পানি, ভূমি, খাদ্য ও পরিবেশের আইনী স্বীকৃতি দিতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান বাংলাদেশের
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৭:৩৪ পিএম, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪
পানি, ভূমি, খাদ্য ও পরিবেশের আইনি স্বীকৃতির জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও কৃষি রাসায়নিকের সীমান্ত অতিক্রমের নিয়ন্ত্রণে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় যথাযথ নজরদারি প্রয়োগের ওপরও গুরুত্বারোপ করেছেন।
রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘আর্থিক সহায়তা, প্রযুক্তি স্থানান্তর ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে জনগণের সমর্থন জরুরি। তবে, এই সহায়তা পানি নির্ভর শিল্প বা অস্থিতিশীল কৃষি পদ্ধতির জন্য বন্ধ করতে হবে।’
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে চলমান ইউনাইটেড নেশনস কনভেনশন টু কমব্যাট ডেসার্টিফিকেশনের কপ১৬’-এর ফরমাল স্টেটমেন্ট অধিবেশনে বাংলাদেশের পক্ষে ন্যাশনাল স্টেটমেন্ট দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজওয়ানা হাসান আরো বলেন, ‘নিম্ন অববাহিকা অঞ্চলের দেশ হিসেবে বাংলাদেশ নদী অববাহিকা ব্যবস্থাপনায় আঞ্চলিক সহযোগিতা চায়।’
তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, ইউএনসিসিডি কপ১৬ ভূমি অবক্ষয়মুক্ত বিশ্বের লক্ষ্যে বৈশ্বিক ও জাতীয় পর্যায়ে সঠিক রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি নির্ধারণে সহায়ক হবে।’
বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ তুলে ধরে তিনি উল্লেখ করেন, মাত্র ১৪ দশমিক আট মিলিয়ন হেক্টর ভূমি দিয়ে ১৭০ মিলিয়ন মানুষের খাদ্য নিশ্চিত করতে হয়, যা বিশ্বের অন্যতম নিম্ন ভূমি প্রাপ্যতার দেশ।
রিজওয়ানা হাসান সতর্ক করেন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে ২০৫০ সালের মধ্যে দেশের এক-তৃতীয়াংশ ভূমি হারিয়ে যেতে পারে, যা খাদ্য নিরাপত্তা আরও সংকটে ফেলবে। অতিরিক্ত ভূগর্ভস্থ পানি ও কৃষি রাসায়নিক ব্যবহারে ভূমি দূষণ বেড়েছে।
তিনি বলেন, ‘সক্রিয় ডেল্টা অঞ্চল হিসেবে বাংলাদেশ প্রতি বছর নদী ভাঙনের কারণে দশ লাখের বেশি মানুষ গৃহহীন হয়। দেশে প্রতি বছর দুই দশমিক ছয় শতাংশ বনভূমি হারায়, যা বৈশ্বিক গড়ের দ্বিগুণ। উপকূলীয় এলাকায় লবণাক্ততা গত তিন দশকে বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। তাছাড়া, ৫৭টি আন্তঃসীমান্ত নদীতে পানির প্রবাহ কমে যাওয়া ও নদীর গতিপথ পরিবর্তনের ফলে স্থায়ী জলাবদ্ধতা বেড়েছে।’
পরিবেশ উপদেষ্টা বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি পরিবেশ ও জলবায়ু ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় যৌথভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘অভিযোজন সীমাবদ্ধতার কথা বিবেচনা করে পৃথিবীকে রক্ষায় ও তাপমাত্রা দেড় ডিগ্রির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে উচ্চাভিলাষী পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।
পরিবেশ সচিব ফারহিনা আহমেদও অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন।