সাংবাদিক অসুস্থতার কথা বলে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে
- ফরিদপুর প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৫:০৮ পিএম, ৩০ নভেম্বর ২০২৪
সাংবাদিক অসুস্থতার কথা বলে ৮৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছ থেকে টাকা তুলে আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রওনক আরা বেগমের বিরুদ্ধে। তবে অসুস্থ ওই সাংবাদিকের পরিচয় জানেন না কেউ। এমনকি শিক্ষা কর্মকর্তাও তাকে চিনেন না বলে দাবি করেছেন। শিক্ষা কর্মকর্তার দাবি, তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে সমালোচনা চলছে।
একাধিক শিক্ষকের অভিযোগ, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রওনক আরা বেগম যোগদানের পর থেকে কখনো শিক্ষকদের আত্মীয়-স্বজন আবার কখনো সাংবাদিক অসুস্থতাসহ নানা অজুহাতে সাধারণ শিক্ষকদের কাছ থেকে অর্থ উত্তোলন করে আসছেন। পরে সেই অর্থ তিনি নিজেই আত্মসাৎ করেন। গত ১৩ নভেম্বর শিক্ষা অফিসের সাধারণ সভায় স্থানীয় এক সাংবাদিকের অসুস্থতার নাম ভাঙিয়ে উপজেলার ৮৫টি বিদ্যালয় থেকে অন্তত ৫০ হাজার টাকা তোলেন।
টাকা দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে শিক্ষকরা বলেন, শিক্ষা অফিসার আমাদের বলেছেন এক সাংবাদিক অসুস্থ তাকে সহযোগিতা করতে হবে। তাই আমরা উপজেলার ৮৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কর্মরত মোট ৫৫৬ জন শিক্ষক সহযোগিতা করেছি। প্রত্যেক স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা ২০০ ও সহকারী শিক্ষকের ১০০ টাকা করে দিয়েছি। তবে উত্তোলিত টাকা কোন অসুস্থ সাংবাদিককে তিনি দিয়েছেন তার সঠিক পরিচয় দেননি শিক্ষা কর্মকর্তা।
একদিকে সাংবাদিকদের নাম ভাঙিয়ে টাকা উত্তোলনের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা। নগরকান্দা প্রেসক্লাবের সভাপতি শওকত আলী শরীফ বলেন, অসুস্থ সাংবাদিকের নামে শিক্ষা অফিসারের নিকট কেউ সহযোগিতা চায় তাহলে আমাদের সংগঠন আছে উনি সংগঠনে জানাতেও পারতেন। তাছাড়া আবু তাহের নামে নগরকান্দায় কোনো সাংবাদিক তো নেই। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
নগরকান্দা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রওনক আরা বেগম বলেন, আবু তাহের নামে এক সাংবাদিক আমাকে ফোন করে বলে আমি অসুস্থ আমাকে কিছু সহযোগিতা করেন। তাই আমি টাকা উত্তোলন করে ওই সাংবাদিকের বিকাশ নম্বরে পাঠিয়ে দিয়েছি। তবে ওই সাংবাদিককে আমি কখনো দেখিনি এবং চিনিও না। এখন ওই নম্বরে ফোন দিয়েছি, তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। জানতে পারি আবু তাহের নামে নগরকান্দায় কোন সাংবাদিকই নেই। তাহলে আমি প্রতারণার স্বীকার হয়েছি।
নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কাফী বিন কবির বলেন, শিক্ষা কর্মকর্তা উদ্দেশ্য সৎ ছিল বলে আমার ধারনা। তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে আমাকে জানিয়েছেন। তবে তিনি যাচাই-বাছাই করে টাকাটা দিলে ভালো হতো। যে নম্বরে টাকা পাঠিয়েছেন, ওই নম্বরটির বিরুদ্ধে থানায় জিডি করা হয়েছে। আমরা প্রতারককে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।