দফায় দফায় সংঘর্ষে উত্তাল ইসলামাবাদ, নিরাপত্তা বাহিনীর চার সদস্য নিহত
কারাবন্দী পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ডাকা ‘চূড়ান্ত বিক্ষোভে’ কার্যত অচল হয়ে পড়েছে রাজধানী ইসলামাবাদ। ইমরান সমর্থকদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর দফায় দফায় সংঘর্ষে মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) অন্তত পাঁচজন নিহত হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে। নিহতদের মধ্যে চারজনই নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। সংবাদ জিও নিউজের। শ্রীনগর মহাসড়কে বিক্ষোভকারীরা রেঞ্জার্স কর্মীদের ওপর গাড়ি উঠিয়ে দিলে পাঁচজন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে চারজন প্যারাট্রুপার ও একজন বেসামরিক ব্যক্তি রয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও পাঁচ প্যারাট্রুপার ও দুই পুলিশ সদস্য। এ ঘটনার পর ইসলামাবাদে সংবিধানের ২৪৫ ধারা সক্রিয় করে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি অশান্ত করার যে কোন চেষ্টা ও জঙ্গি তৎপরতা কঠোর হাতে দমন করার নির্দেশ দিয়েছে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, পাঁচটি লাশ এরই মধ্যে স্থানীয় পিআইএমএস হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এ দিকে, ইসলামাবাদের ডি চকে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। তাদের জমায়েত ঠেকাতে ইসলামাবাদে ১৪৪ ধারা জারি করেছে শাহবাজ শরিফের সরকার। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে রাজধানীতে প্রবেশের সব পথ। নিষিদ্ধ করা হয়েছে সকল সভা-সমাবেশ এবং ‘দেখামাত্র গুলি’ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সোমবার (২৫ নভেম্বর) পাঞ্জাব প্রদেশ থেকে পিটিআইয়ের চার হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে আটক করেছে পাঞ্জাব পুলিশ। পাঞ্জাব প্রদেশের পূর্বাঞ্চলের নিরাপত্তা কর্মকর্তা শাহিদ নওয়াজ জানান, আটকদের মধ্যে পাঁচজন পার্লামেন্ট সদস্যও রয়েছেন। এ দিকে, মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সকালে ইসলামাবাদ অভিমুখে গাড়ি বহর নিয়ে রওনা দিয়েছেন ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবি এবং খাইবার পাখতুনখাওয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্দাপুর। ইসলামাবাদের ডি চক এলাকায় সমাবেশ করতে যাচ্ছেন তারা। ইমরান খানের মুক্তি ও সরকারের পদত্যাগের দাবিতে মাসের শুরুতে কারাগার থেকে সমাবেশের ডাক দেন ইমরান খান। একে তিনি ‘চূড়ান্ত ডাক’ বলে অভিহিত করেছেন। এই ডাকে সাড়া দিয়ে সোমবার (২৫ নভেম্বর) থেকে ইসলামাবাদ অভিমুখে যাত্রা শুরু করে ইমরানের সমর্থকেরা। সমর্থকদের দাবি, ইমরান খানসহ পিটিআই দলের যে নেতারা বন্দি আছেন, তাদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। ২০২২ সালে অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে ইমরান খান একাধিক মামলায় অভিযুক্ত হন। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদসহ বেশ কিছু গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে, ইমরান খানের দল এসব অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করে আসছে। ২০২৩ সালের মে মাসে ইমরান খানকে গ্রেফতার করা হয়। এর পর এক বছরের বেশি সময় ধরে কারাগারে রয়েছেন ইমরান। তার বিরুদ্ধে ১৫০টির বেশি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। পিটিআইয়ের দাবি, মামলাগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। দলের নেতাকে গ্রেফতারের প্রতিক্রিয়ায় এর আগেও দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ করেছে পিটিআইয়ের সমর্থকেরা।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার নিয়ে যা বলল ভারত
বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতন জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও ইসকনের নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিকাল সাড়ে চারটার দিকে চট্টগ্রামের পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে ঢাকার বিমানবন্দর এলাকা থেকে হেফাজতে নেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। পরে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইসকনের এই নেতাকে নিয়ে বলেছে, “শ্রী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার ও তাকে জামিন না দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। যিনি বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতন জাগরণ জোটের মুখপাত্র। বাংলাদেশে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুর ওপর উগ্রবাদীদের একাধিক হামলার পর এই ঘটনা ঘটল। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের বাড়ি, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, চুরি, ভাঙচুর ও মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটেছে।’ প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ গেল ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে সমাবেশ করে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস এই মঞ্চেরও মুখপাত্র। ওই সমাবেশের পরপরই চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ ওঠে। এরপর গেল ৩০ অক্টোবর চিন্ময় দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিল। চট্টগ্রাম সিটির কোতোয়ালি থানায় সেই মামলা করেন ফিরোজ খান নামের ব্যক্তি। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননা করার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে এই মামলা করা হয়। এই ঘটনায় আগেই দুইজনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের নাম রাজেশ চৌধুরী ও হৃদয় দাস।
এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র মতোয়েন নিয়ে রাশিয়ার পাল্টা হুমকি
এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র দেখা গেলে, মাঝারি পাল্লার ও স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করতে পারে রাশিয়াও। সোমবার (২৫ নভেম্বর) রাশিয়ার পররাষ্ট্র উপমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভের বরাত দিয়ে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সংবাদ সিনহুয়ার। রাশিয়া এশিয়ায় মধ্যমপাল্লার ও স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের কথা বিবেচনা করছে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন। সের্গেই রিয়াকভ বলেন, ‘পৃথিবীর যে কোন অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সিস্টেমের উপস্থিতি আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণ করবে। এর মধ্যে সামরিক ও সামরিক-প্রযুক্তিগত প্রতিক্রিয়া সংগঠিত করার বিষয়ও থাকবে।’ তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের যেসব ইউরোপীয় ঘাঁটিগুলোতে পারমাণবিক অস্ত্রও মোতায়েন করা হয়েছে, সেগুলোও রাশিয়ার জন্য সম্ভাব্য লক্ষ্য হতে পারে। ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফ সোমবার (২৫ নভেম্বর) ঘোষণা করেছে, ইউক্রেনীয় বাহিনী পশ্চিম রাশিয়ার তিনটি অঞ্চলে ‘গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায়’ রাতভর ধারাবাহিক আক্রমণ চালিয়েছে। জেনারেল স্টাফ ফেসবুকে বিবৃতিতে জানান, কালুগা অঞ্চলের একটি তেলের ডিপোতে আক্রমণ করা হয়েছে। তিনি জানান, ব্রায়ানস্ক ও কুরস্ক অঞ্চলের অন্যান্য লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণের ক্ষতির পরিমাণ এখনো ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ইন্দোনেশিয়ায় ভয়াবহ বন্যা-ভূমিধস, নিহত ১৬ নিখোঁজ ৭
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপে আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া নিখোঁজ রয়েছে আরো সাতজন। সোমবার (২৬ নভেম্বর) দেশটির জাতীয় দুর্যোগ সংস্থা এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। উত্তর সুমাত্রা প্রদেশের চারটি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সেনা ও উদ্ধার কর্মকর্তাদের মোতায়েন করা হয়েছে। বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কারো জেলা। সেখানে শনিবার একটি রিসোর্ট এলাকায় আকস্মিক বন্যায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে এবং আরো পাঁচজন নিখোঁজ রয়েছে। এছাড়া দেলি সেরডাং, দক্ষিণ তাপানুলি এবং পেডাং লাওয়াস জেলায় আরো ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। বন্যায় বাড়ি-ঘর, মসজিদ এবং বিভিন্ন স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জাতীয় দুর্যোগ প্রশমন সংস্থার (বিএনপিবি) মুখপাত্র আবদুল মুহারি জানিয়েছেন, এর আগেও দেলি সেরডাং এবং কারো জেলায় বন্যা ও ভূমিধস আঘাত হেনেছে। চলতি বছর ওই দুই জেলায় এ নিয়ে তৃতীয় বারের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হেনেছে। বর্ষাকালে যেসব এলাকায় বন্যার আশঙ্কা রয়েছে সেগুলো এড়িয়ে চলতে লোকজনকে সতর্ক করেছেন তিনি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দেশটিতে নানা ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা যাচ্ছে। গত মে মাসে পশ্চিম সুমাত্রার মাউন্ট মারাপির অগ্ন্যুৎপাত থেকে ছাই, বালি এবং নুড়ির মিশ্রণ আবাসিক এলাকায় ভেসে আসার পর আকস্মিক বন্যায় কমপক্ষে ৬৭ জনের মৃত্যু হয়। সূত্র: আল-জাজিরা
লিবিয়ায় ৩ শতাধিক অভিবাসী আটক
উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ায় ৩ শতাধিক অভিবাসী আটক করা হয়েছে। দেশটির মরুভূমি থেকে তাদেরকে আটক করে লিবিয়ান সৈন্যরা। আটককৃত এসব অভিবাসী ভূমধ্যসাগরের তীরে পৌঁছানোর চেষ্টা করছিল। সোমবার (২৫ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। লিবিয়ার সৈন্যরা সোমবার বলেছে, তারা ৩০০ জনেরও বেশি অভিবাসীকে আটক করেছে যারা মরুভূমি অতিক্রম করে ভূমধ্যসাগরের তীরে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। রাজধানী ত্রিপোলিভিত্তিক লিবিয়ার সেনাবাহিনীর অধীনে পরিচালিত বাহিনী ৪৪৪ ব্রিগেডের প্রকাশিত ছবিতে সৈন্যদের দ্বারা বেষ্টিত অবস্থায় নারী, পুরুষ এবং শিশুদের একটি দলকে দেখা গেছে। লিবিয়ার সেনাবাহিনীর অধীনে পরিচালিত এই ব্রিগেড সোমবার তাদের ফেসবুক পেইজে জানায়, অভিবাসীদের একটি দলকে থামিয়ে দিয়েছে মরুভূমির টহল দল এবং তাদের “উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে রেফার করা হবে”। তবে ঠিক কবে তাদের আটক করা হয়েছে তা বলা হয়নি। ২০১১ সালে সামরিক জোট ন্যাটো-সমর্থিত বিদ্রোহের পর থেকে লিবিয়ার দীর্ঘদিনের নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে ক্ষমতাচ্যুত ও হত্যা করা হয়। আর এরপর থেকেই আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের কিছু অংশে যুদ্ধ এবং দারিদ্র্য থেকে পালিয়ে আসা লোকদের অভিবাসনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট পয়েন্ট হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে লিবিয়া। মূলত উন্নত জীবনের আশায় মরুভূমি এবং ভূমধ্যসাগর জুড়ে বিপজ্জনক পথ পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টা করে অভিবাসীরা। কিন্তু সাহারা মরুভূমিসহ বিপজ্জনক এই রুট পাড়ি দিতে গিয়ে অনেকেই মারা যায়।
ট্রাম্পের নির্বাচনের ফল পাল্টানোর মামলা বাতিল
যুক্তরাষ্ট্রের নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী ২০ জানুয়ারি যখন দেশের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন, তখন তার বিরুদ্ধে কোনো ফেডেরাল ফৌজদারি অভিযোগ থাকবে না। ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের ডিসট্রিক্ট জাজ তানিয়া চুটকান ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের নির্বাচনের ফলাফল বেআইনিভাবে পাল্টে দেওয়ার অভিযোগ সোমবার (২৫ নভেম্বর) দ্রুত বাতিল করে দেন। যুক্তরাষ্ট্রের স্পেশাল কাউন্সেল জ্যাক স্মিথ আদালতে পেশ করা এক নথিতে স্বীকার করেন, বিচার মন্ত্রণালয়ের দীর্ঘস্থায়ী রীতি অনুযায়ী তারা ক্ষমতাসীন কোন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনা করে না। আদালতে আরেকটি ফাইলিং-এ স্মিথ একটি অপেক্ষামান আপিল থেকে ট্রাম্পের নাম সরিয়ে ফেলার জন্য আটলান্টার আপিল আদালতকে অনুরোধ করেন। ট্রাম্প ২০২১ সালে তার মেয়াদ শেষে হোয়াইট হাউস থেকে যাওবার পর তিনি শত শত রাষ্ট্রীয় গোপনীয় দলিল ফ্লোরিডায় তার বাসভবনে জড়ো করে রেখেছিলেন বলে যে অভিযোগ আনা হয়েছিল, সেই মামালা ফ্লোরিডার এক বিচারক বাতিল করেছিলেন। স্মিথ সেই মামলা পুনরায় চালু করার লক্ষ্যে আপিল করেছিলেন। প্রসিকিউটর বলেন, দুটি মামলার গুনগত মান এবং ন্যায্যতা নিয়ে তার কোনো সন্দেহ নেই, যদিও তিনি বলছেন অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিতে। ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ স্যোশালে ঘোষণা দেন, আমাকে অন্য যেসব মামলার মুখোমুখি হতে বাধ্য করা হয়েছে, সেগুলুর মত এই মামলাগুলোও বেআইনি, এগুলো কখনোই আদালতে আনা উচিত ছিল না’। তিনি বলেন, করদাতাদের ১০ কোটি ডলার নষ্ট করা হয়েছে ডেমোক্র্যাট পার্টির রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এবং আমার বিরুদ্ধে লড়াই-এর জন্য। এটা ছিল একটি রাজনৈতিক ছিনতাই, এবং আমাদের দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ সময়, তারপরও আমি টিকে আছি শত প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও এবং জিতেছি। নির্বাচনী প্রচারণার সময় ট্রাম্প অঙ্গীকার করেছিলেন, তিনি যদি জয়ী হন, তাহলে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার ‘দু সেকেন্ডের মধ্যেই’ জ্যাক স্মিথকে বরখাস্ত করবেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের আগেই স্মিথ জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট থেকে চলে যাওবার পরিকল্পনা করেছেন।
চিন্ময়কে মুক্তির জন্য বাংলাদেশ সীমান্ত অবরোধের হুমকি দিলো বিজেপি
বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তি দাবি করেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিজেপি। এমনকি তাকে মুক্তি না দিলে বাংলাদেশ সীমান্ত সনাতনীরা অবরোধ করবে বলেও হুমকি দিয়েছেন রাজ্যটির বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। একইসঙ্গে কলকাতার বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভেরও হুমকি দিয়েছেন তিনি। সোমবার (২৫ নভেম্বর) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াল। সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ও চট্টগ্রামের পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকা থেকে হেফাজতে নেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। পরে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে ইসকনের নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সোমবার রাতে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার হিন্দুদের ওপর অত্যাচার করছে। এমনকী বাংলাদেশে হিন্দুদের অস্তিত্ব রক্ষার নেতা চিন্ময়কৃষ্ণ প্রভুকে ইউনূস সরকার গ্রেপ্তার করেছে। শুভেন্দু আরও