আরও ১০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে এডিবি

দেশের বেসরকারি খাতের অবকাঠামো উন্নয়নে ১০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ হাজার ১১৯ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১১৯ টাকা ধরে)। এই ঋণ দেশের বেসরকারি আর্থিক ইউনিটগুলোর অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যবহার করা হবে। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) এডিবির ঢাকা অফিস থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়। এডিবি বলছে, বাংলাদেশে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের (পিপিপি) মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো উন্নয়নে সহায়তা করার জন্য অতিরিক্ত অর্থায়ন অনুমোদন করেছে। রাজনৈতিক ক্রান্তিকালে বাংলাদেশ একটি রূপান্তরমূলক পর্যায়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, প্রাথমিকভাবে সরকারি খাত দিয়ে চালিত, সীমিত সম্পদ এবং বাস্তবায়ন সীমাবদ্ধতার কারণে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। অবকাঠামো বিনিয়োগের একটি প্রধান বাধা হলো স্থানীয় বাজারে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ তহবিলের ঘাটতি। এডিবি ঋণের লক্ষ্য হলো বিআইএফএফএলকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন দেওয়া, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করবে এমন গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো প্রকল্পগুলো সমাপ্ত করার সুবিধা দেওয়ার মাধ্যমে এ ব্যবধান পূরণ করবে। বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফাইন্যান্স ফান্ড লিমিটেড প্রজেক্ট শক্তিশালীকরণ-অতিরিক্ত অর্থায়ন বেসরকারি খাতের অর্থায়নে বিআইএফএফএল-এর সক্ষমতাকে শক্তিশালী করবে এবং আন্তর্জাতিক স্পনসর এবং সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আনা নতুন প্রযুক্তির সুবিধা দেবে। বাংলাদেশে নিযুক্ত এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং বলেন, প্রকল্পটি বাংলাদেশকে বেসরকারি খাতের অর্থায়নকে এগিয়ে নিতে কাজ করবে। দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের ঘাটতি মোকাবিলায় সরকারি অর্থায়নের ওপর চাপ কমাতে এবং আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে সক্ষম করবে। ঋণটি লিঙ্গ জলবায়ু পরিবর্তনের ওপর দৃঢ় ফোকাসসহ, পিপিপির সংগঠনের মাধ্যমে টেকসই বেসরকারি বিনিয়োগকে সমর্থন করবে। এ জন্য বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফাইন্যান্স ফান্ড লিমিটেডের আর্থিক ও প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।

বাড়ল স্বর্ণের দাম

দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এবার ভরিতে এক হাজার ১৬৬ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক লাখ ৩৮ হাজার ৩৯৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।’নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে এক লাখ ৩৮ হাজার ৩৯৩ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি এক লাখ ৩২ হাজার ৯৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি এক লাখ ১৩ হাজার ২৩৪ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯২ হাজার ৯৩৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত পাঁচ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ছয় শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে, গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।এর আগে, সবশেষ গেল ১ ডিসেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় ভরিতে এক হাজার ৪৮১ টাকা কমিয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক লাখ ৩৭ হাজার ২২৭ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি। এছাড়া, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি এক লাখ ৩০ হাজার ৯৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি এক লাখ ১২ হাজার ২৮৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯২ হাজার ১৩৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছিল গত ২ ডিসেম্বর থেকে।প্রসঙ্গত, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে ৫৭ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ৩৩ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ২৪ বার। আর ২০২৩ সালে দাম সমন্বয় করা হয়েছিল ২৯ বার।স্বর্ণের দাম কমানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৫৭৮ টাকায়।এছাড়া, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি দুই হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি দুই হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৫৮৬ টাকায়।

পোশাকশ্রমিকদের বছরে মজুরি বাড়বে নয় শতাংশ

তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের বার্ষিক মজুরি বৃদ্ধি বা ইনক্রিমেন্ট হবে নয় শতাংশ। মালিক ও শ্রমিকপক্ষের মধ্যে দীর্ঘ দর-কষাকষির পর ব্যাপারটি চূড়ান্ত হয়েছে। নিম্নতম মজুরি পুনর্নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত পোশাকশ্রমিকেরা নিয়মিত পাঁচ শতাংশের সঙ্গে অতিরিক্ত চার শতাংশ, অর্থাৎ নয় শতাংশ ইনক্রিমেন্ট পাবেন। চলতি ডিসেম্বর থেকে এটি কার্যকর হবে। ফলে, শ্রমিকদের জানুয়ারির মজুরির সাথে নয় শতাংশ ইনক্রিমেন্ট যুক্ত হবে। ন্যূনতম মজুরি পুনর্মূল্যায়ন ও বার্ষিক মজুরি বৃদ্ধির বিষয়ে শ্রম মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটির পঞ্চম বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। সচিবালয়ে শ্রম মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে সোমবার (৯ ডিসেম্বর) অতিরিক্ত সচিব মো. সবুর হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে মালিক ও শ্রমিকপক্ষের ছয় ও সরকারপক্ষের চার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। প্রাপ্ত তথ্যমতে, আজকের বৈঠকে এক পর্যায়ে শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধিরা ইনক্রিমেন্ট দশ শতাংশ দাবি করেন। তবে, মালিকপক্ষ দিতে চান আট শতাংশ। পরে সবার সম্মতিক্রমে নয় শতাংশ ইনক্রিমেন্টের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। এ নিয়ে মালিক, শ্রমিক ও সরকারপক্ষের প্রতিনিধিরা এক যৌথ ঘোষণায় সই করেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান, তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সহায়ক কমিটির সদস্য এএনএম সাইফুদ্দিন ও বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের মহাসচিব ফারুক আহাম্মাদ; জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুববিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম; বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বাবুল আখতার, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি কবির আহম্মেদ; শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালক এসএম এমাদুর হক, নিম্নতম মজুরি বোর্ডের সচিব রাইসা আফরোজ, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের যুগ্ম পরিচালক মো. হাসিবুজ্জামান ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান সিকদার। গেল ৩ ডিসেম্বর কমিটির চতুর্থ বৈঠকে মালিকপক্ষ সাত শতাংশ ইনক্রিমেন্ট দিতে রাজি আছে জানালে শ্রমিকপক্ষ আগের অবস্থান থেকে সরে এসে ১২ শতাংশ দাবি করে। তার আগে শ্রমিকপক্ষ অতিরিক্ত দশ শতাংশসহ মোট ১৫ শতাংশ বার্ষিক মজুরি বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছিল। গেল আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গাজীপুর ও সাভারের আশুলিয়ায় শ্রমিকেরা টানা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গেল সেপ্টেম্বরে ১৮টি বিষয়ে তৈরি পোশাকশিল্পের মালিক ও শ্রমিকনেতারা সমঝোতায় পৌঁছান। সমঝোতা অনুযায়ী, ছয় মাসের মধ্যে ন্যূনতম মজুরি পুনর্মূল্যায়ন ও নভেম্বরের মধ্যে বার্ষিক মজুরি বৃদ্ধির বিষয়ে সরকারকে প্রতিবেদন দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তারপর ন্যূনতম মজুরি পুনর্মূল্যায়ন ও বার্ষিক মজুরি বৃদ্ধির বিষয়ে সক্ষমতা ও করণীয় নির্ধারণে একটি কমিটি গঠন করে শ্রম মন্ত্রণালয়।

শেয়ারবাজারের জন্য সুখবর, আইসিবির তিন হাজার কোটি টাকার ঋণ ছাড়

শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতার লক্ষ্যে বিনিয়োগ ও উচ্চ সুদ হারে গৃহীত আমানত ঋণ পরিশোধসহ নিজস্ব বিনিয়োগ সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য স্বল্প সুদ হারে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের জন্য (আইসিবি) তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ ছাড় করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। প্রাপ্ত তথ্যমতে, চার শতাংশ সুদে নেয়া ঋণ পরিশোধের পাশাপাশি এই অর্থ দিয়ে পুঁজিবাজারে ভাল শেয়ারে বিনিয়োগ করা হবে। সুদ-আসলে ঋণ পরিশোধের জন্য দেড় বছর বা ১৮ মাস সময় পাবে আইসিবি। এই ঋণের গ্যারান্টি দিয়েছে সরকার। বাংলাদেশ ব্যাংক চারটি ব্যাংকের মাধ্যমে এই টাকা দিবে আইসিবিকে। এর মধ্যে ডাচ বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে ৭০০ কোটি টাকা, প্রাইম ব্যাংকের মাধ্যমে এক হাজার কোটি টাকা, ঢাকা ব্যাংকের মাধ্যমে ৫০০ কোটি টাকা ও মার্কেন্টাইল ব্যাংকের মাধ্যমে ৮০০ কোটি টাকা। গেল মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) আইসিবির চেয়ারম্যান আবু আহমেদ জানান, ঋণের দুই-তৃতীয়াংশ করপোরেশনের বিদ্যমান ঋণ পরিশোধে ব্যয় করা হবে ও অবশিষ্ট অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা হবে। এর আগে গত ১৩ নভেম্বর ঋণ সহজীকরণে সার্বভৌম গ্যারান্টি দেয় সরকার। এই গ্যারান্টির ভিত্তিতে গত ২৭ নভেম্বর আইসিবিকে আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়ে দশ শতাংশ সুদে তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। পরে আইসিবি বাংলাদেশ ব্যাংককে জানায়, দশ শতাংশ সুদের হার প্রতিষ্ঠানটির জন্য টেকসই নয় এবং তা কমিয়ে চার শতাংশ করার অনুরোধ করে। ওই প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংশোধিত সুদহারে ঋণ অনুমোদন করে। আবু আহমেদ বলেন, ‘বৃহত্তর অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ জোরদার করার পাশাপাশি ঋণ পরিশোধে আইসিবির সক্ষমতা বৃদ্ধি করাই এই আর্থিক সহায়তার লক্ষ্য।’

দাম বৃদ্ধির এক ঘণ্টার মধ্যেই বাজারে সয়লাব বোতলজাত সয়াবিন তেল

সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটার ৮ টাকা বাড়ানো হয়। এই খবরে রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে দেখা মেলে বোতলজাত সয়াবিন তেলের। অথচ গত কয়েকদিনে সয়াবিন তেল পাওয়াই যাচ্ছিল না গত কয়েক দিনে মানুষের মুখে মুখে শোনা গেছে এই খবরটি,বাজারে মিলছে না বোতলজাত সয়াবিন তেল রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেট, টাউন হল বাজার, হাতিরপুল বাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন খবর পাওয়া যায়। এ ছাড়া দেশের প্রত্যন্ত এলাকাতেও 'তেল নেই' এমন খবর পাওয়া যায়। এই সংকটের মধ্যেই সোমবার সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয় সরকার। বোতলজাত ও খোলা সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটার ৮ টাকা বাড়ানো হয়। এই খবরে রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে দেখে মেলে বোতলজাত সয়াবিন তেলের। অথচ গত কয়েকদিনে সয়াবিন তেল পাওয়াই যাচ্ছিল না। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) ভোজ্যতেলের দাম নির্ধারণ নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সচিবালয়ে দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি জানান, বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ৮ টাকা বাড়িয়ে ১৭৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যদিকে খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ৮ টাকা বাড়িয়ে ১৫৭ টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে। বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দেওয়ার পর এক ঘণ্টাও অতিবাহিত হয়নি। রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে দেখে গেছে বোতলজাত সয়াবিন তেল।

‘জেড ক্যাটাগরি’ ইস্যুতে যা জানাল বিএসইসি

পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে ‘জেড ক্যাটাগরি’ সংক্রান্ত ইস্যুতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কি উদ্যোগ নিয়েছে তা জানিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। সোমবার (৯ নভেম্বর) পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে ‘জেড ক্যাটাগরি’ সংক্রান্ত ইস্যুতে বিএসইসির উদ্যোগ ও প্রচেষ্টা শীর্ষক প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে এ তথ্য জানায় বিএসইসি। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বিএসইসির উদ্যোগ ও প্রচেষ্টার ফলে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কনফিডেন্স সিমেন্ট পিএলসির ক্যাটাগরি ‘জেড’ থেকে ‘এ’-তে উন্নীত হয়েছে। বিএসইসির তড়িৎ পদক্ষেপ ও আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলেই ওই তালিকাভুক্ত কোম্পানির লভ্যাংশ বিতরণজনিত নন-কমপ্লায়েন্সের বিষয়টির কার্যকর সমাধান সম্ভব হয়েছে।’ বিএসইসি থেকে রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকালে আয়োজিত সভায় জেড ক্যাটাগরিতে অবনমনপ্রাপ্ত কনফিডেন্স সিমেন্টের শীর্ষ কর্মকর্তাদের তলব করা হয়েছিল। ঢাকার আগারগাঁওয়ে বিএসইসির ভবনে অনুষ্ঠিত সভায় কনফিডেন্স সিমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক/সিইও, চিফ ফিন্যান্সিয়াল অফিসার ও কোম্পানি সচিবকে উপস্থিত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। মূলত লভ্যাংশ বিতরণজনিত নন-কমপ্লায়েন্সের কারণে কনফিডেন্স সিমেন্টকে জেড ক্যাটাগরিতে অবনমন করা হয় এবং ওই প্রসঙ্গেই আলোচনার জন্য কোম্পানিটির কর্মকর্তাদের তলব করা হয়েছিল। এরই মধ্যে কনফিডেন্স সিমেন্ট সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য বিনিয়োগকারীদের দশ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ বিতরণ করেছে ও কমপ্লায়েন্স রিপোর্ট জমা দিয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (৮ ডিসেম্বর) কনফিডেন্স সিমেন্টকে ‘জেড’ থেকে ‘এ’-তে উন্নীত করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। বিএসইসি থেকে জানানো হয়েছে, দেশের শেয়ারবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে লভ্যাংশ বিতরণ জনিত নন-কমপ্লায়েন্সসহ বিভিন্ন কারণে জেড ক্যাটাগরিতে অবনমন প্রসঙ্গে শেয়ারবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আলোচনা ও সমন্বয়ের উদ্যোগ নিয়েছে বিএসইসি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লভ্যাংশ ঘোষণা ও ওই লভ্যাংশ বিধিমোতাবেক বিতরণ করার জন্য তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে সতর্ক করছে বিএসইসি। বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, ‘আগামীতেও দেশের পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে বিএসইসির এ ধরনের কার্যক্রম ও উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে। একই সঙ্গে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লভ্যাংশ ঘোষণা ও ওই লভ্যাংশ বিধিমোতাবেক বিতরণ যেসব কোম্পানি করবে না, সেসব কোম্পানি ও তাদের পরিচালকদের বিরুদ্ধে বিএসইসি কঠোর ব্যবস্থা নেবে।’

ভোজ্যতেলের মূল্য লিটারে আট টাকা বাড়াল সরকার

ভোজ্যতেলের বাজারে কয়েক দিন ধরে চলা ‘অস্থির’ অবস্থার মধ্যে বোতলজাত সয়াবিন তেল ও খোলা তেলের মূল্য প্রতি লিটারে আট টাকা বাড়ানো হয়েছে। গেল দুই দিন ভোজ্যতেল আমদানিকারক ও পরিশোধনকারী মিলমালিকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে অবশেষে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের এ দাম নির্ধারণ করল সরকার। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) ভোজ্যতেলের দাম নির্ধারণ নিয়ে ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। আগে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ছিল ১৬৭ টাকা। বর্তমানে তা ১৭৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। খোলা তেল ছিল ১৪৯ টাকা। বর্তমানে তা ১৫৭ টাকা করা হয়েছে। সম্প্রতি বিশ্ববাজারে দোহাই দিয়ে বাজারে বোতলজাত ভোজ্যতেলের সরবরাহ বন্ধ করে দেয় দেশের পরিশোধনকারী মিলমালিকেরা। এতে সরকার একধরনের নিরুপায় হয়েই দাম বাড়াতে বাধ্য হল। এর আগে মিলমালিকদের প্রতিনিধিরা জানান, বিশ্ববাজারে দামের তুলনায় বর্তমানে প্রতি লিটারে দাম ১৩ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এখন সরকার যে সিদ্ধান্ত দেবে, সেটি তারা মেনে নেবেন। বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহে বিঘ্ন ঘটায় অনেকেই তা বিক্রি করছেন। অনেকে বোতল কেটে খোলাবাজারে তেল বিক্রি করছেন। সংবাদ সম্মেলনে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘এখন থেকে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম হবে ১৭৫ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হবে ১৫৭ টাকা। আগে বোতলজাত তেল ১৬৭ টাকা ও খোলা তেল ১৪৯ টাকা ছিল। নতুন নির্ধারিত দামে সয়াবিন তেল বিক্রি ও বাজারে ভোজ্যতেল সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে মনিটরিং জোরদার করা হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘বেশ কিছু দিন ধরে বাজারে তেলের ঘাটতি রয়েছে। এ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্তর্বর্তী সরকারের অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ভোক্তারাও অস্বস্তিতে রয়েছে। সেজন্য আমরা তেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছি। নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। আশা করি, বাজারে আর তেলের সরবরাহের ঘাটতি হবে না।’ শেখ বশিরউদ্দীন আরো বলেন, ‘শেষ এপ্রিলে ১৬৭ টাকা দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল। এরপর এখন পর্যন্ত বিশ্ববাজারে দাম অনেকটাই বেড়েছে। যে কারণে দেশে স্থানীয় মজুদদারি বেড়েছে। তবে, তেলের পর্যাপ্ত মজুদ আছে। অনেকে কিনে মজুদ করেছে। ভোক্তা অধিদপ্তরের মাধ্যমে আমরা সেটা মনিটরিং করছি। কোম্পানিগুলোর সঙ্গে কথা বলে এখন একটি যৌক্তিক দাম নির্ধারণ করে দিয়েছি। আর সমস্যা হবে না।’ সাংবাদিকদের এক এক প্রশ্নের উত্তরে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম কিছুটা স্থিতিশীল হচ্ছে। তবে, আলুর দামে চরম অস্থিরতা এখনও আছে। সেটাও নতুন আলু উঠলে দুই-তিন সপ্তাহের মধ্যে কমে আসবে বলে আশা করছি। ’ এ সময় ভোজ্যতেল সরবরাহকারী কোম্পানিগুলোর সংগঠনের সভাপতি মোস্তফা হায়দার বলেন, ‘কয়েক দিন থেকে আমরা কীভাবে সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়, সেটা নিয়ে কাজ করেছি। বিশ্ববাজারে প্রতি টন তেলের দাম এক হাজার ২০০ ডলারে উঠেছে। গত এপ্রিলে সরকার যখন তেলের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিল, তখন বিশ্ববাজারে প্রতি টন তেলের দাম ছিল এক হাজার ৩৫ ডলার। এখন আমরা এক হাজার ১০০ ডলার ধরে লিটারে আট টাকা দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তিনি আরও বলেন, ‘যদিও এখন আমাদের প্রতি টন তেল এক হাজার ২০০ ডলারে খালাস হচ্ছে। আরও দাম বাড়তে পারে। সে উদ্বেগ এখনও রয়ে গেছে। কারণ, বিশ্ববাজার এখনও স্থিতিশীল নয়।’

সঞ্চয়পত্রের মুনাফা না পেয়ে বিপাকে লাখো গ্রাহক

বরিশাল অঞ্চলের লক্ষাধিক গ্রাহক সঞ্চয়পত্রের মুনাফার অর্থ না পেয়ে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্ভার ত্রুটির কারণে গেল ২৮ নভেম্বরের পর থেকে মুনাফার অর্থ পাচ্ছেন না তারা। এতে সরকারি তহবিলে নগদ অর্থ জমা রাখা গ্রাহকরা চরম বিপাকে পড়েছেন। এই সমস্যা কখন সমাধান হবে, তা-ও বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর একাধিক কর্মকর্তা বলেন, ‘গেল ২৮ নভেম্বরের পর থেকে পরিবার সঞ্চয়পত্র ও পেনশনার্স সঞ্চয়পত্রসহ সব ধরনের সঞ্চয় স্কিমের গ্রাহকদের মুনাফার টাকা তাদের ব্যাংক হিসাবে জমা হচ্ছে না। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো নিয়মিত ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফারের জন্য তাদের হেড অফিসের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংককে অ্যাডভাইস দিয়ে যাচ্ছে।’ কিন্তু, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে মেয়াদ পূর্তির পরও মুনাফাসহ গ্রাহকের ব্যাংক হিসাবে কোন অর্থই জমা হচ্ছে না। এমনকি সঞ্চয় অধিদপ্তর থেকে যেসব গ্রাহক বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্র কিনেছেন, সেখানেও একই বিড়ম্বনা অব্যাহত রয়েছে বলে সঞ্চয় অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে। তবে, বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কিছুই জানা সম্ভব হয়নি। এ দিকে, মাসের শেষ ও শুরুতে মুনাফার অর্থ না পেয়ে বরিশাল অঞ্চলের বিপুলসংখ্যক মানুষের দুর্ভোগের কোন শেষ নেই। বিশেষ করে পরিবার সঞ্চয়পত্র ও পেনশনার সঞ্চয়পত্রের বেশির ভাগ গ্রাহকই সরকারি তহবিলে জমাকৃত টাকার মাসিক মুনাফা দিয়েই তাদের পরিবারের খরচ নির্বাহ করে থাকেন। কিন্তু, সময়মত তা না পেয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন গ্রাহকরা।

ডিসেম্বরের প্রথম ৭ দিনে দেশে এলো সাড়ে ৬১ কোটি ডলার রেমিট্যান্স

চলতি মাসের প্রথম ৭ দিনে দেশে এসেছে ৬১ কোটি ৬৪ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। এই হিসাবে প্রতিদিন গড়ে দেশে এসেছে ৮ কোটি ৮১ লাখ ডলার রেমিট্যান্স। রোববার (৮ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এতে বলা হয়, চলতি ডিসেম্বর মাসের প্রথম ৭ দিনে দেশে এসেছে ৬১ কোটি ৬৪ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। আর গত নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে রেমিট্যান্স এসেছিল ৫০ কোটি ৮৯ লাখ। নভেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বেড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহ। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৮ কোটি ৫২ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার। এছাড়া বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে ৪ কোটি ৫৮ লাখ ২০ হাজার ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ৩৮ কোটি ৩৩ লাখ ৯০ হাজার ডলার ও বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ২০ লাখ ৩০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স। গত সেপ্টেম্বরে দেশে এসেছে চলতি অর্থবছরের সর্বোচ্চ ২৪০ কোটি ৪৭ লাখ ৯০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স। অক্টোবরে এসেছে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার। আর সবশেষ নভেম্বরে এসেছে ২১৯ কোটি ৯৫ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।

নতুন নোটে যুক্ত হবে ধর্মীয় স্থাপনাসহ ‘জুলাই বিপ্লবের গ্রাফিতি’

নতুন নোটে থাকবে না বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি। ২০, ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটের ডিজাইন পরিবর্তন করছে সরকার।রোববার (৮ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ব্যাংকের বোর্ড সভায় নতুন ডিজাইনের নতুন নোট প্রচলনের সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। জানা গেছে, নোটে নতুন করে যুক্ত হবে ধর্মীয় স্থাপনা, বাঙালি ঐতিহ্যসহ ‘জুলাই বিপ্লবের গ্রাফিতি’। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের পক্ষ থেকে এসব বিষয়ে চূড়ান্ত অনুমোদন হয়েছে। নতুন নোট ছাপানোর বিষয়ে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সব কিছু ঠিক থাকলে ছয় মাসের মধ্যে বাজারে আসবে নতুন টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা বলেন, আজকের বোর্ড সভায় নতুন ডিজাইনের নতুন নোট প্রচলনের বিষয়টি অনুমোদিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সূত্র জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে চারটি নোটের ডিজাইন পরিবর্তন করা হচ্ছে। পরে ধাপে ধাপে দেশের সব ধরনের ব্যাংক নোটের ডিজাইন নতুন করা হবে। এর আগে গত ২৯ সেপ্টেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ নতুন নোটের বিস্তারিত নকশার প্রস্তাব জমা দিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেয়। তবে নতুন নোট ছাপানোর বিষয়ে মূল সুপারিশ করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রা ও নকশা উপদেষ্টা কমিটি। কমিটির সভাপতি বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর-১। কমিটিতে চিত্রশিল্পীরাও রয়েছেন। উল্লেখ্য, বর্তমানে বাংলাদেশে ১, ২, ৫, ১০, ২০, ৫০, ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার ১০টি কাগুজে নোটের প্রচলন আছে। এর মধ্যে ২ থেকে শুরু করে ১০০০ টাকা পর্যন্ত সব কাগুজে নোটে বঙ্গবন্ধুর ছবি আছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, সবশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৩৮ হাজার ৪০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে নতুন নোট ছাপতে। তার আগের অর্থবছরে খরচ ছিল ৩৭ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। আর ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩৪ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছিল।

কানাডা থেকে পদত্যাগ করলেন এবি ব্যাংকের এমডি

বেসরকারি খাতের এবি ব্যাংকের এমডি তারিক আফজাল কানাডা থেকে পদত্যাগ করেছেন। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ই-মেইলে তিনি পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। রোববার (৮ ডিসেম্বর) ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের একাদিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, দীর্ঘ ছুটি শেষে রোববার আফজালের যোগদান করার কথা ছিল। যোগদান না করে তিনি পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। সেখানে শারিরীক নানা অক্ষমতার কথা উল্লেখ করেছেন। তারিক আফজাল ২০১৮ সালে ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে এবি ব্যাংকে যোগদান করেন। ২০১৯ সালের ৮ জুলাই তিনি প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর হন। তার আগে তিনি বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানর এমডিসহ উচ্চপদস্থ পদে কর্মরত ছিলেন।

