ছাত্রশিবির যেসব প্রোগ্রামে থাকবে, সেখানে আমরা যাব না
- চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৩:১১ পিএম, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সব ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের নেতাদের সাথে মতবিনিময় করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দশটি ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। তবে, ছাত্রদল ও ছাত্র ইউনিয়নের কোন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না। ‘জাতীয় ছাত্র সংহতি সপ্তাহ’ পালনের লক্ষ্যে এই মতবিনিময় করা হয়।
রোববার (১ ডিসেম্বর) বিকাল সাড়ে তিনটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সম্মেলন কক্ষে মতবিনিময় সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় উপস্থিত না থাকার কারণ হিসেবে চবি শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান মন্তব্য করতে রাজি হননি।
একই প্রশ্নের উত্তরে চবি ছাত্র ইউনিয়ন সংসদের সভাপতি সুদীপ্ত চাকমা বলেন, ‘আমাদের সংগঠনের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের কারণে আমরা সেখানে যাইনি। কেন্দ্রের নীতিগত সিদ্ধান্ত হচ্ছে, ছাত্রশিবির যেসব প্রোগ্রামে থাকবে আমরা সেখানে যাব না।’
সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, ‘অনেকে দাবি করছেন, আমরা জুলাই আন্দোলনে ছাত্র সংগঠনগুলোর অবদান অস্বীকার করছি। আমরা কখনও কারও অবদান অস্বীকার করিনি। আমরা মনে করি, ছাত্র সংগঠনগুলো পেছনে ছিল বলেই আজকে আমরা সামনে আসতে পেরেছি। ফ্যাসিবাদের পতন ঘটাতে সক্ষম হয়েছি। একইভাবে সামনেও ফ্যাসিবাদকে নির্মূল করতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তবে, খুবই দুঃখ হচ্ছে, আজকে বৃহৎ একটি ছাত্র সংগঠনসহ অন্য ক্রিয়াশীল সংগঠনগুলোর উপস্থিত না দেখে। আপনাদের রাগ-অভিমান থাকতে পারে। এগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে। কিন্তু, আপনারা যদি না আসেন, তাহলে সমাধানের সুযোগ তো তৈরি হচ্ছে না।’
জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য জোবায়রুল হাসান আরিফ বলেন, ‘জাতীয় নাগরিক কমিটির দুইটি বিষয়ে কনসার্ন। প্রথমটি হচ্ছে, জুলাই গণহত্যার বিচার। আমরা লক্ষ্য করছি, জুলাইয়ের বিচার সঠিকভাবে হচ্ছে না। আবার আমরা মবেরও পক্ষে না। আমরা আইনের মাধ্যমে এমনভাবে বিচার করতে চাই, যাতে কখনও কেউ বলতে না পারে ক্যাঙারু কোর্টের মাধ্যমে খুনিদের বিচার হয়েছে। দ্বিতীয় কনসার্নের বিষয়ে সংবিধান সংস্কার। আপনারা লক্ষ্য করবেন, আমাদের সংবিধানের পাওয়ার স্ট্রাকচার এমন যে কেউ স্বৈরাচার হতে বাধ্য। আমরা এমন সংস্কার চাই, যাতে সাংবিধানিকভাবে কেউ আর নতুন হাসিনা হতে না পারে।’
চবি শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মুহাম্মাদ ইব্রাহীম বলেন, ‘৫ আগস্টের পর ১০০ দিন পার হয়ে গেছে। কিন্তু, এখনও শিক্ষার্থীদের মাঠে থাকতে হচ্ছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন সমস্যা, প্রতিবিপ্লব ঠেকানোর দায়িত্ব শিক্ষার্থীদের ওপর এসে পড়ছে। অথচ, এখন তাদের রাষ্ট্র গঠনে সভা, সিম্পোজিয়াম-সেমিনার করার কথা। সংস্কার প্রক্রিয়া কেমন হওয়া উচিত তা দেখানোর কথা।’
বলে রাখা ভাল, আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন ঠেকাতে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে চলমান অস্থিরতা নিরসনের লক্ষ্যে গেল ২৫ নভেম্বর এক সপ্তাহ ফ্যাসিবাদ বিরোধী সব ছাত্রসংগঠনের সমন্বয়ে ‘জাতীয় ছাত্র সংহতি সপ্তাহ’ পালনের ঘোষণা দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সেই ধারাবাহিকতায় রোববার (১ ডিসেম্বর) চবিতে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।