নানা অপকর্মে জড়িত ছিলেন কামরুল ইসলাম
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০২:০১ পিএম, ১৯ নভেম্বর ২০২৪
অর্থ আত্মসাৎ, অর্থ পাচার, দুর্নীতিসহ এমন কোনো অপর্কম নেই যা করেননি সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। অত্যন্ত প্রভাব প্রতিপত্তির সঙ্গে ক্ষমতার অপব্যবহার করে এসব করছেন তিনি। বিরোধী দলমত দমনেও তিনি অগ্রণী ও আগ্রাসী ভূমিকায় অবতীর্ণ ছিলেন।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সকাল ৯টায় অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রমনা জোনাল টিমের পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আরিফ নিউমার্কেট থানার ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ হত্যা মামলায় তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়, কামরুল ইসলাম ফ্যাসিস্ট সরকারের ভোট ডাকাতির মাধ্যমে চার বারের এমপি, একবার ক্যাবিনেট মন্ত্রী ও একবার প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ আসামি অত্যন্ত ভয়ানক চরিত্রের অধিকারী। যা তার আচার, আচরণ, অঙ্গভঙ্গি ও কথাবার্তার মাধ্যমে প্রকাশ হতো। তিনি অত্যন্ত প্রভাব প্রতিপত্তির সঙ্গে ক্ষমতার অপব্যবহার করে এমন কোনো অপর্কম নাই যা তিনি করেন নাই। অর্থ আত্মসাৎ, অর্থ পাচার, দুর্নীতিসহ বিরোধী দলমত দমনে তিনি অগ্রণী ও আগ্রাসী ভূমিকায় অবতীর্ণ ছিলেন। তার ভয়ে তার সংসদীয় এলাকাসহ বিভিন্ন মানুষ স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করতে পারতেন না।
এতে আরও বলা হয়, তিনি আইন প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বহু নিরাপরাধ মানুষকে জেল-জুলুমের মাধ্যমে নির্যাতন করতেন। এ আসামি ফ্যাসিস্ট সরকারের অন্যতম কলঙ্কিত চরিত্রের অধিকারী ছিলেন। তিনি ফ্যসিস্ট সরকারের বহু অপকর্মের ঘনিষ্ঠ সহচর বলে দেশে ও বিদেশে জনশ্রুতি আছে। তার গ্রেফতারে এলাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে শান্তি ফিরে এসেছে। এ আসামিসহ অন্যান্য আসামিদের নির্দেশে গত ১৯ জুলাই বিকেলে নিউমার্কেট থানাধীন নীলক্ষেত এলাকায় মাহফুজুর রহমান, নাসির উদ্দিন, শামীম উসমান, মো. আবু মূসা, মাঈনুদ্দিন, শাহাদাত হোসেন, আবির হোসেনসহ অনেক নিরস্ত্র ছাত্র-জনতা ও সাধারণ পথচারী আহত ও চিরতরে পঙ্গু হয়। আব্দুল ওয়াদুদ গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত আছে মর্মে স্বীকার করেন। প্রাথমিক তদন্তে এ আসামি মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার তথ্য প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। তিনি দেশ ছেড়ে বিদেশে পলায়নের বিভিন্ন চেষ্টায় অব্যাহত রাখেন। তার বিরুদ্ধে তদন্তকার্য অব্যাহত আছে। তিনি অতিগুরুত্বপূর্ণ একজন দলীয় পলিসি/ডিসিশন মেকার ছিলেন। তাকে পুলিশ রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে অতি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদঘাটিত হবে।
রাষ্ট্রপক্ষ ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করে। আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমানের আদালত তার ৮ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
শুনানি চলাকালে আদালতে কামরুল ইসলাম বলেন, সব দিন তো একরকম যায় না। এই দিন, দিন না; সামনে ভালো দিন আসবে।
তিনি আরও বলেন, নিউমার্কেট এলাকা আমার অধীনে না। ওই এলাকার এমপি আমি নিজেও না। এ মামলায় আমাকে ৫৬ নম্বর আসামি করা হয়েছে। আমার নামটি হয়তো শেষ মুহূর্তে ভুলে এজাহারে লিখে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, সোমবার (১৮ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর উত্তরা-১২ নম্বর সেক্টর থেকে কামরুল ইসলামকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।