আমার এলাকার খবর

টঙ্গীতে ট্রেনে কাটা পড়ে শিশুসহ দুইজনের মৃত্যু

গাজীপুরের টঙ্গীতে ট্রেনে কাটা পড়ে শিশুসহ দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। লাইন ধরে হাঁটার সময় ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান। পরিচয় শনাক্ত করা না গেলেও তারা বাবা-ছেলে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাত সোয়া ১০টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলরুটের টঙ্গীর বনমালা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতদের নামপরিচয় জানা যায়নি। তাদের একজনের বয়স ৩০ ও অপরজনের ১০ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তারা সম্পর্কে বাবা-ছেলে হতে পারে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, রাতে টঙ্গীর বনমালা এলাকায় কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে মারা যান দুইজন। স্থানীয়রা তাদের রেললাইন দিয়ে হাঁটতে দেখেছেন। টঙ্গী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ পরিদর্শক (এসআই) ছোটন শর্মা বলেন, মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে।

শীতে বিপর্যস্ত উত্তরাঞ্চলের জনজীবন

পৌষ মাস শুরুর আগেই জেঁকে বসেছে শীত। বিশেষ করে হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে আছে উত্তরের জনপদ। পর্যায়ক্রমে যা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে। উত্তরের জনপদের পাশাপাশি শীত নেমেছে রাজধানীতেও। গত কয়েকদিন ধরে ঢাকার আকাশ ছিল কুয়াশাচ্ছন্ন। শীতের কারণে উত্তরের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। শীতে গ্রামগ্রঞ্জে বিশেষ করে দরিদ্র মানুষের অবস্থা কাহিল। ছিন্নমূল মানুষের অবস্থা আরও করুণ। সবচেয়ে বিপদে আছেন খেটে খাওয়া মানুষগুলো। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাতে দেওয়া ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়া বার্তায় বলা হয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। তবে রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় হালকা ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারী থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে, তবে কমতে পারে দিনের তাপমাত্রা। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় অবশ্য বৃষ্টির কোনো পূর্বাভাস নেই। অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত দেশের উত্তরাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারী থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারী ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। আর সারাদেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা। আর বর্ধিত ৫ দিনেও একই অবস্থা থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। ঘনকুয়াশায় ঢাকা ঠাকুরগাঁও তীব্র শীতে উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ের জনজীবনে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। হিমালয়ের কাছাকাছি অবস্থান হওয়ায় প্রতিবছর এই জেলায় শীতের প্রকোপ অনেক বেশি থাকে। এবছর অক্টোবর মাসে শীতের আমেজ শুরু হলেও নভেম্বরের দিকে সন্ধ্যার পর থেকে ভোর পর্যন্ত ঠান্ডা অনুভূত হতো। তবে ডিসেম্বরের শুরুতে হালকা কুয়াশা ও হিমেল বাতাস অব্যাহত থাকলেও হঠাৎ করে ৯ ডিসেম্বর রাত ৯টা থেকে ঘনকুয়াশার দাপট অতিরিক্ত বেড়ে গেছে। এতে সড়কে চলাচলকারী যানবাহনের চালক থেকে শুরু করে পথচারী ও জনসাধারণ পড়েন চরম বিপাকে। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাত নয়টার দিকে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে যায় উত্তরের এই জেলা। কুয়াশার এতোই ঘনত্ব যে যানবাহনের হেডলাইটও হার মেনেছে। লাইটের আলো ১০-১৫ গজ দূরত্ব অতিক্রম করতে পারছে না। সড়কে গাড়ি চালানো প্রায় অনোপুযোগী হয়ে পড়েছে। এতে দুর্ঘটনার শঙ্কায় ধীরগতিতে গাড়ি চালাতে দেখা গেছে চালকদের। গাড়ি চালক স্বপন সরকার বলেন, কুয়াশার কারণে সড়কে চলা তাদের জন্য কষ্টকর হয়ে পড়েছে। ১০-১৫ গজ দূরে গাড়ির লাইটের আলোও কাজ করছে না। এর আগে কখনো এতো ঘন কুয়াশা ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষ দেখেনি। আগামী দিনগুলোতে আরও কুয়াশা ও শীত বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। শীত আর ঘনকুয়াশার কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছেন খেটে খাওয়া ও ছিন্নমূল মানুষগুলো। রাস্তার ধারেই যে যা পারছেন খড়কুটো জ্বালিয়ে উষ্ণতার জন্য আগুন পোহাচ্ছেন। অন্যদিকে ঠান্ডার প্রকোপের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। বর্তমানে বিশেষ করে ঠান্ডার কারণে নবজাতক ও কমবয়সী শিশুরা বেশি ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। ঠাকুরগাঁও জেলা সদর হাসপাতালটি ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হলেও প্রতিনিয়ত প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ জনের ওপর রোগী ভর্তি থাকেন। সচরাচর শীতের সময় রোগীর বেশি চাপ থাকে। তবে এবার আগের মতোই রোগীর চাপ থাকলেও বর্তমানে বিশেষ করে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যাই বেশি। হাসপাতালটিতে ৪০ শয্যার শিশু ওয়ার্ড হলেও সোমবার রাত ১১ টার দিকে ১৩০ জনেরও বেশি রোগী ভর্তি ছিলেন। যা ধারণ শয্যার থেকে তিন গুণ বেশি বলে জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শিশু ওয়ার্ডে ভতিকৃত বেশিরভাগ শিশু ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন বলে জানান রোগীর অভিভাবক ও স্বজনরা। শীতকালে নবজাতক শিশুদের ৬ মাস পর্যন্ত শুধু মায়ের বুকের দুধ পানসহ অন্যান্য বয়সী শিশুদের পুষ্টিকর তাজা খাবার খাওয়ানোর, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট থেকে শুরু করে সর্দি-কাশি ও জ্বর হলে দেরি না তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আবু মো. রাজিব-উল-দোজা (তূর্য)’র। তিনি বলেন, ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও আমরা সাধ্যমতো চিকিৎসা দিচ্ছি। এটা আমাদের পেশা ও দায়িত্ব। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তার তথ্য মতে, ঠাকুরগাঁওয়ে বর্তমানে সর্বনিম্ন ১২ ডিগ্রি ও সর্বোচ্চ ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। দিন দিন তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। এমন আবহাওয়ায় কৃষিক্ষেত্রেও বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। তবে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, কৃষকদের শীত সহনশীল পদ্ধতিতে ফসল উৎপাদনের পরামর্শসহ কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে। কৃষকরা শীত সহনশীল পদ্ধতি অবলম্বন করলে ফসলের ক্ষতি হওয়ার তেমন সুযোগ নেই। ইতোমধ্যে চাহিদা অনুযায়ী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঠকুরগাঁও জেলার জন্য ৮০ হাজার শীতবস্ত্রের চাহিদা সংশ্লিষ্ট দফতরের পাঠানো হয়েছে। সেগুলো পেলে তা দ্রুত বিতরণ করা হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক ইসরাত ফারজানা। তীব্র ঠান্ডায় বিপর্যস্ত পঞ্চগড়ের জনজীবন উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে চলছে শীতের দাপট। হিমালয়ের হিম বাতাসে এ জেলায় তাপমাত্রার পারদ প্রতিনিয়ত ওঠানামা করছে। মধ্যরাত থেকে এখন পর্যন্ত কুয়াশার চাদরে মুড়িয়ে রয়েছে পুরো জেলা। তীব্র শীত অনুভূত না হলেও ঘন কুয়াশার কারণে হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। গত কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা ১১ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে ওঠানামা করছে। সে কারণেই এই অঞ্চলে বেশ ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে তেঁতুলিয়ায় ১১ ডিগ্রির নিতে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আহসান হাবীব নামে একজন জানান, রাতে তীব্র ঠান্ডা লাগছে। আজও ভোরে কুয়াশা ছিল, তবে গতকালের মতো না। প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে হাত-পা যেন অবশ হয়ে আসার মতো অবস্থা। রাতে এখন ডাবল কাঁথা-কম্বল নিতে হচ্ছে। মনে হচ্ছে পৌষ মাসের ঠান্ডা শুরু হয়েছে। এদিকে তীব্র শীতের কারণে বেড়েছে বিভিন্ন শীতজনিত রোগব্যাধি। জেলার পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে বাড়ছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগীর ভিড়। শিশু ও বয়স্করা সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসকরা শীতে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধিতে চিকিৎসকরা চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন।

টাঙ্গাইলে ভারতীয় মিডিয়ার বিরুদ্ধে হিন্দুদের বিক্ষোভ মিছিল

‘হিন্দু মুসলিম ভাই ভাই একসাথে বাঁচতে চাই, ভারতের অপপ্রচার মানি না, মানবো না’-স্লোগানে ভারতীয় মিডিয়ায় ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ ও সাম্প্রদায়িক উসকানির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার হেমনগর ইউনিয়নের সর্বস্তরের হিন্দু সম্প্রদায়। সোমবার (০৯ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় বিক্ষোভ মিছিলটি হেমনগর বাজার কালীমন্দির থেকে শুরু হয়ে হেমনগর ডিগ্রি কলেজ হয়ে পুনরায় বাজার কালিমন্দিরে শেষ হয়। মিছিলে ২ শতাধিক হিন্দু নারী পুরুষ অংশ নেয়।বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে ভোলারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা শিক্ষিকা সুরভী রানী সূত্রধর বলেন, ভারতীয় মিডিয়ার অপপ্রচারের প্রতিবাদ করার জন্য আজ এখানে দাঁড়িয়েছি। আমরা এখানে হিন্দু-মুসলিম শান্তিতে সহাবস্থান করতেছি। বিশেষ উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য একটি মহল সাম্প্রদায়িক উসকানি দিচ্ছে। আমরা শাঁখা সিঁদুর পরে রাস্তায় নিয়মিত বের হই, কেউ বাধা দিচ্ছে না। ভারতের স্টুডিওতে বসে উসকানিমূলক মিথ্যা সংবাদ প্রচার না করে, বাংলাদেশে এসে দেখে তারপর সংবাদ প্রচার করুন। জমিদার বাড়ির উত্তরসূরি খোকন চক্রবর্তী বলেন, ভারতে চার বোনসহ আত্মীয়রা আমাদের খোঁজ নিতে বারবার ফোন দেয়। আমি বলেছি তোমাদের চাইতে আমরা এখানে ভালো আছি। ভারতীয় মিডিয়া উসকানি দিয়ে আমাদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা করছে। ভারতকে আমরা বলবো এসব বন্ধ করুন। হেমনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক গৌড় চন্দ্র পাত্র বলেন, ভারতীয় মিডিয়ারা এদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হচ্ছে, মহিলারা রাস্তায় চলাফেরা করতে পারছে না, হিন্দুদের নিগৃহীত করছে এমন অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। সব অপপ্রচারের তীব্র প্রতিবাদ জানাই।

না ফেরার দেশে ভাষা সৈনিক ফজলুল হক

নাটোরের ভাষা সৈনিক ও ইউনাইটেড মেডিকেলের স্বত্বাধিকারী ফজলুল হক (৮৪) আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে নানান রোগে ভুগছিলেন। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাত আনুমানিক ৭টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ভাষা সৈনিক ফজলুল হকের ছেলে ওয়াসিফ-উল-হক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ফজলুল হক ১৯৩৮ সালে নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলার দমদমা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। জেলা বোর্ডের সেকশন অফিসার হিসেবে সরকারি চাকরি করেছেন তিনি। অবসরের পর ফজলুল হক নাটোর শহরে ওষুধ ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। তিনি নাটোর ইউনাইটেড মেডিকেল হলের স্বত্বাধিকারী ছিলেন। তার স্ত্রী, তিন মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৫২ সালে নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় মাতৃভাষা বাংলার জন্য রাজপথে নেমে আন্দোলন করেছিলেন ফজলুল হক। বৃদ্ধ বয়সে শারীরিক অসুস্থতার কারণে বাড়িতে শুয়ে-বসেই সময় কাটতো তার। নাটোর জেলায় যে কয়েকজন ভাষা সৈনিক ছিলেন, তাদের মধ্য ফজলুল হক শুধু জীবিত ছিলেন। ভাষা আন্দোলনের ৭১ বছরেও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাননি এ গুণী ব্যক্তি। ভাষা আন্দোলনে অনন্য ভূমিকা রাখায় ২০১০ সালে অনুষ্ঠিত নাটোর সরকারি বালক বিদ্যালয় শতবর্ষ উৎসবে তাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়েছিল। আগামীকাল মঙ্গলবার বাদ যোহর নাটোর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হবে।

ভালুকায় বকেয়া বেতনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ

ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: বকেয়া বেতনের দাবিতে ময়মনসিংহের ভালুকায় রোর ফ্যাশন নামক কারখানার শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার কাঠালী পল্লী বিদুৎ এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে প্রায় এক ঘন্টা বিক্ষোভ করেন তারা। জানা যায়, রোর ফ্যাশন কারখানায় মোট ১৩৫৮ জন শ্রমিক তার মধ্যে ১০৩১ জন শ্রমিকের বেতন পরিশোধ করা হলেও ৩২৭জন শ্রমিকের বেতন বাকি ছিলো, বকেয় পরিশোধ না করেই কারখানা বন্ধ করে রাখে কর্তৃপক্ষ। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানায়, কারখানার কর্তৃপক্ষ গত দুই মাসের বেতন পরিশোধ না করলে শ্রমিকরা প্রথমে কারখানার সামনে ও পরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। এ সময় প্রায় এক ঘন্টা যান চলাচল বন্ধ থাকায় দুই পাশে কয়েক কিলোমিটার জুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে চরম ভোগান্তিতে পরেন দূর্পাল্লার যাত্রীরা। পরে খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন, হাইওয়ে পুলিশ, মডেল থানা পুলিশ, শিল্প পুলিশ ও সেনাবাহিনীর মধ্যস্থতায় শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেন বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। পরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। এ বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। শিল্প পুলিশ ময়মনসিংহ-৫ এর পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জানান, সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে শিল্প পুলিশের টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের মহাসড়ক থেকে সড়িয়ে দেয় এবং কারখানা কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে দ্রæত বকেয়া পরিশোধ করতে, শিল্প পুলিশ সব সময় শ্রমিকদের পাশে আছে।ভালুকায় বকেয়া

আচমকা পুলিশ সদস্যকে মারধর দুই নারীর, কি ঘটেছিল?

কুষ্টিয়ায় দায়িত্বরত এক ট্রাফিক পুলিশ সদস্যকে জুতাপেটা ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিতের অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ সদস্যকে মারধরের ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, প্রকাশ্যে এক পুলিশ সদস্যকে চড়-থাপ্পড় মারতে থাকেন এক নারী। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে ওই নারীর সঙ্গে থাকা আরেক নারীও এগিয়ে আসেন এবং পুলিশ সদস্যকে লাঞ্ছিতের দৃশ্যটির ভিডিও করতে থাকেন। এক পর্যায়ে ওই নারীও পায়ের জুতা খুলে মারতে থাকেন ওই পুলিশকে। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে সাড়ে ১১টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের কোর্ট স্টেশন মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। হেনস্তার শিকার ওই পুলিশ সদস্যের নাম নাজমুল হোসেন। তিনি কুষ্টিয়া ট্রাফিক পুলিশে কনস্টেবল পদে কর্মরত রয়েছেন। নাজমুল হোসেন বলেন, সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে রিকশাযোগে ওই নারী তার ছেলেকে নিয়ে স্কুলে যাচ্ছিলেন। এমন সময় রেলগেট পড়ে গেলে আমাদের ওপর চড়াও হন ওই নারী। এরপর সকাল সাড়ে ১১টার দিকে স্কুল থেকে ফিরে আচমকা আমাকে মারধর করতে থাকেন। পরে স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে পুলিশ লাইনে পৌঁছে দেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন।’ তবে, এ ঘটনায় অভিযুক্ত ওই দুই নারীর বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি। তারা ঘটনার পর পরই সটকে পড়েন। এ নিয়ে কুষ্টিয়া ট্রাফিক পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘আমি ছুটিতে আছি। কথা বলে বিস্তারিত জানাতে পারব।’ কুষ্টিয়া জেলার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, ‘অভিযুক্ত ওই দুই নারীকে খুঁজছে পুলিশ। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ এ দিকে, ট্রাফিকে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যকে দুই নারীর মারধরের ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জেলাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

লুট হয়ে গেল দুস্থ ও প্রতিবন্ধীদের হুইলচেয়ার-অটোরিকশা-সেলাইমেশিন

লুট হয়ে গেছে যশোর জেলার বাঘারপাড়া উপজেলায় প্রতিবন্ধী, পঙ্গু, দুস্থ নারী ও গরিব মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণের জন্য রাখা হুইলচেয়ার, অটোরিকশা, সেলাইমেশিন ও বাইসাইকেল। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে বাঘারপাড়ার রায়পুর বাজারের পাশে পপুলার রাইসমিলের একটি ঘর থেকে এগুলো লুট হয়। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বাঘারপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আলিম জানান, এ ঘটনায় রোববার (৮ ডিসেম্বর) রাতে আয়োজকদের পক্ষে গোলাম রসুল নামে একজন থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হাসনে ইন্টারন্যাশনালের উদ্যোগে শনিবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে পপুলার রাইসমিল চত্বরে ৩৬৭টি হুইলচেয়ার, অটোরিকশা, সেলাইমেশিন এবং বাইসাইকেল প্রতিবন্ধী, পঙ্গু, দুস্থ নারী এবং গরিব ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিতরণের কথা ছিল। কিন্তু, তার আগে শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে স্থানীয় বিএনপির নেতাদের বাধায় বিতরণ অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। আয়োজকরা জানান, হাসনে ইন্টারন্যাশনাল তুরস্কভিত্তিক একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। কয়েক বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটি বাঘারপাড়ায় অসহায় ও দুস্থ মানুষের মধ্যে কোরবানির গরুর মাংস, অটোরিকশাসহ বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ করে আসছে। গত তিন বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটি উপজেলার প্রতিবন্ধীদের হুইলচেয়ার ও অটোরিকশা, দুস্থ নারীদের সেলাইমেশিন এবং দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের বাইসাইকেল দিয়ে আসছে। এ বছর বিতরণের জন্য কয়েক মাস আগে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক ও সুধিজনদের কাছ থেকে সুবিধাভোগীদের নামের তালিকা নেওয়া হয়। এ বছর উপজেলায় ১৪০ জনকে হুইলচেয়ার, ২০ জনকে আটোরিকশা, ১০৭ নারীকে সেলাইমেশিন ও ১০০ দরিদ্র শিক্ষার্থীকে বাইসাইকেল দেয়ার জন্য তালিকা তৈরি করা হয়। এ জন্য গত শুক্রবার (৭ ডিসেম্বর) বিকালে রায়পুর বাজারের পাশে পপুলার রাইস মিল চত্বরে শামিয়ানা টানানো হয়। কিন্তু, ছাত্রদলের এক নেতা শুক্রবার রাতে অনুষ্ঠান বন্ধ করতে বলেন। তিনি শামিয়ানা খুলে না নিলে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেবেন বলে হুমকি দেন। পুলিশও অনুষ্ঠান বন্ধ করতে বলে। এ অবস্থায় শুক্রবার রাতেই শামিয়ানা খুলে নেওয়া হয়। থানায় দেওয়া অভিযোগে বলা হয়, ‘শুক্রবার রাতে সুফলভোগীদের খবর দেওয়া সম্ভব হয়নি। আগে থেকে নির্ধারিত সময় শনিবার (৮ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিবন্ধী, দুস্থ নারী এবং ছাত্রছাত্রীরা অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছান। হাসনে ইন্টারন্যাশনালের চিফ অপারেশনস অফিসার কেমাল সারদিস এবং বাংলাদেশ প্রতিনিধি ইয়াপরাক মেলেক কবির অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা ছিল। কিন্তু, বিমানের ফ্লাইট দেরি হওয়ায় তারা দুপুর ১২টার দিকে বাঘারপাড়ায় পৌঁছান।’ অভিযোগ করা হয়েছে, শনিবার (৮ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে বাঘারপাড়া উপজেলা কৃষকদলের সাংগঠনিক সম্পাদক তিতাস মোল্লা, রায়পুর ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বকুল হোসেন এবং রায়পুর ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম হোসেনের নেতৃত্বে ৩০-৩৫ জন সেখানে আসেন। তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে সেখান থেকে চলে যেতে যেতে বলেন। এরপর আয়োজকদের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা লোকজন খালি হাতে ফিরে ফিরে যান। অভিযোগকারী পপুলার রাইস মিলের ম্যানেজার গোলাম রসুল জানান, পাঁচ-ছয় দিন আগে ওই হুইলচেয়ার, অটোরিকশা, সেলাইমেশিন ও বাইসাইকেল আনা হয়। রাইসমিলের একটি বড় ঘরে সেগুলো রেখে তালা দেওয়া অবস্থায় ছিল। শনিবার (৮ ডিসেম্বর) রাত দশটার দিকে ১৫০-২০০ লোক ওই ঘরের তালা ভেঙে সব হুইলচেয়ার, অটোরিকশা, সেলাইমেশিন ও বাইসাইকেল লুট করে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে গ্রামবাসী ধাওয়া করলে তারা নয়টি অটোরিকশা ও পাঁচটি বাইসাইকেল ফেলে রেখে যায়। বাঘারপাড়া উপজেলা কৃষকদলের সাংগঠনিক সম্পাদক তিতাস মোল্লা স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘তিনি দুই দিন ধরে ঢাকায় রয়েছেন। ওই অনুষ্ঠান সম্পর্কে কিছুই জানেন না।’ তবে, অনুষ্ঠানটি যশোর জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক বিপুল ফারাজীর ছিল বলে তিনি জানান। এ নিয়ে বিপুল ফারাজী বলেন, ‘এসব সেবামূলক কাজ করে তুরস্কের একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান। মালামালগুলো উপকারভোগীরা পেলে আজ তাদের মুখ চকচক করত। গরিব মানুষের জন্যে তারা এখানে ৭-৮ বছর ধরে নানামুখী কল্যাণমূলক কাজ করে আসছে। এবার নোংরা রাজনীতির কারণে তাদের সেই উদ্যোগ ভেস্তে গেল। এটি খুবই দুঃখজনক।’ এ ব্যাপারে ওসি আব্দুল আলিম বলেন, ‘দুস্থ ও প্রতিবন্ধীদের বিতরণের জন্য মালামাল লুটের বিষয়ে গতকাল রাতে একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। ঘটনার বিষয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

