সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক নিয়ন্ত্রণে নিচ্ছে বিদ্রোহীরা

গুরুত্বপূর্ণ হোমস শহর দখলে নেওয়ার পরই সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ঢুকতে শুরু করে বিদ্রোহী যোদ্ধারা। মাত্র এক দিনের লড়াইয়ের পরে রোববার ভোরে হোমসের মূল শহরটির ওপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার কথা জানায় বিদ্রোহীরা। এখন তারা রাজধানী দামেস্কের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ইতোমধ্যে দামেস্কের উপকণ্ঠে গোলাগুলির শব্দ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এরই মধ্যে খবর এসেছে দামেস্ক ছেড়ে পালিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। সিরিয়ার বিদ্রোহী কমান্ডার হাসান আব্দুল ঘানি রোববার (৮ ডিসেম্বর) ভোরে এক বিবৃতিতে বলেছেন, দামেস্কের আশেপাশের গ্রামাঞ্চলকে ‘সম্পূর্ণ মুক্ত’ করার জন্য অভিযান চলমান রয়েছে এবং বিদ্রোহী বাহিনী রাজধানীর দিকে তাকিয়ে আছে। বিদ্রোহীরা জানিয়েছে, তারা দামেস্কে ঢুকে পড়েছে। সেখানে কোনো সেনা মোতায়েন নেই। রাষ্ট্রীয় রেডিও, টেলিভিশন ও বিমানবন্দর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার কথা জানিয়েছে তারা। কুখ্যাত একটি কারাগার ভেঙে সেখান থেকে হাজার হাজার বন্দিকে মুক্তিও দিয়েছে বিদ্রোহীরা। বিদ্রোহের সূতিকাগার হোমস ২০১১ সালে হোমস শহর থেকেই প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদবিরোধী বিদ্রোহ শুরু হয়েছিল। হোমসের কেন্দ্রীয় শহর থেকে সরকারি সেনা প্রত্যাহারের পর সেখানকার হাজার হাজার বাসিন্দা রাস্তায় নেমে আসেন। তারা ‘আসাদ চলে গেছে, হোমস মুক্ত’ এবং ‘সিরিয়া দীর্ঘজীবী হোক, বাশার আল-আসাদের পতন হোক’ স্লোগানে নাচ-গানে মেতে ওঠেন। বিদ্রোহীরা আকাশে ফাঁকা গুলি চালিয়ে হোমসের বিজয় উদযাপন করেন। সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলতে দেখা যায় স্থানীয়দের। হোমসের পতনকে বিদ্রোহীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অর্জন ছিল। শহরটি সিরিয়ার কৌশলগত কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। এটি দখলে নেওয়ার ফলে বিদ্রোহীরা গুরুত্বপূর্ণ হাইওয়ে ক্রসরোড এম-ফাইভ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। উপকূলীয় অঞ্চল লাতাকিয়া থেকে দামেস্ককে যাওয়ার মূল সড়ক এটি। লাতাকিয়ায় রাশিয়ার নৌঘাঁটি রয়েছে। সুন্নি বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের কমান্ডার আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি হোমস দখলকে একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত বলে অভিহিত করেছেন। যেসব সরকারি সেনা অস্ত্র সমর্পণ করবেন তাদের ক্ষতি না করার আহ্বানও জানান তিনি। বিদ্রোহীরা শহরের কারাগার থেকে হাজার হাজার বন্দিকে মুক্ত করেছে। সরকারি নিরাপত্তা বাহিনী তাদের কাগজপত্র পুড়িয়ে তাড়াহুড়ো করে পালিয়েছে। বিদ্রোহীরা বলেছেন, ‘আমাদের বিদ্রোহীদের মুক্তি দেওয়ার খবর আমরা উদ্‌যাপন করছি।’ বিদেশি কর্মকর্তারা বলেছেন, সরকার হয়তো পতনের পথে। একজন মার্কিন কর্মকর্তা ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, আগামী পাঁচ থেকে ১০ দিনের মধ্যে আসাদ সরকারের পতন হবে। অন্য একজন বলেছেন, আসাদ আগামী সপ্তাহের মধ্যে ক্ষমতাচ্যুত হতে পারেন। কাতার, সৌদি আরব, জর্ডান, মিশর, ইরাক, ইরান, তুরস্ক এবং রাশিয়া একটি যৌথ বিবৃতি জারি করে বলেছে, সংকট একটি বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। তারা রাজনৈতিক সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে। বিদ্রোতীদের নেতা জোলানি সংখ্যালঘুদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছেন যে, তিনি তাদের ওপর হস্তক্ষেপ করবেন না। এক সপ্তাহ আগে বিদ্রোহীরা যেই আলেপ্পো শহর দখল করেছিল, সেখানে কোনো ধরনের প্রতিশোধের খবর পাওয়া যায়নি। ফলে জোলানির ঘোষণা বাসিন্দাদের জন্য স্বস্তিকর হতে পারে। হোমসের দখল কেন গুরুত্বপূর্ণ ছিল *এটি সিরিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম শহর। দশ লাখের বেশি মানুষ শহরটিতে বসবাস করেন। শহরটি এম-ফাইভ হাইওয়েতে অবস্থিত, যা রাজধানী দামেস্ককে লাতাকিয়া, আলেপ্পো এবং হামার সঙ্গে সংযুক্ত করে। *এটি রাজধানী দামেস্ক থেকে মাত্র ১৮০ কিলোমিটার (১১২ মাইল) দূরে। এই পথে দামেস্কে যেতে কোনো বড় বাধা নেই। *হোমস শহরে স্থল করিডরের মাধ্যমে লেবানের হিজবুল্লাহকে অস্ত্র সরবরাহ করে ইরান। এখন এই সরবরাহ লাইন ব্যাহত হবে। অন্যদিকে শহরটির পতন রাশিয়াকেও চাপে রাখবে। এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট-নির্বাচিত ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই সংঘাতে জড়িত হওয়া উচিত নয়। তিনি এক টুইটে বলেন, এটি যাদের খেলা তাদের খেলতে দেওয়া উচিত। সূত্র: রয়টার্স ও আল জাজিরা

ব্যবসায়ে মন্দা, বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা দিতে চান কলকাতার ব্যবসায়ীরা

বাংলাদেশে কথিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগে ভারতে বিক্ষোভ ও দেশটির গণমাধ্যমে একের পর এক অপপ্রচারের জেরে দুই দেশের সম্পর্ক এখন তলানিতে। আর তার প্রভাব পড়েছে দেশটির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পর্যটন খাতে। প্রায় শূন্যে নেমেছে বাংলাদেশি পর্যটকের সংখ্যা। তাতেই মাথায় হাত নিউমার্কেট চত্বরের ব্যবসায়ীদের। তারা বলছেন, ‘বাংলাদেশিরা পর নয়, বরং তাদের ঘরের লোক। তাই, বাংলাদেশি পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সম্ভাব্য সব কিছু করা হবে।’ ঢাকা-দিল্লি উত্তপ্ত সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি বাংলাদেশি পর্যটকদের বয়কটের ডাক দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরার কিছু হোটেল। কিন্তু, কলকাতা নিউমার্কেটের মার্কুইস স্ট্রিট-ফ্রি স্কুল স্ট্রিট ওয়েলফেয়ার সোসাইটি, নিউমার্কেট ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন ও হোটেল অনার্স অ্যাসোসিয়েশন এই পথে হাঁটবে না। সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘আমরা বাংলাদেশিদের বয়কট করব না। তারা যেন নিশ্চিন্তে এখানে আসেন। যতটা পারব, তাদের নিরাপত্তা দেব।’ শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে মার্কুইস স্ট্রিট-ফ্রি স্কুল স্ট্রিট ওয়েলফেয়ার সোসাইটির যুগ্ম সচিব মনতোষ সরকার বলেন, ‘নিউমার্কেট মূলত বাংলাদেশনির্ভর এলাকা। বাংলাদেশি পর্যটকদের ওপর নির্ভর করে এখানকার মানি এক্সচেঞ্জ, হোটেল ও পর্যটক ব্যবসায় চলছে। তাদের অনুপস্থিতি আমাদের ব্যবসায়ে প্রভাব ফেলছে। যদিও আমরা বাংলাদেশিদের বিদেশি পর্যটক হিসেবে দেখি না, তারা আমাদের ঘরের সদস্য।’ তিনি আরো বলেন, ‘কয়েক বছর আগে বাংলাদেশ থেকে পর্যটকদের যে ঢল ছিল, সেটা এখন নেই। এর কারণে আমরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।’ কলকাতার এমআরএল হোটেলের মালিক মনতোষ সরকার বলেন, ‘আমার হোটেলে ৮০ শতাংশ পর্যটক থাকেন বাংলাদেশি। কিন্তু, ডিসেম্বরে বাংলাদেশের পর্যটক আসছেন খুবই কম।’ তিনি বলেন, ‘সম্পর্ক নষ্ট করার জন্য কিছু গুজব ছড়াচ্ছে। কিন্তু, সেদিকে কান না দিয়ে বাংলাদেশি পর্যটকদের বলবো, এখানে আসুন। দুই দেশের মধ্যে খুব ভাল সম্পর্ক রয়েছে এবং আমাদের উভয় পক্ষকেই সমস্যার সমাধানের জন্য এগিয়ে আসতে হবে।’ এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যবসায়ী মুহাম্মদ আলী হোসেইন শেখ বলেন, ‘৫ আগস্টের পর থেকে আমার ব্যবসায় ডুবতে বসেছে।’ তিনি ভিসা প্রক্রিয়া শিথিল করার দাবি জানিয়ে বলেন, ‘বর্তমানে যে অবস্থা, তাতে বাংলাদেশের চাহিদা মিটছে না।’ মাল্টিপল ও এমপ্লয়মেন্ট ভিসা চালুর দাবি জানান আলী হোসেইন। সংগঠনের সদস্য মোহাম্মদ কামরুদ্দিন মালিক বলেন, ‘এখানে ধর্মের কোন ভেদাভেদ নেই। বাংলাদেশি পর্যটকদের মধ্যে এক ধরনের আশঙ্কা রয়েছে। কিন্তু, আমি তাদের বলব, নিশ্চিন্তে আসুন।’ গ্রীন লাইন পরিবহনের মালিক সঞ্জয় মজুমদার বলেন, ‘নিউমার্কেটে প্রচুর হোটেল ও দোকান রয়েছে। বাংলাদেশি পর্যটক না আসায় সেগুলোর ওপর অর্থনৈতিক প্রভাব পড়েছে।’ অবনী ঘোষ বলেন, ‘কিছু খবরের কারণে দুই পাড়েই প্রভাব পড়ছে।’ তিনি আশা করেন, ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিস্ত্রির বাংলাদেশ সফরের মাধ্যমে পরিস্থিতি উন্নতি ঘটবে। সঞ্জয় মজুমদার বলেন, ‘অতিথি দেব ভব’ অর্থাৎ অতিথি হল দেবতুল্য। আমরা বাংলাদেশিদের বয়কট করব না এবং যতটা পারব তাদের নিরাপত্তা দেব।’

