রিক্রুটিং এজেন্সির আড়ালে পাচার ১৩ লাখ কোটি টাকা
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৪:৫৪ পিএম, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪
বিদেশে শ্রমিক পাঠানোর নামে হুন্ডির মাধ্যমে দেশ থেকে যে টাকা পাচার করা হয়েছে, তা দিয়ে উত্তরা থেকে মতিঝিল- এমন মেট্রোরেল বানানো যেত চারটি। রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর এমন ভয়াবহ অর্থপাচারের চিত্র উঠে এসেছে শ্বেতপত্রে। বলা হচ্ছে, সামাজিক সুরক্ষা খাতের হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হত যাদের পেছনে, তাদের ৭৩ শতাংশই ভুয়া। যা বাড়িয়েছে সরকারি খরচ ও বঞ্চনা।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) কিংবা ওএমএসের পণ্য কিনতে নিম্ন ও মধ্যবিত্তের অপেক্ষার দীর্ঘ লাইন চোখে আঙুল দিয়ে যখন বুঝিয়ে দেয় আয়-ব্যয়ের হিসাব মেলাতে সাধারণ মানুষের হিমশিম অবস্থার কথা। এমন দৈন্যদশার মধ্যেই শ্বেতপত্র প্রতিবেদনে জানানো হয়, দরিদ্র মানুষ নিয়ে রীতিমত ছিনিমিনি খেলা হয়েছে গেল সরকারের আমলে।
সামাজিক সুরক্ষা খাতের হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে; যাদের জন্য, ২০২২ সালের তথ্য- তাদের ৭৩ শতাংশই ভুয়া, অর্থাৎ, তারা গরিব নয়। দুর্নীতির জালে বন্দি রয়েছে নিম্ন আয়ের দুেই কোটি মানুষ; যারা দুই দিন কাজ করতে না পারলেই পড়ে যায় দারিদ্রসীমার নিচে।
শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য অধ্যাপক আবু ইউসুফ বলেন, ‘সরকার টাকা খরচ করছে ঠিকই, তবে যাদের জন্য খরচ করছে সুবিধা তাদের কাছে পৌঁছাচ্ছে না। সুবিধা সঠিক মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য সুবিধাভোগীদের সঠিক তালিকা তৈরি করতে হবে।’
এ দিকে, অর্থপাচারের নানা মাধ্যম খুঁজতে যখন হয়রান সরকারি বিভিন্ন সংস্থা; তখন শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি বলছে, ‘বিদেশে শ্রমিক পাঠাতে শুধু ভিসার আড়ালে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো গেল এক দশকে পাচার করেছে ১৩ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা। যা দিয়ে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল বানানো যেত চার বার।’
এ অবস্থায় জনশক্তি রফতানির প্রতিটি ধাপে অর্থ ব্যয়ে স্বচ্ছতা নিশ্চিতে রিক্রুটিং এজেন্সিকে বাধ্য করার তাগিদ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
রামরুর পরিচালক মেরিনা সুলতানা বলেন, ‘সিস্টেমটিকে স্বচ্ছ করতে হবে। যারা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত তাদের দ্রুত শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে।’
গেল ১৫ বছরে তথ্যের অস্বচ্ছতা আর ঘুষ-দুর্নীতিকে স্বাভাবিক কর্মযজ্ঞে পরিণত করা হয়েছিল বলেও জানানো হয়েছে শ্বেতপত্রে।