বাংলাদেশ সীমান্তে অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করল বিএসএফ
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৭:৩১ পিএম, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪
বাংলাদেশে চলমান পরিস্থিতিতে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। বাংলাদেশে সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতা বৃদ্ধির প্রতিক্রিয়ায় সীমান্তে বিএসএফের অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির এই সীমান্তরক্ষী বাহিনী। সংবাদ এএনআইয়ের।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের অফিসে হামলার ঘটনার পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। তিন দিক থেকে বাংলাদেশ বেষ্টিত ত্রিপুরার সঙ্গে ভৌগোলিক নৈকট্য ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কের কারণে রাজ্যটিতে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ সীমান্তে টহল ও নজরদারি জোরদার করেছে।
কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে, সেজন্য বিএসএফের সদস্যদের সীমান্তে উচ্চ সতর্কাবস্থায় থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিএসএফের কয়েকজন কনস্টেবলের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা বাংলাদেশ সীমান্তে অতিরিক্ত নিরাপত্তা জোরদারের ঘটনায় নিজেদের আত্মবিশ্বাসের কথা তুলে ধরেছেন।
বিএসএফের কনস্টেবল রিয়াঙ্কা মুখার্জি বলেন, ‘বিএসএফে কাজ করার সময় তিনি নিজেকে ক্ষমতাবান ও আত্মবিশ্বাসী হিসেবে মনে করেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি কনস্টেবল রিয়াঙ্কা মুখার্জি। গেল চার বছর ধরে বিএসএফে কাজ করছি। দায়িত্ব পালন করার সময় আমরা নিজেদের ক্ষমতাশালী বোধ করি। আমাদের সমাজের সব নারীকে এটা বোঝানোর জন্য আত্মবিশ্বাসী করে তোলে যে, আমরা নিজেদের দায়িত্ব নিতে পারি।’
মুকুরিয়া ইলা নামের বিএসএফের আরেক কনস্টেবল বলেন, ‘তিনি গত তিন বছর ধরে আগরতলায় কর্মরত রয়েছেন। আমি গুজরাটের বাসিন্দা। আমি বর্তমানে বিএসএফের ৮১তম ব্যাটালিয়নের ইকো কমিউনিকেশন চৌকিতে কর্তব্যরত রয়েছি। আমরা গত তিন বছর ধরে এখানে অবস্থান ও সীমান্তে দায়িত্ব পালন করছি।’
তিনি বলেন, ‘আমার এই ধরনের দায়িত্ব বা কাজ করা উচিত নয় বলে পরিবার থেকে বলেছে। কিন্তু, সশস্ত্র বাহিনীতে চাকরি করা আমার সব সময়ই স্বপ্ন ছিল। বিএসএফে আমাদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা রয়েছে। আমরা কোন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি না। প্রয়োজনীয় সব সুযোগ-সুবিধা আমাদের দেওয়া হয়। বিএসএফের একজন সদস্য হতে পেরে আমি গর্বিত ও আনন্দিত।’
বিএসএফের এই কনস্টেবল বলেন, ‘আমি সব নারীকে বিএসএফে যোগ দেওয়ার জন্য উৎসাহিত করতে চাই। কারণ, পুরুষরা যদি এই দায়িত্ব পালন করতে পারেন, তাহলে আমরা নারীরাও তা করতে পারব।’
বিএসএফের সেকেন্ড-ইন কমান্ড রাজেশ কুমার লাঙ্গেহ বলেন, ‘ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত সর্বোচ্চ স্তরের সতর্কতা বজায় রাখতে বিএসএফের অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের সীমান্ত অধিক সুরক্ষিত রাখতে সতর্কতা বাড়িয়েছে বিএসএফ। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর অতিরিক্ত কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে।’
ভারতীয় এই বাহিনী সর্বোচ্চ স্তরের সতর্কতা বজায় রেখে দিনের ২৪ ঘণ্টা এবং বছরের ৩৬৫ দিনই দায়িত্ব পালন করে বলে জানান তিনি।
বিএসএফের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘বিএসএফের প্রত্যেক সদস্যই নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। তারা যে কোন ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছেন। বিএসএফ সামলাতে পারেনি সীমান্তে এমন পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত তৈরি হয়নি।’
রাজেশ কুমার লাঙ্গেহ বলেন, ‘আমরা সর্বদা আমাদের দায়িত্ব কার্যকরভাবে পালন করার চেষ্টা করছি। আমাদের দায়িত্ব অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে যাতে পালন করা হয়, সেটা আমরা নিশ্চিত করছি।’