১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ হাইকমিশন ঘেরাওয়ের ঘোষণা আরএসএসের

শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘু ‘নির্যাতনের’ অভিযোগ এনে বেশ কয়েকদিন ধরে মাঠ গরম করতে চাচ্ছে ভারতের রাজনৈতিকদলগুলো। এরই মধ্যে দিল্লিতে আগামী ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ হাইকমিশন ঘেরাওয়ের ঘোষণা দিয়েছে হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘসহ (আরএসএস) কয়েকটি সংগঠন। শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। দিল্লি নাগরিক সমাজের ব্যানারে বাংলাদেশ হাইকমিশন ঘেরাওয়ের কর্মসূচি নেওয়া হলেও উদ্যোগটা প্রধানত আরএসএসের। আরএসএসের দিল্লি শাখার গণমাধ্যম ব্যবস্থাপনার সহপ্রধান রজনীশ জিন্দাল দিল্লিতে সংবাদ সম্মেলন করে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, নাগরিক সমাজের এই কর্মসূচি ১০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। ওই দিন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস হিসেবে পালিত হয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশে হিন্দুসহ সব সংখ্যালঘুর ওপর অত্যাচারের ঘটনায় সারা ভারত ক্ষুব্ধ। ওই কর্মসূচিতে দেশের ২০০টির বেশি সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। বাংলাদেশ হাইকমিশনে তারা এক স্মারকলিপি পেশ করবেন। স্মারকলিপি দেবেন জাতিসংঘ, জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের কাছেও। প্রত্যেককে বলা হবে, বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার বন্ধে তারা ব্যবস্থা নিক। সংগঠকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দিল্লির সব বাজার কমিটি, আবাসিক এলাকার বাসিন্দাদের সংগঠন, চিকিৎসক, আইনজীবী, ছাত্রসংগঠন ও দুর্গাপূজা, ছটপূজা, রামলীলার আয়োজক এবং শিখ ধর্মস্থান গুরুদ্বার পরিচালন কমিটির সদস্যদের ওই অভিযানে অংশ নিতে বলা হয়েছে। দেশটির ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের নজিরবিহীন হামলার পরও থেমে নেই আন্দোলন। পশ্চিমবঙ্গসহ বিভিন্ন জায়গায় হিন্দু সংগঠনগুলো প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছে।

দামেস্ক ঘিরে ফেলতে অভিযান শুরু সিরিয়ার বিদ্রোহীদের

সিরিয়ার বিদ্রোহী বাহিনী রাজধানী দামেস্ক ঘিরে ফেলার জন্য তাদের সামরিক অভিযান শুরু করেছে বলে দাবি করেছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মুখপাত্র হাসান আবদুলঘানি টেলিগ্রামে জানিয়েছেন, এই অভিযান তাদের পরিকল্পনার ‘চূড়ান্ত ধাপ’। সংবাদ সিএনএনের। হাসান আবদুলঘানি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর জোটের (হায়াত তাহরির আল শাম) মুখপাত্র। তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য দামেস্ককে পুরোপুরি ঘিরে ফেলা।’ তবে সিএনএন এই দাবির সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি। এ দিকে, সিরিয়ার সামরিক বাহিনী বিদ্রোহীদের এই দাবি নাকচ করে দিয়েছে। সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, দামেস্ক অঞ্চলে তাদের অবস্থান শক্ত রয়েছে এবং তাদের সেনাদের কোন ধরনের পিছু হটার ঘটনা ঘটেনি। সিরিয়ার সামরিক বাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর ছড়ানো মিথ্যা প্রচারণা। এর উদ্দেশ্য হল দামেস্কের উপকণ্ঠে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করা।’ এ দিকে আরেক খবরে বলা হয়েছে, ‘সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের কাছাকাছি চলে এসেছে বিদ্রোহীরা। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকারি বাহিনীকে পিছু হঠিয়ে আলেপ্পো, হামাসহ গুরুত্বপূর্ণ শহর নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর বিদ্রোহীরা এখন দামেস্ক শহরের দিকে যাচ্ছে।’ শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সরকারের নিয়ন্ত্রণ থেকে দারা শহরটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর দামেস্ক থেকে তাদের দূরুত্ব দাঁড়িয়েছে মাত্র ২০ কিলোমিটার (১২ মাইল)। যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের প্রধান রামি আবদেল রহমান বলেন, ‘স্থানীয় বিদ্রোহী যোদ্ধারা এখন দারা প্রদেশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।’ সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমে বিদ্রোহী জোটের নেতৃত্ব দেওয়া কমান্ডার আবদেল ঘানি বলেন, ‘দামেস্কের দক্ষিণ প্রবেশপথ থেকে আমরা ২০ কিলোমিটারের কম দূরত্বে রয়েছি।’ এর আগে গতকাল শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) ইসরায়েলে সীমান্তের কাছে কুইনেত্রা শহরটির নিয়ন্ত্রণ নেয় বিদ্রোহীরা। সিরিয়ার সরকারি বাহিনী ওই এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহারের কথা জানিয়েছে।

প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে নিজের মনোনীত ব্যক্তির ওপরই আস্থা ট্রাম্পের

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে মনোনয়ন দেয়া পিট হেগসেথের প্রতি ফের নিজের সমর্থন জানালেন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হেগসেথের মনোনয়ন নিয়ে সমালোচনার মধ্যে শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) সাক্ষাৎকারে হেগসেথকে বিজয়ী বলেও মন্তব্য করেন তিনি। খবর রয়টার্সের। পিট হেগসেথ সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও ফক্স নিউজের উপস্থাপক। তার বয়স ৪৪ বছর। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলেন এক নারী। এ ছাড়া, তার বিরুদ্ধে আর্থিক অব্যবস্থাপনার অভিযোগও রয়েছে। অন্তত ছয়জন রিপাবলিকান সিনেটর হেগসেথকে পেন্টাগনের শীর্ষ পদে নিশ্চিত করার বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে তাকে সরিয়ে তার জায়গায় ট্রাম্প ফ্লোরিডার গভর্নর ও এক সময়ের প্রতিদ্বন্দ্বী রন ডেস্যান্টিসকে নিয়োগ দেয়ার কথা বিবেচনা করছেন বলে খবর দেয় ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। তবে এবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘পিট হেগসেথ খুব ভাল করছেন। তার সমর্থন দৃঢ় ও গভীর। তিনি একজন চমৎকার, তেজদীপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী হবেন, যিনি অনন্য প্রতিভা ও দক্ষতার সঙ্গে নেতৃত্ব দেবেন। পিট একজন বিজয়ী। তাকে পাল্টানোর মত কিছু ঘটেনি।’ শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) এনবিসির এক অনুষ্ঠানে দেয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প স্বীকার করেছেন, ‘হেগসেথের মনোনয়ন নিয়ে মানুষের মধ্যে কিছুটা উদ্বেগ আছে।’ তবে ট্রাম্পের আশা, সিনেট এ মনোনয়ন নিশ্চিত করবে।

সিরিয়ায় অপহৃত যুক্তরাষ্ট্রের সাংবাদিক অসটিন বেঁচে আছেন

২০১২ সালে সিরিয়াতে অপহৃত যুক্তরাষ্ট্রের সাংবাদিক অসটিন টাইসের মা সাংবাদিকদের বলেছেন যে, তার ছেলে বেঁচে আছে ও ভাল আছে।’ তবে, অসটিন টাইসের মা ডেবরা টাইস যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি। ফ্রীল্যান্স ফটো সাংবাদিক অসটিন টাইস ২০১২ সালের ১৪ আগস্ট দামেস্কের পার্শ্ববর্তী দেরায়ার একটি চেক পয়েন্ট থেকে অপহৃত হন। অপহরণের পর থেকে অসটিন বিষয়ে তেমন কিছু জানা যায়নি। কেবল সেপ্টম্বর মাসে চোখ-মুখ বাধা অবস্থায় এক ভিডিওতে দেখা যায়। যখন তার বয়স ছিল ৩১। অবশ্য অপহরণকারীদের সম্পর্কেও তেমন কিছু জানা যায় না। অসটিন টাইস ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি, ওয়াশিংটন পোস্ট এবং সিবিএস নিউজের পক্ষে সে সময় কাজ করছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ২০২২ সালে টাইসকে আটকে রাখার জন্য সিরিয়াকে অভিযুক্ত করে এবং দ্রুত তার মুক্তির বিষয়ে দেশটিকে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানায়। যদিও সিরিয়া তা অস্বীকার করে। ২০২০ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অসটিন টাইসের বিষয়ে জানতে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাসার আল আসাদকে বার্তা পাঠিয়েছিলেন।

ভারতকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র: বিজেপি

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর ভারতকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ করেছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। ভারতকে অস্থিতিশীল করে তোলার এই চেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের পাশাপাশি মার্কিন অর্থায়নে পরিচালিত ‘ডিপ স্টেটের’ অন্যান্য শক্তিরা একযোগে কাজ করছে। বিজেপি বলছে, ‘এক দল অনুসন্ধানী সাংবাদিক ও ভারতের বিরোধী দলীয় নেতা রাহুল গান্ধী এই তৎপরতায় জড়িত রয়েছেন।’ সংবাদ রয়টার্সের। গত দুই দশকে নয়াদিল্লি ও ওয়াশিংটন নিজেদের মাঝে শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। কিছু মতপার্থক্য ও ভিন্ন অবস্থান থাকা সত্ত্বেও সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে উভয়পক্ষ। এর মাঝেই যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ভারতকে অস্থিতিশীল করে তোলার এই অভিযোগ বিস্ময়কর। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বিজেপি বলেছে, ‘রাহুল গান্ধীর কংগ্রেস পার্টি আদানি গ্রুপের ওপর ফোকাস করে অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক ওসিসিআরপির প্রকাশিত নিবন্ধকে ব্যবহার করেছে এবং সরকারের সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠতাকে কাজে লাগিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের চেষ্টা করছে।’ বিজেপির অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রদপ্তর অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্টে (ওসিসিআরপি) অর্থায়ন করে ভারতকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। ওসিসিআরপি যুক্তরাষ্ট্রের ডিপ স্টেটের কর্মসূচি পরিচালনার হাতিয়ার হিসাবে কাজ করে। ২৬৫ মিলিয়ন ডলারের একটি প্রকল্পের অংশ হওয়ার জন্য ভারতীয় কর্মকর্তাদের ঘুষের অভিযোগে আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি এবং অন্য সাতজনকে গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রে অভিযুক্ত করা হয়েছে। যদিও, এসব অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে আদানি। ওসিসিআরপির সব নিবন্ধে ভারতের রাষ্ট্রীয় মদতপুষ্ট হ্যাকারদের সরকারি সমালোচকদের নিশানা বানানোর জন্য ইসরায়েলের তৈরি পেগাসাস স্পাইওয়্যার ব্যবহার করার অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে, ভারতের সরকার এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এর আগে, ওসিসিআরপি ও ৯২ বছর বয়সী হাঙ্গেরিয়ান-আমেরিকান ব্যবসায়ী ও সমাজসেবী জর্জ সোরোসের সঙ্গে রাহুল গান্ধীর অশুভ আঁতাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছিল বিজেপি। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) ফ্রান্সের এক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বিজেপি বলেছে, ‘ওসিসিআরপিকে অর্থায়ন করে ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএইড) এবং জর্জ সোরোসের মত ‘ডিপ স্টেটের’ অন্যান্য শক্তিরা।’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বিরুদ্ধে একাধিক পোস্ট করে এসব অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) এ রকম এক পোস্টে বিজেপি বলেছে, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিশানা বানিয়ে ভারতকে অস্থিতিশীল করে তোলার পরিষ্কার উদ্দেশ্য রয়েছে ডিপ স্টেটের।’ ‘এই এজেন্ডার পেছনে সব সময়ই মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর...। ওসিসিআরপি ডিপ স্টেটের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য ‘মিডিয়া টুল’ হিসেবে কাজ করেছে।’ তবে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সরকার সাংবাদিকদের পেশাগত উন্নয়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সহায়তা দিয়ে থাকে। তবে, এই সহায়তা সংস্থাগুলোর সম্পাদকীয় সিদ্ধান্ত বা নীতিকে প্রভাবিত করে না।’ ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘এটা হতাশাজনক যে, ভারতের ক্ষমতাসীন দল এই ধরনের অভিযোগ করছে।’ বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র এবং আইনপ্রণেতা সম্বিত পাত্র বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) দলটির আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগের পুনরাবৃত্তি করেছেন। তিনি বলেন, ‘একটি অনুসন্ধানী ফরাসি মিডিয়া গ্রুপ প্রকাশ করেছে যে... ওসিসিআরপির ৫০ শতাংশ অর্থায়ন সরাসরি আসে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে। ওসিসিআরপি যুক্তরাষ্ট্রের ডিপ স্টেটের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য মিডিয়া টুল হিসেবে কাজ করেছে।’ তবে, এসব অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য জানতে জর্জ সোরোস ও কংগ্রেসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাৎক্ষণিকভাবে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। এছাড়া, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বিরুদ্ধে ভারতের ক্ষমতাসীন দলের অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলেও জবাব দেয়নি ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিবৃতিতে ওসিসিআরপি বলেছে, ‘তারা একটি স্বাধীন গণমাধ্যম এবং তাদের সঙ্গে কোন রাজনৈতিক দল যুক্ত নেই। মার্কিন সরকার ওসিসিআরপিকে কিছু তহবিল সরবরাহ করলেও আমাদের সম্পাদকীয় নীতি ও প্রতিবেদনের ওপর তার কোন নিয়ন্ত্রণ নেই।’

বিদ্রোহীদের অভিযান: ‘যত দ্রুত সম্ভব’ নাগরিকদের সিরিয়া ছাড়তে বলল ভারত

সিরিয়ায় চলমান রাজনৈতিক সহিংসতায় উদ্বেগ জানিয়েছে ভারত। এ পরিস্থিতিতে ‘পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত’ দেশটিতে কোন ধরনের ভ্রমণ করা থেকে নাগরিকদের বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছে ভারতের সরকার। শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) রাতে বিবৃতিতে এই পরামর্শ জারি করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সংবাদ এনডিটিভির।বিবৃতিতে, একটি জরুরি হেল্পলাইন নম্বর ও একটি ইমেল আইডি দেয়া হয়েছে। বিবৃতিতে বর্তমানে সিরিয়ায় থাকা ভারতীয়দের দামেস্কেসে ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখতে বলছে মন্ত্রণালয়।’ ভারতের জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘যাদের পক্ষে সম্ভব হবে, তারা যেন দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাণিজ্যিক ফ্লাইটে করে সিরিয়া ত্যাগ করেন। যারা তা পারবেন না, তাদের জন্য নিরাপত্তা সম্পর্কে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন এবং তাদের চলাচল ন্যূনতম পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রাখতে বলছে মন্ত্রণালয়।’শেয়ার করা জরুরি হেল্পলাইন নম্বরটি দামেস্কে ভারতীয় দূতাবাসের জন্য। এটি হল +৯৬৩ ৯৯৩৩৮৫৯৭৩। এই নম্বরটি হোয়াটসঅ্যাপেও ব্যবহার করা যেতে পারে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। এছাড়া, একটি জরুরি ইমেল আইডি দেয়া হয়েছে। যেটি হল hoc.damascus@mea.gov.in৷এ দিকে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানিয়েছেন, সিরিয়ায় প্রায় ৯০ জন ভারতীয় নাগরিক রয়েছেন। যার মধ্যে ১৪ জন জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থায় কাজ করছেন।গেল কয়েক সপ্তাহ ধরে সিরিয়ায় অভিযান চালাচ্ছে বিদ্রোহী বাহিনী। গত এক সপ্তাহে দেশটির বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শহর দখল করে নিয়েছে তারা। বিদ্রোহীদের অভিযান অব্যাহত থাকায় দেশটির ক্ষমতাসীন আসাদ সরকার ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।

দশ বছরে পৃথিবীতে বিলিওনিয়ার বেড়েছে দ্বিগুণেরও অধিক

১০০ কোটি ডলার বা তার চেয়েও অধিক অর্থ-সম্পদ রয়েছে- এমন ব্যক্তিদের বলা হয় ডলার বিলিওনিয়ার। গেল দশ বছরে পৃথিবীজুড়ে ডলার বিলিওনিয়ারের সংখ্যা বেড়েছে দ্বিগুণেরও অধিক। শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) সুইজারল্যান্ডের বৃহত্তম ব্যাংক ইউবিএস প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। সংবাদ এএফপির। ইউবিএসের তথ্যানুসারে, আজ থেকে দশ বছর আগে অর্থাৎ, ২০১৫ সালে বিশ্বে ডলার বিলিওনিয়ারের সংখ্যা ছিল এক হাজার ৭৫৭ জন। বর্তমানে এই সংখ্যা পৌঁছেছে দুই হাজার ৬৮২ জনে। ২০২১ সালে এই সংখ্যা ছিল আরও বেশি দুই হাজার ৬৮৬ জন। বিগত দশ বছরে কোটিপতি ও বিলিওনিয়ারদের মোট সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে ১৪ ট্রিলিয়ন ডলার বা ১২১ শতাংশ। দশ বছরে সবচেয়ে বেশি ফুলে-ফেঁপে উঠেছে প্রযুক্তি ব্যবসায়ের সঙ্গে সম্পর্কিত বিলিওনিয়ারদের সম্পদ। ২০১৫ সালে টেক বিলিওনিয়ারদের মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ৭৮৮ দশমিক নয় বিলিয়ন ডলার। বর্তমানে এই সম্পদের পরিমাণ পৌঁছেছে দুই দশমিক চার ট্রিলিয়ন ডলারে। ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নতুন বিলিওনিয়াররা ই-কমার্স, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ডিজিটাল পেমেন্ট, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, সাইবার নিরাপত্তা, ফিনটেক, থ্রি ডি প্রিন্টিং এবং রোবোটিক্সকে ব্যাপকভাবে বাণিজ্যিকীকরণের আওতায় আনার কারণে তাদের সম্পদের পরিমাণ নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।’ ২০১৫-২০২০ সাল পর্যন্ত বিশ্বে প্রতি বছর বিলিওনিয়ারদের অর্থ-সম্পদ বেড়েছে দশ শতাংশ হারে। তবে, ২০২০ সালে বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাস মহামারির সময় তা অনেক কমে যায়। ওই বছর বিশ্বের বিলিওনিয়ারদের সম্পদ বেড়েছে মাত্র এক শতাংশ। ২০১৫ সালে চীনা বিলিওনিয়ারদের মোট সম্পদ ছিল ৮৮৭ দশমিক তিন বিলিয়ন ডলার; ২০২০ সালে তা বেড়ে পৌঁছায় দুই দশমিক এক ট্রিলিয়ন ডলারে। তবে, ২০২০ সালের পর থেকে কমতে শুরু করে চীনা বিলিওনিয়ারদের সম্পদ। বর্তমানে তা নেমে এসেছে এক দশমিক আট ট্রিলিয়ন ডলারে। অন্য দিকে, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকো- উত্তর আমেরিকার এই তিন দেশের বিলিওনিয়ারদের মোট সম্পদ ২০২০ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে ছয় দশমিক এক ট্রিলিয়ন ডলার বা শতকরা ৫৮ দশমিক পাঁচ ভাগ। ২০২৪ সালে বিশ্বের বিলিওনিয়ারদের তালিকায় যুক্ত হয়েছে আরও ২৬৮ নতুন মুখ। নতুন এই বিলিওনিয়ারদের ৬০ শতাংশই উদ্যোক্তা।

নির্বাচন বাতিলের পর রোমানিয়ায় শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের

রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগের পর দেশটির শীর্ষ আদালত দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বাতিল করার পর যুক্তরাষ্ট্র রোমানিয়ার সব দলকে ‘একটি শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় জড়িত হওয়ার জন্য’ আহ্বান জানিয়েছে। শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) এ আহ্বান জানানো হয়। সংবাদ এএফপির। বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, “আমরা সব পক্ষকে রোমানিয়ার সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা বজায় রাখার এবং রোমানিয়ার জনগণের গণতান্ত্রিক ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটায়- এমন একটি সহিংসতা ও ভীতি প্রদর্শনের হুমকি মুক্ত শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় জড়িত থাকার আহ্বান জানাই।’ রোমানিয়ার সাংবিধানিক আদালত অতি-ডানপন্থী দল ফ্রন্টরানার পক্ষ থেকে নির্বাচনে বিদেশী হস্তক্ষেপের অভিযোগের পর ভোটের মাত্র দুই দিন আগে শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বাতিল করেছে, । রোমানিয়ার ইউরোপীয় ইউনিয়নপন্থী প্রেসিডেন্ট ক্লাউস ইওহানিস বলেছেন, ‘যতক্ষণ না আইনসভা নির্বাচন থেকে উদ্ভূত একটি নতুন সরকার গঠন না করে, ততক্ষণ তিনি তার পদে থাকবেন, যাতে নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা যায়।’ ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র আদালতের সিদ্ধান্তটি নজরে রেখেছে ও রোমানিয়ার প্রতিষ্ঠানের প্রতি আস্থা রেখেছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বিদেশী ক্ষতিকর প্রভাবের তদন্তসহ রোমানিয়ার গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান এবং প্রক্রিয়ার প্রতি আমাদের আস্থা পুনঃনিশ্চিত করেছে।’ গেল ২৪ নভেম্বরের নির্বাচনের প্রথম রাউন্ডে অতি-ডানপন্থী ক্যালিন জর্জস্কু শীর্ষ স্থানীয় হওয়ার পরে রোমানিয়ান কর্তৃপক্ষ আপত্তি জানিয়েছিল। গেল বুধবার (৪ ডিসেম্বর) জর্জস্কু ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে ‘বিশাল’ সোশ্যাল মিডিয়া প্রচার এবং সাইবার আক্রমণসহ অভিযোগের বিশদ বিবরণী নথি প্রকাশ করেছে। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) রাশিয়া নির্বাচনে হস্তক্ষেপের কথা অস্বীকার করেছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা অভিযোগগুলোকে ‘অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করেছেন।

পাকিস্তানে এবার অসহযোগ আন্দোলনের হুঁশিয়ারি ইমরান খানের

পাকিস্তানে ‘চূড়ান্ত বিক্ষোভের’ পর এবার মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছেন কারাগারে বন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। আগামী সপ্তাহে পেশোয়ারে একটি বড় সমাবেশ করতে সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এছাড়া এই সমাবেশের কয়েক দিন পর অসহযোগ আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন পিটিআইয়ের নেতা। সংবাদ রয়টার্সের। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) সামাজিক মাধ্যম এক্সে একটি পোস্টে ১৩ ডিসেম্বর খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের রাজধানী পেশোয়ারে সমর্থকদের এই সমাবেশ করার আহ্বান জানান ইমরান। এই সমাবেশের উদ্দেশ্য ২৫ নভেম্বরে ইমরানের ডাকা ‘চূড়ান্ত বিক্ষোভ’ প্রতিবাদ মিছিলে সরকারের বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানানো। ওই বিক্ষোভে সরকারের সঙ্গে সংঘর্ষে তার সমর্থকদের মধ্যে ১২ জন নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেন ইমরান।এছাড়া গেল বছরের ৯ মে সহিংসতায় আটজন নিহত হয়েছেন। গ্রেফতার করা হয়েছে অসংখ্য নেতাকর্মীকে। নিহতদের ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের পাশাপাশি গ্রেফতার হওয়া কর্মীদের মুক্তি দেয়ার দাবিও তুলেছেন ইমরান। এই দুইটি দাবি যদি পূরণ করা না হয় তাহলে ১৪ ডিসেম্বর থেকে পাকিস্তানে অসহযোগ আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। এ দিকে, সরকার ২৫ নভেম্বরের বিক্ষোভে কোন মৃত্যু হয়নি বলে জানিয়েছে। উল্টো ৯ মে সামরিক স্থাপনায় ইমরান খানের সমর্থকদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তুলেছে। ৯ মে সমর্থকদের হামলার নির্দেশনার অভিযোগে সম্প্রতি ইমরান খানকে অভিযুক্ত করা হয়েছে; যা তিনি অস্বীকার করেছেন।গেল বছরের শেষ থেকে কারাগারে থাকা ৭২ বছর বয়সী সাবেক ক্রিকেট তারকার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলার মধ্যে এই অভিযোগটি ছিল সর্বশেষ।এই মামলাগুলো তাকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে করা হয়েছে বলে অভিযোগ ইমরান ও তার দলের।

সিরিয়ার বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার আহ্বান ব্লিঙ্কেনের

সিরিয়ায় বেসামরিক নাগরিক ও সংখ্যালঘু সমাপ্রদায়ের লোকজনকে সুরক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এন্টনি ব্লিঙ্কেন। বিদ্রোহীরা একের পর এক এলাকা প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বাহিনীর কাছ থেকে দখলে নেয়ার প্রেক্ষিতে ব্লিঙ্কেন শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) তিন এই আহবান জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, ‘তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রী হাকান ফিদানের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপকালে ব্লিঙ্কেন সিরিয়ায় চলমান সংঘের্ষের কারণে বোসামরিক নাগরিকসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকদের সুরক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। ব্লিঙ্কেন চলমান সংঘাতের রাজনৈতিকভাবে সমাধানের বিষয় নিয়েও আলোচনা করেছেন।’

বৃদ্ধাশ্রমে প্রেমের পর বিয়ের পিঁড়িতে, কনের বয়স ১০২-বরের ১০০

বেশি বয়স হয়ে গেলে নাকি বিয়েতে মানা! এ নিয়ে ‘বুড়ো বয়সে ভীমরতি’ ধরনের বহু বাগধারারই প্রচলন আছে আমাদের সমাজে। কিন্তু, এসব নিয়ম, কথাবার্তাকে থোড়াই কেয়ার করে সবচেয়ে বেশি বয়সে বিয়ে করে রেকর্ড গড়লেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক বার্নি লিটম্যান (১০০) ও মার্জোরি ফিটারম্যান (১০২)! তাদের দুইজনের মোট বয়স ২০২ বছর ২৭১ দিন। সংবাদ ফক্স নিউজের। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়। পেন্সিলভেনিয়া রাজ্যের শতবর্ষী এই দম্পতির প্রেমের গল্প ফিলাডেলফিয়ার একটি বৃদ্ধাশ্রম থেকে থেকে শুরু হয়। নয় বছর আগে তাদের দেখা হয় ও দ্রুত প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গেল ১৯ মে এই দম্পতি বিয়ে করেন।বার্নি ও মার্জরি উভয়ই ছয় দশক ধরে সঙ্গীহীন ছিলেন। তরুণ বয়সে তারা একসঙ্গে পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনাও করেন। তবে, তখন তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল না। বার্নি পেশায় একজন প্রকৌশলী ছিলেন। অন্য দিকে, মার্জোরি ছিলেন একজন শিক্ষক। বার্নিয়ের নাতনি জেউইশ ক্রনিকল বলেন, ‘আমার ১০০ বছর বয়সী দাদা তার ১০২ বছর বয়সী বান্ধবীকে বিয়ে করেছেন! তারা একটি বৃদ্ধাশ্রমে একই তলায় থাকতেন। তারা দুইজনই ৬০ বছরের বেশি সময় ধরে সঙ্গীহীন ছিলেন।’

এবার দিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশন অভিমুখে প্রতিবাদ মিছিলের ঘোষণা

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু ‘নির্যাতনের’ অভিযোগ এনে ফায়দা তোলার রাজনীতিতে নেমেছে ভারতের রাজনৈতিকদলগুলো। এমন প্রতিবেদনে সামনে এনেছে আনন্দবাজার। শাসকদল বিজেপি থেকে শুরু করে কংগ্রেস এমনকি বামফ্রন্টও সুবিধা নিতে মরিয়া। দেশটির ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের নজিরবিহীন হামলার পরও থেমে নেই আন্দোলন। পশ্চিমবঙ্গসহ বিভিন্ন জায়গায হিন্দু সংগঠনগুলো প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছে। এবার আগামী ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশে সংখ্যালঘু ‘নির্যাতনের’ অভিযোগে নয়াদিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশন অভিমুখে প্রতিবাদ মিছিলের ঘোষণা দিয়েছে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের (আরএসএস)। শুক্রবার এ ঘোষণা দেন সংগঠনটির দিল্লি ইউনিটের জনসংযোগ কর্মকর্তা রজনিশ জিন্দাল। এ ছাড়া ১০ ডিসেম্বর নাগপুরে মিছিল ও মোটরসাইকেল র‍্যালি বের করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। কর্মসূচি নিয়ে জিন্দাল বলেন, আমরা বাংলাদেশ দূতাবাসে স্মারকলিপি জমা দেব। আমরা জাতিসংঘ, ইউএনএইচআরসি, ডব্লিউএইচও, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং এডিবিসহ সব আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দেব, যাতে তারা বাংলাদেশে হিন্দুদের বিরুদ্ধে চলমান নৃশংসতা ও সহিংসতা বন্ধে অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করার দাবি জানায়। এদিকে বাংলাদেশ ও ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জীবন-জীবিকার ওপর হামলা বন্ধের দাবি জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের বামফ্রন্ট। বামফ্রন্ট কলকাতা জেলা কমিটির ডাকে শুক্রবার এক প্রতিবাদ মিছিল থেকে এ দাবি জানায় দলটি। বামফ্রন্টের দাবি, বাংলাদেশ ও ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জীবন-জীবিকার ওপর আক্রমণ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। মিছিলের নেতৃত্ব দেন বামফ্রন্টের শরিক দল সিপিএমের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমসহ বামফ্রন্টের শরিক দলের নেতা–কর্মীরা। আরেক মিছিল থেকে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিধায়ক ও বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, ‘আমরা চাই অবিলম্বে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার হিন্দু নির্যাতন বন্ধ করুক।’ শুক্রবার বিকেলে কলকাতার শ্যামবাজারের বিজেপির সহযোগী সংগঠন ‘সনাতনী সমাজ’ এর এক প্রতিবাদ মিছিল থেকে এ দাবি জানান তিনি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের আরেক বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ‘হিন্দু নিপীড়ন’ নিয়ে ঘৃণা ছড়ানোর অভিযোগে সাবেক বিজেপি নেতা ও কর্ণাটকের সাবেক উপমুখ্যমন্ত্রী কে এস ঈশ্বরাপ্পার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এই মামলা করেছে কংগ্রেসশাসিত কর্ণাটক রাজ্যের পুলিশ।

বাংলাদেশ নিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য, সাবেক উপ-মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা

বাংলাদেশ নিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের সাবেক উপ-মুখ্যমন্ত্রী ও বহিস্কৃত বিজেপি নেতা কে এস ঈশ্বরাপ্পার বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার এক সমাবেশে তিনি এই বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দেয়ায় শুক্রবার (০৬ ডিসেম্বর) এই মামলাটি হয়েছে। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, বাংলাদেশে হিন্দুদের কথিত আটকের প্রতিবাদে সম্প্রতি ভারতের হিন্দু হিতরক্ষাণ সমিতি, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং বজরং দল আয়োজিত এক সমাবেশে ঈশ্বরাপ্পা ঘৃণামূলক ভাষণ দেন। পাশাপাশি তিনি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনাও করেন। সেই বক্তৃতার একটি ভিডিও ফুটেজও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। এরপরই তার নামে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ ওঠে। সমাবেশের পর কংগ্রেসশাসিত রাজ্য কর্ণাটকের শিবমোগা জেলার কোটে থানা পুলিশ শুক্রবার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ মামলা দায়ের করে।এর আগে গত ১৬ নভেম্বর এই নেতার বিরুদ্ধে মুসলমানদের হুমকি দেয়া ও উস্কানিমূলক মন্তব্য করার অভিযোগে আরেকটি মামলা হয়। চলতি বছরের শুরুর দিকে শিবমোগা লোকসভা আসন থেকে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করায় ঈশ্বরাপ্পাকে ছয় বছরের জন্য বহিষ্কার করে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। গত আগস্টে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর কথিত হামলার বিষয়ে একের পর এক বিবৃতি দিয়ে আসছে ভারত সরকার। এ নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে অতিরঞ্জিত করে বিভিন্ন খবরও প্রকাশ করা হচ্ছে। তবে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার বরাবরই ভারতের এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। সরকার বলছে, সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে প্রচুর অপতথ্য বা ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে।

জলবায়ু দুর্যোগে বিশ্বজুড়ে ক্ষয়ক্ষতি ৩১ হাজার কোটি ডলার

তাপপ্রবাহ, খরা, অতি-বর্ষণ, ঘূর্ণিঝড়সহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে অন্তত ৩১ হাজার কোটি ডলার আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি ও সম্পদ ধ্বংস হয়েছে। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক আন্তর্জাতিক বিমা ও পুনর্বিমা সংস্থা সুইস রে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ডের। সংস্থার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের তুলনায় এ বছর বিশ্বজুড়ে ঘটা প্রাকৃতিক দুর্যোগের হার ছিল ছয় শতাংশ বেশি। ফলে চলতি বছর ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে গত বছরের চেয়ে অধিক। সুইস রে’র হিসেব অনুযায়ী, গত বছরের তুলনায় ২০২৪ সালে ১৩ হাজার ৫০০ কোটি ডলার বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে শুধু বিমাকৃত সম্পদকে ধরা হয়েছে। বিমার বাইরের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও অনেক বেশি। সুইস রে’র দুর্যোগ ও বিপর্যয় বিভাগের প্রধান বাল্জ গ্রোলিমুন্ড জানান, গ্রামাঞ্চলের তুলনায় শহরাঞ্চলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি। যেসব স্থাবর সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সেসব পুনঃনির্মাণেও ব্যয়ও অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর বেশি পড়েছে বলে উল্লেখ করেছেন বাল্জ। বৈশ্বিক বিভিন্ন জলবায়ু সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সাল ছিল বিশ্বের মানব ইতিহাসের সবচেয়ে উষ্ণ বছর। চলতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে যেমন টানা ও দীর্ঘ তাপপ্রবাহ ও খরা দেখা গেছে, তেমনি নানা দেশে হয়েছে বিধ্বংসী ও ব্যাপক বন্যা। সুইস রে’র রেকর্ড বলছে, বন্যার কারণে চলতি বছর শুধু ইউরোপে ধ্বংস হওয়া সম্পদের আর্থিক মূল্য এক হাজার কোটি ডলারের বেশি। চলতি বছর ইউরোপে যেসব বন্যা হয়েছে, সেসবের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় বরিসের প্রভাবে মধ্য ইউরোপের বন্যা ও সেপ্টেম্বরে স্পেনে বন্যা ছিল সবচেয়ে বিধ্বংসী। স্পেনে বন্যায় নিহত হয়েছেন অন্তত ২৩০ জন মানুষ। ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলে হেলেন ও মিল্টন নামে বড় দু’টি হারিকেন আঘাত হেনেছে। শুধু এ দু’টি ঝড়ের জেরে দেশটির ধ্বংস হওয়া সম্পদের আর্থিক মূল্য অন্তত ৫০০ কোটি টাকা। এছাড়া চলতি বছরের যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে যেসব হারিকেন এবং টর্নেডো আঘাত হেনেছে, তাতেও লোকসান হয়েছে শত শত কোটি ডলার। সামনের দিনগুলোতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছেন বাল্জ গ্রোলিমুন্ড। বিবৃতিতে তিনি বলেন, “প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধে যদি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেয়া হয় এবং জলবায়ুর পরিবর্তন রোধে যদি বৈশ্বিক তৎপরতায় গতি না আসে, তাহলে সামনের দিনগুলোতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে।”

ইসরায়েলি হামলায় আরও অর্ধশত ফিলিস্তিনি নিহত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় থামছেই না ইসরায়েলি বর্বরতা। দখলদার দেশটির হামলায় একদিনে আরও অর্ধশতও মতো ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। নতুন মৃতদের নিয়ে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪ হাজার ছয় শ পেরিয়েছে। গাজার শরণার্থী শিবির ও হাসপাতাল এলাকায় এই হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। খবর আল জাজিরার। ওয়াফা নিউজ এজেন্সির বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটির খবরে বলা হয়েছে, মধ্য গাজার নুসিরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলায় ছয় শিশু ও পাঁচ নারীসহ ২০ জনেরও বেশি নিহত হয়েছেন। গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি জানিয়েছে, উত্তর গাজার বেইত লাহিয়ায় কামাল আদওয়ান হাসপাতালের কাছে ধারাবাহিক বিমান হামলায় অন্তত ২৯ জন নিহত হয়েছেন। উদ্ধারকারীরা যেতে না পারায় অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন। ইসরায়েলি ট্যাংক এবং ড্রোনগুলো কামাল আদওয়ানের চারপাশে ‘যেকোনো চলন্ত বস্তু দেখলে গুলি করছে’ সেটি হাসপাতালের ভেতরে হোক বা কাছাকাছি। গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলায় এ পর্যন্ত ৪৪ হাজার ৬১২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন এক লাখ ৫ হাজার ৮৩৪ জন। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকাজুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর হামলার কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৭০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।

বাংলাদেশি রোগী কমেছে ৭০ শতাংশ, কলকাতার হাসপাতাল ব্যবসায় ধাক্কা

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরার কয়েকটি হাসপাতাল এবং কয়েকজন চিকিৎসক 'বাংলাদেশি রোগী দেখব না' বলে যে ঘোষণা দিয়েছেন, তার বিরোধিতা করছেন কলকাতার কয়েকটি বড় হাসপাতাল ও ডাক্তারদের একটা বড় অংশ। চিকিৎসকদের ও হাসপাতালগুলোর সংগঠনও বলছে যে, রোগীদের কোনো জাত, ধর্ম না দেখেই চিকিৎসা করা তাদের কর্তব্য।পূর্ব ভারতের বেসরকারি হাসপাতালগুলোর সংগঠন জানাচ্ছে, বাংলাদেশের রোগী আসা প্রায় ৭০% কমে গেছে। যেসব হাসপাতাল বাংলাদেশি রোগীদের ওপরে অনেকটাই নির্ভরশীল ছিল, তাদের কাছে এটা বড় ধাক্কা।তবে শুধু পশ্চিমবঙ্গ বা ত্রিপুরা নয়, বাংলাদেশি রোগী আসা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়ায় ভারতের সব হাসপাতালেই তার প্রভাব পড়ছে।কলকাতার ও আগরতলার একটি করে হাসপাতাল ঘোষণা করেছে যে, সেখানে বাংলাদেশি রোগীদের তারা চিকিৎসা করবে না। কলকাতা এবং শিলিগুড়ির দুজন চিকিৎসকও সেই একই ঘোষণা করেছেন।'দেশের সম্মান সবার ওপরে'বাংলাদেশে যে ব্যাপকভাবে তাদের কথায় 'ভারত-বিরোধিতা' চলছে, সেই প্রেক্ষিতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা– এমনটাই জানা যাচ্ছে সংবাদমাধ্যমের খবরে।কলকাতার জে এন রায় হাসপাতালের পরিচালক শুভ্রাংশু ভক্ত সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, ‘দেশ সবার ওপরে। তার ওপরে কিছুই হতে পারে না। চিকিৎসা পরিষেবা একটি মহৎ পেশা, কিন্তু দেশের সম্মান সবার ওপরে।’ তিনি এও বলেন যে, অন্যান্য হাসপাতালগুলোও তাদের পথেই হাঁটবে বলে তার আশা।এই হাসপাতালটির পরিচালনার সঙ্গে কলকাতার বিজেপি নেতা ও কলকাতা পৌর নিগমের কাউন্সিলর সজল ঘোষ জড়িত আছেন বলে চিকিৎসকমহল জানাচ্ছে।এর পরে কলকাতার ও শিলিগুড়িও দুজন চিকিৎসকও বাংলাদেশি রোগী দেখবেন না বলে সামাজিক মাধ্যমে ঘোষণা করেছিলেন।আবার ত্রিপুরার আগরতলায় আইএলএস হাসপাতালে প্রচুরসংখ্যক বাংলাদেশি রোগী আসতেন। সেখানে একটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠন দিন কয়েক আগে দাবি সনদ পেশ করে যাতে ওই হাসপাতালে কোনো বাংলাদেশি রোগীকে পরিষেবা না দেওয়া হয়।আইএলএস আগরতলার প্রধান নির্বাহী অফিসার গৌতম শইকিয়া গণমাধ্যমের সামনেই ঘোষণা করেন যে, তারা ওই সংগঠনটির দাবি মেনে বাংলাদেশি রোগীদের সব পরিষেবা দেওয়া বন্ধ রাখছেন।'ডাক্তার হিসেবে এটা বলা যায় না'কলকাতার একটি হাসপাতাল ও দুজন চিকিৎসকের বাংলাদেশি রোগী না দেখার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন চিকিৎসকও। ‘একজন চিকিৎসক হিসেবে কোনো বিশেষ দেশের বা বিশেষ ধর্মের রোগী দেখব না এটা বলা যায় না। ডাক্তার হতে গেলে যে শপথ নিতে হয়, এ ধরনের কথা তার পরিপন্থী। একজন অপরাধীও আমাদের কাছে রোগী হিসাবে এলে তার চিকিৎসা করাটাই আমাদের অন্যতম শপথ।’পশ্চিমবঙ্গের সরকারি চিকিৎসকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টর্সের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক ডা. মানস গুমটা। তার কথায়, ‘এটা একজন ডাক্তার হিসেবে এবং সংগঠন হিসেবে নৈতিকভাবে আমরা বলতে পারি না ঠিকই, কিন্তু যে অল্প কয়েকজন ডাক্তার এরকম ঘোষণা করেছেন, তারা গভীর মানসিক যন্ত্রণা থেকেই এরকম বলেছেন বলে আমার ধারণা। বাংলাদেশে যা ঘটছে, তাতে বিচলিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে– সেই যন্ত্রণা থেকেই হয়ত কয়েকজন ডাক্তার বা হাসপাতাল এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’অ্যাসোসিয়েশন অফ হসপিটালস্ অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার প্রেসিডেন্ট ও কলকাতার উডল্যান্ডস হসপিটালের প্রধান নির্বাহী অফিসার রূপক বড়ুয়া বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, ‘একজন রোগী তো রোগীই– তার তো কোনো জাত, ধর্ম থাকতে পারে না। আমাদের দায়িত্ব তিনি এলে তাকে চিকিৎসা দিতে হবে। বাংলাদেশি রোগী দেখব না, এটা বলা যায় না।’ ‘ভাবাবেগ থাকতেই পারে, কিন্তু কোনো ঘটনার দায় তো বাংলাদেশের সবার ওপরে চাপিয়ে দেওয়া যায় না। আমাদের অ্যাসোসিয়েশনে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার পর্যায়তেও আসেনি।’হাসপাতাল ব্যবসায় ধাক্কাবাংলাদেশি রোগীদের ভারতে আসা ব্যাপকভাবে কমে গেছে আগস্ট মাস থেকে। রূপক বড়ুয়া বলছিলেন, ‘আগে প্রতি মাসে গড়ে ভারতের মেডিক্যাল ভিসা দেওয়া হতো ২০-২৫ হাজার। এখন সেটা কমে দাঁড়িয়েছে ৭০০ থেকে এক হাজার। তাও মূলত নতুন রোগী নয় – পুরনো রোগী– যাদের চেকআপ ইত্যাদি আছে, তারাই ভিসা পাচ্ছেন। তাই পুরো ভারতের হাসপাতাল শিল্পের ওপরেই বড় ধাক্কা এসেছে।’ভারতের অন্যতম বৃহৎ হাসপাতাল গোষ্ঠী মনিপাল হসপিটালসের পূর্বাঞ্চলীয় চিফ অপারেটিং অফিসার ডা. অয়নাভ দেবগুপ্তর কথায়, ‘এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে, বাংলাদেশে অস্থিরতার কারণে সেখান থেকে বহু রোগী ভারতের হাসপাতালগুলোতে আসতে পারছেন না। আমাদের হাসপাতালগুলোতেও বহির্বিভাগ এবং রোগী ভর্তি কমে গেছে। কিন্তু আগে থেকে ঠিক করে রাখা কোনো অপারেশন আমাদের পিছিয়ে দিতে হয়নি।’‘তবে আমাদের যারা পুরনো রোগী, তাদের চিকিৎসায় যাতে ছেদ না পড়ে, সেজন্য আমরা টেলি-মেডিসিনের ব্যবস্থা করেছি। অনলাইন কনসাল্টেশনের সংখ্যাটা বাড়ছে,’ জানিয়েছেন ডা. দেবগুপ্ত।গত বছর ভারতে চিকিৎসা নিতে বাংলাদেশ থেকে এসেছিলেন প্রায় সাড়ে চার লাখ মানুষ। ভারতে যত বিদেশি নাগরিক চিকিৎসা করাতে আসেন, তাদের মধ্যে বাংলাদেশিরাই সর্বাধিক। -বিবিসি বাংলা

