ই-কমার্স খাতে নতুন মাইলফলক গড়ে শেষ হল দারাজ ১১.১১ ক্যাম্পেইন
দেশের বৃহত্তম অনলাইন মার্কেটপ্লেস এবং দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষস্থানীয় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম দারাজ নতুন মাইলফলক গড়ে সফলভাবে শেষ করেছে বছরের সবচেয়ে বড় অনলাইন শপিং উৎসব দারাজ ১১.১১। ১১ নভেম্বর মধ্যরাতে শুরু হয়ে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত চলা এই ক্যাম্পেইনে ভোক্তাদের জন্য ছিল ৫০ কোটি টাকার ভাউচার, ফ্রি ডেলিভারি সুবিধা এবং ফ্ল্যাশ সেলে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়ের মতো আকর্ষণীয় অফার। ক্রেতাদের পছন্দের পণ্য ও কেনাকাটার ধারাএবারের ১১.১১ ক্যাম্পেইনে পুরুষ ও নারীদের এক্সেসরিজ, অডিও ডিভাইস, মোবাইল এক্সেসরিজ, স্কিনকেয়ার এবং বাথ অ্যান্ড বডি পণ্যগুলো শীর্ষ বিক্রিত পণ্যের তালিকায় ছিল। বিশেষ করে, ডিটারজেন্ট, ফোন কাভার, স্যানিটারি ন্যাপকিন, বডি ওয়াশ এবং ক্যাপ ও মোজা ছিল সবচেয়ে বেশি চাহিদাসম্পন্ন পণ্য। ফ্যাশন, ফার্নিচার ও ডেকর, গ্রোসারি, হেলথ অ্যান্ড বিউটি এবং হোম অ্যাপ্লায়েন্স ক্যাটাগরিগুলোর বিক্রি গত বছরের তুলনায় কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পরিসংখ্যান ইঙ্গিত দেয় যে, ক্রেতারা এখন দারাজের প্ল্যাটফর্মে শুধুমাত্র দৈনন্দিন পণ্য নয়, বরং জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন ধরনের পণ্য কিনছেন। জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহও ছিল লক্ষণীয়। লোটো, প্যারাস্যুট, টেকনো, হায়ার এবং ডেটল ছিল ক্যাম্পেইনের শীর্ষ ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই সফলতা দারাজের মানসম্পন্ন পণ্য সরবরাহ এবং ক্রেতাদের আস্থা অর্জনের ধারাবাহিকতার প্রতিফলন। শহরের বাইরে ই-কমার্সের প্রসারএবারের ক্যাম্পেইনে অর্ধেকের বেশি অর্ডার এসেছে মেট্রোপলিটন শহরের বাইরের অঞ্চল থেকে। দারাজের এই সফলতা ই-কমার্সকে গ্রামীণ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে সহজলভ্য করার প্রচেষ্টার একটি বড় উদাহরণ। অন্যদিকে, ডিজিটাল পেমেন্টের জনপ্রিয়তাও ছিল লক্ষণীয়। ক্যাম্পেইনের মোট লেনদেনের এক-তৃতীয়াংশই মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) এবং ব্যাংক কার্ডের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে। এটি ক্রেতাদের মধ্যে ক্যাশলেস পেমেন্ট পদ্ধতির প্রতি আস্থা বৃদ্ধির ইঙ্গিত। দ্রুততম সময়ের মধ্যে পণ্যের ডেলিভারিক্যাম্পেইনের সময় দারাজের লজিস্টিকস টিম ডেলিভারির গতি ও কার্যকারিতা বাড়াতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে। ডেলিভারি রুট উন্নত করা, লাস্ট-মাইল কানেকশন শক্তিশালী করা এবং দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছানোর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রসঙ্গত এবার ১১.১১ ক্যাম্পেইনে চট্টগ্রাম থেকে দিনাজপুর পর্যন্ত ৫৮২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে দেশের দীর্ঘতম ডেলিভারি সম্পন্ন হয়। দারাজ বাংলাদেশের চিফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার এ এইচ এম হাসিনুল কুদ্দুস রুশো বলেন, ‘১১.১১ ক্যাম্পেইন আবারও দেখিয়েছে কীভাবে ই-কমার্স আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে গেছে। ক্রেতা, বিক্রেতা এবং ব্র্যান্ডগুলো আমাদের সঙ্গে একসঙ্গে এই ইভেন্টকে সফল করতে কাজ করেছে। দারাজ গর্বিত যে আমরা এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনে স্বাচ্ছন্দ্য এবং আনন্দ যোগ করতে পেরেছি।’ ১১.১১ ক্যাম্পেইনের এই সাফল্যের মধ্য দিয়ে দারাজ স্থানীয় ব্যবসা ও উদ্যোক্তাদের সঙ্গে আরও দৃঢ় সংযোগ গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। দেশের প্রতিটি কোণে ই-কমার্সকে আরও সহজলভ্য ও উপভোগ্য করার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে দারাজ।
অনিয়ম-দুর্নীতি ২-৪ মাসে স্বাভাবিক করা সম্ভব নয় : অর্থ উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আগের সরকারের রেখে যাওয়া অনিয়ম-দুর্নীতি ২-৪ মাসে স্বাভাবিক করা সম্ভব নয়। তবে ভবিষ্যতে কেউ আর টাকা পাচার করতে পারবে না। শনিবার (৩০ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত এক বাণিজ্য সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ক্ষয় হয়ে যেতে শুরু করা দেশের অর্থনীতিতে কিছুটা স্থিতিশীলতা আসতে শুরু করেছে। একইসঙ্গে বাড়ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও। এ ক্ষেত্রে বিদেশি সহযোগী সংস্থাগুলো খুবই ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছে। এ সময় বিগত সরকারের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়েও কথা বলেন ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন, ডিসিসিআই সভাপতি আশরাফ আহমেদ, অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ লিমিটেডের (এবিবি) চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ রহমান, ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ফিকি) সভাপতি জাভেদ আখতারসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোতে লেজুড়বৃত্তি রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসার তাগিদ
ব্যবসার পরিবেশ নিশ্চিত আর ব্যবসায়ীদের স্বার্থ দেখার কথা থাকলেও গেলো দেড় দশকে কেবল সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশই ছিলো শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআই ও বিজিএমইএ নেতাদের কাজ। যেখানে এসব নেতাও নির্বাচন করা হতো প্রত্যক্ষ রাজনৈতিক প্রভাবে। ফলে একরকম খাতাকলমের সংগঠন হয়ে পড়ে ব্যবসায়ীদের এসব মোর্চা। ৫ আগস্টের পর এই খাতেও শুরু হয়েছে সংস্কার কার্যক্রম। গেলো বছরের শেষ দিকে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই- এর নতুন পর্ষদ গঠন হয়। তখন টানা ৬ বছর পর সংগঠনটির নির্বাচন হলেও তা ছিল আংশিক এবং প্রশ্নবিদ্ধ। যে কারণে গণঅভ্যুত্থানের পর সদস্যদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পর্ষদ ভেঙে প্রশাসক নিয়োগ দেয় অন্তর্বর্তী সরকার। পাঁচ মাসের মাথায় ভেঙে দেয়া হয় তৈরি পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ- এর নির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদও। সেখানেও ইস্যু ছিল অস্বচ্ছ নির্বাচন ও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের আধিপত্য। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিগত দিনে দলীয়করণের মাধ্যমে সংগঠনগুলোকে দুর্বল করে রাখা হয়। নেতৃত্ব গঠন করা হয় সমঝোতা ও ভুয়া ভোটারের মাধ্যমে। যেখানে আমুল সংস্কার দরকার। বিজিএমইএ সাবেক সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে সঠিক নেতৃত্ব আনা সম্ভব হয়নি। তাতে করে সংগঠনগুলো দুর্বল হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে ব্যবসায়ীদের পরামর্শে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ১২ দফা সংস্কার প্রস্তাব পাঠিয়েছেন এফবিসিসিআই প্রশাসক। যেখানে সংগঠনটিকে রাজনীতিমুক্ত রাখা, পরিচালনা পর্ষদের আকার ছোট করা এবং সভাপতিসহ সব পদে সরাসরি নির্বাচনের প্রস্তাব রয়েছে। এফবিসিসিআই প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, এমন কিছু পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে, যার সুদূর প্রসারী ফল পাওয়া যাবে।আসছে মার্চের মধ্যে নির্বাচনের মাধ্যমে ব্যবসায়ী নেতাদের হাতে দায়িত্ব হস্তান্তরের পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন এই দুসংগঠনের প্রশাসক।
সুপার স্টার গ্রুপের বার্ষিক ব্যবসায়িক সম্মেলন অনুষ্ঠিত
বাংলাদেশের ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যাক্সেসরিজ এবং লাইটিং খাতের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান সুপার স্টার গ্রুপ (এসএসজি) বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে তাদের বহুল প্রতীক্ষিত বার্ষিক ব্যবসায়িক সম্মেলন সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। এসএসজির ৩০ বছর পূর্তির এই মাহেন্দ্রক্ষণে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনে সেলস টিম, পরিবেশক, দেশের বাইরের বিজনেস পার্টনার, সেলস হেড, বিজনেস হেড এবং অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাবৃন্দসহ তিন হাজারের বেশি মানুষ উপস্থিত ছিলেন; যা এই আয়োজনকে বছরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কর্পোরেট অনুষ্ঠানে পরিণত করে। প্রথম দিন ছিল এসএসজির সেলস টিমের পরিশ্রম এবং বার্ষিক পারফরম্যান্সের স্বীকৃতি দেওয়ার দিন। যেখানে ফিল্ড অফিসার থেকে শুরু করে চিফ সেলস অফিসার পর্যন্ত সবার অবদানের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। প্রোগ্রামে অন্তর্ভুক্ত ছিল মোটিভেশনাল সেশন, স্ট্রাটেজিক আলোচনা এবং মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক পরিবেশনা যা আগামীর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সবাইকে উজ্জীবিত করে। দ্বিতীয় দিন উদযাপিত হয় বাংলাদেশজুড়ে থাকা এক হাজারের বেশি পরিবেশকদের নিয়ে। এদিন এসএসজির সাফল্যের মজবুত ভিত হিসেবে পরিবেশকদের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি জানানো হয়। এর পাশাপাশি ব্যবসায়িক কৌশলগত আলোচনা, র্যাফেল ড্র এবং মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক আয়োজনের মাধ্যমে সবাইকে বিনোদিত করা হয়। এসএসজির বার্ষিক এই সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সুপার স্টার গ্রুপ লিমিটেডের চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক হারুন অর রশীদ, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক তোফায়েল আহমেদ, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ সাদী আব্দুল মজিদ, পরিচালক–এসসিএম মাহবুবুর রহমান। পরিবারসহ তাদের উপস্থিতি পুরো আয়োজনে এক উষ্ণ ও পারিবারিক স্পর্শ যোগ করে, যা এসএসজির ঐক্য এবং সংহতির মূল্যবোধকে তুলে ধরে।
পেঁয়াজের দাম সামান্য কমলেও আলুর কেজি ৮০ টাকা
বাজারে নতুন আলুর দাম কমতে শুরু করলেও দিন দিন বাড়ছে পুরনো আলুর দাম। বাজারে প্রতি কেজি ডায়মন্ড আলু বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি দরে। এদিকে সামান্য কমেছে পেঁয়াজের। এই দামকে স্বাভাবিকভাবে দেখছেন না ক্রেতারা। শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের হাজী জয়নাল আবেদীন বাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়।বিক্রেতাদের মতে, এক সপ্তাহ আগেও এই আলু বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকায়। দাম বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে বিক্রেতারা জানান, ভারতীয় সীমান্ত বন্ধ থাকার প্রভাব পড়েছে দেশের বাজারে। আলু ব্যবসায়ীরা জানান, ভারতীয় স্থলবন্দর হিলি সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিনই আলু-পেঁয়াজ আমদানি হতো। যা বর্তমানে বন্ধ রয়েছে৷ ফলে ডায়মন্ড আলুর দাম বাড়ছে। এদিকে দাম বৃদ্ধির কারণে হতাশা প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। মিনারা বেগম নামে একজন পোশাক শ্রমিক শুক্রবার ঢাকা উদ্যান এলাকায় বাজার করতে আসেন। এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলুর দাম প্রসঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘এক কেজি আলুর দাম ৮০ টাকা! চিন্তা করা যায়? আমরা গরীব মানুষ কি খাইয়া বাঁচি?’ এদিকে বাজারে দেশীয় জাতের নতুন আলুর সরবরাহ বেড়েছে। একই সঙ্গে কমতে শুরু করেছে দাম। সপ্তাহ তিন আগেও চড়া দামে বিক্রি হওয়া নতুন আলু এখন ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। দোকানির সঙ্গে খানিক দর-কষাকষি করলে ৯০ টাকার বিনিময়েও এক কেজি নতুন আলু ঢুকছে ক্রেতার থলেতে। আবার বাজারে সুখবর দিচ্ছে দেশি পেঁয়াজ। ১৩০ টাকা থেকে নেমে এ সপ্তাহে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা দরে।
দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার শ্বেতপত্র প্রকাশ সোমবার
দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা কেমন, তার শ্বেতপত্র জাতির সামনে প্রকাশ করা হবে আগামী সোমবার (২ ডিসেম্বর)। এর আগে রোববার (১ ডিসেম্বর) এই শ্বেতপত্রের চূড়ান্ত প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করা হবে। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) শ্বেতপত্র প্রণয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটির সভাপতি দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য জানান, আগামী রোববার (২ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার কাছে চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি জমা দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) ঢাকায় ইআরএফ মিলনায়তনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) ও রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র্যাপিড) আয়োজিত ‘বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও উন্মুক্ত বাজেট জরিপ ২০২৩’ ফলাফল প্রকাশ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান। দেবপ্রিয় আরও জানান, আগামী সোমবার (২ ডিসেম্বর) সংবাদ সম্মেলন করে শ্বেতপত্রের ফল গণমাধ্যমকে জানানো হবে। তিনি বলেন, ‘ব্যাংক ও জ্বালানিখাতে বেশি লুটপাট হয়েছে। এসব তুলে ধরা হবে শ্বেতপত্রে।’
দুর্নীতির সম্পদের পাহাড় ফেরাতে না পারলে কিসের বিপ্লব
‘দুর্নীতি ও লুন্ঠনের মাধ্যমে সম্পদে গড়ে তোলা হয়েছে। এগুলো কেন বাজেয়াপ্ত হল না? এ সম্পদ কোথায় গেল? এই সম্পদ কেন আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সরকার অধিগ্রহণ করল না! লুণ্ঠনকারীদের যাদের ব্যাংক ঋণ আছে, সেগুলো সমন্বয়ের জন্য তাদের সম্পত্তি কেন দ্রুত সময়ের মধ্যে অধিগ্রহণ করা হল না। এমন পদক্ষেপের কথা শোনা গেলেও দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি নেই।’ এটি করা গেলে আমি নিশ্চিত মানুষের মধ্যে কর দেওয়ার বিষয়ে আগ্রহ বাড়বে বলে জানান শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের যে পাহাড় গড়ে উঠেছে, সেখান থেকে জনগণের সম্পদ ফিরিয়ে নিতে না পারলে কিসের বিপ্লব হল।’ বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) ঢাকার পল্টনে অর্থনীতি বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইআরইফ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংলাপে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান এসব কথা বলেন। ইআরএফ ও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান র্যাপিডের যৌথ আয়োজনে বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও বাজেটের উন্মুক্ততা নিয়ে জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। আর্থিক খাতসহ নানা বিষয়ে সরকারের উদ্যোগ আছে, তবে কেন যেন উদ্বেগটা কাটছে না, এর কারণ ব্যাখ্যা করে সরকারের কাছে প্রশ্ন শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘সরকার যেসব উদ্যোগ নিচ্ছে, তার ফল আসছে না। মানুষ অত ধৈর্য্য রাখতে পারছে না। কিংবা আস্থার সংকট হচ্ছে।’ এর আগে আওয়ামী লীগ সরকারে থাকাকালীন ইআরএফের এক অনুষ্ঠানে এই বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ বলেছিলেন ‘ডাল মে কুচ কালা হে’। এই উদ্বৃতি ফের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আগামী রোববার বলতে পারব কোন কোন ডাল পচা, আর কোন কোন ডাল ভাল ছিল। রোববার প্রধান উপদেষ্টার কাছে শ্বেতপত্র হস্তান্তর করা হবে। পর দিন সংবাদ সম্মেলনে জনগণের জন্য গত সরকারের অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার চিত্র তুলে ধরা হবে। দেশের দুইটি ফুসফুস ব্যাংক ও জ্বালানি খাত। এই দুই খাতে বড় ধরনের অনিয়মের কথা উল্লেখ করে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘ব্যাংক ও জ্বালানিখাতে বেশি লুটপাট হয়েছে। এসব তুলে ধরা হবে প্রতিবেদনে।’ দুর্নীতি প্রসঙ্গে দেবপ্রিয় বলেন, ‘সাধারণ মানুষের যে ধারণা আছে, তার চেয়ে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরও জটিল। এমন একটি অর্থনীনৈতিক পরিস্থিতিতে কোন উত্তারাধিকার সরকারের করার কিছু থাকে না। ব্যাংকি খাতে সমস্যা বেশি ছিল। তাৎক্ষণিক দূর করার চেষ্টা চলছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর যতটা উৎসাহ উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে, তা যদি সরকার দক্ষতার সাথে পরিচালনা করতে না, পারে তবে দেশের মানুষকে ততটাই হতাশ করা হবে। এ জন্য বছর শেষে সরকারকে পাঁচ মাসের মূল্যায়ন উপস্থাপন করতে হবে। কি কি সরকারের দিক থেকে করা হয়েছে। এগুলো একত্রিত করে প্রকাশ করতে হবে। বাজেটের আগে চলমান পরিস্থিতিতে আগামী আগামী ছয় মাসের পরিকল্পনা প্রকাশ করতে হবে। এর মধ্যে মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগ, সরকারি ব্যয়, রাজস্ব আয় ও বৈদেশিক খাতের ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা তুলে ধরতে হবে। আগামী জানুয়ারিতে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে অর্থনৈতিক নিশ্চয়তা জন্য অন্তভূক্তিমূলক টেকসই উন্নয়ন ফোরাম গঠন করতে পারলে আগামী বাজেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারবে।’ দেবপ্রিয় বলেন, ‘আর্থিক স্বস্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে সংস্কার করা কঠিন হবে।’ অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনে রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র্যাপিড) চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার এমনভাবে রেখে গেছে, তার খেসারত আমরা গুনছি। বেপরোয়া অনেক নীতি নিয়ে ছিল। ফলে মূল্যস্ফীতি হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এখন ব্যাংক থেকে টাকা লুটপাট ও চুরি বন্ধ হয়েছে। এর সুফল পাওয়া যাবে। ব্যাংকের আমানত সংগ্রহ ও রপ্তানি বেড়েছে। বর্তমানে নেওয়া নীতির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ সাড়া দেখতে পাচ্ছি। তবে, আর্থিক ব্যবস্থাপনা কঠিন হবে। কারণ, আগামী ছয় মাস অত্যন্ত কঠিন সময় যাবে। এর মধ্যে রিজার্ভ বাড়াতে হবে। রিজার্ভ না বাড়লে মূল্যস্ফীতি কমানো সম্ভব হবে না।’ জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন র্যাপিডের নির্বাহী পরিচালক আবু ইউসুফ বলেন, ‘সরকারের ব্যয় সচ্ছতার সঙ্গে হচ্ছে কিনা। জনগন খুবই কম জানতে পারছে। বাজেট ব্যয়ে সচ্ছতা ৩৭ শতাংশ। যা যথেষ্ট নয়। এক্ষেত্রে ভারত, নেপাল ও শ্রীলংকার চেয়ে পিছিয়ে আছে। কেবল পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে। বাজেটে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ ১১ শতাংশ আর বাজেট বাস্তবায়ন তদারকি হচ্ছে ৩৭ শতাংশ।’ অর্থ মন্ত্রনালয়ের যুগ্ম সচিব আনোয়ারুল কবির বলেন, ‘বাজেট বাস্তবায়নে কিছু ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে। এটা কিভাবে তরান্বিত করা যায় তার চেষ্টা করা হবে। জরিপে বেশ কিছু সুপারিশ এসেছে, তা নিয়ে কাজ করবে অর্থ মন্ত্রণালয়।’প্রথম আলোর হেড অফ অনলাইন শওকত হোসেন মাসুম বলেন, ‘এখন প্রত্যাশা সবার বেশি। রাতারাতি মূল্যস্ফীতি কমে যাবে না। এর জন্য সময় গালবে। তবে, মূল্যস্ফীতি কমানোর ক্ষেত্রে আস্থার সংকট আছে। মূল্যস্ফীতি কমাতে সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু, শুরুতে বেসরকারি খাতের সঙ্গে যোগাযোগে ঘাটতি ছিল। আর আস্থা সংকটের আরেকটি কারণ আইন শৃঙ্খলার ঘাটতি।’ তিনি আরো বলেন, ‘ডিসেম্বরের মধ্যে সরকার যা করতে চায়, তার আগামী ছয় মাসের পরিকল্পনা মানুষকে জানালে আস্থা ফিরবে।’ ইআরএফের সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম।
দুর্বল ব্যাংককে সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকার তারল্য সহায়তা দেয়া হয়েছে: গভর্নর
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর গভর্নর বলেছেন, টাকা ছাপিয়ে দুর্বল ব্যাংকে তারল্য সহয়তা দেব না সেখান থেকে সাময়িক ভাবে সরে এসেছি। নতুন টাকা ছাপিয়ে দুর্বল ৬ ব্যাংকে ২২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার তারল্য সহয়তা দিয়েছি। আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।গভর্নর বলেন, আমরা টাকা ছাপিয়ে তারল্য সহয়তা করলেও সে টাকা আমরা বন্ড ছেড়ে তুলে ফেলবো। বাজারে এ নতুন টাকা আমরা রাখবো না। এর জন্য আমার নতুন করে বন্ড ছাড়ছি।তিনি বলেন, সব গ্রাহক যদি ব্যাংকে গিয়ে হাজির হয় তাহলে কোন ব্যাংকের পক্ষেই ফেরত দেওয়া সম্ভব না। আগামী রবিবার থেকে গ্রাহক তার চাহিবার মত টাকা পাবে।আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমরা বাজার থেকে এক হাতে টাকা দেব অন্য হাতে তুলে নেব। আমারা আগের লক্ষ্যেই থাকছি। মূল্যস্ফীতি কমানোর সাথে আমানত কারীর স্বার্থও দেখবো।সব ঋণ খেলাপির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানে বাংলাদেশ বলে গভর্নর বলেন, এস আলম বা সব ঋণ খেলাপিদের সম্পদ বিক্রি করা হবে আইন অনুযায়ী।তিনি বলেন, আমি কারোর চাপে কোন কিছু করবো না, দরকার পরলে চাকরি ছেড়ে দেব। আমি নিজের স্বার্থে এখানে বসে নেই।সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মান্নান, গ্লোবাল ইসলামি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নূরুল আমিন, ইউনিয়ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান মুঃ ফরীদ উদ্দীন আহমদ, এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম স্বপন এবং সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম সাদিকুল ইসলাম।
রাজশাহীতে ইসলামী ব্যাংকের লক্ষ্মীপুর শাখা উদ্বোধন
রাজশাহীতে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি-এর ৩৯৮তম শাখা হিসেবে লক্ষ্মীপুর শাখা ২৮ নভেম্বর ২০২৪, বৃহ¯পতিবার উদ্বোধন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান মোঃ আবদুল জলিল, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম মাসুদ রহমান ও স্বতন্ত্র পরিচালক মোহাম্মদ খুরশীদ ওয়াহাব। ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মুহাম্মদ মুনিরুল মওলার সভাপতিত্বে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ব্যাংকের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মোঃ ওমর ফারুক খান। অনুষ্ঠানে কল্যাণমুখী ব্যাংকিংয়ের উপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শরী’আহ সেক্রেটারিয়েট-এর প্রধান মোঃ শামসুদ্দোহা এবং স্বাগত বক্তব্য দেন রাজশাহী জোনপ্রধান মোঃ শফিউল আজম। আরও উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মোঃ রফিকুল ইসলাম ও সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট এ.কে.এম. মাহবুব মোরশেদ। গ্রাহক ও আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন শিক্ষাবিদ ও সমাজসেবক ড. কেরামত আলী, বাংলাদেশ প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান রিলিজ, ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের গাইনী বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডাঃ ফাতেমা সিদ্দীকা, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের সুপার ডা. মোঃ হাসানুজ্জামান ও আল আকসা ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোঃ সালেহ উর রহমান। দু’আ ও মুনাজাত পরিচালনা করেন আল- যাযিরা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ড. মুহাম্মদ আবদুল লতিফ। এসময় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ও বিভিন্ন শাখার কর্মকর্তাবৃন্দ, ব্যবসায়ী, শুভানুধ্যায়ী ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, ইসলামী ব্যাংক দেশের সর্বস্তরের মানুষের মাঝে সর্বজনীন ও কল্যাণমুখী সেবাসমূহ পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। নতুন বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংক আমানত, বিনিয়োগ, আমদানি-রপ্তানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধিতে অভাবনীয় সক্ষমতা অর্জন করেছে। তিনি আরও বলেন, ইসলামী ব্যাংকের জন্য আগামীর প্রতিটি দিন হবে সম্ভাবনার এবং এগিয়ে যাওয়ার। তিনি ইসলামী ব্যাংকের আধুনিক, সমৃদ্ধ ও প্রযুক্তিনির্ভর সেবাগ্রহণের জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান। তিনি বলেন, ইসলামী ব্যাংক শরী‘আহ নীতিমালার আলোকে সকল ধরনের সেবা প্রদানে শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে যাচ্ছে। তিনি দেশের অন্যান্য শাখার মতো লক্ষ্মীপুর শাখাতেও সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সাথে সেবা প্রদানে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন।
