হাইতিতে গ্যাংয়ের হামলায় দুইদিনে নিহত ১৮০
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১০:৪৫ পিএম, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪
হাইতির রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের সিটে সোলেইল বস্তিতে চালানো গ্যাংয়ের হামলায় দুইদিনে কমপক্ষে ১৮০ জন নিহত হয়েছেন। এক গ্যাং নেতা তার সন্তানকে মন্ত্রবানে অসুস্থ করার অভিযোগ তুলেন বস্তিটির বৃদ্ধদের বিরুদ্ধে, এরপরই গ্যাংয়ের সদস্যরা বস্তিটির বৃদ্ধদের ওপর নৃশংস হামলা চালায়। এতে ওই হতাহতের ঘটনা ঘটে। খবর সিএনএনের।
দেশটির মানবাধিকার সংস্থা ও জাতিসংঘ জানিয়েছে, নিহতদের অধিকাংশেরই বয়স ৬০ বছর বা তার বেশি এবং বেশিরভাগ লাশই পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে এ নিয়ে দেশটিতে চলতি বছরে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে।
‘মিকানো’ নামে পরিচিত ওয়ার্ফ জেরেমি নামক গ্যাংয়ের নেতা মনেল ফিলিপ্স তার সন্তানের অসুস্থতার পর এই হত্যাযজ্ঞের আদেশ দেন। হাইতির জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, মিকানোর মতে তিনি একজন ভুডু পুরোহিতের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়েছিলেন। যিনি ওই এলাকার বৃদ্ধদের বিরুদ্ধে মন্ত্রবলে তার শিশুকে ক্ষতি করার অভিযোগ তুলেছিলেন। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওয়ার্ফ জেরেমি গ্যাংয়ের সদস্যরা শুক্রবার কমপক্ষে ৬০ জন এবং শনিবার ৫০ জনকে কুপিয়ে হত্যা করে।
সিটি সোলেইল মূলত পোর্ট-অ-প্রিন্সের বন্দরনগরের একটি ঘনবসতিপূর্ণ বস্তি। যা হাইতির সবচেয়ে দরিদ্র এবং সহিংস এলাকাগুলোর মধ্যে একটি। সেখানে গ্যাং গ্রুপের কঠোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। তাদের মধ্যে মোবাইল ফোন ব্যবহার সীমিত করা হয়েছে। যা স্থানীয় বাসিন্দাদের হত্যাকাণ্ডের তথ্য শেয়ার করাটা কঠিন করে তুলেছে।
ওয়ার্ফ জেরেমি গ্যাংয়ের প্রধান ফিলিপ্স ২০২২ সালে প্রতিবেশী ডোমিনিকান রিপাবলিকে নিষিদ্ধ হন। সম্প্রতি তার এক সন্তান অসুস্থ হয় এবং শনিবার দুপুরে তার মৃত্যু হয়।
জাতিসংঘ অক্টোবর মাসে অনুমান করেছিল যে, ফিলিপ্সের গ্যাং-এ প্রায় ৩০০ সদস্য ছিল এবং তারা ফোর্ট ডিমাঞ্চে এবং লা সালিনে এলাকায়ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতো।
২০১৮ সালের নভেম্বরে এই লা সালিনেই ৭১ জনেরও বেশি বেসামরিক নাগরিককে হত্যার ঘটনা ঘটে এবং শত শত বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। লা সালিন হত্যাকাণ্ড পরিকল্পনা করার অভিযোগসহ আরও অনেক অপরাধে পোর্ট-অ-প্রিন্সের গ্যাংগুলোর জোট ভিভ আনসামের মুখপাত্র জিমি ‘বারবিকিউ’ চেরিজিয়েরকে জাতিসংঘ নিষিদ্ধ করেছিল।
তিনি তখন একজন পুলিশ অফিসার ছিলেন। গত অক্টোবরেও হাইতির আর্টিবোনিটে অঞ্চলের পন্ট-সন্ডে শহরে গ্যাংয়ের হামলায় কমপক্ষে ১১৫ জন নিহত হয়। গ্রান গ্রিফ গ্যাংয়ের দাবি, স্থানীয় বাসিন্দারা তাদেরকে সড়কে টোল আদায়ে বাধা দেওয়ায় এটি ছিল তাদের প্রতিশোধমূলক হামলা।
হাইতির সরকার মূলত রাজনৈতিক বিবাদে আচ্ছন্ন। যে কারণে রাজধানী এবং এর আশপাশে সশস্ত্র গ্যাংগুলোর তৎপরতা নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। হাইতির কর্তৃপক্ষ ২০২২ সালে স্থানীয় পুলিশের জন্য আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সহায়তা চেয়েছিল। তবে জাতিসংঘ ২০২৩ সালে হাইতির জন্য যে মিশনটি অনুমোদন করেছে, সেটি আংশিকভাবে মোতায়েন হয়েছে এবং গুরুতরভাবে সংখ্যায় অপ্রতুল।