ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া রোধে চসিকের জনসচেতনতামূলক র্যালি ও লিফলেট বিতরণ
- চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৫:১৪ পিএম, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪
ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধিই সবচেয়ে কার্যকর উপায় বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র শাহাদাত হোসেন।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) চসিকের স্বাস্থ্য বিভাগ আয়োজিত ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া প্রতিরোধে জনসচেতনতামূলক র্যালি ও লিফলেট বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।
র্যালিটি মেমন হাসপাতাল থেকে শুরু হয়ে সিটির বিভিন্ন অংশ প্রদক্ষিণ করে জিপিওর কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।
মশা নিধনে চসিক নিয়মিত কার্যক্রম চালাচ্ছে জানিয়ে শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘প্রতিটি ওয়ার্ডে মশা নিধন কার্যক্রম তদারকি করা হচ্ছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে এলাকাবাসীকেও সচেতন হতে হবে। ময়লা জমে থাকা বা পানি জমে থাকার বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধান করা জরুরি। আমাদের প্রচেষ্টা একা যথেষ্ট নয়। স্থানীয় জনগণকে সিটি করপোরেশনের সঙ্গে সহযোগিতা করতে হবে। এভাবেই আমরা ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া থেকে মুক্তি পেতে পারি।’
‘আমরা নিয়মিত মনিটরিং করছি। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে রাজনৈতিক নেতাকর্মী, মহল্লা কমিটি ও স্থানীয়দের বলেছি, পরিচ্ছন্নতা সুপারভাইজার ও পরিচ্ছন্ন কর্মীরা ঠিকমত কাজ করছে কিনা, তা দেখবেন। নিজের শহর হিসেবে কিছু দায়িত্ব আপনারাও নেন। যেখানেই মনে করবেন ময়লা আবর্জনা আছে বা নালা-নর্দমা অপরিচ্ছন্ন আছে, সেখানে প্রতিটি ওয়ার্ডে সুপারভাইজারদের সরাসরি ফোন করবেন। যদি সাড়া না দেয়, সেই ব্যবস্থা আমরা করব।’
জ্বর দেখা দিলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়ে মেয়র বলেন, ‘রোগ এক বার হয়ে গেলে তো চিকিৎসা নিতে হয় এবং কেউ শক সিনড্রোমে চলে গেলে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। কারো লক্ষণ থাকলে অবহেলা না করে ডেঙ্গু সেন্টারে আসতে পারে, আমাদের মেমন-২ হাসপাতালে। সেখানে আমরা ডেঙ্গুর এন্টিজেন টেস্ট করে দিই। সেখানে আমরা রোগীও রাখি।’
‘গতকাল একজন শিশু মারা গেছে। ৩-৪ দিন ধরে জ্বর নিয়ে ছিল। শিশুটির অভিবাবকরা অবহেলা করে হাসপাতালে যায়নি। পরবর্তী যখন খুব সিরিয়াস তখন গিয়েছে। ২-৩ দিনের অধিক জ্বর থাকলে, কমপক্ষে একজন ডাক্তারের সাথে কথা বলা উচিত। ডেঙ্গুর যে ভ্যারিয়েন্ট এখন, কসমোপলিটন যে ভ্যারিয়েন্ট আছে, সেটার কারণে এবার রোগী বেশি।ডেঙ্গু নিয়ে আমাদের সতর্কতা বজায় রাখতে হবে। আমাদের যে প্রচার সেটা চলতে থাকবে। যদি সচেতনতা বৃদ্ধি করতে পারি ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া থেকে মানুষকে রক্ষা করতে পারব।’
শাহাদাত হোসেন জানান, মশা নিধন কার্যক্রম আরও জোরদার করা হয়েছে এবং প্রতি সপ্তাহে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হচ্ছে।’
তিনি জনগণের প্রতি আহ্বান জানান, নিজেদের ও আশপাশের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখুন। জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণই ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া থেকে মুক্তির পথ।’
মেয়র আরও জানান, চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গু প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা গেলে দ্রুত চিকিৎসা কার্যক্রম নেয়া সম্ভব।’
তিনি বলেন, ‘চিকুনগুনিয়ার লক্ষণ হিসেবে জয়েন্টে ব্যথা হয়, আর ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে শরীরের মাংসপেশিতে তীব্র ব্যথা এবং র্যাশ দেখা দিতে পারে। এ লক্ষণগুলোর ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া জরুরি।’
জনসচেতনতা সভায় শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘রোগ শনাক্তের প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা শুরু না করলে পরিস্থিতি জটিল হতে পারে। আমরা সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি, জ্বর দুই-তিন দিনের বেশি স্থায়ী হলে অবহেলা না করে আমাদের ডেঙ্গু সেন্টারে এসে পরীক্ষা করান।’
‘চসিক ইতোমধ্যে ডেঙ্গু রোগ শনাক্তকরণ ও চিকিৎসার জন্য একটি বিশেষ সেন্টার চালু করেছে। সেন্টারে প্রয়োজনীয় এন্টিজেন পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে এবং সিরিয়াস কেসগুলোতে হসপিটালাইজ করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এই উদ্যোগ জনগণকে সহজেই প্রাথমিক চিকিৎসা নিতে সাহায্য করবে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার মো. ইমাম হোসেন রানা, ডাক্তার এসএম সরোয়ার আলম, মেয়রের একান্ত সহকারী মারুফুল হক চৌধুরী মারুফ।