ইসলামী ব্যাংকের লক্ষ্মীপুর শাখা উদ্বোধন
রাজশাহীতে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির ৩৯৮তম শাখা হিসেবে লক্ষ্মীপুর শাখা উদ্বোধন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) এ শাখার উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান মো. আবদুল জলিল, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান এম মাসুদ রহমান ও স্বতন্ত্র পরিচালক মোহাম্মদ খুরশীদ ওয়াহাব। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ মুনিরুল মওলার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ব্যাংকের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খান। অনুষ্ঠানে কল্যাণমুখী ব্যাংকিংয়ের উপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শরী’আহ সেক্রেটারিয়েটের প্রধান মো. শামসুদ্দোহা এবং স্বাগত বক্তব্য দেন রাজশাহী জোনপ্রধান মো. শফিউল আজম। উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. রফিকুল ইসলাম ও সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট একেএম মাহবুব মোরশেদ। গ্রাহক ও অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য দেন শিক্ষাবিদ ও সমাজসেবক কেরামত আলী, বাংলাদেশ প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান রিলিজ, ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের গাইনী বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডাক্তার ফাতেমা সিদ্দীকা, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের সুপার ডাক্তার মো. হাসানুজ্জামান ও আল আকসা ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. সালেহ উর রহমান। দু’আ ও মুনাজাত পরিচালনা করেন আল- যাযিরা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মুহাম্মদ আবদুল লতিফ। অনুষ্ঠানে ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, ‘ইসলামী ব্যাংক দেশের সর্বস্তরের মানুষের মাঝে সর্বজনীন ও কল্যাণমুখী সেবাগুলো পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। নতুন বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংক আমানত, বিনিয়োগ, আমদানি-রপ্তানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধিতে অভাবনীয় সক্ষমতা অর্জন করেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইসলামী ব্যাংকের জন্য আগামীর প্রতিটি দিন হবে সম্ভাবনার ও এগিয়ে যাওয়ার।’ উল্লাহ আল মাসুদ ইসলামী ব্যাংকের আধুনিক, সমৃদ্ধ ও প্রযুক্তিনির্ভর সেবাগ্রহণের জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘ইসলামী ব্যাংক শরী‘আহ নীতিমালার আলোকে সব ধরনের সেবা প্রদানে শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে যাচ্ছে।’ দেশের অন্যান্য শাখার মত লক্ষ্মীপুর শাখাতেও সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সাথে সেবা প্রদানে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন উল্লাহ আল মাসুদ।
ভারত থেকে আসছে আলু-পেঁয়াজ
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কোনো রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও গত সোমবার কোনো লিখিত নির্দেশনা ছাড়াই পশ্চিমবঙ্গ সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশগামী আলু ও পেঁয়াজবোঝাই সব ট্রাকের স্লট বুকিং বন্ধ করে করে দেয় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। অবশেষে তিনদিন পর ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে স্বাভাবিক হলো আলু ও পেঁয়াজের স্লট বুকিং। বৃহস্পতিবার আবারও ভারত থেকে বাংলাদেশের পথে যাওয়া শুরু করেছে ট্রাকবোঝাই পেঁয়াজ ও আলু। ভারতের রাজ্য সরকারের স্লট বুকিং পোর্টাল ফের চালু হওয়ার স্বস্তি ফিরেছে সীমান্ত ব্যবসায়ীদের মধ্যে। সীমান্ত বাণিজ্য ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন বিষয় হলেও সীমান্তে পণ্যবাহী ট্রাকের স্লট বুকিং সংক্রান্ত পোর্টাল নিয়ন্ত্রণ করে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের দাবি, রাজ্যের অভ্যন্তরীণ বাজারের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে টাস্ক ফোর্সের সুপারিশে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশে আলু-পেঁয়াজের রপ্তানি। রাজ্য সরকারের এমন পদক্ষেপে রাতারাতি বিপাকে পড়ে হাজার হাজার সীমান্ত ব্যবসায়ী। রাজ্যের এমন পদক্ষেপকে সরাসরি এখতিয়ার বহির্ভূত বলে মন্তব্য করেছেন তারা। তারা বলছেন, যেহেতু কেন্দ্রীয় সরকারের কোন নির্দেশিকা নেই তাই রাজ্য সরকারের তরফে এমন পদক্ষেপ সম্পূর্ণ বেআইনি ও অনৈতিক। গোটা বিষয় নিয়ে সোমবার থেকেই ব্যবসায়ীদের তরফে দফায় দফায় বৈঠক করা হয় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে। অবশেষে বৃহস্পতিবার থেকে ফের চালু করে দেওয়া হয় স্লট বুকিং। স্বাভাবিক হয় সীমান্ত বাণিজ্য।
কৃষকদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করলো সাউথইস্ট ব্যাংক
কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসি তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র “কৃষি খাতের উৎপাদন বৃদ্ধি” “কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয়” এবং “কৃষিজাত পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ” এর জন্য কৃষকদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে। সাউথইস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুদ্দিন মো: ছাদেক হোসাইন ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে, “নারী উন্নয়ন ফোরাম” এনজিওর মাধ্যমে প্রান্তিক কৃষকদের হাতে এই আর্থিক সহায়তা তুলে দেন। বিশেষ তহবিলের মাধ্যমে প্রদত্ত এই সহায়তা প্রান্তিক কৃষকদের উন্নয়নে ব্যাংকের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। সাউথইস্ট ব্যাংক “নারী উন্নয়ন ফোরাম” এনজিওর সাথে সমন্বয় করে এই সহায়তা প্রেরণ করেছে। সহায়তা প্রাপ্ত কৃষকদের পাশাপাশি “নারী উন্নয়ন ফোরাম” এনজিওর প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক আফরোজা সুলতানা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। সাউথইস্ট ব্যাংকের উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাছুম উদ্দিন খান ও আবিদুর রহমান চৌধুরী এবং উভয় প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ-দক্ষিণ কোরিয়া এপিএ নেগোসিয়েশন চুক্তি সই
অর্থনৈতিক অংশীদারীত্ব চুক্তি (এপিএ) সম্পাদনের নেগোসিয়েশন শুরুর লক্ষ্যে বাংলাদেশ-কোরিয়া ইপিএ নেগোসিয়েশন লঞ্চিং সেরোমনি অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সকালে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে এ অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠানে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন ও দক্ষিণ কোরিয়ার বাণিজ্য মন্ত্রী ইনকিয়ো চিওনং আনুষ্ঠানিক এ নেগোসিয়েশন শুরুর ঘোষণা দেন। এছাড়া, ইপিএ সম্পাদনের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ উন্নয়ন কাঠামো সংক্রান্ত সমঝোতা চুক্তি সই করা হয়েছে। বাণিজ্য সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিন ও দক্ষিণ কোরিয়ার বাণিজ্য উপমন্ত্রী জংওন পার্ক সমঝোতা চুক্তি সই করেন।
