সাম্প্রদায়িক সৌহার্দ্যের এই ঐতিহ্যকে অত্যন্ত সম্মানের চোখে দেখে, এটাকে লালন করে আসছে এবং আগামীদিনেও লালন করে যাবে।তিনি বলেন, কিছু দুর্বৃত্ত বা কায়েমী স্বার্থবাদী মহল মাঝেমাঝে এই সাম্প্রদায়িক সৌহার্দ্যকে বিনষ্ট করার পায়তারা চালিয়ে থাকে। এসকল দুর্বৃত্তদেরকে সরকার প্রতিহত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।উপদেষ্টা বলেন, সরকার তিনমাস হলো দায়িত্ব নিয়েছে। অর্থনীতি চাঙ্গা হচ্ছে। ইতোমধ্যে রিজার্ভ বৃদ্ধি পেয়েছে। আগামীদিনে বাংলাদেশের অর্থনীতি মজবুত হবে।জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মোঃ ইউসুপ আলী সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপদেষ্টার একান্ত সচিব ছাদেক আহমদ, স্থানীয় সরকারের খুলনা বিভাগীয় পরিচালক মোঃ তবিবুর রহমান, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিভাগীয় পরিচালক মুহাম্মদ জালাল আহমেদ প্রমূখ বক্তব্য প্রদান করেন। এ মতবিনিময় সভায় তিন শতাধিক স্থানীয় আলেম-ওলামা অংশগ্রহণ করেন।

জুমার দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমল

জুমাবার একটি মর্যাদাপূর্ণ দিন। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘দিবসসমূহের মধ্যে জুমার দিন শ্রেষ্ঠ এবং তা আল্লাহর কাছে অধিক সম্মানিত।’ (ইবনে মাজাহ: ১০৮৪) হাদিসে আরও বর্ণিত হয়েছে, ‘সূর্য উদিত হওয়ার দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিন সর্বোত্তম। এই দিনে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে। এই দিনে তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে এবং এই দিনে তাঁকে জান্নাত থেকে বের করা হয়েছে।’ (মুসলিম: ৮৫৪)জুমার দিনে মহানবী (স.)-এর নির্দেশনা অনুযায়ী মুসলিম উম্মাহর করণীয় বিশেষ কিছু আমল রয়েছে। নিচে সেগুলো তুলে ধরা হলো।ফজরের নামাজে সুরা সিজদা ও ইনসান তেলাওয়াতআবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (স.) শুক্রবার ফজরের নামাজে সুরা আস-সিজদা এবং সুরা আল-ইনসান তিলাওয়াত করতেন। (সহিহ বুখারি: ১০৬৮)বেশি পরিমাণে দরুদ পড়ারাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, তোমরা জুমার দিন আমার ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করো। কেননা তোমাদের পাঠকৃত দরুদ আমার সামনে পেশ করা হয়। (আবু দাউদ: ১০৪৭)মেসওয়াক করারাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, জুমার দিন প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির গোসল ও মেসওয়াক করা কর্তব্য এবং সামর্থ্য অনুযায়ী সে সুগন্ধিও ব্যবহার করবে। (সহিহ মুসলিম: ১৮৪৫)গোসল করাজুমার দিনে বিশেষভাবে গোসল করার তাগিদ এসেছে হাদিসে। সালিম (রহ.) থেকে তাঁর পিতার সূত্র থেকে বর্ণিত, তিনি নবী (স.)-কে বলতে শুনেছেন, যে ব্যক্তি জুমার নামাজে আসে সে যেন গোসল করে আসে। (জামে তিরমিজি: ৪৯২)সম্ভব হলে সুগন্ধি ব্যবহার করাঅন্য দিনের চেয়ে এদিন বেশি সুগন্ধি ব্যবহার করা উত্তম। আবু সাইদ খুদরি (রা.) বলেন, আমি এ মর্মে সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহর রাসুল (স.) বলেছেন, জুমার দিন সুগন্ধি পাওয়া গেলে তা ব্যবহার করবে। (সহিহ বুখারি: ৮৮০)জিকির করাইমাম জুমার নামাজে আসার পূর্ব পর্যন্ত নামাজ, জিকির ও তেলাওয়াতে রত থাকা। জুমার দিনে যত সম্ভব জিকির করা বাঞ্ছনীয়। কোরআনে জিকির তথা আল্লাহর স্মরণের কথা এসেছে এভাবে- ‘হে বিশ্বাসীগণ! জুমার দিনে যখন নামাজের জন্য আহবান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের জন্য দ্রুত ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ কর। এটাই তোমাদের জন্য শ্রেয়, যদি তোমরা উপলব্ধি কর।’ (সুরা জুমা: ৯)পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর কাপড় পরিধান করাআবু জার (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (স.) বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন উত্তমরূপে গোসল করে, উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন করে, তার উৎকৃষ্ট পোশাক পরিধান করে এবং আল্লাহ তার পরিবারের জন্য যে সুগন্ধির ব্যবস্থা করেছেন, তা শরীরে লাগায়, এরপর জুমার সালাতে এসে অনর্থক আচরণ না করে এবং দুজনের মাঝে ফাঁক করে অগ্রসর না হয়, তার এক জুমা থেকে পরবর্তী জুমার মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহ ক্ষমা করা হয়। (সুনানে ইবনে মাজা: ১০৯৭)মসজিদে সুগন্ধি লাগানোওমর (রা.) জুমার দিন দ্বিপ্রহরে মসজিদে সুগন্ধি লাগানোর জন্য আদেশ করেছেন। এছাড়াও যেকোনো সময় মসজিদে সুগন্ধি লাগানো উচিত। রাসুলুল্লাহ (স.) পাড়ায় পাড়ায় মাসজিদ নির্মাণ করতে, তা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে এবং সুবাসিত করতে হুকুম দিয়েছেন। (ইবনু মাজাহ: ৭৫৯)ইস্তেগফার করা ও কথা না বলাএদিন মহান রবের পক্ষে গুনাহ মাফের বারি বর্ষিত হয়। নবী (স.) বলেছেন, কোনো মুসলিম যদি পবিত্র হয়ে জামে মসজিদের দিকে হাঁটতে থাকে, এরপর ইমাম নামাজ শেষ করা পর্যন্ত নীরব থাকে, তাহলে এ নামাজ এই জুমা থেকে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত তার গুনাহের কাফফারা (মোচনকারী) হয়ে যাবে, যদি ধ্বংসকারী তথা কবিরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকে। (মুসনাদে আহমদ: ২৩৭২৯)খুতবার সময় চুপ থাকাখুতবার সময় সম্পূর্ণ নিশ্চুপ থাকা। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (স.) বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন ইমামের খুতবা দেওয়ার সময় তার সঙ্গীকে বলল, ‘চুপ থাকো’ সে একটি অনর্থক কাজ করল। (সুনানে নাসায়ি: ১৪০১)জুমার নামাজ আদায়ইসলামের যেসব ফরজ বিধান আছে, এর মধ্যে বেশি গুরুত্বপূর্ণ জুমার নামাজ। যারা জুমার নামাজকে অলসতা কিংবা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে ছেড়ে দেয়, তাদের হৃদয়ে আল্লাহ তাআলা মোহর মেরে দেন। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যদি মানুষ জুমার সালাত পরিত্যাগ করা থেকে বিরত না থাকে তাহলে আল্লাহ তাদের অন্তরে মোহর মেরে দেবেন, যার ফলে তারা অলস ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’ (সুনানে দারামি: ১৫২৪)সুরা আলা, সুরা জুমা ও গাশিয়াহ পড়ানুমান ইবনে বশির (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) দুই ঈদের নামাজে ও জুমার নামাজে ‘সাব্বিহিসমা রব্বিকাল আলা-’ ও ‘হাল আতা-কা হাদিসুল গা-শিয়াহ’ সুরাদ্বয় পাঠ করতেন। (সহিহ মুসলিম: ১৯১৩)কোনো কোনো বর্ণনায় এসেছে, রাসুল (স.) সুরা জুমা ও সুরা আলা তেলাওয়াত করতেন।সুরা কাহাফ পড়াআবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহাফ পাঠ করবে তার জন্য দুই জুমার মধ্যবর্তীকাল জ্যোতির্ময় হবে।’ (আত-তারগিব: ৭৩৫)আছরের সময়টি দোয়ায় অতিবাহিত করাজুমার দিন বিশেষ সময়ে দোয়া কবুল হয়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (স.) বলেন, জুমার দিনের মধ্যে অবশ্যই এমন একটি মুহূর্ত আছে, যখন কোনো মুসলিম আল্লাহর কাছে কল্যাণ প্রার্থনা করে নিশ্চয়ই তিনি তাকে তা দান করেন। তিনি বলেন, সে মুহূর্তটি অতি স্বল্প। (সহিহ মুসলিম: ১৮৫৮)বেশির ভাগের মতে, সে সময়টি আছরের পর থেকে নিয়ে মাগরিবের আগ মুহূর্ত। জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (স.) বলেন, ‘জুমার দিনের বারো ঘণ্টার মধ্যে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে যদি কোনো মুসলিম এ সময়ে আল্লাহর কাছে কিছু প্রার্থনা করে, তাহলে মহান ও সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাকে দান করেন। এ মুহূর্তটি তোমরা আসরের শেষ সময়ে অনুসন্ধান করো।’ (আবু দাউদ: ১০৪৮)কবর আজাব থেকে মুক্তির দোয়া করাজুমার দিন কবরের আজাব মাফ হয়ে যায়। আবু কাতাদাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (স.) জুমার দিন ছাড়া (অন্য দিন) ঠিক দুপুরে নামাজ আদায় করা অপছন্দ করতেন। তিনি বলেছেন, জুমার দিন ছাড়া (অন্যান্য দিনে) জাহান্নামের আগুনকে উত্তপ্ত করা হয়। (আবু দাউদ: ১০৮৩)জুমার দিনে বা রাতে যে মারা যাবে, তার থেকে কবরের আজাব উঠিয়ে নেওয়া হবে এটা এই হাদিস থেকে প্রমাণিত। তবে কেয়ামত পর্যন্ত আজাব দেওয়া হবে না এটা নিশ্চিত নয়।আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে জুমার দিন উল্লেখিত আমলগুলো করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে ‘বৈষম্যবিরোধী হজ এজেন্সি মালিক’

চলতি বছরে পবিত্র হজ পালনের জন্য তিনটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে ‘বৈষম্যবিরোধী হজ এজেন্সি মালিক’ ব্যানারে এজেন্সি মালিকদের একাংশ। এ সময় তারা বর্তমান সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী বিগত বছরের তুলনায় হজের খরচ কমেছে বলে দাবি করেন।এর আগে মালিকদের অপর একটি অংশ সরকার ঘোষিত প্যাকেজে খাবার খরচ বাদ দেওয়ায় খরচ কার্যত কমেনি বলে জানিয়েছিল। তবে মালিকদের এ অংশ ওই দাবি অস্বীকার করে তাদের প্যাকেজ ঘোষণা করার অধিকার নেই বলে দাবি করেন।বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি হলে বৈষম্যবিরোধী হজ এজেন্সির মালিকদের বেসরকারি হজ প্যাকেজ-২০২৫ ঘোষণা উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়।সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন বৈষম্যবিরোধী হজ এজেন্সির আহ্বায়ক মো. আক্তার উজ্জামান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর প্রায় ১ লাখ ২৭ হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমানের ফরজ ইবাদাত পবিত্র হজ পালন করার সুযোগ পান। তবে কোটা বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও বিগত কয়েক বছরে নানা অনিয়ম, নৈরাজ্যের মাধ্যমে বিমান ভাড়া ও হজ্জ প্যাকেজ মূল্য অস্বাভাবিকহারে বৃদ্ধি করে পুরো হজ ব্যবস্থাপনাকে সঙ্কটাপন্ন করে তোলা হয়। ফলে ২০২৪ সালে প্রায় ৪৫ হাজার নিবন্ধিত হাজী পবিত্র হজ পালন থেকে বঞ্চিত হয়।আক্তার উজ্জামান বলেন, ২০২৫ সালের হজ প্যাকেজ মূল্য সহনীয় পর্যায়ে নির্ধারণের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার আন্তরিক প্রচেষ্টায় বিমান ভাড়াসহ প্যাকেজ মূল্য কিছুটা কমেছে। তবে এখনও এ দেশের সর্বস্তরের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের সাধ ও সাধ্যের মাঝে বিস্তর ফারাক রয়েছে। ফলে আমরা এ বছরও কোটা পূর্ণ হওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছি। আবেগ অনুভূতি সম্বলিত ফরজ ইবাদত হজ পালনকে সহজতর করার জন্য বিমান ভাড়া আরও কমিয়ে ও সৌদি পার্টের মুয়াল্লিম ফি এবং ১৭ দশমিক ৫০ শতাংশ ভ্যাট/ট্যাক্স কমিয়ে আরও সুলভ প্যাকেজের দাবি জানাচ্ছি। সাথে সাথে চলমান রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়াকে বেগবান করার লক্ষ্যে বৈষম্যবিরোধী হজ এজেন্সি মালিকদেরর পক্ষ থেকে বেসরকারি হজ এজেন্সি মালিকদের জন্য ঘোষণা করছি।তাদের প্যাকেজের মধ্যে রয়েছে, সাধারণ হজ প্যাকেজ-১ যাতে মোট ৫ লাখ ১৮ হাজার টাকা, সাধারণ হজ প্যাকেজ-২ মূল্য মোট ৫ লাখ ৮৫ হাজার টাকা এবং বিশেষ হজ প্যাকেজ, যার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এসব প্যাকেজ হজযাত্রীদের জন্য খাওয়াসহ কুরবানি ব্যতিত মূল্য ধরা হয়েছে।বৈষম্যবিরোধী নাম প্রসঙ্গে আহ্বায়ক আক্তার উজ্জামান বলেন, হজ্জের খরচ বেড়ে যাওয়ায় মানুষ হজে যাওয়া কমে গিয়েছিল। বিগত সরকার ও তাদের সুবিধাভোগীদের জন্য এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। এটা সকলের জন্যই বৈষম্য। ক্যাম্প দূরের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা ক্যাম্প দূরের বিষয়ে সরকারকে সরাসরি বলেছি। খাবারের খরচটাও মূল প্যাকেজে যুক্ত করতে সংশ্লিষ্টদের কাছে দাবি জানিয়েছি।আলদা হওয়ার কারণ সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে এজেন্সি মালিক নেতা সম্রাট বলেন, মন্ত্রণালয় তাদের (সাধারণ হজ এজেন্সির মালিক) কমিটি বাতিল করেছে। হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টেও তারা পরাজিত হয়েছে। তারা আমাদের আওয়ামী লীগ বানানোর চেষ্টা করেছে। আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয়ে হচ্ছে। আমরা সরকারের পক্ষ-বিপক্ষ নই। আমরা হাজীদের সুবিধার্থে কথা বলছি। আমাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই প্যাকেজের খরচ কমানো হয়েছি।খাবারের খরচ প্রসঙ্গ উল্লেখ করে খরচ বেড়েছে এবং ক্যাম্প বাইরে চলে গেছে এমন প্রশ্নের জবাবে সদস্য সচিব মোহাম্মদ আলী বলেন, প্যাকেজে খরচ কমেছে এটা দৃশ্যমান। আমরা বিমানের খরচ আরও কমানোর দাবি জানিয়েছি। গত বছরের তুলনায় ডলার ও রিয়ালের দাম বেড়েছে। সেই তুলনায় প্যাকেজ ৬ লাখের উপর হওয়ার কথা। দৃশ্যত যতটা কমেছে ডলারের মূল্য বৃদ্ধি পরিস্থিতি বিবেচনায় খরচ তার থেকেও বেশি কমেছে। আমরা সরকারের পক্ষে না, আমরা হাজীদের সুবিধার পক্ষে।ক্যাম্প তিন কিলোমিটার দূরে হলে হাজীদের কষ্ট বাড়বে এমন অবস্থায় নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরে তারা বলেন, একটু দূরে থেকে হলেও চলতি বছরে অধিক মানুষ হজের সুযোগ পাচ্ছেন। আমাদের আরও প্যাকেজ আছে। তিন কিলোমিটারেরটা একটি সাধারণ প্যাকেজ, আরও অনেক প্যাকেজ আছে যেখানে ১ কিলোমিটার দূরেও আছে। কাবা শরীফের ০ থেকে ১৩ কিলোমিটারের মধ্যে তাদের থাকার স্থান নির্ধারণ করা হয়। যারা চান তারা কাছের প্যাকেজ নিতে পারবেন। এছাড়া দূরের হাজীদের জন্য যানবাহন থাকবে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নতুন মহাপরিচালক রেজানুর রহমান

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নতুন মহাপরিচালক হিসেবে সরকারের অতিরিক্ত সচিব মোঃ রেজানুর রহমানকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি বিদায়ী মহাপরিচালক ড. মুহাঃ বশিরুল আলমের স্থলাভিষিক্ত হবেন। মধ্যবর্তী এ সময়ে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. সাইফুল ইসলাম অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন।গত ০৬ নভেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রেষণ-১ অধিশাখা হতে বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোঃ রেজানুর রহমানকে প্রেষণে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক হিসেবে পদায়ন সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়েছে ।বিসিএস ১৭ তম ব্যাচের এই কর্মকর্তা ১৯৯৮ সালে প্রশাসন ক্যাডারে যোগ দেন। এরপর তিনি বিভিন্ন জেলায় সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, উপজেলায় সহকারী কমিশনার(ভূমি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়-বিভাগে উপসচিব ও যুগ্মসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।তিনি বিদ্যুৎ বিভাগে যোগদানের পূর্বে দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ প্যাকেজ ঘোষণা

হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) ২০২৫ সালের হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। বুধবার (৬ নভেম্বর) রাজধানীর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় দুটি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে সাধারণ প্যাকেজের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ২৩ হাজার টাকা এবং বিশেষ প্যাকেজের মূল্য ৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকা।হজ এজেন্সি মালিকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এবারের প্যাকেজগুলোতে উন্নত সেবা ও সুবিধা প্রদান নিশ্চিত করার জন্য চেষ্টা করা হয়েছে।এদিকে, সরকারিভাবে দুটি প্যাকেজ এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় একটি প্যাকেজ প্রত্যাখ্যান করেছে হাব। সরকার ঘোষিত সরকারি প্যাকেজে মক্কার মসজিদুল হারামের আশপাশের এক কিলোমিটারের মধ্যে থাকা বাড়ির জন্য ৪ লাখ ৭৮ হাজার ২৪২ টাকা এবং দেড় কিলোমিটারের মধ্যে থাকা বাড়ির জন্য ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৬৮০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যদিকে, বেসরকারি সাধারণ প্যাকেজের মূল্য ৪ লাখ ৮৩ হাজার ১৫৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।এছাড়া, ২০২৫ সালের হজে বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ পালনের সুযোগ পাবেন।

ইজতেমায় সাদ কান্ধলভীর উপস্থিতি নিশ্চিতের দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন

বিশ্ব ইজতেমায় তাবলিগ জামাতের বিশ্ব আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভীর উপস্থিতি নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে। বুধবার (৬ নভেম্বর) প্রেস ক্লাবে ‘দাওয়াত ও তাবলিগের উলামাকেরাম ও সাধারণ সাথীবৃন্দ’ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।লিখিত বক্তব্যে কাকরাইল মসজিদের খতিব আজিম উদ্দিন বলেন, দাওয়াতে তাবলীগ বিশ্বব্যাপী একটি অরাজনৈতিক, নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণ সংগঠন। এ দাওয়াতি কার্যক্রমের মাধ্যমে লক্ষ-কোটি মানুষ ইসলামের পথে এসেছেন এবং হেদায়েত লাভ করেছেন। বিশ্বব্যাপী এই দাওয়াতি সংগঠনের বাৎসরিক সম্মেলন বা বিশ্ব ইজতেমা প্রায় ৫৭ বছর ধরে টঙ্গীর তুরাগ তীরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। আসন্ন বিশ্ব ইজতেমাকে কেন্দ্র করে একটি চিহ্নিত মহল দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। তথাকথিত ‘জুবায়েরপন্থি’ তাবলীগের একটি বিচ্ছিন্ন অংশ দেশের কতিপয় উলামায়ে কেরামকে বিভ্রান্ত করে ও মাদরাসার কোমলমতি ছাত্রদের ব্যবহার করে ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্ট করছে। তিনি বলেন, গত ৫ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তাদের আয়োজিত প্রোগ্রাম থেকে অসংখ্য অসত্য ও বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে, যা জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। অথচ আমরা ৩ নভেম্বর গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশের আলেমদের ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছি। তবে জুবায়েরপন্থিদের উসকানিতে কতিপয় অদূরদর্শী আলেম আপসমূলক সমাধানে না এসে তাবলীগ ও বিশ্ব ইজতেমার ইস্যুতে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করছেন এবং পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করার হীনচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, এই পরিস্থিতিতে আমরা জাতির সামনে বিষয়টি স্পষ্ট করার লক্ষ্যে সমাধানমূলক প্রস্তাব পেশ করছি। তাবলীগ জামাতের বিশ্ব আমির সাদ কান্ধলভী ও নিজামুদ্দীন মারকাজের অনুসারী তাবলীগ জামাত সম্পর্কে যে অসত্য ও বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে, তা নিয়ে ৭টি শর্তের ভিত্তিতে ওপেন চ্যালেঞ্জের প্রস্তাব দিচ্ছি।১. দারুল উলুম দেওবন্দের মাওলানা আরশাদ মাদানী ও পাকিস্তানের শাইখুল ইসলাম মুফতি তাকি উসমানীসহ ভারত ও পাকিস্তানের শীর্ষ আলেমরা বিচারক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।২. সরকারের উপদেষ্টা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।৩. গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত থাকবেন এবং এটি রেকর্ড ও সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।৪. সুনির্দিষ্ট বিষয়ে আলোচনা সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।৫. উভয় পক্ষের নির্দিষ্ট প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।৬. বিতর্কটি জাতীয় মসজিদ বায়তুল মুকাররমে অনুষ্ঠিত হবে।৭. বিচারকমণ্ডলীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে।তিনি বলেন, আমরা ঘরোয়া বৈঠকে বসে সব সমস্যার সমাধান করতে চাই। কিন্তু আগের সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সুসম্পর্কের কারণে জুবায়েরপন্থিরা অতিরিক্ত উৎসাহ নিয়ে উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে বৈঠক করে টানা ৭ বছর প্রথম পর্বে ইজতেমা করার সুযোগ করে নিয়েছে। অথচ তারা বর্তমান সরকারের বিরোধিতা করে ৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈঠককে উপেক্ষা করে রাজপথে উত্তেজনা ছড়াচ্ছে।এসময় তারা যেসব দাবি উপস্থাপন করেন। সেগুলো হলো-১. বিশ্ব ইজতেমায় তাবলীগ জামাতের বিশ্ব আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।২. বিগত ৭ বছরের বৈষম্য দূর করে বিশ্ব ইজতিমার প্রথম পর্ব নিজামুদ্দীন মারকাযের অনুসারী মূলধারার তাবলীগী সাথীদেরকে বুঝিয়ে দেওয়া।৩. কাকরাইল মসজিদ ও বিশ্ব ইজতিমা ময়দানের বৈষম্য দূর করে তাবলিগের মূলধারার সাথীদের হাতে বুঝিয়ে দেওয়া।৪. ২০১৮ সালের ১ ডিসেম্বর টঙ্গী ইজতিমা ময়দানে মূলধারার ২ জন সাথীকে হত্যা ও পরবর্তীতে কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ঢাকা নিউ মার্কেটে ৩ জন সাথীকে হত্যা ও চার শতাধিক সাথীকে মারাত্মক আহত করার দায়ে জুবায়েরপন্থিদের নামে দায়ের করা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির করা।৫. সারা বাংলাদেশের সব মসজিদে ধর্মীয় উসকানি ও ভাইয়ে ভাইয়ে সংঘাত সৃষ্টি হয়- এমন বক্তব্য নিষিদ্ধ করা।

