ঢাকা, ২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার
মেনু |||

দেশ প্রেমের অমর কাব্য : তুহিন মাহামুদ

বাঙ্গালি জাতির বড় পরিচয় “তিনি একজন বাঙ্গালি ” আর এই বাঙ্গালির রয়েছে হাজার বছরের ইতিহাস ও ঐতিহ্যে মোড়ানো শাশ্বতকালের এক উন্নত সংস্কৃতি। যে সংস্কৃতির পথ ধরে অহংকার মাখা হৃদয় নিয়ে মাথা উঁচু দাঁড়িয়েছে বিশ্বের দরবারে।

বাঙ্গালি জাতির ওপর বার বার আঘাত এসেছে!অসংখ্যবার এই সংস্কৃতির ওপর অপসংস্কৃতির ধাক্কা লেগেছে!কখনও কখনও রক্তাক্ত আবার কখনও কোনঠাসা হয়েছে। কিন্তু আদর্শচূত হয়নি বরং দিনে দিনে আরও শাণিত তলোয়ারের মত ধারালো চক চক হয়ে উঠছে।

ব্রিটিশ সামাজ্রবাদের আগ্রাসনে অনেকটা শব্দ ভাইরাসে আক্রান্ত হলেও সেটাকে বুকের মধ্যে আটকে রেখে বাঙ্গালির রুপ, রস কাঁদা মাটির মত সংস্কৃতির সাথে মিশিয়ে ভিন্ন মাত্রায় যোগ হয়েছে। সমাদৃত হয়েছে বিশ্ব সংস্কৃতির কোলে। আমরা হয়েছি উন্নত সংস্কৃতির ধারক ও বাহক। যার বহি:প্রকাশ ঘটে প্রবাসের মাটিতে নিজস্ব সংস্কৃতির আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে আমরা যখন বাংলা কথা বলি।

বিশ্বের মধ্যে আমরাই একমাত্র জাতি। যে জাতি তার ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষার জন্য প্রাণ দিতে হয়েছে। এটি ইতিহাস বিরল রক্তের ওপর পা রেখে বাঙ্গালি জাতি ভাষার জন্য লড়াই করেছে এবং জয়ী হয়েছে। মাতৃত্বের টান আর দেশপ্রেমের গভীর ভালোবাসায় জীবনকে তুচ্ছার্থক ভাবে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে সংস্কৃতিকে রক্ষা করেছে।

তবুও বাঙ্গালি জাতি শান্তিতে ঘুমাতে পারেনি!আঘাত এসেছে দেশের ওপর, অস্তিত্ব রক্ষায় আবার রক্তের সাগরে মুক্তির জন্য সাতার কাটতে হয়েছে। জীবন দিতে হয়েছে অসংখ্য নারী-পুরুষ,শিশু-কিশোর আবাল বৃদ্ধ বণিতা সকলকে।

পৃথিবীর ইতিহাসে এমন কোন উল্লেখযোগ্য ঘটনা নেই যে বাঙ্গালি জাতির মত এত রক্ত, এত প্রাণ দিতে হয়েছে। শেয়ালের মত নারীর দেহ লুটেপুটে খেয়েছে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীরা। তবুও বাঙ্গালি জাতি মাথা নিচু করেনি বরং আরও দেশ প্রেমে উজ্জ্বিবিত হয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে প্রতিবাদী রূপে ।

বাঙ্গালি জাতির ইতিহাস বড় নির্মম। ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে সময়ের ভাঁজে জড়িয়ে আছে আন্দোলন ও সংগ্রামের ইতিকথা!এই সংগ্রামের মাধ্যমেই সাফল্য অর্জন করেছে যুগে যুগে!!আমরা তারই পথ ধরে আজকে এখানে এসে দাঁড়িয়েছি।

আমার বড় পরিচয় আমি বাঙ্গালি আমি বাংলাদেশী! বাঙ্গালি হিসেবে গর্ববোধ করি,কেননা আমার রয়েছে হাজার বছরের ইতিহাস ও ঐতিহ্য! আমি বাংলাদেশী আমি বীরত্ব অনুভব। করি, কারন আমার রয়েছে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক রক্তাক্ত ইতিহাস। যে ইতিহাসের গৌরবময় গোড়ায় দাঁড়িয়ে আত্নাংহকারে লাল সবুজের পতাকা উড্ডায়ন করি নির্মল বিশ্বাকাশে।

আমাদের সংস্কৃতির ঊর্বরতায় বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ঘটেছে!সুগম হয়েছে জাতীসত্ত্বা বিকাশের বিস্তৃত পথ!আর তারই চেতনার দীপ্ততায় সমুজ্জ্বল রয়েছে আমাদের সাংস্কৃতিক অঙ্গন। আমরা খু্ঁজে পাই নতুন পথের ঠিকানা। যে পথ আমাদের বাঁচতে শেখায় চেতনাকে জাগিয়ে তোলে উজ্জ্বলিত করে সংকটময় অমানিশার ঘরে।

১৯৭১ সাল ২৫ মার্চের কালো রাত্রিতে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী যে বর্বরোচিত হত্যাকান্ড ঘটায় তা ইতিহাসের বিরল!নীরিহ ঘুমন্ত বাঙ্গালি জাতির ওপর ঝাপিয়ে পরে নির্বিচারে হত্যা করা হয় বাঙ্গালি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের!মেধাশূণ্য কঙ্কাল রাস্ট্রে পরিণত করে বাঙ্গালী জাতিকে নিঃশেষ করতে চেয়েছিলো।

কিন্তু বাংলার মুক্তিকামী দামাল ছেলেরা ঝাপিয়ে পরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ওপর!আর এর নেতৃত্ব যিনি দিয়েছেন তিনি সর্বকালের সর্ব শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এ দেশের সোনার ছেলেরা জীবনের মায়া ত্যাগ করে দেশ উদ্ধারের জন্য যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে।

ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্ত এবং দু’লক্ষ মা বোনের সংভ্রমের বিনিময় অর্জিত হয় আমাদের স্বাধীনতা। বিশ্বের মানচিঁত্রে স্হান পায় স্বাধীন স্বার্বভৌম রাস্ট্র” বাংলাদেশ” । এ দেশ আমার, আপনার আমাদের সকলের, কিন্তু যাদের আত্নত্যাগ আর প্রাণ বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে যে বাংলাদেশের জন্ম, সে বাংলাদেশে বার বার আঘাত এসেছে। তবুও আমরা বিচলিত হইনি। আমাদের সামনে অপার সম্ভবনা রয়েছে! তরুন সমাজ আজ দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে স্ব স্ব অবস্হানে থেকে কর্ম সংস্হান খুলেছে । প্রবাসীরা রেমিটেন্সের মাধ্যমে উল্লেখ যোগ্য ভূমিকা রাখছে । যে যেভাবেই দেখুক আর বলুক দেশে সত্যই অভূতপূর্ব উন্নয়ন ঘটেছে তা অনিস্বীকার্য।

আমাদের দেশের সেনা বাহিনী সত্যিই গর্বের । এরা দেশের গর্বিত সন্তান, তাদের কে উৎসাহিত এবং কার্যকর করার জন্য বঙ্গবন্ধুর তনয়া জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার সাবমেরিন এনেছে । এটি সময়োপযোগী প্রশংসনীয় একটি কার্যকর পদক্ষেপ ।

আমাদের সমাজে একটি প্রবাদ প্রচলিত আছে “ঢাল নেই তলোয়ার নেই নিধিরাম একজন যোদ্ধা” , ঠিক তেমনি আমাদের দেশে নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, সেনাবাহিনী রয়েছে কিন্তু শত্রু মোকাবেলা করার জন্য তাদের হাতে কোন ব্যবস্থা নেই । আজ সাবমেরিন এসেছে আগামিতে আরও উন্নত কিছু আসবে যা বাংলাদেশের স্বার্থরক্ষায় কাজ করবে।

আমাদের দেশ, আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতির পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে এমন কিছু আমরা তা সহ্য করবো না!আমাদের বড় সাহস ও শক্তি আমাদের দেশপ্রেম, মাতৃত্বের টান আর রক্তে ভেজা লাল সবুজের পতাকা ।

লেখক: তুহিন মাহামুদ
মিলান, ইতালি।


ঢাকাওয়াচ/টিআর

সম্পাদকঃ মোঃ শাখাওয়াত হোসেন সজীব
নিবন্ধন নং -১৬৬