পুঁজিবাজারে আসতে আরো দুই বছর সময় পেল সীমান্ত ব্যাংক

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্য ও তাদের পরিবারের কল্যাণে প্রতিষ্ঠিত হওয়া সীমান্ত ব্যাংক নিয়মানুযায়ী নির্ধারিত সময়ে পুঁজিবাজারে আসতে পারেনি। ফলে, তালিকাভুক্ত হতে পাঁচ দফায় সময় চেয়েছে ব্যাংকটি। বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্ষদ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আগামী ২০২৬ সাল পর্যন্ত সময় বাড়িয়ে দিয়েছে। রোববার (৮ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা এ তথ্য জানিয়েছেন। হুসনে আরা শিখা জানান, সীমান্ত ব্যাংকের প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজারে থেকে মূলধন সংগ্রহের সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন করেছিল। এটা ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত সময় বাড়িয়ে দিয়েছে পর্ষদ।’ ২০১৫ সালের ১৭ জুন সীমান্ত ব্যাংককে সম্মতিপত্র দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। পরের বছর ২১ জুলাই ব্যাংকটি বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘শিডিউলড ব্যাংক’ হিসেবে নথিবদ্ধ হয় ও ১ আগস্ট গেজেটভুক্ত হয়। পরে বিজিবির ৪০০ কোটি টাকার প্রাথমিক মূলধন জোগান দেওয়াসহ অন্যান্য কাজ শেষে সীমান্ত ব্যাংকের এই আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ২০১৬ সালের ২ সেপ্টেম্বর। নিয়মানুযায়ী, ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরুর তিন বছরের মধ্যে আইপিও মাধ্যমে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু, পরিস্থিতি বিবেচনায় পাঁচ বছর সময় দেয়া হয়। তারপরও সীমান্ত ব্যাংক নির্ধারিত সময় পুঁজিবাজার আসতে পারেনি। এখন পঞ্চম দফায় সময় চেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্ষদ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সময় বাড়িয়ে দিল।

অসৎ উদ্দেশ্যে বিধি ভঙ্গ করে আমলাকে গভর্নর করেছিল: ফাহমিদা খাতুন

বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদ্যমান বিধি অনুযায়ী বর্তমান ও পূর্বতন কোন সরকারি কর্মকর্তা গভর্নর কিংবা ডেপুটি গভর্নর হতে পারে না। তারপরও আমরা দেখি অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য সেখানে আমলাদের বসিয়ে দেয়া হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালোগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। রোববার (৮ ডিসেম্বর) ঢাকার এফডিসিতে দুর্নীতি প্রতিরোধে আর্থিক খাতে সুশাসনের অভাব নিয়ে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ছায়া সংসদে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফাহমিদা খাতুন আরো বলেন, ‘আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষায় বাংলাদেশ ব্যাংক জরুরি অবস্থা বিবেচনায় টাকা ছাপিয়ে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে দিয়েছে, এই টাকা কোনভাবেই ঋণ বা ব্যবসায়িক কাজে লাগানো যাবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদ্যমান বিধি অনুযায়ী বর্তমান ও পূর্বতন কোন সরকারি কর্মকর্তা গভর্নর কিংবা ডেপুটি গভর্নর হতে পারে না। তারপরও আমরা দেখি, অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য সেখানে আমলাদের বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। অপরাধ করে শাস্তি না পেয়ে পার পেয়ে যাওয়ার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তা না হলে ক্ষমতার পালাবদলের সঙ্গে সঙ্গে শোষণ ও দুর্নীতির পালাবদল চলতে থাকবে। তিনি বলেন, ‘চলমান ব্যাংকগুলোতে এত সমস্যা থাকার পরেও বিগত সরকার রাজনৈতিক বিবেচনায় অনভিজ্ঞ ব্যক্তিদের ডিজিটাল ব্যাংকের অনুমোদন দিয়েছে। যেখানে স্বজনপ্রীতিই ছিল মুখ্য।’ ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন থাকলেও বাণিজ্য ক্ষেত্রে তেমন কোন অসুবিধা হবে না। প্রয়োজনে বিকল্প কোন দেশ থেকে আমাদের পণ্য ক্রয়ের উদ্যোগ নিতে হবে। আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ আমদানি চুক্তিটি বিতর্কিত ও একপক্ষীয় হয়েছে। জনগণকে পাশ কাটিয়ে এই চুক্তি করা হয়েছে। এখানে বাংলাদেশের স্বার্থ সুরক্ষিত হয়নি।’ তিনি বলেন, ‘অর্থনীতি বিষয়ক শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি বিগত ১৫ বছরের শাসন আমলে আর্থিক খাতকে চোরতন্ত্র হিসেবে উল্লেখ করলেও পতিত সরকারের আমলে শুধু চোরতন্ত্র নয়, তারা দখলতন্ত্র, লুটতন্ত্রসহ, ডাকাততন্ত্র কায়েম করেছিল। পতিত সরকারের শাসন আমলে পাচারকৃত ২৩৪ বিলিয়ন ডলার দিয়ে ৭৫-৮০টি পদ্মা সেতু নির্মাণ করা যেত। খেলাপিকৃত ঋণ তিন লাখ কোটি টাকা দিয়ে ১৪টি মেট্রোরেল ও আরও ২৪টি পদ্মা সেতুর মত প্রকল্প নির্মাণ করা যেত। খেলাপি ঋণে পিছিয়ে নেই রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠানগুলোও। রাষ্ট্রায়ত্ব লোকসানি প্রতিষ্ঠানগুলোর খেলাপি ঋণের বোঝা যা দাঁড়িয়েছে, তা কিয়ামত পর্যন্ত শোধ করা যাবে না।’ কিরণ বলেন, ‘বিগত সময়ে আমরা দেখেছি, ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন পাঁচ তারকা হোটেলে বসে সুদহার ও ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণ করে দিত। আর সেই সুদহার ও ডলারের মূল্য বাংলাদেশ ব্যাংক মেনে নিত। আমাদের জন্য বড় দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে, রাজনীতিবিদরাই ব্যবসায়ী, তারাই ব্যাংকের মালিক, আবার মিডিয়া হাউজেরও মালিক। যিনি কর খেলাপি, তিনিই ঋণ খেলাপি আবার তিনিই অর্থ পাচারকারী। ফলে, দেশে সুশাসনের অভাব ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করেছে। পৃথিবীর বহু দেশে ঋণ খেলাপিদের সামাজিকভাবে বর্জন করা হয়। তারা ব্যবসায়-বাণিজ্য, বাড়িভাড়া এমনকি পেট্রোল পাম্পে তেলও নিতে পারে না। অথচ আমাদের দেশে ঋণ খেলাপি ও অর্থ পাচারকারীরা এয়ারপোর্টে ভিআইপি হিসেবে যাতায়াত করে। রাষ্ট্রীয় সফরে প্রধানমন্ত্রী অথবা রাষ্ট্রপতির পাশাপাশি বসে ভ্রমণ করে।’ তিনি আরও বলেন, ‘গত ১৫ বছরে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে লুটপাটের নেতৃত্ব দিয়েছেন দুই সেনাপতি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী ও তৎকালীন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তারা দুইজন রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতকে খাদের কিনারায় নিয়ে গিয়েছে। বিগত সময়ের এই ডাকাতরা বিদ্যুৎ খাতে ছয় বিলিয়ন ডলার নয়-ছয় করেছে। অভিযোগ রয়েছে, বিভিন্ন প্রকল্প থেকে তিন বিলিয়ন ডলার শুধু ঘুস নিয়েছে পতিত প্রধানমন্ত্রীর পরিবার ও তার দোসররা। বিদ্যুতের এমন মিটার বসিয়েছে আওয়ামী সরকার বাতি না জ্বললেও মিটার ঘোরে। প্রিপেইড মিটারে রিচার্জ করার সঙ্গে সঙ্গে এক চতুর্থাংশ টাকা মিটার খেয়ে ফেলে। শিল্প কারখানাগুলোতে গ্যাসের পাইপে গ্যাসের পরিবর্তে বাতাস দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ফেরি করে বিদ্যুৎ দেওয়ার কথা বলা হলেও বিদ্যুতের ফেরিওয়ালারা এখন সব পলাতক। অনেকে মনে করেন, আদানি বিদ্যুৎ বন্ধ করে দিলে আমাদের ক্ষতি হতে পারে। আমি মনে করি, আদানির সঙ্গে আমাদের বিদ্যুৎ চুক্তি বাতিল হলে বাংলাদেশ বেঁচে যাবে।’ কিরণ বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যে টানাপোড়েন চলছে, তা নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে আমাদের শঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। এক সময়ে আমরা ভারতে গরুর ওপর নির্ভরশীল ছিলাম। এখন আমরা পশুপালনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। ভারতীয় পেঁয়াজ, আলু, সুতাসহ যেসব পণ্য আমরা আমদানি করি, তা বন্ধ হলে বাংলাদেশ খুব বেশি বিপদে পড়বে না। এখন থেকে আমরা নিজেরাই স্বয়ংসম্পূর্ণ হব অথবা বিকল্প আমদানির পথ বের করতে হবে। আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা এখন বহু উন্নত। প্রতি বছর আমাদের দেশের মানুষ স্বাস্থ্যসেবা নিতে ভারতে গিয়ে ৫০০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করে। আমরা উদ্যোগ নিলে আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে আমরা থাইল্যান্ড সিঙ্গাপুরের কাছাকাছি নিতে পারব। সুতরাং, ভারতের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য বা সেবা খাতে কোন টানাপেড়েন দীর্ঘায়িত হলে সেটি বাংলাদেশের জন্য বুমেরাং হবে।’ ‘আর্থিক খাতে সুশাসনের অভাবই দুর্নীতি প্রতিরোধে বড় চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক ছায়া সংসদে বাংলাদেশ টেক্সটাইল ইউনিভার্সিটিকে বিতার্কিকদের পরাজিত করে সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, অধ্যাপক তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, সাংবাদিক মো. তৌহিদুল ইসলাম, জাকির হোসেন ও দৌলত আক্তার মালা। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেয়া হয়।