ইসলামি মহাসম্মেলন: জনসমুদ্র সোহরাওয়ার্দী উদ্যান

ইসলামি মহাসম্মেলনকে কেন্দ্র করে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে লাখো আলেম-ওলামাদের ঢল নেমেছে। এরই মধ্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। মহাসম্মেলনের সীমানা ছাড়িয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাস, রমনা পার্কসহ আশপাশের এলাকা পর্যন্ত।মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সকাল নয়টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ সম্মেলন শুরু হলেও ভোর থেকেই লাখো আলেম-ওলামার জমায়েত হতে থাকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। এই সম্মেলন দুপুর ১টা পর্যন্ত চলার কথা রয়েছে। দাওয়াত ও তাবলিগ, মাদারাসে কওমিয়া এবং দীনের হেফাজতের লক্ষ্যে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।সরেজমিনে দেখা যায়, সম্মেলনের শুরু থেকেই বক্তব্য দিচ্ছেন কওমি মাদ্রাসা ভিত্তিক আলেমরা। সম্মেলনে মানুষের উপস্থিত ছিল চোখে পড়ার মতো। পুরো সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। সম্মেলনে আগত অর্ধেকের বেশি মানুষ রমনা পার্ক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, শহীদ মিনার, শাহবাগ, প্রেস ক্লাব এলাকায় সড়কে, ফুটপাতে বসে মাইকে বক্তব্য শুনছেন। আর মানুষের মাঝে বিনা মূল্যে খাবার বিতরণ করছেন স্বেচ্ছাসেবীরা।চট্টগ্রামের হাটহাজারী থেকে সম্মেলনে অংশ নেওয়া মুবিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, মাওলানা সাদ একজন বিতর্কিত আলেম। তার এক বক্তব্যের কারণেই বাংলাদেশে তাবলিগ জামাত এবং টঙ্গী ইজতেমা আলাদা হয়ে গেছে। এখন এই বক্তাকে আবার দেশে আনতে চাচ্ছে তাবলিগদের একটি অংশ। আবার তারা টঙ্গীতে প্রথম পর্বে ইজতেমা করতে চাচ্ছে। এবার তাদের আর সেই সুযোগ দেওয়া হবে না।সম্মেলনে আল্লামা শাহ মহিবুল্লাহ বাবুনগরী, আল্লামা খলিল আহমাদ কাসেমী হাটহাজারী, আল্লামা আব্দুল হামিদ পীর সাহেব মধুপুর, আল্লামা আব্দুল রহমান হাফেজ্জী, আল্লামা নুরুল ইসলাম, আদিব সাহেব হুজুর, মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক, মাওলানা রশিদুর রহমান, আল্লামা শাইখ জিয়াউদ্দিন, আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান, আল্লামা আব্দুল কুদ্দুস, ফরিদাবাদ, আল্লামা নুরুল ইসলাম ওলিপুরী, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা আবু তাহের নদভী, মাওলানা আরশাদ রহমানি, মাওলানা সালাহউদ্দীন নানুপুরী, মাওলানা মুস্তাক আহমদ, অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী, মাওলানা আনোয়ারুল করীম, মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ আলী প্রমুখ উপস্থিত আছেন বলে জানা গেছে।

বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু হবে ৩১ জানুয়ারি, দ্বিতীয় পর্ব ৭ ফেব্রুয়ারি

৫৭তম বিশ্ব ইজতেমার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। এবারও দুই পর্বে হবে ইজতেমা। আগামী বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে তাবলিগ জামাতের আয়োজনে বিশ্ব ইজতেমা হবে।ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু হবে ২০২৫ সালের ৩১ জানুয়ারি। এই পর্ব শেষ হবে ২ ফেব্রুয়ারি। এরপর ৭ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা। দ্বিতীয় পর্বের বিশ্ব ইজতেমা শেষ হবে ৯ ফেব্রুয়ারি।সোমবার (৪ নভেম্বর) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠক শেষে এসব তথ্য জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)।ঢাকা থেকে ২২ কিলোমিটার উত্তরে টঙ্গী তুরাগ নদীর তীরে টঙ্গীর বিশাল ময়দানে তাবলিগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমা ১৯৬৭ সাল থেকে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। ২০১১ সাল থেকে বিশ্ব ইজতেমা দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।ইজতেমার একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, ভারতের মাওলানা সাদ অনুসারীরা, অপরটির নেতৃত্বে বাংলাদেশের আলেম ওলামাদের মাওলানা জুবায়ের অনুসারী গ্রুপ।

ড্যাাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ২ দিনব্যাপী ‘সুন্নাহ কনফারেন্স বাংলাদেশ ২০২৪’ এর উদ্বোধন

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ড্যাফোডিল ইসলামিক সেন্টার ও কুল্লিয়াতুল কুরআনিলকারীম ওয়াদ দিরসাতিল ইসলামিয়াহর যৌথ উদ্যোগে আজ ৩ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে দুই দিনব্যাপী (নভেম্বর ৩-৪) ‘সুন্নাহ কনফারেন্স বাংলাদেশ ২০২৪’ শুরু হয়েছে। আজ ০৩ নভেম্বর ২০২৪ রবিবার সকাল ৯-০০ মিনিটে ড্যাফোডিল স্মার্ট সিটি, বিরুলিয়া, সাভার ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধান অতিথি হিসেবে এ সুন্নহ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিস্তিন এম্বাসেীর ডেপুটি হেড জিয়াদ হামাদ, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ, ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামছুল আলম ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. এম লূৎফর রহমান ও উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. এস এম মাহাবুব-উল-হক মজুমদার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সুন্নাহ সম্মেলনের অর্গানাইজিং কমিটির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ মনজুরে এলাহী। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ড্যাফোডিল ইসলামিক সেন্টারের উপ-পরিচালক মোঃ ছফিউল্ল্যাহ ও আয়োজক কমিটির সদস্য মোহাম্মদ মোস্তফা আামির ফয়সল।এই কনফারেন্সে ৪০ টি গবেষনা পত্র উপস্থাপন করা হচ্ছে। এছাড়া সুন্নাহ ও আধুনিক বিজ্ঞান সেশন নিচ্ছেন দেশ ও দেশের বাহিরে অনেক গবেষক। দেশ এবং দেশের বাহিরে থেকেও অনেক গবেষক এখানে অংশগ্রহন করছে। এই সম্মেলনের মূল বিষয়গুলোর মধ্যে আছে-ওহী ও ইসলামী শরীয়তের উৎস হিসাবে আস-সুন্নাহ কুরআন ও সুন্নাহর মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক, সুন্নাহর প্রামাণিকতার বিভিন্ন দিক, সুন্নাহ অস্বীকারকারীদের সংশয়সমূহ ও তার জবাব, সুন্নাহ ও আধুনিক বিজ্ঞানমুসলিম জীবনে আল-কুরআন ও আস-সুন্নাহর প্রয়োাজন ও গুরুত্ব তুলে ধরা এই সম্মেলনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে একটি। এছাড়াও আল-কুরআন ও আস-সুন্নাহর খেদমতে বিভিন্ন যুগে মুসলিম স্কলারদের অবদান তুলে ধরা শরীয়তের উৎস ও ওহী হিসাবে সুন্নাহর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত করা, কুরআন ও সুন্নাহর মধ্যকার সম্পর্ক তুলে ধরা, সুন্নাহর বিরুদ্ধে যে সকল ভ্রান্তি ও সংশয় ছড়ানো হচ্ছে সেগুলোর ওপর বিশ্লেষণাত্মক আলোচনা ও গবেষণামূলক উত্তর প্রদান করাও এই সম্মেলনের লক্ষ্য।ইমাম বুখারী ট্রাস্ট, বাংলাদেশের স্বনামধন্য উলামায়ে কেরাম ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদদের সমন্বয়ে গঠিত একটি প্রতিষ্ঠান যা শিক্ষা, ইসলামী দাওয়াহ ও সমাজ উন্নয়নমূলক নানামূখী র্কমসূচি বাস্তবায়ন করে চলে। কুল্লিইয়াতুল কুরআনিল কারীম ওয়াদ-দারিসাতিল ইসলামিয়্যাহ, বিশুদ্ধ ধারার একটি উচ্চতর ইসলামী শিক্ষা, গবেষণা ও দাওয়াহ প্রতিষ্ঠান। উচ্চ মাধ্যমিক, ব্যাচলের ও মার্স্টাস পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসাবে গণ্য হবে। বর্তমানে ঢাকার উত্তরায় এর অস্থায়ী ক্যাম্পাস অবস্থতি। সেখানে আরবী ভাষা ও সানাবিয়্যাহ পর্যায়ের ক্লাস ২০২২ সাল থেকে শুরু হয়েছে।প্রধান অতিথির বক্তব্যে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, মহানবী হযরত মুহম্মদ (সা.)- এর সুন্নাহ পালনের কোনো বিকল্প নাই। আমাদের ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে সুন্নাহ মোতাবেক জীবন পরিচালনা করা অতি গুরুত্বপূর্ণ। সুন্নাহকে জিন্দা করার জন্য আমাদের সারাজীবন প্রয়াস চালাতে হবে। সুন্নাহ যদি জীবিত থাকে বে’দাত াবদুরিত হয়ে যাবে, তৌহিদ ডদি প্রতিষ্ঠা করতে পারি ‘শিরিক, বিদুরিত হয়ে যাবে। তিনি বলেন, আমাদের সমাজে সুন্নতের নামে বে’দাত টলছে, তৌহিদের নামে ‘শিরিক’ চলছে। এটাকে ডিপ্রিসিয়েশন করে সত্যিকারের সুন্নাহ মানুষের মাঝে, মানুষের জীবন ধারায় আমাদের প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ইসলামের শত্রæরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে থাকলেও, মুসলিম বিশ^ এখনো নিজেদের মধ্যে বিভেদ ভুলতে পারে না। এই জন্য বিশে^র বুকে মুসলিম ভাই-বোনেরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। তাই আমাদেরকে ইসলামের বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়মিত গবেষণা ও মহানবী (সা.) এর সুন্নাহ মোতাবেক জীবন পরিচালনা করতে হবে। এই চমৎকার আয়োজন আমাদেরকে বিভেদ ভুলে নতুন চিন্তা জাগ্রত করবে ইনশাল্লাহ। ক্যাপশনঃ ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ড্যাফোডিল ইসলামিক সেন্টার ও কুল্লিয়াতুল কুরআনিল কারীম ওয়াদ দিরসাতিল ইসলামিয়াহর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘সুন্নাহ কনফারেন্স বাংলাদেশ ২০২৪’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।