ন্যাশনাল ব্যাংকের টাকা লোপাটকারীরা চিহ্নিত, আগামী সপ্তাহ থেকে একশন
ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেছেন, ‘যারা ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে, তাদেরকে আমরা চিহ্নিত করেছি। সেই টাকাগুলো উদ্ধারের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক সহায়তায় কার্যক্রম চলছে। আগামী সপ্তাহ থেকে আমরা এটাচমেন্ট (আদায়ের মাধ্যমে সমন্বয়) শুরু করে দিব। আশা করি, আগামী তিন মাসের মধ্যে ন্যাশনাল ব্যাংক ঘুরে দাঁড়াবে।’ বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকায় ন্যাশনাল ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে মোয়াজ্জেম হোসেন আরো বলেন, ‘যারা ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে, তাদের নামে, বেনামে, স্থাবর, অস্থাবর যেসব সম্পত্তি আছে, সেগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। এমনও গ্রাহকও আছে, গুলশানে তাদের এক হাজার কোটি টাকার সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে। এগুলো সব নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি ব্যাংকের পক্ষ থেকে। যারা এই ব্যাংক থেকে সবচেয়ে বেশি টাকা নিয়েছে, তাদেরকে আমরা ধরার কার্যকরী উদ্যোগ নিয়েছি।’ব্যাংকটির চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘আতঙ্ক ও গুজবে ব্যাংক খাত থেকে আস্থা হারিয়েছেন আমানতকারীরা। এ খাতে অনিয়ম ছিল না তা বলব না। ব্যাংকিং খাতে বহুমাত্রিক ও বহু পাক্ষিক অনিয়ম হয়েছে। তবে, ন্যাশনাল ব্যাংকে এখন আন্তর্জাতিক ও দেশীয়সহ পাঁচটি অডিট ফার্ম কাজ করছে। তাদের প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে পরবর্তী করণীয় আমরা নির্ধারণ করব। আমি এতটুকু নিশ্চিত করতে পারি, এত দিন যত অনিয়ম হয়েছে, এখন তা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ। এখন আমরা অবলোপন থেকে ও মন্দ মানে খেলাপি হয়ে যাওয়া ঋণ গুলো আদায়ের চেষ্টা করছি। পাশাপাশি, বৈদেশিক বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং রেমিটেন্সের উপর জোর দিয়েছি।’ বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তায় খুব ওই ঘুরে দাঁড়ানোর আশা ব্যক্ত করেন চেয়ারম্যান।সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আব্দুল আউয়াল মিন্টু জানান, দেশের কঠিন সময়েও ন্যাশনাল ব্যাংক দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাত গার্মেন্টস শিল্প ও কারখানাগুলোর পাশে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। বিশেষত এলসি সুবিধা প্রদানসহ গার্মেন্টস কর্মীদের বেতন-ভাতা সময়মত পরিশোধ নিশ্চিত করায় ন্যাশনাল ব্যাংক সদা সচেষ্ট। এর পাশাপাশি, দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে বৈদেশিক লেনদেনের ক্ষেত্রেও ন্যাশনাল ব্যাংক সচেষ্ট। নেশনাল ব্যাংক গেল অক্টোবর পর্যন্ত ৯০০ কোটি টাকার খেলাপি আদায় করেছে এবং চলতি বছরের মধ্যে আরও ৪০০ কোটি টাকা আদায়ের প্রক্রিয়া চলছে। বলে রাখা ভাল, গেল ২০ আগস্ট বেসরকারি ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বিলুপ্ত করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ন্যাশনাল ব্যাংকের আগের পরিচালকদের অনেকেই চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের নামে-বেনামে থাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ছিলেন। ফলে, বাংলাদেশ ব্যাংকের এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ব্যাংকটিকে এস আলম গ্রুপের হাত থেকে মুক্ত হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, গেল ডিসেম্বর পর্যন্ত ন্যাশনাল ব্যাংকের বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ছিল ৪২ হাজার ২৭০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খাতা-কলমে খেলাপি হয়ে পড়েছিল ১২ হাজার ৩৬৫ কোটি। বিতরণকৃত মোট ঋণের ২৯ শতাংশ। প্রকৃতপক্ষে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ আরও বেশি বলে অভিযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, ব্যাংকটির প্রভিশন ঘাটতির পরিমাণ বর্তমানে ১১ হাজার ৬৯৮ কোটি।
ন্যাশনাল ব্যাংকের গ্রাহকরা চাহিদামত টাকা কবে তুলতে পারবেন, জানালেন চেয়ারম্যান
ঋণের নামে টাকা লুটপাটকারী কেউ পার পাবে না বলে কঠোর বার্তা দিয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংকের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ। তবে, চাহিদামত টাকা তুলতে আমানতকারীকে অপেক্ষা করতে হবে আরও অন্তত তিন মাস। শিকদার গ্রুপসহ বিভিন্ন শিল্পগোষ্ঠীর ঋণভারে ডুবে যাওয়া ন্যাশনাল ব্যাংকে রাখা টাকা তুলতে এসে বহু গ্রাহকই ফিরছেন খালি হাতে, ভুগছেন আস্থাহীনতায়। এমন বাস্তবতা স্বীকার করেন ব্যাংকটির চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টুও।বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ে ন্যাশনাল ব্যাংকের বর্তমান অবস্থা ও কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘স্বল্প মেয়াদি আমানতের বিপরীতে দীর্ঘ মেয়াদি ঋণ ব্যবস্থাপনা ব্যাংক খাতের বড় সমস্যা। এই সমস্যাকে আরও উসকে দিয়েছে দেশের দুর্বল পুঁজিবাজার।’তবে, গ্রাহকের আস্থা বাড়াতে ন্যাশনাল ব্যাংক আর কোন অনিয়মে জড়াবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘চাহিদামত আমানতকারীর টাকা ফেরত দিতে সময় লাগবে আরও অন্তত তিন মাস।’এ সময় ব্যাংকটির ভাইস চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, ঋণ খেলাপিদের ধরার পাশাপাশি বিদেশে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গেল জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ৯০০ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ আদায় করেছে ন্যাশনাল ব্যাংক। প্রক্রিয়াধীন রয়েছে আরো ৪০০ কোটি টাকা।
৯০ ও ১৮০ দিন মেয়াদি বিল চালু করল বাংলাদেশ ব্যাংক
দুর্বল ব্যাংকগুলোকে নিজ ভল্ট থেকে টাকা দেয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ টাকা যাতে বাজারে মূল্যস্ফীতি উসকে না দেয়, সে জন্য নতুন করে ৯০ ও ১৮০ দিন মেয়াদি বিলের মাধ্যমের টাকা তোলার উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বুধবার (২৭ নভেম্বর) প্রজ্ঞাপনে বাংলাদেশ ব্যাংক সংবাদ মাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, মুদ্রানীতি বাস্তবায়ন ও তারল্য ব্যবস্থাপনাকে আরো কার্যকর করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক বর্তমানে প্রচলিত ৭, ১৪ ও ৩০ দিন মেয়াদি বাংলাদেশ ব্যাংক বিলের পাশাপাশি ৯০ ও ১৮০ দিন মেয়াদি বাংলাদেশ ব্যাংক বিল প্রবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।ৎ এ দিকে, মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) ৩০ দিন মেয়াদি বাংলাদেশ ব্যাংক বিলের মাধ্যমে ৪৫২ কোটি টাকা উত্তোলন করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে অংশ নিয়েছে ১১টি ব্যাংক। এতে গড় সুদের হার ছিল ১১ দশমিক দশ। এর আগে দুর্বল পাঁচটি ব্যাংককে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা তারল্য-সহায়তা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। বেসরকারি খাতে পরিচালিত ন্যাশনাল ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংককে এ তারল্য-সহায়তা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর আগে গ্যারান্টির বিপরীতে দুর্বল ব্যাংকগুলো টাকা দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। এর মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংককে প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা ধার দেওয়া হয়। তবে, দুর্বল ব্যাংকগুলো অভিযোগ করছে, এ ব্যবস্থায় তারা চাহিদামত টাকা পায়নি। এ জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিজের ভল্ট থেকে টাকা ধার দেওয়া শুরু করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘এক দিকে বাজার থেকে টাকা তুলে নেওয়া হচ্ছে। অন্য দিকে, দুর্বল ব্যাংকগুলোকে টাকা ধার দেওয়া হচ্ছে। ফলে, বাজারে অতিরিক্ত টাকা সরবরাহের ঝুঁকি রোধ করা যাচ্ছে। বাজার থেকে টাকা না তুলে শুধু ধার দিলে তা মূল্যস্ফীতি উসকে দেয়ার কারণ হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে। এ জন্য সতর্কতার সাথে এ প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।’
