আদানির থেকে বিদ্যুৎ কেনা অর্ধেকে নামাল বাংলাদেশ
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০২:৪৪ পিএম, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪
আদানি গ্রুপের কাছ থেকে বিদ্যুৎ ক্রয় অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে বাংলাদেশ। আদানি গ্রুপের কাছ থেকে বিদ্যুৎ ক্রয় বাবদ বিপুল পরিমাণ বকেয়া অর্থ জমেছে বাংলাদেশের। এ কারণে গেল ৩১ অক্টোবর থেকেই বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছিল আদানি গ্রুপ। ধারণা করা হচ্ছে, বকেয়া অর্থের বোঝা আরও না বাড়ানোর জন্যই বিদ্যুৎ ক্রয় অর্ধেকে নামিয়ে আনার পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। সংবাদ রয়টার্সের।
তবে, বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিবি) জানিয়েছে, আবহাওয়াগত কারণে বর্তমানে বিদ্যুতের চাহিদা কমে যাওয়ার কারণেই বিদ্যুৎ ক্রয় কমানো হয়েছে।
বিআরডিবির চেয়ারপারসন মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘আদানি গ্রুপ প্রথম যখন বিদ্যুতের সরবরাহ কমিয়ে দিল, আমাদের কাছে সেটি ছিল পুরোপুরি অপ্রত্যাশিত। আমরা তাতে ক্ষুব্ধও হয়েছিলাম। তবে, এখন যেহেতু শীতের মৌসুম, আবহাওয়াগত কারণেই এ সময় বাংলাদেশে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের চাহিদা খানিকটা হ্রাস পায়। তাই, আমরাও বিদ্যুৎ ক্রয়ের পরিমাণ কমিয়েছি।’
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে ২০১৭ সালে আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় বিষয়ক চুক্তি করেছিল বাংলাদেশ। ২৫ বছর মেয়াদি সেই চুক্তির শর্ত মেনে ঝাড়খণ্ডের গোড্ডায় ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম একটি তাপভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে আদানি গ্রুপ। শুধু বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার জন্য এই কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়।
আদানি ছাড়াও ভারতের আরও কয়েকটি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান থেকে বিদ্যুৎ কেনে বাংলাদেশ। সেসব প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ নয় দশমিক ৫৭ টাকা দরে কেনা হয়। অন্য দিকে, আদানি গ্রুপের কাছ থেকে যে বিদ্যুৎ কেনা হয়, তার প্রতি ইউনিটের মূল্য ১৪ দশমিক ৮৭ টাকা।
আদানি গ্রুপের কাছ থেকে ক্রয়কৃত বিদ্যুৎ আবার বাংলাদেশে আট দশমিক ৯৫ টাকায় বিক্রি করে বাংলাদেশ। এভাবে প্রতি বছর বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি বাবদ বাংলাদেশের সরকারকে ব্যয় করতে হয় তিন হাজার ২০০ কোটি টাকা।
আদানি গ্রুপের এক মুখপাত্র জানান, বাংলাদেশের সরকারের কাছে এই প্রতিষ্ঠানটির মোট পাওনা ছিল ৯০ কোটি ডলার। গেল ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর পাওনা অর্থের কিছু অংশ পেয়েছে আদানি গ্রুপ। তবে, বড় অংশটি এখনও বকেয়া রয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা বিআরডিবি এবং বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। তারা বলেছে, শিগগিরই বকেয়া অর্থ শোধ করা হবে।’
অন্য দিকে, বিআরডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘পাওনা অর্থের মধ্যে ১৮ কোটি ২০ লাখ ডলার ইতোমধ্যে শোধ করা হয়েছে। বাকি অর্থও শিগগিরই মিটিয়ে দেয়া হবে।’