পদত্যাগ করলেন এবি ব্যাংকের এমডি তারিক আফজাল

পদত্যাগ করেছেন এবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তারিক আফজাল। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে রোববার (৮ ডিসেম্বর) কানাডা থেকে ইমেইলে তিনি পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত ব্যাংকটির রোববারের (৮ ডিসেম্বর)পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে তার পদত্যাগপত্রের বিষয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে। ব্যাংকের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘দীর্ঘ ছুটি শেষে রোববার (৮ ডিসেম্বর) আফজালের যোগদান করার কথা ছিলো। যোগদান না করে তিনি পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। সেখানে শারিরীক নানা অক্ষমতার কথা উল্লেখ করেছেন। তারিক আফজাল ২০১৮ সালে ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে এবি ব্যাংকে যোগ দেন। ২০১৯ সালের ৮ জুলাই তিনি প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর হন। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিচারে এককালের জৌলুসপূর্ণ এবি এখন রুগ্ন প্রায় ব্যাংকের উদাহরণ। ব্যাংকটির পেছনে ঘুরতে হচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্ত কর্মকর্তাদের, গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে আসছেন থানা পুলিশ। এমন দৃশ্যে ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন আমানতকারীসহ গ্রাহকদের আনাগোনা বাড়তে থাকে ব্যাংকের শাখাগুলোতে। বিএনপির নেতা এম মোরশেদ খানের উদ্যোগে ১৯৮২ সালে এবি ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়। অপ্রতিরোধ্য গতিতে চলছিল ২০০১ সাল নাগাদ। ওই বছর এম মোরশেদ খান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শপথ নিয়ে ব্যাংকের দায়িত্ব দেন ছেলে ফয়সাল মোরশেদ খানের হাতে। তখন থেকেই অনিয়ম ভর করে ব্যাংকটিতে। ২০০৭ সালে চেয়ারম্যান পদ ছাড়েন ফয়সাল মোরশেদ খান। কিন্তু, নেপথ্য কলকাঠি ছিল তারই হাতে। ওয়ান-ইলেভেনের পর একে একে দুর্নীতির পাহাড়ের খোঁজ মেলে এবি ব্যাংকে। ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। চোখ পড়ে বিএনপির নেতার এ ব্যাংকটিতে। অদৃশ্য ইশারায় দুদকের ফাইল চলছিল রকেট গতিতে। দুদকে অর্ধডজন মামলা। ফলে, ব্যাংকটির প্রতি গ্রাহকদের আস্থা ধসে যাচ্ছিল বালুর বাঁধের মত। এ পরিস্থিতিতে এবি ব্যাংকের পাশে দাঁড়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক। একজন সাবেক ডেপুটি গভর্নরকে চেয়ারম্যানের চেয়ারে বসায়। তবে, এ সুযোগ হাতছাড়া করেনি শেখ হাসিনা সরকার। দলীয় নেতা তারিক আফজালকে বসান প্রধান নির্বাহীর (ভারপ্রাপ্ত) আসনে। এরপর ব্যবস্থাপনা পরিচালক। শুরু হয় ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসন। এ অবস্থা চলমান জুলাই বিপ্লবের পরেও। বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি ব্যাংক এবি ব্যাংক। আশির দশকে সাধারণ জনতা চিনত আরব বাংলাদেশ ব্যাংক নামে। দেড় যুগ আগে পরিবর্তিত হয়ে ইংরেজির প্রথম দুই বর্ণ নিয়ে এখন শুধুই এবি ব্যাংক। আধুনিক সেবার কারণে এবি ব্যাংকের জুড়ি ছিল না। ইসলামি ব্যাংকিং শাখা করায় গ্রাহক বেড়েছিল হু হু করে। কালের আবর্তে নতুন পুরোনো ঘটন-অঘটনের কারণে এ ব্যাংকের জৌলুস এখন ইতিহাস। চার দশকের পথচলায় ঘরে-বাইরে নানামুখী চক্রান্তে বদল হয়েছে ব্যাংকটির চালিকা শক্তি। সর্বদিক থেকে প্রশংসিত হওয়ায় এতে নজর পড়েছিল স্বৈরাচারের। উদ্যোক্তাদের অতিলোভ আর দখলদার চক্রের কারণে এবি ব্যাংক হয়েছে চিঁড়েচ্যাপটা।

দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক মন্দা বাংলাদেশ-ভারতকে প্রভাবিত করছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

চলতি বছরের গেল দুই-তিন মাস ধরে যে দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক মন্দা যাচ্ছে, তা ভারত ও বাংলাদেশ উভয়কেই প্রভাবিত করছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। ৪০তম সার্ক চার্টার দিবস উপলক্ষে রোববার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সেমিনারে তিনি এই মন্তব্য করেন।সেমিনারে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘চলমান অচলাবস্থার কারণে ভারতের অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দ্রুত অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠবে বলে আশা করছি।’তিনি আরও বলেন, ‘কাল সোমবার (৯ ডিসেম্বর) ভারতের পররাষ্ট্র সচিব আসছেন। তিনি আমাদের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠক করবেন। আশা করছি ফলপ্রসূ আলোচনা হবে।’ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের গুণগত পরিবর্তন হয়েছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘৫ আগস্টের আগে ও পরে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের গুণগত পরিবর্তন হয়েছে। এটা মেনে নিয়ে দেশটির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক এগিয়ে নিতে হবে।’সার্কের কার্যক্রম নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পজিটিভ জানিয়ে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘সঠিক পদক্ষেপ নিলে আমাদের এ অঞ্চলের দরিদ্রতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।’

ন্যায় প্রতিষ্ঠায় সকলের সহযোগিতা চাই: বাণিজ্য উপদেষ্টা

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন , ৫ আগস্টের বিপ্লবের পর একটা স্বল্পকালীন সরকার এসেছে।আমাদের মৌলিক কাজ হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের রিফর্ম করা এবং যত দ্রুত সম্ভব একটি নির্বাচন করা। আমাদের কাজ ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা। আমরা ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে চাই আর সেক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা চাই। গতকাল রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে ওয়ালটন আয়োজিত ‘অ্যাডভান্সড টেকনোলজি সল্যুশন (এটিএস) এক্সপো-২০২৪ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য এসব কথা বলেন তিনি। বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকারের পলিসি সাপোর্ট অনেকেই পায় কিন্তু তাকে সাসটেইনেবলভাবে সঠিক জায়গায় ব্যবহার সবাই করতে পারে না। ওয়ালটন এদিক থেকে সঠিকভাবে নিজেদের পণ্যে বৈচিত্র‍্য রক্ষা করে সরকারের সহযোগিতাকে ব্যবহার করেছে, যা প্রশংসনীয়।’ শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘দেশের বাইরে বাংলাদেশের যারাই আছেন, সেখানে দেশীয় প্রযুক্তির কোনো পণ্য দেখতে পেলে তা সম্মানের ব্যাপার হিসেবে কাজ করে। এক্ষেত্রে ওয়ালটনকে আমি সম্মান করি, যে তারা নিজেদের প্রযুক্তি দেশের বাইরে পৌঁছে দিচ্ছে। জাতি হিসেবে গর্ব করার মতো একটি প্রতিষ্ঠান হলো ওয়ালটন। ওয়ালটনের এতো অপরিসীম প্রচেষ্টা -যা দেখে আমি ব্যক্তিভাবে উচ্ছসিত বলে যোগ করেন তিনি। এটিএস এক্সপোর সমাপনী অনুষ্ঠানে ওয়ালটন প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্যে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ২০২৬ সালে যে এলডিসি গ্রেজুয়েশন হতে যাচ্ছে তা লক্ষ্যমাত্রা ঠিক রেখে আমাদের খরচ আরো কমিয়ে আনতে হবে, যাতে বৈদেশিক মুদ্রা আরো সাশ্রয় করা যায়।নতুন নতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমে দেশের গন্ডি বেরিয়ে বহি:বিশ্বের বাজারে যায়গা করে নিতে কাজ করতে হবে। সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিন। এসময় আরো বক্তব্য রাখেন- ওয়ালটন হাইটেক এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম, পরিচালক এস এম নুরুল আলম রেজভী প্রমুখ।

