বিদ্রোহীদের তোপে পালিয়ে যাওয়া কে এই বাশার আল-আসাদ?
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৪:৪২ পিএম, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪
বিদ্রোহীদের হাত ধরে নতুন যুগ শুরু হয়েছে সিরিয়ায়। তারা রোববার (৮ ডিসেম্বর) সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। সেই সাথে বলা হয়েছে, ‘দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ দামেস্ক ছেড়ে পালিয়েছেন অজ্ঞাত স্থানে। এর আগে, মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে ধাপে ধাপে দেশের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলো দখল করে নেয় বিদ্রোহীরা।
টানা পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে সিরিয়ার ক্ষমতায় আছে বাশার আল-আসাদ পরিবার। তার বাবা হাফেজ আল-আসাদ ১৯৭১ সাল থেকে সিরিয়া শাসন করেছেন। পিতার মৃত্যুর পর ২০০০ সালে ক্ষমতায় বসেন ছেলে বাশার আল-আসাদ। টানা দুই যুগ (২৪ বছর) ধরে তিনি ছিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট।
১৯৬৫ সালে দামেস্কে জন্ম নেন আসাদ। রাজধানীর মেডিকেল স্কুল থেকে তিনি স্নাতক হন এবং চক্ষুবিদ্যায় বিশেষ জ্ঞান লাভের জন্য লন্ডনে লেখাপড়া করেন। কিন্তু, তার ভাইয়ের মৃত্যুর পর অধ্যয়নরত অবস্থায় সিরিয়ায় ফিরে আসেন তিনি।
আসাদের বাবার মৃত্যুর পর নিয়মানুযায়ী তার বড় ভাই বাসেল আল-আসাদ ক্ষমতায় বসবেন এটাই ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু, আচানক গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান বাসেল। এরপর সিরিয়ার রাজনৈতিক পট বদলে যায়। বাবার নির্দেশে লন্ডন থেকে ফিরে আসেন আসাদ।
২০০০ সালে হাফেজ আল-আসাদের মৃত্যু হলে মাত্র ৩৪ বছর বয়সে সিরিয়ার ক্ষমতায় বসেন আসাদ।
২০১১ সালে আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগে বিক্ষোভ শুরু হয়। গণতন্ত্রের জন্য রাস্তায় নামেন সিরিয়াবাসী। কিন্তু, তখন থেকেই তাদের ওপর দমন-পীড়ন শুরু করে আসাদ বাহিনী। এক পর্যায়ে বাশারের পদত্যাগের দাবিতেও শুরু হয় বিক্ষোভ। তাতে আরও কঠোর হাতে দমন শুরু করে আসাদ সরকার। এতে সে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে।
এক সময় বাশার সরকারের বিরোধীরা তার বিরুদ্ধে হাতে অস্ত্র তুলে নেয়। দেশজুড়ে বেশ কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। বিদ্রোহীরা দখল করে নেয় সিরিয়ার বেশিরভাগ এলাকা। এরপর দেশটিতে শুরু হয় রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধ। টানা ১৩ বছর ধরে চলে ওই যুদ্ধ। এতে মারা যায় দেশটির কয়েক লাখ মানুষ; উদ্ধাস্তু হন আরও কয়েক লাখ।
পলাতক প্রেসিডেন্ট আসাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সময় সিরিয়ার অভ্যন্তরে রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার, কুর্দিদের দমন ও গুমসহ অসংখ্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে।