মোহাম্মদপুরে গাঁজাসহ চার মাদককারবারি গ্রেপ্তার
রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে ২৪ কেজি গাঁজাসহ চার মাদককারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ওয়ারী বিভাগ। গ্রেপ্তার চারজন হলেন মো. সোহেল মিয়া (২০), মো. জীবন হোসেন (২১), মো. মুন্না হোসেন (২১) ও ওয়াসিম (৪২)। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মোহাম্মদপুরের গজনবী রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ডিবি ওয়ারী বিভাগ সূত্রের বরাত দিয়ে তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার (১১ ডিসেম্বর) মোহাম্মদপুরের গজনবী রোডের কলেজ গেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে সোহেল, জীবন, মুন্না ও ওয়াসিম নামে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২৪ কেজি গাঁজা জব্দ করা হয়। জব্দ করা গাঁজার অনুমানিক মূল্য তিন লাখ ৬০ হাজার টাকা। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার চারজন ও পলাতক একজনসহ মোট পাঁচজনের বিরুদ্ধে ডিএমপির মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আসামিরা কুমিল্লা জেলার পলাতক এক ব্যক্তির কাছ থেকে জব্দ করা গাঁজা সংগ্রহ করে বিক্রির জন্য গজনবী রোডের কলেজ গেট এলাকায় অবস্থান করছিল। তারা কুমিল্লা এলাকা থেকে অবৈধ গাঁজা সংগ্রহ করে ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করে থাকেন। আসামিদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। মামলার পলাতক অপর আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
হাতীবান্ধা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি গ্রেফতার
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহাবুব কামাল খান সুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে তাকে হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদের ভিতর থেকে গ্রেফতার করে হাতীবান্ধা থানা পুলিশ। মাহাবুব কামাল খান সুজন ওই ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য আলম খা’র ছেলে। তার বাড়ি পূর্ব ফকিরপাড়া গ্রামে। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ জুলাই রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে হামলা হয়। ওই ঘটনায় কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে এবং শতাধিক ছাত্র আহত হয়। এ ঘটনায় মামুনুর রশিদ মামুন নামে এক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য রংপুর কোতয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন গত ১৩ নভেম্বর। মামলায় রংপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক হোসেন বাবলুসহ ১৮১ জনকে আসামি করা হয়। ওই মামলার ৮৬নং আসামি হলেন মাহাবুব কামাল খান সুজন। হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহামুদুন-নবী এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশি তরুণ-তরুণীকে ফেরত দিল বিএসএফ
ভারতে অনুপ্রবেশ করে আটক হওয়া বাংলাদেশি তরুণ-তরুণীকে ফেরত দিয়েছে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যরা। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাদের ফেরত দেওয়া হয়। আটকরা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ গ্রামের বিনন্দ দাশের ছেলে মৃদুল দাস (১৯) ও অর্জুন দাসের মেয়ে রিমু দাস (২৫)। তাদের সঙ্গে দুইটি শিশুও ছিল। বিজিবি জানায়, ওই তরুণ-তরুণী গত মঙ্গলবার গভীর রাতে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় ধর্মঘর সীমান্তের মোহনপুর এলাকা দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশ করেন। ভারতের অভ্যন্তরে যাওয়ার পর সে দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) তাদের আটক করে। পরে বুধবার বিকেলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ধর্মঘর সীমান্ত ফাঁড়ির নায়েব সুবেদার আবদুর রউফ ও বিএসএফ ক্যাম্পের এসআই প্রভিন কুমারের নেতৃত্বে দুই বাহিনীর পতাকা বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে বিএসএফ আটক দুইজনকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে বলে ২৫-বিজিবি সরাইল ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল ফারাহ্ মোহাম্মদ ইমতিয়াজ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মাধবপুর থানায় মামলা দায়েরের পর আটক দুইজনকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। মাধবপুর থানা পুলিশ জানিয়েছে, আটক দুইজনের সঙ্গে থাকা একটি শিশুকে তার পরিবারের সদস্যরা নিয়ে গেছেন। অপর শিশু মায়ের সঙ্গে কারাগারে থাকবে।
ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ
ঘন কুয়াশার কারণে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়েছে। এছাড়া আরিচা-কাজিরহাট ও ধাওয়াপাড়া-নাজিরগঞ্জ রুটেও বন্ধ আছে ফেরি চলাচল। এর ফলে মাঝ নদীতে আটকা পড়েছে ছোট-বড় চারটি ফেরি। ফেরি বন্ধের কারণে এসব ঘাটে তিন শতাধিক যানবাহন নদী পারের অপেক্ষায় রয়েছে। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) রাত ৩টা থেকে ওই তিন রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করা হয়। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন ফেরিতে যাতায়াতকারী যাত্রী ও যানবাহন শ্রমিকেরা। ঘাট কর্তৃপক্ষ জানায়, ঘন কুয়াশার কারণে বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা থেকেই তিনটি নৌরুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছিল। রাত তিনটার দিকে কুয়াশার মাত্রা তীব্র থেকে তীব্র আকার ধারণ করতে থাকে। এতে ফেরি চলাচলের চ্যানেলের বিকনবাতি ও মার্কিং পয়েন্ট কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। তাই দুর্ঘটনা এড়াতে রাত তিনটা থেকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথের ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। দুটি রো-রো ফেরি- শাহ পরান ও এনায়েতপুরী পদ্মা নদীর মাঝে নোঙর করে আছে। এছাড়া চারটি ফেরি- বনলতা, বীর শ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান, কেরামত আলী ও গৌরী পাটুরিয়া ঘাটে এবং ৬টি ফেরি-বাইগার, বীর শ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর, কুমিল্লা, ভাষা শহীদ বরকত, হাসনাহেনা ও ডা. গোলাম মাওলা দৌলতদিয়া ঘাটে পন্টুনের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে। একই কারণে রাত পৌনে ১২টা থেকে আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে ফেরি বন্ধ আছে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা আঞ্চলিক কাযার্লয়ের উপমহাব্যবস্থাপক মো. নাসির মাহমুদ চৌধুরী বলেন, কুয়াশার কারণে গতকাল রাত ১১টা ৫০ মিনিট থেকে আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। দুটি ফেরি- 'বীর শ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান' ও 'কিষাণী' যাত্রী ও যানবাহন নিয়ে যমুনা নদীর মাঝখানে নোঙর করে রয়েছে। চারটি ফেরি- খানজাহান আলী, শাহ আলী, চিত্রা ও ধানসিড়ি আরিচা ঘাটে নোঙর করা আছে। বিআইডব্লিউটিসির কাঁঠালবাড়ি ঘাটের ব্যবস্থাপক আব্দুস সালাম মিয়া জানান, তীব্র কুয়াশার কারণে দুর্ঘটনা এড়াতে ফরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। কুয়াশার মাত্রা কমে গেলে ফেরি চলাচল ফের স্বাভাবিক হবে। প্রতিবছর শীতের সময় ঘন কুয়াশার কারণে এসব নৌরুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হয়। এবার শীতের মৌসুম শুরুর আগেই ঘন কুয়াশা পড়তে শুরু করেছে। গত তিন দিন ধরে সন্ধ্যার পরপরই পদ্মা-যমুনা অববাহিকায় কুয়াশা থাকছে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কুয়াশার ঘনত্বও বাড়তে থাকে। এসময় নৌপথ দৃষ্টি সীমার বাইরে চলে যায় এবং ফেরি চলাচল ঝুঁকিপূ্র্ণ হয়ে পড়ছে। ফলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকায় কর্তৃপক্ষ ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয়।