এনসিসি ব্যাংকের উদ্যোগে মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ সম্মেলন অনুষ্ঠিত

এনসিসি ব্যাংকের উদ্যোগে ব্যামেলকোদের জন্য ‘মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ’ শীর্ষক দিনব্যাপী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) পরিচালক মুহাম্মদ আনিছুর রহমান। এনসিসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম শামসুল আরেফিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ক্যামেলকো মো. রাফাত উল্লা খান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএফআইইউর যুগ্ম পরিচালক মো. মোশাররফ হোসেন ও মো. হাফিজুর রহমান খান, এনসিসি ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থপনা পরিচালক মো. মাহবুব আলম, মো. জাকির আনাম ও মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, এসইভিপি ও সিআইও মোহাম্মদ আনিসুর রহমান, এসভিপি ও ডেপুটি ক্যামেলকো মো. বাকের হোসেন। সম্মেলনে ব্যাংকের ১২৮ জন ব্যামেলকো অংশ নেন। অনুষ্ঠানে মুহাম্মদ আনিছুর রহমান অংশগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের ব্যাংকিং অঙ্গনে মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধের উপর গুরুত্বারোপ করেন। প্রশিক্ষণে অর্জিত জ্ঞান কাজে লাগিয়ে ব্যাংক তথা দেশ ও জাতির স্বার্থে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও সন্ত্রাস বিরোধী আইন ব্যাংকিং ক্ষেত্রে প্রয়োগে যথাযথ ভূমিকা রাখতে এনসিসি ব্যাংকের ব্যামেলকোদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।শামসুল আরেফিন বিশেষ অংশগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধের কলাকৌশল ভালভাবে রপ্ত করে ব্যাংকের ভাবমূর্তি রক্ষায় কাজ করতে আহ্বান জানান। তিনি উপস্থিত কর্মকর্তাদের মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধকল্পে সংশ্লিষ্ট বিধিবিধান পরিপালন করে সতর্কতার সঙ্গে কাজ করারও পরামর্শ দেন।মো. রাফাত উল্লা খান ব্যাংক একাউন্ট খোলা এবং রেমিট্যান্স গ্রহণ ও পাঠানোর ক্ষেত্রে গ্রাহক পরিচিতি সম্পর্কিত সঠিক ও যথাযথ তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণে অধিক সচেতন হওয়ার জন্য ব্যাংকের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।

এনআরবি ব্যাংকের মাইজদী শাখা উদ্বোধন

নোয়াখালি জেলার মাইজদীতে এনআরবি ব্যাংক পিএলসির শাখা উদ্বোধন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) প্রধান অতিথি হিসেবে এ শাখার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন এনআরবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারেক রিয়াজ খান। মাইজদী শাখায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার উদ্দিন, রিটেইল ব্যাংকিং বিভাগের প্রধান ওলি আহাদ চৌধুরীসহ এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

বাজারে বোতলজাত ভোজ্যতেলের সংকট, নাগালে নেই সবজিও

দেশের বিভিন্ন জেলা পর্যায়ে কিছু বাজারে বোতলজাত ভোজ্যতেলের সংকট দেখা দিয়েছে। এর ফলে খোলা তেল কেজিতে ৫-১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে শীতের মৌসুমে শীতের সবজির সরবরাহ ভালো থাকলেও সবজির দাম নাগালের বাইরে বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা। বরিশালসপ্তাহের চেয়ে বরিশালের বাজারে কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে সব ধরনের মাছের দাম। বাজারে ঘেরে চাষ করা মাছের সরবরাহ ভালো থাকলেও দাম বাড়াকে সিন্ডিকেট মনে করছেন ক্রেতারা। আর বিক্রেতারা বলছেন, নদীতে মাছ ধরা না পরায় বাজারে মাছের দাম বেড়েছে।আজ শুক্রবার বাজারে মাগুর মাছ ১৮০ টাকা, তেলাপিয়া ১৮০-২২০, কৈ ২৫০, রুই ৩৫০-৪০০, কাতল ৪০০, চিংড়ি ৭০০-১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া এক কেজি সাইজের ইলিশ ২২০০, ১২০০ গ্রাম ২৪০০, দেড় কেজি ২৫০০-২৬০০, ৮০০-৯০০ গ্রাম ১৮০০, ৫০০ গ্রাম ১৪০০-১৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।তবে শীতের সবজির সরবরাহ বাড়ায় দাম কমেছে। বেগুন ৮০, টমেটো ১৬০, শিম ৬০, ফুলকপি ৪০, কাঁচামরিচ ১০০, বরবটি ৮০, শালগম ৫০, মুলা ৪০, করলা ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে জেলার মুদি বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। এতে করে কেজিতে ৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে খোলা সয়াবিনের দাম। বর্তমানে খোলা সয়াবিন কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ টাকা। এছাড়া আলু ৭০, আমদানি করা পেঁয়াজ ৯০, দেশি পেঁয়াজ ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।ক্রেতারা বলছেন, বাজারে আগে যে সিন্ডিকেট ছিল এখনও সেভাবেই আছে। সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারলে দাম কমবে না।বগুড়াবগুড়ায় শীতকালীন কাঁচা শাক-সবজির আমদানি ভালো থাকলেও, দাম এখনও নাগালের মধ্যে আসেনি সাধারণ মানুষের। আলু, গাজর, টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপিসহ প্রতিটি সবজিতে এখনও বাড়তি মুনাফা লক্ষ্য করা গেছে বাজারের ব্যবসায়ীদের মধ্যে।আজ জেলার বাজার ঘুরে জানা গেছে, আলু ৮০ টাকা, পেঁয়াজ ১২০-১৩০ ফুলকপি ৫০, বাঁধাকপি ৬০, শিম ১২০, বেগুন ৬০-৮০ আর নতুন আলু ১২০-১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।ক্রেতারা বলছেন, শীতের সবজির এখন ভরা মৌসুম হওয়া সত্ত্বেও দাম অনেক বেশি। বাজার ব্যবস্থাপনায় অসন্তোষ জানিয়ে সঠিক, কঠোর ও নিয়মিত তদারকির দাবি জানান ভোক্তারা। এদিকে, বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে পণ্য সরবরাহের ওপরে দাম ওঠা-নামা করে।চট্টগ্রামসপ্তাহের ব্যবধানে চট্টগ্রামে আরো কমেছে সবজির দাম। অপরিবর্তিত রয়েছে ডিমের দাম। কিছুটা উঠানামার মধ্যে আছে মুরগির দাম। শুক্রবার নগরীর নানা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দেশের নানা জায়গা থেকে বাজারে এসেছে বাহারী শীতকালীন সবজি। প্রতিনিয়তই বাড়ছে সরবরাহ। তাই কমতির দিকে সবজির দাম।বিক্রেতারা বলছেন, সবজির সরবরাহ ভালো তাই দাম কম। অনেকটাই আগের দামে বিক্রি হচ্ছে মুরগি। ৫৭০ টাকায় দেশি এবং ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে সোনালি মুরগি। ৫ টাকা কমে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭৫ টাকায়। চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত সরবরাহ আছে। তাছাড়া এখন সামাজিক অনুষ্ঠান কিছুটা কম হওয়ায় মুরগির দাম ঠিক আছে বলে জানিয়েছেন তারা।সপ্তাহের ব্যবধানে সিলেটের বাজারে কমেছে সবজির দাম। গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে সবজির দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।এ সপ্তাহে কেজি প্রতি ১০ টাকা কমে টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়, আলু বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায় যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০ টাকা কেজি, শসা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজিতে যা গত সপ্তাহে ছিল ৭০ টাকা। ফুলকপির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ১০ টাকা কমে এ সপ্তাহে ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।কমেছে ঝিঙার দাম। ঝিঙা বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায় যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০ টাকা, পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায় যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০ টাকা। তবে স্থিতিশীল রয়েছে কাঁচামরিচের দাম। এদিকে কমেছে পেঁয়াজের দাম। এ সপ্তাহে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা কেজিতে যা গত সপ্তাহে ছিল ১২০ টাকা। অপরিবর্তিত রয়েছে আদা, রসুনের দাম। রসুন বিক্রি হচ্ছে ২৩০ টাকা কেজিতে আর আদা বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা কেজিতে।বাজারে শীতকালীন সবজি আসতে শুরু করায় দাম কিছুটা কমছে বলে জানান বিক্রেতারা। তবে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাজার মনিটরিং নিয়মিত করার আহ্বান জানান ক্রেতারা।খুলনাখুলনার বাজারে লুস সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১৯০-১৯৫ টাকা দরে, আর বোতল সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকা দরে। আর বোতল সয়াবিন তেলের সরবরাহ নাই বলছেন খুলনার ব্যবসায়ীরা। শীতকালীন সবজি ফুলকপি, বাঁধাকপি শালগম, লাউয়ের দাম কম হলেও দাম বাড়তি রয়েছে আলু, পেঁয়াজ, রসুন, টমেটো, শিমের দাম।ফুলকপি, বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি দরে। তবে দেশি আলু বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজিতে, আর নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা দরে। টমেটো ১০০ টাকা, পেঁয়াজ ১৪০ ও রসুন ২৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতির কারণ হিসেবে বাজার সিন্ডিকেটকেই দায়ী করছেন ক্রেতারা।

বিজিএমইএ প্রশাসকের সঙ্গে ইতালি রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ

বিজিএমইএর প্রশাসক আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রো। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে তাদের মধ্যে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। সাক্ষাৎকালে ইতালি ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার এবং উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্পে সহযোগিতার নতুন সুযোগগুলোর অন্বেষণ নিয়ে আলোচনা করেন তারা। ইতালির বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রফতানি, বিশেষ করে উচ্চমূল্যের পণ্য রফতানি বাড়ানোর সম্ভাব্য উপায় নিয়েও আলোচনা করেন। বিজিএমইএ প্রশাসক আনোয়ার হোসেন বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য ব্যবসা-বান্ধব পরিবেশ তৈরিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টাসহ বাংলাদেশে যে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনগুলো ঘটছে, তা তুলে ধরেন। পরিবেশগত সাসটেইনেবিলিটির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতিও তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন বিশ্বের সর্বোচ্চ সংখ্যক পরিবেশবান্ধব পোশাক কারখানা রয়েছে, যা টেকসই উৎপাদন অনুশীলনের প্রতি শিল্পের গভীর অঙ্গীকারেরই বহিঃপ্রকাশ। নন-কটন টেক্সটাইল খাতসহ, বাংলাদেশের উদীয়মান খাতগুলোতে ইতালির ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগে উৎসাহিত করার জন্য রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ জানান বিজিএমইএ প্রশাসক আনোয়ার হোসেন। রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রো দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান অব্যবহৃত সম্ভাবনাগুলো কাজে লাগানোর ওপর জোর দেন। তিনি বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির সুযোগগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো কাজে লাগাতে আরও আলোচনা করার পরামর্শ দেন।

এবিবির চেয়ারম্যান সেলিম রেজা ফরহাদ হোসেনের বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ

অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান এবং ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সেলিম রেজা ফরহাদ হোসেনের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক অফিসার্স ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল ঢাকা। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) সংগঠনের সভাপতি একেএম মাসুম বিল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা শ্রাবণ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) কর্তৃক আয়োজিত সংলাপে কোন প্রকার সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত বা প্রমাণ ছাড়া ঢালাওভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও এর কর্মকর্তাদের জড়িয়ে মানহানিকর বক্তব্য দিয়েছেন সেলিম রেজা ফরহাদ হোসেন। ব্যাংকারদের সংগঠনের প্রধান ও একটি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রসঙ্গে তার নিকট পেশাদার দৃষ্টিভঙ্গি প্রত্যাশিত থাকলেও তিনি তার বক্তব্যে চরম অপেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছেন। তার এই অসত্য ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের জন্য চরম অমর্যাদাকর এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উপর থাকা জনমানুষের আস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’ বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, ‘বেনামী ঋণ প্রদান, লুটপাটে সহায়তা, ভুয়া ঋণ পত্র ইস্যু, অর্থ পাচারসহ ব্যাংকিং সেক্টরের বর্তমান দুর্দশার প্রাথমিক দায় বাণিজ্যিক ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যাংকের নির্বাহী প্রধানদের। এবিবির চেয়ারম্যান হিসেবে হোসেন সার্বিক বিষয়ে অবগত থাকা সত্ত্বেও ৫ আগস্টের পূর্বে তাকে এসব অনিয়মের বিষয়ে সোচ্চার হতে দেখা যায়নি। বিগত সময়ে এবিবি এবং বিএবি সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের উপর বিভিন্নভাবে অন্যায় প্রভাব বিস্তারে সচেষ্ট ছিল। এই দুটি সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যাংকিং সেক্টরের দুর্বৃৃত্তায়ন ও ব্যাংকিং আইন দুর্বলকরণের অভিযোগ রয়েছে। তারা ব্যাংকের টাকা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দিয়ে এসব আইন প্রণয়নকে প্রভাবিত করেছে। এছাড়াও, বিগত সরকারকে তুষ্ট করতে ব্যাংকের টাকায় বিশেষ দুইটি চলচ্চিত্র প্রদর্শনীসহ নানা অপেশাদার কর্মকান্ডের মাধ্যমে এবিবির প্রধান হিসেবে ব্যাংকিং সেক্টরকে ক্ষতিগ্রস্থ করে এখন নিজের দায় এড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দিকে একের পর এক অভিযোগ তুলছেন।’ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘সেলিম রেজা ফরহাদ হোসেন নিজের নিয়োগ থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন নীতি প্রণয়নে ফ্যাসিবাদী সরকারের সাথে সম্পর্কের সূত্রে প্রায়শঃ প্রভাব রাখতে চেষ্টা করেছেন এবং বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মানতেও অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। হোসেন কোন ব্যাংকে উপব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন না করেই রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অনিয়মের মাধ্যমে সরাসরি ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ লাভ করেছেন। অন্য দিকে, এবিবির চেয়ারম্যান হিসেবে প্রভাব খাটিয়ে তিনি নিজের ব্যাংকের বিশাল সংখ্যক কর্মীদের পদত্যাগে বাধ্য করেছেন; যা ব্যাংকিং সেক্টরের জন্য একটা কালো ইতিহাস।’বাংলাদেশ ব্যাংক অফিসার্স ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল ঢাকা বিশ্বাস করে, সম্প্রতি গঠিত টাস্কফোর্সের মাধ্যমে ব্যাংক খাতের অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা হবে। গভর্নরের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যেখানে ব্যাংক খাতের সুশাসন ফিরিয়ে আনতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন, সেখানে হোসেনের এই বক্তব্য দেশের আর্থিক খাতকে নতুনভাবে অস্থিতিশীল করে তোলার কোন ষড়যন্ত্রের অংশ কিনা তা খতিয়ে দেখা আবশ্যক। বাংলাদেশ ব্যাংক অফিসার্স ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল সেলিম রেজা ফরহাদ হোসেনে বক্তব্যের প্রতিটি বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত ও প্রমাণকসহ ব্যাখ্যা দাবী করছে। কিভাবে ও কোন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বাণিজ্যিক ব্যাংকের কর্মকর্তাদের ব্লাকমেইলিং করেছে, তা এবং যারা করেছেন তাদের নাম প্রকাশ করতে হবে।বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও এর কর্মীদের বিষয়ে সেলিম রেজা ফরহাদ হোসেনের মানহানিকর ঢালাও বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। একইসাথে তাকে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে তার বক্তব্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হয়। অন্যথায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মীদের পক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংক অফিসার্স ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল তাকে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাঙ্গণে অবাঞ্চিত ঘোষণাপূর্বক তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে বলে হুঁশিয়ারি দেয়া হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

ব্র্যাক ব্যাংকের এমডিকে পদত্যাগ করতে বললেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্তারা