শিগগিরই বাংলাদেশ-পাকিস্তান সরাসরি ফ্লাইট চালু হচ্ছে

পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি ফ্লাইট চালু হচ্ছে শিগগিরই। দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটির বন্দরনগরী করাচিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার এই ঘোষণা দিয়েছেন। এর ফলে উভয় দেশ এবং দেশের মধ্যকার ব্যবসায়িক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন। করাচিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার এস এম মাহবুবুল আলম জানিয়েছেন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট শিগগিরই চালু হবে, যা দুই দেশ এবং উভয় দেশের ব্যবসায়িক সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্পর্ককে উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী করবে। তিনি আরও জানিয়েছেন, হায়দ্রাবাদ চেম্বার অব স্মল ট্রেডার্স অ্যান্ড স্মল ইন্ডাস্ট্রির (এইচসিএসটিএসআই) সহযোগিতায় হায়দ্রাবাদে দুই দেশের আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকদের জন্য একটি প্রদর্শনীরও আয়োজন করা হবে। এছাড়া মাহবুবুল আলম ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য বার্ষিক বাণিজ্য প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের জন্য পাকিস্তানের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কেও আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য এই ইভেন্টে পাকিস্তানের ব্যবসায়ীদের অংশগ্রহণের সুবিধার্থে তাদের ভিসা প্রক্রিয়া সহজতর করা হবে। এক্সপ্রেস ট্রিবিউন বলছে, হায়দ্রাবাদ চেম্বার পরিদর্শনকালে বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানোর সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর ওপর জোর দিয়েছেন। এসময় তিনি পাকিস্তানের ব্যবসায়ীদের কাছে বাংলাদেশকে অত্যন্ত আকর্ষণীয় বাজার হিসেবে বর্ণনা করেন এবং এইচসিএসটিএসআইকে ঢাকায় তাদের একটি প্রতিনিধি দল পাঠাতে বলেন। তিনি ব্যবসায়ীদের ভিসা প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ ও ত্বরান্বিত করারও প্রতিশ্রুতি দেন। মাহবুবুল আলম উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ তার পণ্য ৮০টি দেশে রপ্তানি করে বিলিয়ন ডলার রাজস্ব আয় করছে। তবে, তিনি পাকিস্তানের সাথে শক্তিশালী বাণিজ্য সম্পর্কের মাধ্যমে উভয় দেশের সম্পর্ক আরও সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। অনুষ্ঠানে এইচসিএসটিএসআই-এর সভাপতি মুহাম্মদ সেলিম মেমন বলেন, পাকিস্তান-বাংলাদেশ সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, সংস্কৃতি ও বাণিজ্যের মধ্যে নিহিত। তিনি উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্কের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির কথাও এসময় তুলে ধরেন। এছাড়া ইতিহাসে প্রথমবারের মতো গত ১১ নভেম্বর পাকিস্তান থেকে সরাসরি কার্গো জাহাজ বাংলাদেশে পৌঁছানোর বিষয়টিকে তিনি মাইলফলক হিসেবেও উল্লেখ করেন। মেমন এসময় বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের পাকিস্তানের প্রদর্শনীতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানান এবং পাশাপাশি হাইকমিশনকে বাংলাদেশে এক্সপোতে যোগদানের জন্য পাকিস্তানি ব্যবসায়ীদের যথাযথ সুবিধা নিশ্চিতেরও আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এই ধরনের উদ্যোগ উভয় দেশের বৃহত্তর বাণিজ্য সহযোগিতার পথ আরও প্রশস্ত করবে। এছাড়া তিনি ঢাকায় শুল্ক ছাড়পত্রে পাকিস্তানি পণ্য রপ্তানিকারকরা যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন সেগুলো তুলে ধরেন এবং সমস্যার দ্রুত সমাধানের আহ্বান জানান। এই থরনের প্রক্রিয়াগুলো আরও সুগম করার জন্য একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের সুপারিশও করেন মুহাম্মদ সেলিম মেমন।

ভারতে ১৪ ভুয়া ডাক্তার গ্রেপ্তার

অষ্টম শ্রেণি পাস না করেও হওয়া যায় ডাক্তার। আর এজন্য খরচ করতে হয় ৭০ হাজার রুপি। ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটে এমনই এক গ্যাংয়ের খোঁজ মিলেছে। তারা অর্থের বিনিময়ে মেডিকেল ডিগ্রি প্রদান করত। যার পুরোটাই ভুয়া। অভিযুক্তরা অর্থের বিনিময়ে বোর্ড অব ইলেকট্রো হোমিওপ্যাথিক মেডিসিনের ডিগ্রি দিতো। তল্লাশি চালিয়ে শতাধিক আবেদনপত্র, ভুয়া সার্টিফিকেট ও স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৪ ভুয়া চিকিৎসককে। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। সংবাদমাধ্যম বলছে, গুজরাটের সুরাটে ভুয়া মেডিকেল ডিগ্রির চক্রের খোঁজ মিলেছে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা ডেটাবেসে ১২০০ ভুয়া ডিগ্রির হদিস মিলেছে। সেই তথ্যসূত্র ধরেই ১৪ জন ভুয়া চিকিৎসককেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা সকলেই ওই গ্যাংয়ের কাছ থেকে ভুয়া ডিগ্রি কিনেছিল এবং সেই ডিগ্রি দেখিয়েই চিকিৎসক হিসেবে কাজ করছিল। গোটা ঘটনার মূল অভিযুক্ত ড. রমেশ গুজরাটিকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মূলত অর্থের বদলে বোর্ড অব ইলেকট্রো হোমিওপ্যাথিক মেডিসিনের ডিগ্রি দিতো অভিযুক্তরা। তল্লাশি চালিয়ে শতাধিক আবেদনপত্র, ভুয়া সার্টিফিকেট ও স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, কিছু চিকিৎসক ভুয়া ডিগ্রি নিয়ে অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা করছেন বলে তাদের কাছে খবর আসে। পরে রাজস্ব বিভাগকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশ হানা দেয় শহরের বিভিন্ন ক্লিনিকে। সেখানেই ভুয়া এসব ডাক্তারদের হদিস মেলে। বোর্ড অব ইলেকট্রো হোমিওপ্যাথিক মেডিসিনের যে ডিগ্রি দিতো অভিযুক্তরা, আদতে গুজরাট সরকার এমন কোনও ডিগ্রিই দেয় না। অভিযুক্তরা ভুয়া ওয়েবসাইটে তাদের ডিগ্রির রেজিস্ট্রেশন দেখাত। মূল অভিযুক্ত মনগড়া এই বোর্ড তৈরি করে ভুয়া ডিগ্রি দিচ্ছিল অর্থের বিনিময়ে। ‘ইলেকট্রো-হোমিওপ্যাথি’র প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য ৫ জন কর্মীও রাখা হয়েছিল। তিন বছরের কম সময়েই ডিগ্রি কোর্সের মেয়াদ শেষ হয়ে যেত। ভুয়া চিকিৎসকরাও আবার কম যান না। সাধারণ মানুষ ইলেকট্রো-হোমিওপ্যাথিতে বিশ্বাস করছেন না দেখে দাবি করেন, গুজরাটের আয়ুষ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ এই বোর্ড। ভুয়া সার্টিফিকেট দেখিয়ে হোমিওপ্যাথি, অ্যালোপ্যাথি, আরোগ্য প্রাকটিস করতেন তারা। এই ভুয়ো সার্টিফিকেট আবার বছর বছর রিনিউ করতে হতো। এর জন্য ৫ হাজার থেকে ১৫ হাজার রুপি চার্জ নেওয়া হত। যে ভুয়া চিকিৎসকরা এই টাকা দিতেন না, তাদের এই ডিগ্রি গ্যাং হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি নানাভাবে ভয়-ভীতি দেখাত বলেও অভিযোগ রয়েছে।

২৪ ঘণ্টায় গাজায় আরও ৪৮ ফিলিস্তিনি নিহত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হামলায় একদিনে আরও অন্তত ৪৮ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ২০১ জন। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা প্রায় ৪৪ হাজার ৬০০ জনে পৌঁছেছে। এছাড়া গত বছরের অক্টোবর থেকে চলা এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু। এতে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলায় কমপক্ষে আরও ৪৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে গত বছরের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৪ হাজার ৫৮০ জনে পৌঁছেছে বলে বৃহস্পতিবার অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিরলস এই হামলায় আরও অন্তত এক লাখ ৫ হাজার ৭৩৯ জন ব্যক্তিও আহত হয়েছেন। মন্ত্রণালয় বলেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত আগ্রাসনে ৪৮ জন নিহত এবং আরও ২০১ জন আহত হয়েছেন। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন কারণ উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকা জুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

আসামে চার বাংলাদেশি গ্রেফতার

ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের বাংলাদেশ লাগোয়া সীমান্ত এলাকা থেকে চার বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করেছে দেশটির পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) আসাম পুলিশ ওই চার বাংলাদেশিকে গ্রেফতারের তথ্য জানায়। গ্রেফতারকৃত চার বাংলাদেশি হলেন রুমানা শেখ, মো. বাদশা শেখ, রোকসানা খাতুন ও আয়েশা খাতুন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে দেওয়া বার্তায় আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছেন, ‘ভারতীয় ভূখণ্ডে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে আসাম পুলিশ চার বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করেছে। পরে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের হস্তান্তর করা হয়।‘ পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা সীমান্তে টহল উল্লেখযোগ্যভাবে জোরদার করেছে। আসাম পুলিশের বরাত দিয়ে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম নর্থইস্ট টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘গত আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৬১ বাংলাদেশিকে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেফতারের পর ফেরত পাঠানো হয়েছে।’

বাংলাদেশিদের নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলেন ত্রিপুরার হোটেল মালিকরা

বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপর জারি করা নিষেধাজ্ঞা শিথিলের ঘোষণা দিয়েছে ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার হোটেল ও রেস্টুরেন্ট মালিকরা। ব্যবসায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বিবৃতিতে অল ত্রিপুরা হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (এটিএইচআরওএ) নিষেধাজ্ঞা শিথিলের ঘোষণা দিয়েছে। সংবাদ দ্য স্টেটসম্যানের। ত্রিপুরা ও কলকাতার বেশিরভাগ হোটেল ও রেস্তোরার ব্যবসায়ের প্রধান গ্রাহক বাংলাদেশি পর্যটকরা। পরিস্থিতি বুঝতে পেরে এটিএইচআরওএ বলেছে, ‘মেডিকেল ভিসাধারী বাংলাদেশি নাগরিকদের ত্রিপুরার হোটেল ও রেস্টুরেন্টে আতিথেয়তা দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।’ এর আগে, সোমবার (২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর কথিত নিপীড়ন ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতারসহ ভারতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগে ত্রিপুরায় বিক্ষোভ করেন ভারতের কট্টর হিন্দুত্ববাদী বিভিন্ন সংগঠনের কর্মী-সমর্থকরা। এমনকি, ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হামলা-ভাঙচুর ও বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননার ঘটনা ঘটে। সেদিনই বাংলাদেশি নাগরিকদের ত্রিপুরার কোন হোটেল ও রেস্তোরাঁয় জায়গা দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা দেয় এটিএইচআরওএ। ত্রিপুরায় বাংলাদেশি নাগরিকদের সঙ্গে কোন ধরনের দুর্ব্যবহারের ঘটনা ঘটেনি জানিয়ে এটিএইচআরওএ বলেছে, ‘জাতীয় সংবেদনশীলতা ও আতিথেয়তার নীতির মাঝে ভারসাম্য বজায় রাখার স্বার্থে আমাদের ঘোষিত নিষেধাজ্ঞা সংশোধন করা হয়েছে। আমরা মেডিকেল ভিসাধারী বাংলাদেশি অতিথিদের স্বাগত জানাব ও ত্রিপুরায় তাদের যথাযথ আবাসনসহ সেবা নিশ্চিত করব।’ এর আগে, চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়া বাংলাদেশি রোগীদের বয়কট না করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে দেশটির চিকিৎসকদের কেন্দ্রীয় সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (আইএম)। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) কলকাতায় সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটির পশ্চিমবঙ্গ শাখা। সংবাদ সম্মেলনে আইএমএর পশ্চিমবঙ্গ শাখার সদস্য ও চিকিৎসক এন কাঞ্জিলাল ও কৌশিক চৌধুরী বলেন, ‘চিকিৎসা নিতে পশ্চিমবঙ্গে আসা রোগীদের দেশের জাতীয় পতাকা প্রণাম করে ঢোকা ও রোগী না দেখা চিকিৎসা নিয়মের পরিপন্থি। চিকিৎসকদের কাছে সব রোগী রোগীই। চিকিৎসকদের কাছে রোগীদের কোনো জাত, ধর্ম ও দেশ হয় না। ভারতে আসা বাংলাদেশি রোগীদের কোনভাবেই চিকিৎসা বন্ধ কিংবা হয়রানি করা যাবে না। বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা দিতেই হবে।’

যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা নিষেধাজ্ঞা দিল চীন

যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে চীন। সেমিকন্ডাক্টর তৈরিতে ব্যবহৃত একটি দুর্লভ খনিজ উপাদান রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে দেশটি। তাইওয়ানের কাছে অস্ত্র বিক্রি করায় বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) দেশটির ওপর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপেরও ঘোষণা দিয়েছে চীন। যুক্তরাষ্ট্রের ১৩টি প্রতিরক্ষা কোম্পানি ও ছয় নির্বাহীর বিরুদ্ধে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে জানানো হয়েছে।দক্ষিণ চীন সাগর ও ইউক্রেন ইস্যুতে গত কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সম্পর্ক উত্তপ্ত। এরই মধ্যে চীনের উত্থান ঠেকাতে গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিপণ্য রফতানিতে বেশ কয়েক দফা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।গেল সোমবার (২ ডিসেম্বর) চীনের কাছে সেমিকন্ডাক্টর বা চিপ বিক্রিতে নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি সেমিকন্ডাক্টর চীনের হাতে গেলে তা দিয়ে চীন নতুন অস্ত্র ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবস্থার উন্নতি করতে পারে। সেই সঙ্গে চীনের বিভিন্ন কোম্পানির কাছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি বিক্রির ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়।জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা নেয়ার পর ২০২২ সালের অক্টোবরে চীনের কাছে প্রথম এআই চিপ বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এরপর ২০২৩ সালের অক্টোবরে ভিন্ন ধরনের এআই চিপও নিষেধাজ্ঞার আওতায় নিয়ে আসার ঘোষণা দেয় তারা।আগামী জানুয়ারি মাসে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দায়িত্ব গ্রহণের আগে শেষ মুহূর্তে আরও এক বার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল জো বাইডেন প্রশাসন।বুধবার (৪ ডিসেম্বর) প্রকাশিত আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘সেমিকন্ডাক্টর বিক্রির নিষেধাজ্ঞার জবাবে সেমিকন্ডাক্টর তৈরিতে ব্যবহৃত একটি দুর্লভ খনিজ উপাদান রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে চীন। চীনের এ পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বেশ সমস্যা তৈরি করবে বলে মনে করা হচ্ছে।’এরপর বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) আরও এক দফায় নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করে চীন। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, কালো তালিকাভুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের ১৩টি প্রতিরক্ষা কোম্পানি ও ছয় নির্বাহী ব্যক্তির সম্পদ জব্দ করা হবে। তাদের সঙ্গে ব্যবসায় নিষিদ্ধ করা হবে। ওইসব ব্যক্তিদের চীনে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হবে।’কালো তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে টেলিডাইন ব্রাউন ইঞ্জিনিয়ারিং, ব্রিঙ্ক ড্রোনস, র‍্যাপিড ফ্লাইট, রেড সিক্স সলিউশনস, শিল্ড এআই, সিনেক্সাস, ফায়ারস্টর্ম ল্যাবস, ক্রেটোস আনম্যানড এরিয়াল সিস্টেমস, হ্যাভোকএআই, নিরোস টেকনোলজিস, সাইবারলাক্স কর্পোরেশন, ডোমো ট্যাকটিক্যাল কমিউনিকেশনস ও গ্রুপ ডব্লিউ।নির্বাহী ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন বিএই সিস্টেমস ল্যান্ড অ্যান্ড আর্মামেন্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) চার্লস উডবার্ন, ইউনাইটেড টেকনোলজিস ইউনিটের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ রিচার্ড ক্রফোর্ড, ডেটা লিঙ্ক সল্যুশনের প্রেসিডেন্ট বেথ এডলার এবং ব্রিঙ্ক ড্রোনসের সিইও ব্লেক রেসনিক।চীনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি তাইওয়ান অঞ্চলের কাছে ফের অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে। এটা এমন একটি পদক্ষেপ, যা ‘এক চীন নীতি’ ও চীন-যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি ‘যৌথ বিধানের’ সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞা এমন সময়ে ঘটল, যখন নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডেনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আরোহণের দিন গুনছেন। তিনি ক্ষমতায় আসার দিন থেকেই চীনের ওপর আরও কড়া ও শক্তিশালী নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়ে আসছেন। এমনকি চীনা পণ্যের ওপর ৬০ শতাংশ শুল্কারোপের হুমকিও দিয়েছেন তিনি। যা তার আগের মেয়াদে চীনের সঙ্গে ‘শুল্ক যুদ্ধে’র কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে।