এবিবির চেয়ারম্যান সেলিম রেজা ফরহাদ হোসেনের বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ


30 November/Selim Brac Bank.jpg
সেলিম রেজা ফরহাদ হোসেন

অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান এবং ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সেলিম রেজা ফরহাদ হোসেনের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক অফিসার্স ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল ঢাকা।

Your Image

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) সংগঠনের সভাপতি একেএম মাসুম বিল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা শ্রাবণ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) কর্তৃক আয়োজিত সংলাপে কোন প্রকার সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত বা প্রমাণ ছাড়া ঢালাওভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও এর কর্মকর্তাদের জড়িয়ে মানহানিকর বক্তব্য দিয়েছেন সেলিম রেজা ফরহাদ হোসেন। ব্যাংকারদের সংগঠনের প্রধান ও একটি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রসঙ্গে তার নিকট পেশাদার দৃষ্টিভঙ্গি প্রত্যাশিত থাকলেও তিনি তার বক্তব্যে চরম অপেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছেন। তার এই অসত্য ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের জন্য চরম অমর্যাদাকর এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উপর থাকা জনমানুষের আস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, ‘বেনামী ঋণ প্রদান, লুটপাটে সহায়তা, ভুয়া ঋণ পত্র ইস্যু, অর্থ পাচারসহ ব্যাংকিং সেক্টরের বর্তমান দুর্দশার প্রাথমিক দায় বাণিজ্যিক ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যাংকের নির্বাহী প্রধানদের। এবিবির চেয়ারম্যান হিসেবে হোসেন সার্বিক বিষয়ে অবগত থাকা সত্ত্বেও ৫ আগস্টের পূর্বে তাকে এসব অনিয়মের বিষয়ে সোচ্চার হতে দেখা যায়নি।  বিগত সময়ে এবিবি এবং বিএবি সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের উপর বিভিন্নভাবে অন্যায় প্রভাব বিস্তারে সচেষ্ট ছিল। এই দুটি সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যাংকিং সেক্টরের দুর্বৃৃত্তায়ন ও ব্যাংকিং আইন দুর্বলকরণের অভিযোগ রয়েছে। তারা ব্যাংকের টাকা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দিয়ে এসব আইন প্রণয়নকে প্রভাবিত করেছে। এছাড়াও, বিগত সরকারকে তুষ্ট করতে ব্যাংকের টাকায় বিশেষ দুইটি চলচ্চিত্র প্রদর্শনীসহ নানা অপেশাদার কর্মকান্ডের মাধ্যমে এবিবির প্রধান হিসেবে ব্যাংকিং সেক্টরকে ক্ষতিগ্রস্থ করে এখন নিজের দায় এড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দিকে একের পর এক অভিযোগ তুলছেন।’

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘সেলিম রেজা ফরহাদ হোসেন নিজের নিয়োগ থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন নীতি প্রণয়নে ফ্যাসিবাদী সরকারের সাথে সম্পর্কের সূত্রে প্রায়শঃ প্রভাব রাখতে চেষ্টা করেছেন এবং বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মানতেও অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। হোসেন কোন ব্যাংকে উপব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন না করেই রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অনিয়মের মাধ্যমে সরাসরি ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ লাভ করেছেন। অন্য দিকে, এবিবির চেয়ারম্যান হিসেবে প্রভাব খাটিয়ে তিনি নিজের ব্যাংকের বিশাল সংখ্যক কর্মীদের পদত্যাগে বাধ্য করেছেন; যা ব্যাংকিং সেক্টরের জন্য একটা কালো ইতিহাস।’
 
বাংলাদেশ ব্যাংক অফিসার্স ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল ঢাকা বিশ্বাস করে, সম্প্রতি গঠিত টাস্কফোর্সের মাধ্যমে ব্যাংক খাতের অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা হবে। গভর্নরের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যেখানে ব্যাংক খাতের সুশাসন ফিরিয়ে আনতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন, সেখানে হোসেনের এই বক্তব্য দেশের আর্থিক খাতকে নতুনভাবে অস্থিতিশীল করে তোলার কোন ষড়যন্ত্রের অংশ কিনা তা খতিয়ে দেখা আবশ্যক।

বাংলাদেশ ব্যাংক অফিসার্স ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল সেলিম রেজা ফরহাদ হোসেনে বক্তব্যের প্রতিটি বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত ও প্রমাণকসহ ব্যাখ্যা দাবী করছে। কিভাবে ও কোন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বাণিজ্যিক ব্যাংকের কর্মকর্তাদের ব্লাকমেইলিং করেছে, তা এবং যারা করেছেন তাদের নাম প্রকাশ করতে হবে।
 
বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও এর কর্মীদের বিষয়ে সেলিম রেজা ফরহাদ হোসেনের মানহানিকর ঢালাও বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। একইসাথে তাকে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে তার বক্তব্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হয়। অন্যথায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মীদের পক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংক অফিসার্স ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল তাকে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাঙ্গণে অবাঞ্চিত ঘোষণাপূর্বক তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে বলে হুঁশিয়ারি দেয়া হয় বিজ্ঞপ্তিতে।  

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×