আমার এলাকার খবর

মাগুরায় ‘ধর্ষণে’র শিকার শিশুটি বেঁচে আছে: পুলিশ

মাগুরায় ‘ধর্ষণের শিকার’ ৮ বছরের শিশুটি বেঁচে আছে বলে জানিয়েছেন মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. মিরাজুল ইসলাম। শুক্রবার দুপুরে এ তথ্য জানান তিনি। এর আগে ‘মাগুরার শিশুটি মারা গেছে’ বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়ে। মিরাজুল ইসলাম বলেন, আমরা নিয়মিত শিশুটির চিকিৎসার খোঁজখবর নিচ্ছি। এখনও সে অচেতন অবস্থায় আছে। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশুদের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (পিআইসিইউ) রাখা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় শিশুটির দুলাভাই সজিব শেখ (১৮) ও তার বাবা হিটু শেখকে (৪৭) আটক করা হয়েছে। তাদের দুজনকেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সজিবের কথায় বেশ অসংলগ্নতা পাওয়া গেছে। বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে বৃহস্পতিবার শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। শিশুটিকে প্রথম অচেতন অবস্থায় ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে ওই অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শুক্রবার সকালে শিশুটিকে ঢাকায় পাঠানো হয়। শিশুটির মা জানান, বোনের বাড়িতে মেয়েকে ঘরের মধ্যে একা পেয়ে কেউ একজন ধর্ষণ করেছে। যেহেতু ওই সময় বাড়িতে সে একা ছিল আর এখনও মেয়ের জ্ঞান ফেরেনি তাই তাকে কে ধর্ষণ করেছে তা সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। এদিকে ধর্ষণে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন মুসল্লিরা। শুক্রবার জুমার নামাজের পর মাগুরা শহরের বিভিন্ন সড়কে বিক্ষোভ করেন তারা।

পছন্দের ইমামকে না রাখায় জাতীয় পতাকার খুঁটিতে জুতা

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ডিগ্রি শাখার মসজিদে পছন্দের ইমামকে না রাখায় জাতীয় পতাকার স্ট্যান্ডে (খুঁটি) জুতা ঝুলিয়ে দিয়েছে নানা অভিযোগে অব্যাহতি পাওয়া ইমাম মারুফ বিল্লার অনুসারীরা। শুক্রবার (৭ মার্চ) জুমার নামাজের পর কলেজের ডিগ্রি শাখার প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার ২৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাৎক্ষণিক ভাইরাল হয়। জুমার নামাজের আগে থেকে জুতা ঝুলিয়ে দেওয়ার ঘটনা পর্যন্ত পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার একাধিক লোকজন ক্যাম্পাসজুড়ে অবস্থান করছিলেন। জানা গেছে, জুমার নামাজের খুতবার আগের মসজিদের মিম্বরে মুসল্লিদের উদ্দেশে কথা বলেন কলেজ এলাকার স্থানীয় গণ্যমান্য লোকজন। পূর্বপরিস্থিতি যাতে আর না হয় আহ্বান করে তারা বলেন, ‘ভিক্টোরিয়া একটি স্বনামধন্য কলেজ। স্থানীয়দের সঙ্গে ভিক্টোরিয়া কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিরোধ কখনও কাম্য নয়। কলেজ মসজিদের অব্যাহতি পাওয়া ইমাম মারুফ বিল্লাহকে সসম্মানে বিদায় করার পাশাপাশি বর্তমান ইমামকে বাদ দিয়ে নতুন ইমাম নিয়োগ দিতে হবে। ব্যাপক প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে এমন একজনকে নিয়োগ দিতে হবে যাকে কলেজ ও মসজিদ এলাকার কেউ না চেনে। এ বিষয়ে আমরা ভিক্টোরিয়া কলেজ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবো।’ এই কথা মানেনি অব্যাহতি পাওয়া ইমাম মারুফ বিল্লার অনুসারীদের একাংশ। খুতবা চলাকালে তারা বের হয়ে যান মসজিদ থেকে। নামাজ শেষ হতেই কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে থাকা জাতীয় পতাকার তিনটি স্ট্যান্ডের মধ্যে মাঝের স্ট্যান্ডে বিভিন্ন অশ্লীল স্লোগান দিয়ে জুতা ঝুলিয়ে দেয় ৮-১০ জন যুবকের একটি দল। কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাঈদ আহমেদ বলেন, ‘এ কেমন কাজ! ইমাম গেলে ইমাম আসবে। দোষ করলে মানুষ করছে। জাতীয় পতাকার অবমাননা করলো কেন? কলেজ প্রশাসনের উচিত তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা।’ অভিযুক্ত ইমাম মারুফ বিল্লাহ বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। কলেজ প্রশাসন আমাকে অব্যাহতি দিয়েছে। আমি কলেজ থেকে চলে এসেছি। এখন কী ঘটনা ঘটেছে, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।’ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবুল বাসার ভূঁঞা বলেন, ‘জাতীয় পতাকার স্ট্যান্ডে জুতা উত্তোলন, রাষ্ট্রদ্রোহী কাজের সমান। এই কাজ কখনোই আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম বলেন, ‘এই বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাইনি। তদন্তসাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ প্রসঙ্গত, গত ১৩ জানুয়ারি কলেজের ডিগ্রি শাখার মসজিদে তাবলিগের বিবদমান দুই পক্ষ মাওলানা সাদ ও জুবায়েরের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জেরে গত ২০ জানুয়ারি তাবলিগের সাপ্তাহিক তালিম সাময়িকভাবে বন্ধের ঘোষণা করেন কলেজের অধ্যক্ষ মো. আবুল বাসার ভূঁঞা। বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ দিনের মতবিরোধে ২১ জানুয়ারি বেলা ১১টা ২০ মিনিট থেকে দুপুর ১২টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করেন ইমাম মারুফ বিল্লার অনুসারীরা। এরপর ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ইমাম মো. মারুফ বিল্লাহকে নানান অভিযোগ তুলে অব্যাহতি দেয় কলেজ প্রশাসন। পরে ১৮ ফেব্রুয়ারি নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ইমামকে চাকরিচ্যুত করার পর থেকেই কলেজে সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রতি শুক্রবার নামাজের আগে ইমামকে বহালের দাবি করে আসছে স্থানীয় একটি পক্ষ। প্রতি শুক্রবারই শিক্ষকদের সাথে সংঘর্ষ বাঁধে স্থানীয়দের ও কলেজের শিক্ষার্থীদের একটি অংশের। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি কলেজের নামাজ শুরুর আগেই স্থানীয় কিশোর ও যুবকরা কলেজের অধ্যক্ষের ওপর হামলা করে। এ সময় তারা অধ্যক্ষের গায়ে আঘাত করে। পার্শ্ববর্তী নজরুল হলের শিক্ষার্থীরা পাশে দাঁড়াতে আসলে তাদের ওপর হামলা চালায় স্থানীয়রা। এ সময় পুলিশ আসলেও স্থানীয়দের হামলায় প্রথমে পিছু হটে পরে কলেজে ঢুকে।

বৈষম্যবিরোধী পরিচয়ে বাসায় ঢুকে চাকরিজীবীকে অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়

‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র প্রতিনিধি’ পরিচয়ে চট্টগ্রামের এক বেসরকারি চাকরিজীবীকে অপহরণ করেছে একদল লোক। অপহরণের পর ভুক্তভোগীর পরিবারের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ ও ১৫ লাখ টাকার একটি ব্যাংক চেক আদায় করেছে অপহরণকারীরা। অপহরণের শিকার আবেদিন আল মামুন চট্টগ্রাম সিটির ইপিজেড এলাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাকে আকবর শাহ থানাধীন সিডিএ আবাসিক এলাকার বাসা থেকে অপহরণ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র প্রতিনিধি পরিচয় দেওয়া একদল লোক। এ ঘটনায় জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তাররা হলেন নাজমুল আবেদিন, নইমুল আমিন ইমন (২২), আরাফাত হোসেন ফহিম (২২) ও রিসতি বিন ইউসুফ (২৩)। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) উপ-কমিশনার (পশ্চিম) হুসাইন মোহাম্মদ কবির ভূইয়া বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র প্রতিনিধি পরিচয়ে বৃহস্পতিবার রাতে নিজ বাসা থেকে তাকে (চাকরিজীবী আবেদিন আল মামুন) অপহরণ করে। এ সময় তার গাড়ি ও চালককে জোরপূর্বক নিয়ে যায়। এরপর পতেঙ্গা সাগরপাড় এলাকা ও পাহাড়তলীর কর্নেলহাট জোন্স রোড এলাকাসহ পাহাড়তলী এবং আকবর শাহ থানার বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাফেরা করে তারা। এই সময়ের মধ্যে ভিকটিমের স্ত্রীর কাছ থেকে মুক্তিপণের ৫ লাখ টাকা আদায় করে এবং ১৫ লাখ টাকার একটি ব্যাংক চেক লিখে নেয়। পরে ভিকটিমকে অ্যাপোলো ইম্পেরিয়াল হসপিটাল এলাকায় রেখে পালিয়ে যায় তারা। তিনি বলেন, ‘অপহরণের খবর পাওয়ার পর তাৎক্ষণিক অভিযানে জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য সহযোগীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আসামি নইমুল আমিন ইমনের বাসা থেকে মুক্তিপণের টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।’ আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘রাত দুইটার সময় ভিকটিমদের উদ্ধার করা হয়। পরবর্তী অভিযানে চার আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদের মধ্যে আসামি ইমনের বাসা থেকে মুক্তিপণের জন্য আদায় করা টাকা উদ্ধার করা হয়।’