মাদারীপুর জেলা আ.লীগের সা. সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে গ্রেফতার

মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে’কে গ্রেফতার করেছে সদর মডেল থানা পুলিশ। সোমবার দুপুরে শহরের বিসিক শিল্প এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মাদারীপুরের যুব উন্নয়ন অফিসের সামনে গুলিতে তাওহীদ সন্নামাত হত্যা মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ১৯ জুলাই মাদারীপুর-শরীয়তপুর সড়কের যুব উন্নয়ন অফিসের সামনে ছাত্রলীগ, পুলিশ ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়। এতে মাদারীপুর সদর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়নের সুচিয়ারভাঙ্গা গ্রামের সালাহউদ্দিন সন্নামাতের ছেলে তাওহীদ সন্নামাত যোগ দেন। এ সময় পুলিশ ও ছাত্রলীগের গুলিতে নিহত হন তাওহীদ। পরে রাতেই পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে এ বিষয় নিয়ে কথা বলতেও ভয় পেতেন তারা। পরে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এ ঘটনায় জেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব কামরুল হাসান বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মাদারীপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাজাহান খান, আরেক সাবেক সংসদ সদস্য আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে’সহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়। সেই হত্যা মামলায় দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে’কে গ্রেফতার করেছে সদর মডেল থানা পুলিশ। মাদারীপুর সদর মডেল থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘দুপুরে শহরের বিসিক শিল্প এলাকা থেকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে’কে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি তাওহীদ সন্নামাত হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামি।’

স্ত্রীকে খুন করে পালালেন গ্রামে, ধরে আনল পুলিশ

চট্টগ্রাম সিটির পতেঙ্গা থানা এলাকায় স্ত্রীকে খুনের অভিযোগে মো. নাছির (৪৮) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে আনোয়ারা উপজেলার গুণদ্বীপ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানায়, গেল ৭ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে বিজয়নগর কাঁচাবাজার মোড় এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে নাছিমা আক্তার (৪৫) নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তদন্তে নেমে পুলিশ ভুক্তভোগীর স্বামী নাছিরকেই হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে শনাক্ত করে। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) কাজী তারেক আজিজ বলেন, ‘পারিবারিক কলহের জেরে গেল২ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে স্ত্রীকে খুন করে নাছির। এরপর বাসাটিতে তালা লাগিয়ে গ্রামের বাড়ি আনোয়ারায় পালিয়ে যান তিনি। এ দিকে, কয়েক দিন পর মৃতদেহটি গলে দুর্গন্ধ ছড়ালে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে অর্ধগলিত অবস্থায় মৃতদেহটি উদ্ধার করে।’ তিনি আরো বলেন, ‘খুনের ঘটনায় পতেঙ্গা থানায় মামলা হয়েছে। সেই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে নাছিরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

চট্টগ্রামে দুর্নীতি বিরোধী দিবস উদযাপিত

“দুর্নীতির বিরুদ্ধে তারুণ্যের একতা: গড়বে আগামীর শুদ্ধতা” প্রতিপাদ্য নিয়ে নতুন আঙ্গিকে এ বছর পালিত হয়েছে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস। জাতিসংঘ ২০০৩ সালে ৯ ডিসেম্বরকে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। তারই ধারাবাহিকতায় দুর্নীতি বিরোধী দিবস উদযাপন করা হয়েছে চট্টগ্রামে। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চট্টগ্রামের আয়োজনে সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সিটির জেলা শিল্পকলা একাডেমির প্রাঙ্গণে মানববন্ধন ও মিলনায়তনে দুর্নীতি দমন ও প্রতিরোধে করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও বেলুন উড়ানোর মাধ্যমে দিবসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. জিয়াউদ্দীন। দুদক চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিচালক মোহা. আবুল হোসেন, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার হুমায়ুন কবির, জেলার অতিরিক্ত ডিআইজি সঞ্জয় সরকার, জেলার পুলিশ সুপার রায়হান উদ্দিন খান, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. কামরুজ্জামান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। চট্টগ্রামের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারী শিক্ষার্থী, এনজিও প্রতিনিধি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সামাজিক ও সাংস্কৃকিত সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, মহানগর দুর্নীতি ব্যানার ফেস্টুন সহকারে মানব বন্ধনে অংশ নেন। সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মো. জিয়াউদ্দীন বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী নতুন বাংলাদেশ নির্মাণে অর্থনৈতিক বৈষম্যকে দূর করতে হবে। সমাজকে দুর্নীতিমুক্ত করতে হলে অর্থনৈতিক সাম্য প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি জনগণকে ক্ষমতায়ন করতে হবে। ফলে, প্রশাসনিক কার্যক্রমে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পাবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের সমাজে ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক দুইভাবে দুর্নীতি হয়ে থাকে। বহু অফিসার আছে, যারা দুর্নীতিতে যুক্ত নয় কিন্তু প্রতিষ্ঠান দুর্নীতি করে বিধায় এটার সাথে যুক্ত সবাই দুর্নীতির আওতায় চলে আসে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার মূল প্রত্যাশা একটি স্বচ্ছ, জবাদিহিমূলক, দুর্নীতিমুক্ত ও বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ। এ নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ও দুর্নীতি প্রতিরোধে আমাদের সকলকে অঙ্গীকারবদ্ধ হতে হবে।’ মোহা. আবুল হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তসলিম উদ্দিন, দুদক চট্টগ্রামের উপপরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাত সভায় বক্তব্য দেন। -----------------প্রান্ত/সাইফুল/বাবুল, ১৪.৩০ টা ঘন্টা, ২০২৪।।

ঘন কুয়াশা: শরীয়তপুর-চাঁদপুর রুটের ফেরি চলাচল বন্ধ

ঘন কুয়াশার কারণে শরীয়তপুর-চাঁদপুর রুটের নরসিংহপুর ঘাটে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) ভোর ৪টা থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে বলে জানান নরসিংহপুর ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মো. ইকবাল হোসেন। বিআইডব্লিউটিসি ঘাট কর্তৃপক্ষ জানান, ঘন কুয়াশায় ফেরি চলাচলে ঝুঁকি থাকে। তাই ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে ঘাটে তেমন গাড়ি নেই। নরসিংহপুর ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মো. ইকবাল হোসেন বলেন, ভোর ৪টা থেকে কুয়াশার কারণে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। আমরা দুর্ঘটনা এড়াতে এটি করেছি। এই রুটে ৬টি ফেরি নিয়মিত চলাচল করে।