হংকংয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে ইসলাম

বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহরের তালিকায় এবার নিয়ে টানা তিনবার শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে হংকং। মার্সার কস্ট অব লিভিং সার্ভে থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। বিশ্বের ২২৬টি শহর নিয়ে এই জরিপ করা হয়েছে। জরিপটিতে প্রতিটি শহরের পরিবহন, খাদ্য, পোশাক, গৃহস্থালিসামগ্রী, বিনোদনসহ ২০০-এর বেশি সূচক বিবেচনা করা হয়েছে। এরপর বিভিন্ন শহরের মধ্যে জীবনযাত্রার ব্যয়ের মধ্যে তুলনামূলক হিসাব করা হয়েছে। এমন ব্যয়বহুল এলাকায়ও থেমে নেই ইসলাম ও মুসলমানদের অগ্রযাত্রা।চীনের বিশেষ প্রাশাসনিক অঞ্চল হংকংয়ে ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে ইসলাম। ১৯৯৩ সালে এ অঞ্চলে মুসলমানের সংখ্যা ছিল ৬০ হাজার আর ২০১৬ সালে মুসলমানের সংখ্যা তিন লাখ অতিক্রম করে। ২০১৪ সালের পরিসংখ্যান মতে হংকংয়ে মুসলিম জনসংখ্যা ৪.১ ভাগে উন্নীত হয়। ১১১০.১৮ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের হংকংয়ের বর্তমান জনসংখ্যা ৭৫ লাখের কাছাকাছি।বৌদ্ধ, তাওবাদ ও খ্রিস্ট ধর্মের পর ইসলাম হংকংয়ের চতুর্থ বৃহত্তম ধর্ম। তবে হংকংয়ের বিপুলসংখ্যক মানুষ নাস্তিক্যবাদে বিশ্বাসী। হংকংয়ে বসবাসকারী মুসলিমদের মধ্যে ৬০ শতাংশ ইন্দোনেশিয়ান। এ ছাড়া ৪০ হাজার চীনা মুসলিম, ৩০ হাজার পাকিস্তানি মুসলিম রয়েছে।মুসলিমদের সঙ্গে সঙ্গে হংকংয়ে ইসলামি সংগঠন ও হালাল রেস্টুরেন্টের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।ধারণা করা হয়, আজ থেকে প্রায় ৩৫ হাজার বছর আগে হংকং ভূমির জন্ম হয় এবং ছয় হাজার বছর আগে সেখানে মানববসতি গড়ে ওঠে। খ্রিস্টপূর্ব ২১৪ সালে হংকংকে কিন সাম্রাজ্য হংকংকে চীনের অন্তর্ভুক্ত করে। তবে ১৮৪১ সালে ব্রিটিশ উপনিবেশ প্রতিষ্ঠার পর আধুনিক হংকংয়ের যাত্রা শুরু হয়।স্বীকৃতি ইতিহাস অনুযায়ী ব্রিটিশ বাহিনীর সদস্য হিসেবে ভারতীয় মুসলিমরা হংকংয়ে পদার্পণ করলে সেখানে ইসলাম বিকশিত হতে শুরু করে। ব্রিটিশ প্রশাসনই হংকংয়ে মসজিদ ও মুসলিম কবরস্থান নির্মাণের জন্য জায়গা প্রদান করে। সে সময় আসা বেশির ভাগ মুসলিমই ছিলেন সেনা সদস্য। তবে তাদের মধ্যে মুসলিম ব্যবসায়ীও ছিল।ক্রমবর্ধমান মুসলিমরা একটি জামে মসজিদও নির্মাণ করেছে। ৩০ শেলি স্ট্রিটে ১৮৫০ সালে যার সূচনা হয়েছিল। ১৯১৫ সালে তার পুনর্নির্মাণ হয়। তারপর থেকে তা এখনো দাঁড়িয়ে আছে আশপাশের সুউচ্চ ভবনের ছায়ায়।হংকংয়ের দ্বিতীয় মসজিদ নির্মিত হয় ১৮৯৬ সালে নাথান রোডে ভিক্টোরিয়া হার্বারের পাশে, যা কলিন মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টার নামে পরিচিত। ১৯৭৬ সালে সিম শ সুইয়ের মধ্য দিয়ে রেললাইনের টানেল করার সময় মসজিদটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ১৯৮০ সালে তা ভেঙে পুনর্নির্মাণ করা হয়।মসজিদে আম্মার হংকংয়ের তৃতীয় মসজিদ। ১৯৮১ সালে প্রতিষ্ঠিত মসজিদের নামের সঙ্গে ‘সাদিক’ শব্দটি পরে যুক্ত করা হয়। সাদিক ছিলেন এক চীনা মুসলিম স্থপতি। তিনি মসজিদে আম্মারের প্রতিষ্ঠাতা ও নকশাকারী। একটি নির্মাণাধীন মসজিদসহ বর্তমানে হংকংয়ে মসজিদের সংখ্যা সাতটি। এ ছাড়া মুসলিমদের জন্য শতাধিক স্বীকৃত হালাল রেস্টুরেন্ট, দশটি ইসলামিক স্কুল, কয়েকটি মাদরাসা ও দুটি পৃথক কবরস্থান রয়েছে।ব্রিটিশ আর্থিক প্রতিষ্ঠান এইচএসবিসি ইসলামি অর্থব্যবস্থা (Islamic finance system) প্রবর্তন করে। ২০০৭ হংকংয়ে অবস্থিত ‘আরব চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’ প্রতিষ্ঠা করে ‘এইচকে ইসলামিক ইনডেক্স।’ ইসলামিক ইউনিয়ন অব হংকং, ইসলামিক কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন, হংকং ইসলামিক ইয়ুথ অ্যাসোসিয়েশন, ইউনাইটেড মুসলিমস অ্যাসোসিয়েশন অব হংকং অত্র অঞ্চলের উল্লেখযোগ্য ইসলামি সংগঠন।

ছাদ খোলা বাসে সংবর্ধনা দেওয়া হচ্ছে বিশ্বজয়ী হাফেজ মুয়াজকে

বিশ্বজয়ী হাফেজ মাহমুদকে ছাদখোলা বাসে সংবর্ধনার আয়োজন করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকসহ আলেমরা। তুরস্কে অনুষ্ঠিত হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়ে দেশে ফিরেন হাফেজ মুয়াজ মাহমুদ। বিমানবন্দরে নামার পর তাকে সংবর্ধনা জানান তারা।বৃহস্পতিবার (০১ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার ঢাকায় পৌঁছান হাফেজ মুয়াজ মাহমুদ। এরপর তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। ছাদ খোলা বাসে করে তাকে তার মাদ্রাসায় নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।এর আগে বুধবার (৩০ অক্টোবর) স্থানীয় সময় বাদ জোহর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ানের হাত থেকে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ মেহমানদের উপস্থিতিতে মুয়াজ মাহমুদ সম্মাননা ক্রেস্ট ও পুরস্কার গ্রহণ করেন।এ ছাড়াও হাফেজ মুয়াজ গত ২১ আগস্ট ২০২৪ তারিখে পবিত্র মক্কার মসজিদে হারামে অনুষ্ঠিত কিং আব্দুল আজিজ আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ১ম স্থান অর্জন করেন।উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের পর এই প্রথম তুরস্কের আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় লাল সবুজের পতাকার বাংলাদেশ প্রথম স্থান লাভ লাভ করেন।ইতোপূর্বে গত ২৮ মার্চ জাতীয় মসজিদ বায়তুল মুকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধায়নে আন্তর্জাতিক এ প্রতিযোগিতার বাছাইপর্বে দেশের শত শত মেধাবী হাফেজদের পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করে তিনি তুরস্ক আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতার জন্য বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি নির্বাচিত হন। উল্লেখ্য, মুয়াজ মাহমুদ ২০২৩ সালে ৪৬তম কেন্দ্রীয় বেফাক পরীক্ষায় নাহবেমির জামাতে অংশগ্রহণ করে মেধাতালিকা অর্জন করেছিলেন।

তুরস্কে কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম বাংলাদেশের মুয়াজ

