দামেস্কের কাছাকাছি পৌঁছে গেল ইসরায়েলের সেনারা, চলছে বিমান হামলা
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৫:৩২ পিএম, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪
বিদ্রোহীদের তড়িৎগতির আক্রমণের মুখে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ নেতৃত্বাধীন সিরিয়ার সরকারের পতনের পর দেশটিতে বিমান হামলা বাড়িয়েছে ইসরায়েল। এর অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সিরিয়ার সেনাবাহিনীর একাধিক ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের বাহিনী। এ দিকে, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর সামরিক ট্যাংক সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে বলেও সিরিয়ার একাধিক সূত্র জানিয়েছে। সংবাদ রয়টার্সের।
আসাদের পতনের পর সিরিয়ার সেনাবাহিনীর অস্ত্র যাতে অন্য কোন শত্রুর হাতে না যায়, সেই লক্ষ্যে ঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েল। তবে, সিরিয়ার সাথে সীমান্ত এলাকার নির্ধারিত বাফার জোনের বাইরে সিরীয় ভূখণ্ডে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর প্রবেশের খবর অস্বীকার করেছে তেল আবিব।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) বাশার আল-আসাদের পতনের পর মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করতে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) দামেস্কে প্রথম বারের মত সরকারি-বেসরকারি সব ব্যাংক পুনরায় খুলে দেওয়া হয়েছে।
দামেস্কের রাস্তাঘাট পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করছেন কর্মীরা। কিছু রাস্তায় যানবাহনের চলাচল বেড়েছে। দোকান পাট পুনরায় খুলতে শুরু করেছে। নির্মাণ শ্রমিকরা শহরের কেন্দ্রস্থলের গোলচত্বর মেরামত করছেন।
বিদ্রোহীদের আন্দোলনে টিকতে না পেরে রোববার (৮ ডিসেম্বর) পরিবারসহ রাশিয়া পালিয়ে গেছেন বাশার আল-আসাদ। এর মধ্য দিয়ে সিরিয়ায় আল-আসাদ পরিবারের পাঁচ দশকের বেশি সময়ের শাসনের অবসান ঘটেছে। আসাদের পতনের পরপরই দীর্ঘ ৫০ বছর পর প্রথম বারের মত সিরীয় সীমান্তের বাফার জোন এলাকায় ঢুকেছে ইসরায়েলের সৈন্যরা। সীমান্তের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য ইসরায়েলের সৈন্যরা সাময়িক সময়ের জন্য সেখানে ঢুকেছেন বলে দাবি করেছে ইসরায়েল।
যদিও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, ‘আসাদের পতনে ভেঙে পড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার সুযোগ নিয়ে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) দামেস্কের কাছাকাছি এলাকায় পৌঁছে গেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) অন্তত তিনটি নিরাপত্তা বলেছে, ‘ইসরায়েলের সৈন্যরা বাফার জোন অতিক্রম করেছে।’
সিরীয় একটি সূত্র বলেছে, ‘ইসরায়েলের সৈন্যরা ইতোমধ্যে কাতানা শহরে পৌঁছেছে। এই শহরটি বাফার জোন থেকে কয়েক কিলোমিটার পূর্বে ও দামেস্ক বিমানবন্দর থেকে সামান্য দূরে অবস্থিত।’
যদিও ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র বলেছেন, ‘সেনারা ডিমিলিটারাইজড জোনের (ডিএসজেড) বাইরে যায়নি।’
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘দামেস্ক অভিমুখে ইসরায়েলের ট্যাংকের এগিয়ে যাওয়ার বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সব প্রতিবেদন মিথ্যা। আইডিএফের সৈন্যরা বাফার জোনে অবস্থান করছে।’
ইসরায়েল বলেছে, ‘তারা সিরিয়ার নতুন কর্তৃপক্ষের সাথে সংঘাত চায় না। তবে, সিরিয়ার সামরিক অস্ত্র যাতে শত্রুর হাতে চলে না যায়, তা নিশ্চিত করতে গত তিন দিন ধরে সিরিয়াজুড়ে সামরিক অবস্থান লক্ষ্য করে বিমান হামলা করছে ইসরায়েলি বাহিনী।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাতে সিরিয়ায় সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে দুই শতাধিক বিমান হামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল।
সিরিয়ায় ইসরায়েলের বাহিনীর অনুপ্রবেশ ও হামলার নিন্দা জানিয়েছে মিসর, কাতার ও সৌদি আরব। সৌদি আরব বলেছে, ‘ইসরায়েলের এমন পদক্ষেপ সিরিয়ায় নিরাপত্তা ফেরানোর সম্ভাবনাকে নষ্ট করবে।’