এনআরবি ব্যাংকের আরো ১৭টি ইসলামিক ব্যাংকিং উইন্ডোর উদ্বোধন
এনআরবি ব্যাংকের আরো ১৭টি ইসলামিক ব্যাংকিং উইন্ডোর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। বুধবার (২৭ নভেম্বর) এগুলো উদ্বোধন করা হয়। এগুলো হল ঢাকার দিলকুশা, মিরপুর, নয়াবাজার, আশুলিয়া ও জয়পাড়া শাখা, চট্টগ্রামের রাওজান ও ফটিকছড়ি শাখা, নারায়নগঞ্জেরপঞ্চবটি শাখা, শরিয়তপুরের জাজিরা, গোপালগঞ্জ, খুলনা, যশোর, রাজশাহী, রংপুর, বগুড়া, ফেনী ও গাজীপুরের শফিপুর শাখা। উইন্ডোর অনলাইনের মাধ্যমে এগুলো উদ্বোধন করেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারেক রিয়াজ খান। এ উপলক্ষে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাকির আমিন চৌধুরী, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচলাক মো. শাহীন হাওলাদার, মো. আলী আকবর ফরাজী ও আনোয়ার উদ্দিন, উল্লিখিত শাখার ব্যবস্থাপক ও করপোরেট হেড অফিসের বিভাগীয়প্রধান উপস্থিত ছিলেন।
দুই দিন পর হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আলু ও পেঁয়াজ আমদানি শুরু
ভারতের রপ্তানি জটিলতার কারণে দুই দিন বন্ধ থাকার পর দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আলু ও পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। বুধবার (২৭ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়। আর দুপুর দুইটার পর থেকে শুরু হয় আলু আমদানি। আমদানিকারকেরা জানান, ভারত থেকে নিয়মিত আলু ও পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছিল, গেল রোববার (২৪ নভেম্বর) থেকে আলু ও পেঁয়াজের রপ্তানি স্লট বন্ধ করে দেয় পশ্চিমবঙ্গ সরকার। সেখানকার সাধারণ মানুষের অভিযোগ, বাংলাদেশে আলু-পেঁয়াজ রপ্তানির কারণে ভারতে এসব পণ্যের দাম বাড়ছে। এ জন্য রপ্তানি বন্ধে সরকারকে চাপ দিয়ে আসছিলেন তারা। এর পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ভারতের পেঁয়াজ ও আলু রপ্তানির বন্ধের জন্য স্লট ও টোকেন দেওয়া বন্ধ করে দেয়। ফলে, ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশে প্রবেশের জন্য শত শত আলু ও পেঁয়াজবাহী ট্রাক আটকা পড়ে। অবশেষে মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) রাতে সিদ্ধান্ত হয় পশ্চিমবঙ্গ বাদে ভারত থেকে অন্যান্য প্রদেশ থেকে সীমান্তে আসা পণ্যবাহী গাড়িগুলো বাংলাদেশে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে। রপ্তানি স্লট চালু করায় হিলি স্থলবন্দর দিয়ে সকালের দিকে পেঁয়াজ ও দুপুরের পর আলু আমদানি শুরু হয়। পেঁয়াজ ও আলু আমদানি বন্ধের খবরের কারণে অস্থির হয়ে উঠেছিল বাজার। তবে, আমদানি শুরু হাওয়ায় দাম কমে আসবে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। হিলি কাস্টমসের তথ্য মতে, চলতি সপ্তাহে ভারত থেকে ৫৫ ট্রাকে দুই হাজার ২০০ মেট্রিকটন চাল, ১৬৬ ট্রাকে চার হাজার ৭০০ মেট্রিকটন আলু এবং ৪৫ ট্রাকে এক হাজার ৩০০ মেট্রিকটন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডিম আমদানির অনুমতিতে উদ্বিগ্ন প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ডিম আমদানির যে সুযোগ দিয়েছে, তার পক্ষে নয় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। বরং, তারা এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। কারণ, এতে খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। যা দেশের ডিম উৎপাদনে দীর্ঘ মেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। পাশাপাশি, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সার্টিফিকেট না নিয়ে ডিম আমদানি করলে বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে। যা পোল্ট্রির শিল্প জন্য ঝুঁকির ও বিপর্যয়ের আনতে পারে। বুধবার (২৭ নভেম্বর) সচিবালয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ১০০ দিনে কাজের অগ্রগতি জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি এ সময় তার মন্ত্রণালয়ের নেওয়া বিভিন্ন কার্যক্রম সাংবাদিকদের তুলে ধরেন। ডিমের মূল্য ও আমদানি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘গেল আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে বন্যার প্রভাবে ডিমের সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছিল। একই সঙ্গে কৃষি ফসলও নষ্ট হওয়ায় বাজারে সরবরাহ কম ছিল। ফলে, ডিমের চাহিদাও স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি ছিল। তাই, ডিমের দাম নিয়ে বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়। সেটা এখন নেই।’ ‘এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা এ সুযোগে মুনাফা লাভের জন্য ডিমের সরবরাহে হস্তক্ষেপ করে। এ বিষয়ে ভোক্তা অধিকার যথেষ্ট অভিযান চালিয়েছে ও দাম নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেছে। অন্য দিকে, টিসিবি ও ট্রাকে করে ন্যায্য মূল্যে ডিম বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে খামারি পর্যায় থেকে সরাসরি বাজারে ডিম আনার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ডিমের বর্তমান দাম আরও কমানো যাবে, যদি উৎপাদন খরচ বিশেষ করে ফিড, এক দিনের বাচ্চা ও বিদ্যুতের দাম কমানো যায়।’ তিনি বলেন, ‘এরমধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ডিম আমদানির অনুমতি দিয়ে যাচ্ছে। তবে, প্রান্তিক খামারিদের টিকিয়ে রাখা, দেশে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জাসহ ভিরুলেন্ট নিউক্যাসেল ডিজিজ, ইনফেকশাস ব্রংকাইটিস অথবা নতুন কোন রোগের প্রাদুর্ভাব রোধকল্পে ডিম আমদানির সিদ্ধান্ত বাতিলকরণের লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়েছে।’ ফরিদা আখতার আরো বলেন, ‘পোল্ট্রি সেক্টর সংশ্লিষ্ট নয়- এ রকম ভুঁইফোড় সংগঠন ও ব্যক্তি দ্বারা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও প্রাণিসম্পদ খাতের বিরুদ্ধে অপপ্রচার রোধে মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, পোল্ট্রিতে কৃষির হারে বিদ্যুৎ বিল ও ব্যাংকের সুদের হার নির্ধারণের জন্য প্রচেষ্টা জোরদার করা হয়েছে।’ বিগত ১০০ দিনে দুইটি অধিদপ্তরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কাজকে ফলপ্রসূ করার জন্য প্রশাসনিক সংস্কার করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বদলি, বঞ্চিত ও বৈষম্যের শিকার কর্মকর্তাদের পদায়ন, পদন্নোতির কাজ করা হয়েছে। এই কাজ এখনো চলমান আছে। এসব পরিবর্তন অধিদপ্তরের কার্যক্রমের গতিশীলতা বৃদ্ধি ও দক্ষতা উন্নয়নে সহায়ক হবে বলে আশা করছি।’ আগস্ট মাসের বন্যায় কৃষির পাশাপাশি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে জানিয়ে ফরিদা আখতার বলেন, ‘১৩টি জেলার ৮৮টি উপজেলায় এক লক্ষ ৯৭ হাজার ১৬৬টি পুকুর/দিঘি/খামারের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে এক লাখ সাত হাজার ৫১৭ মেট্রিক টন মাছ ও চিংড়ি, পোনা নষ্ট হয়েছে ৪৪ কোটি। মৎস্যখাতে মোট ক্ষতি এক হাজার ৮৯৯ কোটি টাকা। অন্য দিকে, গবাদি পশু (গরু দুই লাখ ৬০ হাজার, মহিষ আট হাজার, ছাগল ৯৩ হাজার, ভেড়া দশ হাজার, মুরগি ৩৪ লাখ ২১ হাজার, হাঁস চার লাখ ৬০ হাজার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, মারা গেছে ৩৯ হাজার গরু, ১৬ হাজার ছাগল, মুরগি ২১ লক্ষ, হাঁস দুই লক্ষ। প্রায় সাত লক্ষ ৮২ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মোট ক্ষতির পরিমাণ টাকার অংকে ৪২৮ কোটি টাকা। ‘বন্যার পর প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর জরুরি সেবা দিয়েছে। বন্যার ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ ও বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসন বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্তের আলোকে সহজ শর্তে ঋণ প্রদান, ঋণের কিস্তি স্থগিত করা, মৎস্য ও পশু খাদ্যের আমদানি শুল্ক হৃাস, দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান, বিদ্যুতে ভর্তুকি প্রদানের জরুরি ব্যবস্থাগ্রহণের জন্য যথাক্রমে অর্থ মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বিদ্যুৎ বিভাগ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পত্র পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের এনআইডিভিত্তিক স্বয়ংসম্পূর্ণ তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘কৃষি ব্যাংকের মত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ ব্যাংক গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে আমদের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এনবিআরকে অগ্রিম আয়কর কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে খামারিদের বিদ্যুৎ বিলে কৃষির ন্যায় ২০ শতাংশ ভর্তুকি দেওয়ার ব্যবস্থার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগকে অনুরোধ করা হয়েছে। পাশাপাশি, পোল্ট্রিতে কৃষির হারে বিদ্যুৎ বিল ও ব্যাংকের সুদের হার নির্ধারণের জন্য প্রচেষ্টা জোরদার করা হয়েছে।’ প্রাণিসম্পদের সবচেয়ে বড় প্রকল্প বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অপ্রয়োজনীয় খরচ কমাতে এলডিডিপির বিশ্ব ব্যাংকের ঋণের টাকা এক হাজার ২৫৩ কোটি টাকা (১০০ মিলিয়ন ডলার) ফেরত দেওয়া হয়েছে। এ অর্থ আমাদের দেশেই থাকবে, ইআরডির মাধ্যমে অন্য প্রয়োজনীয় খাতে ব্যবহার করা যাবে।’ ফরিদা আখতার আরো বলেন, ‘প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে ভেটেরিনারি সাইন্স ও এনিমেল হ্যাজবেন্ডি ডিসিপ্লিনের ডিগ্রিধারী গ্রাজুয়েটদের মধ্যে বিরাজমান অসন্তোষ দূরীকরণের জন্য একাধিক সভা করা হয়। উভয় ডিগ্রিধারী কর্মকর্তাদের পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে অধিদপ্তরের দুইটি পেশাগত ধারাকে একীভূতকরণের উদ্যোগ সফল হয়েছে।’
ভর্তুকি মূল্যে ১০ লাখ পোশাক শ্রমিক পাবে টিসিবির পণ্য
ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ফ্যামিলি কার্ডধারী ১ কোটি পরিবারের বাইরে আরও ১০ লাখ গার্মেন্টস শ্রমিক পরিবারের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রির প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। বুধবার (২৭ নভেম্বর) অর্থ উপদেষ্টা ড.সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে নীতিগত এই অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টাকে ১০ লাখ গার্মেন্টস শ্রমিক পরিবারের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রির একটি প্রস্তাব অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি ওঠার কথা ছিল সে বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওটা আমরা অনুমোদন দিয়েছি। টিসিবি ওটা করবে। টিসিবির রেগুলোর যে প্রোগ্রাম আছে এক কোটি পরিবারের জন্য, ওরা বোধ হয় ওখান থেকে সংস্থান করতে পারবে। এই ১০ লাখ গার্মেন্টস শ্রমিক কি এক কোটির বাহিরে থাকবে এমন প্রশ্নের উত্তরে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এক কোটির ভেতরে আছে। কারণ এক কোটি সব তো আমরা ইস্যু করতে পারিনি। আমরা বলেছি আপাতত আপনারা এটা করেন। পরে শুধু গার্মেন্টস না, অন্যান্য ক্ষেত্রে আমরা দেখবো। কবে নাগাদ গার্মেন্টস শ্রমিকদের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু হবে এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, টিসিবি যখনই বিক্রি কার্যক্রম শুরু করবে, এটা করবো। টিসিবির পরবর্তী বিক্রি কার্যক্রমের মধ্যে গার্মেন্টস শ্রমিকরা সংযুক্ত থাকবেন। এটা ঢাকার আশপাশের বিশেষ এলাকার জন্য। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিবের ডিও’র ভিত্তিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী টঙ্গী, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, আশুলিয়া, সাভারসহ ঢাকার পাশের শিল্পগুলোর গার্মেন্টস শ্রমিকদের মাঝে টিসিবির নির্ধারিত পণ্য ভর্তুকি মূল্যে বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ১০ লাখ গার্মেন্টস শ্রমিকদের মাঝে ভর্তুকি মূল্যে চিনি, ভোজ্য তেল ও মসুর ডাল বিক্রির বাবদ মাসিক সম্ভাব্য ব্যয় হবে ৩১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। আর প্রতি মাসে খাদ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে প্রায় পাঁচ হাজার মেট্রিক টন চালের প্রয়োজন হবে।
তিন মাসের ব্যবধানে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী আয় বেড়ে দ্বিগুণ
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে গেল ৫ আগস্টের পূর্বে রেমিট্যান্স পাঠানো কমিয়ে দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশিরা। পর পর দুই মাস যুক্তরাষ্ট্র থেকে উল্লেখযোগ্য হারে প্রবাসী আয় কমে যায়। তবে, দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সাথে সাথে দেশটি থেকে প্রবাসী আয় আসা ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, গেল সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে দেশের প্রবাসী আয় পাঠানো দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র। গেল আগস্ট মাসে দেশে প্রবাসী আয় পাঠানো দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন বলছে, ‘গেল অক্টোবর শেষে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী আয় এসেছে প্রায় ৫০ কোটি মার্কিন ডলার। এর দুই মাস আগে গত জুলাইয়ে দেশটি থেকে প্রবাসী আয় এসেছিল প্রায় ২৪ কোটি ডলার। অর্থাৎ, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী আয় আসা তিন মাসের ব্যবধানে দ্বিগুণ হয়েছে। প্রতি মাসেই দেশটি থেকে প্রবাসী আয় আসা ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে।’ গেল আগস্টে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স এসেছিল ২৯ কোটি ডলার, যা তার আগের মাস জুলাইয়ের তুলনায় পাঁচ কোটি ডলার বেশি। সেপ্টেম্বরে এসেছে ৩৯ কোটি ডলার, আগস্টের তুলনায় যা দশ কোটি ডলার বেশি। এছাড়া, সর্বশেষ অক্টোবর মাসে এসেছে প্রায় ৫০ কোটি ডলার। আগের মাস সেপ্টেম্বরের তুলনায় যা ১১ কোটি ডলার বা ২৮ শতাংশ বেশি। তবে, রেমিট্যান্সে এর আগে শীর্ষে থাকা দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে গেল তিন মাসে প্রবাসী আয় আসায় তেমন পরিবর্তন হয়নি। আরব আমিরাত থেকে গেল জুলাইয়ে ৩৩ কোটি, আগস্টে ৩৪ কোটি, সেপ্টেম্বরের ৩৬ কোটি ও অক্টোবর মাসে ৩৩ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে দেশে। সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে প্রবাসী আয় পাঠানোর দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে নেমে গেছে দেশটি। অক্টোবর মাসের পুরো সময়ে দেশে মোট প্রবাসী আয়বা রেমিট্যান্স এসেছে প্রায় ২৪০ কোটি ডলার। এর মধ্যে প্রায় ২১ শতাংশই এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। একই মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে মোট প্রবাসী আয়ের পৌনে ১৪ শতাংশ এসেছে। সেই হিসাবে অক্টোবরে দেশে আসা মোট প্রবাসী আয়ের ৩৫ শতাংশ বা এক-তৃতীয়াংশ এসেছে যুক্তরাষ্ট্র ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে। দেশ দুইটি থেকে অক্টোবর মাসে ৮০ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে।
সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় পরিশোধিত পাম ওয়েল চায় বাংলাদেশ, বিবেচনার আশ্বাস মালয়েশিয়ার
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন মালয়েশিয়ায় দুই দিনের সফরের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) মালয়েশিয়ার প্লান্টেশন ও কমোডিটিস মন্ত্রী ওয়াইবি দাতুক সেরি জোহারি বিন আবদুল গনির সাথে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে ওয়াইবি দাতুক উপদেষ্টাকে স্বাগত জানিয়ে নতুন দায়িত্বের জন্য অভিনন্দন জানান। বৈঠকে শেখ বশিরউদ্দিন বাংলাদেশ-মালয়েশিয়ার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন এবং বাংলাদেশের নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর চাহিদা, উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থা সম্পর্কে মালয়েশিয়ার মন্ত্রীকে জানান। বলে রাখা ভাল, মালয়েশিয়া বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পাম ওয়েল উৎপাদনকারী দেশ ও মালয়েশিয়ার অপরিশোধিত পাম ওয়েল আমদানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। বাণিজ্য উপদেষ্টা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় এক কোটি পরিবারের মধ্যে ন্যয্যমূল্যে ভোজ্যতেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন দ্রব্যাদি সরবরাহে সরকারের গৃহীত পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। এরই ধারাবাহিকতায় আসন্ন রমজানকে সামনে রেখে মালয়েশিয়া থেকে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় টিসিবির মাধ্যমে পরিশোধিত পামওয়েল সরবরাহের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নিতে মালয়েশিয়ার মন্ত্রীকে অনুরোধ জানান উপদেষ্টা। ওয়াইবি দাতুক তার সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় সরকারি হতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বাংলাদেশে পরিশোধিত পাম ওয়েল সরবরাহের জন্য বাণিজ্য উপদেষ্টার অনুরোধে সাড়া দিয়ে এ বিষয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে আলোচনা করে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন। বৈঠকে রাবার খাতের উন্নয়নে সহযোগিতা, সম্ভাব্য বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগ এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃক প্রস্তাবিত কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতার বিষয়গুলি গুরুত্বসহকারে আলোচনা করেন উপদেষ্টা। বৈঠকে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের ডেপুটি হাই কমিশনার মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খাস্তগীর, প্রথম সচিব (বাণিজ্যিক) প্রণব কুমার ঘোষ, প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) রেহানা পারভিন, মালয়েশিয়ার কৃষি ও পণ্যমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইউসরিনুদ্দিন বিন আবদ করিম উপস্থিত ছিলেন।
এমডি, সিওও এবং সিটিও নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ডিএসইর
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি), প্রধান পরিচালনা কর্মকর্তা (সিওও) ও প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা (সিটিও) নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে।পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ডিএসইর পুনগঠিত পরিচালনা পর্ষদ গেল ৩ অক্টোবর দায়িত্ব নেয়৷ চেয়ারম্যান হিসেবে যার নেতৃত্বে রয়েছেন মমিনুল ইসলাম৷ দায়িত্ব গ্রহণের পরই অগ্রাধিকার ভিওিতে দীর্ঘ দিন শূন্য থাকা শীর্ষ স্থানীয় তিনটি পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেন তিনি। তারই অংশ হিসেবে বুধবার (২৭ নভেম্বর) ডিএসইর এমডি), সিওও এবং সিটিও নিয়োগের জন্য জাতীয় দৈনিক পএিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। প্রত্যকটা পদের জন্য আবেদনের শেষ আগামী ২৬ ডিসেম্বর সন্ধা ছয়টা পর্যন্ত। আগামী ৪ ডিসেম্বর সন্ধা ছয়টায় ডিএসইর চেয়ারম্যান ও পরিচালনা পর্ষদের সাথে আগ্রহী প্রার্থীদের ডিএসই সম্পর্কে ধারণা দিতে ভার্চুয়ালি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
যমুনা রেলসেতু নির্মাণ প্রকল্প ও চট্টগ্রাম পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্পে জাইকার ঋণচুক্তি সই
বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে দুইটি ঋণচুক্তি সই করেছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। যমুনা রেলসেতু নির্মাণ (তৃতীয়) ও চট্টগ্রাম পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্পে (প্রকৌশল সেবা) জাপানি অফিসিয়াল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিসট্যান্সের (ওডিএ) আওতায় সর্বমোট ৩৯ হাজার ৯০২ মিলিয়ন ইয়েন (তিন হাজার ১৪৭ কোটি টাকা সমমূল্য) পর্যন্ত ঋণ দিবে জাইকা। সোমাবর (২৫ নভেম্বর) ঢাকার আগারগাঁওয়ের শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের এনইসি-২ সম্মেলন কক্ষে এ চুক্তি সই অনুষ্ঠিত হয়। চুক্তিতে সই করেন জাইকা বাংলাদেশ অফিসের চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইচিগুচি তোমোহিদে ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি। দুই ঋণচুক্তির আওতায় এই ৩৯ হাজার ৯০২ মিলিয়ন ইয়েন দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। এর মধ্যে যমুনা রেলসেতু নির্মাণ প্রকল্পে (তৃতীয়) ৩৮ হাজার ২০৬ মিলিয়ন ইয়েন এবং চট্টগ্রাম পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্পে (প্রকৌশল সেবা) এক হাজার ৬৯৬ মিলিয়ন ইয়েন বরাদ্দ দেয়া হয়। ঋণের তৃতীয় ধাপ হিসেবে এই যমুনা রেলসেতু (তৃতীয়) চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। যমুনা বহুমুখী সেতুর পাশাপাশি, যমুনা নদীর ওপরে চার দশমিক আট কিলোমিটার জুড়ে এই দৃষ্টিনন্দন রেলসেতুটি রয়েছে। সেতুটি ২০২৫ সালের শুরুতে এর কার্যক্রম শুরু করবে এবং দেশের পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে রেল যোগাযোগ বৃদ্ধি করবে বলে আশা করা যাচ্ছে। দীর্ঘ মেয়াদী স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে এবং নিয়মিত অপারেশন ও রক্ষণাবেক্ষণ খরচ কমিয়ে আনতে প্রকল্পে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নেয়া হয়। ঋণে নির্মাণ অংশের জন্য ১.৭ শতাংশ ও পরামর্শ সেবার জন্য ০.৪০ শতাংশ বার্ষিক সুদহার নির্ধারণ করা হয়। দশ বছরের গ্রেস পিরিয়ড সহ ঋণ পরিশোধের সময়কাল নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ বছর। চট্টগ্রাম পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্পে সর্বমোট ছয়টি ক্যাচমেন্টের (বৃষ্টির পানির প্রাকৃতিক জলাধার) মধ্যে ক্যাচমেন্ট ২ ও ক্যাচমেন্ট ৪ (কালুরঘাট ও পূর্ব বাকলিয়া), এই দুটির ওপর গুরুত্ব দেয়া হবে। এটি প্রকল্পের প্রথম পর্যায় এবং এতে পুরো পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থার বিস্তারিত ডিজাইন প্রণয়নে কাজ করা হবে। পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন চট্টগ্রামের জনস্বাস্থ্য, পরিবেশগত স্থায়িত্ব ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করার মাধ্যমে বেশকিছু টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) পূরণে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। প্রকল্পটি বর্জ্য পানি শোধন করতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করবে, যেন বর্জ্য পানি থেকে কার্যকরভাবে নাইট্রোজেন ও ফসফরাস অপসারণ এবং পানির দূষণ রোধ করা যায়। পরামর্শ সেবার ক্ষেত্রে ঋণের বার্ষিক সুদহার ০.২০ শতাংশ; যেখানে দশ বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ ঋণ পরিশোধের সময়কাল নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ বছর। অনুষ্ঠানে ইচিগুচি তোমোহিদে বলেন, ‘আমরা দুটি ভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সম্মত হয়েছি। তবে, এই দুটি প্রকল্পের লক্ষ্য একটিই, আর তা হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণকে সমৃদ্ধ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিতে সহায়তা করা। আশা করি, আমাদের অংশগ্রহণ বাংলাদেশের সরকারের পরিশ্রমী কর্মীদের জন্য সহায়ক হবে, যারা একটি উন্নত বাংলাদেশ গড়তে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।’ মো. শাহ্রিয়ার কাদের ছিদ্দিকী বাংলাদেশের মানুষের জন্য অব্যাহত সহায়তা বজায় রাখায় জাপানের জনগণের প্রতি ধন্যবাদ জানান।