হাসিনার পুনর্বাসনের কথা যারা বলে তারা আরেক ধরনের ক্ষমতা পিপাসু


2024-Novemer 18/Sarjis Alam Bori.jpg

জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেছেন, ‘খুনি হাসিনা ও তার দোসরদের পুনর্বাসনের প্রশ্নে, তাদের পক্ষে কারো সাফাই গাওয়ার প্রশ্নই আসে না। আমাদের জীবনের বিনিময়ে হলেও আমরা এটা করতে দেব না।’

Your Image

শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকালে বরিশাল জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আন্দোলনে বরিশাল বিভাগের শহীদ পরিবারের সদস্যদের খোঁজ নেয়ার সময় সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

সারজিস বলেন, ‘খুনি হাসিনা পুরো জীবন শুধু নিজের পরিবারের গান গাইতে গাইতে ক্ষমতাটাকে অষ্টেপৃষ্ঠে ধরে রেখেছিল। যেখানে গেছেন সেখানেই তার পরিবার নিয়ে কান্নাকাটি করেছে। তার পরিবারের ১৮ জন মানুষ, আর এ দুই হাজার জন মানুষ না! এদেরকে খুন করার সময় তার বুকটা একটু কাঁপেনি। আজ আমার যে ভাই শহীদ হয়েছে, যে বোন শহীদ হয়েছে, সেই শহীদ পরিবারের বাবা-মা ভাই বোনকে আমরা কীভাবে সান্ত্বনা দেব?’

তিনি আরো বলেন, ‘খুনি হাসিনা পুরো জীবন আজ থেকে ৫০ বছর আগের ১৯৭৫ সালের গল্প বলে ক্ষমতাকে সব সময় সুদৃঢ় করার চেষ্টা করেছেন। এখন তিনি দুই হাজার মানুষকে কীভাবে খুন করলেন। তিনি যদি দরদ বোঝেন তাহলে এ খুনগুলো কীভাবে করতে পারেন? যে রাজনৈতিক প্লাটফর্মকে সামনে রেখে তারা এ কাজগুলো করেছে তাদের কোন অধিকারই নেই এ বাংলাদেশে চলার।’

সারজিস বলেন, ‘সবার কথা এখানে বলতে পারছি না। কিন্তু সবার আলাদা কষ্ট-ব্যথা আছে, এগুলো বলার মত না। আবার সবাই বলতেও পারে না, সবাই প্রকাশ করতে পারে না। আমার বহু বোন আছে, যাদের বিয়ে হওয়ার কয়েক দিন পর স্বামী হারিয়েছে, তাদের পুরো জীবন কীভাবে কাটবে? যে নবজাতক পৃথিবীতে আসার আগে জানতই না সে তার বাবার মুখ কোন দিন দেখবে না, সে জানতই না কোনদিন তার বাবা তাকে কোলে নিতে পারবে না। সে কাউকে বাবা বলে ডাকতে পারবে না, ওর কি দোষ ছিল?’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা আমাদের জায়গা থেকে সব ভুলে যাই, ওই ১৬ বছর ভুলে গেছি, আমরা ওই ৩৬ দিন ভুলে গেছি, এখন আমরা নতুন কিছু নিয়ে আছি। কিন্তু এ জবাব খুনি হাসিনাকে দিতে হবে, খুনি হাসিনার দোসরদের জবাব দিতে হবে। আর এ বিষয়গুলোর সমাধান না হওয়া পর্যন্ত একটি যৌক্তিক বিচার না হওয়া পর্যন্ত এ বাংলাদেশে তাদের পুনর্বাসনের কথা যারা বলে আমরা মনে করি, খুনি হাসিনার মত তারা আরেক ধরনের ক্ষমতা পিপাসু লোভী। এ বাংলাদেশে তাদের বিচার হওয়ার প্রশ্নে তাদের একটা কথা হওয়া উচিত- তাদেরকে পুনর্বাসনের প্রশ্নে তাদের পক্ষে কারো সাফাই গাওয়ার প্রশ্নই আসে না। আমরা এটা আমাদের জীবনের বিনিময়ে হলেও করতে দেব না।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম এ সমন্বয়ক বলেন, ‘সবার আলাদা আলাদা গল্প আছে, কষ্ট আছে, ব্যথা আছে। যার চলে গেছে সেই বুঝে, আমরা অনেকে কিছু করতে পারি, অর্থ সহযোগিতা করতে পারি, চাকরির ব্যবস্থা করতে পারি, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারি, সম্মানী ভাতা দিতে পারলেও ওই মানুষটাকে কোনো দিনও ফিরিয়ে দেয়া সম্ভব না, এ ক্ষত কোন দিনও পূরণ করা সম্ভব না। খুনি হাসিনা ও তাদের দোসদেরকে এর জবাব দিতে হবে, ইশরাত-আব্দুল্লাহ-সামিউলরা কাকে বাবা বলে ডাকবে, কাদের কোলে বাবা বলে উঠবে, কারা দায়িত্ব নিয়ে তাদেরকে বাবার মত করে পুরো জীবন আগলে ধরে রাখবে? শিশু সন্তানেরা তার শহীদ বাবার রক্তাক্ত ভিডিও গুলো দেখছে। কিন্তু, এ বয়সে তাদের কি এগুলো করার কথা ছিল? এ প্রশ্নের উত্তর তাদের দিতে হবে।’

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×