'আ.লীগ ফিরবে' মন্তব্য করার অভিযোগে ইউএনওকে প্রত্যাহারের নির্দেশ
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মামুনের (ইউএনও) বিরুদ্ধে ‘আওয়ামী লীগ উইল বি কাম ব্যাক, টুডে অর টুমোরো’ বলে মন্তব্য করার অভিযোগ তুলেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। আজ বুধবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি এবং জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্যগণের সঙ্গে মতবিনিময় করেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী। এ সময় ইউএনওর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলে ধরেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আনিসুর রহমান। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ওই নির্বাহী কর্মকর্তাকে আজকের (বুধবার) মধ্যে প্রত্যাহার করার জন্য জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান। এ ছাড়া আগামীকালের (বৃহস্পতিবার) মধ্যে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে উল্লেখ করেন। মতবিনিময়ের একপর্যায়ে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি আনিসুর রহমান। এ সময় তিনি বলেন, সম্প্রতি সদরপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন ইউএনও আল মামুন। ওই অনুষ্ঠানে আমি বক্তব্য দিই। আমি বলি, দিল্লির কোনো প্রেসক্রিপশনে বাংলাদেশ চলবে না। এরপর ইউএনও আল মামুন আমাকে ডেকে নিয়ে তার কক্ষে কথা বলেন। সে সময় তিনি তার অঙ্গভঙ্গিতে এবং আমাদেরকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ উইল বি কাম ব্যাক, টুডে অর টুমোরো’ (আওয়ামী লীগ ফিরে আসবে, আজ অথবা আগামীকাল)। এ অভিযোগ শোনার সঙ্গে সঙ্গে কথা বলা শুরু করেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ওই ইউএনওকে প্রত্যাহারের জন্য জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান তালুকদারকে নির্দেশ দেন। তিনি ওই শিক্ষার্থীকে (আনিসুর রহমান) উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনার সঙ্গে আমি একমত। আমার সঙ্গে আপনারা একমত না হলে আমি চলে যাব। তিনি আরও বলেন, ‘আজকের মধ্যে এই ইউএনও উইথড্র (প্রত্যাহার) হবে এবং আমি আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) মন্ত্রণালয়ে ফিরে গিয়ে তাকে সাসপেন্ড (সাময়িক বরখাস্ত) করব। আমি পাবলিকলি বলে গেলাম, এত দুঃসাহস? এখনও তারা পতিত সরকারের পেছনে ইন্ধন যোগাচ্ছে। যদি কোনো পদ-পদবিধারী কেউ এদেরকে (পতিত সরকার) পৃষ্ঠপোষকতা করে গোপনে আমাদেরকে সংবাদ দিবেন।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মামুন বলেন, আমি এমন কোনো কথাই বলিনি। ছাত্র প্রতিনিধিদের সঙ্গে যখন আমি কথা বলছিলাম তখন বিএনপি ও জামায়াতের নেতারাও উপস্থিত ছিল। ওই ধরনের কথা বলা হয়নি। আল মামুন প্রশাসন ক্যাডারের ৩৪তম ব্যাচের কর্মকর্তা। তিনি গত ৯ সেপ্টেম্বর সদরপুর উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়রের বৈধতা নিয়ে করা রিট খারিজ
নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর শাহাদাত হোসেনকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ঘোষণার প্রজ্ঞাপনের বৈধতা নিয়ে করা রিট উত্থাপতি হয়নি মর্মে খারিজ করেছেন হাইকোর্ট। চট্টগ্রামের এক বাসিন্দার করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।এ আদেশের ফলে চসিকের মেয়র হিসেবে শাহাদাত হোসেনের দায়িত্ব চালিয়ে যেতে কোন বাধা থাকল না বলে জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর মুহাম্মদ আজমী।তিন বছর আগে অনুষ্ঠিত চসিকের নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী শাহাদাত হোসেনকে জয়ী ঘোষণা করে গত ১ অক্টোবর রায় দেন চট্টগ্রাম প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের বিচারক। দশ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারির জন্য আদালত সরকারকে নির্দেশ দেন। পরে গত ৮ অক্টোবর শাহাদাত হোসেনকে চসিকের মেয়র ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এরপর চসিকের মেয়র হিসেবে শপথ নেন শাহাদাত হোসেন।চসিকের নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে ২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে নয়জনকে বিবাদী করে মামলা করেছিলেন শাহাদাত।
এবার নাফ নদীতেও নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা
কক্সবাজার জেলার টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথসহ এবার নাফ নদীর বাংলাদেশ অংশেও সব নৌযান চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে টেকনাফ উপজেলা প্রশাসন। এর আগে গেল ৪ ডিসেম্বর মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরও শতভাগ নিয়ন্ত্রণে নেয়ার পর আরাকান আর্মি নাফ নদীর মিয়ানমারের অংশে অনির্দিষ্টকালের জন্য নৌ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘মিয়ানমারের অদ্ভুত পরিস্থিতির জন্য বাংলাদেশি জেলেসহ সব ধরনের নৌযান চলাচলকারীদের পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত নাফ নদীতে নৌযান নিয়ে না নামতে সীমান্ত এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। গত প্রায় এক বছর ধরে টেকনাফ সীমান্তে পূর্ব পাশে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির যুদ্ধ চলছিল। নাফ নদী সীমান্ত এখন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। তাই, নাফ নদীতে কোন নৌকা বা ট্রলার না নামার জন্য মাইকিং করা হয়েছে। পাশাপাশি, সীমান্তে অনুপ্রবেশ রোধ ও যে কোন ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য নাফ নদীর জলপথ ও সীমান্তে বিজিবি এবং কোস্টগার্ডের টহল জোরদার করা হয়েছে।’ তবে, কক্সবাজার থেকে বঙ্গোপসাগর হয়ে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল অব্যাহত থাকবে। কেবল মাত্র নাফনদীতে নৌ যান চলাচল বন্ধ থাকবে বলে জানান তিনি। সেন্টমার্টিন সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি রশিদ আহমদ বলেন, ‘বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। এর আগে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে ট্রলার চলাচলে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জানানো হয়েছে। তবে, বুধবার সকাল থেকে সেন্টমার্টিন ও টেকনাফ থেকে কোন ট্রলার ছাড়া যাবে না বলে জানানো হয়। এ নৌপথে ২৭টি সাভিস ট্রলার ও ৪৭টি স্পিডবোট রয়েছে।’ একই সঙ্গে পাশাপাশি টেকনাফ সীমান্তের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়ানের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়কের দায়িত্বে থাকা উপঅধিনায়ক মেজর সৈয়দ ইশতিয়াক মুর্শেদ। তিনি বলেন, ‘সীমান্ত নিরাপত্তায় বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণের বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে দায়িত্ব পালন করছে বিজিবি। সীমান্তের সুরক্ষা ছাড়াও চোরাচালান, মাদকদ্রব্য, অবৈধ অনুপ্রবেশ ও আন্তঃরাষ্ট্রীয় সীমান্ত অপরাধ দমনে দায়িত্ব পালন করে আসছে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় নাফ নদীতে টহল তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। সীমান্তে নিছিদ্র নিরাপত্তায় বিজিবি দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা জলে ও স্থলে টহল চালানো হচ্ছে ও সোচ্চার রয়েছে। এছাড়া, সীমান্তের যে কোন পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।’ এ দিকে গেল শনিবার থেকে বুধবার পর্যন্ত পাঁচ দিন ধরে মিয়ানমার থেকে পণ্যবাহী কোন কার্গো ট্রলার ও জাহাজ টেকনাফ স্থলবন্দরে আসেনি এবং মালামাল খালাস করা কার্গো ট্রলার ও জাহাজ মিয়ানমারের ফেরত যেতে পারছে না বলে জানিয়েছেন টেকনাফ স্থলবন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপক সৈয়দ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘গত শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) মিয়ানমারের আকিয়াব বন্দর থেকে মাছ ভর্তি একটি কার্গো ট্রলার টেকনাফ স্থলবন্দরের জেটিতে নোঙর করেছেন। গত শনিবার (৭ ডিসেম্বর) থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত পাঁচ দিন আর কোন ধরনের ট্রলার বা জাহাজ আসেনি। বর্তমানে মালামাল নিয়ে আসার চারটি কার্গো ট্রলার স্থলবন্দরের জেটিতে নোঙর করে রয়েছে। এরমধ্যে দুইটি কার্গো ট্রলার থেকে মালামাল খালাস করা হলেও মিয়ানমারের ফেরত যেতে পারছে না।’ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু শহর পুরোপুরি দখলে নিয়েছে বলে বিবৃতিতে দাবি করেছেন সেই দেশের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। টেকনাফে নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শিবিরের বাসিন্দা ও সাবেক মংডুর সিকদারপাড়া আলীর জোহার বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে জানতে পারলাম, আরাকান আর্মি মংডু টাউনশিফ দখলে নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় পতাকা উত্তোলন করেছেন। এ জন্য সরকারি বাহিনী মংডু টাউনে কারফিউ জারি করেছেন। লোকজন বাড়িঘর থেকে বাইরে থেকে পারছে না বলে নিকটাত্মীয়-স্বজনরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সেখানকার পরিস্থিতি জানিয়েছেন।’
পাবিপ্রবির ছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার তিন
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে তাদেরকে সিটির বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। পাবনা সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) সঞ্জয় কুমার সাহা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ ঘটনায় ছাত্রীর মা বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা করেছন। গ্রেফতারকৃতরা হলেন পাবনা শহরের কালাচাঁদপাড়া এলাকার আব্দুল জলিলের পুত্র মেহেদী মাসুদ (২৬), চক রামচন্দ্রপুর এলাকার মোতালেব হোসেনের ছেলে মাহমুদুল হাসান সাজিদ (২৩) ও শালগাড়িয়া ফরেস্টপাড়া এলাকার জমির উদ্দিনের ছেলে হারুন অর রশিদ (২৭)। মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী তরুণী পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ষষ্ঠ সেমিস্টারের ছাত্রী। ২০২২ সালে কালাচাঁদপাড়া এলাকার মেহেদী মাসুদের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরিবারের চাপে মেহেদী অন্যত্র বিয়ে করায় ২০২৪ সালের মে মাসে তাদের সম্পর্ক ছিন্ন হয়। এ অবস্থায় সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাতে তার সাবেক প্রেমিক মেহেদী হাসান চা খাওয়ার নাম করে তাকে মোবাইল ফোনে ডেকে নেয়। এরপর মোটরসাইকেলে বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করে রাত সাড়ে নয়টার দিকে শহরের মেরিল বাইপাসের ফরেস্ট এলাকায় নিয়ে যায়৷ পরে পরিকল্পিতভাবে ফরেস্টের একটি পরিত্যাক্ত ঘরে নিয়ে পালাক্রমে তিনজন মিলে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। পরে অবস্থা বেগতিক দেখে মেয়েটিকে তারা একটি অটোরিকশায় তুলে দিয়ে পালিয়ে যায়। বাড়িতে গিয়ে ঘটনা খুলে বলে ওই ছাত্রী। জানা গেছে, মেয়েটি সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হলে অনলাইনে সার্চ করে আইনি সেবাদানকারী টিম ‘ফাইন্ড মাই এডভোকেটে’ যোগাযোগ করে। পরবর্তী তারা বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) সাথে যোগাযোগ করে। পুনাক বিষয়টি অবগত হওয়ার পর সত্যতা যাচাই করে স্থানীয় থানাকে জানায় এবং ভুক্তভোগী নারীকে দ্রুত আইনি সহযোগিতা দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়। গণধর্ষণের এ মামলাটি তদারক করেছেন বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির সভানেত্রী আফরোজা হেলেন ও জয়েন্ট সেক্রেটারি তৌহিদা নূপুর। সঞ্জয় কুমার সাহা বলেন, ‘এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে পাবনা সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে মামলা নথিভুক্ত করা হয়। মামলা নম্বর ২৪। পরে শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।’ তিনি জানান, বুধবার সকালে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভুক্তভোগী ছাত্রীর ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। তিনি আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
চট্টগ্রাম-রাজশাহীসহ ১২ জেলায় নতুন পুলিশ সুপার
চট্টগ্রাম-রাজশাহীসহ দেশের ১২ জেলায় নতুন পুলিশ সুপার (এসপি) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পুলিশের ১২ জন কর্মকর্তা এসব জেলায় পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন। জেলাগুলো হল রংপুর, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, দিনাজপুর, বরিশাল, রাজশাহী, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, গাইবান্ধা, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও নওগাঁ। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ-১ শাখা থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে এ দায়িত্ব দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে প্রজ্ঞাপনে সই করেন উপসচিব আবু সাঈদ। যেসব কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে: রংপুর জেলায় পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পুলিশ সদর দপ্তরের মো. আবু সাইমকে। গাইবান্ধা ইনসার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারের মো. আবু সায়েম প্রধানকে চট্টগ্রামে, পিবিআইয়ের কাজী আখতার উল আলমকে ময়মনসিংহে, এসবির মো. জাকির হোসেনকে দিনাজপুর জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও পিবিআইয়ের মো. শরিফ উদ্দীনকে বরিশালে, এসবির ফারজানা ইসলামকে রাজশাহীতে, পুলিশ সদর দপ্তরের চৌধুরী মো. যাবের সাদেককে গাজীপুরে, অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের মোছা. ইয়াছমিন খাতুনকে মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এপিবিএনের নিশাত এঞ্জেলাকে গাইবান্ধায়, ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি অফিসের মো. আসলাম শাহজাদাকে হবিগঞ্জ জেলায়, পিবিআইয়ের এহতেশামুল হককে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এবং এসবির মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ারকে নওগাঁ জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
নিজ উদ্যোগে কাব-ক্যাম্পুরীর আয়োজন করল কমলগঞ্জের মবশ্বির আলী চৌধুরী বালক উচ্চ বিদ্যালয়
