ইসকন নিষিদ্ধের দাবি; আইনজীবীদের কর্মবিরতি-বিক্ষোভে অচল চট্টগ্রাম আদালত
- চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৩:৩৬ পিএম, ২৮ নভেম্বর ২০২৪
সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী অনুসারীদের কর্তৃক আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ খুনের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবারও (২৮ নভেম্বর) উত্তাল চট্টগ্রামের আদালত পাড়া। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) বেলা ১১টা থেকে আইনজীবীদের বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) দুপুর একটার দিকে আইনজীবীদের মিছিল আদালত পাড়ার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় আইনজীবী সাইফুল হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইসকন নিষিদ্ধের দাবি তোলা হয়। একই সঙ্গে সংগঠনটির বিরুদ্ধে উগ্র কার্যকলাপে অভিযোগ তুলে নানা স্লোগান দেয় আইনজীবীরা।
এর পূর্বে, আইনজীবীদের সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘ঘটনার দিন পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সকাল থেকে নীরব ছিল। তাদের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগ নিয়ে ইসকনের অনুসারীরা আদালতে জড়ো হয়। এক পর্যায়ে তারা আদালত পাড়ায় মসজিদসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা ও কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। এর প্রতিবাদ জানালে আইনজীবীদের ওপর চড়াও হয় ইসকনের অনুসারীরা। এক পর্যায়ে সাইফুলকে নির্মমভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে খুন করা হয়।’
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনারকে আল্টিমেটাম দিয়ে আইনজীবী নেতারা বলেন, ‘ঘটনার পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা নিলে এত বড় ঘটনা হত না। এটি পুলিশের ব্যর্থতা। দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনজীবী সাইফুলের খুনিদের গ্রেফতার করা না হলে আপনি পদে থাকতে পারবেন না।’
এর পূর্বে, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির ডাকে বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) দ্বিতীয় দিনের মত কর্মবিরতি পালিত হচ্ছে। এ দিন আদালতে কোন প্রকার কার্যক্রম পরিচালিত হয়নি। কোন আদালতে বিচারক এজলাসে বসেননি। এর আগে বুধবারও (২৭ নভেম্বর) একই কর্মসূচি পালিত হয়েছিল।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিকালে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যাওয়ার সময় শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে পুলিশের বিশেষায়িত গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করে। পর দিন মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) কোতোয়ালি থানায় হওয়া রাষ্ট্রদোহ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে চট্টগ্রাম মহানগর ষষ্ঠ কাজী শরীফুল ইসলামের আদালতে হাজির করা হয় চিন্ময় কৃষ্ণকে। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এটি নিয়ে বিক্ষোভ করেন ইসকনের অনুসারীরা। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় বিক্ষোভকারীরা। দুপুরের পর বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে আদালত এলাকায় মসজিদ-দোকানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়। এ সময় বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করা হয়। এক পর্যায়ে বিকালে আদালতের প্রধান ফটকের বিপরীতে রঙ্গম কনভেনশন হলের গলিতে এক দল ইসকনের অনুসারীর হাতে খুন হন সাইফুল ইসলাম। বুধবার (২৭ নভেম্বর) চট্টগ্রাম শহরে দুই দফা ও লোহাগাড়া উপজেলায় দুই দফা জানাজা শেষে উপজেলার চুনতি ইউনিয়নের ফারেঙ্গা গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে সাইফুলকে দাফন করা হয়।