আওয়ামী লীগ প্রবৃদ্ধিকে অতিরঞ্জিত দেখিয়েছে: দেবপ্রিয়
আওয়ামী লীগ সরকার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে অতিরঞ্জিত দেখিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তাই, জিডিপির প্রকৃত আকার জানতে একটি কমিটি গঠনের পরামর্শও দিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) ঢাকার একটি হোটেলে কসমস ফাউন্ডেশন আয়োজিত মত বিনিময় সভায় দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য জানান, জাতীয় উন্নয়নের নির্ভরযোগ্য তথ্য-উপাত্ত নিশ্চিতে পরিসংখ্যান প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীন কমিশনে রুপান্তর করতে হবে। ‘গেল ১৫ বছরের বেশিরভাগ সময় উচ্চ প্রবৃদ্ধির হিসাবে দেশের অর্থনীতির আকার ছাড়িয়েছে সাড়ে ৪০০ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু, অর্থনীতিবিদরা প্রবৃদ্ধির সঙ্গে বেসরকারি বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের মত সংশ্লিষ্ট সূচকের ভারসাম্য খুঁজে পাননি।’ শ্বেতপত্র কমিটি দেখেছে, রাজনৈতিক সুবিধা পেতে উন্নয়নকে অতিরঞ্জিত করা হয়েছে। এসব বিবেচনায় দেশের অর্থনীতির প্রকৃত আকার বের করা জরুরি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, ‘দেড় দশকে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো অকার্যকর হয়ে পড়েছে।’ সভায় দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমাদের যে উন্নয়ন পরিসংখ্যান আছে, তাকে আরেকটি আধুনিক ও বৈজ্ঞানিক ভিত্তির ওপর দাড় করাতে হবে। আমাদের যেমন একটি কর্ম কমিশন আছে, এমন একটি কমিশন করে রাষ্ট্রপতির কাছে নিয়ে সংসদের কাছে জবাবদিহি করার একটা সুরক্ষার কথা আমরা প্রস্তাব করেছি।’ সরকারি কেনাকাটা ও প্রকল্পে ৪০ শতাংশ অর্থ লোপাট হয়েছে বলে মনে করেন আলোচকরা। আর এ জন্য ই-জিপি পদ্ধতি আরও স্বচ্ছ করতে হবে। টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতে বিদ্যুৎ-জ্বালানি, সামাজিক কর্মসূচি, ব্যাংকখাত ও গ্রামীণ শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল সংস্কার দরকার। জনগণের করের টাকায় ভর্তুকি কমাতে রাষ্ট্রায়ত্ত নাজুক শিল্পগুলো বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শও দেন বক্তারা। সভায় অর্থনীতির বিশ্লেষক পারভেজ করিম আব্বাসী বলেন, ‘আওয়ামী সরকার জনপ্রশাসনে কর্মরতদের সুযোগ সুবিধা ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে। এভাবে তাদের নীরব সমর্থন আদায় করে রেখে শাসনকাল দীর্ঘায়িত করেছে। এখন কার্যকর পরিকল্পনা নিতে হবে যে, জনগণের অর্থে কতবড় জনপ্রশাসন বহাল রাখব। আমার মতে, সরকারি চাকরিতে দক্ষতা, পেশাদারিত্ব বাড়াতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগও হতে পারে।’ সভায় বলা হয়, ‘প্রবাসী আয়ের উপর ভর করেই বহু দিন ধরেই মন্দা এড়িয়ে চলছে অর্থনীতি।’ এ অবস্থায় এলডিসি উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় রপ্তানিপণ্য ও বাজারে বৈচিত্র্য আনতে গুরুত্ব দেন বিশ্লেষকরা।
বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে তুরস্কের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
ঢাকায় নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত রামিস সেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বিকালে বাণিজ্য উপদেষ্টার সচিবালয়স্থ কার্যালয়ে এই সাক্ষাৎপর্ব অনুষ্ঠিত হয়। সাক্ষাৎকালে তারা দুই দেশের বাণিজ্য, অর্থনীতি ও আগামী বছর জানুয়ারিতে তুরস্কের বাণিজ্য মন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর নিয়ে আলোচনা করেন। শেখ বশিরউদ্দীনে বলেন, ‘বাংলাদেশের সাথে তুরস্কের ভাতৃপ্রতিম সম্পর্ক দীর্ঘ দিনের।’ তুরস্কের বাণিজ্য মন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরকে তাৎপর্যপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তার (তুরস্কের বাণিজ্য মন্ত্রীর) সফরকে অর্থবহ করতে বাংলাদেশ পরিকল্পনা নেবে।’ বাণিজ্য উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘তুরস্কের কাছ থেকে বাণিজ্যের সর্বোচ্চ সুবিধা অর্জন করতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হবে।’ বাংলাদেশের সঙ্গে তুরস্ক বাণিজ্য সম্পর্ক আরও গভীর করতে চায় উল্লেখ করে রামিস সেন বলেন, ‘ব্যবসায়-বাণিজ্যের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ককে আরো গভীর করার সুযোগ এসেছে। এ সুযোগ কাজে লাগাতে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে ডায়লগের আয়োজনে তুরস্ক আগ্রহী।’ তুরস্কের বাণিজ্য মন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরকালে সরকারি কর্মকর্তাসহ ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল থাকবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত দুই দেশের ব্যবসায়ীদের অংশগ্রহণে গোলটেবিল বৈঠক ও বিসনেস টক আয়োজনে উদ্যোগ গ্রহণে বাণিজ্য উপদেষ্টাকে অনুরোধ করেন। বানিজ্য উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূতকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দেন। এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) মো. আব্দুর রহিম খান উপস্থিত ছিলেন।
মেহেরপুরে ইসলামী ব্যাংকের গাংনী শাখা উদ্বোধন
মেহেরপুর জেলায় ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির ৩৯৯তম শাখা হিসেবে গাংনী উপজেলা শাখা উদ্বোধন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) ব্যাংকের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা এ শাখার উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্যাংকের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. আলতাফ হুসাইন ও ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. মাকসুদুর রহমান। সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও যশোর জোনপ্রধান মো. মাহবুবের আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মজনুজ্জামান। অনুষ্ঠানে কল্যাণমুখী ব্যাংকিংয়ের উপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শরী’আহ সেক্রেটারিয়েটের সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট নূরুল কবীর। অনুষ্ঠানে গেস্ট অফ অনার ছিলেন গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিতম সাহা। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন গাংনী শাখাপ্রধান মো. মাসুদ করিম। গ্রাহক ও অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য দেন মানিকনগর ফাযিল মাদরাসার সিনিয়র শিক্ষক তাজউদ্দিন খান, গাংনী পৌরসভার সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র মো. ইনসারুল হক, ব্যবসায়ী মো. রবিউল ইসলাম ও মো. মনিরুল ইসলাম, কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী নাসরিন সুলতানা। অনুষ্ঠানে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ও বিভিন্ন শাখার কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, শুভানুধ্যায়ী ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা বলেন, ‘ইসলামী ব্যাংক দেশের মানুষের দীর্ঘ দিনের আকাঙ্ক্ষা ও প্রতীক্ষার ব্যাংক। শরী‘আহ নীতিমালার আলোকে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার ফলে ইসলামী ব্যাংক জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে। এ ব্যাংক আমানত, বিনিয়োগ, আমদানি-রপ্তানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন সূচকে দেশের সেরা ব্যাংক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘মাঝারি ও বৃহৎ শিল্প বিনিয়োগের পাশাপাশি গ্রামীণ অঞ্চলে ইসলামী ব্যাংকের সেবাগুলোর চাহিদা ও আওতা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইসলামী ব্যাংকের পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প (আরডিএস) ১৯৮৫ সালে যাত্রা শুরু করে এ পর্যন্ত ৩৪ হাজার গ্রামের প্রায় ১৮ লাখ প্রান্তিক মানুষকে সফল ক্ষুদ্র বিনিয়োগের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করেছে।’ মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা গাংনী এলাকার কৃষিশিল্প ভিত্তিক ব্যবসায়ের চাহিদা ও গুরুত্ব উল্লেখ করে উপযোগী বিনিয়োগ সেবা চালু করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এছাড়া, দেশের অন্যান্য শাখার মত গাংনী শাখাতেও সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সাথে সেবা দিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন।
ভারতীয় রুপির কোনো ক্রেতাই খুঁজে পাওয়া পাচ্ছে না মানি এক্সচেঞ্জগুলোতে