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে শিক্ষার্থীদের নিয়ে ৪র্থ বারের মতো নিজ উদ্যোগে কাব-ক্যাম্পুরীর আয়োজন করে শ্রীনাথপুর ছলিমগঞ্জের মবশ্বির আলী চৌধুরী বালক উচ্চ বিদ্যালয়। মঙ্গলবার (১০ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিদ্যালয়ের আয়োজনে বিদ্যালয় মাঠে এ কাব-ক্যাম্পুরীর আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে মোমবাতি প্রজ্বলন ও ক্যাম্প ফায়ারের মধ্য দিয়ে প্রথম দিনের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন অতিথিরা। আয়োজকরা জানান, বিদ্যালয়ে টানা পাঁচ দিনব্যাপী এই কাব-ক্যাম্পুরীতে এই স্কুলের ৪৪ জন্য শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেছে। শিক্ষার্থীরা এই দিনগুলোতে সকাল সাড়ে ৫টায় শরীর চর্চা দিয়ে শুরু করে রাত ১০টা পর্যন্ত খেলাধুলা, সাধারণ জ্ঞান চর্চা, প্রাত্যহিক জীবনে প্রয়োজনীয় কাজ, প্রাথমিক চিকিৎসা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনাসহ নানা কাজের মধ্য দিয়ে কাটাবে। এছাড়াও ভাতৃত্ববোধ শিখবে, ব্যায়াম শিখবে, শৃঙ্খলা শিখবে। যা শারীরিক বিকাশের জন্যে দরকার, মানসিক বিকাশ করবে। কিছু কলাকৌশল শিখানো হবে যা তাদের পরবর্তী জীবনে অনেক কাজে লাগবে। এ সময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আহমদ সিরাজ, সহকারী প্রধান শিক্ষক মো: মশিউর রহমান চৌধুরী, শিক্ষক মোমিনা ইয়াসমিন রুজি, হামিদা চৌধুরী, সুমাইয়া চৌধুরী, তারিন সুলতানা, মনিরাজ সিনহা, নিপুণ শর্মা, শম্পা রাণী শীল, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সমেরেন্দু সেনগুপ্ত বুলবুল, শংকর দেবনাথ, নির্মলেন্দু চন্দ, যুক্তরাজ্য প্রবাসী হোসেন জাকারিয়া, সাংবাদিক সালাহউদ্দিন শুভ, পারভেজ আহমেদ, জাহেদ আহমেদ, সাইদুল ইসলাম সহ রাসেল হাসান বখ্ত, শিক্ষক রাজিব হাসান ও অন্যান্য শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন। মবশ্বির আলী চৌধুরী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আহমদ সিরাজ জানান, পাঁচ দিনব্যাপী কাব ক্যাম্পুরীতে প্রতিষ্ঠানের ৪৪জন শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। চলতি মাসের ১৬ই ডিসেম্বর সন্ধ্যায় মহাতাঁবু জলসার মধ্য দিয়ে পাঁচদিনের কাব ক্যাম্পুরীর পরিসমাপ্তি ঘটবে। তিনি আরও বলেন, স্কাউটিং একটি স্বেচ্ছাসেবী, অরাজনৈতিক ও শিক্ষামূলক কর্মযজ্ঞ। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে স্কাউটিং শারীরিক, বুদ্ধিবৃত্তিক, সামাজিক, আধ্যাত্মিক ও মানসিক দিকগুলো পরিপূর্ণ অন্তর্নিহিত ক্ষমতা বিকাশে অবদান রাখে যাতে করে তারা ভারসাম্যপূর্ণ ব্যক্তি, দায়িত্বশীল নাগরিক এবং স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সদস্য হিসেবে জীবনযাপন করতে পারে। মানবজীবনের একমাত্র ব্রত হল সেবা। মানবহৃদয়ের সব তৃপ্তি, সুখ ও সাফল্য সেবার মধ্যেই নিহিত।
সাবেক কৃষিমন্ত্রীর দিকে ডিম ছুড়লেন শিক্ষার্থীরা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত ইমন হত্যা মামলায় সাবেক কৃষি মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাককে জামিন শুনানির জন্য আদালতে আনার সময় ডিম নিক্ষেপ করেছে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। পূর্ব নির্ধারিত জামিন শুনানির তারিখ অনুযায়ী বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বিকালে কোর্ট চত্বরে উপস্থিত হয় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা নানা স্লোগান দিতে থাকে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আদালতে অবস্থান করেন। ছাত্রদের তোপের মুখে পরবর্তী পুলিশ সাবেক কৃষি মন্ত্রীকে আদালতে না তুলে ফেরত নিয়ে যায়। এ সময় শিক্ষার্থীরা পুলিশের গাড়িতে বাধা দেয় ও গাড়িকে উদ্দেশ্য করে ডিম ছুড়ে মারে। এ সময় শিক্ষার্থীদের পুলিশ বাধা দিলে ছাত্রদের সঙ্গে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশের বিরুদ্ধে লাঠিচার্জের অভিযোগ তুলেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি। তবে, শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘লাঠিচার্জ করা পুলিশকে এক ঘণ্টার মধ্যে বরখাস্ত না করলে বড় পরিসরে আন্দোলনের ডাক দেবেন তারা।’ এ নিয়ে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) শফিকুল ইসলাম রিপন বলেন, ‘সাবেক কৃষি মন্ত্রী জামিন শুনানির জন্য কোর্টে আনা হলে জামিন না মুঞ্জুর করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। কারাগারে আসামিকে নেয়ার সময় পুলিশকে বাধা দেয়ায় পুলিশ লাঠিচার্জ করেন।’
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে গণধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার ৩
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে গণধর্ষণের মামলায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে পাবনা সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) সঞ্জয় কুমার সাহা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে পাবনা শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় ছাত্রীর মা বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা দায়ের করেছন। গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন, পাবনা শহরের কালাচাঁদপাড়া এলাকার আব্দুল জলিলের ছেলে মেহেদী মাসুদ (২৬), চক রামচন্দ্রপুর এলাকার মোতালেব হোসেনের ছেলে মাহমুদুল হাসান সাজিদ (২৩) ও শালগাড়িয়া ফরেস্টপাড়া এলাকার জমির উদ্দিনের ছেলে হারুন অর রশিদ (২৭)। মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী তরুণী পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ সেমিস্টারের ছাত্রী। ২০২২ সালে কালাচাঁদপাড়া এলাকার মেহেদী মাসুদের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরিবারের চাপে মেহেদী অন্যত্র বিয়ে করায় ২০২৪ সালের মে মাসে তাদের সম্পর্ক ছিন্ন হয়। এমন অবস্থায় গত সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাতে তার সাবেক প্রেমিক মেহেদী হাসান চা খাওয়ার নাম করে তাকে মোবাইল ফোনে ডেকে নেয়। এরপর মোটরসাইকেলে বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করে রাত সাড়ে নয়টার দিকে শহরের মেরিল বাইপাসের ফরেস্ট এলাকায় নিয়ে যায়৷ পরে পরিকল্পিতভাবে ফরেস্টের একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে পালাক্রমে তিনজন মিলে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। পরে অবস্থা বেগতিক দেখে মেয়েটিকে তারা একটি অটোরিকশায় তুলে দিয়ে পালিয়ে যায়। বাড়িতে গিয়ে ঘটনা খুলে বলে ওই ছাত্রী। পাবনা সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) সঞ্জয় কুমার সাহা জানান, এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে পাবনা সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে মামলা নথিভুক্ত করা হয়। মামলা নম্বর ২৪। পরে শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভুক্তভোগী ছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। তিনি আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। গ্রেফতার ব্যক্তিদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
যুবদল-বিএনপির দুই নেতার অনুসারীদের সংঘর্ষে আহত ৫০
অধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্বে ভোলা জেলার চরফ্যাসন উপজেলায় কেন্দ্রীয় যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম নয়ন ও বিএনপির নেতা নাজিম উদ্দিন আলম অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ৫০ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে দক্ষিণ আইচা থানাধীন সদর আইচা বাজারে এ সংঘর্ষ হয়। এ সময় পাঁচটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে। খবর পেয়ে দক্ষিণ আইচা থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে এলাকাবাসী আহত ব্যক্তিদের দক্ষিণ আইচা গণস্বাস্থ্য হাসপাতাল ও চরফ্যাসন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুর পর্যন্ত ঘটনাস্থলের পরিস্থিতি থমথমে। স্থানীয় সূত্র জানায়, নূরুল ইসলাম নয়নের অনুসারী সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্য সিরাজুল ইসলাম সবুজ খানের নেতৃত্বে মঙ্গলবার রাতে একটি প্রতিবাদ সভা হয়। পরে তারা মিছিল বের করেন। এ সময় নাজিম উদ্দিন আলমের অনুসারী কিছু নেতাকর্মী পাল্টা মিছিল বের করে। এতে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এক পর্যায়ে তা সংঘর্ষে গড়ায়। খবর পেয়ে দক্ষিণ আইচা থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সবুজ খানের ভাষ্য মতে, নাজিম উদ্দিন আলমের অনুসারীরা গেল বুধবার দক্ষিণ আইচা বাজারে ঢালচর ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলমগীর মাতাব্বর ও চরমানিকা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ও শ্রমিক দলের সহসভাপতিকে মারধর করেন। কিন্তু, নুরুল ইসলাম নয়নের অনুসারী বিএনপির নেতা রেজাউল করিম খন্দকারসহ কোন নেতাই তাদের পাশে দাঁড়াননি। এসবের প্রতিবাদে তিনি মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কর্মসূচি ডাকেন। নাজিম উদ্দিন আলমের অনুসারীরা পাল্টা মিছিল বের করে তাদের মিছিলে হামলা করে। এতে এ পক্ষের ৩২ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এ ব্যাপারে তারা মামলা করবেন। নাজিম উদ্দিন আলমের অনুসারী দক্ষিণ আইচা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. ফারুকের ভাষ্য মতে, ‘নুরুল ইসলাম নয়নকে আমরা কখনও চরফ্যাসনের রাজনীতিতে দেখিনি। তার অনুসারীরা রাতের আঁধারে ছাত্রলীগ-যুবলীগের লোকজন নিয়ে পুলিশের সামনেই লাঠি মিছিল করেছে। আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করেছে। এতে প্রায় ১৮ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।’ এ নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি দক্ষিণ আইচা থানা বিএনপির সভাপতি মো. রেজাউল করিম খন্দকার। দক্ষিণ আইচা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল হক ভূঁইয়া জানান, থানার অনুমতি ছাড়াই দুই পক্ষ মিছিল বের করেছিল। এতে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করেছে।
কক্সবাজারে হত্যা মামলার আসামিকে 'পিটিয়ে হত্যা'
কক্সবাজারের পেকুয়ায় কলেজছাত্র জিহাদ হত্যা মামলার আসামি ধলা মিয়া ওরফে প্রকাশ দানু (৩৫) গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার শাহারবিল ইউনিয়নের লালব্রিজ এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। নিহত ধলা মিয়া মহেশখালীর মাহারা পাড়া এলাকার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা কলমদরের ছেলে। স্থানীয়রা জানান, কলেজছাত্র জিহাদ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ধলা মিয়া ও একই মামলার ২ নম্বর আসামি মোবারক আলী সকালে চকরিয়া লালব্রিজ এলাকায় এলে স্থানীয়রা তাদের দেখতে পেয়ে ঘেরাও করে। এ সময় লোকজন জড়ো হয়ে তাদের গণপিটুনি দেয়। পরে খবর পেয়ে চকরিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গণধোলাইয়ে আহত আসামি ধলা মিয়া ও মোবারককে উদ্ধার করে। এ সময় অবস্থা গুরুতর হওয়ায় স্থানীয়রা ধলা মিয়াকে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায় এবং অপর আসামি মোবারককে থানা হেফাজতে নেয় পুলিশ। নিহতের স্বজনরা জানান, আহত ধলা মিয়ার অবস্থার অবনতি হওয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এ বিষয়ে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সিরাজুল মোস্তাফা বলেন, সরকারি সেবা ৯৯৯ নম্বর থেকে ফোন পেয়ে পেকুয়া থানা পুলিশ গিয়ে আহত অবস্থায় হরিণাফাঁড়ি এলাকা থেকে স্থানীয়দের সহায়তায় ধলা মিয়াকে উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর কক্সবাজার সিটি কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আসহাবুল করিম জিহাদকে তার পেকুয়ার বাড়ি থেকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী এলাকায় নিয়ে গিয়ে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে। এ ঘটনায় তার বাবা মকছুদুল করিম বাদী হয়ে চকরিয়া থানায় ১২ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা করেন।
আন্দোলনের ৫ মাস পর যাত্রী ছাড়াই ভারতে গেল মিতালি এক্সপ্রেস
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর থেকেই ঢাকায় আটকে ছিল ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ‘মিতালি এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি। অবশেষে আন্দোলনের পাঁচ মাস পর ঢাকা থেকে ভারতে ফিরে গেল মিতালি এক্সপ্রেস ট্রেনটি। দুই দেশের মধ্যে আবার কবে এই ট্রেন সেবা চালু হবে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এটি আন্তঃদেশীয় এক্সপ্রেস, যা পাসপোর্ট ও ভিসাধারী যাত্রীদের নিয়ে ভারতের নিউ জলপাইগুঁড়ি থেকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট পর্যন্ত চলাচল করতো। পশ্চিম অঞ্চল রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, বরাবরের মতো ট্রেনটি ভারতের হলদিবাড়ী বর্ডার দিয়ে নীলফামারীর চিলাহাটি হয়ে ঢাকায় প্রবেশ করে। গত ১৭ জুলাই ভারতের নিউ জলপাইগুঁড়ি থেকে ঢাকায় রওনা দিয়েছিল। এর পর থেকে ফিরে যেতে পারেনি ট্রেনটি। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল ৭টা ৫ মিনিটে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে নীলফামারীর চিলাহাটি দিয়ে ভারতের হলদিবাড়ী প্রবেশ করে ট্রেনটি। সূত্র আরও জানায়, ২০২২ সালের ১ জুন উদ্বোধনের পর নিউ জলপাইগুঁড়ি থেকে সপ্তাহে রবি ও বুধবার ভারতীয় সময় বেলা পৌনে ১২টায় ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়ে রাত ১০টায় পৌঁছে ট্রেনটি। এদিকে, ঢাকা থেকে সোমবার ও বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটে ছেড়ে নিউ জলপাইগুঁড়ি স্টেশনে পৌঁছায় সকাল ৭টায়। সকালে বাংলাদেশের চিলাহাটি ও ভারতের হলদিবাড়ী সীমান্ত দিয়ে মিতালি এক্সপ্রেস ভারতে প্রবেশ করে বাংলাদেশ রেলওয়ের ইঞ্জিনে। আবার ভারতে মিতালির বগিগুলো হলদিবাড়ী স্টেশনে পৌঁছে দিয়ে ইঞ্জিনটি চিলাহাটিতে ফিরে আসে। চিলাহাটি স্টেশনের স্টেশনমাস্টার হায়দার আলী বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কারণে মিতালি এক্সপ্রেস ঢাকায় আটকে ছিল। আজ সকালে খালি বগিগুলো বাংলাদেশ রেলওয়ে হলদিবাড়ী পর্যন্ত পৌঁছে দেয়। এসময় ৪টি এসি বার্থ, ৪টি এসি চেয়ারকার ও ব্রেক ভ্যানসহ দুটি পাওয়ার কার ভারতকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের ৬ জন স্টাফ এসেছিলেন। আমরা তাদেরকে গাড়ি বুঝিয়ে দিয়ে চলে এসেছি। উল্লেখ্য, ১৯৬৫ সালের পর ২০২২ সালের ১ জুন হলদিবাড়ী-চিলাহাটি রুটে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে মিতালি এক্সপ্রেসের যাত্রা শুরু হয়েছিল। ৫৭ বছর পর ফের চালু হওয়া মিতালি এক্সপ্রেসটি সাময়িকভাবে বন্ধ হলো। ১৯৬৫ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত এটি বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের একটি বিলুপ্ত রেলওয়ের ট্রানজিট পয়েন্ট ছিল।
