ভোজ্যতেলের মূল্য লিটারে আট টাকা বাড়াল সরকার
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৪:৪৩ পিএম, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪
ভোজ্যতেলের বাজারে কয়েক দিন ধরে চলা ‘অস্থির’ অবস্থার মধ্যে বোতলজাত সয়াবিন তেল ও খোলা তেলের মূল্য প্রতি লিটারে আট টাকা বাড়ানো হয়েছে। গেল দুই দিন ভোজ্যতেল আমদানিকারক ও পরিশোধনকারী মিলমালিকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে অবশেষে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের এ দাম নির্ধারণ করল সরকার।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) ভোজ্যতেলের দাম নির্ধারণ নিয়ে ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
আগে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ছিল ১৬৭ টাকা। বর্তমানে তা ১৭৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। খোলা তেল ছিল ১৪৯ টাকা। বর্তমানে তা ১৫৭ টাকা করা হয়েছে।
সম্প্রতি বিশ্ববাজারে দোহাই দিয়ে বাজারে বোতলজাত ভোজ্যতেলের সরবরাহ বন্ধ করে দেয় দেশের পরিশোধনকারী মিলমালিকেরা। এতে সরকার একধরনের নিরুপায় হয়েই দাম বাড়াতে বাধ্য হল।
এর আগে মিলমালিকদের প্রতিনিধিরা জানান, বিশ্ববাজারে দামের তুলনায় বর্তমানে প্রতি লিটারে দাম ১৩ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এখন সরকার যে সিদ্ধান্ত দেবে, সেটি তারা মেনে নেবেন।
বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহে বিঘ্ন ঘটায় অনেকেই তা বিক্রি করছেন। অনেকে বোতল কেটে খোলাবাজারে তেল বিক্রি করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘এখন থেকে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম হবে ১৭৫ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হবে ১৫৭ টাকা। আগে বোতলজাত তেল ১৬৭ টাকা ও খোলা তেল ১৪৯ টাকা ছিল। নতুন নির্ধারিত দামে সয়াবিন তেল বিক্রি ও বাজারে ভোজ্যতেল সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে মনিটরিং জোরদার করা হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বেশ কিছু দিন ধরে বাজারে তেলের ঘাটতি রয়েছে। এ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্তর্বর্তী সরকারের অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ভোক্তারাও অস্বস্তিতে রয়েছে। সেজন্য আমরা তেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছি। নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। আশা করি, বাজারে আর তেলের সরবরাহের ঘাটতি হবে না।’
শেখ বশিরউদ্দীন আরো বলেন, ‘শেষ এপ্রিলে ১৬৭ টাকা দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল। এরপর এখন পর্যন্ত বিশ্ববাজারে দাম অনেকটাই বেড়েছে। যে কারণে দেশে স্থানীয় মজুদদারি বেড়েছে। তবে, তেলের পর্যাপ্ত মজুদ আছে। অনেকে কিনে মজুদ করেছে। ভোক্তা অধিদপ্তরের মাধ্যমে আমরা সেটা মনিটরিং করছি। কোম্পানিগুলোর সঙ্গে কথা বলে এখন একটি যৌক্তিক দাম নির্ধারণ করে দিয়েছি। আর সমস্যা হবে না।’
সাংবাদিকদের এক এক প্রশ্নের উত্তরে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম কিছুটা স্থিতিশীল হচ্ছে। তবে, আলুর দামে চরম অস্থিরতা এখনও আছে। সেটাও নতুন আলু উঠলে দুই-তিন সপ্তাহের মধ্যে কমে আসবে বলে আশা করছি। ’
এ সময় ভোজ্যতেল সরবরাহকারী কোম্পানিগুলোর সংগঠনের সভাপতি মোস্তফা হায়দার বলেন, ‘কয়েক দিন থেকে আমরা কীভাবে সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়, সেটা নিয়ে কাজ করেছি। বিশ্ববাজারে প্রতি টন তেলের দাম এক হাজার ২০০ ডলারে উঠেছে। গত এপ্রিলে সরকার যখন তেলের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিল, তখন বিশ্ববাজারে প্রতি টন তেলের দাম ছিল এক হাজার ৩৫ ডলার। এখন আমরা এক হাজার ১০০ ডলার ধরে লিটারে আট টাকা দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ‘যদিও এখন আমাদের প্রতি টন তেল এক হাজার ২০০ ডলারে খালাস হচ্ছে। আরও দাম বাড়তে পারে। সে উদ্বেগ এখনও রয়ে গেছে। কারণ, বিশ্ববাজার এখনও স্থিতিশীল নয়।’