বলেন, “সোমবার রাতের মধ্যে চিন্ময়কৃষ্ণ প্রভুকে মুক্তি না দিলে আগামীকাল থেকে সীমান্তে সনাতনীরা অবরোধ করবে। ভারত থেকে পশ্চিমবঙ্গ দিয়ে কোনও পরিষেবা বাংলাদেশে ঢুকতে দেব না।” একই সঙ্গে কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনারের অফিসও টানা ঘেরাও অবস্থানের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের এই বিরোধী দলনেতা। শুভেন্দুর কথায়, “বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর যেভাবে ‘দমন-পীড়ন’ শুরু হয়েছে, তাতে আমরা চিন্তিত, ব্যথিত। এই জিনিস আর বরদাস্ত করা হবে না।” উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে সমাবেশ করে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস এই মঞ্চেরও মুখপাত্র। ওই সমাবেশের পরপরই চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ ওঠে এবং এই অভিযোগে চট্টগ্রামে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেন ফিরোজ খান নামে এক ব্যক্তি। সম্প্রতি বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ ও বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোট নামে দুটি সংগঠন ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের’ ব্যানারে কর্মসূচি পালন শুরু করে। নতুন এই জোটের মুখপাত্র করা হয় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে। অন্যদিকে সম্প্রতি চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে বহিষ্কার করেছে ইসকন (আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ) বাংলাদেশ।
ইসরায়েলি হামলায় গাজা-লেবাননে প্রাণহানি ৪৮ হাজার ছাড়িয়ে
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজা ও লেবাননে ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হামলা অব্যাহত আছে। দখলদার দেশটির হামলায় সোমবার লেবাননে আরও ৩১ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। এছাড়া গাজাতেও নতুন করে প্রাণহানির খবর এসেছে। এ নিয়ে গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া হামলায় এই দুই দেশে নিহতের সংখ্যা ৪৮ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। খবর আল জাজিরার। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার লেবাননজুড়ে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ৩১ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেকে। তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর। হামলায় বিধ্বস্ত স্থাপনার নিচে এখনো অনেকে আটকা পড়েছেন। তাদের উদ্ধার তৎপরতা চালানো হচ্ছে। অন্যদিকে গাজা শহরে ইসরায়েলি হামলায় ১১ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ওয়াফা নিউজ এজেন্সির বরাত দিয়ে আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তরাঞ্চলীয় শহরটিতে তিনটি মারাত্মক ইসরায়েলি হামলা হয়েছে। আজ-জারকা এলাকায় হামলায় নারী ও শিশুসহ ছয়জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া গাজা শহরের শাতি শরণার্থী শিবিরে হামলায় তিনজন এবং জেইতুন এলাকায় দুইজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেকে। গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ইসরায়েলে হামলা চালায়। এতে ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত হয়। জিম্মি করা হয় দুই শতাধিক মানুষকে। হামাসের হামলার জবাবে ওইদিন থেকেই অবরুদ্ধ গাজায় নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ২৩ লাখ বাসিন্দার এই উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় সাড়ে ১৩ মাসেরও বেশি সময়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪ হাজার ২৩৫ জনে। আহতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে এক লাখ চার হাজার ৬৩৮ জনে। গাজার পাশাপাশি লেবাননেও ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, গতকাল সোমবার পর্যন্ত লেবাননে হামলায় ৩ হাজার ৭৬৮ জন নিহত হয়েছেন। যাদের অর্ধেকই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন ১৫ হাজার ৬৯৯ জন।
ইসরায়েল-লেবানন যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করবেন বাইডেন ও ম্যাক্রোঁ
ইসরায়েল এবং লেবানন একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির কাছাকাছি বলে মনে করছেন ইসরায়েলি ও মার্কিন কর্মকর্তারা। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে বসবেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রীসভা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বিদ্যমান পরিকল্পনার অধীনে আগামী ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে হিজবুল্লাহ এবং ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। চারটি সিনিয়র লেবানিজ সূত্রের বরাতে এই খবর দিয়েছে আল জাজিরা। এর আগে, প্যান-আরব আশারক আল-আওসাত সংবাদপত্র জানিয়েছিল, বাইডেন এবং ম্যাক্রোঁ মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করবেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, ইসরায়েল এবং ইরান-সমর্থিত লেবানিজ গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর মধ্যে লড়াই শেষ করতে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে দক্ষিণ লেবানন থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহার এবং ওই এলাকায় হিজবুল্লাহর উপস্থিতির অবসান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বলে জানা গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন পশ্চিমা কূটনীতিকের বরাতে বিবিসি বলেছে, এই চুক্তিতে ইসরায়েল এবং হিজবুল্লাহর খালি করা এলাকায় লেবাননের সেনাবাহিনীর উপস্থিতি বৃদ্ধি অন্তর্ভুক্ত থাকবে। হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তার মুখপাত্র জন কিরবিও বলেছেন যে একটি চুক্তি "ঘনিষ্ঠ" এবং আলোচনা সঠিক পথে চলছে। তবে ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থী জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন গভির যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিরোধিতা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এটিকে "একটি গুরুতর ভুল" বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, এখন হিজবুল্লাহকে সামরিকভাবে পেছনের দিকে নিয়ে যাওয়া এবং ধ্বংস করার "একটি ঐতিহাসিক সুযোগ"। আরও পড়ুন : হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চূড়ান্তে বৈঠকে বসছে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা দুই পক্ষ যখন যুদ্ধবিরতি চুক্তি চূড়ান্ত করতে কাজ করছে, তখন ইসরায়েল এবং হিজবুল্লাহর মধ্যে গুলি বিনিময়ের তীব্রতা বেড়েছে। রোববারও লেবানন থেকে ইসরায়েলে প্রায় ২৫০টি প্রজেক্টাইল ছোঁড়া হয়েছে। তবে এগুলোর বেশিরভাগই আটকানো হয়েছে বলে দাবি করেছে দখলদার বাহিনী। এদিকে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী বৈরুত এবং অন্যত্র সন্দেহভাজন হিজবুল্লাহ অবস্থানেও ব্যাপক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।এর আগে সোমবার গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, হিজবুল্লাহর সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়ে ‘নীতিগত’ অনুমোদন দিয়েছেন নেতানিয়াহু। স্থানীয় সময় রোববার (২৪ নভেম্বর) রাতে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিরাপত্তা বিষয়ক পরামর্শের সময় তিনি এই অনুমোদন দেন। তবে চুক্তির বিষয়ে ইসরায়েলের তখন কিছু আপত্তি ছিল। সোমবার এসব আপত্তির বিষয় লেবানন সরকারের কাছে পাঠানোর কথা জানায় সূত্রটি। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে চুক্তির বিষয়টি আরও পরিষ্কার হতে থাকে। তখন দু’পক্ষের মধ্যে অবশেষে একটি চুক্তি হতে চলেছে, এমন সম্ভাবনা আরও জোরালো হয়। লেবাননের সংসদের ডেপুটি স্পিকার এলিয়াস বউ সা’ব জানিয়েছেন, ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে লড়াই বন্ধে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবিত ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নে আর কোনো বড় বাধা নেই। তিনি বলেন, যুদ্ধবিরতির তত্ত্বাবধান কে করবে, তা নিয়ে একটি মতবিরোধ গত ২৪ ঘণ্টায় সমাধান করা হয়েছে। এর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সভাপতিত্বে এবং ফ্রান্সসহ পাঁচটি দেশের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনের বিষয়েও ঐক্যমত্য হয়েছে। অপর একজন লেবানিজ কর্মকর্তা এবং পশ্চিমা কূটনীতিক রয়টার্সকে জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র লেবাননের কর্মকর্তাদের বলেছে যে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আসতে পারে।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ নিয়ে বেশ উতলা ট্রাম্প
ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রায় তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধে বিভিন্ন অস্ত্রের ব্যবহার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নির্বাচিত ৪৭তম প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বেশ চিন্তিত বলে জানিয়েছেন তার মনোনীত জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ওয়াল্টস। সংবাদ স্কাই নিউজের। রোববার (২৪ নভেম্বর) ‘ফক্স নিউজ সানডে’ টেলিভিশন অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘যুদ্ধের ময়দানে রাশিয়ার অগ্রগতি আটকাতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনকে ল্যান্ড মাইন ব্যবহার করার যে অনুমতি দিয়েছেন, তার ফলে পূর্ব ইউক্রেনের লড়াই ‘প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ট্রেঞ্চ যুদ্ধের মত হয়ে গেছে।’ এই সংঘাত নিরসনে একটি সার্বিক কাঠামোগত সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলে মনে করেন ট্রাম্প। এ দিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন গেল সপ্তাহে বলেছেন যে, ‘যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের জন্য অ্যানটি-পারসোনেল মাইন পাঠাচ্ছে। কারণ, যুদ্ধের প্রধান রণাঙ্গন পূর্ব ইউক্রেনে লড়াইয়ের ধরন পাল্টে গেছে।’ তিনি বলেন, ‘সাঁজোয়া যানের ভেতরে সুরক্ষিত সেনা নয়, এখন রাশিয়ার পদাতিক বাহিনী রাশিয়ার অভিযানের অগ্রভাবে আছে। কাজেই ইউক্রেনের ‘এমন জিনিস প্রয়োজন যা দিয়ে তাদের গতি কমিয়ে দিতে পারবে।’ আগামী বছরের ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন ট্রাম্প। এ ধ্বংসযজ্ঞ নিয়ে তিনি বেশ উতলা বলে জানিয়েছেন ওয়াল্টজ। তিনি বলেন, ‘মোটা দাগে যে প্রশ্ন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তা হল, ‘আমরা কীভাবে শান্তি নিয়ে আসব এবং কীভাবে আগ্রাসন নিরুৎসাহিত করার জন্য ডেটারেন্স পুনঃপ্রতিষ্ঠা করব?’ এই যুদ্ধের একটি দায়িত্বশীল সমাপ্তি টানা দরকার বলেও মনে করেন তিনি।
ইতিহাসে সকলকে ছাপিয়ে ইলন মাস্কের নয়া রেকর্ড, নেপথ্যে কী
টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক নয়া এক মাইলফলক স্পর্শ করে ইতিহাসের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হয়ে গেছেন। ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার্স ইনডেক্স অনুযায়ী, তার মোট সম্পদের পরিমাণ এখন ৩৪৮ বিলিয়ন ডলার (৩৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলার)। ইলন মাস্কের এই সম্পদ বাড়ার পেছনে অন্যতম কারণ হচ্ছে বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার শেয়ারের দর বেড়ে যাওয়া। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাপুটে জয়ের পর ঘনিষ্ঠমিত্র ইলন মাস্কের টেসলার শেয়ারের দামে তীব্র ঊর্ধ্বগতি দেখা দেয়। সংবাদ জিও নিউজ টিভির। নির্বাচনের পর থেকে টেসলার শেয়ারের মূল্য প্রায় ৪০ শতাংশ বেড়ে যায় এবং সর্বশেষ শুক্রবার (২২ নভেম্বর) এক দিনে তিন দশমিক আট শতাংশ বেড়ে গিয়ে প্রতি শেয়ারের দাম ৩৫২ দশমিক ৫৬ ডলার ছুঁয়েছে, যা গত তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এক দিনেই মাস্কের সম্পদ সাত বিলিয়ন ডলার বেড়েছে, যা তার মোট সম্পদকে পূর্বের রেকর্ড ৩২০ দশমিক তিন বিলিয়ন ডলারকে ছাপিয়ে গেছে। এই রেকর্ডটি তিনি টেসলার মহামারি-পরবর্তী উত্থানের সময় ২০২১ সালের নভেম্বরে করেছিলেন।ট্রাম্পের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক: ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ইলন মাস্কের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এবং প্রো-বিজনেস নীতিমালা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা বাড়িয়েছে। মাস্ক ট্রাম্পের প্রচারণায় ১০০ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছেন। ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে তিনি নতুন প্রতিষ্ঠিত ‘ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট ইফিশিয়েন্সি’ -এর চেয়ারপারসন হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন। এ সাফল্য ইলন মাস্ককে ইতিহাসের ধনী ব্যক্তিদের মধ্যে শীর্ষে নিয়ে এসেছে, এমনকি আগেকার রেকর্ডধারীদেরও ছাপিয়ে গেছেন। তার সম্পদ বাড়ার গল্প প্রযুক্তি ও ব্যবসায় জগতে নতুন এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
ট্রান্সজেন্ডারদের সামরিক বাহিনী থেকে বহিষ্কার করবেন ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী থেকে ট্রান্সজেন্ডার সদস্যদের বহিষ্কার করবেন দেশটির নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশ ব্যবহার করে এ পদক্ষেপ নেবেন এবং তার দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনেই এটি কার্যকর হতে পারে। সংবাদ দ্য টাইমসের। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তিদের যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনীতে যোগদানে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন। তবে, যেসব ব্যক্তি এরই মধ্যে সামরিক বাহিনীর পদে ছিলেন, তাদের চাকরি বজায় রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। জো বাইডেনের সময়ে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। প্রস্তাব অনুসারে, ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তিদের সামরিক বাহিনীতে যোগদানের ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনী যখন নিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে হিমশিম খাচ্ছে- এমন এক সময়ে এল হাজার হাজার সামরিক কর্মীকে বরখাস্ত করার সংবাদ। ফক্স নিউজের উপস্থাপক পিট হেগসেথকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করেছেন ট্রাম্প। হেগসেথ এর আগে ‘দুর্বল’ ও ‘নারীসুলভ’ সামরিক নেতৃত্বের সমালোচনা করেছেন। ট্রাম্পের পরিকল্পনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি জানিয়েছে, এই মানুষদের এমন এক সময়ে বাহিনী থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে যখন সামরিক বাহিনী যথেষ্ট লোক নিয়োগ করতে পারছে না। শুধুমাত্র মেরিন কর্পস তাদের নিয়োগের লক্ষ্য পূরণ করছে এবং যাদের উপর প্রভাব পড়বে তাদের মধ্যে কয়েকজন বেশ উঁচু পদে রয়েছেন। কিছু সামরিক দাতব্য সংস্থা