ভারতের সাথে নতজানু পররাষ্ট্রনীতি থেকে সরে এসেছি: উপদেষ্টা আসিফ
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া বলেছেন, ‘জাতীয় স্বার্থের সাথে আপস করে কোন পররাষ্ট্র সম্পর্ককে বিশ্বাস করে না অন্তর্বর্তীসরকার। ভারতের সাথে নতজানু পররাষ্ট্রনীতি থেকে ইতোমধ্যে আমরা সরে এসেছি। জাতীয় স্বার্থ সামনে রেখে দুই দেশের পরবর্তী সম্পর্কগুলো চলমান থাকবে।’ বুধবার (১১ ডিসেম্বর) কুমিল্লা পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) লালমাই অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত ফিন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন বিষয়ক আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি দলের কর্মশালায় সমাপনী অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘সরকারি ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে জনপ্রতিনিধিদের কাজ পরিচালনা করা বহু কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যে কারণে স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি নির্বাচনের বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নেওয়া যায় কি না স্থানীয় সংস্কার কমিশন ও নির্বাচন কমিশনের কাজ শেষ হলে সে উদ্যোগ নেওয়া হবে।’ কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বার্ডের মহাপরিচালক সাইফ উদ্দিন আহমেদ। অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন আর্ডোর গবেষণা বিভাগের প্রধান খুশনুদ আলী। শ্রীলঙ্কা, মিশর, ভারত, ঘানা, জাম্বিয়া, নামিবিয়া, গাম্বিয়া, পাকিস্তান, ওমান, মালয়েশিয়া, কেনিয়া ও বাংলাদেশসহ ১২ দেশের ২০ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কর্মশালায় অংশ নেন।
চসিকের তিন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) তিনটি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) চসিকের মেয়র শাহাদাত হোসেন এসব ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। প্রকল্পগুলো হল দুই কোটি ৭৮ লাখ ১৬ হাজার ৮৭৭ টাকা ব্যয়ে ২৬ নম্বর ওয়ার্ডস্থ মহেশখালের সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প, তিন কোটি দুই লাখ ৫৬ হাজার ৮৫৭ টাকা ব্যয়ে নয় নম্বর ওয়ার্ডস্থ ফিরোজশাহ মাঠের উন্নয়ন ও সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প এবং দুই কোটি ৭৪ লাখ ৫৬ হাজার ৮০০ টাকা ব্যয়ে ১১ নং ওয়ার্ডস্থ বহুরূপী মাঠের উন্নয়ণ ও সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবুল কাশেম, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার লতিফুল হক কাজমি, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন, নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার জাহান, মাহমুদ শাফকাত আমিন, সহকারী প্রকৌশলী সজীব রেজা হক, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. শরফুল ইসলাম মাহি, মেয়রের একান্ত সহকারী মারুফুল হক চৌধুরী।
চট্টগ্রাম সিটিতে বিজয় মেলার উদ্বোধন
চট্টগ্রাম বিভাগের কমিশনার মো. জিয়াউদ্দীন বলেছেন, ‘আমাদের যে সব কৃষ্টি, কালচার, সংস্কৃতি রয়েছে- এগুলোর বহিঃপ্রকাশ মেলার মাধ্যমে তুলে ধরা হয়ে থাকে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি, সেখানে বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার জন্য আমাদের একটা প্রত্যয় রয়েছে। আমরা এই বাংলাদেশকে বৈষম্যমুক্ত করে ছাড়ব। সকলের মতামতের ভিত্তিতে আমরা এমন একটি স্থান বা ভেন্যু খুঁজে বের করব, যেটাতে স্থায়ীভাবে বিজয় মেলাসহ বিভিন্ন মেলা উদযাপন করা যাবে।’ বিজয় দিবস উপলক্ষে বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে সিটির কাজির দেউরী এলাকার সার্কিট হাউজ সংলগ্ন ভেঙ্গে ফেলা পুরনো শিশু পার্ক মাঠে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন আয়োজিত বিজয় মেলার উদ্বোধনী তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সঙ্গীতের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বেলুন উড়িয়ে ও ফিতা কেটে ছয় দিনের (১১-১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত) বিজয় মেলার উদ্বোধন করেন বিভাগীয় কমিশনার।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. জিয়াউদ্দীন আরো বলেন, ‘আমরা শুধু কর্মের মধ্যে থাকব না। সত্যিকার অর্থে এখানে স্থায়ী মেলার জন্য একটি নির্ধারিত মাঠের প্রয়োজন। বাঙালি সংস্কৃতি তুলে ধরার জন্য এখানে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অনুষ্ঠানগুলো হয়ে থাকে। আমাদের কালচারাল উন্নতি ও শিক্ষাগত প্রসারসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরার জন্য স্থায়ী ভেন্যু হলে বই মেলাসহ বিভিন্ন মেলা উদযাপনও সে ভেন্যুতে করতে পারি। সংশ্লিষ্টদের মতামতের ভিত্তিতে এ ব্যাপারে স্থায়ী ভেন্যুর রূপদানের পচেষ্টা করব।’লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত এ স্বাধীনতা। বীর মুক্তিযোদ্ধারাসহ যারা দেশের স্বাধীনতার জন্য প্রাণ উৎসর্গ করেছেন এই বিজয় মেলার সূচনা লগ্নে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতাসহ বিজয় মেলা সাফল্য মন্ডিত করার জন্য জেলা প্রশাসনসহ যারা উদ্যোগ নিয়েছেন তাদেরকে সাধুবাদ জানান বিভাগীয় কমিশনার। সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেন, ‘চট্টগ্রাম কৃষ্টি-কালচারের জেলা। এখানে প্রতি বছর বই মেলা, বাণিজ্য মেলা, বিজয় মেলা ও অন্যান্য মেলা হয়ে থাকে। মেলার স্থায়ী ভেন্যু নির্বাচন করার জন্য আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে। খেলার মাঠে মেলা হবে না। এ জন্য আউটার স্টেডিয়াম থেকে সরিয়ে এনে সার্কিট হাউজ সংলগ্ন ভেঙ্গে ফেলা পুরনো শিশু পার্কের পরিত্যক্ত মাঠেই (সেনাবাহিনীর সম্পত্তি) জেলা প্রশাসন এবার সপ্তাহব্যাপী বিজয় মেলার আয়োজন করেছে। সকলের সাথে কথা বলে এমন একটি ভেন্যু নির্বাচন করব, যেখানে শুধু মেলাগুলো হবে।’ আউটার স্টেডিয়াম মাঠকে খেলার উপযোগী করে তোলা হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট খন্দকার ফারজানা নাজনীন সেতুর সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিজয় মেলা উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব আহমেদ নেওয়াজ। বক্তব্য দেন সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সভাপতি জাহিদুল করিম কচি, চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিএমইউজে) মোহাম্মদ শাহ নওয়াজ, মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম ও ছাত্র প্রতিনিধি মো. জোবায়ের। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল চট্টগ্রাম উত্তর-দক্ষিণ-মহানগর নির্বাহী কমিটির সভাপতি কামাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক ফজলু বারিক, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের উপপরিচালক (স্থানীয় সরকার) মো. নোমান হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. কামরুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এলএ) একেএম গোলাম মোর্শেদ খান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) সৈয়দ মাহবুবুল হক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. শরীফ উদ্দিন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. সাদি উর রহিম জাদিদ। মেলায় প্রতিদিনের আয়োজনে থাকছে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও বিজয়ের কথা মালা। ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬৯’র গণ অভ্যূত্থান, ৭১’র মুক্তিযুদ্ধ, ৯০’র গণ অভ্যূত্থান ও ২৪’র গণ অভ্যূত্থানের মূল্যবোধ বিষয়ক স্মৃতিচারণ।