আন্তর্জাতিক বাজারের পাশাপাশি বাংলাদেশের বাজারেও ভারতীয় রুপির দাম কমেছে। বুধবার (৫ ডিসেম্বর) দেশের খোলাবাজারে ডলারের বিক্রি স্বাভাবিক থাকলেও ভারতীয় রুপির কোনো ক্রেতাই খুঁজে পাচ্ছে না এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো। এক সপ্তাহের ব্যবধানে টাকার বিপরীতে ৪-৫ পয়সা কমেছে রুপির মান। মতিঝিল, পল্টন, বাইতুল মোকাররম এলাকায় ডলার বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খোলাবাজারে প্রতি ডলার হয়েছে ১২৪ টাকা ৫০ পয়সা, যা এক সপ্তাহ আগের তুলনায় প্রায় এক টাকা বেশি। অন্যদিকে ভারতীয় রুপি বিক্রির জন্য এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো দাম চাচ্ছে ১.৪০ টাকা থেকে ১.৪৪ পর্যন্ত। যা আগের সপ্তাহে ছিল ১.৪৮ থেকে ১.৫০ টাকায় প্রতি রুপি বিক্রি হতো। খোলাবাজারের ডলার বিক্রেতা রিপন বলেন, ভারতীয় রুপির বিক্রি মোটেই নেই। দুই দেশের রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে বিক্রি কমে গেছে। দেশি টাকায় রুপিপ্রতি দাম কমেছে ৪-৫ পয়সা। তিনি বলেন, আগে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৮০ হাজার টাকার ভারতীয় রুপি বিক্রি হতো। আজকে এক রুপিও বিক্রি হয়নি। এ ছাড়া রুপির দামও কমে যাচ্ছে। আরেক ডলার বিক্রেতা নাদির হোসেন জানান, ভারতে মেডিক্যাল ভিসা বন্ধের পর রুপির বিক্রি অনেকটা কমে গেছে। তিনি বলেন, আগে প্রতি সপ্তাহে প্রায় ছয় লাখ টাকা রুপি বিক্রি হতো। গত এক সপ্তাহে ৫০ হাজার টাকারও বিক্রি হয়নি। সাধারণত বাংলাদেশিরা ভারতীয় রুপি নিয়ে যান মেডিক্যাল ও ভ্রমণ বাবদ খরচের জন্য। কিন্তু গত এক মাসে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজমান থাকায় রুপির বিক্রি অনেকটা কমে গেছে। এদিকে মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় মুদ্রা রুপির মান সর্বকালের তলানিতে পৌঁছেছে। ডলারের বিপরীতে রুপির দর এই প্রথম ৮৪.৭৫-এ নেমে আসে। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে দেশটির সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমস এ তথ্য জানায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, যদিও দিন শেষে সামান্য বেড়ে হয় ৮৪.৬৮ রুপি। তবে অপরদিকে ডলারের সূচক বেড়ে হয় ১০৬.৫০। এর আগে গত সোমবার প্রতি ডলারের দাম দাঁড়িয়েছিল সর্বনিম্ন ৮৪.৭০ ভারতীয় রুপিতে। রুপির মান নেমে যাওয়া নিয়ে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, রুপির দরপতন আরো বেশি হতো। তবে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরবিআইয়ের হস্তক্ষেপের কারণে তা কিছুটা থামানো গেছে। বিশেষজ্ঞরা আরো ধারণা করেন, ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধীর হওয়া এবং বিদেশি পুঁজি বিনিয়োগের (এফপিআই) প্রবাহে সংকোচনের ফলে রুপির দাম কমেছে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ব্রিকস (ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা) অন্তর্ভুক্ত দেশগুলো যদি একটি সাধারণ মুদ্রা তৈরি করার চেষ্টা করে, তবে আমদানি করা পণ্যের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। ভারতের রুপির দামের ওপর এর প্রভাব পড়েছে বলে বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছে।
আমানত কমেছে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে
দেশে সংস্কারে মধ্যে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের আমানত কমেছে ৫৪৩ কোটি টাকা বা ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, চলতি বছরের জুন শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে মোট হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল দুই কোটি ৩০ লাখ ৩৪ হাজার ৫৩৮টি। তিন মাস পর অর্থাৎ সেপ্টেম্বর শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে মোট হিসাবধারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দুই কোটি ৩৪ লাখ ৮৯ হাজার ১০৯টি। সে হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে হিসাবধারী বেড়েছে চার লাখ ৫৪ হাজার ৭৫১টি। ২০২৪ সালের জুন শেষে এজেন্ট ব্যাংকিয়ে আমানতের পরিমাণ ছিল ৪০ হাজার ৭৩ কোটি টাকা। যেখানে সেপ্টেম্বর শেষে আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৯ হাজার ৫২৯ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। সে হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে এজেন্ট ব্যাংকিয়ে আমানত কমেছে ৫৪৩ কোটি টাকা বা ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, চলতি বছরের জুন শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের আওতায় ঋণ বিতরণের স্থিতি ছিল ১৮ হাজার ৭৪১ কোটি। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ঋণ বিতরণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ৯৪ কোটি টাকা। সে হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে ঋণ বিতরণের স্থিতি বেড়েছে দুই হাজার ৩৪৮ কোটি এক লাখ টাকা বা ১২ দশমিক ৫৩ শতাংশ। এজেন্ট ব্যাংকিং গ্রাহকের বড় অংশই গ্রামের মানুষ। আলোচিত সময়ে গ্রামে গ্রাহক বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই কোটি এক লাখ ৭৩ হাজার ৯৯৫ জন। এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে হিসাবধারীদের মধ্যে নারী গ্রাহকের সংখ্যা এখন এক কোটি ১৭ লাখ চার হাজার ৮৪৬ জন। চলতি বছরের জুন শেষে এজেন্টের সংখ্যা ছিল ১৫ হাজার ৯৯১টি। সেপ্টেম্বর শেষে এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ১১টি। তিন মাসের ব্যবধানে এজেন্টের সংখ্যা বেড়েছে ২০টি। জুন শেষে আউটলেটের সংখ্যা ছিল ২১ হাজার ৪৭৩টি। সেপ্টেম্বর শেষে আউটলেটের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ৩৬৭টি। তিন মাসে আউটলেটের সংখ্যা কমেছে ১০৬টি।
নভেম্বরে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ১১.৩৮ শতাংশ: বিবিএস
নভেম্বর মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১.৩৮ শতাংশ। আর খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১৩.৮০ শতাংশ। আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হালনাগাদ তথ্যে উঠে এসেছে এই হিসাব। এর আগে গত অক্টোবরে দেশের মূল্যস্ফীতি বেড়ে ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ হয়। খাদ্যপণ্য বিশেষ করে চাল ও সবজির দাম বাড়ায় মূল্যস্ফীতি বাড়ে। অক্টোবরে খাদ্য মূল্যস্ফীতিও বেড়ে দাঁড়ায় ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশে। বাংলাদেশে ২০২৩ সালের মার্চ থেকে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের ওপরে আছে। দেশের নিম্ন ও নির্দিষ্ট আয়ের মানুষের ওপর এর প্রভাব পড়েছে। সারা দেশের ৬৪টি জেলার ১৫৪টি হাটবাজার থেকে নির্ধারিত সময়ে সংগৃহীত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এই ভোক্তা মূল্য সূচক প্রণয়ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিএস।পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, নভেম্বরে দেশের খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ। অক্টোবরে যা ছিল যথাক্রমে ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশ ও ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ। নভেম্বরে দেশের গ্রামাঞ্চলের মূল্যস্ফীতি ছিল ১১ দশমিক ৫৩ শতাংশ। এ মাসে গ্রামাঞ্চলের খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে যথাক্রমে ১৩ দশমিক ৪১ ও ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ।নভেম্বরে শহরাঞ্চলের মূল্যস্ফীতি ছিল ১১ দশমিক ৩৭ শতাংশ। এ মাসে শহরাঞ্চলের খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে যথাক্রমে ১৪ দশমিক ৬৩ ও ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ।
অর্থপাচার করে বাংলাদেশের অর্থনীতি শুকিয়ে ফেলা হয়েছে: নিউইয়র্ক টাইমস
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের হিসাবে শেখ হাসিনার গত ১৫ বছরের শাসনামলে কেবল বাংলাদেশের আর্থিক খাত থেকেই ১৭ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৭০০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে। তবে অন্যান্য অর্থনীতিবিদের হিসাবে শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশ থেকে যে পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে, তা ৩০ বিলিয়ন বা ৩ হাজার কোটি ডলারের বেশি হতে পারে। নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাচার হওয়া টাকার প্রকৃত পরিমাণ কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না। বিভিন্ন ধরনের আর্থিক হিসাব-নিকাশ করে আহসান মনসুর বলেন, শেখ হাসিনার শাসনামলে তার সহযোগীরা বাংলাদেশের ব্যাংক খাত থেকে যে পরিমাণ অর্থ লুট করেছে, তা কার্যত পৃথিবীর আর্থিক ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এতে বাংলাদেশের অর্থনীতির অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। বুধবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সাক্ষাৎকারটি নেওয়া হয়েছে গত অক্টোবরে। আর চলতি সপ্তাহে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিষয়ক শ্বেতপত্র কমিটি বলেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ থেকে সার্বিকভাবে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অবৈধভাবে পাচার হয়েছে। আহসান মনসুর নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, সর্বোচ্চ রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষ বুঝতে পেরেছিল, লুটপাট করার জন্য সবচেয়ে ভালো জায়গা হচ্ছে ব্যাংক। এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো শত শত কোটি ডলারের সমপরিমাণ অর্থ বিভিন্ন কোম্পানির নামে ঋণ দিয়েছে, যে কোম্পানিগুলোর অনেকগুলোর আদতে কোনো অস্তিত্বই নেই। এই টাকাও কখনো সম্ভবত ব্যাংকে ফিরে আসবে না; এই অর্থের একটি বড় অংশ দেশ থেকে অবৈধভাবে বাইরে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হওয়ার আগে ২৭ বছর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলে (আইএমএফ) কাজ করছেন আহসান মনসুর। তিনি বলেন, ব্যাংকের পুরো পরিচালনা পর্ষদ হাইজ্যাক করা হয়েছিল। তার ভাষ্য, বিশ্বের অন্য কোনো দেশে সরকারের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ এভাবে গুণ্ডা-মাস্তানদের সহযোগিতায় পুরো ব্যাংক খাতে এমন পদ্ধতিগতভাবে ডাকাতি করেছে, এমন ঘটনা তিনি আর কোথাও দেখেননি। সংবাদে বলা হয়েছে, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে এখনো রাজনৈতিক প্রতিহিংসার পালা চলছে, গণসহিংসতাও দেখা যাচ্ছে। অর্থনীতি প্রসঙ্গে আহসান মনসুর বলেন, আগামী বছর অর্থনীতির আকাশে আরও কালো মেঘের ঘনঘটা থাকবে। এরপর অর্থনীতির আকাশ পরিষ্কার হতে শুরু করবে। শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে গেছেন। তার ভাগ্যে কী আছে, তা এখনো পরিষ্কার নয়। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার বলেছে, তাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে। এর মধ্যে শেখ হাসিনার অন্যতম সহযোগী সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের তদন্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের নির্বাহী পরিচালক এ কে এম এহসান। সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে এখনো অভিযোগ গঠন করা হয়নি। আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে ‘উইচ হান্ট’ করা হচ্ছে, তিনি এরর বাইরে নন। নিউইয়র্ক টাইমস শেখ হাসিনা ও সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। ঢাকায় আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় খালি পড়ে আছে। এরপর তারা শেখ হাসিনার মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সফল হয়নি। ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল মান্নানের পদত্যাগের ঘটনা সবিস্তারে তুলে ধরেছে নিউইয়র্ক টাইমস। সংবাদে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি আর ১০টা সাধারণ দিনের মতো আব্দুল মান্নান কার্যালয়ে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বেরিয়েছিলেন। পথিমধ্যে তিনি একটি ফোন কল পান। কলটি করেছিলেন সামরিক গোয়েন্দা দফতরের প্রধান। তাকে বলা হয়, গাড়ি ঘুরিয়ে তিনি যেন সংস্থাটির সদর দফতরে চলে আসেন। গত অক্টোবর মাসে আব্দুল মান্নান নিউইয়র্ক টাইমসকে সেই ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন। কার্যালয়ে যাওয়ার পর সামরিক গোয়েন্দারা আব্দুল মান্নানের ফোন, ঘড়ি ও ওয়ালেট রেখে দেন। এরপর গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান আব্দুল মান্নানের দীর্ঘ ক্যারিয়ারের বিবরণ দেন; বাংলাদেশের ব্যাংক খাতকে তিনি যে গ্রামীণ দরিদ্র মানুষের কাছে নিয়ে গেছেন, সে জন্য তার প্রশংসা করেন। আব্দুল মান্নান ভাবছিলেন, তার সময়টা বোধ হয় বৃথা যাচ্ছে। কিন্তু এরপরই তাকে ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে পদত্যাগের চিঠিতে সই করতে বলা হয়। গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান তাকে বলেন, এই আদেশ দেশের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষের কাছে থেকে এসেছে, অর্থাৎ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু তিনি প্রথমে পদত্যাগপত্রে সই করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, গোয়েন্দা কর্মকর্তারা তাকে মৌখিকভাবে রাজি করানোর চেষ্টা করেন। এরপর তাকে গোয়েন্দা প্রধানের কার্যালয় থেকে আরেকটি স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। আব্দুল মান্নান বলেন, ‘আমি যে ধরনের মানুষ, তাতে ওই সময়ে আমাকে যে অপমানজনক পরিস্থিতির মধ্যে ফেলা হয়েছিল, তার বিবরণ দেয়া সম্ভব নয়।’ এরপর তিনি সময়ের হিসাব ভুলে যান এবং একপর্যায়ে জানতে পারেন, দুপুরের আগে আগে তিনি পদত্যাগ পত্রে সই করেছেন। এরপর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরবর্তী আট বছর তিনি কার্যত নির্বাসনে ছিলেন; এখন তিনি আবার একটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান হয়েছেন। আব্দুল মান্নান ও আহসান মনসুর একই সুরে বলেন, ওই ঘটনার পর এস আলম গোষ্ঠী ইসলামী ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ কব্জা করে। এস আলম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা সাইফুল আলম ট্রেডার হিসেবে ব্যবসা শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি বিশেষ করে শেখ হাসিনার আমলে জ্বালানি, আবাসন খাতসহ বিভিন্ন খাতে ব্যবসা সম্প্রসারণ করেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দাবি, এস আলম গোষ্ঠী অন্যান্য গোষ্ঠীর সঙ্গে আঁতাত করে শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশের ব্যাংক খাত খালি করে দেয়ার চক্রান্ত করেছিল। হাসিনা সরকারের ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএফআইইউর নির্বাহী পরিচালক এ কে এম এহসান। ইসলামী ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংক এস আলম গোষ্ঠীর হাতে যাওয়ার পর নামে-বেনামে বিভিন্ন কোম্পানিকে ঋণ দেওয়া হয়েছে, যে ঋণের বড় অংশ আর ফেরত আসেনি। ফলে সেগুলো খেলাপি হয়ে গেছে। নিউইয়র্ক টাইমসের সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশে অনেক ব্যাংক এখন লাইফ সাপোর্টে আছে। এমনকি যেসব ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা ভালো, তারাও সেভাবে ঋণ দিতে পারছে না, এমনকি আমানতকারীদের টাকা সব সময় ফেরত দিতে পারছে না। আমানতকারীদের তারা মাঝেমধ্যে টাকা তোলার সুযোগ দিচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে যে টাকা নিয়ে যাওয়া হয়েছে, সেই টাকা উদ্ধারের চেষ্টা করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। শেখ হাসিনার দলের অনেক সদস্যের বিরুদ্ধে অর্থ-পাচারের মামলা হয়েছে, যে অর্থ মূলত আমদানি-রফতানির মাধ্যমে পাচার করা হয়েছে। এর মাধ্যমে যে কেবল কিছু মানুষের পকেট ভারী হয়েছে তা নয়, এতে বাংলাদেশের মুদ্রার দরপতনও হয়েছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর থেকে বাংলাদেশ থেকে এই অর্থ-পাচারের গতি বাড়তে থাকে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এরপর ২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে বাংলাদেশের মুদ্রার বড় ধরনের দরপতন হয়। আমদানি মূল্য অনেকটা বেড়ে যায়। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় বড় ধরনের লোডশেডিংয়ের মুখে পড়ে বাংলাদেশ। অনেক ব্যাংকে নগদ অর্থের সঙ্কট আছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা পুরো বেতন তুলতে হিমশিম খাচ্ছেন। এমনকি যেদিন বেতন দেওয়া হয়, সেদিন তারা পুরো টাকা তুলতে পারেননি, এমন পরিস্থিতি দেখা গেছে। ওষুধ কোম্পানি টেকনো ড্রাগ কর্মী ছাঁটাই করতে বাধ্য হয়েছে। এই কোম্পানির সহমহাব্যবস্থাপক মাজেদুল করিম নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, নিম্ন আয়ের কর্মীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কর্মীরা তার কাছে অভিযোগ করেছেন, ব্যাংক টাকা দিতে পারছে না, সে কারণে কোম্পানি বাধ্য হয়ে নগদ টাকায় মজুরি পরিশোধ করছে। তিনি আরও বলেন, তার নিজের ডেবিট কার্ড দিয়েও টাকা তোলা যাচ্ছে না। আহসান মনসুর বলেন, এ বছর বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির বছর নয়। তবে মূল্যস্ফীতির হার কমে আসছে এবং প্রবাসী আয়প্রবাহ বাড়ছে। আমাদের এ নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে। তিনি আশাবাদী, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বাংলাদেশের মুদ্রা স্থিতিশীল করতে আরও ৩০০ কোটি ডলার সহায়তা দেবে। ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর।