পঞ্চগড়ে ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে জনপদ

হিমালয় কন্যা খ্যাত উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে চলছে শীতের দাপট। হিমালয়ের হিম বাতাসে এ জেলায় তাপমাত্রার পারদ প্রতিনিয়ত ওঠানামা করছে। মধ্যরাত থেকে এখন পর্যন্ত কুয়াশার চাদরে মুড়িয়ে রয়েছে পুরো জেলা। তীব্র শীত অনুভূত না হলেও ঘন কুয়াশার কারণে হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। গত কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা ১১ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে ওঠানামা করছে। সে কারণেই এই অঞ্চলে বেশ ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন ১০ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল সকাল ৯ টায় ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় হয়েছিল। জুলহাজ উদ্দিন ও আহসান হাবীব নামে দুইজন জানান, রাতে তীব্র ঠান্ডা লাগছে। আজও ভোরে কুয়াশা ছিল, তবে গতকালের মতো না। প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে হাত-পা যেন অবশ হয়ে আসার মতো অবস্থা। রাতে এখন ডাবল কাঁথা-কম্বল নিতে হচ্ছে। মনে হচ্ছে পৌষ মাসের ঠান্ডা শুরু হয়েছে। এদিকে তীব্র শীতের কারণে বেড়েছে বিভিন্ন শীতজনিত রোগব্যাধি। জেলার পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে বাড়ছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগীর ভিড়। শিশু ও বয়স্করা সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসকরা শীতে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধিতে চিকিৎসকরা চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন। পঞ্চগড়ের প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সহকারী কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ রায় বলেন, গত কয়েকদিন ধরে ১১ থেকে ১২ ডিগ্রির ঘরে তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল ৬ টায় ১০ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। গতকাল রোববার রেকর্ড হয়েছিল ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সামনের দিকে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।

সিদ্ধিরগঞ্জে জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতিনিধি দল গঠন

নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার জাতীয় নাগরিক কমিটির ১৭৬ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধি দল গঠন ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার (৮ ডিসেম্বর) জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এবং সদস্য সচিব আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়। কমিটির সুপারিশ করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্য আব্দুল্লাহ আল আমিন। প্রসঙ্গত, জাতীয় নাগরিক কমিটি দেশের বিভিন্ন থানায় তাদের প্রতিনিধি কমিটি ঘোষণা করে আসছে। এর মধ্যে রাজধানীর অধিকাংশ থানায় কমিটি ঘোষণা করেছে সংগঠনটি।

ভালুকা মুক্ত দিবস উপলক্ষে র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের ভালুকায় ৮ ডিসেম্বর ভালুকা মুক্ত দিবস উপলক্ষে র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে একটি বর্ণাঢ্য র‍্যালি উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বাসস্ট্যান্ড শহীদ স্মৃতিসৌধে এসে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন উপজেলা প্রশাসন ও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ। পরে সংক্ষিপ্ত আলোচনা শেষে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া প্রার্থনা করা হয়। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের এইদিনে মেজর আফসার উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে ভালুকা পাক হানাদার মুক্ত হয়। তৎকালীন বৃটিশ সেনাবাহিনীর (অবঃ) সুবেদার আফসার উদ্দীন আহমেদ ১৯৭১ এর ১৭ এপ্রিল ১টি মাত্র রাইফেল ও ৮জন সদস্য নিয়ে মুক্তিবাহিনীর একটি গেরিলা ইউনিট গঠন করেন। পরে ভালুকা থানা দখল করে ১৫/১৬টি রাইফেল ও প্রচুর গোলাবারুদ সংগ্রহ করেন। পরে তিনি প্রায় সাড়ে ৪ হাজার সদস্য’র এক বিশাল বাহিনী গঠন করেন।যা পরবর্তীতে সাব-সেক্টর কমান্ডার মেজর আফসার বাহিনী হিসেবে পরিচিত পায়। ওই যুদ্ধে ৪৭ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়। যুদ্ধকালীন আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার জন্য ডাক্তার রমজান আলী তরফদারের তত্বাবধানে ৫জন ডাক্তার ১০জন সহকারী চিকিৎসক ও ৪জন নার্সের সমন্বয়ে আফসার ব্যাটেলিয়ান হাসপাতাল নামে একটি ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল পরিচালিত হয়।

ফেনীতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয়ে নৌবাহিনী পরিবার কল্যাণ সংঘের সহায়তা

ফেনী সদর উপজেলার মরহুম খাইরুল আনোয়ার পেয়ারু জিমনেসিয়ামে বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিবার কল্যাণ সংঘের উদ্যোগে ও নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয়ে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। সম্প্রতি বানৌজা ঈসা খান ঘাঁটির অধিনায়ক কমডোর মোস্তফা জিল­ুর রহিম খান উপস্থিত থেকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত চারটি স্কুল, একটি কলেজ, ১১টি মাদ্রাসা, সাতটি মসজিদ, চারটি এতিমখানা ও ১২টি মন্দিরের প্রতিনিধিদের কাছে এসব সামগ্রী হস্তান্তর করেন। এ সময় নৌবাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তাগণ, স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। গেল আগস্টে ফেনী জেলায় আকস্মিক প্রলয়ংকরী বন্যায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী উদ্ধার, চিকিৎসা ও ত্রাণ সহায়তা প্রদান এবং পুনর্বাসন কার্যক্রম নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় ফেনীতে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এতিমখানা, মসজিদ, মন্দির ও বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিভিন্ন ব্যবহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়। উপকরণ সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে পানির মটর, আইপিএস, কম্পিউটার, গ্যাসের চুলা, ক্যামেরাসহ সিসি টিভি, প্যানেল সেট, সোলার প্যানেল, বৈদ্যুতিক ফ্যান, ওয়াটার ফিল্টার, ব্রেঞ্চ (ছোট ও বড়), বুক সেলফ, টেবিল, চেয়ার, মাইক ও সাউন্ড সিস্টেম, নামাজের ম্যাট ও কার্পেট, কোরআন শরিফ, মসজিদ ও মাদ্রাসার কিতাব, ডিজিটাল ঘড়ি, ঢাক-ঢোল, হারমোনিয়াম, মাদল ছাড়াও মন্দিরের বিভিন্ন ব্যবহার সামগ্রী। প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক দেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের ভয়াবহ বন্যায় নৌবাহিনী জরুরিভিত্তিতে উদ্ধার কার্যক্রমের পাশাপাশি মেডিকেল টিম ও ৩৫ শয্যার ফিল্ড হসপিটাল স্থাপনের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা এবং ওষুধ সামগ্রী দিয়েছে। সে সময় বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিবার কল্যাণ সংঘ ও নৌবাহিনীর সহায়তায় বন্যা কবলিত মানুষের মাঝে বিপুল পরিমাণ খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও পোশাক সামগ্রী বিতরণ করা হয়।

চিন্ময় কৃষ্ণসহ ১৬৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলার আবেদন

সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ১৬৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলার আবেদন করেছেন এনামুল হক নামে এক ব্যবসায়ী। রোববার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রথম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বক্কর ছিদ্দিকের আদালতে এ মামলার আবেদন করা হয়।চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) জনসংযোগ বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার কাজী মো. তারেক আজিজ এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ১৬৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার একটি আরজি দায়ের করা হয়েছে। গেল ২৬ নভেম্বরের ঘটনায় এ মামলার আবেদন করা হয়েছে। তবে এখনও আদেশ হয়নি।’বাদীপক্ষের আইনজীবী শামসুল আলম বলেন, ‘গেল ২৬ নভেম্বর চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অনুসারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনার সময় এনামুল হক নামে ব্যবসায়ী মারধরের শিকার হন। দাঁড়ি-টুপি থাকায় চিন্ময় কৃষ্ণের অনুসারীরা তাকে মেরে ডান হাত ভেঙে দিয়েছে। এ ছাড়া, তার মাথায় কিরিচ দিয়ে কোপ দিয়েছে চিম্ময়ের অনুসারীরা। এ ঘটনায় চিন্ময় কৃষ্ণকে প্রধান আসামি করে ১৬৪ জনের নামে মামলার আবেদন করা হয়েছে। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে শুনানির জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছেন।’চট্টগ্রাম সিটির কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গেল ২৫ নভেম্বর রাতে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইসকনের বহিষ্কৃত সংগঠক চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। ২৬ নভেম্বর সকাল ১১টার দিকে তাকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলা হলে বিক্ষোভ শুরু করেন তার অনুসারীরা। প্রায় তিন ঘণ্টা আটকে থাকার পর এক পর্যায়ে পুলিশ, বিজিবি লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তখনই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরবর্তী সিটির লালদিঘীর পাড় থেকে কোতোয়ালী এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করে চিন্ময়ের অনুসারীরা।এ ঘটনায় সাইফুলের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এ ছাড়া, পুলিশের ওপর হামলা, সরকারি কাজে বাধাদান এবং আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা, ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা হয়। ছয় মামলায় ৪০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে দশজনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

রাজশাহীতে পুষ্টি ‘ভার্সেস অফ লাইট’ প্রতিযোগিতার অডিশন অনুষ্ঠিত

দেশের শীর্ষ স্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান টিকে গ্রুপের তত্ত্বাবধানে শুরু হয়েছে পুষ্টি ‘ভার্সেস অফ লাইট’ হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতা। টিকে গ্রুপের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট এই আয়োজনের সহযোগী হিসেবে রয়েছে। বর্তমানে চলছে অডিশন পর্ব। রোববার (৮ ডিসেম্বর) রাজশাহীর মনি বাজার সিএন্ডবি মোড়ের নানকিং দরবার হলে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রতিযোগিতার অডিশন। ‘কণ্ঠে ছড়াক পবিত্র বাণী’ স্লোগানে দেশব্যাপী উদীয়মান হাফেজদের অসাধারণ প্রতিভা ও তেলাওয়াত দক্ষতাকে সম্মান জানাবে পুষ্টি ‘ভার্সেস অফ লাইট’ হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতা। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কোরআন চর্চায় নিবেদিত সমুধুর কণ্ঠের তেলাওয়াতকারীদের প্রতিভা অন্বেষণেই এই আয়োজন। রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই রাজশাহী অঞ্চলের প্রতিভাবান হিফজুল কোরআনের শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠে মাদ্রাসা প্রাঙ্গণ। রাজশাহীতে অডিশন রাউন্ডে মোট ১৫০ জন প্রতিযোগী অংশ নেয়, যাদের মধ্যে মূল পর্বে চূড়ান্তভাবে প্রতিযোগিতার জন্য নির্বাচিত হয় দুইজন। যারা পরবর্তী সারা দেশ থেকে একইভাবে নির্বাচিত প্রতিযোগীদের সাথেই প্রতিযোগিতা করবে।প্রতিযোগিতার মূলপর্বে প্রধান বিচারক থাকবেন আন্তর্জাতিক কোরআন তিলাওয়াত সংস্থার (ইক্বরা) চেয়ারম্যান ক্বারী শেখ আহমদ বিন ইউসুফ আল-আজহারী, জর্ডানের আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামী স্কলার হাতেম জামিল মাহমুদ সুহেমাত ও সৌদি আরবের জেদ্দার আল-কামাল মসজিদের সাবেক ইমাম হাফেজ মাওলানা আবদুল কাদের রহমানী।আগামী রমজান মাসে প্রতিযোগিতাটি সম্প্রচারিত হবে চ্যানেল ডিবিসিতে। পুষ্টি ‘ভার্সেস অফ লাইট’ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীরা সম্মিলিতভাবে পাচ্ছেন ৪০ লক্ষ টাকার সমমানের পুরস্কার। এই প্রতিযোগিতায় অনুর্ধ্ব ১৬ বা এরচেয়ে কম বয়সী কিশোর-কিশোরীরা অংশ নিতে পারবে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে তারা নির্বাচিত হবে এবং প্রতিটি অঞ্চলের শীর্ষ প্রতিযোগীরা ঢাকায় গ্র্যান্ড ফাইনালে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবে। রেজিস্ট্রেশনের জন্য ভিজিট করুন www.pustiversesoflight.com পুষ্টি ‘ভার্সেস অফ লাইট’ আগামী প্রজন্মের হাফেজদের অনুপ্রাণিত করার পাশাপাশি তাদের বিকাশ ও ঐক্যের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার অনন্য উদ্যোগ। এটি তরুণ হাফেজদের অর্জন উদযাপনের পাশাপাশি দেশজুড়ে ঈমান, ইখলাস ও ইলমের চেতনা সৃষ্টিতে রমজান মাসে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। আগামী সোম ও মঙ্গলবার (৯ ও ১০ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদের ইসলামিক ফাউন্ডেশন মসজিদ শাখার হল রুমে হবে প্রতিযোগিতার পরবর্তী অডিশন, যা চলবে সকাল নয়টা থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত।

মৌলভীবাজারে যুবলীগের নেতার বাড়িতে অগ্নিকাণ্ড, মা ও চাচীর মৃত্যু

মৌলভীবাজার জেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও যুবলীগের নেতা শেখ রুমেল আহমদের বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বাড়িতে থাকা তার মা ও চাচি শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত তিনটার দিকে সদর উপজেলার ১১ নম্বর মোস্তফাপুর ইউনিয়ন পরিষদের রুমেলের নিজ বাড়িতে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। মৃতরা হলেন শেখ রুমেল আহমদের মা মেহেরুন্নেসা ও চাচি ফুলেছা বেগম কটি। বাড়ির লোকজনের ধারণা, ঝাড়বাতি থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে। মৌলভীবাজার ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মকর্তা যীশু তালুকদার জানান, রাতে অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখা গেছে, বাড়িতে থাকা মেহেরুন্নেসা ও ফুলেছা বেগম আগুনের ধোঁয়ায় অজ্ঞান হয়ে পড়েছেন। পরে তাদের উদ্ধার করে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। তিনি আরও জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে। আগুনে ডুপ্লেক্স ঘরটির সবকটি রুম পুড়ে গেছে। সেই সঙ্গে ঘরের মূল্যবান জিনিসপত্র সব ছাই হয়ে গেছে। এতে প্রায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। স্বজন ও প্রতিবেশীরা জানান, শেখ রুমেল আহমেদর ঘরে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হলে তাৎক্ষণিকভাবে পাড়াপ্রতিবেশীরা এগিয়ে আসেন। প্রহরী আরজান মিয়া জানান, আগুনের ধোঁয়ায় পুরোবাড়ি ঘর আচ্ছন্ন হয়ে যায়। সবার চিৎকারে লোকজন এগিয়ে আসেন। প্রতিবেশীরা ধোঁয়ার কারণে ঘরে দরজা জানালা দেখতে পায়নি। এক সময় তারা ঘরের দরজা ভেঙে ঢুকে মেহেরুননেছা ও চাচি ফুলেছা বেগম কটিকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করেন। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদর্শন রায় জানান, তাদের একটি টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত আছে, তারা তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তদন্তের পর পুরো ঘটনা জানা যাবে।