ওকালতনামা না নিয়েই চিন্ময়ের পক্ষে আদালতে আইনজীবী, আবেদন খারিজ
বাংলাদেশ সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশের জামিন শুনানি এগিয়ে আনাসহ তিন আবেদন করেছিলেন ঢাকা থেকে আসা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। কিন্তু, ওকালতনামা না থাকায় আদালত সব আবেদন নামঞ্জুর করেছেন। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক সাইফুল ইসলাম উভয় পক্ষের শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।ব্যাপারটি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আসামিপক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ আদালতে তিনটি আবেদন করেছিলেন। এর মধ্যে একটি চিন্ময়ের মামলাটি শুনানি করার জন্য, আরেকটি নথি উপস্থাপনের জন্য ও অন্যটি জামিন শুনানির তারিখ ২ জানুয়ারি থেকে এগিয়ে আনার। তবে, যেহেতু তার সঙ্গে চট্টগ্রাম বারের কোন আইনজীবী ছিলেন না, আসামির পক্ষে ওকালতনামাও নেই এবং ফাইলিং আইনজীবীরও লিখিত অনুমতি নেই, সেহেতু আদালত তার আবেদন নট মেইন্টেইনেবল বলে নামঞ্জুর করেছেন।’আদালত সূত্রে জানা গেছে, রবীন্দ্র ঘোষের আবেদনের প্রেক্ষিতে বুধবার সকাল ১১টায় শুনানি শুরু হয়। শুনানির শুরুতে রবীন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘আমি জানি এই বারের একজন আইনজীবী (সাইফুল ইসলাম আলিফ) মারা গেছেন’। এটা বলার সঙ্গে সঙ্গেই খুনের শিকার আইনজীবী আলিফকে ‘শহীদ’ না বলায় এজলাসে উপস্থিত আইনজীবীরা সবাই একসঙ্গে প্রতিবাদ করেন। এ সময় এজলাসে বিশৃঙ্খল পরিবেশের সৃষ্টি হয়।পরে আদালত রবীন্দ্র ঘোষের কাছে জানতে চান, তার পক্ষে চট্টগ্রাম বারের কোন আইনজীবীর ওকালতনামা আছে কিনা বা মামলা পরিচালনার জন্য আসামিপক্ষের আইনজীবীদের অনুমতি আছে কিনা। এ সময় কোন অনুমতি নেই বলে তিনি আদালতকে জানান। পরে বিচারক আদালত আইন মেইনটেইন করে তাকে আসতে বলেন।গেল ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রাম সিটির চান্দগাঁও মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা করেন। এ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে মামলার বাদী ফিরোজ খানকে বিএনপি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এরপর ২৫ নভেম্বর চট্টগ্রামে ফেরার পথে ঢাকারয় শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে বহিষ্কৃত ইসকনের নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ ব্রক্ষ্মচারীকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পর দিন তাকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। ওই দিন কোতোয়ালি থানায় হওয়া একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে তোলা হলে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করেন। এ সময় চিন্ময় অনুসারীদের হাতে খুন হন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ। গেল ৩ ডিসেম্বর ফের জামিন শুনানি হলে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ চিন্ময় কৃষ্ণের পক্ষে কোন আইনজীবী না থাকায় শুনানি পিছিয়ে আগামী ২ জানুয়ারি দিন নির্ধারণ করেন।
১৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট দাবি: আশুলিয়ায় শ্রমিক অসন্তোষ, ১২ কারখানা ছুটি
সরকার ঘোষিত বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট চার শতাংশ বৃদ্ধির সুপারিশ প্রত্যাখান করে ১৫ শতাংশের দাবিতে ঢাকা জেলার শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার বেশ কয়েকটি পোশাক কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। অসন্তোষের মুখে অন্তত ১২ কারখানা সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে আশুলিয়ার নরসিংহপুর এলাকার অন্তত ১২ কারখানায় আজ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। শিল্প পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হামীম গ্রুপ, শারমীন গ্রুপ, মেডলার, নেক্সট কালেকশন, আল মূসলীম, সেতারা গ্রুপসহ বেশ কিছু কারখানার শ্রমিকরা বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে এসে ইনক্রিমেন্ট বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন দাবিতে কাজ বন্ধ রাখে। নিউ এইজ, ডেকো, এথিক্যালসহ অন্যান্য কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরাও কাজ বন্ধ করে ফ্লোরে বসে থাকে। শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে নাসা ও ট্রাউজার লাইন শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারায় কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে। এছাড়া, ব্যান্ডো ডিজাইন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। হামীম ও নীট এশিয়ার শ্রমিকরা কারখানা থেকে বেরিয়ে যায়। এ দিকে, বিশৃঙ্খলা এড়াতে শিল্পাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনা সদস্য মোতায়েন রয়েছে। শিল্প পুলিশ-১’-এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোমিনুল ইসলাম ভুইয়া বলেন, ‘বর্ধিত বেতনে সন্তুষ্ট নন শ্রমিকরা। তাই, তারা কাজ বন্ধ করে বসে রয়েছে। তবে, কোন প্রকার অরাজকতা কিংবা বিশৃঙ্খলা করনি। কাজ না করায় অন্তত ১২ তৈরি পোশাক কারখানা বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে।’
উচ্চ শব্দে গান শুনতে মানা করায় খড়ের গাদায় আগুন
জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলায় রাতে উচ্চ শব্দে গান বাজাতে নিষেধ করায় কৃষকের খড়ের গাদায় আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে দশ বিঘা জমির খড় ছাই হয়ে গেছে। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাতে রায়কালী ইউনিয়নের নারিকেলী ঘোলাগাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগী কৃষক মামুনুর রশিদ ও আবদুল বাছেদ বাদী হয়ে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) আক্কেলপুর থানায় পৃথকভাবে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এতে আসামি করা হয়েছে প্রতিবেশী আ. রাজ্জাক বাবু, মো. লতিফ, রুস্তম, ছাইফুল ও মিষ্টনকে। অভিযোগ থেকে জানা গেছে, সোমবার রাত সাড়ে দশটার দিকে স্থানীয় কিছু লোক উচ্চ শব্দে সাউন্ড বক্স বাজাচ্ছিলেন। এতে গ্রামের বাসিন্দাদের ঘুম ও ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখায় বিঘ্ন হচ্ছিল। স্থানীয় মামুনুর রশিদ ও আবদুল বাছেদ তাদের উচ্চ শব্দে গান-বাজনা বাজাতে মারা করেন। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে কথাকাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। পরে তারা যে যার বাড়িতে চলে যান। রাত তিনিটার দিকে তার দুইটি খড়ের গাদায় আগুন জ্বলছে বলে খবর পান মামুনুর রশিদ। স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিভিয়ে ফেলার আগেই দশ বিঘা জমির খড় পুড়ে ছাই হয়ে যায়। মামুনুর রশিদ বলেন, ‘অভিযুক্তরা মাঝেমধ্যেই রাতের বেলা উচ্চ শব্দে গানা বাজায়। এতে রাতের ঘুম ও ছেলে-মেয়েদের পড়ার ক্ষতি হয়। নিষেধ করতে গেলে আমাদের ওপর হামলা চালায়। পরে হুমকি দিয়ে চলে যায়।’ অভিযোগ প্রসঙ্গে আ. রাজ্জাক বাবু বলেন, ‘সোমবার রাতে গ্রামের কিছু ছেলে খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করে। আমি খাওয়া-দাওয়া করে বাড়িতে চলে যাই। তারা কিছুক্ষণ সাউন্ড বক্স বাজিয়ে গান শোনে। রাত সাড়ে দশটার দিকে মামুনুর রশিদ ও আবদুল বাছেদ এসে সাউন্ড বক্স ভাঙচুর করে চলে যান। সকালে শুনি মামুনুর রশিদের খড়ের গাদায় কে বা কারা আগুন দিয়েছে। আমি কিছুই জানি না। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে।’ আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মইনুল ইসলাম বলেন, ‘৯৯৯’-এর মাধ্যমে খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আটক বাংলাদেশের ৭৮ নাবিকের ছবি প্রকাশ করল ভারতের কোস্টগার্ড