রোববার (২৪ নভেম্বর) রাতে এই প্রস্তাবের সমালোচনা করেছে। এলজিবিটিকিউ প্লাস সামরিক কর্মীদের পক্ষে প্রচারণা চালানো সংস্থা মডার্ন মিলিটারি অ্যাসোসিয়েশন অব আমেরিকার নির্বাহী পরিচালক র্যাচেল ব্রানামান বলেন, ‘ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম দিন থেকেই যদি এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়, তবে এটি সামরিক প্রস্তুতিতে বাধা দেবে এবং আরও বড় নিয়োগ ও নিরাপত্তার সংকট তৈরি করবে। এছাড়া এটি প্রতিপক্ষের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের দুর্বলতার ইঙ্গিত দেবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘সামরিক বাহিনীতে নিয়োগ যখন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪১ হাজার কম তখন ১৫ হাজারের বেশি সামরিক কর্মীকে আচানক বরখাস্ত করা যুদ্ধের ইউনিটগুলোতে প্রশাসনিক ভার বাড়াবে, ইউনিটের সংহতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে ও গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতার ঘাটতি বাড়াবে। এতে উল্লেখযোগ্য আর্থিক ব্যয় হবে। পাশাপাশি, অভিজ্ঞতা ও নেতৃত্বের ক্ষতি হবে যা পূরণ করতে প্রায় ২০ বছর ও বিলিয়ন ডলার সময় লাগতে পারে।
ইসরাইলকে ‘জবাব’ দেয়ার প্রস্তুতি ইরানের
ইসরাইলের হামলার সমুচিত জবাব দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে ইরান। দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির সিনিয়র উপদেষ্টা আলী লারিজানি এ কথা জানিয়েছেন। সংবাদ ইরনার। রোববার (২৪ নভেম্বর) ইরানের বার্তা সংস্থা ‘তাসনিম নিউজ’-এ লারিজানির একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছে। ঐ সাক্ষাৎকারেই তিনি এ কথা জানিয়েছেন। আলি লারিজানি বলেন, ‘ইহা এমন একটি ঘটনা, আমাদের সৈন্যদের সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার অনুমতি দেয়া উচিত। আমি জানি, তারা সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে একাধিক উপায় নিয়ে ভাবছে। বিষয়টি ইরানের জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সম্পর্কিত। তাই, এই বিষয়ে ব্যাপক সতর্কতার সঙ্গে আগানো হচ্ছে।’ গাজা ও লেবানন যুদ্ধের মধ্যে গেল এপ্রিল মাস থেকে ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে হামলা পাল্টা হামলা চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় গেল ১ অক্টোবর ইসরাইলে বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। ওই হামলায় ইরান প্রায় ২০০টি ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে। উত্তরে গেল ২৬ অক্টোবর ইরানে আচানক হামলা চালায় ইসরাইলের বাহিনী। এই হামলায় রাজধানী তেহরানসহ দেশটির কয়েকটি প্রদেশের সামরিক স্থাপনা টার্গেট করা হয়েছিল। এই হামলায় ইসরাইলের বাহিনী শতাধিক যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে। ইসরাইলের সেই হামলার পাল্টা উত্তর দেয়ার অঙ্গীকার আগেই করেছিল ইরান। এবার তারা সেই প্রস্তুতিই নিচ্ছে। তবে, ইরান ঠিক কী প্রস্তুতি নিচ্ছে সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেননি লারিজানি।
বিক্ষোভ-অবরোধের কারণে প্রতিদিনের ক্ষতি ১৯ হাজার কোটি রুপি
বিরোধী দলের ডাকা বিক্ষোভ ও অবরোধের ফলে পাকিস্তানে প্রতিদিন প্রায় ১৯ হাজার কোটি রুপি ক্ষতি হচ্ছে। এমন দাবি করেছেন দেশটির অর্থমন্ত্রী মুহাম্মদ আওরঙ্গজেব। অর্থমন্ত্রীর এ দাবি এসেছে এমন এক সময়ে, যখন পাকিস্তানের বিরোধী দল সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পিটিআই রাজধানী ইসলামাবাদে ‘ডি-চক’ অঞ্চলে ‘মরণপণ’ আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। কারাবন্দি ইমরান খানসহ দলের নেতাকর্মীদের মুক্তি, নির্বাচনে কারচুপি, ২৬তম সংবিধান সংশোধনীর বিরুদ্ধে উত্তাল হয়ে উঠেছে এ আন্দোলন। সংবাদ জিও নিউজটিভির। জিও নিউজটিভিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে মুহাম্মদ আওরঙ্গজেব জানিয়েছেন, বিক্ষোভ ও অবরোধের কারণে রাজস্ব আদায় কমে যাচ্ছে। রপ্তানি কমে যাচ্ছে ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রতিদিন ১৪ হাজার ৪০০ কোটি রুপি ক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছে। রপ্তানিতে ক্ষতির পরিমাণ প্রতিদিন দু্ই হাজার ৬০০ কোটি রুপি। বিদেশি বিনিয়োগে প্রতিদিন ৩০০ কোটি রুপি ক্ষতি হচ্ছে। প্রদেশগুলোতে কৃষিক্ষেত্রে প্রতিদিন দুই হাজার ৬০০ কোটি রুপি ও শিল্প খাতে দুই হাজার কোটি রুপি ক্ষতি হচ্ছে।সেইসাথে দেশজুড়ে নিরাপত্তা রক্ষায় অতিরিক্ত ব্যয় বেড়ে গেছে। আইটি ও প্রযুক্তি খাতেও উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়েছে। অর্থমন্ত্রীর মতে, বিক্ষোভের ফলে দেশের অর্থনীতি মারাত্মক চাপে পড়ে যাচ্ছে। দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয় এ ক্ষতির বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যা দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থার ওপর বিক্ষোভের প্রভাবকে আরো বিশদভাবে তুলে ধরেছে। এ ধরনের অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি দেশের উন্নয়ন ও বৈদেশিক বিনিয়োগের পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে কুর্দিদের সাথে সংঘর্ষে তুর্কি সমর্থিত ১৫ যোদ্ধার মৃত্যু
সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে রোববার (২৪ নভেম্বর) আঙ্কারা সমর্থিত কুর্দি নেতৃত্বাধীন বাহিনীর অন্তত ১৫ যোদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। সিরিয়া ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশের পর এদের হত্যা করা হয়। যুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস মনিটর এ তথ্য জানিয়েছে। অবজারভেটরি আরো জানায়, সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেসের (এসডিএফ) যোদ্ধারা আলেপ্পো গ্রামাঞ্চলে তুর্কি-সমর্থিত যোদ্ধাদের ওই অনুপ্রবেশকারী অবস্থানে গুলিবর্ষণ করে। এসডিএফ দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অনেকাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। সিরিয়ায় এদের নেটওয়ার্ক রয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাটি বলেছে, ‘এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে। এতে কুর্দি বাহিনীর ১৫ যোদ্ধা নিহত হয়।’ সিরিয়ার উত্তরে এএফপির একজন সংবাদদাতা জানিয়েছেন, আল-বাব শহরের কাছাকাছি স্থানে সংঘর্ষ হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলেছে, ‘এ ঘটনার প্রেক্ষিতে সোমবার (২৫ নভেম্বর) সেখানকার স্কুলের ক্লাস স্থগিত করা হয়েছে। এসডিএফ হল যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থিত বাহিনী। এসডিএফ সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। এটি কুর্দিশ পিপলস প্রোটেকশন ইউনিটের (ওয়াইপিজি) প্রভাবাধীনে রয়েছে। তুরস্ক কর্তৃপক্ষ ওয়াইপিজিকে নিষিদ্ধ ঘোষিত কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) একটি শাখা হিসেবে বিবেচনা করে। পিকেকে আঙ্কারায় হামলার দাবি করেছে। ২০১৬ সাল থেকে ক্রমাগত আন্তঃসীমান্ত আক্রমণের পর তুর্কি সেনা ও মিত্র বিদ্রোহী দলগুলো উত্তর সিরিয়ার বিস্তীর্ণ অংশ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। তাদের বেশিরভাগই এসডিএফকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়।
ভারতে মুঘল আমলের মসজিদ নিয়ে বিতর্কে ৩ মুসলিমকে হত্যা
ভারতের উত্তরপ্রদেশের সামভালে মুঘল আমলের একটি মসজিদকে ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীগুলির দাবি, প্রাচীন একটি হিন্দু মন্দির ভেঙেই এই মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল, ওই ভবনের স্থাপত্যে নাকি এখনও তার প্রমাণ রয়েছে। প্রাচীন ওই মসজিদে ‘সার্ভে’ বা সমীক্ষা চালানোর নির্দেশকে ঘিরে স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশের মধ্যে দফায় দফায় ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, যাতে অন্তত তিনজন মুসলিম নিহত হয়েছেন।বার্তাসংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, নিহত তিনজনের নাম নাঈম, বিলাল ও নোমান। এই ঘটনার পর সামভালে ইন্টারনটে পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। একদিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সেখানকার সব স্কুল। ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে সোমবার (২৫ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু। সংবাদমাধ্যম বলছে, উত্তরপ্রদেশের সামভালে মুঘল আমলের একটি প্রাচীন মসজিদে সমীক্ষা চালানোর নির্দেশকে ঘিরে স্থানীয় জনতা ও পুলিশের মধ্যে রোববার দফায় দফায় তীব্র সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত তিন জন নিহত হয়েছেন। সহিংসতায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩০ জন পুলিশ সদস্য। ঘটনার পর গোটা এলাকায় তীব্র সাম্প্রদায়িক উত্তেজনাও ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানা যাচ্ছে। শহরের যে মসজিদটিকে ঘিরে এই বিরোধ দেখা দিয়েছে সেটি ‘শাহী জামা মসজিদ’ নামে পরিচিত। রোববারের এই সংঘর্ষের সময় বিক্ষোভকারীরা যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করে এবং পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়ে মারে। অন্যদিকে বিক্ষুব্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপের পাশাপাশি ও লাঠিচার্জ করে পুলিশ। মোরাদাবাদের বিভাগীয় কমিশনার অঞ্জনেয়া কুমার সিং জানিয়েছেন, দুর্বৃত্তরা গুলি চালিয়েছিল... পুলিশ সুপারের পিআরও’র পায়ে গুলি লেগেছে, পুলিশ সার্কেল অফিসার পেলেটের আঘাতে আহত হয়েছেন এবং সহিংসতায় ১৫ থেকে ২০ জন নিরাপত্তা কর্মী আহত হয়েছেন। তিনি আরও দাবি করেন, একজন কনস্টেবলের মাথায়ও গুরুতর আঘাত লেগেছে এবং ডেপুটি কালেক্টরের পা ভেঙে গেছে। দ্য হিন্দু বলছে, সংঘর্ষের এই ঘটনার পর সামভাল তহসিলে ইন্টারনেট পরিষেবা ২৪ ঘণ্টার জন্য স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে এবং জেলা প্রশাসন ২৫ নভেম্বর (সোমবার) দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণা করেছে। এদিকে হিন্দু মন্দির ভেঙে এই মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল বলে যে দাবি করা হচ্ছে সেটাকে কেন্দ্র করে হিন্দু ও মুসিলম গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে আদালতে আইনি লড়াইও চলছে দীর্ঘদিন ধরে। সম্প্রতি আদালত ওই মসজিদ প্রাঙ্গণে সার্ভে করার নির্দেশ দেওয়ার পর থেকেই নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায়। ওই মসজিদ ভবনটিতে আগে কোনো হিন্দু মন্দিরের অস্তিত্ব ছিল কি না, সেটা যাচাই করে দেখার জন্যই ওই সার্ভের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। উল্লেখ্য, মুঘল আমলে একটি প্রাচীন হিন্দু মন্দির ভেঙে এই জামা মসজিদ নির্মিত হয়েছিল এবং এখন তা হিন্দুদের হাতে ফিরিয়ে দিতে হবে– এই দাবি নিয়ে একদল আবেদনকারী আদালতের শরণাপন্ন হলে এই সার্ভের নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই আবেদনকারীদের যুক্তি ছিল, ‘বাবরনামা’ ও ‘আইন-ই-আকবরী’র মতো ঐতিহাসিক গ্রন্থেই প্রমাণ আছে যে– ১৫২৯ সালে মুঘল বাদশাহ বাবর সামভালে হিন্দু মন্দির ভেঙে ওই মসজিদটি নির্মাণ করেছিল। এই ‘ঐতিহাসিক সত্য’টি উদঘাটন করার জন্যই শাহী জামা মসজিদে সার্ভে চালানো প্রয়োজন বলে তারা দাবি করে আসছিলেন। অন্যদিকে মসজিদ কর্তৃপক্ষ ও সার্ভের বিরোধীদের বক্তব্য ছিল, ভারতের ধর্মীয় উপাসনালয় আইন ১৯৯১ অনুসারে দেশের স্বাধীনতার সময় কোনও মন্দির, মসজিদ বা গীর্জার চরিত্র যা ছিল তা বদলানো যায় না – সুতরাং সামভালের জামা মসজিদেও এই ধরনের হস্তক্ষেপ সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয়। এছাড়া মসজিদে এভাবে ‘সার্ভে’ চালানো হলে তা এলাকায় অযথা উত্তেজনা ছড়াবে বলেও তারা সতর্ক করে আসছিলেন।
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় আরও ৩৫ ফিলিস্তিনি নিহত
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বর্বর হামলায় কমপক্ষে আরও ৩৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এবং আরও ৯৪ জন আহত হয়েছেন।হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। কারণ, অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন কারণ উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না। সোমবার (২৫ নভেম্বর) ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানা গেছে। মন্ত্রণালয় বলেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নিহতসহ উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৪৪ হাজার ২২১ জনে পৌঁছেছে। নিরলস এই হামলায় আরও অন্তত এক লাখ ৪ হাজার ৫৬৭ জন ব্যক্তিও আহত হয়েছেন। উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের বিভিন্ন অবৈধ বসতিতে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস যোদ্ধারা। ওই সময় ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা করে তারা। একই সঙ্গে প্রায় ২৫০ জনকে ধরে গাজায় নিয়ে আসে। হামাসের এই হামলার প্রতিশোধ নিতে সেদিন থেকেই গাজায় নির্বিচারে হামলা চালানো শুরু করে ইসরায়েল। যা এখনও অব্যাহত। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। অবরুদ্ধ ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েলি আগ্রাসনে ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকা জুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংসতায় নিহতদের ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু। বেসামরিক মানুষ নিহতের ঘটনায় কঠোর নিন্দা জানিয়ে গত ৮ নভেম্বর জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানায়। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।
ব্রাজিলে পাহাড়ি সড়ক থেকে বাস খাদে পড়ে নিহত ২৩
ব্রাজিলের পাহাড়ি রাস্তায় যাত্রীবাহী একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে ২৩ জন নিহত হয়েছেন। রোববার আলাগোয়াস রাজ্যের ইউনিয়াও দোস পালমারেস শহরের কাছে দুর্গম একটি পার্বত্য সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। খবর এএফপির। রাজ্য সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পার্বত্য সড়ক থেকে ওই বাসটি খাদে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ২২ জন নিহত হন বলে জানিয়েছেন উদ্ধারকারীরা। আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান অন্তঃসত্ত্বা এক নারী। বাসটিতে ৪০ জন যাত্রী ছিলেন। দুর্ঘটনায় বাসে থাকা আরও অনেকে আহত হয়েছেন বলে ব্রাজিলের বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। হতাহতের এ ঘটনায় তিন দিনের শোক ঘোষণা করেছেন আলাগোয়াস রাজ্যের গভর্নর পাউলো দান্তাস।
সৌদি আরবে এক সপ্তাহে প্রায় ২০ হাজার প্রবাসী গ্রেফতার
সৌদি আরবে প্রায় ২০ হাজার প্রবাসীকে গ্রেফতার করেছে দেশটির আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। আবাসন, শ্রম ও সীমান্ত সুরক্ষা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে গেল এক সপ্তাহে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। শনিবার (২৩ নভেম্বর) প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সৌদি আরবের বার্তাসংস্থা সৌদি গেজেট। গেল সপ্তাহে সৌদি আরবের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মোট ১৯ হাজার ৬৯৬ জন অবৈধ বাসিন্দাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে শনিবার (২৩ নভেম্বর) সৌদির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষণা দিয়েছে। গেল ১৪-২০ নভেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থার সহযোগিতায় নিরাপত্তা বাহিনীর পরিচালিত যৌথ নিরাপত্তা অভিযানের সময় তাদের গ্রেফতার করা হয়। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে ১১ হাজার ৩৩৬ জন রেসিডেন্সি আইন লঙ্ঘনকারী, পাঁচ হাজার ১৭৬ জন সীমান্ত সুরক্ষা আইন লঙ্ঘনকারী এবং তিন হাজার ১৮৪ জন শ্রম আইন লঙ্ঘনকারী রয়েছেন। এছাড়া, অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা করার সময় এক হাজার ৫৪৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৩২ শতাংশ ইয়েমেনি নাগরিক, ৬৫ শতাংশ ইথিওপিয়ান নাগরিক ও তিন শতাংশ অন্যান্য জাতীয়তার। মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশটিতে অবৈধভাবে প্রবেশে সহায়তার চেষ্টাকারী ব্যক্তির ১৫ বছরের কারাদণ্ড এবং দশ লাখ সৌদি রিয়াল জরিমানার বিধান রয়েছে। সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে বার বার সতর্ক করে দিয়ে আসছে। মরু অঞ্চলের দেশ সৌদি আরবে বর্তমানে প্রায় তিন কোটি ৪৮ লাখ মানুষের বসবাস। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের লাখ লাখ অভিবাসী শ্রমিক সৌদিতে কর্মরত রয়েছেন। সৌদি আরবের স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম নিয়মিতভাবে দেশটিতে আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে নিরবচ্ছিন্ন ধরপাকড় অভিযান ও অবৈধ প্রবাসীদের আটকের সংবাদ প্রকাশ করছে। সৌদি কর্তৃপক্ষ আইনলঙ্ঘনকারীদের বিষয়ে তথ্য দিতে সরকারি হেল্প লাইন নম্বর চালু করেছে। দেশটির মক্কা, রিয়াদ ও পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশের বাসিন্দারা ৯১১ এবং অন্যান্য অঞ্চলের বাসিন্দারা ৯৯৯ ও ৯৯৬ নম্বরে কল করে আইনলঙ্ঘনকারীদের তথ্য দিতে পারেন।
আদানির বিরুদ্ধে এবার সমন জারি যুক্তরাষ্ট্রে
সরকারি কর্মকর্তাদের কয়েক মিলিয়ন ডলার ঘুষ দেয়া ও বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে অর্থ গ্রহণের তথ্য গোপনের ঘটনায় অভিযুক্ত ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানির বিরুদ্ধে সমন জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)। এসইসি সৌর বিদ্যুতের চুক্তি সুরক্ষিত করতে ঘুষ দেয়ার অভিযোগে আদানি গ্রুপের দুই নির্বাহী গৌতম আদানি ও তার ভাতিজা সাগর আদানির নামে এ সমন জারি করে ২১ দিনের মধ্যে এ অভিযোগের উত্তর দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে। নিউইয়র্ক ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের মাধ্যমে পাঠানো সমনে সতর্ক করা হয়েছে যে, যে সাড়া দিতে ব্যর্থ হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ডিফল্ট রায় দেয়া হতে পারে। এসইসি অভিযোগগুলো যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের আনা অভিযোগগুলো থেকে আলাদা। তবে, উভয় অভিযোগই একই বৃহৎ ঘুষ কেলেঙ্করির সাথে যুক্ত। যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ এর পূর্বে গৌতম আদানি ও তার ভাতিজা সাগর আদানির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল। তবে, আদানি গ্রুপ যুক্তরাষ্ট্রের আদালতের এ ফৌজদারি অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’ বলে প্রত্যাখ্যান করে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রসিকিউটররা অভিযোগ করেন, গৌতম ও তার ভাতিজা সাগর আদানি বিদ্যুৎ সরবরাহ চুক্তি সুরক্ষিত করার জন্য ভারতীয় কর্মকর্তাদের পর্যায়ক্রমে ২৬৫ মিলিয়ন ডলার ঘুষ দিতে রাজি হন। আদানির কথিত সহযোগীদের একজন অত্যন্ত চতুরতার সাথে তার ফোন ব্যবহার করে কর্মকর্তাদের দেয়া এ ঘুষের পেমেন্ট ট্র্যাক করেন। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আদানি ও তার ভাতিজা সাগরসহ সাত আসামি ২০ বছরের বেশি সময় ধরে ভারতের বৃহত্তম সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের কাজ পেতে দুই বিলিয়ন ডলার লাভের আশায় চুক্তি সুরক্ষিত করতে সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দিতে সম্মত হন। অপর দিকে, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও গৌতম আদানিকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন। এক সংবাদ সম্মেলনে রাহুল জোর দিয়ে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে আদানির বিরুদ্ধে অভিযোগগুলোর পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করা উচিত এবং যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেয়া উচিত।’ নরেন্দ্র মোদি আদানিকে তদন্তের হাত থেকে রক্ষা করছেন উল্লেখ করে রাহুল বলেন, ‘নরেন্দ্র মোদি ও আদানি একসাথে থাকলে তারা সুরক্ষিত। ভারতে আদানিকে কিছুই করা যাবে না। এ দেশে মুখ্যমন্ত্রীকে জেলে পাঠানো হয় আর আদানি দুই হাজার কোটি টাকার কেলেঙ্কারি করে মুক্তভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কারণ, নরেন্দ্র মোদি তাদের রক্ষা করছেন। আদানি ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রে অপরাধ করেছে।’ কিন্তু, ভারতে আদানির বিরুদ্ধে কোন রকম ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি। হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ ২০২৩ সালে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কয়েক দশক ধরে স্টক ম্যানিপুলেশন এবং জালিয়াতির অভিযোগ তোলার পর আদানি নিজের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করার চেষ্টায় প্রায় দুই বছর ব্যয় করেন। যদিও তার বিরুদ্ধে ওঠা ওই অভিযোগ আদানি অস্বীকার করেছেন। তবে, সেই অভিযোগের কারণে মার্কেট সেল-অফ (মার্কেট সেল-অফ হল বৃহৎ পরিমাণ সিকিউরিটিজের দ্রুত বিক্রয়, যার ফলে তার দাম কমে যায়) হয়েছে এবং সে ব্যাপারে ভারতের বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া (সেবি) তদন্তও করছে।
ট্রাম্পের কৃষিমন্ত্রী হচ্ছেন ব্রুক রলিন্স
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার সরকারের কৃষিমন্ত্রী হিসেবে ব্রুক রলিন্সকে নিয়োগ দিয়েছেন। রলিন্স ট্রাম্পের দীর্ঘ দিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত। সংবাদ বিবিসির।শনিবার (২৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় কৃষিমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর এর মধ্য দিয়ে ট্রাম্পের নতুন প্রশাসনের সবকটি পদে মনোনয়ন দেয়া শেষ হল।বিবৃতিতে ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমাদের পরবর্তী কৃষিমন্ত্রী হিসেবে ব্রুক যুক্তরাষ্ট্রের কৃষকদের রক্ষা করার প্রচেষ্টার নেতৃত্ব দেবেন, তারা (কৃষক) সত্যিই আমাদের দেশের মেরুদণ্ড।’ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ব্রুক রলিন্স যুক্তরাষ্ট্র ফার্স্ট পলিসি ইনস্টিটিউটের প্রধান হিসেবে কাজ করছেন। তবে, ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদেও তিনি হোয়াইট হাউসে কাজ করেছেন। তখন ব্রুককে অফিস অব আমেরিকান ইনোভেশনের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন ট্রাম্প। এছাড়া হোয়াইট হাউসের অভ্যন্তরীন নীতি কাউন্সিলের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক হিসবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি।ব্রুক রলিন্স টেক্সাসের এঅ্যান্ডএম ইউনিভার্সিটি থেকে কৃষি উন্নয়ন বিষয়ে উচ্চশিক্ষা নিয়েছেন। উচ্চ শিক্ষা শেষে তিনি তার পেশাজীবন শুরু করেছিলেন একজন আইনজীবী হিসেবে।আগামী বছর ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর সিনেটে মন্ত্রীদের অনুমোদনের পর কৃষিমন্ত্রী হিসেবে খামারের ভর্তুকি, কেন্দ্রীয় সরকারের পুষ্টি কর্মসূচি, মাংস খাতে পরিদর্শন এবং দেশের খামার, খাদ্য ও বনজ শিল্পের অন্যান্য দিক তত্ত্বাবধান করবেন ব্রুক রলিন্স।গেল ৫ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর এ পর্যন্ত ১৫ জনকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের জন্য মনোনয়ন দিয়েছেন ট্রাম্প। তবে, তাদের নিয়োগ চূড়ান্ত হবে সিনেটের অনুমোদনের পর।