তুরস্কে অনুষ্ঠিত ৯ম আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেছেন বাংলাদেশের হাফেজ মুয়াজ মাহমুদ।গতকাল বুধবার স্থানীয় সময় বাদ জোহর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের হাত থেকে তিনি সম্মাননা ক্রেস্ট ও পুরস্কার গ্রহণ করেন।প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের পর এই প্রথম তুরস্কের আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ প্রথম স্থান লাভ করল।তবে এর আগে গত ২৮ মার্চ জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধায়নে এ প্রতিযোগিতার বাছাইপর্ব অনুষ্ঠিত হয়। দেশের শতশত মেধাবী হাফেজদের পেছনে ফেলে তিনি প্রথম স্থান অর্জন করেন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে তুরস্ক আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতার জন্য বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবেও নির্বাচিত হন।তাছাড়া চলতি বছরের ২১ আগস্ট মক্কায় ৪৪তম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় ১২৩টি দেশের মধ্যেও বাংলাদেশ প্রথমস্থান অর্জন করে। সে সময়েও হাফেজ মুয়াজ মাহমুদ ১৫ পারা গ্রুপে প্রথম স্থান অর্জন করেন।গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে হাফেজ মুয়াজ মাহমুদ ৪৬তম কেন্দ্রীয় বেফাক পরীক্ষায় নাহবেমির জামাতে অংশগ্রহণ করে মেধা তালিকা অর্জন করেছিলেন।উল্লেখ্য, হাফেজ মুয়াজ ঢাকার মিরপুর-১ এ অবস্থিত মারকাযু ফয়জিল কুরআন আল ইসলামী, ঢাকার কিতাব বিভাগের ছাত্র। তিনি এই মাদ্রাসা থেকেই হাফেজ হয়েছেন। এখন কিতাব বিভাগে পড়াশোনা করছেন।প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে মারকাযু ফয়জিল কুরআন আল ইসলামী যাত্রা শুরু করে। ইতোমধ্যে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় এই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা সফলতার স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হয়েছে। এই মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক গুলশান সোসাইটি জামে মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি মুরতাজা হাসান ফয়েজী মাসুম।

কমেছে হজের খরচ, ধর্ম মন্ত্রণালয় ব্যবসা করে না সেবা দিয়ে থাকে: ধর্ম উপদেষ্টা

গতবারের তুলনায় খরচ কমিয়ে আগামী বছর হজে যেতে সরকারিভাবে দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। বুধবার (৩০ অক্টোবর) সচিবালয়ে ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ‘হজ প্যাকেজ-২০২৫’ ঘোষণা করেন ।ঘোষিত সাশ্রয়ী প্যাকেজ অনুযায়ী খরচ ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৭৯ হাজার ২৪২ টাকা। সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রায় প্রত্যেক হজযাত্রীর গত বছরের তুলনায় সামনের বার ১ লাখ ৫৯৮ টাকা কম খরচ হবে। অন্য প্যাকেজে খরচ ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৬৮০ টাকা। ২০২৪ সালে যারা সরকারিভাবে হজে গেছেন তাদের সাধারণ প্যাকেজে ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪০ টাকা খরচ হয়েছিল। বিশেষ হজ প্যাকেজের মূল্য ছিল ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৩২০ টাকা। এবার বিশেষ প্যাকেজ থাকছে না বলেও জানিয়েছেন ধর্ম উপদেষ্টা।গত ২৪ অক্টোবর ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ-১ অধিশাখা থেকে জারি করা বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হজের প্রাথমিক নিবন্ধন ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত চলমান থাকবে। হজে যেতে ইচ্ছুক প্রাক-নিবন্ধিত ব্যক্তিদের ৩ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা দিয়ে প্রাথমিক নিবন্ধনের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে প্রাক-নিবন্ধন ও প্রাথমিক নিবন্ধন যুগপৎভাবে করা যাবে।২০২৫ সালে বাংলাদেশের জন্য হজযাত্রীর কোটা ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। এই কোটা পূর্ণ হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রাথমিক নিবন্ধন কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাবে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী বছরের ৫ জুন (২০২৫) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে।কী থাকছে প্যাকেজেধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন জানান, হজের দুটি প্যাকেজের মধ্যে একটি হবে পবিত্র কাবা শরীফ থেকে এক থেকে দেড় কিলোমিটারের মধ্যে। অপরটি থাকবে কাবা শরীফ থেকে আড়াই থেকে তিন কিলোমিটারে মধ্যে। আসা যাওয়ার জন্য পরিবহন ও ভালো থাকার ব্যবস্থা থাকবে। এর মধ্যে সাধারণ হজ প্যাকেজ-১ এর মূল্য ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৭৮ হাজার ২৪২ টাকা। সাধারণ হজ প্যাকেজ-২ এর মূল্য ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৬৮০ টাকা।বেসরকারি মাধ্যমের সাধারণ হজ প্যাকেজের মূল্য ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৮৩ হাজার ১৫৬ টাকা। এর বাইরে সাধারণ হজ প্যাকেজ গ্রহণ করে এজেন্সি একটি অতিরিক্ত বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারবে।সরকারি মাধ্যমের সাধারণ হজ প্যাকেজ-১ এর বৈশিষ্ট্য:মক্কায় হারাম শরীফের বহিচত্বর থেকে ৩ কিলোমিটারের মধ্যে আবাসন হবে। হারাম শরীফ যাতায়াতে বাসের ব্যবস্থা থাকবে। দিনায় মসজিদে নববী থেকে সর্বোচ্চ দেড় কিলোমিটারের মধ্যে আবাসন থাকবে।মিনায় গ্রিন জোনে (জোন-৫) তাঁবুর অবস্থান এবং মিনা-আরাফায় 'ডি' ক্যাটাগরির সার্ভিস সুবিধা থাকবে। মক্কার হোটেল বা বাড়ি থেকে বাসযোগে মিনার তাঁবুতে এবং মিনা-আরাফাহ-মুযদালিফা-মিনা ট্রেনযোগে যাতায়াত করানো হবে। মিনা ও আরাফায় মোয়াল্লেমরা খাবার পরিবেশন করবেন।অ্যাটাচড বাথসহ মক্কা ও মদিনায় বাড়ি বা হোটেলের প্রতি রুমে সর্বোচ্চ ৬ জনের আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে। বাড়ি বা হোটেল কক্ষে বা ফ্লোরে রেফ্রিজারেটরের ব্যবস্থা রাখা হবে। মক্কা, মদিনা ও জেদ্দায় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে ঔষধ ও প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা প্রদানের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।৪৬ জন হজযাত্রীর জন্য ১ জন হজ গাইডের ব্যবস্থা করা হবে। প্রত্যেক হজযাত্রীকে খাবার বাবদ ন্যূনতম ৪০ হাজার টাকার সমপরিমাণ সৌদি রিয়াল এবং দমে শোকর (কুরবানী) বাবদ ৭৫০ সৌদি রিয়াল আবশ্যিকভাবে সঙ্গে নিতে হবে।সরকারি মাধ্যমের হজ প্যাকেজ আপগ্রেডেশন:অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে মক্কা ও মদিনার বাড়ি বা হোটেলে ২, ৩ ও ৪ সিটের রুম এবং শর্ট প্যাকেজের সুবিধা গ্রহণ করা যাবে।সরকারি মাধ্যমের সাধারণ হজ প্যাকেজ-২ এর বৈশিষ্ট্য:মক্কায় হারাম শরীফের বহিচত্বর থেকে দেড় কিলোমিটারের মধ্যে আবাসন রাখা হবে। মদিনায় মার্কাজিয়া (সেন্ট্রাল এরিয়া) এলাকায় আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে। মিনায় ইয়োলো জোনে (জোন-২) তাঁবুর অবস্থান এবং মিনা-আরাফায় আপগ্রেডেড 'ডি' ক্যাটাগরির সার্ভিস সুবিধা রাখা হবে।মক্কার হোটেল বা বাড়ি হতে বাসযোগে মিনার তাঁবুতে এবং মিনা-আরাফাহ-মুযদালিফা-মিনা ট্রেনযোগে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হবে।অ্যাটাচড বাথসহ মক্কা ও মদিনায় বাড়ি বা হোটেলের প্রতি রুমে সর্বোচ্চ ৬ জনের আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে। বাড়ি বা হোটেলের কক্ষে বা ফ্লোরে রেফ্রিজারেটরের ব্যবস্থা করা হবে। মক্কা, মদিনা ও জেদ্দায় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে ঔষধ ও প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে।৪৬ জন হজযাত্রীর জন্য ১ জন হজ গাইডের ব্যবস্থা করা হবে। প্রত্যেক হজযাত্রীকে খাবার বাবদ ন্যূনতম ৪০ হাজার টাকার সমপরিমাণ সৌদি রিয়াল এবং দমে শোকর (কুরবানি) বাবদ ৭৫০ সৌদি রিয়াল আবশ্যিকভাবে সঙ্গে নিতে হবে।ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ধর্ম মন্ত্রণালয় ব্যবসা করে না। সেবা দিয়ে থাকে।

এ বছর কমছে হজের খরচ

এ বছর হজের জন্য খরচ সবমিলিয়ে ৫০ হাজার টাকার বেশি কমতে পারে বলে ধারণা করছেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। তবে চূড়ান্ত প্যাকেজ ঘোষণা করা হবে আগামীকাল বুধবার। ওই সময় জানা যাবে বিস্তারিত। এর আগে আজ মঙ্গলবার জানা যায়, বুধবার হজ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত নির্বাহী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে। এই সভা থেকেই ২০২৫ সালের হজ প্যাকেজ চূড়ান্ত করা হবে।এবার মক্কার কাছাকাছি একটি প্যাকেজ এবং মক্কা থেকে দূরে এমন দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করা হবে। ধর্ম মন্ত্রণালয় বলছে, যারা মক্কা থেকে দূরে থাকবেন তাদের খরচ বেশি কমবে। তবে যারা মক্কার কাছাকাছি থাকবেন তাদের খরচ কমবে তুলনামূলক কম।২০২৪ সালে সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে সাধারণ প্যাকেজে ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪০ টাকা এবং বিশেষ প্যাকেজে ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৩২০ টাকা খরচ হয়েছিল। আর বেসরকারিভাবে সাধারণ প্যাকেজে ৫ লাখ ৮৯ হাজার ৮০০ টাকা এবং বিশেষ প্যাকেজে ৬ লাখ ৯৯ হাজার ৩০০ টাকা খরচ ছিল।

রোজা শুরুর সম্ভাব্য তারিখ

মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে পবিত্র মাস রমজানের ইতোমধ্যে ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে। এই মাসের অপেক্ষায় থাকেন ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা। হিজরি ক্যালেন্ডার অনুয়ায়ী, শাবানের পরই আসে রমজান মাস, সেই হিসাবে আর চার মাস বাকি আছে। এর মধ্যেই ২০২৫ সালের রমজান শুরুর সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক দেশটির সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। আর সেই হিসাবে বাংলাদেশে ২ মার্চ রোজা শুরু হতে পারে। দ্য ইমেরিটাস অ্যাস্ট্রোনমি সোসাইটি সোমবার (২৮ অক্টোবর) জানায়, ২০২৫ সালের ১ মার্চ দেশটিতে রোজা শুরু হতে পারে। এর আগে আকাশে হিজরি রমজান মাসের চাঁদ দেখা যাবে। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটি জানায়, রমজান মাসের ক্ষণগণনা শুরু হয়ে গেছে, আর মাত্র চার মাস বাকি আছে। এসময় দ্য ইমেরিটাস অ্যাস্ট্রোনমি সোসাইটি রমজান শুরুর সময় নিয়ে পূর্বাভাস দিয়েছে। সোসাইটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, হিজরি জমাদিউল আউয়াল মাসের চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করছে রোজার শুরুর তারিখ। এই মাসের চাঁদ আগামী ৩ নভেম্বর দেখা যেতে পারে। এখন চাঁদ দেখার পরেই নিশ্চিত করা যাবে, রোজা কবে শুরু হবে। দ্য ইমেরিটাস অ্যাস্ট্রোনমি সোসাইটির চেয়ারম্যান ইব্রাহিম আল জারওয়ান গালফ নিউজকে জানান, সম্ভবত আগামী বছরের ১ মার্চ আমিরাতে রমজান শুরু হবে, তবে সবকিছু চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করছে। উল্লেখ্য, সাধারণত সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যে রোজা শুরুর একদিন পর বাংলাদেশে পবিত্র রমজান মাস শুরু হয়। সেই হিসাবে বাংলাদেশে ২ মার্চ রোজা শুরু হতে পারে।

ইসলামের আদর্শ ও চেতনা বিকাশে ইসলামী বইয়ের বিকল্প নেই: ধর্ম উপদেষ্টা

ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, ইসলামের আদর্শ ও চেতনা বিকাশে ইসলামী বইয়ের বিকল্প নেই।আজ বিকালে রাজধানীর বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের পূর্ব সাহানে ইসলামী বইমেলা- ২০২৪ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা) ১৪৪৬ হিজরি উপলক্ষ্যে ইসলামিক ফাউণ্ডেশন এই মেলা আয়োজন করেছে।ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, বই মানুষের চরিত্র ও জীবন গঠনে ভূমিকা রাখে। একটি আদর্শিক জীবন গঠনে ইসলামী বইয়ের ভূমিকা অপরিসীম। সেকুলার আবহ থেকে ইসলামী জীবনধারায় যাতে মানুষ অভ্যস্ত হয়ে ওঠে সেক্ষেত্রে এই বইমেলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এছাড়া, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য এবং অনুবাদ সাহিত্যের ক্ষেত্রেও এ বইমেলা নতুন মাত্রা যোগ করবে।শিক্ষা জীবনের স্মৃতিচারণ করে উপদেষ্টা বলেন, আগেকার পাঠ্যবইয়ে স্বল্প পরিসরে সাহাবায়ে কেরামদের জীবনাদর্শ সংযোজিত ছিলো। কিন্তু বর্তমানে সৃজনশীল প্রকাশক ও সৃষ্টিশীল অনুবাদকের মাধ্যমে বৃহৎ কলেবরে এজাতীয় বই প্রকাশিত হয়েছে এবং পাঠক সেগুলো সংগ্রহ করে জ্ঞানান্বেষণের সুযোগ পাচ্ছে। এটি ইসলামী ও বাংলা অনুবাদ সাহিত্য সমৃদ্ধ হচ্ছে। তিনি আগামীতে বৃহৎ পরিসরে ইসলামী বইমেলা আয়োজনের বিষয়ে প্রকাশকদের আশ্বস্ত করেন।উপদেষ্টা বইমেলা আয়োজনে ক্ষেত্রে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক, পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা এবং বাংলাদেশ মসজিদ মিশনের মহাসচিবের প্রয়াসকে সাধুবাদ জানান।ইসলামিক ফাউণ্ডেশনের মহাপরিচালক মোঃ সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন ধর্মসচিব মুঃ আঃ হামিদ জমাদ্দার। অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ মসজিদ মিশনের মহাসচিব ড. মুহাম্মদ খলিলুর রহমান মাদানী, তামিরুল মিল্লাতের অধ্যক্ষ ড. আবু ইউসুফ খান, আধুনিক প্রকাশনীর মোঃ হাফিজুর রহমান, রাহনুমা প্রকাশনীর মাহমুদুল হাসান তুষার প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।উল্লেখ্য, ২০ দিনব্যাপী এ বইমেলা চলবে। এতে মোট ১৫১টি স্টল অংশ নিয়েছে।