আমানতকারীদের আস্থার সংকট সৃষ্টি করতে পারে- এমন মন্তব্যে ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) পদ থেকে সেলিম আরএফ হোসেনকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা কর্মচারীরা। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বিকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুক্তিযুদ্ধ সংসদে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় এ আহ্বান জানান তারা। সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা অভিযোগ করেন, বাণিজ্যিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের বিদেশযাত্রায় আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতি লাগলেও, তা রহিতকরণের উদ্যোগ নেয় এই ব্যবস্থাপনা পরিচালক। এর পর পরই কয়েকজন দূর্নীতিগ্রস্থ এমডি বিদেশে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। দেশের সব দায়িত্বশীল ব্যক্তি তার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি গ্রহণ করেই বিদেশে যাওয়ার রীতি প্রচলিত আছে। বক্তার আরো অভিযোগ করেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্ধারিত সিনেমা বাংলাদেশ ব্যাংকের সব কর্মকর্তাকে দেখতে বাধ্য করায়, এর জন্য অর্থায়ন করা ও যারা যারা সিনেমা দেখতে যায়নি, তাদের একটি বিশেষ সংস্থার মাধ্যমে তালিকা বানানোর মত অনৈতিক কাজে তিনি যুক্ত ছিলেন তিনি। প্রয়োজনীয় যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও নীতিমালা লংঘন করে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় বিপুল বেতন ভাতায় পতিত সরকারের আমলে ব্যাংকের এমডির চাকরি পান তিনি। আইডিএলসিতে থাকাকালে পিকে হালদার সংশ্লিষ্ট বেনামী প্রতিষ্ঠান ক্লিস্টোন গ্রুপের আবদুল আলীমকে কোটি টাকা ঋণ দেন তিনি। আর্থিক অনিয়মের কারণে তার আপন ভাই সোহেল আরকে হুসেইন বেসরকারি খাতের একটি ব্যাংকের এমডির পদ ছাড়তে বাধ্য হয়। পরে তারই প্রভাব ও প্রতিপত্তিতে সে ফের ব্যাংকিং খাতে ফিরে আসে। এছাড়া, নজরুল ইসলাম মজুমদারসহ সব ব্যাংক ডাকাতের সাথে বিশেষ সখ্যতাকারী এই প্রভাবশালী এখন সরকার পরিবর্তনের সুযোগে ভোল পাল্টাতে আরম্ভ করেছেন বলেও অভিযোগ করা হয়। প্রসঙ্গত, গতকাল বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিআইবিএমের এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের উপস্থিতিতে তিনি অভিযোগ করেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ব্ল্যাকমেইল করছে। নিয়োগ বদলি ও প্রমোশনের বিষয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের চাপের কথা উল্লেখ করেন ওই অনুষ্ঠানে। অনুষ্ঠানে পরিচালক মো. আনিসূর রহমানের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন মো. বায়েজীদ সরকার, মিজানুর রহমান আকন, স্বপন কুমার গোস্বামী, রনজিত কুমার, নজরুল ইসলাম, ‍ওয়াহিদ মুন্না।

আওয়ামী লীগ প্রবৃদ্ধিকে অতিরঞ্জিত দেখিয়েছে: দেবপ্রিয়

আওয়ামী লীগ সরকার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে অতিরঞ্জিত দেখিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তাই, জিডিপির প্রকৃত আকার জানতে একটি কমিটি গঠনের পরামর্শও দিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) ঢাকার একটি হোটেলে কসমস ফাউন্ডেশন আয়োজিত মত বিনিময় সভায় দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য জানান, জাতীয় উন্নয়নের নির্ভরযোগ্য তথ্য-উপাত্ত নিশ্চিতে পরিসংখ্যান প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীন কমিশনে রুপান্তর করতে হবে। ‘গেল ১৫ বছরের বেশিরভাগ সময় উচ্চ প্রবৃদ্ধির হিসাবে দেশের অর্থনীতির আকার ছাড়িয়েছে সাড়ে ৪০০ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু, অর্থনীতিবিদরা প্রবৃদ্ধির সঙ্গে বেসরকারি বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের মত সংশ্লিষ্ট সূচকের ভারসাম্য খুঁজে পাননি।’ শ্বেতপত্র কমিটি দেখেছে, রাজনৈতিক সুবিধা পেতে উন্নয়নকে অতিরঞ্জিত করা হয়েছে। এসব বিবেচনায় দেশের অর্থনীতির প্রকৃত আকার বের করা জরুরি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, ‘দেড় দশকে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো অকার্যকর হয়ে পড়েছে।’ সভায় দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমাদের যে উন্নয়ন পরিসংখ্যান আছে, তাকে আরেকটি আধুনিক ও বৈজ্ঞানিক ভিত্তির ওপর দাড় করাতে হবে। আমাদের যেমন একটি কর্ম কমিশন আছে, এমন একটি কমিশন করে রাষ্ট্রপতির কাছে নিয়ে সংসদের কাছে জবাবদিহি করার একটা সুরক্ষার কথা আমরা প্রস্তাব করেছি।’ সরকারি কেনাকাটা ও প্রকল্পে ৪০ শতাংশ অর্থ লোপাট হয়েছে বলে মনে করেন আলোচকরা। আর এ জন্য ই-জিপি পদ্ধতি আরও স্বচ্ছ করতে হবে। টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতে বিদ্যুৎ-জ্বালানি, সামাজিক কর্মসূচি, ব্যাংকখাত ও গ্রামীণ শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল সংস্কার দরকার। জনগণের করের টাকায় ভর্তুকি কমাতে রাষ্ট্রায়ত্ত নাজুক শিল্পগুলো বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শও দেন বক্তারা। সভায় অর্থনীতির বিশ্লেষক পারভেজ করিম আব্বাসী বলেন, ‘আওয়ামী সরকার জনপ্রশাসনে কর্মরতদের সুযোগ সুবিধা ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে। এভাবে তাদের নীরব সমর্থন আদায় করে রেখে শাসনকাল দীর্ঘায়িত করেছে। এখন কার্যকর পরিকল্পনা নিতে হবে যে, জনগণের অর্থে কতবড় জনপ্রশাসন বহাল রাখব। আমার মতে, সরকারি চাকরিতে দক্ষতা, পেশাদারিত্ব বাড়াতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগও হতে পারে।’ সভায় বলা হয়, ‘প্রবাসী আয়ের উপর ভর করেই বহু দিন ধরেই মন্দা এড়িয়ে চলছে অর্থনীতি।’ এ অবস্থায় এলডিসি উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় রপ্তানিপণ্য ও বাজারে বৈচিত্র্য আনতে গুরুত্ব দেন বিশ্লেষকরা।

বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে তুরস্কের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ

ঢাকায় নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত রামিস সেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বিকালে বাণিজ্য উপদেষ্টার সচিবালয়স্থ কার্যালয়ে এই সাক্ষাৎপর্ব অনুষ্ঠিত হয়। সাক্ষাৎকালে তারা দুই দেশের বাণিজ্য, অর্থনীতি ও আগামী বছর জানুয়ারিতে তুরস্কের বাণিজ্য মন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর নিয়ে আলোচনা করেন। শেখ বশিরউদ্দীনে বলেন, ‘বাংলাদেশের সাথে তুরস্কের ভাতৃপ্রতিম সম্পর্ক দীর্ঘ দিনের।’ তুরস্কের বাণিজ্য মন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরকে তাৎপর্যপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তার (তুরস্কের বাণিজ্য মন্ত্রীর) সফরকে অর্থবহ করতে বাংলাদেশ পরিকল্পনা নেবে।’ বাণিজ্য উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘তুরস্কের কাছ থেকে বাণিজ্যের সর্বোচ্চ সুবিধা অর্জন করতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হবে।’ বাংলাদেশের সঙ্গে তুরস্ক বাণিজ্য সম্পর্ক আরও গভীর করতে চায় উল্লেখ করে রামিস সেন বলেন, ‘ব্যবসায়-বাণিজ্যের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ককে আরো গভীর করার সুযোগ এসেছে। এ সুযোগ কাজে লাগাতে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে ডায়লগের আয়োজনে তুরস্ক আগ্রহী।’ তুরস্কের বাণিজ্য মন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরকালে সরকারি কর্মকর্তাসহ ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল থাকবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত দুই দেশের ব্যবসায়ীদের অংশগ্রহণে গোলটেবিল বৈঠক ও বিসনেস টক আয়োজনে উদ্যোগ গ্রহণে বাণিজ্য উপদেষ্টাকে অনুরোধ করেন। বানিজ্য উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূতকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দেন। এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) মো. আব্দুর রহিম খান উপস্থিত ছিলেন।