পাকিস্তানে জাতিগত হিংস্রতায় তিন দিনে প্রাণ গেল ৮২ জনের
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে তিন দিনের রক্তক্ষয়ী জাতিগত সহিংসতায় কমপক্ষে ৮২ জন নিহত ও আরো ১৫৬ জন আহত হয়েছে। রোববার (২৪ নভেম্বর) দেশটির স্থানীয় এক কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের কুররাম জেলার স্থানীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেন, ‘নিহতদের মধ্যে ১৬ জন সুন্নি আর ৬৬ জন শিয়া সম্প্রদায়ভুক্ত।’ পাকিস্তান একটি সুন্নি সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। তবে, আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী কুররাম জেলায় প্রচুর শিয়া সম্প্রদায়ের লোক রয়েছে। জেলাটিতে উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে কয়েক দশক ধরে সংঘর্ষ চলছে। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) পুলিশ পাহারা মধ্যেও শিয়াদের দুইটি পৃথক গাড়ি বহরে আচমকা হামলা চালানো হলে সর্বশেষ এ সহিংসতা শুরু হয়। এ ঘটনায় কমপক্ষে ৪৩ জন নিহত হয়। রোববার (২৪ নভেম্বর) প্রাদেশিক আইনমন্ত্রী আফতাব আলম আফ্রিদি বলেছেন, ‘আজকে আমাদের অগ্রাধিকার হল উভয় পক্ষের মধ্যে এ বিরোধের মীমাংসা করে সহিংসা বন্ধ করা। এটা হলে আমরা অন্য সমস্যাগুলো সমাধান করতে করতে পারব।’
কপ২৯ সম্মেলনকে ব্যর্থ বললেন জলবায়ু অধিকারকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ
বিশ্বের অন্যতম পরিচিত মুখ সুইডিশ জলবায়ু অধিকারকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ। কপ২৯ জলবায়ু সম্মেলনে তার যোগ না দেওয়াকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে বিভিন্ন আলোচনা। কেন তিনি যাননি এই সম্মেলনে তা শনিবার (২৩ নভেম্বর) তার ব্যক্তিগত এক্সে দেওয়া এক পোস্ট থেকে জানা যায়।থুনবার্গ লেখেন, কপ২৯ জলবায়ু সম্মেলন এখন শেষের পথে, আর এটাও খুব বেশি অস্বাভাবিক নয় যে আরেকটি ‘কপ’ ব্যর্থ হচ্ছে। বর্তমান খসড়া সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত। যদিও আমাদের প্রত্যাশা প্রায় শূন্য, আমরা কখনোই এই ধারাবাহিক বিশ্বাসঘাতকতার প্রতি কেবল ক্ষোভ ছাড়া কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাব না।তিনি লেখেন, ক্ষমতায় থাকা মানুষরা আবারও এক মৃত্যুদণ্ডের চুক্তিতে সম্মত হতে চলেছেন, যার ফলে বিশ্বজুড়ে অগণিত মানুষের জীবন বিপর্যস্ত বা ধ্বংস হয়ে যাবে, যাদের জীবনে জলবায়ু সংকটের প্রভাব পড়েছে বা পড়বে। বর্তমান খসড়ায় মিথ্যা সমাধান এবং শূন্য প্রতিশ্রুতির ছড়াছড়ি। গ্লোবাল নর্থ (উন্নত দেশগুলো) থেকে যে অর্থ তাদের জলবায়ু ঋণ পরিশোধ করার জন্য প্রয়োজন, তা এখনও কোথাও দেখা যাচ্ছে না। এই সম্মেলনের আয়োজক দেশ আজারবাইজান একটি দমনমূলক এবং স্বৈরাচারী তেল-নির্ভর রাষ্ট্র, যেটি আর্মেনীয়দের বিরুদ্ধে জাতিগত নির্মূল এবং গণহত্যার মতো অপরাধ করেছে। কপ২৯-এ উপস্থিত সিভিল সোসাইটিকে দমন করা হচ্ছে, তবুও তারা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে এবং ন্যূনতম কিছু অর্জন করার জন্য আলোচকদের উপর চাপ তৈরি করছে।এই জলবায়ু অধিকারকর্মী লেখেন, পৃথিবীজুড়ে দমন, অসমতা, যুদ্ধ এবং গণহত্যার পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে চলেছে। ক্ষমতাধারীরা আমাদের জীবিকা ধারণকারী পরিবেশ ব্যবস্থা ধ্বংসের প্রক্রিয়া আরও ত্বরান্বিত করছে। আমরা সবচেয়ে উষ্ণ বছরের রেকর্ড গড়ার পথে, এবং গত বছর পৃথিবীর গ্রীনহাউস গ্যাসের মাত্রা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছিল। এটা স্পষ্ট যে, আমাদের বর্তমান সিস্টেমগুলো আমাদের পক্ষে কাজ করছে না। কপ প্রক্রিয়া শুধুমাত্র আমাদের ব্যর্থ করছে না, বরং এটি একটি বৃহত্তর অস্থিরতা ও অন্যায়ের ব্যবস্থা, যা বর্তমান এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য মৃত্যুর ঝুঁকি তৈরি করছে, শুধুমাত্র কিছু মানুষের লাভের জন্য, যারা পৃথিবী এবং মানুষের উপর নিরন্তর শোষণ চালিয়ে যাচ্ছে।সম্মেলনের ব্যর্থতার স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিলি লেখেন, প্রত্যেকটি আলোচনার, প্রতিটি বিশ্ব নেতার বক্তব্য এবং প্রতিটি চুক্তিতে সই করার সাথে সাথে এটা স্পষ্ট হয়ে উঠছে যে, আমাদের পৃথিবী এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য জরুরি পদক্ষেপ নিতে, নেতৃত্বটি আমাদেরই নিতে হবে। তারা আমাদের জন্য এটা করবে না, যেমনটা কপ২৯ আবারও প্রমাণিত করেছে।
এশিয়ায় সংকট তৈরিতে তাইওয়ানকে ব্যবহার করছে যুক্তরাষ্ট্র, অভিযোগ রাশিয়ার
এশিয়ায় ব্যাপক সংকট তৈরি করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানকে ব্যবহার করছে- এমন অভিযোগ করেছেন রাশিয়ার উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রেই রুদেঙ্ক। সংবাদ রয়টার্সের। রোববার (২৪ নভেম্বর) রাশিয়া বার্তা সংস্থা তাসের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে আরো বলা হয়েছে, ‘তাইওয়ান ইস্যুতে রাশিয়া চীনকেই সহযোগিতা করবে।’ আন্দ্রেই রুদেঙ্গ বলেছেন,‘ আমরা দেখতে পাচ্ছি, এক চীনা নীতিতে হস্তক্ষেপ করছে যুক্তরাষ্ট্র। এ জন্য তারা তাইওয়ানের সাথে সামরিক এবং রাজনেতিক সম্পর্ক আরো বৃদ্ধি করেছে ও অস্ত্র সরবরাহ বাড়িয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘তাইওয়ান ইস্যুতে পিআরসিকে (পিপিল’স রিপাবলিক অব চায়না) উষ্কে দিয়ে এশিয়াতে সংকট তৈরি করে যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের স্বার্থ হাসিলের লক্ষ্যে নেমেছে।’ তবে প্রতিবেদনে রুদেঙ্কর পক্ষের নির্দিষ্ট কার নাম উল্লেখ করা হয়নি। গণতান্ত্রিক ধারায় পরিচালিত তাইওয়ানকে সব সময়ই চীন নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করে। তবে, তাইওয়ান সরকার বরাবরই এ দাবি অস্বীকার করে আসছে। এ অবস্থায় কূটনৈতিক তৎপরতা না থাকলেও যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক পরিসরে তাইওয়ানের একজন বড় সমর্থক ও অস্ত্র সরবরাহকারী দেশ। রাশিয়া উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুদেঙ্গের এমন মন্তব্যের ব্যাপারে তাৎক্ষণিক কোন মন্তব্য করেনি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর। গেল সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তাইওয়ানকে ৫৬৭ মিলিয়ন ডলারে সামরিক সহায়তার অনুমোদন দেন। যার সমালোচনা করে রাশিয়া। কারণ, এশিয়ার ইস্যুতে রাশিয়া চীনের পাশে রয়েছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে যখন রাশিয়া ইউক্রেনে পুরোদমে অভিযান শুরু করে, তখন চীন সফর করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ওই সময়ে দুই দেশ জানায়, তাদের সম্পর্কের মধ্যে কোন সীমা-পরিসীমা নেই।