মসজিদের চাল আত্মসাতের অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে, প্রতিবাদ করায় মারপিটে আহত ৫

পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলায় মসজিদের দুই মেট্টিক টন চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপির নেতার বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদ করায় তাদের হামলায় আহত হয়েছেন নারী শিশুসহ পাঁচজন। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত তিনজনকে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। শুক্রবার (৭ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার ফৈলজানা ইউনিয়নের কদমতলী মিনাজ মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতরা হলেন কদমতলী মিনাজ মোড় গ্রামের জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী সালমা খাতুন (৩৫), তার শিশু সন্তান সোহেল (১১) ও আলাউদ্দিন আলীর স্ত্রী আলপনা খাতুন (৩২)। অভিযুক্ত বিএনপির নেতা হলেন ফৈলজানা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম। আহত সালমা খাতুন জানান, মিনাজ মোড় জামে মসজিদের দুই টন চাল বরাদ্দ পাওয়া যায় সরকারিভাবে। সেই চাল বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করে সাইফুল ইসলাম, মতিন গং। তার প্রতিবাদ করেছিলেন আমার স্বামীসহ এলাকার অনেকে। সেই ক্ষোভে সকালে এসে তারা আমাদের বাড়িঘরে হামলা চালায়। তাদের বাধা দিতে গেলে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারপিটে আমাদের আহত করে। স্থানীয় বাসিন্দা লোকমান হোসেন (৬০) বলেন, ‘গত বুধবার (৫ মার্চ) দুপুরে উপজেলা থেকে দুইজন অফিসার আমাদের এলাকায় গিয়ে বলেন, মিনাজ মোড় জামে মসজিদে সরকারিভাবে ২ টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১৫ দিন আগে। পেয়েছেন কি না। কিন্তু আমরা কেউ কিছু জানি না। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি বিএনপির নেতা সাইফুল, মনিরুল ইসলাম, মসজিদ কমিটির ক্যাশিয়ার আব্দুল মতিন মিলে চাল তুলে বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তখন অফিসারের সামনে ক্যাশিয়ার মতিন বলেন, ‘তিনি টাকা পান নাই, এ বিষয়ে কিছু জানেনও না।’ বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দুপুরে গ্রামের মুসুল্লীরা ইউএনও অফিসে গিয়ে এ বিষয়ে অভিযোগ দেন। এ সময় খবর পেয়ে মসজিদ কমিটির ক্যাশিয়ার মতিন ইউএনওর অফিসে হাজির হয়ে সবার সামনে বলেন তারা চাল বরাদ্দ পেয়েছেন এবং তুলে বিক্রি করেছেন। চাল বিক্রির ৭০ হাজার টাকা দিতে স্বীকার করেন ইউএনওর সামনে। পরে টাকা মসজিদের তহবিলে জমা দিবেন বলেও জানান মতিন। ইউএনওর অফিসে অভিযোগ দেওয়ার জেরে ক্ষোভে শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে বিএনপির নেতা সাইফুল, তার সহযোগী মনিরুল, মসজিদের ক্যাশিয়ার মতিন, সাদিকুল, শামীম, জাহাঙ্গীরসহ ১৫-২০ জন অভিযোগকারীদের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় তাদের বাধা দিতে গেলে শিশু নারীসহ অনেককে মারধর ও বাড়ি ভাঙচুর করে। এতে ৫ জন আহত হয়। তার মধ্যে তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ বিষয়ে অভিযুক্ত ফৈলজানা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘মসজিদে টাকা আত্মসাতের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। চাল তুলে বিক্রি করেছিল মসজিদের ক্যাশিয়ার। সে তো স্বীকার করেছে যে, তার কাছে টাকা আছে। তাহলে তো কোন সমস্যা থাকার কথা না। ইতিপূর্বে টাকার জন্য ক্যাশিয়া কে ঐ পক্ষ মারধর করেছিল। সে কারণেও আজকের মারপিটের ঘটনা ঘটতে পারে। তবে আজকের মারপিটের ঘটনার সাথে আমি জড়িত নই। মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।’ চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুসা নাসের চৌধুরী বলেন, ‘বৃহস্পতিবার গ্রামবাসী একটি অভিযোগ দিয়েছেন। একই দিন মসজিদ কমিটির ক্যাশিয়ার মসজিদের তহবিলে টাকা দিয়ে দিবেন বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু আজকে মারধরের ঘটনাটি দুঃখজনক। ফৌজদারী অপরাধ হওয়ায় এখন আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সাবেক স্ত্রীর সাথে খালুর প্রেমের সম্পর্ক, ক্ষিপ্ত হয়ে ২ চোখ তুলেন সাদ্দাম

যশোরে নিজের খালুর দুই চোখ উপড়ে ফেলা সাদ্দামকে (৩২) আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দিবাগত গভীর রাতে শহরের পালবাড়ী এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতেই শহরের বকচর করিম তেল পাম্প এলাকায় সাদ্দাম তার খালু শহিদুল ইসলামের ওপর হামলা করে দুই চোখ উপরে ফেলে। শহিদুলকে গুরুতর অবস্থায় রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। আহত শহিদুল ইসলাম (৬০) বকচর করিম পাম্প কবরস্থান রোড এলাকার বাসিন্দা। সাদ্দাম (৩০) তার ভায়রা শাহ জামালের ছেলে। শুক্রবার (৭ মার্চ) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার (এসপি) নূর ই আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘দুই মাস আগে সাদ্দাম ও তার স্ত্রী পিয়ার সঙ্গে ডিভোর্স হয়। সেই সাবেক স্ত্রীর সঙ্গে তার খালু শহিদুল প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সাদ্দাম আঙ্গুল দিয়ে শহিদুলের দুই চোখ তুলে পালিয়ে যান।’ ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাদ্দাম জানান, সাবেক স্ত্রীর সঙ্গে খালুর প্রেমের সম্পর্কে ক্ষিপ্ত হন। পরে তার দুই চোখ তুলে নেন সাদ্দাম।’ নূর ই আলম বলেন, ‘আটক সাদ্দামকে হত্যা চেষ্টার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও এ ঘটনায় অন্য কোনো ঘটনা বা কেউ জড়িত আছে কি না, সেটা উদঘাটনে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আবুল বাশার, যশোর ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মঞ্জুরুল হক ভূঁইয়া প্রমুখ।

উল্টোপথে বিএনপির নেতার গাড়ি, ধমকের সুরে শিক্ষার্থীকে ‘শহরে থাকলে চিনতে হবে’

ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে উল্টোপথে গাড়িতে যাওয়ার সময় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফতেহ মোহাম্মদ রেজা রিপনকে আটকে দিয়েছে যানজট নিরসনের দায়িত্বে থাকা একদল শিক্ষার্থী। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওই বিএনপি নেতা শিক্ষার্থীদের শাসিয়েছেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে রেজা রিপন বলেন, ‘এই শহরে থাকতে হলে চিনতে হবে।’ সম্প্রতি সেই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে রেজা রিপনের গাড়িটি নারায়ণগঞ্জ চেম্বার ভবনের অল্প দূরে উল্টোপথে চাষাঢ়ার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় নারায়ণগঞ্জ চেম্বারের পক্ষে যানজট নিরসনে থাকা শিক্ষার্থীরা গাড়িটি আটকে দেন। তখন রেজা রিপন এক ছাত্রকে ডেকে বলেন, ‘কী সমস্যা?’ উত্তরে ছাত্রটি বলে, ‘এটি উল্টো দিক দিয়ে যাওয়ার গাড়ি না তো।’ এরপর রেজা রিপন বলেন, ‘তোমরা চেম্বার অব কমার্সের না? সোহেলকে (চেম্বার অব কমার্সের সহসভাপতি) ফোন করো। ফোন করে জিজ্ঞেস করো হু আই অ্যাম? আমি এখান দিয়েই যাবো, সরো।’ এটি বলে তিনি গাড়ির গ্লাস উঠিয়ে দিয়ে চলে যেতে চান। উত্তরে ছাত্রটি বলে, ‘চেম্বার অব কমার্সের হলেও আমরা ছাত্র। সবার জন্য আইন সমান।’ চাষাঢ়াগামী রাস্তা দেখিয়ে তা সম্পূর্ণ ঠিক আছে বলেও জানায়। এর মধ্যে রেজা রিপনের পক্ষে বিএনপি এক কর্মী এসে ছাত্রদের সঙ্গে তর্কে লিপ্ত হয়। ওই সময় রেজা রিপনকে বলতে শোনা যায়, ‘এই শহরে থাকতে হলে চিনতে হবে।’ গাড়ি আটকানো ছাত্রটি তখন ‘এটা বললে তো আর কিছু বলার নেই’ বলে গাড়িটি ছেড়ে দেন। শিক্ষার্থীদের যানজট নিরসনের মনিটরিংয়ের দায়িত্ব রয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নারায়ণগঞ্জ মহানগরের আহ্বায়ক মাহফুজ খান। তিনি বলেন, ‘এই ঘটনাটি দ্বিতীয় রমজানের। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্প্রতি ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে এ ঘটনা ঘটে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ওই বিএনপি নেতা শিক্ষার্থীদের সাথে তর্কবিতর্ক শেষে ওই দিন উল্টোপথেই বাসায় ফেরেন। উল্টোপথে আসার কোন যৌক্তিকতাই নাই, সেটা যেই হোক না কেন। তা ছাড়া ওই বিএনপির নেতার এ ধরনের আচরণ কোনোভাবেই শোভনীয় নয়। দায়িত্বশীল একজন ব্যক্তির কাছ থেকে এ ধরনের আচরণ এবং কর্মকাণ্ড আশা করা যায় না।’ এ বিষয়ে জানতে ফতেহ মোহাম্মদ রেজা রিপনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, ‘ওই দিন রেজা রিপন বাসায় ফেরার পথে এ ঘটনা ঘটেছিল। যতদূর জানতে পেরেছি, তার বাসায় ফেরার খুব তাড়া ছিল। এ কারণে উল্টোপথে যেতে চেয়েছিল। তবে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করা উচিত হয়নি। এ বিষয়টি নিয়ে আমি তার সাথে কথা বলবো।’ নারায়ণগঞ্জ চেম্বারের সিনিয়র সহসভাপতি ও বিকেএমইএর সহসভাপতি সোহেল সারোয়ার বলেন, ‘এটা একটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। আমরা সবাই যানজট নিরসনে সহযোগিতা করবো।’

দিরাই-শাল্লায় ১১ বিলে দশ কোটি টাকার মাছ লুট

বিএনপির নেতাদের অংশীদার করেও জলমহাল রক্ষা করতে পারছেন না দিরাই-শাল্লার আওয়ামী লীগ ঘরানার ইজারাদাররা। গত ছয় দিনে সুনামগঞ্জের এই দুই উপজেলার ১১ বিলে লুটপাট হয়েছে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সকালেও হালুয়া খাটুয়া ও দিরাই চাতল বিল লুট করেছে কয়েক হাজার মানুষ। এসব বিল থেকে কমপক্ষে ১০ কোটি টাকার মাছ লুট হয়েছে বলে দাবি জলমহাল ইজারাদারের। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দিরাইয়ের কামান বিলে মাছ লুটপাটের মধ্য দিয়ে জলমহাল লুটের উৎসব শুরু হয় দিরাই-শাল্লা উপজেলায়। কাগজপত্রে এই বিলের ইজারাদার চরনারচর বিএম মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড। সমিতির নামে ইজারা থাকলেও এই জলমহালের মালিক হিসেবে পরিচিত দিরাই পৌরসভার সাবেক মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা মোশারফ মিয়া ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জয় কুমার বৈষ্ণব। সম্প্রতি কামান বিলের জলমহালের মাছ আহরণের প্রক্রিয়া শুরু করেছিল ইজারাদার পক্ষ। এর মধ্যেই শুক্রবার ৭ মার্চ) ভোরে পাশের নোয়াগাঁও, কার্তিকপুর, মাইতি, হাসনাবাদ, শ্যামারচর, আটগাঁও, মির্জাপুরসহ বিভিন্ন গ্রামের হাজারো মানুষ জড়ো হয়ে জলমহালে মাছ ধরা শুরু করে। এভাবে গেল ছয় দিনে একে একে উদীর হাওর (মুরগা নদী), সউত্বা, জয়পুর-আতনি, বেতইর নদী, লামা বেতইর, হালুয়া-ঘাটুয়া, দিরাই-চাতল, কলকলিয়া, বড়গাঁও-ইয়ারাবাদ গ্রুপ ও জোয়ারিয়া বিলে লুটতরাজ চালায় তারা। চরনারচর বিএম মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি সুধীর বিশ্বাস জানান, বছরে এ জলমহালে বার্ষিক ৫০ লাখ টাকা রাজস্ব জমা দেন তারা। এবার নিয়ে ছয় বছর হয় বিলের ইজারায় রয়েছে তাদের সমিতি। ইজারা নিতে অনেক টাকার প্রয়োজন, এ জন্য ‘বছর-বছর চুক্তিতে’ আওয়ামী লীগ নেতা মোশারফ মিয়া ও জয় কুমার বৈষ্ণবকে শরিক রেখেছেন তারা। শুক্রবারের ঘটনায় বিল থেকে দুই থেকে আড়াই কোটি টাকার মাছ লুট হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। উদীর হাওরের ইজারাদার সুধীর রঞ্জন দাস বলেন, ‘১৮ বছর হয় বিলের ইজারাদার তাদের সমিতি। এ বছর ৯০ লাখ টাকা ইজারামূল্য ছিল। ইতোমধ্যে এক কোটি টাকার মাছ তারা আহরণ করেছেন। লুট হয়েছে কমপক্ষে তিন কোটি টাকার মাছ। এই লুটপাটে কমপক্ষে ২০ গ্রামের মানুষ ছিল।’ এমনকি আওয়ামী লীগের কিছু সমর্থককেও জলমহাল লুটপাটে অংশ নিতে দেখা গেছে বলে জানান তিনি। এক প্রশ্নের জবাবে সুধীর রঞ্জন দাস বলেন, ‘তাদের জলমহালে দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়ের পুঁজি রয়েছে।’ জয়পুর-আতনি জলমহালের ইজারাদার জয়পুর আতনি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড। চলতি বছর ভ্যাটসহ ৮৬ লাখ টাকায় জলমহাল ইজারা নেয় এই সমবায় সমিতি। গত কয়েক দিনে এখান থেকে ৫ কোটি টাকার মাছ লুট হয়েছে বলে দাবি করেন ইজারা সমিতির সভাপতি বিকাশ রঞ্জন দাস। জানা গেছে, এই বিলে পুঁজি বিনিয়োগ করেছেন দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়। শাল্লার আটগাঁওয়ের ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য রাহুল দাস জানালেন, তাদের এলাকার লুট হওয়া বিলের ইজারাদার সমিতির সঙ্গে অংশীদার ছিলেন দিরাই উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মঞ্জুর মিয়া চৌধুরী ও আওয়ামী লীগ নেতা শাজাহান কাজী। বিভিন্ন জলমহাল লুটের ধরনের ঘটনাকে বিগত সময়ে সরকারদলীয়দের অত্যাচারে অতিষ্ঠ মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় বিএনপির নেতারা। দিরাই উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দিরাই-শাল্লার সাবেক সাংসদ নাছির উদ্দিন চৌধুরীর ছোট ভাই মইনুদ্দিন চৌধুরী মাসুক বলেন, ‘গেল ১৫ বছর যারা অত্যাচার-নির্যাতন, শাসন-শোষণ করে মানুষকে অতিষ্ঠ করেছিল, তাদের প্রতি মানুষ ক্ষুব্ধ। আওয়ামী লীগ নেতাদের জলমহাল লুটে এর বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে সবাই।’ সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক উপদেষ্টা, বর্তমানে দিরাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য তাহির রায়হান চৌধুরী পাভেলের ভাষ্য, জলমহাল লুট শুরু করেছে অন্য উপজেলার লোকজন। পরে দিরাইয়ের বিভিন্ন গ্রামের মানুষ উৎসবের মতো পলো বাওয়া শুরু করে। এমনও হয়েছে, ৫০০ টাকার মাছ ধরতে পাঁচ হাজার টাকা খরচ করেছেন উৎসাহীরা। লুটপাটে বিএনপির কেউ জড়িত নয় দাবি করে তাহির রায়হান চৌধুরী বলেন, ‘জলমহাল লুটের ঘটনায় দিরাই-শাল্লার মানুষের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।’ জলমহালের ইজারায় শরিক বিএনপির কেউ কেউ থাকতেই পারেন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘টাকা থাকলে ব্যবসায় বিনিয়োগ করা অপরাধের কিছু দেখছি না।’ জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, ‘জলমহাল লুটপাটের ঘটনায় ইজারা কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। ইজারাদাররা যদি মামলা করেন, আমরা আইনানুগভাবে শক্ত ব্যবস্থা নেব। যাতে এ ধরনের দুষ্কৃতিকারীরা ছাড় না পায়। লুটের আশঙ্কায় থাকা অন্য বিলগুলোর দিকে নজর রাখতে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও গ্রাম পুলিশকে বলা হয়েছে। স্থানীয় চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কেউ যাতে এ ধরনের ঘটনায় যুক্ত না হন এবং রাষ্ট্রের রাজস্বের ক্ষতি না করেন।’

বাপেরই জন্ম হলো না, সন্তানের জন্ম হবে কী করে: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘আইনগুলো আইনিকরণ করতে গেলে তো নির্বাচনী সরকার দরকার। নির্বাচিত সরকার না হলে কি করে এটা সম্ভব? সম্ভব নয়। এ জন্য আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দরকার। তার পরে না হয় স্থানীয় সরকার নির্বাচন। কারণ বাপেরই জন্ম হলো না, সন্তানের জন্ম হবে কী করে?’ শুক্রবার (৭ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী নগরীর সাহেববাজারে ভুবনমোহন পার্কে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’র আয়োজনে চব্বিশের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান ও ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে রাজশাহীতে আহত ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের শহিদ পরিবারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এসব কথা বলেন। রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমাদের চূড়ান্ত গণতন্ত্র এখনও ফিরে আসেনি। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা না হলে কোনো মানুষের মুক্তি মিলবে না। আজকে সংস্কারের কথা যারা বলছেন, এই জিনিসটি সংস্কার করতে কতদিন সময় লাগে? পুলিশ আচরণ করবে আইন অনুযায়ী। পুলিশ কোনো ক্ষমতাশালী লোকের কথা শুনবে না। গুম, হত্যা, বেআইনি কাজ হোক আইন অনুযায়ী তাকে গ্রেপ্তার করবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘সংস্কার করতে কত দিন সময় লাগে? আর বিভিন্ন কমিশন যে করা হয়েছে, সেই কমিশন রিপোর্ট দিয়েছে। এটা মার্চ মাস। নির্বাচনের জন্য গড়িমসি কেনো? আবার শুনি কেউ কেউ বলছেন- এটাও পিছিয়ে দিতে হবে। এই সময়ে নির্বাচন করা কঠিন। নির্বাচন তো করবে নির্বাচন কমিশন। তাকে সহায়তা দেবে সরকার।’ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘অন্তবর্তী সরকারকে আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার মনে করি। ইউনূস সাহেবের নেতৃত্বে এই সরকার। আমরা মনে করি তারা ন্যায়সংগত আচরণ করবে জনগণের সঙ্গে, রাজনৈতিক দলের সঙ্গে। কারণ ড. ইউনূস সাহেব দেশের একজন অন্যমত স্বনামখ্যাত একজন সন্তান। তিনি নিজেই আন্তর্জাতিক সম্মান নিয়ে এসেছেন। তার থেকে আমরা বেআইনি আচরণ পাব না। কিন্তু তারপরেও দেখি সরকারের ঘনিষ্ঠ কেউ কেউ বলছেন- ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করা কঠিন। কেনো কঠিন হবে? ইতোমধ্যে তো প্রায় ছয় থেকে সাত মাস চলে গেল। এখনও ৯-১০ মাসের মতো বাকি আছে। নির্বাচন করতে এতো সময় লাগবে কেনো?’ তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচন তো শেখ হাসিনা ১৫ বছর আটকে দিয়েছিলেন। ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার আগেই তাদের ভোট দেওয়া হয়ে গেছে। দিনের ভোট রাতে হয়েছে। রাতের ব্যালট বাক্সগুলো পরিপূর্ণ করা হয়েছে। আমাদের নির্বাচনী ব্যবস্থা, নির্বাচনী প্রতিষ্ঠান, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান সবগুলো পা দিয়ে দুমড়ে-মুচড়ে শেষ করে দিয়েছেন শেখ হাসিনা। আমাদের সেখান থেকে ফিরে আসতে হলে এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে সজীব করতে হবে, প্রাণবন্ত করতে হবে। এগুলোর জন্য এতো গড়িমসি কেনো? নির্বাচন কমিশন যদি সঠিকভাবে কাজ করে তাহলে ডিসেম্বরের মধ্যে, ডিসেম্বর কেনো জুনের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব।’ রিজভী বলেন, ‘এ দেশের জনগণ দেড় যুগ ধরে নির্বাচনে ভোট দিতে পারে না। আর এটা নিয়ে গড়িমসি করা হলে জনগণের মনে তো সন্দেহ জাগবে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি। কোনো এই গড়িমসি করা হচ্ছে। আজকে কেউ কেউ বলছে যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, আরেকটা হচ্ছে গণপরিষদ নির্বাচন একসঙ্গে করতে হবে। এগুলো তো আমরা বুঝতে পারছি। গণপরিষদ হয় যখন একটা দেশ স্বাধীন হয়। যেখানে সংবিধান থাকে না, কোনো ধরনের আইনকানুনের বিষয় থাকে না। তখন গণপরিষদ হয়।’ আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুম্মানের সভাপতিত্বে ও মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব মামুন অর রশিদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈশা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ, সদস্যসচিব বিশ্বনাথ সরকার উপস্থিত ছিলেন।

চট্টগ্রামে ‘ক্লিন বাংলাদেশ প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ কর্নার’ চালু

জলাবদ্ধতা ও প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলায় ক্লিন বাংলাদেশের উদ্যোগে এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) সহযোগিতায় যাত্রা শুরু করল “প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ কর্নার”। রমজান উপলক্ষ্যে চালু হওয়া এই বিশেষ কর্মসূচির মাধ্যমে ব্যবহৃত প্লাস্টিক ও পলিথিনের বিনিময়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য বিতরণ করা হচ্ছে। সিটির চকবাজার কাঁচাবাজারের সামনে শুক্রবার (৭ মার্চ) আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চসিকের মেয়র শাহাদাত হোসেন। উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এমদাদুল হক বাদশা, রাজনীতিবিদ মনিরুল ইসলাম ইউসুফ। অনুষ্ঠান ক্লিন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা শওকত হোসেন জনি বলেন, ‘আমাদের শহরের অন্যতম প্রধান সমস্যা হলো প্লাস্টিক বর্জ্য ও জলাবদ্ধতা। আমরা জানি, নালা ও ড্রেনগুলো প্লাস্টিকের কারণে বন্ধ হয়ে যায়, যার ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। আমরা চেয়েছি সমস্যার একটি কার্যকর সমাধান দিতে- যেখানে পরিবেশ রক্ষা ও মানবিক সহায়তা একসাথে করা যায়। তাই, ‘প্লাস্টিক আনুন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নিন’ এই ধারণা নিয়ে আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি। এটি শুধু প্লাস্টিক দূষণ রোধ করবে না, বরং নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য রমজানের সময়ে সহায়তা হিসেবে কাজ করবে।’ শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘পরিবেশ রক্ষা ও জলাবদ্ধতা সমস্যা সমাধানে আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা দরকার। ক্লিন বাংলাদেশের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। কারণ এটি জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি নগর পরিচ্ছন্নতার জন্য একটি বাস্তবসম্মত সমাধান দিচ্ছে। আমরা চাই, এই কার্যক্রম আরও সম্প্রসারিত হোক এবং নগরবাসী প্লাস্টিক বর্জ্যের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে আরও সচেতন হোক।’ রমজান মাসব্যাপী প্রতি শুক্রবার ও শনিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত নগরীর চকবাজার, বহদ্দারহাট ও আগ্রাবাদ কাঁচাবাজারের সামনে এই কার্যক্রম চলবে। ব্যবহৃত প্লাস্টিক ও পলিথিন জমা দিয়ে চনা, ছোলা, খেজুর, ছিড়া, আলু, পেঁয়াজ ও ডিমসহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য নিতে পারবেন সাধারণ জনগণ। এই আয়োজন সফলভাবে পরিচালনা করছেন ক্লিন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক তানভীর রিসাত ও টিম লিড করছে ইমন, আলভি, জাহিদ, প্রমি, তানজিফা। পাশাপাশি সদস্য হিসেবে কাজ করছে সাকিব, ইয়াজ, মুনতাসির, পার্থ। ক্লিন বাংলাদেশ আশা করছে, এই উদ্যোগ নগরবাসীর মধ্যে প্লাস্টিক ব্যবহারের কুফল সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করবে এবং পরিবেশবান্ধব অভ্যাস গড়ে তুলতে সহায়তা করবে।

গণপিটুনিতে নিহত নেজাম ও ছালেকের সহযোগীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলা

চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া উপজেলায় গণপিটুনিতে নিহত হন নেজাম উদ্দিন ও আবু ছালেক নামের দুইজন। তাদের মধ্যে নেজামের মরদেহের পাশে অত্যাধুনিক ও প্রাণঘাতী একটি পিস্তল পাওয়া যায়। যেটি চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানা থেকে লুট হয়েছিল। এ ঘটনায় বুধবার (৫ মার্চ) সাতকানিয়া থানায় অস্ত্র আইনে মামলা করেছে পুলিশ। থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. নাজমুল হাসান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। এতে পাঁচ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। মামলার আসামিরা হলেন কাঞ্চনা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কবির আহাম্মদের ছেলে আলমগীর (২০), ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুস সাত্তারের ছেলে ফরহাদ (৪০), ৮ নম্বর ওয়ার্ডের আলমগীরের ছেলে মো. ফারুক প্রকাশ কালা ফারুক, উত্তর কাঞ্চনা দীঘির পাড় এলাকার গুরা মিয়ার ছেলে সাইফুদ্দীন প্রকাশ সাবু এবং এওচিয়া ইউনিয়নের চুড়ামণি এলাকার আব্বাস উদ্দিনের ছেলে সিএনজিচালক হারুন। আসামিরা সবাই নেজাম ও ছালেকের সহযোগী এবং তারা ওই দিন এলাকাবাসীর ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়। এজাহার ও পুলিশের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, নেজামের মরদেহের পাশে থেকে উদ্ধার করা পিস্তলটি ‘টরাস টিএইচ’ মডেলের ৯ মিলিমিটার ক্যালিবারের পিস্তল। টিকেইউ৩৯১৬১ নম্বরের পিস্তলটি বডির ওপরের অংশের এক পাশে টরাস বিপি- ২০১৭ মিটিসি মেড ইন ব্রাজিল এবং অপরপাশে টিএইচ৯ ৯এক্স১৯ লেখা আছে। সিরিয়াল মিলিয়ে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে অস্ত্রটি নগরের কোতোয়ালি থানায় ব্যবহৃত হতো। ৪ দশমিক ২৭-ইঞ্চি ব্যারেল ও অ্যাডজাস্টেবল টু-ডট রিয়ার সাইট সুবিধার কারণে আধা স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রটি দিয়ে নিখুঁত লক্ষ্যে গুলি করা যায়। মাত্র ৬ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের পিস্তলটির সঙ্গে দুটি ম্যাগাজিন থাকায় এতে ১৭-রাউন্ড গুলি রাখা যায়, যা দিয়ে অনেকক্ষণ শুট করা যায়। বিশেষায়িত পিস্তলটি তৈরি হয় ব্রাজিলের সাও পাওলোর কারখানায়। এ ছাড়া গুলির পাশে প্রাপ্ত ছয়টি গুলির খোসার পেছনের অংশে ইংরেজিতে এনআর বিপি ২০২০ লেখা আছে। সেদিনের ঘটনার বিষয়ে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ৩ মার্চ রাত ৯টা ৪৫ মিনিটের দিকে আবু ছালেক ও মো. নেজাম উদ্দিনের নেতৃত্বে আসামিরাসহ অজ্ঞাতনামা ১৪-১৫ জন অস্ত্রধারী হেলমেট পরিহিত অবস্থায় আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে ৬-৭টি সিএনজিযোগে ছনখোলা পশ্চিম পাড়া বাজারে ঘোরাফেরা করে। স্থানীয় লোকজন ডাকাত সন্দেহে আসামিদের ধাওয়া করলে আসামিরা তাদের হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি করতে করতে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন আবু ছালেক ও নেজাম উদ্দিনকে আটক করে। আসামিদের ছোঁড়া গুলিতে এওচিয়ার ছনখোলা ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ওবায়দুল (২০), নাছির (৩৫), আব্বাস (৩০), মামুন (৪০), সাইদ (২৪) গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়। স্থানীয় লোকজন আহত হওয়ার কারণে উপস্থিত লোকজনদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এরপর উত্তেজিত জনতা আবু ছালেক ও নেজাম উদ্দিনকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে ও লাঠিসোঁটা দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে এবং আসামিদের ফেলে যাওয়া সিএনজিটি ভাঙচুর করে পাশের পুকুরে ফেলে দেয়। উত্তেজিত জনতার মারধরের ফলে ঘটনাস্থলে আবু ছালেক ও নেজাম উদ্দিন মৃত্যুবরণ করেন। অবস্থা বেগতিক দেখে এজাহারনামীয় ১-৬ নম্বর আসামিসহ অজ্ঞাতনামা ১৪-১৫ জন কৌশলে গুলি বর্ষণ করতে করতে ঘটনাস্থল থেকে সিএনজিযোগে রাতের অন্ধকারে পালিয়ে যাওয়ার সময় এজাহারনামীয় ৬ নম্বর আসামির চালিত অজ্ঞাত নম্বরের সিএনজি এবং তাদের ব্যবহৃত জব্দ করা আগ্নেয়াস্ত্রটি ঘটনাস্থলে ফেলে যায়। মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, স্থানীয়ভাবে তদন্তকালে জানা যায়, এজাহারনামীয় আসামিদের স্বভাব-চরিত্র ভালো নয় এবং তারা মৃত আবু ছালেক ও মৃত মো. নেজাম উদ্দিনের সহযোগী মর্মে এলাকায় জনশ্রুতি রয়েছে। আসামিরা ইতোপূর্বেও ঘটনাস্থল এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের নিমিত্তে সশস্ত্র মহড়া দিয়েছে বলে জানা যায়। মৃত আবু ছালেক ও নেজাম উদ্দিনের নেতৃত্বে এজাহারনামীয় ১ থেকে ৬ নম্বর আসামিরাসহ অজ্ঞাতনামা ১৪-১৫ জন আসামি পরস্পর যোগসাজশে ও জ্ঞাতসারে অস্ত্রশস্ত্র নিজেদের হেফাজতে রেখে ‘দ্য আর্মস অ্যাক্ট ১৮৭৮’-এর ‘১৯এ’ ধারার অপরাধ করেছে। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সাইফুল ইসলাম সানতু নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের জানান, গণপিটুনির ঘটনায় অনেকে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কথা বলছেন। ঘটনার সময় বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের কোনো ব্যক্তি বা চেয়ারম্যানের উপস্থিতি ছিল কি না, প্রশ্ন তুলেছেন। আসলে আমরা এ ধরনের কারো উপস্থিতি খুঁজে পাইনি। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তার ও অভ্যন্তরীণ বিরোধের কারণে খুন হন নেজাম ও ছালেক। ঘটনার দিন তারা সাতটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে সেখানে গিয়ে ব্যবসায়ীদের অস্ত্র প্রদর্শন করেছিলেন। তারা চাঁদার জন্য নিয়মিত সেখানে যেতেন বলে পুলিশ তথ্য-প্রমাণ পেয়েছে। ৪-৫ দিন আগেও তারা সেখানে গিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের এক ওয়ার্ড সদস্যের স্ত্রীকে থাপ্পড় মেরেছিলেন। যে কারণে জনগণের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তিনি বলেন, ‘সাতকানিয়ায় মারা গেছেন নেজাম ও ছালেক। ছালেকের বিরুদ্ধে আটটি মামলা রয়েছে, তার মধ্যে দুইটি হত্যা। এ ছাড়া চুরি ও বিস্ফোরক আইনেও মামলা আছে। নেজামের বিরুদ্ধেও মামলা রয়েছে। তাদের গতিবিধি যদি আমরা পর্যবেক্ষণ করি, বিগত তিন মাসে ওই এলাকায় তারা বিভিন্ন কাজে গিয়েছেন অন্তত আট বার। ঘটনার দিন তারা সাতটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা যোগে গিয়েছিলেন। সেখানকার দোকানদারদের অস্ত্র প্রদর্শন করেছেন।

মাগুরায় শিশু ধর্ষণের ঘটনায় দুলাভাই-তালই আটক

মাগুরায় বোনের বাড়ি বেড়াতে এসে ধর্ষণের শিকার শিশুটির বোনের শ্বশুর হিটু শেখ (৫০) ও তার স্বামী সজীব শেখকে (১৮) আটক করেছে পুলিশ। শুক্রবার (৭ মার্চ) ভোরের দিকে সজীব শেখ ও বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দুপুরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা যৌথ অভিযান চালিয়ে হিটু শেখকে আটক করে। বিষয়টি নিশ্চিত করে মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. মিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘এরইমধ্যে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থল এবং হাসপাতালে গিয়ে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করেছে। শিশু ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত হিটু শেখ ও সজিব শেখকে আটক করা হয়েছে।’ ‘মাগুরা জেলা পুলিশ অপরাধ দমনে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ পুলিশ জানায়, মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার বাসিন্দা ধর্ষণের শিকার শিশু। সে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। রমজান ও ঈদের ছুটিতে স্কুল বন্ধ থাকায় কয়েক দিন আগে বড় বোনের বাড়ি মাগুরা শহরে বেড়াতে আসে। বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ির পাশে তাকে রক্তাক্ত অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন পরিবারের সদস্যরা। পরে তাকে মাগুরা ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে শিশুটি আশঙ্কাজনক অবস্থায় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন। শিশুটির ছোট চাচা বলেন, ‘চার-পাঁচ মাস আগে বড় ভাতিজিকে বিয়ে দেওয়া হয়। সুযোগ পেলে তার শ্বশুর হিটু শেখ তাকেও বিভিন্ন সময় উত্ত্যক্ত করতেন বলে শুনেছি। যে কারণে বড় ভাতিজি বাপের বাড়িতে চলে এসেছিল। পরে তাকে বুঝিয়ে আবার শ্বশুরবাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।’ মাগুরা সদর হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট গাইনি ওয়ার্ডের ডাক্তার শিরিন সুলতানা বলেন, ‘শিশুটির অবস্থা ভালো নয়। তার শরীরে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে।’

সম্পত্তির জন্য পিতা-মাতাকে কুপিয়ে জখম, ছেলে আটক

খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলায় পারিবারিক কলহের জেরে বৃদ্ধ বাবা-মাকে কুপিয়ে জখম করেছেন মাদকাসক্ত ছেলে। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দিনগত রাত পৌনে ১টার দিকে মাটিরাঙ্গার বেলছড়ি ইউনিয়নের ক্যাম্পটিলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন আব্দুর রহিম (৭০) ও তার স্ত্রী আমেনা বেগম (৬০)। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ছেলে আবুল কালাম কালনকে (৩৮) আটক করে পুলিশে দিয়েছেন স্থানীয়রা। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্র জানায়, দীর্ঘ দিন ধরেই সম্পত্তির ভাগ চেয়ে মা-বাবার ওপর মানসিক নির্যাতন করে আসছিলেন ছেলে আবুল কালাম। ঘটনার দিন রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাড়িতে ফিরে আবারও সম্পত্তির ভাগ-ভাটোয়ারা চেয়ে মা-বাবার টাকার জন্য চাপ দেন। তারা টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ক্ষিপ্ত হয়ে ধারালো দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করেন আবুল কালাম। এ সময় আহতদের চিৎকারে স্বজনসহ প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তাদের উদ্ধার করে মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। পরে সেখান থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মাটিরাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তফিকুল ইসলাম তৌফিক বলেন, ‘এ ঘটনায় পরবর্তী আইনগত প্রক্রিয়া চলমান।’