শুধু ভারত নয়, বিভিন্ন দেশ থেকে চাল আমদানি করবে সরকার: খাদ্য উপদেষ্টা

ভারত ছাড়াও বিভিন্ন দেশ থেকে সরকার চাল আমদানি করবে বলে জানিয়েছেন খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার। রোববার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে মেঘনার তীরে নির্মাণাধীন স্টিল সাইলোর নির্মাণকাজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের দিনি তিনি এই কথা জানান।এ সময় খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে চাল সংগ্রহে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে ২২ লাখ টন খাদ্য মজুত রয়েছে। সেটিকে ৩০ লাখ করার জন্য কাজ করছে সরকার।’যখন দেশে চালের ভাল উৎপাদন হয়, তখন আমদানির পরিমাণ কম হয় জানিয়ে আলী ইমাম বলেন, ‘তবে ঘাটতি পূরণের জন্য মাঝেমধ্যে আমদানি করতে হয়। এবার বন্যায় পূর্বাঞ্চলে কৃষি জমির ক্ষতি হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, খাদ্য ঘাটতি হতে পারে। এ জন্য আমরা আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে খাদ্যশস্য কেনার পরিকল্পনা নিয়েছি। এর মধ্যে মূলত ভারত থেকে। দ্বিতীয়ত সরকার টু সরকারের মাধ্যমে সরাসরি যোগাযোগের মধ্যমে। এরমধ্যে মিয়ানমার থেকে এক লাখ টন চালা আমদানি করা হবে। ভিয়েতনাম থেকেও চাল আনব। এছাড়া, থাইল্যান্ড ও পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে সরকার সরাসরি ওই দেশের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে চাল আমদানি করবে।’ভারত থেকে চাল আমদানি ব্যয় তুলনামূলক কম হয়, অন্যদেশ থেকে চাল আমদানির ক্ষেত্রে ব্যয় বাড়বে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা বাণিজ্যকে রাজনীতির সঙ্গে মিলিয়ে না ফেলি। ভারত থেকে চাল কিনলে তুলনামূলক খরচ কম পড়বে। এ জন্য দেড় লাখ টন চাল আমদানির অনুমোদন দেয়া আছে। আমরা আশা করি, সে চাল দ্রুত আসবে।’‘পাশাপাশি আমরা একক কোন একটা দেশের ওপর নির্ভর করব না। যেহেতু আমাদের খাদ্য ঘাটতি রযেছে। আমরা অন্য দেশ থেকে আমদানি করে সে ঘাটতি পূরণ করব। সে চেষ্টাই করছি। যোগ করেন আলী ইমাম।গম উৎপাদন সম্পর্কে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের দেশে ৭০ লাখ টন গমের চাহিদা রয়েছে। আমরা উৎপাদন করতে পারি মাত্র দশ লাখ টন। এর বেশি উৎপাদন আমাদের পক্ষে কঠিন। গম চাষে জমিগুলো এখন ভুট্টা চাষ হচ্ছে। অধিকাংশ গম বাইরে থেকে আমদানি করতে হচ্ছে। বেসরকারি খাত আমদানি কার্যক্রম চালাচ্ছে।’

দেবিদারে বিল থেকে ২ যুবকের মরদেহ উদ্ধার

কুমিল্লা দেবিদ্বার উপজেলার জাফরগঞ্জ এলাকায় বিল থেকে দুই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯ টায় লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়। নিহতরা হলেন- দেবিদ্বার জাফরগঞ্জ এলাকার মনিরুল ইসলাম ও অন্যজন হলেন, খাগড়াছড়ি রামগঞ্জ এলাকার মোহন মিয়া। নিহত দু’জনেই ইন্টারনেটের বিল উত্তোলনসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কাজ করতেন। এদিকে বিলের মধ্যে দুই যুবকের মরদেহ পড়ে থাকার খবর পেয়ে দূরদূরান্ত থেকে উৎসুক জনতা ঘটনাস্থলে ভিড় করতে থাকে। খবর পেয়ে নিহতদের স্বজনরা ঘটনাস্থলে এসে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। তবে কীভাবে এ ঘটনা, এটা কি হত্যাকাণ্ড নাকি অন্য কিছু তা তদন্ত ছাড়া বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। দেবিদ্বার সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ মো. শাহিন জানান, এটা হত্যাকাণ্ড নাকি অন্য কিছু তা এখন বলা সম্ভব না। তবে অনেকগুলো তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়াও তদন্ত চলছে। তদন্তের পরে বিস্তারিত বলা যাবে।

পঞ্চগড়ে তীব্র শীতে বিপর্যস্ত জনজীবন

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় গত কয়েকদিন ধরে কনকনে হিম ঠান্ডায় জেঁকে বসেছে তীব্র শীত। তবে তাপমাত্রা ১১-১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে ওঠানামা করছে। ফলে শীতের দাপটে কাবু হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের মানুষ। রোববার(৮ ডিসেম্বর)সকাল ৬ টায় তেঁতুলিয়ায় ১২.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়া পর্যবেক্ষক মো. রোকনুজ্জামান। এদিকে তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় সবচেয়ে দুর্ভোগে পড়েছে শ্রমজীবী ও খেটে খাওয়া মানুষ। শীত ও ঠান্ডার কারণে কাজে বের হতে পারছে না তারা। উত্তরীয় হিম হাওয়া ও কনকনে ঠান্ডায় গরম কাপড়ের অভাবে শীত কষ্টে পড়েছে এ জনপদের মানুষ। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর থেকে হালকা কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে রাস্তাঘাট, লোকালয়। সেই সঙ্গে হিম বাতাসে জবুথবু অবস্থা মানুষের। কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে নিম্ন আয়ের লোকজনের। রাতে বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশা। হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় দুর্ভোগে পড়েছে বয়স্ক ও শিশুরা। অপরদিকে, হিম বাতাস বয়ে যাওয়ায় এখনও সেভাবে শীত না পড়ায় দিনে গরম ও রাতে হালকা শীতের কারণে আবহাওয়ার কারণে বেড়েছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগব্যাধি। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শিশু ও বয়স্করা সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়া পর্যবেক্ষক মো. রোকনুজ্জামান কালবেলাকে জানান, গত দুদিন পর আবারও তাপমাত্রা কিছুটা কমতে শুরু করেছে। রোববার সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এর আগে সকাল ৬টায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া এলাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ ৯৯ শতাংশ, যা গতকাল তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ১২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এখন দিন যত যাবে তাপমাত্রা কমতে শুরু করবে।

আজ ভালুকা মুক্ত দিবস

ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: আজ ৮ই ডিসেম্বর ভালুকা পাক হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালে দীর্ঘ ৯মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর মুক্তিযোদ্ধের অন্যতম সংগঠক মেজর আফসার বাহিনী কাছে এই দিনে ভালুকা ক্যাম্পের কয়েক হাজার রাজাকার, আলবদর ও পাক সেনাদের আত্মসর্মপনের মধ্য দিয়ে ভালুকা মুক্ত হয়। মেজর আফসার বাহিনীর অদম্য মুক্তি সেনাদের আক্রমনের মুখে পাকসেনা ও রাজাকাররা সূর্য্য উঠার আগেই ভালুকা ক্যাম্প ছেড়ে পাশ্ববর্তী গফঁরগাওয়ের উদ্দেশ্যে সড়ক পথে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালালে মুক্তিযোদ্ধারা চারিদিক থেকে তাদের ঘিরে ফেলে। অনেক রাজাকার অস্ত্র ফেলে বিভিন্ন দিকে পালিয়ে গেলেও বেশীরভাগ আত্মসমর্পন করতে বাধ্য হয়। পরে মুক্তিরা তাদেরকে ভালুকায় ফিরিয়ে আনে। ভোরের সূর্য উঠতেই জয় বাংলা ধ্বনি তুলে গ্রাম থেকে দলে দলে লোক জমা হতে থাকে হানাদার মুক্ত ভালুকা সদরে। আটককৃত রাজাকারদের প্রতি ঘৃনা ও ধিক্কার জানায় স্বাধীন ভালুকার সর্বস্তরের মানুষ। ১৯৭১সনে বাংলাকে স্বাধীন করার লক্ষ্যে ১৭ই এপ্রিল বৃটিশ ভারত সেনাবাহিনীর (অব.) সুবেদার তৎকালীন ভালুকা থানা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি আফসার উদ্দিন ১টি মাত্র রাইফেল ও ৮জন সদস্য নিয়ে মল্লিকবাড়ী বাজারে গোপনে মুক্তিবাহিনী দল গঠন করেন। কয়েকদিনের মধ্যেই তারা ভালুকা থানা দখল করে ১৫/১৬টি রাইফেল ও একটি এল এম জি এবং কিছু গোলাবারুদ সংগ্রহ করে। এর কয়েকদিনের মাথায় কাওরাইদ থেকে ক্ষীরু নদী দিয়ে ভালুকা থানায় আসার পথে পনাশাইল নামক স্থানে পাক বাহিনীর অস্ত্র ও গোলাবারুদ সহ একটি নৌকা মুক্তিযোদ্ধারা আটক করে প্রচুর অস্ত্রসস্ত্র উদ্ধার করে। পরে ভারতের মেঘালয় হতে প্রশিক্ষনসহ প্রচুর অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে আসার পর এটি একটি শক্তিশালী বাহিনীতে পরিনত হয়। কিছুদিনের মধ্যেই ৮ সদস্যের দলটি সারে চার হাজারে উন্নীত হয়ে এফ জে ১১নং সেক্টরের ময়মনসিংহ সদর দক্ষিন ও ঢাকা সদর উত্তর সাব সেক্টর অধিনায়ক মেজর আফসার ব্যাটেলিয়ন নামে পরিচিত লাভ করে। ৭১এর ২৫শে জুন শুক্রবার সকাল হতে পরদিন শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ভালুকা গফরগাঁও সড়কের ভাওয়ালিয়াবাজু নামক স্থানে শিমুলিয়া নদীর পারে পাক বাহিনীর সাথে দীর্ঘ ৩৬ঘন্টা আফসার বাহিনীর একটানা যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধের পর ভালুকায় পাক বাহিনীর ক্যাম্পটি শক্তিশালী করা হয় । অপরদিকে স্থানীয় মুসলিম লীগ নেতারা এখানে ঘরে তুলে বিশাল রাজাকার ও আলবদর বাহিনীর একটি শক্তিশালী ক্যাম্প। এসব রাজাকার আল বদররা ভালুকার বিভিন্ন গ্রামে দিনের পর দিন হত্যা, নারী ধর্ষণ, বাড়ী ঘরে আগুন ও লুটপাট চালিয়ে জানমালের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে। আফসার বাহিনী বিভিন্ন সময়ে ভালুকা ক্যাম্পে পর্যায়ক্রমে বেশ কয়েকবার আক্রমন চালিয়ে তাদেরকে দূর্বল করে ফেলে। এই বাহিনীর দীর্ঘ ৯মাসের যুদ্ধে আফসার উদ্দিনের পুত্র নাজিম উদ্দিন সহ ৪৭জন মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাৎ বরণ করেন। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভালুকা উপজেলা কমান্ড ,বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বর্ণাঢ্য র‌্যালী, স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, দোয়া মাহফিল এবং ভালুকা মুক্ত দিবসের আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।

কারাভোগ শেষে ভারত থেকে ফিরলেন ৯ বাংলাদেশি

অবৈধভাবে ভারতে গিয়ে কারাভোগ শেষে দেশে ফিরেছেন ৯ বাংলাদেশি যুবক। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে তাদের হস্তান্তর করে। ফেরত আসা যুবকরা হলেন—সুজন ফকির (২৮), আব্দুল মোনাব (৩০), রেদোয়ান (২৫), নুর আলম (৩০), তাজির ইসলাম (২৮), শাহজাহান গাজী (৩৫), খাইরুল ইসলাম (২৯), সামাদ মিয়া (২৩), শাহাদত হোসেন (৩৪)। বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইব্রাহিম হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ফেরত আসা যুবকরা ভারতে কাজের সন্ধানে গিয়ে আটক হন। পরে আদালত তাদের দেড় বছরের সাজা দেন। কারাভোগ শেষে তারা দেশে ফিরেছেন। তাদেরকে বেনাপোল পোর্ট থানায় পাঠানো হয়েছে। বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাসেল মিয়া বলেন, ইমিগ্রেশন পুলিশ নয়জন যুবককে থানায় হস্তান্তর করেছে। পরে নিজ জিম্মায় তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

মিয়ানমার সীমান্তে একের পর এক বিস্ফোরণে কাঁপছে টেকনাফ

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপে একের পর এক বিস্ফোরণের শব্দে কাঁপছে কক্সবাজারের টেকনাফের সীমান্ত এলাকা। বিস্ফোরণের বিকট শব্দে টেকনাফ পৌর, সদর, সাবরাং ও শাহপরীর দ্বীপ এলাকার বাসিন্দারা ঘুমহীন রাত কাটাচ্ছেন। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) ভোর ৪টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত একের পর এক বিস্ফোরণের শব্দ আসতে থাকে। টেকনাফের স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মিয়ানমারে একের পর এক বিস্ফোরণের বিকট শব্দে তাদের ঘরবাড়ি পর্যন্ত কেঁপে উঠছে। এতে আতঙ্কে রাতে তারা ঘুমাতে পারছেন না। এমনকি আতঙ্কে অনেকে এ শীতের রাতে ঘরের বাইরে রাত যাপন করেছেন। মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে যুদ্ধ চলছে। টেকনাফ সীমান্তঘেঁষা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বেশিরভাগ অঞ্চল এখন আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে। সেখানকার নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে মরিয়া জান্তা বাহিনী একের পর এক বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে স্থলে তাদের হয়ে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে সামনাসামনি লড়াই করছে রোহিঙ্গাদের কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে গত শুক্রবার মধ্যরাত পর্যন্ত টানা বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। এ সময় মিয়ানমারের আকাশে বিমানের চক্করও দেখা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, মংডু টাউন নিয়ন্ত্রণে নেওয়া আরাকান আর্মির অবস্থান লক্ষ্য করে বোমাবর্ষণ করা হচ্ছে বিমান থেকে। টেকনাফ পৌর ও সদর এলাকার পাশাপাশি সাবরাং ইউনিয়ন ও শাহপরীর দ্বীপে এ সময় মিয়ানমারের আকাশে যুদ্ধবিমান চক্কর দিতেও দেখা যায়। এ বিষয়ে সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর হোসেন জানান, মিয়ানমারের মংডু শহরের দক্ষিণ দিকের গ্রামগুলো থেকে বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে আসছে টেকনাফে। মর্টারশেল ও গ্রেনেড হামলার শব্দে কেঁপে উঠছে এপারের বাড়িঘর। বিস্ফোরণের শব্দে নির্ঘুম রাত কাটছে স্থানীয়দের। সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের ধারণা, মংডু শহরের দক্ষিণে উকিলপাড়া, ফয়েজীপাড়া, সিকদারপাড়া, হারিপাড়া ও ফাতংজা এলাকা ঘিরে প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে রাখাইন রাজ্যের অধিকাংশ এলাকা এখন আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে। মিয়ানমারের সরকারি বাহিনী এখন আকাশযোগে হামলা করছে। স্থলে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছে রোহিঙ্গাদের কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠীও। সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোহাম্মদ শরিফ ও শাহপরীর দ্বীপ ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুস সালাম বলেন, সীমান্তের ওপার থেকে আসা বিকট বিস্ফোরণের শব্দে টেকনাফের লোকজন আতঙ্কে আছে।