গন্তব্য ছিল ইতালি, লিবিয়ায় নিয়ে ঝুলিয়ে রড দিয়ে মারার অভিযোগ
- হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৯:৪০ পিএম, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪
ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় এক যুবককে আটকে রাখা হয়েছে। তার পরিবারের কাছ থেকে ধাপে ধাপে ৪৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি চক্র। আরও ৩০ লাখ টাকা চেয়ে নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে চক্রটি। নিরুপায় হয়ে ছেলেকে ফেরত চেয়ে হবিগঞ্জ প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে পরিবার।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) রাত সাড়ে নয়টায় হবিগঞ্জ প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনটি করেন ভুক্তভোগী যুবকের মা মোছা. শাহেদা খাতুন। তিনি লাখাই উপজেলার করাব গ্রামের বাসিন্দা। তার ছেলে কাঞ্চনকে লিবিয়ায় নির্যাতন করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে ছেলেকে ফেরত পাওয়ার আকুতি জানিয়েছেন তিনি।
শাহেদা খাতুন জানান, ছেলেকে ইতালি পাঠাবেন বলে বছরখানেক আগে সদর উপজেলার রিচি গ্রামের শানু মিয়ার ছেলে ছালামিন মিয়ার সঙ্গে ১৫ লাখ টাকায় চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী তিনি রিচি গ্রামের মৃত সুন্দর আলীর ছেলে শানু মিয়া, কদর আলীর ছেলে মো. সিজিল মিয়া ও শানু মিয়ার স্ত্রী রোকিয়া বেগমের কাছে ১৫ লাখ টাকা দেন। কিছু দিন পর কাঞ্চনকে লিবিয়া নেয় ছালামিন মিয়া। লিবিয়া থেকে ‘গেইমে’র (অবৈধভাবে সমুদ্র যাত্রা) মাধ্যমে কাঞ্চনকে ইতালি পাঠানোর জন্য দশ লাখ টাকা চায়। বিভিন্নজনের কাছ থেকে ঋণ করে কাঞ্চনের মা ওই টাকা দেন। টাকা দেওয়ার পরও করা হয় নির্যাতন। প্রায় দুই মাস পর মায়ের কাছে ভিডিও কলে নির্যাতনের দৃশ্য দেখিয়ে আরও ২০ লাখ টাকা চান ছালামিন। না হলে কাঞ্চনকে মেরে ফেলবে বলে জানায়। এই ভিডিও দেখে বাড়ি-ঘর বিক্রি করে শানু মিয়া, সিজিল মিয়া ও রোকিয়ার কাছে ওই টাকা দেন মা। কিছু দিন যাওয়ার পর ছালামিন ও তার লোকজন লিবিয়াতে কাঞ্চনের ওপর ফের নির্যাতন চালায়।
সংবাদ সম্মেলনে শাহেদা খাতুন অভিযোগ করেন, গেল মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সন্ধ্যা ছয়টায় ভিডিও কলে ফোন দেয় দালালরা। এ সময় ৩-৪জন লোক কাঞ্চনকে বেঁধে ঝুলিয়ে রড দিয়ে মারপিট করে। আরও ৩০ লাখ টাকা দেওয়ার জন্য বলে। টাকা না দিলে ছেলেকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে মাকেও হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।
এ নিয়ে অভিযুক্ত শানু মিয়া বলেন, ‘যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সত্য নয়। আমার ছেলে লিবিয়াপ্রবাসী ছালামিন মিয়ার মাধ্যমে টাঙ্গাইলের এক দালের সঙ্গে ওদের চুক্তি করানো হয়। চুক্তি অনুযায়ী তাকে তিন বার গেইম দেওয়া হয়েছে। তবে, বার বার সে ধরা খেয়েছে। এ কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আমরা ওই পরিবারের কাছ থেকে কোন টাকা নেইনি। সব টাকা ওই দালালকে দেওয়া হয়েছে।’
এ নিয়ে হবিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর কবির বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’