এলডিসি গ্রাজুয়েট দেশ হিসেবে আমাদের প্রস্তুত হতে হবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা
এলডিসি গ্রাজুয়েশনে আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জ আছে উল্লেখ করে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, ‘প্রণোদনা কমানো নিয়ে যে পদক্ষেপ সেটা সঠিক। এলডিসি গ্রাজুয়েশন এরপর প্রণোদনা আর থাকবে না এবং রপ্তানি বাজারে আমাদেরকে শুল্ক দিয়ে ঢুকতে হবে। এলডিসি গ্রাজুয়েট দেশ হিসেবে আমাদেরকে প্রস্তুত হতে হবে। বস্ত্রশিল্পের যে কোন নৈরাজ্য সমাধানে একত্রে কাজ করে যেতে হবে।’ বুধবার (৪ ডিসেম্বর) ফার্মগেটের জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টারের (জেডিপিসি)র সম্মেলন কক্ষে ‘বস্ত্র শিল্পের আধুনিকায়ন, বাংলাদেশের উন্নয়ন’ প্রতিপাদ্যে ‘ওভারভিউ অফ টেক্সটাইল সেক্টর ইন বাংলাদেশ: প্রভলেমস, প্রসপেক্টস অ্যান্ড স্মার্ট ওয়ে আউট’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথি বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘জাতীয় বস্ত্র দিবস ২০২৪' উদযাপন উপলক্ষে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এ সেমিনারের আয়োজন করে। সোলার পাওয়ার ব্যবহারের আহ্বান জানিয়ে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘বস্ত্র খাতে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। এ খাতের খরচ কমাতে সোলার পাওয়ার অন্যতম সম্ভাব্য সমাধান। এ শিল্পের বিকাশে নতুনদেরকে একাডেমিক আগ্রহ বাড়িয়ে পেশাগতভাবে দক্ষ করতে হবে।’ বস্ত্র পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধে বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অফ ফ্যাশন এন্ড টেকনোলজি (বিইউএফটি) অধ্যাপক ইঞ্জিনিয়ার আইয়ুব খান বস্ত্রশিল্পের সমস্যা ও সম্ভাবনা তুলে ধরে বস্ত্র খাতে মেধাব্যাংক ও দক্ষতা গড়ে তুলতে বলেন। কটন নির্ভরতা থেকে কৃত্রিম ফাইবারের দিকে এগিয়ে আসার পরামর্শ দেন তিনি। এর আগে বিকেএমইএর সভাপতি মো. হাতেম দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা ধরে যুগোপযোগী নীতির মাধ্যমে বস্ত্রখাতের উন্নয়নে কাজ করার বিষয়ে জোরারোপ করেন। সেমিনারে বস্ত্র অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম স্বাগত বক্তব্য দেন। বস্ত্রখাত সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা এখাতে ব্যবসায়ী কার্যক্রমের বিভিন্ন দিক ও প্রতিবন্ধকতা নিয়ে মুক্ত আলোচনা করেন। সেমিনারে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সুব্রত শিকদার, আরিফুর রহমান খান, তসলিমা কানিজ নাহিদা, বিটিএমসির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জিয়াউল হকসহ বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, বিটিএমএর সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল, বাংলাদেশ কটন এসোসিয়েশনের উপদেষ্টা মুহাম্মদ আইয়ুব, বাংলাদেশ গার্মেন্টস এক্সেসরিজ এন্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারারস এন্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. শাহরিয়ার, বিএলএমইএর ভাইস প্রেসিডেন্ট সিকে দে ছায়ান, বিজিবিএর সভাপতি মোহাম্মদ পাবেল উপস্থিত ছিলেন।
জুনের মধ্যে মুদ্রাস্ফীতি সাত শতাংশে নামিয়ে আনার কথা বললেন গভর্নর
আমাদের লক্ষ্য আগামী জুনের মধ্যে মুদ্রাস্ফীতি সাত শতাংশে নামিয়ে আনা। পরবর্তী অর্থ বছরের মধ্যে তা পাঁচ শতাংশে নামানো। মূল লক্ষ্য মুদ্রাস্ফীতি ৪-৫ শতাংশে নামিয়ে আনা। এ লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) অডিটরিয়ামে ‘টিপিং পয়েন্টস অব রিফর্ম এজেন্ডা ফর দ্যা টার্নঅ্যারাউন্ড অব দ্যা ব্যাংকিং সেক্টর অব বাংলাদেশ’ শিরোনামে এ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিন এসব কথা বলেন। সভায় আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘বন্যার কারণে বর্তমান বাজারে সবজি ও খাদ্যদ্রব্যের মূল্য বাড়তি। এক সময় তা কমে আসবে। মুদ্রাস্ফীতি সাত শতাংশে নামিয়ে আনতে পারলে আমরা ব্যাংকের সুদ ও নীতি সুদহার কমিয়ে আনব।’ তিনি বলেন, ‘গত ১০-১২ বছর ধরেই অর্থনৈতিক খাত পিছিয়ে ছিল। অর্থনীতির চারটা স্তম্ভ ব্যাংকিং, স্টক মার্কেট, ইন্স্যুরেন্স, বন্ড মার্কেট- কোনটাই আমাদের দেশে শক্তিশালী নয়। বন্ড মার্কেট আমরা গড়েই তুলতে পারিনি। ইন্স্যুরেন্স আর স্টক মার্কেটের অবস্থা করুণ। ফলে, একমাত্র ব্যাংকিং খাতকেই আমাদের দেশে বড় দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। অর্থনীতির দীর্ঘ মেয়াদি উৎস বের করতে না পারলে আমাদের ব্যাংকিং খাতের ওপর নির্ভরশীলতা থাকবেই।’ গভর্নর আরো বলেন, ‘দেশে টাকা নাই। ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছিল রিজার্ভ; যা এখন হয়েছে ২৪ বিলিয়ন। অর্থাৎ, বাকি টাকাটা বাইরে চলে গেছে। আমরা যদি আমানত বাড়াতে না পারি, টাকা বাইরে চলে যায়, তাহলে ব্যাংক ও অর্থনৈতিক খাতের প্রবৃদ্ধি হবে না। এই পরিস্থিতি পরিবর্তন করার জন্য টাকা পাচার বন্ধ করতে হবে।’ সভায় বক্তব্য দেন বিশ্ব ব্যাংকের বহুপাক্ষিক বিনিয়োগ গ্যারান্টি সংস্থার (মিগা) জুনায়েদ কামাল আহমদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের চার ডেপুটি গভর্নর কবির আহাম্মদ, মো. জাকির হোসেন চৌধুরী, মো. হাবিবুর রহমান ও নূরুন নাহার।
দেশীয় প্রতিষ্ঠান থেকে ১৫ হাজার টন চিনি-ডাল কিনছে সরকার, খরচ কত?
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ফ্যামিলি কার্ডধারী এক কোটি পরিবারের কাছে ভর্তুকি দামে বিক্রির জন্য মসুর ডাল ও চিনি কেনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এতে মোট খরচ হবে ১৫৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ ক্রয় সিদ্ধান্তের অনুমোদন দেয়া হয়।বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র (জাতীয়) পদ্ধতিতে দেশের দুই প্রতিষ্ঠান থেকে ১৫ হাজার টন চিনি ও মসুর ডাল কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে পাঁচ হাজার টন চিনি ও দশ হাজার টন মসুর ডাল রয়েছে। এতে মোট খরচ হবে ১৫৫ কোটি ৯০ লাখ ৫০ হাজার টাকা।বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় টিসিবির জন্য সিটি সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কাছ থেকে পাঁচ হাজার টন চিনি কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৯ কোটি ২১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। প্রতি কেজি চিনির দাম পড়বে ১১৮ দশমিক ৪৩ টাকা।এছাড়া, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় টিসিবির জন্য চট্টগ্রামের মেসার্স পায়েল ট্রেডার্স থেকে দশ হাজার টন মসুর ডাল কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে ব্যয় হবে ৯৬ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। প্রতি কেজির দাম পড়বে ৯৬ দশমিক ৬৯ টাকা।বৈঠকে ডাল-চিনি ছাড়াও চাল ও সার কেনার অনুমোদেন দিয়েছে ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। বৈঠক শেষে সালেহউদ্দিন আহমেদে বলেন, ‘ভারতের সাথে সম্পর্কের যে টানাপোড়েন চলছে, সেটি রাজনৈতিক, বাণিজ্যে প্রভাব পড়বে না। ব্যবসায়ীরা যারা পণ্য বিক্রি করেন, তারা রাজনীতিবিদের বক্তব্যে বিভ্রান্ত হয় না, তারা পণ্য বেচেন। যেখান থেকে বাংলাদেশ কম দামে পণ্য পাবে, সেখান থেকেই কিনবে।’
নভেম্বরে রপ্তানি আয় এসেছে ৪১১ কোটি ৯৭ লাখ ডলার
চলতি বছরের গেল নভেম্বর মাসে রপ্তানি আয় এসেছে ৪১১ কোটি ৯৭ লাখ ডলার। বছর ব্যবধানে বেড়েছে ১৫ দশমিক ছয় তিন শতাংশ। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিকালে সংবাদ সম্মেলন করে এই তথ্য জানান রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। ইপিবির হিসেবে, চলতি অর্থ বছরের প্রথম পাঁচ মাস অর্থ্যাৎ জুলাই-নভেম্বরে মোট রপ্তানি হয়েছে এক হাজার ৯৯০ কোটি ৬০ লাখ ডলারের পণ্য। গেল বছরের একই সময়ের তুলনায় যা বেড়েছে পৌনে ১২ শতাংশ। নভেম্বরে শুধু তৈরি পোশাক খাতে রপ্তানি আয় এসেছে ৩৩০ কোটি ৬২ লাখ ডলার। বছর ব্যবধানে পোশাক খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৬ দশমিক ২৫ শতাংশ। এই সময়ে কৃষি খাতের রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ১৬ শতাংশ এবং উৎপাদনমুখী শিল্পের রপ্তানি বেড়েছে ১৫ দশমিক ৬০ শতাংশ। হোমটেক্সাটাইলে বেড়েছে প্রায় ২১ শতাংশ। কিছুটা কমেছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের পরিমাণ। চলতি অর্থ বছরের প্রথম পাঁচ মাসে তৈরি পোশাক খাতে রপ্তানি হয়েছে এক হাজার ৪৩৪ কোটি ৬৫ লাখ ডলারের পণ্য। বেড়েছে প্রায় সাড়ে ১২ শতাংশ।