এক বছর ধরে কিশোরীর ওপর অমানবিক নির্যাতন, মামা-মামি আটক

১৬ বছর বয়সী কিশোরী রোজিনা আক্তার। প্রায় এক বছর ধরে মামার বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করছে। আর পুরো এ সময়টা পরিবার থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাখা হয় রোজিনাকে। বাসায় থাকার নামে তার ওপর দিনের পর দিন চলে নির্যাতন। সারা শরীরে জখমের চিহ্ন। থেঁতলে ফেলা হয়েছে সামনের দুই পায়ের আঙুল। হাত-পা-পিঠে কাটা দাগ ও আগুনের ছেঁকা। রোজিনার শরীরের ক্ষতচিহৃ দেখে যে কারও গা শিউরে উঠবে। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) বিকেলে চাঁদপুর শহরের বিষ্ণুদী মাদরাসা রোড এলাকার একটি ভবনের চারতলা থেকে স্থানীয়রা উদ্ধার করেন রোজিনাকে। পরে পুলিশ এসে অভিযুক্তদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পরে সেই অমানবিক নির্যাতনের বর্ণনা দেয় ওই কিশোরী। রোজিনা চাঁদপুর সদর উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়নের চৌরাস্তা এলাকার আহমদ ভূইয়ার মেয়ে। স্থানীয় যুবক মোরশেদ আলম, হেলাল ও বেলাল জানান, মাদরাসা রোডে ৪-৫ মাস ধরে ভাড়া থাকছেন রোকেয়া-রুবেল দম্পতি। তাদের দুই সন্তান। একজন প্রতিবন্ধী। মূলত তাদের দেখাশোনা ও বাড়ির কাজ করার জন্য আপন ভাগিনিকে নিয়ে আসেন রুবেল। কিন্তু রুবেল ও তার স্ত্রী মেয়েটাকে দিনের পর দিন অমানবিক নির্যাতন করে গেছেন। তারা আরও বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দুপুরে নির্যাতন থেকে বাঁচতে দরজা খুলে পালিয়ে যায় ওই কিশোরী। পরে স্থানীয় এক খালা তাকে দেখতে পেয়ে বাসায় নিয়ে যান। পরবর্তী এলাকার লোকজন ওই ভবনে ঢুকে তালা লাগিয়ে দেন। ওই সময় বাসায় শুধু রুবেল ছিলেন। তার স্ত্রী ছিলেন বাইরে। আমরা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ তাকে আটক করে নিয়ে যায়। পরে তার স্ত্রী থানায় এলে তাকেও আটক করা হয়।’ এদিকে এক বছর পর মেয়ে রোজিনার শরীরের আঘাতের চিহ্ন দেখে থানার মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন বাবা আহমদ ভূইয়া। পাশাপাশি মেয়েও কান্নায় ভেঙে পড়ে। কিশোরীর বাবা আহমদ ভূইয়া বলেন, ‘আমার মেয়েকে আমার আপন শ্যালক এক বছর আগে নিয়ে এসেছে। এই এক বছরে মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে দেয়নি। আমার মেয়েকে বাড়িতে আনার কথা বললে রুবেল আজকাল বলে এক বছর পার করে দেয়। আমার মেয়েকে এভাবে দেখতে হবে জীবনে কল্পনাও করিনি। তারা আমার মেয়েকে শেষ করে ফেলেছে। মেয়ের পুরো শরীরে আঘাতের চিহ্ন। আমি এর বিচার চাই।’ নির্যাতনের শিকার কিশোরী জানায়, মামা-মামি প্রতিদিন নির্যাতন করতেন। দা, ছুরিসহ বিভিন্ন জিনিস দিয়ে শরীরে আঘাত করতেন। ব্লেড ও দা দিয়ে পিঠ কেটে ফেলেন। মাঝে মধ্যে গরম খুন্তি দিয়ে ছেঁকা দিতেন। পায়ের আঙুলগুলো থেঁতলে দেওয়া হয়েছে। পেটানোর কারণে দুই হাত ফুলে গেছে। ঠিকমতো খাবারও দিতেন না। কিছু হলেই নির্যাতন করা হতো। রোজিনা বলে, ‘আজকে (বৃহস্পতিবারি) মামি বাসায় ছিল না। তাই মামাকে ফাঁকি দিয়ে দরজা খুলে বের হয়ে যাই। আমার মামি আমার সঙ্গে যা করেছে, তার বিচার চাই।’ চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বাহার মিয়া বলেন, `অভিযুক্ত দুইজনকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত ও আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে ‘ধর্ষণের শিকার’ শিশু, আটক দুই

মাগুরায় বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ৮ বছরের এক শিশু ‘ধর্ষণের শিকার’ হয়েছে। এ ঘটনায় শিশুটির বোন জামাই ও বোনের শ্বশুরকে আটক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। জানা যায়, ঘটনার পর শিশুটিকে প্রথম অচেতন অবস্থায় ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে ওই অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আজ সকালে শিশুটিকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। শিশুটির মা জানান, বোনের বাড়িতে মেয়েকে ঘরের মধ্যে একা পেয়ে কেউ একজন ধর্ষণ করেছে। যেহেতু ওই সময় বাড়িতে সে একা ছিল আর এখনও মেয়ের জ্ঞান ফেরেনি তাই তাকে কে ধর্ষণ করেছে তা সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। মাগুরা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সুবাস রঞ্জন হালদার বলেন, ‘তাকে প্রথমে শ্বাসকষ্টের রোগী হিসেবে শিশুটিকে নিয়ে আসা হয়। পরে মেডিসিন বিভাগে নিয়ে গেলে ধর্ষণ আর হত্যা চেষ্টার আলামত পাওয়া যায়। মেয়েটির অবস্থা শঙ্কামুক্ত নয়। সে কারণে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মাগুরা সদর থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) আয়ুব আলী বলেন, ‘৮ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে শিশুটির বোন জামাই ও বোনের শ্বশুরকে আটক করেছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’ এদিকে শিশুটির পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। তার অবস্থার অবনতি হলে বৃহস্পতিবার ফরিদপুর মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার আরও অবনতি ঘটলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়েছে।

মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের অভিযোগে এএসআই বরখাস্ত

চাঁপাইনবাবগঞ্জে মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের অভিযোগে ফিরোজ রানা নামের পুলিশের এক উপপরিদর্শককে (এএসআই) সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দুপুরে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়। ফিরোজ রানা চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত ছিলেন। এর আগে বুধবার (৫ মার্চ) দিনগত গভীর রাতে উপজেলার ঝিমিল ইউনিয়নের হোসেন ডাইং এলাকায় এএসআই ফিরোজ দুইজনকে সঙ্গে নিয়ে একটি মোটরসাইলেক ছিনতাই করেন বলে জানান স্থানীয়রা। গ্রামবাসী জানতে পেরে তাদের ধাওয়া করে। এ সময় এএসআই ফিরোজের সঙ্গে থাকা দুই ব্যক্তি পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও জনতার হাতে ধরা পড়েন ফিরোজ। খবর পেয়ে রাত ১১টার দিকে ফিরোজকে উদ্ধার করে থানা নিয়ে আসে পুলিশ। চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার রেজাউল করিম বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে আমরা জেনেছি, তিনজন সোর্সসহ মাদক উদ্ধারে গিয়েছিলেন এএসআই ফিরোজ। এ সময় মোটরসাইকেল থামাতে বললে তিনি ছিনতাইকারী বলে চিৎকার দেন। এ সময় এলাকাবাসী ধাওয়া করলে সোর্সরা পালিয়ে যায় কিন্তু নতুন হওয়ায় ফিরোজ পুলিশের পরিচয় দিয়ে সেখানে অবস্থান করেন ‘ তিনি আরও জানান, ১০-১২ দিন আগে ফিরোজ ঢাকা থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর পুলিশ ফাঁড়িতে যোগদান করেন। তবে অনুমতি ছাড়া এবং সাদা পোশাকে মাদক অভিযানে যাওয়ার কারণে তাকে সাময়িক বরখান্ত করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। ‘এ ঘটনায় তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

যুবককে অপহরণ করে অশ্লীল ভিডিও ধারণ, গ্রেপ্তার চার

রংপুর সিটিতে এক যুবককে অপহরণের পর সমকামে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে। সেই ভিডিও ধারণ করে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করা হয়। এসব অভিযোগে বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সকালে কিশোর গ্যাংয়ের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথবাহিনী। এ ঘটনায় বিকেলে সিটির কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগী যুবক। গ্রেপ্তার চারজন হলে শুভ (১৮), নাইম (১৯), জিহাদ (১৮) ও কাদের (১৮)। অভিযোগ ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার (৩ মার্চ) রাতে রংপুর সিটির অভিরাম এলাকা থেকে স্থানীয় কিশোর গ্যাং ও দুর্বৃত্তের একটি দল ২৫ বছরের ওই যুবককে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। তারা মোবাইল ফোন ও ঘড়ি ছিনিয়ে নেয়ার পর মুক্তিপণ হিসেবে ২ লাখ টাকা দাবি করে। ভুক্তভোগীর মোবাইল ফোন ব্যবহার করে অপহরণকারীরা স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিকাশের মাধ্যমে ২৫ হাজার ৫০০ টাকাও নেয়। পুরো মুক্তিপণ না পাওয়ায় নাইম ও জিহাদ ভুক্তভোগীকে সমকামিতায় বাধ্য করে এবং সেই ঘটনার ভিডিও ধারণ করে। পরে তারা হুমকি দেয়, বাকি টাকা না পেলে ভিডিওটি অনলাইনে ছেড়ে দেয়া হবে। এর কিছুক্ষণ পর ভুক্তভোগীকে ছেড়ে দেয় দলটি। পরে স্থানীয় থানায় ও সেনাক্যাম্পে অভিযোগ করেন তিনি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৩০ ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের মেজর রেফায়েত ওসমানের নেতৃত্বে সেনা ও পুলিশের যৌথ দল রংপুরের জুম্মাপাড়া সুইপার কলোনি এলাকা থেকে ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করে। কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’

ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১০

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে আদমজী ইপিজেড এলাকার একটি গার্মেন্টস কারখানার ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিএনপি ও ছাত্রদলের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের লোকজন প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন করে এবং ছয়টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে। এ ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, আদমজী ইপিজেডে অবস্থিত ইউনিভার্সেল নামের একটি গার্মেন্টস কারখানার ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রাকিবুর রহমান সাগর ও স্থানীয় বিএনপি নেতা রুহুল আমিন গ্রুপের মধ্যে। এর জের ধরে বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) বিকেলে দুই গ্রুপ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষ চলাকালে উভয়পক্ষ আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে একে অপরের ওপর হামলা চালায়। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনাও ঘটে। সংঘর্ষের একপর্যায়ে ছয়টি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হন এবং তাদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা চরম আতঙ্কে রয়েছে এবং গার্মেন্টস এলাকাজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ব্যবসায়ীরা নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং প্রশাসন সার্বিক পরিস্থিতির ওপর কড়া নজরদারি চালাচ্ছে।

মবের হাত থেকে বাঁচাতে পলকের বাড়ি হয়ে গেল অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প

নাটোরে সাবেক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের বাড়িতে টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের ব্যানার। পুলিশের দাবি, উত্তেজিত জনতা তথা মবের ভাঙচুর থেকে ভবনটি বাঁচাতে এ কৌশল নেয়া হয়। ব্যানার টাঙানোর একটি ছবি বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, অন্ধকারে দুই যুবক সিংড়া পৌরসভার গোড়াউনপাড়ায় পলকের তিনতলা বাড়ির দ্বিতীয় তলায় বারান্দার গ্রিলের সঙ্গে একটি ব্যানারের দড়ি বাঁধছেন। ওই ব্যানারে লেখা ‘অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প, সিংড়া থানা, নাটোর’। স্থানীয়রা জানায়, পলকের এই বাড়ি থেকে হেঁটে সিংড়া থানা ৫ মিনিটের ও সহকারী পুলিশ সুপারের (সিংড়া সার্কেল) কার্যালয় ১০ মিনিটের পথ। গতকাল বুধবার রাত ৭টার পর সিংড়া থানার কয়েকজন পুলিশ সদস্যের উপস্থিতিতে দুই যুবক বাড়িটিতে ব্যানার লাগিয়ে চলে যান। কিছুক্ষণ পর ঘটনাটি জানাজানি হলে উৎসুক লোকজন জড়ো হন। তবে বৃহস্পতিবার সকালে সেখানে ব্যানারটি দেখা যায়নি। স্থানীয়রা আরও জানায়, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে ওই দিনই পলকের এই বাড়িতে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এরপর থেকে বাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল। পলক প্রতিমন্ত্রী থাকার সময় বাড়িটির নিচতলার একটি কক্ষ তার প্রটোকলে থাকা পুলিশ সদস্যদের বিশ্রামের জন্য বরাদ্দ ছিল। এই কক্ষকে অনেকেই পুলিশ ক্যাম্প হিসেবে জানতেন তখন থেকে। কক্ষের বারান্দায় পতাকা স্ট্যান্ডও ছিল। এ ব্যাপারে সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসমাউল হক জানান, আমাদের কাছে খবর ছিল মবের মাধ্যমে একদল জনতা সাবেক প্রতিমন্ত্রী পলকের বাড়িটি ভাঙচুর করবে। যেহেতু ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িটি ভাঙচুর করা হয়েছে, তা থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে সিংড়ার এই বাড়ি ভাঙচুর করা হতে পারে। তবে পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্প লেখার কারণে কেউ বাড়িটি ভাঙচুর করতে আসেনি। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় ব্যানারটি খুলে ফেলা হয়েছে। এখন এসে দেখতে পারেন, ব্যানারটি আর নেই।

দাউদকান্দিতে পুলিশ পরিচয়ে প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতি

কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলায় পুলিশ পরিচয়ে প্রবাসীর বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। বুধবার রাতে উপজেলার জিংলাতলী গ্রামের পশ্চিমপাড়ায় মুকবুল হোসেনের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। ডাকাতরা নগদ ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা, তিন হাজার দুবাইয়ের দিরহামসহ প্রায় ১০ লাখ টাকার মালপত্র লুট করে নিয়ে গেছে বলে দাবি পরিবারের। পুলিশ ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাত ২টার দিকে মুকবুলের বাড়িতে কয়েকজন গিয়ে পুলিশ পরিচয়ে দরজা খুলতে বলে। মুকবুল দরজা খুললে অস্ত্রধারী মুখোশ পরা ডাকাত দল তার দুবাই প্রবাসী ছেলে সাকিলসহ পরিবারের সবাইকে জিম্মি করে হাত-পা বেঁধে ফেলে। পরে ডাকাত দল ঘরের আলমারি থেকে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, বিদেশি মুদ্রাসহ অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায়। গৌরীপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই সাইদুল ইসলাম বলেন, ডাকাতির খবর শুনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

শৈলকুপায় মসজিদে স্যান্ডেল হারানো নিয়ে সংঘর্ষে আহত ১০

মসজিদে তারাবির জামাত থেকে স্যান্ডেল হারানো নিয়ে ঝিনাইদহের শৈলকুপায় দুই দল গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। বুধবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার দিগনগর ইউনিয়নের গোকুলনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। যদিও পুলিশ ধারণা করছে, খেলার ছলে কোনো কুকুর মসজিদের বারান্দা থেকে স্যান্ডেল নিয়েছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, গোকুলনগরে আধিপত্য বিস্তারসহ নানা বিষয় নিয়ে আব্দুল মালেকের লোকজনের সঙ্গে আমজাদ হোসেনের পক্ষের বিরোধ চলছে। গ্রামের মসজিদে উভয় পক্ষের লোকেরাই তারাবির নামাজ পড়েন। গত কয়েকদিনে মালেকের সমর্থকদের স্যান্ডেল নামাজ পড়ার সময় মসজিদের সিঁড়ি থেকে হারিয়ে যায়। বুধবার রাতেও তাদের কয়েকজনের স্যান্ডেল হারিয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে নামাজের পর মালেকের সমর্থকদের সঙ্গে আমজাদের পক্ষের তর্কাতর্কি হয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় ১০ জন আহত হন। আহত ব্যক্তিদের শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুম খান বলেন, গোকুলনগর গ্রামে তারাবির নামাজের সময় সম্ভবত কুকুর খেলার ছলে স্যান্ডেল নিয়ে যায়। এ ঘটনায় গ্রামের এক পক্ষ আরেক পক্ষকে দোষারোপ করতে থাকে। বিষয়টি এক পর্যায়ে সংঘর্ষে রূপ নেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ওড়না ঠিক করে পরতে বলায় যুবককে গ্রেফতার ভালো লক্ষণ নয়: রেজাউল করীম

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, ‘রমজান মাসের মূল শিক্ষা হলো আল্লাহ-ভীতি অর্জন করা। মানুষের জীবনের সব ক্ষেত্রে আল্লাহ-ভীতি অর্জন করতে পারলে এ ধরনের মানুষ দ্বারাই কেবল দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়া সম্ভব। মানুষের মধ্যে আল্লাহর ভয় না থাকায় দেশের সম্পদ লুটেপুটে খাচ্ছে। যে ব্যক্তির অন্তরে আল্লাহর ভয় থাকে সে কখনও রাষ্ট্রের সম্পদ কুক্ষিগত করতে পারে না। কোনও প্রকার পাপ কাজে জড়াতে পারে না। সমাজ ও রাষ্ট্রের সর্বক্ষেত্রে আল্লাহভীরু শাসক প্রতিষ্ঠিত হলে দেশ দুর্নীতিমুক্ত করা সম্ভব।’ মুফতি রেজাউল করীম বলেন, ‘হিজাব নিয়ে নতুনভাবে চক্রান্ত শুরু হয়েছে। প্রকাশ্যে ধূমপান দেশের আইন অনুযায়ী নিষিদ্ধ এ কথা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা স্মরণ করিয়ে দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে নাস্তিক্যবাদী শাহবাগীরা মাঠে নেমেছে। রমজান মাসে প্রকাশ্যে ধূমপান করা ইসলামের বিধি-বিধানের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র। অপরদিকে ওড়না ঠিক করে পরতে বলায় যুবককে গ্রেফতার। এসব খুব ভালো লক্ষণ নয়। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমলে ইসলাম বিদ্বেষীদের দ্বারা ফেল করানোর হুমকি দিয়ে ছাত্রীদের হিজাব খুলতে বাধ্য করা, শ্রেণিকক্ষে শত শিক্ষার্থীর সামনে পর্দার কারণে মেয়েদের হয়রানি করা, ভাইভা বোর্ড থেকে পর্দাশীল প্রার্থীদের গালি দিয়ে কাঁদিয়ে বের করে দেওয়ার মতো অসংখ্য ঘটনায় কোনও প্রতিবাদ করতে দেখা যায়নি কথিত এসব নারী স্বাধীনতাকামীদের। তাহলে পর্দা করতে বললে দোষ হবে কেন? রমজানের প্রতি ন্যূনতম সম্মানবোধ তো নেই-ই, এখন তথাকথিত নারীরা ইসলামের বিধানের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বিরোধিতা করছে।’ বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) বরিশালের চরমোনাই মাদ্রাসা ময়দানে পবিত্র রমজান উপলক্ষে ১৫ দিনব্যাপী তালিম-তারবিয়াতের কার্যক্রমে জোহরের নামাজের পর আলোচনায় চরমোনাই পীর এসব কথা বলেন। আলোচনায় পীর সাহেব চরমোনাই ছাড়াও নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম, মাদ্রাসার শিক্ষক এবং চরমোনাই ইউপি চেয়ারম্যান মুফতী জিয়াউল করীম অংশ নেন। চরমোনাই পীর বলেন, ‘রাষ্ট্রের সর্বত্র অশান্তি বিরাজ করছে। মানুষ মানুষকে হত্যা করছে। এ অবস্থায় রমজানের শিক্ষা গ্রহণ করে আল্লাহর ভালোবাসা অর্জন করতে হবে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৪ নেতা বহিষ্কার

সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন খুলনা মহানগরের ৪ নেতাকে সাংগঠনিক পদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। তারা হলেন- যুগ্ম আহ্বায়ক আশিকুর রহমান, যুগ্ম সদস্যসচিব সৈয়েদ আবদুল্লাহ, যুগ্ম সদস্য সচিব রাকিব হাসান সুজন ও সংগঠক সাফওয়ান ইফাজ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন খুলনা মহানগরের আহ্বায়ক আল শাহরিয়ার ও সদস্যসচিব জহুরুল তানভীর বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের তাদের সঙ্গে কোনোরূপ সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। পরবর্তীতে তাদের কোনো কার্যক্রমের দায়ভার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন খুলনা মহানগর নেবে না। সংগঠনের আহ্বায়ক আল শাহরিয়ার, সদস্যসচিব জহুরুল তানভীর ও মুখপাত্র আয়মান আহাদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সাংবাদিকদের সম্মানে লক্ষ্মীপুরে ছাত্রশিবিরের ইফতার মাহফিল

সাংবাদিকদের সম্মানে ইফতার ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে লক্ষ্মীপুর শহর ছাত্রশিবির। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এই ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। শহর ছাত্রশিবিরের সভাপতি ফরিদ উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি আবদুল আউয়াল হামদুর সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা ফারুক হোসাইন নুরনবী। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি হোসাইন আহমদ হেলাল, সাবেক সভাপতি আ.হ.ম মোশতাকুর রহমান, সিনিয়র সাংবাদিক সেলিম উদ্দিন নিজামী, জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট মহসিন কবির মুরাদ, জামায়াত নেতা আবদুল আউয়াল রাসেল ও প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম পাবেলসহ জেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা। সুন্দর সমাজ বিনির্মাণে সাংবাদিকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। অতীতেও সাংবাদিকরা দেশ গঠনে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত রাখবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মীরা কোনো চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত নেই। অতীতে সংগঠনের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা। শুধুমাত্র ছাত্রদের মানোন্নয়নেই কাজ করে শিবির। পরে ইফতারের আগে দেশ ও জাতীর কল্যাণে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

সনদ জালিয়াতি করে নির্বাহী প্রকৌশলী পদে চাকরি নেওয়ার অভিযোগ

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী (হারবার) আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ও অভিজ্ঞতার ভুয়া সনদ দিয়ে চাকরি করার অভিযোগ উঠেছে। একইসঙ্গে গত পাঁচ বছর বন্দরে চাকরি সুবাদে নানা অনিয়ম করে কয়েক কোটি টাকার মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ আছে। অনিয়মের অভিযোগ উঠলে তাকে বন্দর থেকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ঢাকা কার্যালয়ে বদলি করা হয়। বর্তমানে এখানে কর্মরত আছেন। পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার অ্যান্ড মেরিন শাখা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হলে আবুল কালাম আজাদ সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) এবং নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) পদে আবেদন করেন। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার থেকে পাস করায় সহকারী প্রকৌশলী এবং নির্বাহী প্রকৌশলী পদে তার আবেদনের কোনও সুযোগ ছিল না। কিন্তু তৎকালীন সরকারদলীয় নেতাদের তদবিরে প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার সনদ না থাকা সত্ত্বেও সনদ জালিয়াতি করে চাকরি নেন তিনি। বন্দর কর্তৃপক্ষের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পায়রা বন্দরে নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) পদে নিয়োগের যোগ্যতা হিসেবে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং (সিভিল) ডিগ্রি এবং সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে সংশ্লিষ্ট কাজে কমপক্ষে পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে মর্মে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ ছিল। কিন্তু আবুল কালাম আজাদ ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারী হওয়ায় আবেদনের সুবিধার্থে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির নামে একটি জাল সনদ তৈরি করেন। ওই সনদ তৈরিতে তাকে ছাত্রলীগের একজন সাবেক সভাপতি সহযোগিতা করেছেন। অথচ আবুল কালাম স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হননি। তার আবেদনে উল্লেখ করেন, ২০০২ সালে একটি ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানে উপ-সহকারী প্রকৌশলী (ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার) হিসেবে কাজ শুরু করেন। বন্দরের এই কর্মকর্তা আরও জানিয়েছেন, সনদ জালিয়াতি করে চাকরি নেওয়ার বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয় তার চাকরি নেওয়া এবং পাসের তারিখ দেখলে। অর্ধাৎ পাস করার আগেই সনদ জমা দিয়েছেন। ২০০৯ সালের ৪ নভেম্বর ওই ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান তাকে সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে পদোন্নতি দেয় এবং সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে ওই পদে ২০১৩ সালের ১০ নভেম্বর পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। অর্থাৎ ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানে সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে চার বছর কর্মরত ছিলেন; যা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত অভিজ্ঞতা থেকে এক বছর কম। এ ছাড়া জাল সনদ অনুযায়ী, তিনি বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেছেন ২০১০ সালের এপ্রিলে। অথচ পাস করার প্রায় ছয় মাস আগে অর্থাৎ ২০০৯ সালের ৪ নভেম্বর তিনি সহকারী প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি পেয়েছেন মর্মে তার আবেদনে উল্লেখ করেন। এই হিসেবে তার বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং সনদ ও অভিজ্ঞতার সনদ ভুয়া বলে প্রতীয়মান হয়। ভুয়া সনদ অনুযায়ী অভিজ্ঞতা পাঁচ বছরের কম থাকা সত্ত্বেও অবৈধ পন্থায় তাকে নিয়োগ দেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দরের কর্মকর্তাদের প্রথম বেসিক প্রফেশনাল ট্রেইনিং কোর্সের সুভেনিয়র বইতে তার এসব যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার বিষয়টি উল্লেখ আছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, নিয়োগ পাওয়ার পর বন্দরের সব ধরনের উন্নয়নকাজের নিয়ন্ত্রণ নিতে অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন গঠন করেন। অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে বন্দরের কাজ করাতেন তিনি। পরবর্তীতে রাবনাবাদ চ্যানেলের ক্যাপিটাল ও ম্যন্টেইন্যান্স ড্রেজিং প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক হওয়ার জন্য সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক ও নৌপরিবহন মন্ত্রীকে দিয়ে তদবির করান। তাদের তদবিরে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ আজাদকে ক্যাপিটাল ও ম্যন্টেইন্যান্স ড্রেজিং প্রকল্পের উপপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দেন। এ সুযোগে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছেন। এ নিয়ে অভিযোগ উঠলে তাকে সাবেক নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী পায়রা বন্দর থেকে ২০২৩ সালে বিআইডব্লিউটিতে বদলি করা হয়। অভিযোগ আছে, বন্দরে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দিয়ে ঢাকার শান্তিনগরে ১৫৫০ বর্গফুটের দুটি ফ্ল্যাট কিনেছেন; যার একটিতে নিজে থাকেন এবং অন্যটি ভাড়া দিয়েছেন। পায়রা বন্দর এলাকায় কয়েক কোটি টাকার জমি কিনেছেন। ঢাকার রামপুরা এলাকায় একটি প্লট ও একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন। এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমি এখন পায়রা বন্দরে নেই। বর্তমানে ঢাকায় বিআইডব্লিউটিতে কর্মরত আছি। আর এসব অভিযোগের বিষয়ে আমার কাছে প্রশ্ন করে কোনও লাভ নেই। যারা অভিযোগ করেছে তাদের বলেন, তথ্য-প্রমাণসহ আমার মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে। তখন মন্ত্রণালয় তদন্ত করে অনিয়ম-দুর্নীতি পেলে আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’