৭৮ নাবিকসহ বাংলাদেশি দুইটি মাছ ধরার ট্রলার নিয়ে গেছে ভারতীয় কোস্টগার্ড। পরে আটক এসব নাবিক ও ট্রলারের ছবি প্রকাশ করেছে তারা। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে ভারতের কোস্টগার্ডের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ ও এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) এ-সংক্রান্ত মোট তিনটি ছবি প্রকাশ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের ‘ইন্ডিয়ান কোস্টগার্ড’ পেজের এক পোস্টে উল্লেখ করা হয়, ‘ভারতের সমুদ্রসীমায় মৎস্য আহরণের অভিযোগে এক অভিযানে ট্রলার দুইটিসহ ৭৮ নাবিককে আটক করা হয়েছে। নাবিকসহ ট্রলার দুইটি প্যারা দ্বীপের কাছে নেয়া হয়েছে।’ ফেসবুকে পোস্ট করা ছবিগুলোর একটিতে দেখা যায়, আটক ট্রলারের নাবিকেরা নৌযানের ডেকের ওপর হাত মাথার পেছনে রেখে হাঁটু গেড়ে বসে আছেন। নাবিকদের পেছনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় ভারতের কোস্টগার্ডের সদস্যদের। আরেকটি ছবিতে দেখা যায়, সাগরে চলছে বাংলাদেশের দুইটি ট্রলার। তৃতীয় ছবিতে ছিল জেটিতে ট্রলার দুইটি নিয়ে আসার দৃশ্য। ট্রলারগুলো হল এফভি লায়লা-২ ও এফবি মেঘনা-৫। এর মধ্যে এফভি লায়লা-২ এসআর ফিশিং নামে একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন। এফভি মেঘনা-৫ চট্টগ্রামভিত্তিক সিঅ্যান্ডএ অ্যাগ্রো লিমিটেডের মালিকানাধীন। সিঅ্যান্ডএফ অ্যাগ্রো লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক সুমন সেন বলেন, ‘সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে ট্রলার দুইটি বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার এক নটিক্যাল মাইল ভেতরে মাছ ধরছিল। এ সময় ভারতের কোস্টগার্ড ট্রলার দুইটি আটক করে নিয়ে যায়। এখন যেহেতু ভারতীয় কোস্টগার্ড আটক করেছে বলে ফেসবুকে জানিয়েছে, তাই আইনি প্রক্রিয়ায় যাতে উদ্ধার করা যায়, সে জন্য বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট পক্ষকে জানিয়েছি আমরা।’ এ নিয়ে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমোডর মোহাম্মদ মাকসুদ আলম মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) বলেন, ‘ঘটনার পর বাংলাদেশের কোস্টগার্ডসহ সরকারি সংস্থাগুলো ভারতের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। ট্রলার দুইটি উদ্ধারে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। নাবিকেরা ভাল আছেন।’
হাতকড়া নিয়ে মায়ের জানাজা পড়লেন ছাত্রলীগ নেতা
মাসখানেক আগে সংঘর্ষের মামলায় কারাগারে যান চুয়াডাঙ্গা পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে মারা যান তার মা আলেয়া খাতুন (৭০)। এদিন বিকালে প্যারোলে মুক্তি পেয়ে জাহাঙ্গীর তার মায়ের জানাজা ও দাফনে অংশ নেন। তবে এ সময় তার হাতে ছিল হাতকড়া। যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে চলছে সমালোচনা। মায়ের মৃত্যুতে প্যারোলে মুক্তি পেলেও জানাজার সময় তার হাতকড়া খোলা হয়নি। এমনকি হাতকড়া পরা অবস্থায় মায়ের মরদেহ কাঁধে নিয়ে কবরস্থানে যান জাহাঙ্গীর। জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে জাহাঙ্গীরের মা আলেয়া খাতুন নিজ বাড়িতে মারা যান। তিনি চুয়াডাঙ্গা সদরের কেদারগঞ্জের বাসিন্দা ছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে জাহাঙ্গীরের মামা আলাউদ্দিন বলেন, ‘আমার বোন আগেও স্ট্রোক করেছিলেন। মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে সম্ভবত স্ট্রোক করেই তিনি মারা গেছেন।’ এ সময় বোনের জানাজায় ভাগনেকে পেয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন আলাউদ্দিন। এদিন মুহূর্তেই জাহাঙ্গীরের হাতকড়া পরিহিত ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমালোচনা করেছেন অনেকেই। তাদের কথায়, মায়ের শেষযাত্রায় ছেলের এমন দৃশ্য মর্মান্তিক ও বেদনাদায়ক! এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালেদুর রহমান জানান, গত ১২ নভেম্বর থেকে জাহাঙ্গীর জেলহাজতে। ৫ আগস্টের একটি সংঘর্ষের মামলায় গ্রেফতার হন তিনি। ওসি আরও বলেন, ‘পুলিশ লাইনের একটি টিম তাকে প্যারোলে বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে প্রকৃত অর্থে কী হয়েছে, তা জানার চেষ্টা করছি।’চুয়াডাঙ্গা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) খন্দকার গোলাম মওলা বলেন, ‘কীভাবে হাতকড়া পরানো ছিল, সে বিষয়টি আমি এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত না। তবে নিয়ম অনুযায়ী তো একেবারে ছাড়া থাকবে না।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিন গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে শিশুসহ নিহত ৩
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে ট্রাক, পিকআপ ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে। এতে তিনটি গাড়িই দুমড়ে-মুচড়ে গেছে। এ ঘটনায় নারী ও শিশুসহ নিহত হয়েছেন তিনজন। আহত হয়েছেন আরও ছয়জন। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে বিজয়নগর উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বারঘড়িয়া এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার রামপুর এলাকার মানিক মিয়ার মেয়ে রাইছা (১১ মাস), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার দাতমন্ডল এলাকার লুতু মিয়ার স্ত্রী ফজিলাতুন্নেছা (৭৫) ও একই উপজেলার হরিপুর গ্রামের লোকমান মিয়ার ছেলে পাভেল মিয়া (৩০)। আহতরা হলেন হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার রামপুর গ্রামের হাজী আব্দুল কাদিরের স্ত্রী সাফিয়া বেগম (৬০), একই গ্রামের শহিদ মিয়ার ছেলে আব্দুল হামিদ মাসুদ (৬০), হাজী আব্দুল ছোবানের ছেলে মো. বিল্লাল হোসেন (৩০), হাজী আব্দুল কাদিরের ছেলে আবু হানিফ (৪০), মানিক মিয়ার স্ত্রী রুনা আক্তার (৩৫) ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার বুধুন্তী এলাকার মিজান মিয়ার ছেলে তানভীর (১০)। ঘটনা সত্যতা নিশ্চিত করে খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ওসি মো. মারগুব তৌহিদ জানান, বুধবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে বিজয়নগর উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বারঘড়িয়া এলাকায় বেপোরোয়া গতির কুমিল্লাগামী ড্রামভর্তি একটি ট্রাকের সাথে সিলেটগামী একটি মাইক্রোবাস এবং সিলেটগামী একটি পিকআপের ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে তিনটি গাড়িই দুমড়ে-মুচড়ে যায়। মাইক্রোবাসে থাকা এক শিশু ও এক বৃদ্ধা ঘটনাস্থলেই মারা যান। আরেকজন হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান। ওসি জানান, এই ত্রিমুখী সংঘর্ষে আরও ছয়জন আহন হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।