ভারতের সাথে টানাপোড়েন রাজনৈতিক, বাণিজ্যে প্রভাব পড়বে না
‘ভারতের সাথে বর্তমান সম্পর্কের যে টানাপোড়েন, রাজনৈতিক, বাণিজ্যিক বা অর্থনৈতিক সম্পর্কের ওপর এর প্রভাব পড়বে না।’ বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এ কথা জানান। বাংলাদেশে ভারতীয় পণ্য পাঠানো বন্ধ করে দেওয়া হবে- এমন হুমকি প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘ভারতের পক্ষ থেকে এমন বক্তব্য রাজনৈতিক, এই বক্তব্যের প্রভাব বাণিজ্যের ওপর পড়বে না। ভারত থেকে যেসব পণ্য আমদানি করা হয়, সেগুলো ঠিকভাবে ও সময়মত আসবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘চাল আমদানির সিদ্ধান্ত হয়েছে ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে। সেক্ষেত্রে ভারত, মিয়ানমার, থাইল্যান্ডের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। যে দেশ থেকে কম দামে পাওয়া যাবে, সেখান থেকেই চাল আমদানি করা হবে।’ সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘রমজানকে সামনে রেখে সরকার নানা ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে দাম কমানোর জন্য। আসছে রমজানে তাই পণ্যের দাম বাড়বে না। রমজানের জন্য খেজুর, তেল, মসুর ডাল আমদানি করা হচ্ছে, কমানো হচ্ছে এসব পণ্যের ভ্যাট। এই প্রভাব জিনিসপত্রের দামের উপর পড়বে।’ অর্থ উপদেষ্টা দাবি করেন, জিনিসপত্রের দাম কমানোর ক্ষেত্রে রাজনৈতিক চাঁদাবাজির প্রভাব পড়ে। সিন্ডিকেট বন্ধ করা গেলেও চাঁদাবাজি বন্ধ করা যাচ্ছে না।’
পাঁচ দিন বন্ধ থাকবে ডাচ-বাংলা ব্যাংক
ডাচ-বাংলা ব্যাংক পিএলসির কোর ব্যাংকিং সফটওয়্যার আপগ্রেডেশন কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য ব্যাংকের সব ধরনের ব্যাংকিং কার্যক্রম ১-৫ জানুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ দিন বন্ধ থাকবে। ডাচ-বাংলা ব্যাংকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক এ অনুমোদন দিয়েছে। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অব-সাইট সুপারভিশন বিভাগ এ অনুমোদন দেয়। এ সময় ব্যাংকের সব ধরনের লেনদেন, এটিএম বুথ, ডেবিট কার্ড সেবা, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং (মাইক্যাশ) ও এজেন্ট ব্যাংকিংসহ ডাচ-বাংলা ব্যাংকের সব সেবা ও কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। তবে, ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকরা অন্য ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলন বা কেনাকাটা করতে পারবেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘কোর ব্যাংকিং সফটওয়্যার আপগ্রেডেশন কার্যক্রম সম্পাদন করতে ১-৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ডাচ-বাংলা ব্যাংকের সব ব্যাংকিং কার্যক্রম সাময়িকভাবে বিরত থাকবে বলে এ বিষয়ে ব্যাংকের আবেদনে সম্মতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।’ ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১’-এর ৪৫ ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে এ সম্মতি দেয়া হয়েছে বলে নির্দেশনায় জানানো হয়েছে।
চার শতাংশ সুদে ঋণ পাচ্ছে আইসিবি, বিনিয়োগ হবে ‘এ’ ক্যাটাগরির শেয়ারে
রাষ্ট্রীয় মালিকাধীন বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপারেশন অব বাংলাদেশকে (আইসিবি) ঋণ অনুমোদনের এক সপ্তাহ পরে তার সুদহার কমিয়ে চার শতাংশে নামিয়ে এনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পূর্বে সরকারের সার্বভৌম জামানতের বিপরীতে আইসিবিকে দেয়া তিন হাজার কোটি টাকার ঋণের সুদহার দশ শতাংশ ঠিক করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষে বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিকাল নাগাদ অর্থ ছাড় করার প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আইসিবির চেয়ারম্যান আবু আহমেদ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘পত্র পেয়েছি। আজ দুপুরের মধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ করা সম্ভব হবে। আশা করছি, বিকালের মধ্যে অর্থ ছাড় শুরু হবে।’ সুদহার কমানোর পরে মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় আইসিবিকে পত্র দিয়ে জানিয়ে দেয়া হয় বলে সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা। গেল ২৭ নভেম্বর পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে আইসিবিকে দিতে তিন হাজার কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ঋণের সব অর্থের সার্বভৌম জামানত (সভরেইন গ্যারান্টার) হয়েছে সরকার। গ্যারান্টার হওয়ায় কোন কারণে আইসিবি ঋণের অর্থ ফেরত দিতে না পারলে সরকারকে তা শোধ করতে হবে। ঋণের অর্থের সুদহার ধরা হয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতি সুদহার (পলিসি রেট) অনুযায়ী। মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে সময়ে সময়ে বৃদ্ধি পাওয়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বর্তমান নীতি সুদহার হচ্ছে দশ শতাংশ। পরে সুদহার ব্যাংক রেট অর্থাৎ চার শতাংশ নির্ধারণ করতে সরকারের কাছে অনুরোধ করে আইসিবি। আবু আহমেদ বলেন, ‘অর্থ উপদেষ্টার কাছে অনুরোধ করলে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলেন। গভর্নরও দ্রুত সম্মতি দেয়ায় চার শতাংশ সুদে আইসিবি টাকাটা পাচ্ছে।’ বাংলাদেশ ব্যাংক পুনঃঅর্থায়ন তহবিলসহ বিভিন্ন খাতে বিশেষ তহবিল পরিচালনা করলে তার সুদহার ব্যাংক রেটে ধরা হয়। বর্তমানে ব্যাংক রেট হচ্ছে চার শতাংশ। গত কয়েক মাসে নীতি সুদহার, রেপো, বিশেষ রেপো ও রিভার্স রেপো সুদহার বাড়লেও ব্যাংক রেট একই স্থানে আছে। গেল নভেম্বরে আইসিবির অনুরোধে সরকার এ ঋণের গ্যারান্টার হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে শর্তের কথা জানিয়ে দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। আইসিবিকে দেয়া সরকারের গ্যারান্টির মেয়াদ হবে ঋণ দেওয়ার তারিখ থেকে ১৮ মাস। সরকারের দেয়া গ্যারান্টিপত্রে বলা হয়, ‘আইসিবি ঋণ শোধে ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারকে যে মুনাফা দেয়, সেখান থেকে অপরিশোধিত বা বকেয়া ঋণ বা ঋণের উপর ধার্য সুদ সমন্বয় করা যাবে না।’ শুধু ‘এ’ শ্রেণির শেয়ারে বিনিয়োগ: এর পূর্বে আবু আহমেদ সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, কিছু উচ্চ সুদের আমানত আছে আইসিবিতে। তাতে সুদ বাবদ বছরে প্রায় ৯০০ কোটি টাকা শোধ করতে হয়। সেই উচ্চ সুদের আমানতের একটি অংশের ধারাবাহিকতা রাখবে না আইসিবি। অবশিষ্ট অর্থ ধাপে ধাপে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের পরিকল্পনা করবে।’ ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গেল ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে পুঁজিবাজারে লেনদেন ও সূচক বাড়ছিল। কিন্তু, সেই ধারা ছিল কেবল দুই সপ্তাহ। ১৪ আগস্টের পরে বাজারে ধারাবাহিক পতন শুরু হয়। এমনকি এক দিনে সূচকের ১০০ পয়েন্ট হারানোর ঘটনাও বিনিয়োগকারীরা দেখেছেন। পতনের কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বাজারে তারল্য প্রবাহে সংকট রয়েছে ও আইসিবিও বিনিয়োগ করতে পারছে না- এমন দাবি করে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে তিন হাজার কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টি চায় প্রতিষ্ঠানটি। ঋণ আবেদন পর্যালোচনা করতে গেল ১৭ অক্টোবর অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, আর্থিক প্রতিষ্ঠান সচিব ও বিএসইসির চেয়ারম্যানকে নিয়ে বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে ঋণ দিতে সম্মত হয়েছিল সরকার।
ইউসিবি ও ন্যাশনাল ফাইন্যান্স চেয়ারম্যানের ব্যাংক হিসাব জব্দ
