রুনা লায়লা যেভাবে গিনেস বুকে!


News Defalt/runa laila.jpeg
রুনা লায়লা

দীর্ঘ দিন ধরে কণ্ঠের জাদুতে সকলকে মুগ্ধ করে রেখেছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সঙ্গীত রুনা লায়লা। ষাটের দশকে যাত্রা শুরুর পর থেকে বর্তমান পর্যন্ত ছড়িয়ে যাচ্ছেন কণ্ঠের মায়াজাল, মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছেন কোটি শ্রোতাকে।

Your Image

উপমহাদেশের প্রখ্যাত এই কণ্ঠশিল্পীর পাকিস্তানের করাচিতে জুগনু চলচ্চিত্রে প্রথম গান করার মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রের গানে যাত্রা শুরু করেন। পাঁচ দশকের সঙ্গীতজীবনে লোকজ, পপ, রক, গজল, আধুনিক- সব ধাঁচেই কৃতিত্ব দেখিয়েছেন রুনা। বাংলা, হিন্দি, উর্দু, ইংরেজিসহ ১৮টি ভাষায় তার কণ্ঠে গান শোনা গেছে। এ পর্যন্ত গানের সংখ্যা দশ হাজারেরও অধিক।

নব্বইয়ের দশকে মুম্বাইয়ে পাকিস্তানে সুরকার নিসার বাজমির সুরে এক দিনে দশটি করে তিন দিনে ৩০টি গানে কণ্ঠ দিয়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লেখান রুনা।

অবাক করা তথ্য হচ্ছে সংগীতশিল্পী নয়, তার হওয়ার কথা ছিল নৃত্যশিল্পী। টানা চার বছর করাচির বুলবুল ললিতকলা একাডেমির ভরতনাট্যম, কত্থক, কত্থকলি শেখেন তিনি। তবে, শেষ পর্যন্ত গানের মাঝেই ডুবে থাকেন। গান গেয়েই বাংলাদেশের রুনা লায়লা ভারত ও পাকিস্তানসহ উপমহাদেশের কোটি মানুষের ভালবাসা পেয়েছেন।

এ দিকে, আজ (১৭ নভেম্বর) এ সঙ্গীত শিল্পীর জন্মদিন। এ দিন উপলক্ষে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলেন, ‘আমার প্রতি জন্মদিনে আপনারা অনেক অনেক শুভেচ্ছা বার্তা পাঠান, ভালবাসা দেন, গিফট দেন এবং দোয়া ও আশীর্বাদ তো থাকেই আপনাদের। আজকে আমি চিন্তা করেছি, আমি আমার এই জন্মদিনে আপনাদেরকে একটা গিফট দেব।’

কী সেটা? জানা যায়, বিশেষ এ দিনে কিংবদন্তি এই শিল্পীর পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে থাকছে তার অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল ‘দ্য রুনা লায়লা’।

ভিডিও বার্তায় শ্রোতা-ভক্ত ও সঙ্গীতানুরাগীদের ইউটিউব চ্যানেলটির সাথে যুক্ত থাকার আহ্বানও জানান দেশবরেণ্য এই সংগীতশিল্পী।

রুনা লায়লার অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করা প্রথম ভিডিওটি হল ‘শিল্পী আমি তোমাদেরই গান শোনাব’। যা প্রচার হয়েছিল বিটিভিতে। গানটির কথা লিখেছেন মাসুদ করিম, সুর করেছেন সুবল দাস। আর দ্বিতীয় ভিডিও হিসেবে থাকছে তারই গান ‘হ্যালো হাই’। বাপ্পি লাহিড়ীর সুরে গানটি ছিল ‘সুপারুনা’ অ্যালবামে। ১৯৮২ সালের ১ ডিসেম্বর ইএমআই মিউজিক কোম্পানি থেকে প্রকাশিত এ অ্যালবামটি প্রথম দিনেই এক লাখ কপি বিক্রি হয়। এ জন্য উপহার হিসেবে গোল্ডেন ডিস্ক অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছেন রুনা লায়লা। অ্যালবামটির কাজ হয়েছিল লন্ডনে, যেখানে এক সময়ের বিখ্যাত ব্যান্ড বিটলস গান রেকর্ডিং করত।

নিজের ইউটিউব চ্যানেলে বলিউডের ‘ঘারোন্দা’ (১৯৭৭) চলচ্চিত্রে জয়দেবের সুরে ‘তুমহে হো না হো’ ও ‘দো দিওয়ানে শেহার মে’ (সহশিল্পী: ভূপিন্দর সিং) গান দুইটি আপলোড করেছেন তিনি। এছাড়া রয়েছে একটি করে বাংলা দেশাত্মবোধক ও ফোকগান এবং পাঞ্জাবি গান।

বলে রাখা ভাল, ১৯৫২ সালের ১৭ নভেম্বর সিলেটে জন্ম নেন রুনা লায়লা। ছয় দশকের সঙ্গীত ক্যারিয়ারে তার প্রাপ্তি অসামান্য। কালজয়ী অসংখ্য গান উপহার দিয়েছেন তিনি। গেয়েছে বলিউডের খ্যাতিমান সুরকার ও কণ্ঠশিল্পীদের সাথেও। পেয়েছেন গোল্ড ডিস্ক অ্যাওয়ার্ড। গানের বাইরে চলচ্চিত্রে অভিনয়ও করেছেন রুনা লায়লা। হয়েছেন মডেলও। এছাড়াও সঙ্গীতের বিভিন্ন রিয়েলিটি শোর বিচারকের আসনে বসেছেন তিনি। রুনা লায়লা মোট আট বার জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন।

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×