সিরিয়ার গুরুত্বপূর্ণ সিটি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘বন্ধুদের’ তাড়িয়ে দিল তুরস্কের প্রক্সিরা
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৪:০২ পিএম, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪
মানবিজ। তুরস্কের সীমান্তবর্তী সিরিয়ার গুরুত্বপূর্ণ সিটি। এত দিন শহরটি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থিত কুর্দি ওয়াইপিজি সশস্ত্র গোষ্ঠীর কৌশলগত কেন্দ্র ছিল। সিরিয়ায় বাশার আল আসাদের পতনের পর এবার এই শহরটি থেকে কুর্দি সশস্ত্র গোষ্ঠীকে তাড়িয়ে দিয়েছে তুরস্ক সমর্থিত সিরিয়ান ন্যাশনাল আর্মি (এসএনএ)। সংবাদ আল-জাজিরার।
তুর্কি সীমান্ত থেকে শহরটি মাত্র ১৯ মাইল দক্ষিণে অবস্থিত। ইউফ্রেটিস নদীর পশ্চিমের এই অঞ্চলে ওয়াইপিজির সবচেয়ে বড় ঘাঁটি ছিল।
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ওয়াইপিজির দখলে চলে যাওয়া অঞ্চলগুলো পুনর্দখলের জন্য ‘অপারেশন ডন অফ ফ্রিডম’ পরিচালনা করছে এসএনএ। এই অভিযান শুরুর কয়েক দিনের মধ্যেই পতন ঘটল মানবিজের।
সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেসের (এসডিএফ) নেতৃত্ব দেয়া ওয়াইপিজি দেশটির উত্তর ও পূর্ব অঞ্চরের বিস্তীর্ণ এলাকা শাসন করে। যেখানে সিরিয়ার গুরুত্বপূর্ণ তেল ক্ষেত্রগুলো রয়েছে। ওয়াইপিজির দখলে থাকা অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৯০০ সেনা রয়েছে।
২০১৬ সালে আইএসআইএলের (আইএসআইএস) বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সময় মার্কিন সমর্থনে মানবিজ দখল করে নেয় কুর্দি বাহিনী। যদিও ওই সময় যুক্তরাষ্ট্র ও পরে রাশিয়া তুরস্ককে আশ্বস্ত করেছিল যে, আইএসকে পরাজিত করার পরে সেখান থেকে যোদ্ধাদের প্রত্যাহার করবে ওয়াইপিজি। কিন্তু, তুরস্ক বার বার বলে আসছে, এই প্রতিশ্রুতি কখনও রাখা হয়নি।
তুরস্ক ওয়াইপিজিকে পিকেকে-এর সিরিয়ান অংশ হিসেবে বিবেচনা করে। পিকেকে শুধু তুরস্কেই নয়, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নেও সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে স্বীকৃত। তুরস্ক উত্তর সিরিয়ায় স্বায়ত্তশাসনের জন্য ওয়াইপিজির চাপকে তার আঞ্চলিক অখণ্ডতার জন্য হুমকি এবং তুরস্কের অভ্যন্তরে কুর্দি বিচ্ছিন্নতাবাদের জন্য একটি সম্ভাব্য অনুঘটক হিসাবেও দেখে থাকে।
এখন, মানবিজ দখলে নেয়া তুর্কি-সমর্থিত এসএনএ-র জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এরই মধ্যে তারা কুর্দি বাহিনী নিয়ন্ত্রিত আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ শহর রাক্কাকে পরবর্তী লক্ষ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে।
সম্প্রতি বিদ্রোহীদের হাতে একের পর এক শহরের পতন ঘটলে দেশ ছেড়ে পালান স্বৈরশাসক বাশার আল আসাদ। সিরিয়ায় সরকারের পতন হলেও দেশটিতে সক্রিয় রয়েছে বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী। হায়াত তাহরির আল-শামের পাশাপাশি বর্তমানে দেশটিতে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে সিরিয়ান ন্যাশনাল আর্মি, সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্স বা এসডিএফসহ আরও বেশ কয়েকটি সশস্ত্র সংগঠন।
২০১১ সালে জাবহাত আল-নুসরা। এরপরেই আসে সিরিয়ান ন্যাশনাল আর্মির নাম। বিভিন্ন ছোট গোষ্ঠীর সমন্বয়ে ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় সিরিয়ান ন্যাশনাল আর্মি। এই বাহিনীটির সদস্যরা তুরস্কের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখলেও, তাদের মধ্যে মতাদর্শিক কিছু ভিন্নতাও রয়েছে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘ক্ষমতার ভাগাভাগি নিয়ে যে কোন মুহূর্তে এই গোষ্ঠীগুলোর মধ্যেও ছড়িয়ে পড়তে পারে সংঘাত।’