সোহরাওয়ার্দী কলেজে ৩০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি


News Defalt/college-4-20241125011253.jpg

সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে ব্যাপক হামলা, ভাঙচুর এবং লুটপাটের ঘটনায় প্রায় ৩০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কাকলী মুখোপাধ্যায়। রোববার (২৪ নভেম্বর) রাতে দিনভর সহিংসতার প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব তথ্য জানিয়েছেন।

Your Image

অধ্যক্ষ বলেন, রোববার দুপুর সোয়া ১টার দিকে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে ঢাবি অধিভুক্ত সাত কলেজের প্রথম বর্ষ সম্মান সমাপনী পরীক্ষা চলছিল। সেসময় অতর্কিত যাত্রাবাড়ী ডেমরা রোডে অবস্থিত ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ (ডিএমআরসি) এবং অন্যান্য কলেজের সহস্রাধিক ছাত্রের একটি দল প্রধান ফটক ভেঙে কলেজের ছাত্র-শিক্ষক ও কর্মচারীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমি বারবার পুলিশ প্রশাসন ও সেনাবাহিনীকে ফোন দিয়ে সন্তোষজনক কোনো সাড়া পাইনি। বিষয়টি মাউশির ডিজি, মন্ত্রণালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনো সহায়তা পাইনি।

তিনি আরও বলেন, এ সময় ছাত্ররা কলেজ ভাঙচুর করে এবং কেন্দ্রে পরীক্ষারত পরীক্ষার্থীদেরকে আহত করে বের করে দেয়। তারা কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থিত শিক্ষকদের গাড়ি, মোটরসাইকেল, কলেজের মাইক্রোবাস ভাঙচুর করে এবং কলেজের ১৭টি বিভাগের প্রতিটিতে হামলা চালায়। সকল বিভাগ ও শ্রেণিকক্ষের আসবাবপত্র, ফ্যান, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, প্রিন্টার এবং অফিস ও প্রতিটি বিভাগের আলমারি ভেঙে নগদ অর্থ লুট করে। প্রতিটি বিভাগের বুক সেলফ, অফিসে রক্ষিত শিক্ষার্থীদের মার্কশিট, সনদপত্র, ভর্তি ও ফরম পূরণের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং বিভাগের বিভিন্ন বই-পুস্তক ও অন্যান্য মালামাল তছনছ করে এবং আগুন ধরিয়ে দেয়। সেসময় ডিএমআরসির অধ্যক্ষকে বারবার বিষয়টি অবগত করার জন্য ফোন দিলেও তিনি ফোন ধরেননি।

অধ্যক্ষ বলেন, আগে থেকে অবগত থাকা সত্ত্বেও তিনি (ডিএমআরসির অধ্যক্ষ) একবারের জন্যও আমাদেরকে নিজে থেকে অথবা তার কোনো প্রতিনিধিকে দিয়ে খোঁজ নেওয়ারও প্রয়োজনবোধ করেননি। সোহরাওয়ার্দী কলেজের শান্তিপ্রিয় শিক্ষার্থীরা অঙ্গীকারবদ্ধ যে, তারা কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালাবে না। যদি কোনো সন্ত্রাসী এই সুযোগের অপব্যবহার করে তবে এর জন্য সোহরাওয়ার্দী কলেজ প্রশাসন, শিক্ষক ও কর্মচারীবৃন্দ এবং ছাত্র-ছাত্রীরা দায়ী থাকবে না।

এ সময় তিনি ডিএমআরসির অধ্যক্ষ এবং প্রশাসনের কাছ থেকে কলেজের এই অপূরণীয় ক্ষয়ক্ষতি ও ধ্বংসলীলার ক্ষতিপূরণ ও দায়ী ছাত্রদের চিহ্নিত করে বিচার ও জবাবদিহিতার দাবি জানান। সেই সঙ্গে কলেজের শিক্ষক, ছাত্র প্রতিনিধি, পুলিশের ডিসি (লালবাগ), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ডিএমআরসির অধ্যক্ষ প্রতিনিধি নিয়ে একটি জরুরি আলোচনায় বসার দাবি জানান।

হামলাকারী শিক্ষার্থীদের আচরণ মেনে নেওয়ার মতো নয় উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আমাদের কলেজের এক শিক্ষকের গাড়ি ভেঙে তারা তাণ্ডব উল্লাসে মেতেছিল। এটি অশোভনীয় এবং মেনে নেওয়ার মতো নয়। কলেজ রক্ষা করতে না পারায় আমার যদি কোনো ব্যর্থতা থাকে সেটি সম্পূর্ণ আমার ঘাড়ে নিচ্ছি। তার জন্য যেকোনো ধরনের শাস্তি আমি মাথা পেতে নেব। এটি অনেক পুরোনো একটি কলেজ। যেখানে অসংখ্য আসবাবপত্র এবং মূল্যবান দলিলাদি ছিল। এই মুহূর্তে ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তথ্য দেওয়া সম্ভব নয়। তবে আনুমানিক ৩০ কোটি টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে।

একইসঙ্গে আগামীকালের মধ্যে (২৫ নভেম্বর) উদ্ভূত সংকটের সমাধান অতীব জরুরি বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×