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসির (ইউসিবি) চেয়ারম্যান শরীফ জহির ও তার ভাই ন্যাশনাল ফাইন্যান্স লিমিটেডের (এনএফএল) চেয়ারম্যান আসিফ জহিরের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। একই সঙ্গে তার মা কামরুন নাহারের ব্যাংক হিসাব স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে। কার ফাঁকি সংক্রান্ত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের হিসাব জব্দ করতে বলা হয়েছে। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) এনবিআর ও বিভিন্ন ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্ত এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়ে অ্যাকাউন্ট জব্দ করতে বলেছে। হিসাব জব্দ করা ব্যক্তি ও তাদের ব্যক্তি মালিকানা ব্যবসায়িক অ্যাকাউন্টের সব লেনদেন বন্ধ থাকবে। চিঠিতে বলা হয়েছে, আয়কর আইন ২০২৩-এর ২২৩ ধারার ক্ষমতাবলে শরীফ জহির, তার ভাই আসিফ জহির ও তাদের মা কামরুন নাহার এবং সৈয়দ ইশতিয়াক ইসলাম (পিতা- সৈয়দ দিদারুল আলম) ও তাদের পরিবারের (পিতা, মাতা, ভাই, বোন, স্ত্রী, পুত্র ও কন্যা) নামে পরিচালিত সব হিসাব (ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, ভল্ট লকার) অর্থসম্পদ লেনদেন স্থগিত করতে বলা হয়েছে। শরীফ জহির ইউসিবি ব্যাংকের নবগঠিত বোর্ডের চেয়ারম্যান। তিনি পোশাক ও বস্ত্র খাতের প্রতিষ্ঠান অনন্ত গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তার ভাই আসিফ জহির সম্প্রতি এনএফএলের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি অনন্ত গ্রুপে উপব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া, তিনি আসিফ জহির সিন্দাবাদডটকম লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও এমডি।
আইএমএফ ঋণ: চতুর্থ কিস্তি পাওয়া যাবে ফেব্রুয়ারি-মার্চে
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের চতুর্থ কিস্তির ১.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আগামী ফেব্রুয়ারি-মার্চে পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালাহউদ্দীন আহমেদ। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় আইএমএফ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। ১৩ সদস্যের প্রতিনিধি দলটি সরকারের শীর্ষ পর্যায়, বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও সরকারি বিভিন্ন সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আজকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিনিধিদল এসেছিল। তাদের সঙ্গে ঋণ প্যাকেজ ৪.৭ বিলিয়ন ডলারে মধ্যে চতুর্থ কিস্তির ১.১ বিলিয়ন ডলার নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা আশা করছি আগামী ফেব্রুয়ারি-মার্চের মধ্যে এটা পেয়ে যাব। তিনি বলেন, আমাদের স্থিতিশীলতা কিন্তু ফিরে আসছে। সম্পূর্ণ আসে নাই, তবে এখন সময় বিনিয়োগের। আপনারা দেখবেন ফরেন এক্সচেঞ্জ রেট আগের মতো ওঠানামা করছে না। ব্যাংকিং খাতের মধ্যে বেশ কয়েকটি ব্যাংকের লিকুইডিটি সার্পোট লাগছে। তবে ইসলামী ব্যাংকের মতো বড় ব্যাংক কিছুটা ফিরে আসছে। ইসলাসী ব্যাংক সব বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় ব্যাংক। অন্যান্য ব্যাংকগুলোও ধীরে ধীরে ফিরে আসবে। তিনি বলেন, রেমিট্যান্স খুবই ভালো। রপ্তানিও হচ্ছে ভালো, আমদানি একটু কম আছে। তবে আগের থেকে একটু বেড়েছে। মূলধনি যন্ত্রপাতি কিছু কম আসছে, সেটা কিছু রেস্ট্রিকশনের কারণে। সেটা আমরা চিন্তা করছি, কী করা যায়। তারা আমাদের এখানে থাকবে কিছুদিন। আমরা তাদের বলেছি আমরা এমন কিছু নেব যেটা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের জন্য মঙ্গলজনক হয়। আমরা এমন কিছু নেব না যেটা নিজের....। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, তারা কতগুলো লক্ষ্যমাত্রা দেবে সেটা করতে পারব কিনা, সেটা অন্য ব্যাপার। কিন্তু আমি আশা করি তারা বাংলাদেশের অর্থনীতির উন্নয়নের জন্য সহায়তা দেবে। অতিরিক্ত ফান্ডের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে উপদেষ্টা বলেন, অতিরিক্ত ফান্ডের বিষয়ে আমরা আবার আলোচনা করে বলব। চলমান ৪.৭ বিলিয়ন ডলার তো প্রথম প্যাকেজের। কিন্তু সংস্কার করতে হলে আমাদের ফান্ড লাগবে। আমাদের অনেক কিছু সংস্কার করতে হচ্ছে, যেমন- ব্যাংকিং খাত, রাজস্ব খাত। এগুলো করতে আমাদের ফান্ড লাগবে। তিনি বলেন, কিছুদিন পর এডিবি আসবে, ওপেক ফান্ডের টাকা আসবে। সব মিলিয়ে আগামী জুনের মধ্যে ৬ বিলিয়ন ডলার পাব। শ্বেতপত্র নিয়ে তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা— জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আইএমএফের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি। উল্লেখ্য, বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ কমতে থাকার মধ্যে গত বছরের ৩০ জানুয়ারি আইএমএফের সঙ্গে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি করে বাংলাদেশ। এর তিনদিন পর প্রথম কিস্তিতে ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ৭০ হাজার ডলার ছাড় করে সংস্থাটি। এরপর গত ১৬ ডিসেম্বর দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ২০ লাখ ডলার ছাড় করা হয়। ২০২৬ সাল পর্যন্ত মোট সাতটি কিস্তিতে ঋণের পুরো অর্থ ছাড় করার কথা রয়েছে। দ্বিতীয় কিস্তির পরবর্তীগুলোতে সমান অর্থ থাকার কথা ছিল। কিন্তু রিজার্ভ আরও কমে যাওয়ায় তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তিতে বেশি অর্থ চায় বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে বেশকিছু কঠিন শর্তের বাস্তবায়ন এবং আগামীতে আরও বড় সংস্কার কার্যক্রমের প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় সংস্থাটি তৃতীয় কিস্তিতে ৬৮ কোটি ডলারের পরিবর্তে ১১৫ কোটি ডলার দিয়েছে। এখন চতুর্থ কিস্তিতে ১.১ বিলিয়ন ডলার দিতে সম্মত হয়েছে। তবে মোট ঋণের পরিমাণ এবং মেয়াদ একই থাকবে।
আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক-বিএইচটি ইন্ড্রাস্ট্রিজ পে-রোল চুক্তি সই
আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক (এআইবি) পিএলসি এবং বিএইচটি ইন্ড্রাস্ট্রিজ লিমিটেডের মধ্যে সম্প্রতি পে-রোলব্যাংকিং চুক্তি সই হয়েছে। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ফরমান আর চৌধুরী এবং বিএইচটি ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোস্তাাফিজুর রহমানের উপস্থিতিতে এ চুক্তি সই হয়ে। ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুর রহমান চৌধুরী এবং বিএইচটি ইন্ড্রাস্ট্রিজের পরিচালক মাশরিফুর রহমান চুক্তিতে সই করেন। এ চুক্তির আওতায় প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা ব্যাংকের পেরোল প্রিভিলেজ সার্ভিসের (এপিপিএস) বিশেষ সুবিধা পাবেন। অনুষ্ঠানে ব্যাংকের সিনিয়ির এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মঞ্জুরুল আলম, এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম, এসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্টগাজী মোস্তাফিজুর রহমান, বিএইচটি ইন্ড্রাস্ট্রিজের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইবাদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
ডিএসইর পুঁজিবাজার কেন্দ্রীক একাডেমিক শিক্ষা সচেতনতামূলক কর্মশালা অনুষ্ঠিত
পাবলিক ও প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য পুঁজিবাজার কেন্দ্রিক একাডেমিক শিক্ষা সচেতনতামূলক ধারাবাহিক কর্মশালার অংশ হিসেবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্চ (ডিএসই) ট্রেনিং একাডেমি মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সাভারের আর্মি ইন্সটিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য সচেতনতামূলক কর্মশালা করেছে। কর্মশালায় নেতৃত্বে দেন আর্মি ইন্সটিটিউট অব বিজনের অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ডিরেক্টর জেনারেল মেজর জেনারেল (অব:) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান। কর্মশালায় ডিএসইর কর্মকর্তারা অংশ নেন। অনুষ্ঠানে ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাত্বিক আহমেদ শাহ বলেন, ‘আজকের প্রোগ্রামটি পুঁজিবাজার সম্পর্কে জ্ঞান বৃদ্ধি করার আপনাদের জন্য একটি সুবর্ণ সুযোগ। আপনারা এই কর্মশালা থেকে পুঁজিবাজার সম্পর্কে বাস্তবধর্মী জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন। যা ভবিষ্যতে আপনাদের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ ও কর্মক্ষেত্রে সহায়তা করবে।’ কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিএসইর উপ-মহাব্যবস্থাপক সৈয়দ আল-আমিন রহমান। প্রবন্ধে তিনি পুঁজিবাজার সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা ও পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি, পুঁজিবাজারের প্রবৃদ্ধি ও বিনিয়োগ কৌশলসহ বিভিন্ন বিষয়ের আলোকপাত করেন। পরবর্তী বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন ও মহাব্যবস্থাপক মো. ছামিউল ইসলাম। অনুষ্ঠানে মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ‘পুঁজিবাজারে যত বেশি ভাল মানের কোম্পানি থাকবে, পুঁজিবাজার তত বেশি উন্নত হবে। অতীতে বেশ কিছু খারাপ কোম্পানি তালিকাভুক্ত হওয়ার কারণে পুঁজিবাজার বর্তমান অবস্থায় পৌঁছেছে। আমরা আশা করি, আগামীতে ভাল মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানি তালিকাভুক্ত হবে।’ মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, ‘পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কখন, কোথায় ও কেন বিনিয়োগ করবেন, তা জানা প্রয়োজন। এই জন্য বিনিয়োগ শিক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইমোশনাল হয়ে বিনিয়োগ করা যাবে না। এছাড়াও, কোম্পানির পারফরমেন্স ও উদ্যোক্তা, পরিচালক দেখে শেয়ারের দাম যখন কম থাকে তখন বিনিয়োগ করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘গেল ১৫ বছরে পুঁজিবাজারে বহু নিম্ন মানের আইপিও এসেছে। যা পুঁজিবাজারকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এ জন্য নিম্নমানের আইপিও বন্ধের বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এছাড়া, বিদেশে টাকা পাচার বন্ধ করা হয়েছে। যেটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’
এলপি গ্যাসের নতুন মূল্য ঘোষণা
ডিসেম্বর মাসে ভোক্তাপর্যায়ে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) মূল্য অপরিবর্তিত থাকছে। এ মাসে ১২ কেজি এলপিজি গ্যাসের সিলিন্ডারের দাদ এক হাজার ৪৫৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা নভেম্বর মাসেও একই ছিল। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কার্যালয়ে সংস্থাটির চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ সংবাদ সম্মেলনে নতুন এই দাম ঘোষণা করেন। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ছয়টা থেকেই নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সাড়ে পাঁচ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৬৬৭ টাকা, সাড়ে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম এক হাজার ৫১৬ টাকা, ১৫ কেজির দাম এক হাজার ৮১৯ টাকা, ১৬ কেজির দাম এক হাজার ৯৪০ টাকা, ১৮ কেজির দাম দুই হাজার ১৮৩ টাকা, ২০ কেজির দাম দুই হাজার ৪২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া, ২২ কেজি সিলিন্ডারের দাম দুই হাজার ৬৬৮ টাকা, ২৫ কেজির দাম তিন হাজার ৩২ টাকা, ৩০ কেজির দাম তিন হাজার ৬৩৮ টাকা, ৩৩ কেজির দাম চার হাজার দুই টাকা, ৩৫ কেজির দাম চার হাজার ২৪৪ টাকা, ৪৫ কেজি সিলিন্ডারের দাম পাঁছ হাজার ৪৫৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। গেল মাসেও একই দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘রেটিকুলেটেড পদ্ধতিতে তরল অবস্থায় সরবরাহ করা বেসরকারি এলপিজির ভোক্তাপর্যায়ে মূসকসহ মূল্য প্রতি কেজি ১১৭ টাকা ৪৩ পয়সা এবং গ্যাসীয় অবস্থায় সরবরাহ বেসরকারি এলপিজির ভোক্তাপর্যায়ে মূসকসহ মূল্য প্রতি লিটার ০.২৬০৯ টাকায় বা প্রতি ঘনমিটার ২৬০.৯০ টাকায় সমন্বয় করা হয়েছে।’ জালাল আহমেদ বলেন, ‘সৌদি সিপি এই মাসে অপরিবর্তিত রয়েছে। আর ডলারের দামের তেমন তারতম্য হয়নি। এ জন্য দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।’ সেপ্টেম্বর মাসের তুলনায় অক্টোবর মাসের জন্য ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৩৫ টাকা বাড়িয়ে এক হাজার ৪৫৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর নভেম্বর মাসে এক টাকা কমিয়ে এক হাজার ৪৫৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। তারও আগে, গত ২ সেপ্টেম্বর ভোক্তা পর্যায়ে সেপ্টেম্বর মাসের জন্য ১২ কেজির সিলিন্ডারের দাম আগস্ট মাসের তুলনায় ৪৪ টাকা বাড়িয়ে এক হাজার ৪২১ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর গত আগস্ট ও জুলাইয়ে বাড়ানো হয়েছিল যথাক্রমে ১১ টাকা ও তিন টাকা। সে সময় ১২ কেজির সিলিন্ডারের দাম নির্ধারণ করা হয় যথাক্রমে এক হাজার ৩৭৭ টাকা ও এক হাজার ৩৬৬ টাকা। তবে, গেল জুন ও মে মাসে ১২ কেজির সিলিন্ডারের দাম যথাক্রমে ৩০ টাকা ও ৪৯ টাকা কমিয়ে এক হাজার ৩৬৩ টাকা ও এক হাজার ৩৯৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। আর টানা আট মাস বাড়ার পর গত ৩ এপ্রিল ভোক্তা পর্যায়ে কমানো হয়েছিল এলপিজির দাম। মার্চ মাসের তুলনায় এপ্রিল মাসে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৪০ টাকা কমিয়ে এক হাজার ৪৪২ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া, গত মার্চ মাসে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম আট টাকা বাড়িয়ে এক হাজার ৪৮২ টাকা, ফেব্রুয়ারিতে ৪১ টাকা বাড়িয়ে এক হাজার ৪৭৪ টাকা ও জানুয়ারিতে ২৯ টাকা বাড়িয়ে এক হাজার ৪৩৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সরছে কনটেইনার ডেলিভারি!
নিরাপত্তা ঝুঁকির পাশাপাশি কার্গো চুরি ঠেকাতে বছরে ২৫ লাখের বেশি ফুল কনটেইনার লোড (এফসিএল) কনটেইনার শেডের বদলে বেসরকারি অফডকগুলোতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক)। পৃথিবীর কোন বন্দরের শেড থেকে পণ্য ডেলিভারির বিধান না থাকলেও ঝুঁকি নিয়ে একমাত্র চট্টগ্রাম বন্দর এ কাজ করে আসছিল। তবে, অফডকগুলোর কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা না বাড়িয়ে বন্দরের এমন সিদ্ধান্তে বড় ধরনের জটিলতার আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের। পণ্য ডেলিভারি নিতে প্রতিদিন ৪০০-৫০০ হাজার ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান যেমন চট্টগ্রাম বন্দরে ঢুকে যানজটের সৃষ্টি করছে, তেমনি যানবাহনগুলোর সঙ্গে ১০-১২ হাজার ড্রাইভার-হেলপার এবং কর্মচারী চট্টগ্রাম বন্দরকেই নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে। অবশেষে, এ ঝুঁকি কমানোর পাশাপাশি পণ্য চুরি ঠেকাতে সব ধরনের এফসিএল কনটেইনার অফডক থেকেই খালাস দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চবক।নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে পাঠানো চিঠিতে তুলে ধরা হয়েছে বন্দরের অভ্যন্তরে এফসিএল কনটেইনার খালাস দিতে গিয়ে জটিলতা সৃষ্টির বিভিন্ন তথ্য। চবকের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, ‘বন্দরের অভ্যন্তরে যানজট ও হ্যাজার্ড না করার জন্য কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়া হয়েছে। যাতে করে সবগুলো কনটেইনার অফডক থেকে খালাসের অনুমতি দেয়া হয়।’আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে গতি আনতে এক দশক আগে বন্দরের পাশাপাশি চালু হয়েছিল ২১টি অফডক। অফডকগুলোর বছরে ৬-৭ লাখ রফতানি কনটেইনার এবং তিন লাখ আমদানি কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের সক্ষমতা আছে। অফডক থেকেই খালাস দেয়ার সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে অন্তত ২৫ লাখ কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা অর্জন করতে হবে অফডকগুলোকে।অফডক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো অ্যাসোসিয়েশনের (বিকডা) মহাসচিব রুহুল আমিন সিকদার বিপ্লব বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরের মধ্যে খালাস হওয়া পণ্যগুলো যদি বন্দরের বাইরে অফডকগুলো খালাসের ব্যবস্থা করা যায়, তাহলে অপারেশনাল কার্যক্রমের গতি বহু বেড়ে যাবে।’তবে, নতুন অফডক নির্মাণ না করে বন্দরের এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হলে তৈরি পোশাক খাতকেই সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হবে বলে আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের। একইসঙ্গে অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকা অফডকগুলোকে অনুমতি দিয়ে জটিলতা নিরসনের কথা বলছেন শিপিং ব্যবসায়ীরা। অবশ্য সিটির গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে যানজট সৃষ্টির জন্য বন্দরকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা অফডকগুলোকে দায়ী করা হয়।বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক প্রথম সহ সভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘অফডকগুলোর কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা না বাড়িয়ে বন্দরের এমন সিদ্ধান্তে বড় ধরনের জটিলতা তৈরি করতে পারে।’বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ বলেন, ‘সহজশর্তে অফডকের অনুমতি দিতে হবে। এরপর নিয়ম মেনে আইন অনুযায়ী অফডক তৈরি ও ব্যবহার করতে হবে।’প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম বন্দর ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ৩১ লাখ ৬৮ হাজার টিইইউএস কনটেইনার এবং ১২ কোটি ৩২ লাখ মেট্রিক টন বাল্ক পণ্য হ্যান্ডলিং করেছে।
