ঢাকা, ২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার
মেনু |||

আজ কবি কাজী জহিরুল ইসলামের জন্মদিন

সমকালীন বাংলা সাহিত্যের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কবি কাজী জহিরুল ইসলামের ৫৭ তম জন্মদিন আজ । ১৯৬৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি এই দিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার খাগাতুয়া গ্রামে, মাতুলালয়ে, জন্মগ্রহণ করেন কবি।

কবির শৈশব-কৈশোর কাটে পুরনো ঢাকায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবস্থাপনায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। খুব কম বয়স থেকেই কবিতার ঘোরে আচ্ছন্ন থাকলেও পেশাগত জীবনে তিনি একজন সফল মানুষ। পেশাগতভাবে তিনি জাতিসংঘের একজন আন্তর্জাতিক কর্মকর্তা।

কাজী জহিরুল ইসলামের সাহিত্যে একদিকে যেমন বাংলাদেশের গ্রামীণ জনপদ ও জীবন উঠে এসেছে অন্যদিকে যুক্ত হয়েছে প্রচুর আন্তর্জাতিক অনুষঙ্গ, যা বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে। কবিতা, কথাসাহিত্য ও প্রবন্ধ সাহিত্যের পাশাপাশি তার রচিত ভ্রমণসাহিত্য তরুণ প্রজন্মকে প্রতিনিয়ত স্বপ্ন দেখায় উন্নত জীবনের।

কবি কাজী জহিরুল ইসলামের প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা ৯০ এর ওপরে, এর মধ্যে কবিতাসমগ্র ১,২,৩ সহ মোট ৩৯ টি কবিতার বই। বাংলা কবিতায় তিনি ক্রিয়াপদহীন কবিতার প্রবর্তক। কবিতা ছাড়াও তার প্রবন্ধ এবং ভ্রমণ রচনা ব্যাপকভাবে পাঠক নন্দিত। তার কবিতা উড়িয়া, সার্বিয়ান, আলবেনিয়ান, ইংরেজি, রুশসহ বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে।

কবিতায় বিশেষ অবদানের জন্য কাজী জহিরুল ইসলাম বাংলাদেশ থেকে কবি জসীম উদদীন পুরস্কার, নিউইয়র্ক থেকে ড্রিম ফাউন্ডেশন পুরস্কার, ক্যালিফোর্নিয়া থেকে জেসমিন খান এওয়ার্ড, ভারত থেকে রসমতি সম্মাননা এবং ডালাস থেকে স্বাধীনতা পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।

পুলিৎজার বিজয়ী আমেরিকান কবি রে আর্মান্ট্রাউটের নির্বাচিত কবিতার অনুবাদ করেন তিনি, দ্বিভাষিক এই বইটি যৌথভাবে প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েজলিয়ন ইউনিভার্সিটি প্রেস ও বাংলাদেশের অগ্রদূত অ্যান্ড কোম্পানি। এ ছাড়া তিনি এজরা পাউন্ড ও জালালুদ্দিন রুমির কবিতা অনুবাদ করেন। তার রচিত ‘ক্রিয়াপদহীন ক্রিয়াকলাপ’ গ্রন্থটি ভারত থেকে বাংলায় ও পরে উড়িয়া ভাষায় প্রকাশিত হয়।

বাংলা কবিতার ছন্দ-প্রকরণের ওপর তার বিষ্ময়কর নিয়ন্ত্রণ তাকে একজন প্রকরণ-বিশারদে পরিণত করেছে। বহু জ্যেষ্ঠ কবিও তার কাছে ছন্দ শেখার আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি মাত্রাবৃত্ত ও স্বরবৃত্ত ছন্দে যথাক্রমে ‘ভোরের হাওয়া’ ও ‘শেষ বিকেলের গান’ গ্রন্থ দুটি রচনা করে বাঙালী কবি ও আবৃত্তিশিল্পীদের উপকার করেছেন। এ-বছর বাংলা একাডেমির বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে তার ‘ভ্রমণ সংগ্রহ’, রয়েল সাইজের প্রায় ১১০০ পৃষ্ঠার এই গ্রন্থে তার সব ভ্রমণরচনা একসঙ্গে পাওয়া যাচ্ছে।

এ ছাড়া অনন্যা বের করেছে সাড়ে তিনশ পৃষ্ঠার প্রবন্ধের বই ‘হিলসাইডে শিল্পের আড্ডা’, ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ বেশ করেছে ‘হেশেলের বিশ্বভ্রমণ’ ও ‘রুমির রুবাইয়াত’। সাত ভাষাশহীদকে নিয়ে লেখা গল্পের বই ‘উত্থানপর্বের গল্প’ গ্রন্থ রচনার জন্য বহুমাত্রিক লেখক হাসনাত আবদুল হাই তাকে ‘ভাষাশিল্পী’ উপাধিতে ভূষিত করেন।

কাজী জহিরুল ইসলাম বর্তমানে জাতিসংঘের কর্মসূত্রে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে সপরিবারে বসবাস করছেন। তার স্ত্রী মুক্তি জহির জাতিসংঘ সদর দফতরের একজন এইচআর স্পেশ্যালিস্ট। পুত্র কাজী আবরার জহির একটি আমেরিকান কোম্পানির সিইও, কন্যা কাজী সারাফ জল স্কুলের ছাত্রী। কবির পিতা কাজী মঙ্গল মিয়া এবং মাতা সোফিয়া কাজী ঢাকায় বসবাস করেন।


ঢাকাওয়াচ/টিআর

সম্পাদকঃ মোঃ শাখাওয়াত হোসেন সজীব
নিবন্ধন নং -১৬৬