মারকুইস পাম্পস ও স্যানিটারি ওয়্যারের ডিলার মিট অনুষ্ঠিত
ইউরোপিয়ান প্রযুক্তিতে তৈরি সর্বাধুনিক ডিজাইনের পণ্য নিয়ে ১৯৮৩ সালে যাত্রা শুরু করা এমইএল গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ‘মডার্ন ইলেক্ট্রিক্যাল ওয়ার্কস লিমিটেডের ‘মারকুইস পাম্পস এন্ড স্যানিটারি ওয়্যার ডিলার মিট-২০২৪’ রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়েছে।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এমইএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার জাওয়াহিরুল গণি । বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক নুর মোহাম্মদ, নিংবো-মারকুইস হাইটেক কো: লিমিটেডের ভাইস প্রেসিডেন্ট নি গোমিং, টিমস ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপের জেনারেল ম্যানেজার ওয়াং উইশিং, ওয়াটার পাম্পের বাংলাদেশ কান্ট্রি ম্যানেজার ওয়াং ফেই, স্যানিটারি ওয়্যারের বাংলাদেশ কান্ট্রি ম্যানেজার মাও জিয়ানিং।কনফারেন্সে এমইএল গ্রুপের কিচেন ও বাথ ওয়্যারের নতুন ব্র্যান্ড 'ডরফেন' এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে মারকুইস পাম্পস ও স্যানিটারি ওয়্যার, ডরফেন ব্র্যান্ডের গিজার, কিচেন হুড, গ্যাস বার্নার, মেটাল বেসিন ও কিচেন সিংকের দৃষ্টিনন্দন প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।এমইএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ইঞ্জিঃ জাওয়াহিরুল গণি বলেন, এমইএল গ্রুপ শুধু পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানই নয়, ব্যবসায়িক কার্যক্রমের পাশাপাশি সামাজিক ও পরিবেশগত কাজের প্রতিও আমরা দ্বায়বদ্ধ। এর ফলে মারকুইস একটি দায়িত্বশীল ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে।অনুষ্ঠানে মডার্ন ইলেক্ট্রক্যাল ওয়ার্কস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জাকির হোসাইন, এম,ই,এল গ্রুপের পরিচালক ইঞ্জি: মো. বায়েজিদ গণি, পাম্পস এন্ড মোটরসের এন,এস,এম হামিদুর রহমান সরকার ও স্যানিটারি ওয়্যার এবং কর্পোরেট হেড অফ বিজনেস ইঞ্জিঃ মো. আরিফ উল্লাহ্ সহ কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।অনুষ্ঠানে সারা দেশ থেকে আগত প্রায় ৪০০ জন ডিলার অংশগ্রহণ করেন। আয়োজন শেষে র্যাফল ড্র’র মাধ্যমে উপস্থিত ডিলারদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এছাড়াও দেশের খ্যাতনামা শিল্পীদের সমন্বয়ে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়।
নতুন টাকায় থাকবে না বঙ্গবন্ধুর ছবি
আগামী ছয় মাসের মধ্যে বাজারে আসছে শেখ মুজিবের ছবিমুক্ত নোট। শেখ মুজিবের জায়গায় ধর্মীয় স্থাপনা, বাঙালি ঐতিহ্য এবং জুলাই বিপ্লবের দেয়াললচিত্র বা গ্রাফিতি যুক্ত হবে। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকারের চূড়ান্ত অনুমোদন এসেছে। শিগগিরই ২০ টাকা, ১০০ টাকা, ৫০০ টাকা ও এক হাজার টাকা মূল্যমানের নতুন নোট ছাপাবে অন্তর্বর্তী সরকার। এসব নোটে নতুন করে নকশা করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আপাতত এই চার ধরনের নোটে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি থাকবে না। পর্যায়ক্রমে সব টাকার নোট থেকেই তার ছবি তুলে দেওয়া হতে পারে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা বলেন, ‘নতুন টাকা ছাপার বিষয়টি অনেক দূর এগিয়েছে। আশা করি, আগামী ছয় মাসের মধ্যে বাজারে আসতে পারে নতুন টাকা।’জানতে চাইলে টাঁকশালের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এখন শুধু টেন্ডার বাকি। টেন্ডারের কাজটা শেষ হয়ে গেলেই নতুন টাকা বাজারে চলে আসতে সময় লাগবে না। এই মুহূর্তে আমরা টাকা ছাপা বন্ধ রেখেছি। অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বর্তমান নকশা থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরিয়ে নেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে চারটি নোট আবার নকশা করা হবে। পরে অন্য নোটগুলোতেও পরিবর্তন আনা হবে বলে জানান কর্মকর্তারা। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ ২৯ সেপ্টেম্বর এক চিঠিতে নতুন নোটের বিস্তারিত নকশার প্রস্তাব জমা দিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ করেছে। নতুন নোট ছাপানোর বিষয়ে মূল সুপারিশ করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রা ও নকশা উপদেষ্টা কমিটি। কমিটির সভাপতি বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর-১। কমিটিতে চিত্রশিল্পীরাও রয়েছেন।
এলডিসি উত্তরণে মানবসম্পদের সক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন : বাণিজ্য উপদেষ্টা
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, বহুপাক্ষিক বাণিজ্য ব্যবস্থায় নিরাপত্তা ও পূর্বাভাস প্রদানের ক্ষেত্রে বিরোধ নিষ্পত্তি নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এলডিসি উত্তরণের পরিবর্তনে আমাদের ব্যবসায়িক সংগঠন এবং মানবসম্পদের সক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন।আজ মঙ্গলবার সকালে ঢাকার স্থানীয় একটি হোটেলে "বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার বিরোধ নিষ্পত্তি সংক্রান্ত জাতীয় কর্মশালার" উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন তিনি।বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন,বাংলাদেশ ২০২৬ সালের নভেম্বরে এলডিসি থেকে উত্তীর্ণ হতে চলেছে, যা আমাদের অর্থনৈতিক যাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এই পরিবর্তনটি প্রচুর সুযোগ তৈরি করবে,তবে এর জন্য আমাদের ব্যবসায়িক সংগঠন এবং মানবসম্পদের সক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন।তিনি বলেন, আমরা যতই এগিয়ে যাব, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) এবং সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি প্রতিষ্ঠার জন্য দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক আলোচনায় জড়িত হবে। এছাড়াও, ইইউ, এসএএসইসি এবং আসিয়ানের মতো আঞ্চলিক ব্যবসায়িক গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আরও গভীর হবে।তিনি আরো বলেন, তিন দিনের কর্মশালা ডব্লিউটিওর নিয়ম ও পদ্ধতি সম্পর্কে অংশগ্রহণকারীদের বোধগম্যতা বৃদ্ধি করবে এবং তাদের কাজে এই অর্জিত জ্ঞান প্রয়োগ করার সক্ষমতা উন্নত করবে।অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিন , আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংস্থার লিগ্যাল অ্যাফেয়ার্স ডিভিশনের পরিচালক জর্জ ক্যাস্ট্রো এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডাব্লিউটিও অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. নাজনীন কাওসার চৌধুরী বক্তৃতা করেন।তিনদিনব্যাপী কর্মশালায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ অংশ নিবেন।
এবার এনআরবিসি ব্যাংকের ৬ বিভাগীয় প্রধানের অ্যাকাউন্ট তলব
বেসরকারি খাতের এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যানসহ তিনজনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজের পর এবার ব্যাংকটির ৬ বিভাগীয় প্রধানের অ্যাকাউন্টের তথ্য তলব করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট–বিএফআইইউ। আগামী পাঁচদিনের মধ্যে এদের লেনদেন বিবরণীসহ যাবতীয় তথ্য চাওয়া হয়েছে। গতকাল ব্যাংকগুলোতে এ সংক্রান্ত চিঠি দেওয়া হয়।অ্যাকাউন্টের তথ্য চাওয়া হয়েছে– হেড অব কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স মোহাম্মদ কামরুল হাসান, হেড অব আইটি দিদারুল হক মিয়া, হেড অব এমআইএস মো. রাজিদুল ইসলাম, চিফ ডিলার মুহাম্মদ জমির উদ্দিন, হেড অব সিকিউরিটি ফোর্সেস ফরহাদ সরকার এবং সিএফও মো. জাফর ইকবাল হাওলাদার। আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে এদের প্রত্যেকের অ্যাকাউন্ট খোলার ফরম, হালনাগাদ লেনদেন বিবরণীসহ সব ধরনের তথ্য পাঠাতে বলা হয়েছে। বিএফআইইউ এর আগে গত ১৪ নভেম্বর বিভিন্ন অনিয়ম–জালিয়াতিতে আলোচিত এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমাল, নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যানের পদ হারানো মোহাম্মদ আদনান ইমাম এবং ব্যাংকটির সিএফও মো. জাফর ইকবাল হাওলাদারের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে। এখন আবার জাফর ইকবাল হাওলাদারের অ্যাকাউন্টের তথ্য চাওয়া হয়েছে।